সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

পোস্টগুলি

সেপ্টেম্বর, ২০১৮ থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

সম্পাদক পরিষদের কাছে প্রত্যাশা

জনগুরুত্বর্পূণ বিষয়, কিন্তু, খবরের কাগজে ছাপা হয় নি, অথবা কোনো খবরের ভুল-ভ্রান্তি ধরিয়ে দেওয়া কিম্বা ব্যাক্তিগত মতামত জানাতে পাঠকরা এক সময়ে প্রচুর চিঠি লিখতেন। এখন অবশ্য তার আর খুব একটা প্রয়োজন হয় না। কাগজগুলোর অনলাইন সংস্করণে খবরের নীচেই মন্তব্য করা যায়। তাছাড়া, সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলোতেও এখন সবাই তাঁদের মনোভাব প্রকাশ করতে পারেন। প্রযুক্তির অগ্রগতি সাইবার জগতে একধরণের গণতন্ত্রায়ন এনেছে। বাংলাদেশে অবশ্য প্রথমে তথ্য প্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারা, আর এখন ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে সেই সাইবার গণতন্ত্রের কন্ঠরোধের সব আয়োজন সম্পন্ন হয়েছে। সম্পাদক পরিষদকে ধন্যবাদ যে তাঁরা এর বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছেন। সদ্য প্রণীত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন প্রশ্নে জাতীয় সংবাদপত্রগুলোর সম্পাদকদের ফোরাম, সম্পাদক পরিষদ ঢাকায় এক মানববন্ধনের কর্মসূচি দিয়েও সরকারের অনুরোধে তা স্থগিত করে দিয়েছেন। সম্পাদকরা মতপ্রকাশের অধিকার প্রশ্নে রাস্তায় নামলে সরকারের জন্য যে বিব্রতকর পরিস্থিতি তৈরি হবে সেটা এড়ানোর তাগিদ থেকেই সরকারের এই আলোচনার উদ্যোগ। নি:সন্দেহে এটা একটা ভালো পদক্ষেপ। সব ঠিক থাকলে সম্পাদক পরিষদের সঙ্গে আজই সরকারের

একটি আলোচিত বই ও রাজনীতি

সালটা ১৭৮১। ভারতে তখন ইংরেজ কোম্পানির শাসন। গর্ভণর-জেনারেল ওয়ারেন হেস্টিংস এবং প্রধান বিচারপতির যোগসাজশের কাহিনী ছাপা হয়েছে ভারতের প্রথম সংবাদপত্র কোলকাতা থেকে প্রকাশিত হিকিস বেঙ্গল গেজেটে। রাষ্ট্রের শক্তিশালী দুটি অঙ্গের সঙ্গে লড়াই করে টিকে থাকা যে প্রায় অসম্ভব তার প্রমাণ ওই হিকিস বেঙ্গল গেজেটের অপমৃত্যু। সুপ্রিম কোর্টকে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা যেই ঔপনিবেশিক আমল থেকেই হয়ে আসছে এবং বর্তমানের শাসকরাও যে তা থেকে সরে আসেননি তার একটা ইতিহাসভিত্তিক বিশ্লেষণ লিখেছেন সাংবাদিক ও ঐতিহাসিক অ্যান্ড্রু ওটিস ( What India's First Newspaper  Says About Democracy, 22 September, 2018, BBC Online )।   ওয়ারেন হেস্টিংসের কাছ থেকে তখনকার সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ঘুষ নিয়েছিলেন। হেস্টিংসের   স্বৈরতান্ত্রিক বিভিন্ন পদক্ষেপ, অন্যায্য কর আরোপ, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা হরণ এবং বিভিন্ন অন্যায়-অবিচারকে আদালত বৈধতা দিত। বিচারবিভাগের সঙ্গে সরকারের এই যোগসাজশের বিষয়ে পরে ব্রিটিশ পার্লামেন্টের তরফে তদন্ত হয় এবং গর্ভণর-জেনারেল এবং প্রধান বিচারপতি দুজনেরই অভিসংশন হয়। বিবিসির এই প্রতিবেদন যখন পড়ছিলাম, তখন বিশ্

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন: গণমাধ্যম ও গণতন্ত্রের জন্য অশনি সংকেত

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের যেসব বিধান নিয়ে আশঙ্কা ও   উদ্বেগ প্রকাশ করা হচ্ছিল, সংসদীয় কমিটিতে অনেকটা তাড়াহুড়ো করে চূড়ান্ত করা খসড়ায় সেগুলোর প্রায় সবই রেখে দেওয়া হয়েছে। সম্পাদক পরিষদ তাই যথার্থভাবেই তার   প্রতিক্রিয়ায় এটা স্পষ্ট করে তাঁদের বিস্ময় ও হতাশার কথা জানিয়েছেন। সম্পাদক পরিষদকে ধন্যবাদ যে তাঁরা তাঁদের বিবৃতিতে স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন যে সংসদীয় কমিটি আরও এক দফা তাঁদের কথা শোনার আশ্বাস দিয়েও শেষপর্যন্ত কথা রাখেননি। এর আগে তথ্যমন্ত্রী এবং আইনমন্ত্রী আশ্বস্ত করেছিলেন যে সম্পাদক এবং সাংবাদিক-প্রতিনিধিদের মতামতকে তাঁরা বিবেচনায় নেবেন। বোঝাই যাচ্ছে ওগুলো ছিল কথার কথা। নাগরিক সমাজ বা বিভিন্ন পেশাজীবিদের মতামতকে গ্রহণ করার বদলে ‘ আলোচনা ‘ নামের আনুষ্ঠানিকতা পালন যে সরকারের অভ্যাসে পরিণত হচ্ছে এই ডিজিটাল আইনের ক্ষেত্রে সেরকম প্রমাণই পাওয়া যাচ্ছে।   এখানে স্মরণ করা যেতে পারে যে চলতিবছরের মাঝামাঝি সময়ে সম্পাদকদের সঙ্গে বৈঠকে   আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল যে বহুলনিন্দিত তথ্য প্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারা থাকবে না এবং ওই ধারায় মামলা করতে হলে পুলিশ সদরদপ্তর বা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনমোদন প্রয়োজন হবে।

দ্বিপক্ষীয় উদ্যোগই যখন অজুহাত

গত ২৮ আগস্ট, মঙ্গলবার  যে সময়ে নিরাপত্তা পরিষদে  মিয়ানমারের ওপ র বিতর্কটি অনুষ্ঠিত হয়েছে বাংলাদেশে অধিকাংশ মানুষেরই সেসময়ে গভীর ঘুমে থাকার কথা। ভোর রাত ২টায় শুরু হয়ে প্রায় সাড়ে ৪টা পর্যন্ত চলা বিতর্কের সময়ে আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত জেষ্ঠ্য ব্যাক্তিরাও ঘুমিয়ে পড়েছিলেন ‍কিনা কে জানে! তবে, পুরো অধিবেশনটি এখনও জাতিসংঘের ওয়েবসাইটে পাওয়া যাচ্ছে – চাইলেই যে কেউ সেটি দেখে নিতে পারেন। নিরাপত্তা পরিষদের এই উন্মুক্ত অধিবেশনে স্থায়ী সদস্য পাঁচটি দেশের মধ্যে রাশিয়া এবং চীনের প্রতিনিধিদের বক্তব্য শোনার পর বাংলাদেশের মিয়ানমার নীতির যৌক্তিকতা প্রশ্নবিদ্ধ হতে বাধ্য। নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকটি রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন এবং তাদের মানবিক সহায়তা কার্য্যক্রম পর্যালোচনার জন্য পূর্বনির্ধারিত ছিল। কিন্তু, মাত্র একদিন আগে প্রকাশিত জাতিসংঘের তদন্ত প্রতিবেদনটি স্বাভাবিকভাবেই আলোচনায় প্রাধান্য পেয়েছে। প্রতিবেদনে জাতিসংঘ তদন্তকারীরা স্পষ্ট করে বলে দিয়েছেন যে মিয়ানমারে রোহিঙ্গানিধনে পরিচালিত সামরিক অভিযান পরিচালনায় গণহত্যার উদ্দেশ্য ছিল। সেনাপ্রধানের প্রকাশ্য বক্তব্য-বিবৃতিতে কথিত ‘ বাঙ্গালী সমস