সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

পোস্টগুলি

জুলাই, ২০১৮ থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

বাংলা বিভ্রাট চাই না

বাংলা এখন কি? একটি স্বাধীন দেশ? ভারতের একটি রাজ্য? নাকি ভাষা? গত ৪৭ বছর ধরে একটি স্বাধীন দেশের সাত থেকে ষোলো কোটি মানুষ যখনই জাতীয় সঙ্গীতে পরম মমতায় ‘ আমার সোনার বাংলা ‘ উচ্চারণ করে এসেছে তখন কিন্তু সবাই বাংলাদেশকেই বুঝেছে। সেটা শুধু বাংলাদেশে নয়, ভারতসহ বিশ্বের যে কোনো প্রান্তে, যেকোনো উপলক্ষ্যে এই জাতীয় সঙ্গীতের সুরের অনুরণনে বাংলাদেশকেই বোঝানো হয়েছে এবং সবাই সেটি ছাড়া অন্য কিছু কল্পনাও করেন নি। ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য পশ্চিম বঙ্গের রাজ্য বিধানসভায় গেল সপ্তাহে প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে যে তাঁরা তাঁদের রাজ্যকে বাংলা নামে নামকরণ করতে চান। ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার প্রস্তাবটিতে সম্মতি দিলে তা লোকসভা এবং রাজ্যসভায় উত্থাপিত হবে এবং সেখানে অনুমোদিত হলে সরকারীভাবে ভারতীয় রাজ্যটির নাম বদলে বাংলা হবে। একথা ঠিক বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত এবং স্বাধীনতা যুদ্ধের শ্লোগান জয় বাংলা ছাড়া বাংলার মানে হচ্ছে ভাষা। জয় বাংলা শ্লোগানের বাংলা কিন্তু বাংলাদেশ এবং ভারতেও তা স্বীকৃত। স্বাধীনতার পর তো বটেই এখনও পশ্চিম বঙ্গে বাংলাদেশের মানুষ গেলে তাঁদেরকে অনেকেই ‘ জয় বাংলার ‘ লোক বলে চেনে বা ওই পরিচয়টাকে

যে নির্বাচনী সাফল্যে স্বস্তি মেলা ভার

ক্রিকেটের মাঠ মাতানোর পর রাজনীতির মাঠেও যে সাফল্য ইমরান আহমেদ খান নিয়াজির কাছে ধরা দেবে এমনটি অনেকেই ধারণা করেছিলেন। এই ধারণার কারণ দেশে-বিদেশে সবারই জানা। সেনাবাহিনীর আর্শীবাদই হচ্ছে   সাফল্যের সেই অদৃশ্য চাবি। রাজনীতিক ইমরান অবশ্য যে নির্বাচনে সাফল্য পেলেন সেই নির্বাচনটি পাকিস্তানের মানবাধিকার কমিশনের প্রধান আই এ রেহমান এর ভাষায় ‘ দেশটির ইতিহাসে সবচেয়ে নোংরা এবং সবার্ধিক নিয়ন্ত্রিত নির্বাচন ‘ (২০১৮ পোলস টু বি দ্য ডার্টিয়েস্ট অ্যান্ড মোস্ট মাইক্রোম্যানেজড ইন দ্য কান্ট্রিস পলিটিকাল হিস্ট্রি , ১৭ জুলাই , ডন)। নির্বাচনের ফল নিয়ে তাই প্রশ্ন ওঠাও অস্বাভাবিক নয়। ইমরান খান অবশ্য বিজয়ী হিসাবে তাঁর প্রথম বক্তৃতায় পাকিস্তানের ইতিহাসে এটিকে ‘ স্বচ্ছতম ও সবচেয়ে সুষ্ঠূ নির্বাচন ‘ বলে অভিহিত করেছেন। যে রাষ্ট্রটির ৭১ বছরের ইতিহাসের অর্ধেকটা কেটেছে সামরিক শাসনে, আর বাকিটা তাদের পরোক্ষ নিয়ন্ত্রণে সেই দেশে নানাধরণের সহিংসতার মধ্যেও নির্বাচন সম্পন্ন হওয়া কম কথা নয়। সরকারে স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় বেসামরিক পালাবদলের ক্ষেত্রেও এটি দ্বিতীয় নজির।  গণতান্ত্রিক ধারায় বেসামরিক শাসন বজায় থাকলেও একমাত্র প

গোষ্ঠীগত উগ্রতা যেসব কারণে নিন্দনীয়

সরকারী পদক্ষেপের কারণে বন্ধ থাকা আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান একটি মানহানির মামলায় কুষ্টিয়ার আদালতে হাজিরা দিতে গেলে আদালত প্রাঙ্গণে তার ওপর ছাত্রলীগ কর্মীরা যে হামলা চালিয়েছে তাকে কেন্দ্র করে দেশে, বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটা বিতর্ক চলছে। এই বিতর্কেও যথারীতি দেশের প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের প্রতি আনুগত্যের বিভাজন স্পষ্ট। কিন্তু, এই দলীয় দৃষ্টিকোণের বাইরেও যে একটা যৌক্তিক ভিন্নমত আছে তা এড়িয়ে যাওয়া বহুদলীয় গণতন্ত্র এবং আইনের শাসনের জন্য মোটেও সুখকর নয়। এক্ষেত্রে প্রথমেই দেখা প্রয়োজন যে আদালতে বিচারাধীন মামলা অন্য কারো বিচার করার অধিকার আছে কীনা ? যদি না থাকে তাহলে আদালত যাঁকে জামিন দিয়েছে তাঁকে এজলাসের বাইরে যাঁরা শায়েস্তা করার চেষ্টা করেছেন তাঁদের নিন্দা করা জরুরি। তা নাহলে আইনের শাসনের বদলে আমাদেরকে বিভিন্ন গোষ্ঠীর দলবদ্ধ উন্মত্ততার শাসন (Mobocracy) প্রতিষ্ঠা পাবে। দ্বিতীয়ত: সম্পাদক কিম্বা সাংবাদিক অথবা অন্য যে কোনো পেশার মানুষের রাজনৈতিক বিশ্বাসের কারণে তার ওপর হামলা কখনেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। ‘ ইটটি মারলে পাটকেলটি খেতে হয় ‘ খুব পুরোনো একটা প্রবচন। এক্ষ

অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনই কি সমাধান ?

বাংলাদেশে সাম্প্রতিক সময়ের আলোচিত শব্দযুগল হচ্ছে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন। মূলত: আগামী জাতীয় নির্বাচনকে অংশগ্রহণমূলক করার কথাই এতে বোঝানো হচ্ছে। নির্বাচনকে গ্রহণযোগ্য, অবাধ, স্বচ্ছ্ব ও প্রতিদ্বন্দিতামূলক করার জন্য সম্ভাব্য প্রতিদ্বন্দীদের নির্বাচনী ব্যবস্থার প্রতি আস্থার বিষয়টি বেশি গুরুত্বর্পূণ হলেও এসব আলোচনায় সবার অংশগ্রহণের বিষয়টিই বরং বিশেষভাবে গুরুত্ব পাচ্ছে। সুতরাং, নির্বাচনের প্রধান প্রতিদ্বন্দী অথবা গুরুত্বর্পূণ প্রতিদ্বন্দীদের আস্থা অর্জনের বিষয়টি উপেক্ষিতই থাকছে। বরং, সরকার এবং ক্ষমতাসীন দলের মনোযোগ হচ্ছে উৎসুক সবাইকে আশ্বস্ত করা যে নির্বাচনটি অংশগ্রহণমূলক হবে।   ২০১৪ ‘ র ৫ জানুয়ারীর নির্বাচনটি ক্ষমতাসীন জোটের বাইরে প্রায় সব দলের বর্জনের কারণে একতরফা এবং   প্রতিদ্বন্দিতাহীন হওয়ার কারণে বিতর্কিত হওয়ায় আগামী নির্বাচনে সবদলের অংশগ্রহণের বিষয়টি আলাদা গুরুত্ব পাচ্ছে। ক্ষমতাসীন দল ও তার জোটসঙ্গীদের নির্বাচনী প্রচার – অর্থাৎ আগামী মেয়াদের উন্নয়ন সূচি এবং ভোট চাওয়ার কাজ অনেক আগেই শুরু হয়েছে। তবে, অন্য কোনো দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে কিনা তা এখনও স্পষ্ট নয়। বিশেষত, গত সংসদের প্র

Carlile’s expulsion and Bangladesh politics

The Indian government’s unusual refusal to allow a top ranking British human rights lawyer Lord Alex Carlile enter India seems to be a significant political decision which will inevitably have some impact on the upcoming elections in Bangladesh. Treating opposition politicians of neighbouring countries belonging to the South Asian Regional grouping SAARC in contrasting manner certainly reflects strategic preferences of Delhi. The contrast could not be starker as when it had afforded visa to a fugitive politician of Maldives, but deported a lawyer representing the jailed opposition leader of Bangladesh.  Lord Carlile, is commissioner of the Freedom of Information Commission in the UK, has long been at the centre of controversies in Bangladesh for his criticism of the trial process of the war crimes committed during the war of independence. He had publicly lobbied against death sentences awarded to Mir Quasem Ali and other convicts. Later he courted controversy last year when Awami Lea

অভিবাসীদের বিশ্বকাপ বিজয়!

অনেকেই এবার বিশ্বকাপ ফুটবলের পরাশক্তিগুলোর বিদায়ে আনন্দিত হয়েছিলেন এই আশায় যে রাশিয়ার বিশ্বকাপ ২০১৮ তে নতুন কোনো শক্তির উত্থান ঘটবে। দুর্বলের কাছে শক্তিমানের পরাজয়ও তাই অনেকসময়েই তাঁদেরকে আনন্দ দেয়, যাঁরা নিজেদেরকেও দুর্বলের কাতারে গণ্য করে থাকেন। এবারের বিশ্বকাপের আসরে তেমনটিই ঘটছিল। কিন্তু, পরাশক্তির মধ্যে ব্যাতিক্রম হয়ে রইলো ফ্রান্স। ফ্রান্সের সাফল্য উদযাপনে তাই অনেকেই কিছুটা দ্বিধাগ্রস্ত। ঢাকার তিনভাগের এক ভাগ জনসংখ্যার দেশ ক্রোয়েশিয়ার সাফল্য দেখতে চাওয়ার আগ্রহের পিছনেও সেরকম একটা মনস্তত্ত্ব কাজ করেছে সন্দেহ নেই। তবে, ফ্রান্সের এই সাফল্য প্রচলিত অর্থে কোনো ইউরোপীয় পরাশক্তির বিজয় নয়। বরং, এটি হচ্ছে অভিবাসীদের বিজয় – যারা দেশটিতে অনেকটাই পরবাসী, একঘরে, বর্ণবাদের শিকার। ক্রোয়েশীয় ফুটবলের একজন কর্মকর্তার ভাষায় তাঁর দেশের বিরুদ্ধে বিজয়ী হয়েছে বহুজাতিক ফ্রান্স। পাশ্চাত্য জুড়ে – ইউরোপ এবং যুক্তরাষ্ট্রে যখন অভিবাসনবিরোধী বর্ণবিদ্বেষী রাজনীতির উত্থান ঘটছে তখন ফরাসী ফুটবল দলের ছবি পুরো ফ্রান্স এবং ইউরোপকে মনে করিয়ে দেবে যে এই অর্জনে অভিবাসী জনগোষ্ঠীর অবদানই ছিল সবচেয়ে গুরুত্বর

ভিনদেশে রাজনীতিকদের ধরনা

গাজীপুর ও খুলনার নগর নির্বাচনে সাজানো ভোটের নতুন মডেল চালুর অভিযোগ করায় বিএনপির উদ্দেশে ক্ষমতাসীন দলের সাধারণ সম্পাদক ব্যঙ্গ করে তাদের বিদেশিদের কাছে নালিশ দিতে বলেছিলেন । সে রকম কোনো নালিশ তাঁরা করেছেন কি করেননি , সেই বিতর্কের ইতি টানা প্রায় অসম্ভব । তবে ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাট যে ওই দুই নির্বাচনেই অনিয়মের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন , সে কথা আমরা সবাই জানি । তিনি ওই সব অনিয়ম তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও বলেছেন । রাষ্ট্রদূতের এই মন্তব্যগুলো ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের পছন্দ হয়নি । তাঁদের কেউ কেউ একে কূটনৈতিক রীতিনীতির লঙ্ঘন অভিহিত করে তাঁকে বরং যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনের ত্রুটি - বিচ্যুতিতে নজর দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন । বিদেশিদের বাংলাদেশের নির্বাচনের বিষয়ে মাথা না ঘামানোর পরামর্শের জন্য ক্ষমতাসীন দলকে ধন্যবাদ দেওয়া উচিত । কিন্তু সমস্যা হচ্ছে তাঁদের কথা আর কাজের মধ্যে ফারাক অনেক । ২০১৪ - এর ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে কথিত সাংবিধানিক ধারাবাহিকতার