সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

পোস্টগুলি

ডিসেম্বর, ২০১৮ থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

এমন নির্বাচন কখনো দেখেনি কেউ

আওয়ামী লীগের নেতাদের কেউ কেউ বলেছেন যে এবারের নির্বাচনে তাঁদের দলের পক্ষে সত্তরের মতো গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে। বিপরীতে এই নির্বাচনে প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ড. কামাল হোসেন বলেছেন, তিনি তাঁর ৫০ বছরের বেশি সময়ের রাজনৈতিক জীবনে এ ধরনের নির্বাচন আর কখনো দেখেননি। হিসাবের দিক থেকে দুই পক্ষের কথাতেই একটা মিল পাওয়া যায়। দেশের ভেতরেও এমন কোনো লোক খুঁজে পাওয়া যাবে কি না সন্দেহ, যাঁরা এ রকম আর কোনো নির্বাচন দেখেছেন। যেসব কারণে এই নির্বাচন আলাদা, তার তাত্ত্বিক আলোচনা এর আগে অনেকেই করেছেন এবং এখনো করছেন। শিগগিরই তা শেষ হওয়ার কোনো কারণও নেই। তবে, আমি সেসব তাত্ত্বিক দিকে জোর না দিয়ে শুধু কিছু অনন্য বৈশিষ্ট্য এখানে তালিকাভুক্ত করতে চাই। কেননা, এগুলোর প্রভাব মোটেও ক্ষণস্থায়ী নয়, বরং সুদূরপ্রসারী। ১. অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য যে দল ও যে নেতার নেতৃত্বে নব্বইয়ের দশকে প্রায় তিন বছর উত্তাল আন্দোলন হয়েছে এবং দেশে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থায় জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের ধারা চালু হয়েছিল, এবারের নির্বাচন হচ্ছে সেই নেতা এবং দলের অধীনে। ওই দলের একক সিদ্ধান্তেই নির্দল

রহস্যময় প্রশংসা !

‘ পোপের চেয়েও বড় ক্যাথলিক ‘ বলে যে বাগধারা চালু আছে বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোর অনুসারীদের মধ্যেও সেরকম অনেককেই দেখা যায়। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের এরকম একজন অনুসারী সাবেক ছাত্রলীগ নেতা এবং একটি টিভি চ্যানেলের প্রধানের একটি নিবন্ধ ‘ অনিবার্য শেখ হাসিনার দায় ‘ পড়ার পর থেকেই একটি প্রশ্ন মাথায় ঘুরছে, যার কোনো উত্তর খুঁজে পাচ্ছি না। প্রধানমন্ত্রীর প্রশংসার্পূণ এই লেখার শেষদিকে যেসব কথা বলা হয়েছে তাতেই এই প্রশ্ন। তাঁর লেখায় যেসব সমস্যার কথা উঠে এসেছে সেগুলোর তালিকা মোটামুটি এরকম: ১. আওয়ামী লীগের সাম্প্রতিক হেফাজত – সংস্রবে দলটির অন্তর্গত চেতনাকেই গুলিয়ে ফেলার আশঙ্কা দেখে দিয়েছে। ২. রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের অনুপস্থিতিতে পুলিশের কিছু কিছু সদস্যও যেন লাগামহীন হয়ে পড়েছেন। ৩. প্রশাসনের কর্মকর্তাদের মধ্যেও খানিকটা বেপরোয়া ভাব লক্ষণীয়। ৪. মাত্রা ছাড়া ঘটনা ঘটেছে নিম্ন ও উচ্চ আদালতেও।   ৫. বিশ্বের অপরাপর গণতান্ত্রিক দেশের তুলনায় উন্নয়নসহ বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে সামরিক বাহিনীর উপস্থিতিও যেন একটু বেশি দৃশ্যমান। ৬. ব্যাংকিং সেক্টর এবং শেয়ার মার্কেটই শেখ হাসিনাকে সবচেয়ে বেশি পীড়া দেবে। এগুলো উল্

পুলিশের উদ্বেগজনক পক্ষপাত!

অপরাধ ঠেকানো, অপরাধ ঘটলে অপরাধের যথাযথ তদন্ত করা, অপরাধীদের গ্রেপ্তার এবং বিচারের মুখোমুখি করার কাজগুলো পুলিশ সদস্যদের বিধিবদ্ধ দায়িত্ব। সুতরাং আইন অনুযায়ী তাঁরা ন্যায়নিষ্ঠভাবে সেই দায়িত্ব পালন করবেন—সেটাই প্রত্যাশিত। এখানে কে কোন দলের সদস্য, সেটা মোটেও বিবেচ্য নয়। কিন্তু এই নির্বাচনে একটা ব্যতিক্রম স্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হচ্ছে—তফসিল ঘোষণার আগে থেকেই তাঁদের বিভিন্ন কার্যকলাপে আইন লঙ্ঘন এবং ক্ষমতাসীন দলের রাজনৈতিক কৌশলের হাতিয়ার হিসেবে ভূমিকা পালনের যেসব অভিযোগ উঠছিল, সেগুলো বন্ধ হওয়ার বদলে বরং একটি প্রবণতার রূপ নিয়েছে। প্রথমত, ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের কৌশল বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে বিরোধীদলীয় সম্ভাব্য প্রতিদ্বন্দ্বী, মাঠপর্যায়ের নেতা-কর্মী, তাঁদের এজেন্ট হতে পারেন—এমন ব্যক্তিদের তালিকা ধরে অনুসন্ধান চালানো হয়েছে। এরপর গত সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হয়েছে তাঁদের বিরুদ্ধে নানা ধরনের কাল্পনিক নাশকতার মামলা। ঢাকা ও চট্টগ্রামে কথিত নাশকতার ঘটনাগুলোর উল্লেখযোগ্যসংখ্যকের ক্ষেত্রে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, ওই সব মামলা হয়েছে ভিত্তিহীন এবং বানোয়াট অভিযোগের ভিত্তিতে। মৃত ব্যক্তি, হজে যাওয়া বা বিদেশে অবস্থান করা

নির্বাচনে সরকার কী আড়াল করতে চায়

এনফ্রেলের পর্যবেক্ষকদের ভিসা প্রদানে গড়িমসির কারণে হতাশা প্রকাশ করে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের নির্বাচন পর্যবেক্ষণে কাউকে না পাঠানোর ঘোষণা দেওয়ার পর বিদেশিদের নির্বাচন পর্যবেক্ষণের বিষয়টিতে সরকারের মনোভাব অনেকটাই স্পষ্ট হয়েছে। ৩২ জনের ভিসার অনুরোধে নির্বাচনের এক সপ্তাহ আগে মাত্র ৬ জনের অনুমতি দেওয়াকে যদি কোনো দেশ গড়িমসি মনে করে, তাহলে তা নিশ্চয়ই অন্যায় নয়? নির্বাচনে বিদেশিদের নজরদারিতে সরকার অনাগ্রহী। প্রশ্ন হচ্ছে, এই অনাগ্রহের কারণ কী? এর আগে ইউরোপীয় ইউনিয়নও প্রস্তুতির জন্য যথেষ্ট সময় না থাকায় পর্যবেক্ষক না পাঠানোর সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেয়। তা ছাড়া, নির্বাচনে বিরোধী দলের অংশগ্রহণে অনিশ্চয়তার কারণেও তারা নিজ উদ্যোগে আগে থেকে এ বিষয়ে প্রস্তুতি নেয়নি। বাকি ছিল কমনওয়েলথ। গত সপ্তাহে কমনওয়েলথ মহাসচিব প্যাট্রিসিয়া স্কটল্যান্ড লন্ডনে এক অনানুষ্ঠানিক আলোচনায় দেরিতে অনুরোধ আসার কারণে প্রস্তুতি নেওয়ার সময়ের অভাবে এবার বাংলাদেশের নির্বাচন পর্যবেক্ষণ সম্ভব হচ্ছে না, মন্তব্য করেছেন বলে ওই আলোচনায় উপস্থিত সূত্র জানিয়েছে।  সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন সময়ে বলা হয়েছে যে নির্বাচন পর্যবেক্ষণে দেশি-বিদেশি সব

সম্পাদকীয় স্বাধীনতার লড়াই না অন্য কিছু ?

সম্প্রতি ‘ সম্পাদকীয় প্রতিষ্ঠানের স্বাধীনতা ও মর্যাদা রক্ষা এবং সাংবাদিকতা পেশার উৎকর্ষ বাড়ানোর লক্ষ্যে ‘ এডিটরস গিল্ড, বাংলাদেশ নামে একটি নতুন সংগঠন আত্মপ্রকাশ করেছে। সম্পাদকীয় প্রতিষ্ঠানের স্বাধীনতা ও   সাংবাদিকতার উৎকর্ষ সাধনের লক্ষ্যে যেকোনো উদ্যোগকেই সবার স্বাগত জানানো উচিত। সুতরাং, নতুন উদ্যোগকে শুভেচ্ছা।   তবে, এখানে কিছু জরুরি প্রশ্নের কথা বলে রাখা দরকার যেগুলোর কোনো সন্তোষজনক জবাব আমি খুঁজে পাচ্ছি না। প্রশ্নগুলো যাঁরা এই উদ্যোগ নিয়েছেন তাঁদেরকে ঘিরে। এঁদের প্রায় সবাই গত দশ বছরে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা হরণ এবং গণমাধ্যমবিরোধী সব সরকারী নীতি ও পদক্ষেপকে প্রকাশ্যে ও অপ্রকাশ্যে সমর্থন ও ইন্ধন দিয়ে এসেছেন। এঁরা কিভাবে স্বাধীন সম্পাদকীয় প্রতিষ্ঠান গড়ায় ভূমিকা রাখবেন? নতুন গড়ে তোলা সংগঠনের প্রধান এর আগে একাধিকবার প্রকাশ্য বক্তৃতা ও লেখায় গণমাধ্যমের ওপর নানাধরণের নিয়ন্ত্রণের কথা বলেছেন। যে কেউ গণমাধ্যমের মালিক হোক এমন সুযোগের তিনি ঘোরবিরোধী। যার মানে দাঁড়ায় বিভিন্ন সময়ে ক্ষমতাধরদের অনুগ্রহ ও কৃপালাভকারী যেসব সুবিধাভোগী অতীতে টিভি-রেডিও-পত্রিকা-অনলাইন পোর্টালের অনুমোদন পেয়েছেন, তাঁদ

জনমত জরিপ ও নির্বাচনী ইশতেহার

বাংলাদেশে অনেক দিন ধরেই নির্বাচনকেন্দ্রিক স্বাধীন, বস্তুনিষ্ঠ ও বিশ্বাসযোগ্য জনমত জরিপ হয় না। সেদিক থেকে বেসরকারি উন্নয়ন প্রতিষ্ঠান ব্র্যাকের জরিপটি কিছুটা হলেও জনমানসের গতি-প্রকৃতির ওপর আলোকপাত করেছে। নির্বাচনে রাজনৈতিক দলের ইশতেহারকে দেশের ৮৩ শতাংশ মানুষ গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনা করে এবং প্রায় ৭ শতাংশ ইশতেহারের আলোকে ভোট দেন—এটি বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। ভোটের হিসাবে প্রধান দুই দলের সমর্থনের হার খুব কাছাকাছি হওয়ায় এই ৭ শতাংশ ভোটও নির্বাচনের ফল ঘুরিয়ে দিতে পারে। বলে রাখা ভালো যে বেসরকারী উদ্যোগে দেশীয় কোনো ব্যাক্তি বা প্রতিষ্ঠান জনমত জরিপের উদ্যোগ না নিলেও ক্ষমতাসীন দলের অনেকগুলো নিজস্ব জরিপের কথা আমরা  শুনেছি। এরকম একটি সাম্প্রতিক জরিপে কোন দল সম্ভাব্য কত আসন বা কত শতাংশ ভোট পেতে পারে তাঁরা শুধু সেটুকু তথ্য প্রকাশ করলেও পুরো জরিপটি প্রকাশ না করায় তার খুঁটিনাটি জানা যায় নি। ফলে, অনেক প্রশ্নেরই উত্তর মেলেনি। ব্র্যাকের জরিপের ফল বলছে, এই নির্বাচনে ভোটাররা পাঁচটি ইস্যুকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন, যার শীর্ষে আছে কর্মসংস্থান—প্রায় ২৮ শতাংশ। এরপর যথাক্রমে পরিবহন, শিক্ষা, সুষ্ঠু নির্বাচন এবং ম

নির্বাচনী রাজনীতি ও সাংবাদিকতা!

বর্ষীয়ান রাজনীতিক ও আইনজ্ঞ ড. কামাল হোসেন যেসব সাংবাদিককে পয়সা খেয়ে প্রশ্ন করতে এসেছেন কি না বলে ধমক দিয়েছেন, সেটা তিনি ঠিক করেননি। তবে তার জন্য স্বল্পতম সময়ে দুঃখ প্রকাশ করে ঠিক কাজটিই করেছেন। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, সাংবাদিক হিসেবে আমরা ঠিক কাজটি করছি কি না? সরকার-সমর্থক হিসেবে পরিচিত ইউনিয়নের প্রতিবাদ সমাবেশ দেখে অন্তত তা মনে হয় না। ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের নির্বাচনী প্রচার কমিটির সদস্য যেসব সাংবাদিক, তাঁদের কথা বাদ দিলেও প্রধানমন্ত্রীর তথ্যবিষয়ক উপদেষ্টার অংশগ্রহণ ও বক্তৃতায় বিষয়টির রাজনৈতিক রূপ স্পষ্ট হয়েছে। অপ্রীতিকর পরিস্থিতিটি কোনো রাজনৈতিক উদ্দেশ্য থেকে ঘটানো না হলেও এর প্রতিক্রিয়া নিয়ে রাজনৈতিক ফায়দা নেওয়ার চেষ্টার অভিযোগ কি আর অস্বীকার করা চলে? একজন জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক কাজী আব্দুল হান্নান ফেসবুকে লিখেছেন, সাংবাদিকের কাজ খবর সংগ্রহ করা, খবর তৈরি করা নয়। বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে যেসব সাংবাদিক গিয়েছিলেন, তাঁদের কাজ ছিল কারা সেখানে গেলেন এবং সেখানে কী কী ঘটল, তার বিবরণ সংগ্রহ করে রিপোর্ট করা। নির্বাচনে কোন দল কার সঙ্গে জোট করেছে, কেন করেছে, সেটা জানার জায়গা স্মৃতিসৌধ নয়। তাঁর বক্তব্য অ

আদালতে প্রার্থিতা বাতিল নিয়ে কিছু প্রশ্ন

রাষ্ট্রের শীর্ষ আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল আওয়ামী লীগের প্রার্থী হয়ে নির্বাচন করতে চেয়েছিলেন, কিন্তু মনোনয়ন পাননি। তখন কথা উঠলো, ভোটে দাঁড়ালে আদালতে তাঁর প্রয়োজন মেটাবে কে? সেকারণেই আওয়ামী লীগ তাঁকে মনোনয়ন দেয়নি, তাঁর আর নির্বাচন করা হয় নি। নির্বাচনের সময়ে তাঁর প্রধান কাজ ছিল বিরোধীদলের যত বেশি সংখ্যক প্রার্থীর প্রার্থিতা আটকে দেওয়া যায় তা নিশ্চিত করা। অতীতে দেখা গেছে সুপ্রিম কোর্ট থেকে প্রার্থীরা প্রার্থিতা ফিরিয়ে নিতে পেরেছেন। এমনকি, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলেও সরকার কারো প্রার্থিতা বাতিল বা স্থগিত করাতে পেরেছে বলে নজির খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। নির্বাচন কমিশনেরও আদালতের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল করার নজির বিরল। সাধারণত: প্রার্থীরাও প্রার্থিতা টিকে গেলে প্রচার-প্রচারণাতেই মনোযোগী হয়েছেন, প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে আদালতের শরণাপন্ন হননি।   আর, এবার দেখা যাচ্ছে নির্বাচন কমিশনে আপিল করে প্রার্থিতা ফিরে পেলেও সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগ অথবা আপিল বিভাগ থেকে তা স্থগিত হয়ে গেছে বা প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতার অযোগ্য হয়ে পড়েছেন। যাঁরা অযোগ্য হয়ে গেলেন তাঁদের প্রায় সবাই বিরোধীদলের এবং

নির্বাচনে ভীতি সৃষ্টির চেষ্টা কেন

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রধান, দেশের অশীতিপর রাজনীতিকদের অন্যতম, ড. কামাল হোসেনের ওপর হামলার পর বিরোধী দলের জাতীয় নেতাদের মধ্যে আর কেউ কি হেনস্তা হতে বাকি থাকলেন? বিএনপির নেতা মির্জা ফখরুল, মওদুদ আহমদ, মঈন খান, মেজর হাফিজ, জাসদ নেতা আ স ম আবদুর রব, নাগরিক ঐক্যের মাহমুদুর রহমান মান্না, গণফোরামের আবু সাইয়িদ প্রমুখের ওপর একের পর এক হামলার ঘটনায় এ ধরনের আশঙ্কাই তৈরি হচ্ছিল। প্রার্থী বাছাই ও প্রতীক বরাদ্দের পর্ব শেষে প্রচারের পালার শুরুতেই দেশের সব প্রান্ত থেকে হাঙ্গামার খবর আসতে শুরু করে। এসব হামলার খবরে ধারণা হচ্ছিল যে ক্ষমতাসীন দল হয়তো প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের কাউকে মাঠে নামতে না দেওয়ার একটা কৌশল নিচ্ছে। কিন্তু, ড. কামাল প্রার্থী নন। বয়সের ভার এবং শারীরিক সামর্থ্যের সীমাবদ্ধতার কারণে তাঁর পক্ষে সারা দেশে প্রচারাভিযানে অংশ নেওয়াও যে সম্ভব নয়, সে কথাও সবারই জানা। অথচ, তাঁর সীমিত রাজনৈতিক কার্যক্রমেও বাধা দেওয়া হয়েছে। যেখানে তাঁর ওপর হামলা হয়েছে, সেটি কোনো নির্বাচনী কার্যক্রম ছিল না, ছিল শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদনের আনুষ্ঠানিকতা। দেশের সব বিধিবদ্ধ রাজনৈতিক দল যেসব জাতীয় দিব

মন্ত্রী ও সাংসদদের ব্যবসার নৈতিকতা

জাতীয় নির্বাচনের প্রার্থীদের হলফনামা নিয়ে সংবাদপত্রে বেরোনো প্রতিবেদনের হিসাব রাখা প্রায় অসম্ভব। হলফনামার যথার্থতা ও সম্পদের বিবরণ ঘিরে বিস্ময় ও বিতর্ক চলছেই। আমাদের কপাল ভালো, নির্বাচন কমিশন নানা বিষয়ে সরকারের চাপ ঠেকাতে সক্ষম না হলেও এই একটি বিষয়ে সরকারের শক্তিশালী অংশীদার জাসদের চাপের কাছে নতি স্বীকার করেনি। আজ থেকে ঠিক ১৪ মাস আগে ২০১৭ সালের ৮ অক্টোবর এক সংলাপে জাসদের প্রধান তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু হলফনামার বিধান বাতিলের দাবি জানিয়েছিলেন (‘বর্তমান সরকারের অধীনেই নির্বাচন চায় জাসদ’, যুগান্তর, ৯ অক্টোবর ২০১৭)। তবে তাঁর দাবিগুলোর মধ্যে নির্বাচনে কালোটাকার ব্যবহার বন্ধের কথাও ছিল। জাসদের এই দাবিটি স্মরণ করার উদ্দেশ্য এই নয় যে ২০১৩ ও ২০১৮ সালের হলফনামা দুটো মিলিয়ে পত্রিকাগুলো হিসাব দেখিয়েছে যে ৫ বছরে দলটির সভাপতির হাতে নগদ টাকা বেড়েছে ৭ গুণ এবং তাঁর স্ত্রীর ৬০ গুণ। বরং ওই দাবি নাকচ হয়ে যাওয়ার কারণেই আমরা জানতে পারছি, দলমত–নির্বিশেষে রাজনীতিকদের আর্থিক সমৃদ্ধির ধারা অব্যাহত ছিল। যতই বলা হোক না কেন, বিরোধীরা সরকারের তাড়ার ওপরে রয়েছেন, তাঁদের কারও কারও আয় বৃদ্ধির হারে সে রকম প্রতিকূল

গুম, মানবাধিকার ও নির্বাচন

১৩ অক্টোবর, শনিবার। সাপ্তাহিক ছুটির দিন। পত্রিকার অন্তত একটি খবর অনেকের মন ভালো করে দিয়েছিল। খবরটি ছিল, আগের রাতে নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে বাংলাদেশ মানবাধিকার পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হয়েছে। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের কূটনৈতিক সাফল্যে তো মন ভালো হওয়ারই কথা। টিভির ব্রেকিং নিউজ স্ক্রলে এই অংশটুকুর পর আমাদের অধিকাংশেরই আর কিছু জানার প্রয়োজন পড়েনি। সংবাদপত্রের শিরোনামেও মোটামুটি খবরের মূল কথাটা চলে এসেছে। পুরো খবরটা সবার আর পড়ার প্রয়োজন হয়নি। যাঁরা পড়েছেন, তাঁরা জেনেছেন বিভিন্ন অঞ্চলের মোট ১৮টি শূন্য আসনের নির্বাচন হয় একসঙ্গে। এর মধ্যে এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের আসন ছিল ৫ টি। সর্বোচ্চ ১৮৮ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছে ভারত, আর বাংলাদেশ পেয়েছে ১৭৮। বাকিরা হলো বাহরাইন, ফিজি ও ফিলিপাইন। আগামী বছরের ১ জানুয়ারি থেকে তিন বছর এসব দেশ ৪৭ সদস্যের মানবাধিকার পরিষদের নির্বাহী সদস্য হিসেবে কাজ করবে। জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদে বাংলাদেশ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর যাঁরা ধারণা করছেন বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতির নাটকীয় উন্নতি হবে, বাংলাদেশ বিশ্বের কাছে রোল মডেল হয়ে উঠবে, তাঁদের আশা পূরণের উপায়