সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

পোস্টগুলি

ফেব্রুয়ারী, ২০১৯ থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

যুদ্ধকে না বলুন

চির প্রতিদ্বন্দ্বী দুই প্রতিবেশী ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে ২৬ ও ২৭ ফেব্রুয়ারির অঘোষিত আকাশযুদ্ধের ঘটনায় বিশ্ব জুড়েই উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে, যার প্রধান কারণ হচ্ছে ঊভয় দেশের পারমাণবিক অস্ত্রসম্ভার এবং বৈরিতার দীর্ঘ ইতিহাস। যুক্তরাষ্ট্র যখন এশিয়ারই আরেকটি প্রান্ত – কোরীয় উপদ্বীপের বিপারমাণবিকীকরণে মনোনিবেশ করেছে, ঠিক তখনই দক্ষিণ এশিয়ার প্রায় ১৮০ কোটি মানুষ এমন এক লড়াই প্রত্যক্ষ করছে যার পারমাণবিক যুদ্ধে রুপান্তরিত হওয়ার আশংকা একেবারে অমূলক নয়। ২৭ ফেব্রূয়ারি পাকিস্তান ও ভারতের পাল্টাপাল্টি আকাশসীমা লংঘন এবং ভারতীয় একজন বৈমানিক আটক হওয়ার পটভূমিতে যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, ফ্রান্স, চীনসহ বিশ্বের অনেক রাষ্ট্রই অত্যন্ত দ্রুততার সঙ্গে উভয়পক্ষের প্রতি সংযত হওয়ার আহ্বান জানায়। দক্ষিণ এশিয়ার প্রতিবেশীদের মধ্যে এমনকি শ্রীলংকা এবং নেপালও সংযম এবং আলোচনার আহ্বান জানিয়েছে।   সার্কের বর্তমান চেয়ারম্যান হিসাবে নেপাল তার বিবৃতিতে উত্তেজনা প্রশমন ও আলোচনার আহ্বান জানিয়েছে। তবে,এক্ষেত্রে বাংলাদেশের নীরবতা লক্ষ্যণীয়। দক্ষিণ এশিয়ায় সম্ভাব্য পারমাণবিক প্রলয় ঘটলে বাংলাদেশে যে তার আঁচড় লাগবে না, বিষয়টা এমন

দায় এড়ানোর রাজনীতি

একজন মন্ত্রীর ভাষায় যে শহরকে আকাশ থেকে লস অ্যাঞ্জেলেস বা প্যারিসের মত দেখা যায়, সেই ঢাকার আদি বসতির একটি অংশে রাসায়নিক আগুনে ৬৭ জনের মর্মান্তিক মৃত্যুর দুর্ঘটনার দায় কার তা নিয়ে জোর বিতর্ক চলছে। টিভি-রেডিও-পত্রিকার মত প্রতিষ্ঠিত প্রথাগত গণমাধ্যমে যতটা বিচার-বিশ্লেষণ চলছে তার চেয়ে অনেক বেশি এবং তীক্ষ্ণ বিতর্ক চলছে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলোতে। এসব বিতর্কে স্পষ্টতই একধরণের হতাশার দীর্ঘশ্বাস শোনা যায়, যার মূল কথা হচ্ছে এই কান্না-কষ্ট-ক্রোধ অচিরেই সংবাদ শিরোনাম থেকে হারিয়ে যাবে এবং রাসায়নিক বোমার ওপর বসবাসও আগের মতই চলতে থাকবে। ২২ তারিখে সরকারের দায়িত্বশীল ব্যাক্তিদের যে বক্তব্যটি শিরোনাম হয়েছে তা হচ্ছে ‘ পুরান ঢাকা থেকে রাসায়নিক গুদাম সরানো হবে ‘ । ২০১০ সালের জুন মাসের ৩ তারিখে নিমতলীর দূর্ঘটনার পরও ওই একই শিরোনাম পত্রিকাগুলোতে ছাপা হয়েছিলো। সে সময়ের কাগজ ঘেঁটে দেখা গেল তখনও ‘ সব আহতের চিকিৎসার দায়িত্ব নেবে সরকার ‘ এবং ‘ নিহতদের প্রত্যেকের জন্য ১ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ ‘ দেওয়ার খবর ছেপেছিল পত্রিকাগুলো। তখনও আগুন নেভাতে পানির সংকট এবং দমকল বাহিনীর প্রয়োজনীয় সবধরণের সরঞ্জাম না থ

ব্রিটিশ রাজনীতিতে তৃতীয় ধারার সূচনা ?

প্রথমে লেবার পার্টিতে রক্তক্ষরণ। তারপর টোরি পার্টিতে। ব্রিটিশ রাজনীতির সংকটের এক নতুন রুপ। লেবার পার্টি থেকে ৮জন দলত্যাগ করে স্বত্ন্ত্র হিসাবে নিজেদেরকে ঘোষণা দেওয়ার পর এবং তাঁদের সঙ্গে এখন যুক্ত হলেন টোরি পার্টির ৩জন। বুধবার হাউজ অব কমন্সে প্রধানমন্ত্রীর প্রশ্নোত্তরের দিন থাকায় ধারণা করা হচ্ছিলো বিরোধীনেতা জেরেমি করবিন আজ বিব্রতকর পরিস্থিতির মুখোমুখি হবেন। কিন্তু, সকালেই টোরি পার্টির ৩ সদেস্যের দলত্যাগ প্রধানমন্ত্রীর জন্যও বিড়ম্বনার বিষয় হয়ে দাঁড়ায়। ফলে, বাস্তবতাকে অস্বীকারে প্রধানমন্ত্রী মে এবং বিরোধীনেতা জেরেমি করবিন অভিন্ন ভূমিকা নিয়ে নিজ নিজ দলের সংকট এবং দলত্যাগীদের বিষয়ে নীরব রইলেন। ইউরোপ থেকে বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত যে প্রতিষ্ঠিত বড় দুই দলের জন্য কতটা গভীর চ্যালেঞ্জের জন্ম দিয়েছে উভয় দলের নেতারাই সম্ভবত তা বুঝতে ব্যর্থ হয়েছেন। যার পরিণতিতে বিচ্ছেদের গভীরতা কতটা ব্যাপক এবং তার প্রভাব কতটা সহনীয় করে তোলা সম্ভব সে বিষয়ে সরকার এবং বিরোধীদল উভয়েরই নেতৃত্ব ব্যর্থ হওয়ায় এই ভাঙ্গন ত্বরান্বিত হয়েছে। নতুন এই ১১ জনই বলেছেন ব্রিটিশ রাজনীতির মূলধারার দলগুলো বিদ্যমান সংকটের সমাধানে অক

নির্বাচনী মৌসুম ও যুক্তরাষ্ট্রের উদ্বেগ

সংসদে সংরক্ষিত নারী আসনের নির্বাচন, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের উপ-নির্বাচন, উপজেলা নির্বাচন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদগুলোর নির্বাচন – এসব মিলিয়ে বাংলাদেশে এখন নির্বাচনের মৌসুম চলছে। যদিও এগুলোর কোনটিতেই আর রাজনীতির উত্তাপ নেই। এগুলোর মধ্যে ডাকসু বাদ দিলে অন্য সব নির্বাচনী আয়োজনের ফলাফল এখন কার্য্যত ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের অভ্যন্তরীণ ক্ষমতার দ্বন্দ্ব নিরসনের ওপরই নির্ভরশীল। সরকারের ভেতরের কত বড় নেতার আর্শীবাদ কোন প্রার্থীর ওপর আছে, তারই একটা পরীক্ষা হবে এসব আয়োজনে। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতির প্রশংসার মূল্যায়নে যেসব সাময়িকীকে মন্ত্রী, সাংসদ ও বিশেষজ্ঞরা প্রায়শই উদ্ধৃত করেন, তার শীর্ষে আছে ব্রিটিশ সাময়িকী ইকোনমিস্ট। ওই পত্রিকাটির ভাষায়, আমাদের একাদশ সংসদ নির্বাচনটি ছিল স্বচ্ছ্ব জালিয়াতি বা খোলামেলা কারচুপি। কিন্তু, প্রধান নির্বাচন কমিশনার খান মোহাম্মদ নুরুল হুদা অবশ্য বলছেন, সংসদ নির্বাচন যেরকম স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ ছিল, উপজেলা নির্বাচনেও সেরকম স্বচ্ছ, নিরপেক্ষ হতে হবে। সিইসি বলছেন যে প্রয়োজনে নির্বাচন বন্ধ করে দেওয়া হবে, কিন্তু অনিয়মের সঙ্গে আপস করা যাবে না। তাঁর এসব বক্

ভিন্নমত ও প্রতিবাদ দমনের পদক

ছাত্রলীগের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বে নিহত সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সহসম্পাদক দিয়াজ ইরফান চৌধুরীর মায়ের চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মাঠে লুটিয়ে পড়ার ছবিটি দেখে অপরাধীরা ছাড়া আর সবারই বুকটা মোচড় দিয়ে ওঠার কথা। এর আগে ২০১৭ সালের নভেম্বরেও দিয়াজের মা ছেলে হত্যার বিচার চেয়ে আমৃত্যু অনশনে বসে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। হত্যার বিচারের আশ্বাসে তখন তিনি অনশন ভেঙেছিলেন। কিন্তু ২০১৬ সালের নভেম্বরের সেই হত্যাকাণ্ডের তদন্ত এখনো শেষ হয়নি এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যুক্ত একটি গোষ্ঠীর প্রকাশনায় হত্যায় অভিযুক্ত একজনের বাণী ছাপা হয়েছে। অর্থাৎ দলীয় পৃষ্ঠপোষকতায় অভিযুক্ত ব্যক্তির রাজনৈতিক পুনর্বাসন অনেকটাই সাধিত হয়েছে। বিচারপ্রার্থী দিয়াজের মা যখন দেশের একটি শীর্ষস্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মাঠে লুটিয়ে পড়েছেন, ঠিক তখনই ঢাকায় সুপ্রিম কোর্টের আঙিনায় অসহায় অজ্ঞাতনামাদের অবিচার থেকে মুক্তি চাওয়ার আর্তি। ধান বিক্রি করার টাকা খরচ করে পুলিশি হয়রানি থেকে রেহাই পেতে জামিনের জন্য দেশের সর্বোচ্চ আদালতে ধরনা দিয়ে বসে আছেন শত শত মানুষ। এঁদের অনেকেই হয়তো এর আগে কখনো ঢাকায় পা ফেলেননি। বছরের শুরু থেকে দেশের নানা প্রান্ত থেকে জামিনের আশ

ডাকসু নির্বাচন হোক, তবে

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ অনুষদে স্নাতকোত্তর শ্রেণীর নৈশ কোর্সের ছাত্র ওয়ালিদ আশরাফের কথা আমাদের ক ‘ জনের মনে আছে। ২০১৭র ডিসেম্বর এবং গতবছরের এপ্রিলে পরপর দু ‘ বার ডাকসু নির্বাচনের দাবিতে তিনি একাই অনশনে বসেছিলেন। ক্যাম্পাসে অশান্তি সৃষ্টির চেষ্টার অভিযোগে তাঁকে লাঞ্ছিতও করা হয়েছিল। কিন্তু, তিনি একা লড়াই করলেও তাঁর সংগ্রাম ব্যর্থ হয়নি। তাঁর দু ‘ দফা অনশনের মাঝখানে গতবছরের জানুয়ারিতে একই দাবিতে বামপন্থী ছাত্র সংগঠনগুলো আন্দোলন এবং ঘেরাও কর্মসূচি দিলে  নির্লজ্জভাবে  তাদের ওপর হামলা করা হয়েছিল।  ছাত্র-ছাত্রীরা কার্যালয় ঘেরাও করায় অবরুদ্ধ উপাচার্য ছাত্রলীগের নেতাদের ফোন করে তাঁকে উদ্ধারের অনুরোধ জানানোর মত নজিরবিহীন পদক্ষেপ নিয়েছিলেন। ডাকসু নির্বাচনের জন্য ছাত্র-ছাত্রীদের আরেকটি অংশ আদালতের শরণাপন্ন হয়েছিলেন। কিন্তু, আদালতের নির্দেশিত সময়ের মধ্যে নির্বাচন আয়োজনে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ যে মোটেও আগ্রহী ছিলেন না তা বোঝা যায় আদালতের বেঁধে দেওয়ার সময়ের মধ্যে ভোটের আয়োজন না করায়। আদালতের নির্দেশ মেনে চললে ডাকসুর নির্বাচনটি গতবছরের প্রথমার্ধেই সম্পন্ন হয়ে যেত। তবে, অতীতে নির্বাচন ঠেকিয়ে