সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

পোস্টগুলি

জুন, ২০২০ থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

করোনা পরীক্ষার ফি কাটা ঘায়ে নূনের ছিটা

দেশে প্রথমবারের মত করোনা শনাক্ত হওয়ার প্রায় সাড়ে তিন মাস পর করোনা পরীক্ষার জন্য সরকার ফি নির্ধারণ করেছেন। এতোদিন সরকারিভাবে করোনাভাইরাস শনাক্তকরণ পরীক্ষা বিনামূল্যে হওয়ায় সরকার মনে করছে অধিকাংশ মানুষ অপ্রয়োজনে এই পরীক্ষা করিয়েছে। কোনো উপসর্গ না থাকলেও পরীক্ষা করিয়েছে। সরকারের এই মনে করার সঙ্গে বাস্তবতার যে কত ফারাক তা গত কয়েকমাসের পত্রিকাগুলোর প্রথম পাতার ছবিগুলোই বলে দেয়। পাতা ওল্টানোর প্রয়োজন হয় না। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব চিকিৎসা মহাবিদ্যালয়ে লাইনে রোদে পুড়ে অপেক্ষা করতে করতে পরীক্ষা করাতে না পেরে যে অসুস্থ বৃদ্ধ শাহবাগের রাস্তায় মরে পড়েছিলেন, তাঁর কথা এতোদিনে অনেকেই হয়তো ভুলে গেছেন। কিন্তু, মুগদা, শাহবাগ, মহাখালির ফুটপাতে রাতেরবেলাতেও নারী-পুরুষ নির্বিশেষে অসুস্থ মানুষের দীর্ঘসারিতে অপেক্ষার কষ্টকর অভিজ্ঞতা যাঁদের হয়েছে এবং এখনও হচ্ছে তাঁদের জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের আমলাদের এই বক্তব্য কাটা ঘায়ে নুনের ছিটা ছাড়া অন্য কিছু নয়। উপসর্গ নেই কিন্তু তারপরও পরীক্ষা করিয়েছেন – এমন ব্যাক্তি অবশ্যেএকেবারে যে নেই, তা নয়। আর, এই তালিকায় সবার আগে মনে পড়ছে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালিকের কথা

ব্রিটিশ উন্নয়নসহায়তা: নতুন নীতি এনজিওগুলোকে চিন্তায় ফেলবে

যুক্তরাজ্য আবারও বৈদেশিক সাহায্যের পুরোনো ধারায় ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এখন থেকে যেকোনো সাহায্যের শর্তই হবে সরাসরি ব্রিটিশ সরকারের রাজনৈতিক এবং পররাষ্ট্রনীতির লক্ষ্যপূরণ। গত দুই দশকে এই যোগসূত্র ছিল কিছুটা পরোক্ষ । ফলে, বৈশ্বিক পরিসরে ঠিক করা টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যসমূহের (এসডিজি) মতো বিভিন্ন আন্তর্জাতিক লক্ষ্য অর্জনের উদ্যোগে অর্থায়ন অগ্রাধিকার হারানোর আশঙ্কা সত্য হতে চলেছে। বরিস জনসন কনজারভেটিভ পার্টির নেতৃত্বে আসীন হওয়ার সময় থেকেই বৈশ্বিক পরিসরে কাজ করা ব্রিটেনভিত্তিক আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থা বা আইএনজিওগুলো এ রকম আশঙ্কা করছিল। ১৬ জুন প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন ঘোষণা করেছেন যে আগামী সেপ্টেম্বর থেকে আন্তর্জাতিক উন্নয়নসহায়তা বিভাগ ডিএফআইডির বিলোপ ঘটবে এবং বৈদেশিক সহায়তার বিষয়টি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন হবে। তিনি পার্লামেন্টে বলেন, ‘এর লক্ষ্য হচ্ছে আন্তর্জাতিক উদ্যোগে আমাদের সাহায্যকে কূটনীতির সঙ্গে একীভূত করা।’ তাঁর এই ঘোষণায় আইএনজিওগুলো অনেকটাই ক্ষুব্ধ ও হতাশ। সাহায্যসেবা খাতের প্রতিষ্ঠানগুলো এই সিদ্ধান্তের ধাক্কায় বিশেষভাবে হতাশ এ কারণে যে সাম্প্রতিক ইতিহাসের সবচেয়ে বড় ম

DfID’s demise redefines aid

The United Kingdom has once again returned to the old conservative principle that development aid must be tied to political and foreign policy objectives of the donor government, instead of targets set by various global organisations through consensus. Prime Minister Boris Johnson has announced the merger of the Department for International Development (DfID) with the Foreign and Commonwealth Office (FCO) under the control of the Secretary of State. Unveiling his merger plan in the parliament on June 16, PM Johnson said the objective was "to unite our aid with our diplomacy and bring them together in our international effort". This merger move has shocked international development organisations (INGOs) who have been voicing their concerns since the possibility emerged with Johnson's ascension to the leadership. The shock is even greater and deeper as it comes amidst a global pandemic which, undoubtedly, has created the worst humanitarian crisis in many decades at an u

করোনা মোকাবিলা: অন্ধকারে ঢিল ছোড়া ও ভিন্নমত দমন

করোনাভাইরাস সংক্রমণ মোকাবিলায় বাংলাদেশে যা হচ্ছে তাকে অন্ধকারে ঢিল ছোড়ার মতো বলে বর্ণনা করেছেন চীনা বিশেষজ্ঞদলের নেতা ডা. লি ওয়েন ঝিও। বাংলাদেশে নিজেদের অভিজ্ঞতা বিনিময় এবং বিশেষজ্ঞ পরামর্শ দেওয়ার জন্য এই বিশেষজ্ঞদল গত প্রায় সপ্তাহ দুয়েক ধরে অবস্থান করছে এবং বিভিন্ন হাসপাতালের পরিস্থিতি, রোগ শনাক্তকরণ পদ্ধতি সরেজমিন পরিদর্শন করেছেন। তাঁরা সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গেও মতবিনিময় করেছেন। এসপ্তাহেই তাঁরা দেশে ফিরে যাবেন। ডা. লির কাছে যুগান্তর পত্রিকা জানতে চেয়েছিল বর্তমানে বাংলাদেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণ কোন মাত্রায় আছে এবং ভবিষ্যতে এর চেয়েও ভয়াবহ হবে কিনা? যাতে না হয় সেক্ষেত্রে চীনের পরামর্শ কী হবে? এছাড়া যদি হয় তাহলে চীন কিভাবে বাংলাদেশকে সহায়তা করতে পারে? প্রশ্নগুলো আমাদের সবার। তবে, এরকম নিষ্ঠুর সত্য উচ্চারণ করা এখন যে ক্রমশই কঠিন হয়ে পড়ছে তার আলামত মেলে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গ্রেপ্তারের হিড়িক দেখে। ফেসবুকে সমালোচনামূলক মন্তব্যের কারণে আওয়ামী লীগে সক্রিয় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন অধ্যাপকের পরিণতির কথা মোটামুটিভাবে বেশ আলোচিত হয়েছে। প্রতিদিনই এরকম অনেকে গ্রেপ্তার

পুলিশের গোপন তথ্য ফাঁসের তদন্তে সাংবাদিক হয়রানি নয়

করোনাকালে পুলিশ জনগণকে সেবা দেওয়ায়  মানুষের প্রশংসা, সমর্থন পেয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন পুলিশের মহাপরিদর্শক বেনজির আহমেদ ( যারা পুলিশের সমালোচনা করতেন, তারাও   আজ পক্ষে বলছেন, ইত্তেফাক, ১৫ জুন, ২০২০)। তাঁর এই কথায় কিছুটা সত্যতা যে আছে তা মানতেই হয়। কিন্তু, একইসঙ্গে একথাও বলতে হবে যে তাঁর কথায় তিনি পরোক্ষে স্বীকার করে নিয়েছেন এতোদিন তাঁর বাহিনীর এক্ষেত্রে ঘাটতি ছিল। কী কী কারণে এই সংকট তৈরি হয়েছিল মহামারির কালে সেই অপ্রিয় আ লো চনা তুলতে চাই না। বরং, বাহিনীটির যাঁরা দায়িত্বপালনের সময়ে করোনায় আক্রান্ত হয়ে প্রাণ দিয়েছেন তাঁদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাই এবং যে কয়েক হাজার সদস্য অসুস্থ হয়েছেন, এখনও চিকিৎসাধীন আছেন তাঁদের প্রতি সহানুভূতি ও দ্রুত আরোগ্য কামনা করি। তবে, এই সংকটকালেও তাঁদের যেসব পদক্ষেপ নির্বতন বা হয়রানিমূলক এবং আইনসম্মত নয় সেগুলোর সেগুলোর বিষয়ে নীরব থাকা সম্ভব নয়। এরকম একটি পদক্ষেপ যাকে হয়রানি বা ভীতিপ্রদর্শনও বলা চলে, তা হচ্ছে খবরের সূত্র জানার জন্য সাংবাদিকদের পুলিশের দপ্তরে তলব করা। সম্প্রতি ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মোহাম্মদ শফিকুল ইসলামের কাছে একজন সদ্যসাবেক যুগ্মকমি

করোনাকালীন বাজেটের রাজনৈতিক পর্যালোচনা

মহামারির সময়ে শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখাই যখন রোগের সংক্রমণ বন্ধের একমাত্র উপায়, তখন পারিবারিক এবং সামাজিক যোগাযোগে মোবাইল ফোন এবং ইন্টারনেট কতটা অপরিহার্য্য তা বোঝাতে ব্যাখ্যার অপেক্ষা রাখেনা। সেই মোবাইল ফোন ব্যবহারের ওপর কর বাড়ছে। আরও বস্তুনিষ্ঠভাবে বললে বলতে হয়, ফিবছর মোবাইল ব্যবহারের ওপর করের বোঝা চাপানোর কৌশল থেকে সরকার বিচ্যূত হয়নি। এই সিদ্ধান্তের সাফাই দিতে গিয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান বলেছেন অপ্রয়োজনীয় কথা বলার প্রবণতা খুব বেড়ে গেছে। কথা বলতে বলতে রেলের নীচে চাপা পড়ে মারা যায়। রাজস্ব আদায়ের দায়িত্বে থাকা শীর্ষ আমলার এই বক্তব্যে দুটো বিষয় পরিষ্কার। প্রথমত: সরকার চায় মানুষ কম কথা বলুক। ভিন্নমতের প্রতি অসহিষ্ণু সরকার স্বাধীন মতপ্রকাশের পথকে যে ক্রমাগত সংকুচিত করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে, রাজস্বপ্রধানের বক্তব্যে তারই প্রতিধ্বনি ঘটেছে বলে ধরে নেওয়া যায়। তাঁর দ্বিতীয় যুক্তিতে ধারণা মেলে, রেলের নীচে অসর্তকতার কারণে টেলিফোনে কথা বলতে বলতে যাঁরা চাপা পড়ে মারা গেছেন, মোবাইলে কথা বলা সস্তা না হলে তাঁদের হয়তো এমন করুণ পরিণতি হতো না। ট্রেনে কাটা পড়া মানুষটি কোনো মানসিক চাপের মধ্য

ব্রিটেনে ঔপনিবেশিক ইতিহাস যেভাবে ফিরে আসছে

ঔপনিবেশিক অতীতের কুৎসিত চেহারাটার প্রতিবিম্ব দেখতে প্রস্তুত না থাকলেও আটলান্টিক পেরিয়ে আসা   বর্ণবাদবিরোধী আন্দোলনের ঢেউ ইংল্যান্ডের তীরে আছড়ে পড়ায় ব্রিটেন আজ এক নতুন বাস্তবতার মুখোমুখি হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের মিনিয়াপোলিসে পুলিশী নির্যাতনে নিহত জর্জ ফ্লয়েডের হত্যার প্রতিবাদে ফুঁসে ওঠা ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার আন্দোলনের ছোঁয়ায় ব্রিটেনও আলোড়িত হচ্ছে। ঔপনিবেশিক শাসনে বাংলায় (বাংলাদেশ, পশ্চিমবঙ্গ, আসাম ও বিহারের অংশবিশেষ) তেতাল্লিশের ( বাংলা ১৩৫০ সন)   মন্বন্তরে ত্রিশ লাখ মানুষের মৃত্যুর জন্য যাঁকে দায়ী করা হয় সেই উইনস্টন চার্চিল এর ভাস্কর্যকে দুদিন ধরে লোহার পাত দিয়ে তৈরি আবরণে ঢেকে রাখা হয়েছে। বিক্ষোভকারীদের একাংশ এর আগে ওই ভাস্কর্যের গায়ে ‘ বর্ণবাদি ছিলেন ( ওয়াজ রেসিস্ট) ‘ লিখে দিয়েছিলো। ঔপনিবেশিক নৃশংসতার এই কালো অধ্যায় আরও যাদেরকে তাড়া করে ফিরছে, তাঁদের মধ্যে আছেন সপ্তদশ শতকের নিষ্ঠুর সেনাপতি রবার্ট ক্লাইভের ভাস্কর্যও। ১৭৫৭ সালে পলাশীর আম্রকাননে বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব সিরাজোদ্দৌলার পতন হয়েছিল ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির এই সৈনিকের কাছেই। ওই সপ্তদশ শতকেই রয়্যাল আফ্রিকান কোম্পানির হ

করোনা পরিস্থিতি: অর্থনীতির মূলে যাঁরা, তাঁদের উপেক্ষা নয়

দেশভেদে মহামারির সময়ে কঠোর বা ঢিলেঢালা কিংবা সীমিত পরিসরের লকডাউনেও গুরুত্বপূর্ণ কিছু সেবা অপরিহার্য হিসেবে সচল ছিল। এসব জরুরি সেবায় যুক্ত পেশাজীবীরা স্বভাবতই বাড়তি ঝুঁকির মুখে পড়েছেন এবং রোগাক্রান্ত হয়েছেন। অনেকেরই অসময়ে মৃত্যু হয়েছে। লক্ষণীয় হচ্ছে, এসব জরুরি সেবার অধিকাংশ পেশাজীবীকে লকডাউনের মধ্যেও কাজ করতে হয়েছে এবং অপেক্ষাকৃত বেশি বেতনের লোকজন যেখানে বাড়িতে বসে কাজ করার সুযোগ পেয়েছেন, অন্যরা তেমনটি পাননি। অত্যাবশ্যকীয় পেশাজীবীদের মধ্যে আছেন চিকিৎসক ও চিকিৎসাসেবায় নিয়োজিত ব্যক্তিরা, পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য, প্রহরী-চৌকিদার, প্রশাসনের সীমিতসংখ্যক দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারী, গণমাধ্যমকর্মী, ত্রাণকর্মী, পরিচ্ছন্নতাকর্মী, ট্রাক ও জরুরি সেবার যানচালক, বিদ্যুৎ-পানি-গ্যাস-টেলিফোন-ইন্টারনেট সেবা খাতের কর্মী, কিছু ব্যাংকার, সুপার স্টোরের কর্মী, ফার্মেসি ও মুদিদোকানি, কুরিয়ার সার্ভিসের কর্মী প্রমুখ। আর যাঁরা কাজ করেছেন, তাঁরা হলেন গ্রামের কৃষক। আবাদের যত্ন নেওয়া থেকে শুরু করে ধান ও অন্যান্য ফসল তোলার কাজ বন্ধ রাখা যায় না। তবে সেগুলো বিক্রি করায় রাষ্ট্রীয় সহায়তা অথবা তার ন্যায্য দাম