সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

পোস্টগুলি

ফেব্রুয়ারী, ২০১৮ থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

মালদ্বীপের সংকটে কার ছায়া

ভারত মহাসাগরের স্বর্গ হিসেবে খ্যাত দ্বীপরাষ্ট্র, মালদ্বীপের প্রথম গণতান্ত্রিক নির্বাচনে নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ নাশিদ ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পেছনে ভারতের প্রচ্ছন্ন সমর্থন ছিল। বছর দুয়েক আগে লন্ডনে নির্বাসিত জীবনযাপনের সময়ে ব্যক্তিগত আলাপচারিতায় ভারতের প্রতি তাঁর ক্ষোভের কথা প্রকাশ করতে তাই তিনি খুব একটা দ্বিধা করেননি। সেই নাশিদই যখন মালদ্বীপে ভারতের সামরিক হস্তক্ষেপের আহ্বান জানালেন, তখন কিছুটা বিস্মিতই হয়েছি। নাশিদের সময়েই চীন মালদ্বীপে অবকাঠামো খাতে বিপুল বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নেয়। তখনই প্রথম শোনা যায় যে চীন তার নৌবাহিনীর কিছু সম্পদ মালদ্বীপে স্থায়ীভাবে স্থানান্তরের পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছে। প্রেসিডেন্ট নাশিদের ক্ষমতাচ্যুতির পর দায়িত্ব নেওয়া ইয়ামিন সরকার বৈধ না অবৈধ, এই বিতর্কের মধ্যেই ভারতের তৎকালীন কংগ্রেস সরকারের প্রতিরক্ষামন্ত্রী এ কে অ্যান্টনি তড়িঘড়ি করে মালদ্বীপ সফর করেন এবং সাগরে মালদ্বীপের অর্থনৈতিক অঞ্চলের নিরাপত্তা (উপকূল থেকে ২০০ নটিক্যাল মাইল পর্যন্ত) নজরদারিতে সহায়তার প্রস্তাব দেন। এ রকম পটভূমিতে নাশিদের ভারতের শরণাপন্ন হওয়া বিস্ময়ের ব্যাপার বৈকি। ২০১৬ সালের ১২ এপ্রি

শুধু বিএনপিই কি সংকটে?

নির্বাচনের বছরে দুর্নীতির মামলায় রাজনৈতিক মঞ্চের অন্যতম প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী দলের শীর্ষ নেত্রীর কারাদণ্ড দেশের রাজনীতিতে যে দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ফেলবে, সে বিষয়ে বিশ্লেষকেরা মোটামুটি একমত। ক্ষমতাসীন জোটের প্রধান দল, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের অবশ্য বলেছেন, খালেদা জিয়ার সাজার কারণে জাতীয় রাজনীতিতে কোনো সংকট হয়নি; বরং বিএনপির অভ্যন্তরীণ সংকট ঘনীভূত হলো। ক্ষমতাসীন দলের সব স্তরের নেতা-কর্মীদের নিত্যদিনের বক্তৃতার বিরাট অংশজুড়ে যখন থাকে শুধু বিএনপির সমালোচনা, সেখানে বিএনপির সংকট কীভাবে জাতীয় রাজনীতির সংকট নয়, সেই ব্যাখ্যা অবশ্য তিনি দেননি। তবে সম্ভাব্য ব্যাখ্যা অনেকগুলোই হতে পারে। প্রথমত, দুর্নীতি, নাশকতা ও হত্যা মামলার চাপে নাজেহাল বিএনপির সামনে নির্বাচনে অংশগ্রহণের কোনো বিকল্প নেই। ২০১৪ সালের বিনা ভোটের নির্বাচনে অংশ না নেওয়াকে তারা ভুল হিসেবে মেনে নিয়েছে, এমন ধারণা এ ক্ষেত্রে প্রবল। তা ছাড়া, পরপর দুবার নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করলে দলটি নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধন এবং দলীয় প্রতীক ধানের শীষও হারাতে পারে (স্থানীয় সরকার নির্বাচনে অংশগ্রহণের কারণে সম্ভবত সেই ঝুঁকি কেটে গেছে)। তবে এ

ডিএসইতে হস্তক্ষেপের রাজনৈতিক নয়, নাগরিক প্রতিবাদ!

এশিয়ার দুই প্রতিদ্বন্দী চীন ও ভারতের আঞ্চলিক আধিপত্য বিস্তারের রাজনীতি যখন বাংলাদেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) কৌশলগত মালিকানার বিদেশি অংশীদার বাছাইপ্রক্রিয়ায় কালো ছায়া ফেলেছে এটি আর নতুন কোন খবর নয়। সরকার এবং রাজনৈতিক দলগুলো যে বিস্ময়কর নীরবতা পালন করছে তার রহস্যজনক হলেও কী একেবারে অপ্রত্যাশিত?  নির্বাচনের বছরে নিকট প্রতিবেশিকে ক্ষুব্ধ করতে পারে এমন প্রতিক্রিয়া রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য এড়িয়ে যাওয়া নিরাপদ বিবেচিত হওয়াই তো স্বাভাবিক! ২০১৪ ‘ র   শিক্ষা এতো তাড়াতাড়ি তো ভুলে যাওয়ার কথা নয়। এই পটভূমিতে নাগরিক সমাজের একটি সংগঠন যে এর প্রতিবাদ জানিয়েছে সেই খবরটি তাৎপর্য্যর্পূণ। শুক্রবার ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) এক বিবৃতিতে ডিএসইর কৌশলগত বিদেশি অংশীদার বাছাই প্রক্রিয়ায় ভারতীয় দরদাতা প্রতিষ্ঠানের ‘ অবৈধ হস্তক্ষেপের ’ নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে ।  একইসঙ্গে, তারা  ভারতীয় দরদাতা প্রতিষ্ঠানের ‘ অবৈধ হস্তক্ষেপের ’ পটভূমিতে বাংলাদেশের শেয়ারবাজারের নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠান সিকিউরিটি এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) ‘ অনৈতিক চাপ সৃষ্টির ’ ও প্রতিবাদ জানিয়েছে।

নির্বাচনী রাজনীতিতেই খালেদার রায় প্রশ্নবিদ্ধ

বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ মামলার রায়ের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পক্ষে-বিপক্ষে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। অধিকাংশই আবেগপূর্ণ, তবে দলীয় আনুগত্যের বাইরেও কিছু মন্তব্যে খুবই তাৎপর্যপূর্ণ প্রশ্ন তুলে ধরা হয়েছে। খালেদা জিয়া যদি আজ ক্ষমতায় থাকতেন, তাহলে তাঁর বিরুদ্ধে এক-এগারোর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দায়ের করা মামলাগুলোর একটিও কি সচল থাকত? হয় সেগুলো সরকারি সিদ্ধান্তে প্রত্যাহার হয়ে যেত, নয়তো অভিযোগ গঠন বা মামলা দায়েরের ক্ষেত্রে নানা পদ্ধতিগত ত্রুটি বের হতো এবং হাইকোর্টে সেগুলো টিকত না। বিপরীতে এক-এগারোর তত্ত্বাবধায়ক সরকার শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে যেসব মামলা দিয়েছিল, সেগুলো সব কি সচল হতো না? তখনো কি তাঁকে হয়রানি করতে চাইলে বঙ্গবন্ধু চ্যারিটেবল ট্রাস্টের মামলাটিকেই বেছে নেওয়া হতো না? আসলে যাঁরা বলতে চান যে রাজনীতিই এখানে বড় কারণ, তাঁদের বক্তব্য একেবারে নাকচ করে দেওয়া যায় না। রাজনীতিতে ক্ষমতা যাঁদের হাতে, তাঁদের জন্য সবই ঠিক, আর যত অন্যায়, সেগুলোর দায় বিরোধীদের-এই প্রথা বহুদিন ধরেই চলে আসছে। ক্ষমতায় থাকলে সর্বোচ্চ আদালতের রায় পছন্দ না হলে প্রধান বিচারপতিকে অপবাদ ও চা

ন্যায়বিচার, অবিচার ও রাজনীতি

স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশে সম্ভবত এই প্রথম এমন একটি মামলার রায় হতে যাচ্ছে রাজনীতিতে যার প্রভাব বহুদিন ধরেই অনুভূত হবে। রাজনীতিকদের জবাবদিহিতা এবং বিচারের ভার জনতার আদালতে বলে একটি কথা বহুলপ্রচলিত। কিন্তু, আইনের আদালতেও যে অপরাধের জবাবদিহিতার বিষয় আছে সেকথা অস্বীকারের কোনো উপায় নেই। স্বাধীনতা পরবর্তী বাংলাদেশের অর্ধেকেরও বেশি সময়ের রাজনীতি যে দুজন নেত্রীকে ঘিরে আবর্তিত হয়েছে তাঁদেরই একজন, দশ বছর প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালনকারী, অন্যতম প্রধান একটি রাজনৈতিক দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া হলেন ওই মামলার প্রধান অভিযুক্ত।এই মামলা নিয়েও রাজনীতির অঙ্গণ উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে এবং বিরোধীদল যতটা না উত্তাপ তৈরি করতে পেরেছেন, তার চেয়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগীরা করেছেন অনেক বেশি।  দেশে যখন রাষ্ট্রপতি-শাসিত সরকারব্যবস্থা চালু ছিল তখন বেআইনীভাবে ক্ষমতাদখল করে সরকার পরিচালনায় দূর্নীতির জন্যে এর আগে আরেকটি রাজনৈতিক দলের প্রধানকেও আদালতে বিচারের মুখোমুখি হতে হয়েছে এবং তিনি দন্ডিতও হয়েছেন। কিন্তু, সাবেক সামরিকশাসক এবং দূর্নীতিবাজ রাজনীতিক এরশাদের বিচার এবং রায় নিয়ে তেমন কোনো রাজনৈতিক উত্তাপ ছিল না।

ভিভিআইপি লেনের কথাও ভাবুন!

মন্ত্রীসভায় গুরুত্বর্পূণ ব্যাক্তি ও জরুরি সেবাখাতের জন্য রাজধানী ঢাকার রাস্তায় আলাদা লেন করার প্রস্তাব ওঠায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তুমুল সমালোচনা শুরু হয়েছে। যাঁরা 'উন্নয়ন দেখেন না' কিম্বা 'গাধার মত সরকার পতনের অপেক্ষায় থাকেন', তাঁরাই কেবল এমনটি বলতেই পারেন। যুক্তরাষ্ট্র বা ব্রিটেনের মত উন্নত দেশগুলোতেও এরকম কিছু নেই বলে যাঁরা যুক্তি দিচ্ছেন তাঁরা ভুলে গেছেন ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ উন্নত দেশের নতুন এক নজির স্থাপন করবে। অন্যদেশে ভিআইপি লেন নেই বলে ঢাকায় থাকতে পারবে না এমন ধারণা যাঁরা পোষণ করেন তাঁরা কি অন্য আরেকটি দেশের নাম বলতে পারবেন যেখানে মন্ত্রী-এমপি-সচিব সাহেবরা রাস্তার উল্টোদিকে গাড়ি চালান? সাংবাদিকরাও ভিআইপি হয়ে যান এবং ‍পুলিশ কনস্টেবল উল্টোপথে যেতে না দিলে ইন্সপেক্টর জেনারেলকে ফোন করেন?   সময় রক্ষার জন্য ভিআইপিরা উল্টোপথে গাড়ি নিয়ে গেলে টেলিভিশন ক্যামেরা নিয়ে দিনের পর দিন প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তাদের সরাসরি সম্প্রচরে জনসম্মক্ষে হেনস্থা হওয়া থেকে মুক্তির বিকল্প কি? ভিআইপি লেন হলে তাঁদের তো আর উল্টোপথে চলতে হবে না? আইন অমান্যের অভিযোগও শূণ্যের ঘরে নেমে আ

আরও একটি পদত্যাগ

আড়াই মাসেরও বেশি সময় পর দেশের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পদের শূণ্যতা পূরণ করেছেন রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ। দোসরা ফেব্রুয়ারি তিনি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনকে প্রধান বিচারপতি নিয়োগ করেছেন। নভেম্বরের ১২ তারিখে সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্রকুমার সিনহা সরকারের অদৃশ্য চাপের মুখে পদত্যাগ করলে আপিল বিভাগের জেষ্ঠতম বিচারপতি আব্দুল ওয়াহ্হাব মিয়াকে একমাসের জন্য ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি নিয়োগের কথা ঘোষণা করে রাষ্ট্রপতি প্রজ্ঞাপন জারি করেন। প্রজ্ঞাপনের সময় পার হওয়ার পরও প্রায় তিন মাস বিচারপতি ওয়াহ্হাব মিয়া ওই দায়িত্বপালন অব্যাহত রাখেন। একটানা প্রায় এগারো সপ্তাহ এবং তার আগে এস কি সিনহা ছুটিতে থাকার মাসাধিককাল তিনি ভারপ্রাপ্ত হিসাবে দায়িত্বপালন করলেও প্রধান বিচারপতি পদে তাঁকে নিয়োগ করা হয়নি। অত:পর বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনকে প্রধান বিচারপতি নিয়োগের ঘোষণার কয়েকঘন্টার মধ্যেই ব্যাক্তিগত কারণ দেখিয়ে বিচারপতি ওয়াহ্হাব মিয়া পদত্যাগ করেছেন। সাবেক প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার অস্বাভাবিক বিদায়কে ঘিরে যে বিতর্কের সূত্রপাত তার পটভূমিতে রয়েছে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা সংসদের হাতে নিয়ে আসার

সাংবাদিকতা গুপ্তচরবৃত্তি নয়, অপরাধও নয়

মতপ্রকাশের স্বাধীনতা যে সংকুচিত হতে হতে একটি বৃত্তের মধ্যে আটকা পড়তে যাচ্ছে এই আশংকার কথা বেশ কয়েকবছর ধরেই উচ্চারিত হয়ে আসছে। এখন মন্ত্রীসভায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের খসড়া অনুমোদিত হওয়ার পর আবার নতুন করে এই আলোচনা শুরু হয়েছে। সাংবাদিকতা এবং লেখালেখির পেশায় যাঁরা আছেন তাঁদের প্রতিক্রিয়ায় প্রধানত দুটো ধারা স্পষ্ট হয়েছে।একটি হচ্ছে স্বাধীনভাবে মতপ্রকাশের সুযোগ পুরোপুরি বিলীন হয়ে যাবে এবং ক্ষমতাসীনদের ভাষ্যের বাইরে অন্য কিছু আর প্রকাশ করা সম্ভব হবে না। যাঁরা এমনটি ভাবছেন তাঁদের মধ্যে আতঙ্ক এবং হতাশার ছাপটা স্পষ্ট।   দ্বিতীয় ধারাটি হচ্ছে রাজনৈতিক আনুগত্যের এবং তাঁরা এখনও বিশ্বাস করেন সরকার তাঁদের পরামর্শে কান দেবেন এবং খসড়াটি শেষপর্যন্ত বদলে আইনটি গণমাধ্যমবান্ধব হবে। মতপ্রকাশের স্বাধীনতা সংকুচিত হওয়ার প্রভাব যে শুধুমাত্র গণমাধ্যমের গন্ডিতে সীমাবদ্ধ থাকে না তা আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক থেকে শুরু করে রাজনৈতিক কর্মী এবং সাধারণ নাগরিকদের অনেকের দন্ডিত হওয়ার ঘটনায় দেখেছি। কিন্তু, সরকারবিরোধী রাজনীতির দৈন্যদশা এবং নাগরিক সমাজের অগ্রসর অংশের মধ্যে দোদুল্যমানতা অথবা সু্বিধাবাদিতার পিছুটানের