সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন: বাতিল ছাড়া অপব্যবহার বন্ধ হবে কীভাবে

 গত প্রায় সাড়ে চার বছরের মামলার যেসব হিসাব বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও গবেষকরা করেছেন, তাতে স্পষ্ট হয়েছে, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন প্রয়োগ হয়েছে মূলত সরকার কিম্বা ক্ষমতাসীন দলের সমালোচনা এবং মুক্তচিন্তা দমনে। এসব মামলার অধিকাংশই হয়েছে নেতা কিম্বা রাষ্ট্রের মর্যাদাহানির অভিযোগ তুলে। তারপর আছে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগ। মামলায় সংক্ষুব্ধ পক্ষ সব সময় রাষ্ট্র বা সরকার না হলেও সরকারের মদদপুষ্ট কিম্বা ক্ষমতাসীন দলের সঙ্গে সম্পর্কিত ব্যাক্তিরা। আইনটি ভিন্নমত, সমালোচনা ও মুক্তচিন্তা দমনে সবচেয়ে কার্যকর হাতিয়ার হয়ে উঠেছে যে কারণে তা হলো, আইনটির অনেকগুলো ধারাই অজামিনযোগ্য। ফলে কাউকে শিক্ষা দিতে হলে জেলের ভাত খাওয়ানোর এক মোক্ষম অস্ত্র হচ্ছে এটি, যেমনটি এককালে ছিল বিশেষ ক্ষমতা আইন। 


ঈদের ছুটির আগে ট্যাবলয়েড পত্রিকা মানবজমিনে পাশাপাশি দুটো সংবাদ প্রকাশ করেছিল। ’ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা’ অভিন্ন শিরোনামের নিচে পাশাপাশি ছাপা হওয়া সংবাদ দুটির নিজস্ব শিরোনাম ছিল যথাক্রমে – ’মেয়েটার কিডনিতে সমস্যা’ এবং ’ঋণ করে ছেলের মামলার খরচ যোগাচ্ছি’। মামলায় অভিযুক্ত দুজন সদ্য কৈশোর পেরুনো তরুণ–তরুণীর মায়েদের বক্তব্যের অংশবিশেষ ছিল শিরোনাম। যে মেয়েটার কথা তাঁর মা বলেছেন, তিনি হলেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী খাদিজাতুল কুবরা, যিনি কারাগারে আটক আছেন আট মাস ধরে। দুদিন পর খাদিজার মা ফাতেমা খাতুন প্রথম আলোকেও তাঁর দু:খের কথা বর্ণনা করে বলেছেন, ”যেদিন থেকে আমার মেয়ে কারাগারে, সেদিন থেকে আমাদের অশান্তি শুরু। এখন মেয়েকে কারাগারে রেখে আমরা কীভাবে ঈদ উদ্‌যাপন করব?” খাদিজার বিরুদ্ধে অভিযোগ অনলাইনে সরকারবিরোধী বক্তব্য প্রচার এবং বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণের। হাইকোর্ট গত ফেব্রুয়ারিতে তাঁকে জামিন দিলেও রাষ্ট্রপক্ষের আপিলের  আবেদনের পর তা আপিল বিভাগের শুনানির জন্য এখন অপেক্ষমান আছে। 


ঋণ করে ছেলের মামলার খরচ যোগানোর কথা বলেছেন ময়মনসিংহের ভালুকার খোদেজা বেগম, যাঁর ছেলে মো ইমন এখন কিশোর, বয়স ১৭ বছর। যখন ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় তাকে কারাগারে পাঠানো হয়, তখন তার বয়স ছিল ১৫ বছর। নবম শ্রেণির ছাত্র থাকা অবস্থায় মোবাইল ফোন কোম্পানি অতিরিক্ত টাকা কেটে নেয়ায় ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়ার কারণে তার বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন স্থানীয় যুবলীগের এক নেতা। টাকা দিলে মামলা করা হবে না – এমন প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় যুবলীগের ওই নেতা মামলা করেন। সপ্তাহ দুয়েক জেল খাটার পরই ছেলেটার জামিন হয়। কিন্তু এখন জমি বেচে মামলার খরচ জোগাতে হচ্ছে। 


আইনটি তৈরির সময়ে জনমত বিবেচনায় নেওয়ার কোনো প্রয়োজন হয়নি। কেননা, যে সংসদে এটি অনুমোদিত হয়েছিল, সেটি ছিল বিনা প্রতিদ্বন্দিতায় গঠিত প্রায় একদলীয় , প্রকারান্তরে একজোটীয় সংসদ। ওই সংসদ তার মেয়াদ শেষ হওয়ার ঠিক পূর্ব মুহুর্তে তড়িঘড়ি আইনটি পাশ করায় প্রশ্ন ওঠে যে বিরোধী মতকে দমন ও হয়রানির উদ্দেশ্যেই এটি করা হয়েছে। নাগরিক সমাজের প্রবল আপত্তির মুখে আইনটি সংশোধনের অঙ্গীকার করা হলেও তা হয়নি। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞদের মতামত নেওয়া হবে। জেনেভায় জাতসংঘের মানবাধিকার সংস্থার দপ্তর আর ঢাকার মধ্যে চিঠি–চালাচালি ও সফর বিনিময়ের আমলাতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় পার করা হয়েছে প্রায় পাঁচ বছর।   


গত বছরের জুনে জাতিসংঘ সংস্থাটি তার চূড়ান্ত সুপারিশমালা দেওয়ার পরও সেগুলো নিয়ে আরো আলোচনার কথা বলে চলছে সময়ক্ষেপণ। এখন জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের প্রধান ফলকার টুর্ক আইনটি স্থগিত করার আহ্বান জানানোর পর বলা হচ্ছে আইনটি কোনোমতেই বাতিল করা যায় না। আইনটি স্থগিত করতে অস্বীকৃতির অর্থ হচ্ছে, এটি বাতিল তো দূরের কথা, এর কোনো সংস্কারের আদৌ কোনো ইচ্ছে সরকারের নেই।  ফলকার টুর্কের বিবৃতির পর আইনটিতে জাতিসংঘ সংস্থাটি কী কী পরিবর্তন চায় তার সুপারিশমালা প্রকাশ করায় আমরা তাদের এতদিন অপ্রকাশিত উদ্বেগের খুঁটিনাটিও জানতে পেরেছি। তারা এ আইনের দুটি ধারা পুরোপুরি বাতিল এবং আরও আটটি ধারা সংশোধনের পরামর্শ দিয়েছে, যেগুলোর সবই মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, তথ্যপ্রবাহ অবাধ করা এবং স্বাধীন সাংবাদিকতার জন্য জরুরি। যে দুটি ধারা – ২১ ও ২৮ পুরোপুরি বাতিলের কথা তারা বলেছে, সে দুটোই নাগরিকদের স্বাধীনভাবে চিন্তা ও মত প্রকাশের জন্য আবশ্যক ও গুরুত্বপূর্ণ। 


আইনমন্ত্রী আনিসুল হক তাই খোলাসা করে বলেছেন যে ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনের বিতর্কিত ২১ ও ২৮ ধারা বাতিল করা হবে না। কী আছে ওই ধারা দুটিতে? ধারা ২১–এ বলা হচ্ছে, ”কোনো ব্যক্তি ডিজিটাল মাধ্যমে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, জাতির পিতা, জাতীয় সংগীত বা জাতীয় পতাকার বিরুদ্ধে কোনো প্রকার প্রপাগান্ডা ও প্রচারণা চালান বা উহাতে মদদ প্রদান করেন,” তাহলে তিনি অনধিক ১০ বছর কারাদণ্ড, বা অনধিক এক কোটি টাকা অর্থদণ্ড, বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন। আর ধারা ২৮–এ বলা হচ্ছে, কেউ "ওয়েবসাইট বা কোনো ইলেকট্রনিক বিন্যাসে এমন তথ্য যা ধর্মীয় মূল্যবোধ বা অনুভূতিতে আঘাত করে" প্রকাশ করলে এ অপরাধের সাজা পাঁচ বছরের কারাদন্ড কিম্বা জরিমানা এবং অপরাধ আবার করলে সাজা ১০ বছর। 


যে আটটি ধারা সংশোধনের জন্য জাতিসংঘ সংস্থাটি সুপারিশ করেছে, সেগুলোর ক্ষেত্রে প্রধানত: যে সমস্যা তারা চিহ্ণিত করেছে, তা হচ্ছে অপরাধের সংজ্ঞায়ন। এ সংজ্ঞায়ন এতো ব্যপকভাবে বিস্তৃত ও অস্পষ্ট যে তা আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা ও কর্তৃপক্ষের হাতে এতো ক্ষমতা তুলে দিয়েছে, তাতে আইনের অপপ্রয়োগ ঘটার সুযোগ তৈরি হয়েছে।  


জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা আর যে কথা স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন, তা হলো বাংলাদেশ আর্ন্তজাতিক নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকার সনদ ( ইন্টারন্যাশনাল কভনেন্ট অন সিভিল এন্ড পলিটিকাল রাইটস) , আইসিসিপিআর এর স্বাক্ষরদাতা হিসাবে ওই সনদের অঙ্গীকারগুলো লঙ্ঘন করতে পারে না। ওই সনদ রাষ্ট্রপ্রধানসহ সর্বোচ্চ রাজনৈতিক কর্তৃত্ব প্রয়োগকারী এবং অন্যান্য সব জনব্যক্তিত্বকে সমালোচনা করার অধিকার দিয়েছে। তাছাড়া সমালোচিত ব্যক্তির পরিচয় শাস্তির মাত্রা নির্ধারণের ভিত্তি হতে পারে না। ঐতিহাসিক তথ্য সম্পর্কে মতামত প্রকাশের প্রশ্নে শাস্তিমূলক আইন মত প্রকাশের স্বাধীনতার অধিকারকে লঙ্ঘন করে। ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের প্রশ্নেও তাদের বক্তব্য স্পষ্ট। এ বিষয়ে ডিজিটাল আইনের বিধিটি আইসিসিপিআরের এর সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়, কারণ কোনো ধর্মের প্রতি অশ্রদ্ধা যদি বৈষম্য, বৈরিতা বা সহিংসতায় উস্কানির পর্যায়ে উপনীত না হয়, তাহলে তা অপরাধ নয়। ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের মামলায় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সদস্যদের অনানুপাতিক হারে বেশি হেনস্থা হওয়ার অভিযোগও সম্প্রতি জোরালোভাবে উচ্চারিত হচ্ছে। 


সাংবাদিকতার জন্য গুরুত্বপূর্ণ আরও যেসব ধারা সংশোধনের জন্য তারা বলেছে, তার মধ্যে আছে মানহানিকে ফৌজদারি অপরাধ গণ্য না করে দেওয়ানি অর্থাৎ আর্থিক ক্ষতিপূরণের মাধ্যমে বিরোধ  নিষ্পত্তি, সত্য প্রকাশ ও জনস্বার্থের প্রয়োজনীয়তাকে স্বীকৃতি দিয়ে সম্ভাব্য অপরাধের দায় থেকে অব্যাহতি। তা ছাড়া ইন্টারনেটে তথ্যপ্রবাহ আটকানো ও অপসারণে নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠানের ক্ষমতা খর্ব করে বিচারিক তদারকির ব্যবস্থা নিশ্চিত করার কথাও সুপারিশমালায় রয়েছে।   


আইনটিতে গলদ এত বেশি, যা সংশোধনের কথা বলা এখন অর্থহীন। তাই বিদ্যমান আইনটি বাতিল করে জাতিসংঘ সংস্থার সুপারিশের আলোকে নতুন করে চিন্তা করাই হবে যৌক্তিক। নওগাঁয় রাবেয়া সুলতানার মৃত্যু কিম্বা প্রথম আলোর সম্পাদক ও সাংবাদিকের হেনস্থার পটভূমিতে দেশ ও দেশের বাইরে সমালোচনা ও প্রতিবাদের মুখে আইনমন্ত্রীও এখন বলতে বাধ্য হয়েছেন, এর অপপ্রয়োগ কমানোর চেষ্টা করা হচ্ছে এবং তা বন্ধের ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যে আইন সুরক্ষার বদলে অপপ্রয়োগের হাতিয়ারে পরিণত হয়েছে, সেটি বাতিল ছাড়া তার অপপ্রয়োগ বন্ধ হবে কীভাবে? একই সঙ্গে জাতিসংঘের সুপারিশমালায় হয়রানির শিকার সবাইকে যে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা বলা হয়েছে, সে প্রস্তাবও মেনে নেওয়া প্রয়োজন।  সুলতানা জেসমিনের পরিবার, খাদিজাতুল কুবরা কিম্বা ইমনরা নিশ্চয়ই ক্ষতিপূরণ পাওয়ার দাবি রাখে। 


(২৭ এপ্রিল, ২০২৩–এর প্রথম আলো পত্রিকায় প্রকাশিত।)



মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বে স্বৈরশাসকের ফেরা সহজ

  গণতন্ত্রে উত্তরণে ব্যর্থতা ও স্বৈরতন্ত্রের নিকৃষ্টতম রুপ প্রত্যক্ষ করার পর অর্ন্তবর্তী সরকারের মেয়াদকালে যে সব বিষয়ে সংস্কারের আলোপ চলছে, তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে নির্বাচনব্যবস্থা। এরশাদের সামরিক স্বৈরাচারের পতনের পর নির্বাচনকে গণতন্ত্র চর্চার মাধ্যম হিসাবে যেভাবে প্রতিষ্ঠার কথা ছিল, তা থেকে প্রধান দুই দলই বিচ্যূত হয়েছিল। পরিণতিতে নির্বাচন শুধু ক্ষমতা দখলের হিংসাত্মক খেলায় পরিণত হয় এবং শেষ পর্যন্ত শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ সাধারণ মানুষের ভোটের অধিকার হরণ করে নির্বাচনকে নানা রকম প্রহসনে পরিণত করে।  এই সমস্যার এক অতি সরলীকৃত সমাধান হিসাবে বলা হচ্ছে, দ্বিদলীয় রাজনীতির বৃত্ত থেকে বেরিয়ে দেশে সত্যিকার বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে। আর বহুদলীয় গণতন্ত্রের জন্য নির্বাচনব্যবস্থায় আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বের ধারণাকে একমাত্র বা চূড়ান্ত সমাধান হিসাবে তুলে ধরা হচ্ছে।  সংখ্যানুপাতিক বা আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতির নির্বাচনে একটি দল যত শতাংশ ভোট পাবে, সে অনুপাতে তারা সংসদের আসন পাবে। এ আনুপাতিক পদ্ধতিতে প্রার্থীদের নাম দল আগাম ঘোষণা করতেও পারে, আবার না–ও পারে। নাম প্রকাশ করা হলে সেটা হব...

How to Describe the Awami League Accurately?

In an article titled ‘How Not to Describe the Awami League’ , published in this paper, British journalist David Bergman rightly underscores the importance of accuracy in labeling a political party—particularly when such labels carry potential legal consequences. Those familiar with Bergman’s work over the years know that he has consistently taken on politically sensitive and controversial subjects, often at significant personal and professional cost. His courage and commitment to journalistic integrity deserve recognition. Bergman is correct in asserting that “while serious criticisms of the Awami League are both valid and necessary, they must be proportionate and grounded in fact.” His analysis focuses primarily on the legal validity and appropriateness of labeling the Awami League as “fascist” or “Nazi.” He argues that comparing the party to the Nazi regime trivialises the scale of Nazi atrocities and misrepresents the complexities of Bangladeshi politics. Indeed, any historical comp...

সংবিধান সংস্কারে জাতীয় সমঝোতা কি অসম্ভব কিছু

সংবিধান সংস্কার কমিশন সংবিধান নিয়ে যে জনমত সংগ্রহ ও জাতীয়ভিত্তিক সংলাপগুলো করছে, তাতে বেশ ভালোই সাড়া মিলছে বলে আভাস পাওয়া যাচ্ছে। প্রায় প্রতিদিনই বিভিন্ন নাগরিক গোষ্ঠী, রাজনৈতিক দল, বিদ্বজ্জনেরা কেমন সংবিধান দেখতে চান, তা নিয়ে বিতর্ক ও মতবিনিময় করছেন। দেশের রাজনৈতিক ভবিষ্যত নির্ধারণের মৌলিক ভিত্তি তথা রাষ্ট্রকাঠামো ও ক্ষমতার বিন্যাস সম্পর্কে নাগরিকদের এতটা উৎসাহ সম্ভবত: এর আগে আর দেখা যায়নি। সংস্কার কমিশনের সূত্র থেকে জেনেছি, অনলাইনে তাঁরা অভূতপূর্ব সাড়া পেয়েছেন এবং মতামত দেওয়ার জন্য সপ্তাহখানেক সময় বাকি থাকতেই ৩০ হাজারেরও বেশি পরামর্শ তাঁদের কাছে জমা পড়েছে। নাগরিকদের এ আগ্রহ থেকে যে বার্তাটি স্পষ্ট হয়, তা হচ্ছে তাঁরা চান তাঁদের মতামত যেন গুরুত্ব পায়। দীর্ঘ ১৫ বছরের স্বৈরশাসনে ক্ষমতাধরদের কিছু বলার বা তাঁদের প্রশ্ন করার কোনো অধিকার সাধারণ মানুষের ছিল না। প্রতি পাঁচ বছরে একবার ভোটের মাধ্যমে প্রতিনিধি নির্বাচনের যে অধিকার, সেটুকুও তাঁরা হারিয়েছিলেন। এই পটভূমিতে নাগরিকদের প্রথম চাওয়া হচ্ছে, তাঁদের হারানো অধিকার ফিরে পাওয়া। ভোট দেওয়ার অধিকার, কথা বলার অধিকার, প্রশ্ন করার অধিকার, সংগঠন করার...