সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

ভারতের নির্বাচনে বাংলাদেশের ভাবনার কিছুই কি নেই

 আপনি এই লেখা যখন পড়ছেন, তার মাত্র ২৪ ঘন্টা পরই সংখ্যার বিচারে বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্র ভারতে সাধারণ নির্বাচনের প্রথম ধাপের ভোট গ্রহণ শুরু হবে। রাজনৈতিক পন্ডিতদের অধিকাংশই ধরে নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তৃতীয় মেয়াদে নির্বাচিত হতে চলেছেন। অবশ্য নির্বাচনের আগে বিরোধী দলগুলোর বিরুদ্ধে যে ধরণের ধরপাকড় হয়েছে, তাতে অনেকে ভাবছেন, প্রধানমন্ত্রী মোদির বিজেপি ভেতরে ভেতরে হয়তো বিজয়ের ব্যাপারে আস্থা পাচ্ছে না এবং সেকারণেই বিরোধীদের কোণঠাসা করার সবরকম চেষ্টাই চলছে। না হলে খোদ দিল্লির মূখ্যমন্ত্রীকে গ্রেপ্তার, প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসের আয়ের ওপর বকেয়া কর দাবি করে ব্যাংক হিসাব জব্দের মতো ঘটনার কোনো জুতসই ব্যাখ্যা তাঁরা খুঁজে পাচ্ছেন না। 


এতসব নাটকীয়তা আমাদের প্রতিবেশীর ঘরে ঘটছে, কিন্তু আমাদের দেশে তেমন কোনো আলোচনা–বিশ্লেষণ নজরে পড়ে না। আমাদের নির্বাচনের আগে ভারতীয় সাংবাদিক ও বিশ্লেষকদের ( সাবেক কূটনীতিক) পদচারণ ঢাকায় কতটা অনুভূত হয়েছে, তা নিশ্চয়ই এখনও স্মৃতিতে ফিকে হয়ে যায়নি। দিল্লিতে ভারত সরকারের মুখপত্রকেও বিভিন্ন সময়ে নানা প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয়েছে। কিন্তু বিপরীতে আমাদের কোনো সংবাদমাধ্যম ঢাকা থেকে ভারতের নির্বাচনের খবর সংগ্রহ করতে গেছেন বলে জানা যায় না। অন্তত: কারও কোনো প্রতিবেদন চোখে পড়েনি। প্রথম আলোসহ কয়েকটি পত্রিকার প্রতিনিধিরা অবশ্য খবর পাঠাচ্ছেন। কিন্তু ১৪০ কোটি মানুষের দেশে প্রায় ৪০ দিন ধরে পাঁচ পর্যায়ে যে ভোট হবে, তা যতটা বৈচিত্র্যপূর্ণ এবং রাজ্যগুলোর আঞ্চলিক স্বার্থের যেসব জটিল সমীকরণ, তার নিবিড় পর্যবেক্ষণ পেতে নি:সন্দেহে অনেক বেশি উদ্যোগ ও চেষ্টা প্রয়োজন। 

ভারতের নির্বাচনের সম্ভাব্য ফল বাংলাদেশের ওপর কী প্রভাব ফেলতে পারে, তা নিয়েও আমাদের বিশ্লেষকরা অনেকটা মৌনব্রত অনুশীলন করছেন। এর একটা সম্ভাব্য ব্যাখ্যা হতে পারে এই যে ভারতের নির্বাচনে বিজেপি বা কংগ্রেসের নেতৃত্বাধীন ইন্ডিয়া জোট যে–ই ক্ষমতায় আসুক, তাতে বাংলাদেশের প্রতি ভারতের দৃষ্টিভঙ্গী বা নীতিতে কোনো পরিবর্তন আসবে না। অর্থাৎ ধারাবাহিকতা ও স্থিতিশীলতার যে যুক্তি বাংলাদেশের নির্বাচনের সময়ে শোনা গিয়েছিল সেরকম কোনো ভাবনার অবকাশ বা প্রয়োজন কোনোটাই নেই। দিল্লির সরকার ধর্মবিশ্বাসী বা ধর্মনিরপেক্ষ যা–ই হোক, তার সঙ্গে ঢাকার লেনদেন ও সম্পর্কে কোনো তারতম্য ঘটে না; যদিও আমরা শুনে এসেছি যে এর উল্টোটা ঘটলে তা পুরো আঞ্চলের স্থিতিশীলতা ও ভারসাম্য নষ্ট করে ফেলবে। 


তবে আর্ন্তজাতিক পরিসরে এ নির্বাচন নিয়ে আগ্রহ এবং উদ্বেগ–উৎকন্ঠার কোনো কমতি নেই। গার্ডিয়ান–এ সায়মন টিসডাল প্রশ্ন রেখেছেন, বিশ্বনেতারা যখন ভারতকে পক্ষে টানার চেষ্টা করছেন, তখন নরেন্দ্র মোদি আসলে কার পক্ষে, সে প্রশ্ন মাথাব্যাথার কারণ হচ্ছে (এ ন্যাগিং কোশ্চেন প্লেগস ওয়ার্ল্ড লিডারস উইয়িং ইন্ডিয়া: হু’জ সাইড ইজ নরেন্দ্র মোদি রিয়েলি অন)। তারপর তিনি লিখেছেন, তাঁর দেবতুল্য অবস্থান আগামী নির্বাচনে তাঁকে বিজয় এনে দেবে, কিন্তু তার মূল্য হচ্ছে গণতন্ত্র। 


নিউইয়র্ক টাইমস–এ পুরো ভারতের উপর নিয়ন্ত্রণ আরোপে মোদি যে চেষ্টা করছেন, তাতে নজর দিয়ে বলা হচ্ছে দেশটির সম্পদশালী রাজ্যগুলো বিজেপির নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার চেষ্টায় ফেডারেল ব্যবস্থাই হুমকির মুখে পড়ছে (মোদি’স পার্টি ডাজন’ট কন্ট্রোল অল অব ইন্ডিয়া: বাট হি ইজ ওয়ার্কিং অন ইট) । ভারতের সবচেয়ে উন্নত এবং উদ্ভাবনের জন্য খ্যাত দক্ষিণের রাজ্যগুলোর কর্মকর্তারা এখন বলছেন, অবিচারের ধারা চলতে থাকলে তাদের আলাদা জাতির কথা তুলতে হবে। ওয়াশিংটন পোস্ট লিখেছে, এক দশক ক্ষমতাভোগের পর আরও পাঁচ বছর ক্ষমতা নিশ্চিত করার মুখে মোদি সরকার বহু দশকের বহুদলীয় গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার প্রতি ভারতের অঙ্গীকারকে উল্টে দিচ্ছে (ইন মোদি’স ইন্ডিয়া, অপনেন্টস অ্যান্ড জার্নালিস্টস ফিল দ্য স্কুইজ অ্যাহেড অব ইলেকশন)। 


বিরোধীদলীয় নেতাদের হয়রানি এবং নির্বাচনে সবার সমসুযোগের বিষয়ে মত প্রকাশ করে যুক্তরাষ্ট্র ও জার্মানি ভারত সরকারের ক্ষোভের মুখে পড়লেও একই প্রত্যাশার কথা পুনরুচ্চারণ দিল্লির গুরুত্বপূর্ণ মিত্র ওয়াশিংটন থেকে শোনা গেছে। সবচেয়ে গুরুতর আশঙ্কার কথা লিখেছে ফরেন পলিসি সাময়িকী। ভারতের ক্যারাভান পোর্টালের নির্বাহী সম্পাদক হরতোষ সিং বল ফরেন অ্যাফেয়ার্স–এ লিখেছেন, বিজেপি অন্য অধিকাংশ দলের মতো শুধু নির্বাচনেই জিততে চায় না; তাদের রয়েছে রাজনৈতিক ক্ষমতা গ্রহণের একটা বড় লক্ষ্য। বিজেপি একটি হিন্দু জাতীয়তাবাদী সংগঠন, যার লক্ষ্য হচ্ছে ভারত রাষ্ট্রকে পুরোপুরি হিন্দু রাষ্ট্র হিসাবে পুর্নগঠন। সেখানে ভারতের পূর্ণ নাগরিকত্ব হিন্দুত্বের ওপর নির্ভর করবে। সেকারণেই তারা আইন করে মুসলমানদের নাগরিকত্ব হরণের প্রক্রিয়া শুরু করেছে। 


হরতোষ আরও লিখেছেন, পার্লামেন্টের উভয়কক্ষে দুই–তৃতীয়াংশ আসন দখলই হচ্ছে তাদের মূল লক্ষ্য। লোকসভায় এবারে সেটি অর্জনের পাশাপাশি বিরোধীদেরকে আরও কোণঠাসা করা গেলে আগামী বছরে রাজ্যসভাতেও একইরকম সংখ্যাগরিষ্ঠতা মিলবে। তিনি স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন, হিন্দুত্ববাদকে রাজনৈতিক আদর্শের রুপ দেওয়ার কাজটি শুরু হয়েছিল রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ (আরএএসএস) প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে ১৯২৫ সালে। প্রধানমন্ত্রী মোদির রাজনৈতিক জীবনেরও শুরু আরএসএস থেকে। 


আগামী বছর আরএসএসের শতবর্ষ পূর্ণ হবে এবং তার রাজনৈতিক লক্ষ্য পূরণে শতবছরের সাধনাকে পূর্ণতা দেওয়াই তাদের লক্ষ্য। হরতোষ সিং বলের বিশ্লেষণ যে মোটেও কল্পনাপ্রসূত নয়, তা নিশ্চিত হতে চাইলে ভারতের অত্যন্ত স্মার্ট কূটনীতিক এস জয়শঙ্করের ’হোয়াই ভারত ম্যাটারস’ বইটি পড়ে নিতে পারেন। তিনি ভারতীয় সভ্যতার শ্রেষ্ঠত্ব পুনরুজ্জীবনের কথা বলেছেন, যার মূলে আছে হিন্দুত্ব।  


নির্বাচন ঘিরে ভারতে যেসব নাটকীয় ঘটনা ঘটেছে, নতুন নতুন নজির তৈরি হয়েছে, গুরুত্বের দিক থেকে তার কোনোটিই হেলাফেলার বিষয় নয়, বরং উপমহাদেশের সব দেশের ওপরই তার সুদূরপ্রসারী প্রভাব পড়বে। যেমন নির্বাচন কমিশনের কথা বলা যায়। অতীতে ভারতের নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতা ও দাপটের যেসব কাহিনী শুনে আমরা দেশটির নির্বাচনীব্যবস্থাকে আমাদের কাছে অনুকরণীয় বলে গ্রহণ করেছি, সেই কমিশন এখন বদলে গেছে।  সুপ্রিম কোর্টের আদেশের ফাঁক গলে এমন এক নতুন আইন করা হয়েছে, যাতে কমিশন গঠনে এখন সরকারের কর্তৃত্বই প্রতিষ্ঠা পেয়েছে। তবে রাজনৈতিক দলের তহবিলের স্বচ্ছ্বতার প্রশ্নে দেশটির সুপ্রিম কোর্ট যে রায় দিয়েছে, তা নি:সন্দেহে একটি যুগান্তকারী সংস্কারের পথ খুলে দিয়েছে। ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন ইভিএম নিয়েও সেখানে এখন চলছে বিতর্ক এবং আইনি লড়াই।    

এসবের বাইরে সরাসরি বাংলাদেশ সম্পর্কে যেসব কথা নির্বাচনের প্রধান দুই শিবিরের রাজনৈতিক ঘোষণা বা ইশতেহারে বলা হয়েছে, তা নিয়েও কি আমাদের কোনো আলোচনা আছে? বিজেপি এবং কংগ্রেস উভয় দলের ইশতেহারেই প্রতিবেশীদের প্রতি নীতি এবং বাংলাদেশের উল্লেখ আছে। বিজেপির ’সঙ্কল্পিত ভারত সশক্ত ভারত’ শিরোনামের নির্বাচনী অঙ্গীকারে বলা হয়েছে, পররাষ্ট্রনীতির ভিত্তি হবে উপনিষদে বর্ণিত ’বসুধৈব কুটুম্বাকুম’ যার অর্থ হচ্ছে, বিশ্ব একটি পরিবার। এতে মূলত ভারতের আর্ন্তজাতিক স্বীকৃতির আকাঙ্খাই প্রধান। সেখানে বন্ধুত্বপূর্ণ ও প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে প্রগতি, সমৃদ্ধি, শান্তি ও নিরাপত্তার লক্ষ্যে কাজ করার কথা আছে। কিন্তু তাঁর সেই বহুলখ্যাত ’প্রতিবেশি প্রথম’ (নেইবারহুড ফার্স্ট নীতির কোনো উল্লেখ নেই। জাতীয় নিরাপত্তার অংশে সীমান্ত নিরাপত্তা শক্তিশালী করা প্রসঙ্গে চলতি বছরের মধ্যেই ১৪টি ইন্টিগ্রেটেড তল্লাশি চৌকি নির্মাণের কথা আছে, যার মাধ্যমে বাংলাদেশ, নেপাল ও ভুটানের সঙ্গে বাণিজ্য ও মানুষের চলাচল সহজ হবে বলে বলা হয়েছে। এতে উল্লেখ আছে প্রতিবেশি দেশগুলোর নিপীড়িত ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের জন্য নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের প্রতি অঙ্গীকারের কথা।   

বিপরীতে কংগ্রেসের মেনিফেস্টো নয়াপত্রে আছে নেহরুর সময়ে গড়ে তোলা পররাষ্ট্রনীতির বিশ্বশান্তি ও সংযমের কথা। কংগ্রেস নিকট প্রতিবেশীর বিষয়ে আলাদা করে একটি দফা প্রকাশ করেছে, যাতে তারা নেপাল ও ভুটানের সঙ্গে বিশেষ সম্পর্ক পুন:প্রতিষ্ঠার কথা বলেছে। বাংলাদেশ সম্পর্কে আছে অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সম্পর্ক আরও বাড়ানোর কথা। কিন্তু বিজেপির মতোই কোনো অনিষ্পন্ন থাকা সমস্যা সমাধানের প্রস্তাব বা ইঙ্গিত তাদের ঘোষণায় নেই। যে নাগরিকত্ব আইনের কারণে বিজেপি বিতর্কিত ও সমালোচিত হচ্ছে, সেই নীতির বিষযে তারা নীরব। 


মেনিফেস্টোতে দুই দলের মধ্যে অন্য যে পার্থক্য গুরুত্বপূর্ণ, তা হলো ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের অধিকারের প্রসঙ্গ। বিজেপি প্রতিবেশী দেশগুলোর ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের সুরক্ষার জন্য পদক্ষেপের কথা বললেও ভারতের সংখ্যালঘুদের বিষয়ে নীরব। কিন্তু কংগ্রেস তার মেনিফেস্টোতে ভারতের ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের অধিকার সুরক্ষার গ্যারান্টি দিয়েছে। 


(১৮ এপ্রিল, ২০২৪–এর প্রথম আলো পত্রিকায় প্রকাশিত।)



মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

একটি জরিপ, নৈরাশ্য ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রশ্ন

উন্নত গণতন্ত্রে সরকার , সরকারপ্রধান, ক্ষমতাসীন ও বিরোধী দল এবং বিভিন্ন বিতর্কিত ইস্যুতে প্রায়ই জনমত জরিপ করে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। কখনো বিশ্ববিদ্যালয়, কখনো সংবাদমাধ্যম, আবার কখনো বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এসব জরিপ করায়। বেশ কিছু পেশাদার জরিপকারী প্রতিষ্ঠানও আছে, যারা শুধু জরিপের কাজ করে। এসব জরিপ আমাদের গণমাধ্যমগুলোর অনলাইন ভোটের মতো নয়, যা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই শুধু সেই ওয়েবসাইটের নিয়মিত ব্যবহারকারীদের মতামত ছাড়া আর কিছুই নয়। আমাদের দেশে গণতন্ত্রে প্রত্যাবর্তনের প্রায় দুই দশক বার্ষিক জরিপে রাজনীতির গতিপ্রকৃতির চমৎকার প্রতিফলন দেখা যেত। কিন্তু গণতন্ত্রের ক্ষয়সাধনের সঙ্গে সঙ্গে সেই চর্চা প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। ব্যবসায়িক প্রয়োজন ছাড়া অন্য কোনো বিষয়ে জরিপ করতে গেলে সরকারের সায় আছে কিনা সেটা দেখা হয়, নইলে পেশাদার বিশেষজ্ঞরা বা তাঁদের প্রতিষ্ঠানগুলো ওই দায়িত্ব নিতে চান না। কথা বলার ভয়ের মতো মতামত জানতে চাওয়াতেও এক ধরনের ভয়ের আসর পড়েছে। গণতন্ত্র প্রসারে কাজ করা যুক্তরাষ্ট্রের বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনস্টিটিউট, আইআরআই এ ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম। তারা এখনো মাঝে মধ্যে স্পর্শকাতর রাজন

ভিসা নিষেধাজ্ঞা গুরুতর, সাংবাদিক নির্যাতন কী

একই দিনের দুটি সংবাদ শিরোনাম, ’৯ মাসে ২১৭ সাংবাদিক নির্যাতন ও হয়রানির শিকার: আইন ও সালিশ কেন্দ্র’ এবং ’পিটার হাসের বক্তব্য স্বাধীন সাংবাদিকতার ওপর চাপ, সমাবেশে সাংবাদিকনেতারা’। দুটো খবরই সাংবাদিকতা এবং সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার বিষয়ে। তবে একটি খবর, যাতে আছে সেই সব সাংবাদিকদের কথা, যাঁরা পেশাগত দায়িত্ব পালনের জন্য আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে শারীরিক ক্ষতি অথবা গ্রেপ্তার ও মামলার কারণে হয়রানির শিকার হয়েছেন; আর অন্যটিতে ভবিষ্যতে কোনো গণমাধ্যমকর্মী যুক্তরাষ্ট্র যেতে চাইলে ভিসা না পাওয়ার কারণে তিনি বা তাঁর যে সম্ভাব্য ক্ষতি হতে পারে, তা নিয়ে আশঙ্কা। সাংবাদিকদের নিপীড়ন–নির্যাতন ও হয়রানির বিষয়ে গবেষণার কাজ ও তা প্রকাশের দায়িত্ব পালন করেছে একটি মানবাধিকার সংগঠন। অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের ভিসার দুশ্চিন্তায় প্রতিবাদী হয়েছেন সাংবাদিকদের অপেক্ষাকৃত নতুন একটি প্লাটফর্ম জাস্টিস ফর জার্নালিস্ট।  বেসরকারি মানবাধিকার সংগঠনগুলোর নিয়মিত কাজের একটি হচ্ছে বিভিন্ন নিপীড়ন–নির্যাতন ও হয়রানির মত অধিকার লংঘনের তথ্য সংগ্রহ করা এবং তারই অংশ হিসাবে অন্যতম ঝুঁকিপূর্ণ পেশা সাংবাদিকতার ওপর তাদের আলাদা মনোযোগ। তাদের প্রকাশিত হিসাব

ভারত কেন গণতন্ত্রের বদলে স্থিতিশীলতার কথা বলছে

শুরুতেই চলতি সপ্তাহের দুটো খবরের দিকে পাঠকের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই। প্রথমটি  বাংলাদেশের সরকারি বার্তা সংস্থা, বাসসের  ১৭ ডিসেম্বরের একটি প্রতিবেদন। এতে তারা জানিয়েছে, ভারতের সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী এম জে আকবর বলেছেন, ’প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের দ্বিতীয় মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ী। কারণ, তিনি স্বৈরাচার থেকে  দেশকে মুক্ত করেছেন।’ ঢাকায় ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে ‘৫২ বছরে বাংলাদেশের অর্জন এবং আগামী দশকগুলোতে এই অঞ্চলে এবং এর বাইরে দেশটির অবস্থান’ শীর্ষক একটি আলোচনায় তিনি ছিলেন মূল বক্তা। তিনি আসন্ন নির্বাচন প্রসঙ্গে বলেন, ’বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকায় তিনি এখানে দারুণ আনন্দ দেখতে পাচ্ছেন।’   দ্বিতীয় খবরটিও ভারতের আরেকজন সাবেক কূটনীতিকের বক্তব্যসম্পর্কিত, যা তিনি ১৮ ডিসেম্বর ঢাকাতেই একটি দৈনিকের আয়োজিত অনুষ্ঠানে বলেছেন। বাংলাদেশে ভারতের সাবেক হাইকমিশনার পঙ্কজ সরণ বলেছেন, ‘বাংলাদেশের নির্বাচন প্রক্রিয়ায় কে নির্বাচিত হবেন, সে বিষয়ে দেশের জনগণই সিদ্ধান্ত নেবে।’ তিনি আরো বলেন, ‘বাংলাদেশের জনগণের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এটা বোঝা যে নির্বাচনে আসতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘ভারত গণতন্