সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

ভারতের সশস্ত্রবাহিনীর প্রস্তুতি প্রয়োজন কেন

কূটনীতির আলোচনায় গত এক দশকে আমরা যে কথাটি সবচেয়ে বেশি শুনেছি, তা হলো ’ভারত-বাংলাদেশ বন্ধৃত্ব এখন অনন্য উচ্চতায়’। কিন্তু, গত সপ্তাহে আমরা শুনলাম, ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ও ইসরায়েল-হামাস সংঘাতের পাশাপাশি বাংলাদেশের পরিস্থিতির উল্লেখ করে সশস্ত্র বাহিনীকে ভবিষ্যৎ যুদ্ধ মোকাবিলার জন্য তৈরি থাকতে বলেছেন। এটি তাঁর কোনো রাজনৈতিক বক্তৃতা ছিল না, বরং সশস্ত্র বাহিনীর কমান্ডারদের যৌথ সম্মেলনের নির্দেশনা। 


আমাদের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেছেন, রাজনাথ সিংয়ের এই বক্তব্যে তিনি যতটা না উদ্বিগ্ন, তার চেয়ে বেশি অবাক হয়েছেন। অবাক হওয়ার কথাটা কূটনৈতিক প্রতিক্রিয়া হিসাবে তিনি বলতেই পারেন। সুতরাং ’ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের যুদ্ধবিগ্রহের কোনো আশঙ্কা’ না থাকার কথাও  তিনি যে বলবেন, তাতেও অবাক হওয়ার কিছু নেই। তবে বাংলাদেশের গণতন্ত্রকামী মানুষের সংগ্রামের ফসল যে রাজনৈতিক পরিবর্তন, সে বিষয়ে ভারতের সরকারি মহলের মূল্যায়ন যে ভুল এবং বিপজ্জনক – এই কথাটুকু স্পষ্ট করে বলা খুবই জরুরি। 


দুই কারণে এই ভুলের কথা বলা দরকার। প্রথমত: ইউক্রেন এবং গাজায় যে সংঘাত চলছে, তা বিদেশি শক্তির আগ্রাসন ও দখলদারির বিরুদ্ধে যুদ্ধ। বাংলাদেশ কোনো আগ্রাসন, দখলদারি কিম্বা যুদ্ধে লিপ্ত নয়। সুতরাং ভারত ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন বা গাজায় ইসরায়েলের দখলদারি বজায় রাখার গণহত্যার বিরুদ্ধে অবস্থান না নেওয়ার যে নীতি অনুসরণ করছে, তার পটভূমিতে বাংলাদেশ কোনোভাবেই প্রাসঙ্গিক নয়। 


দ্বিতীয়ত: বাংলাদেশে যা ঘটেছে, তা পুরোটাই আমাদের অভ্যন্তরীণ রাজনীতির বিষয়, যাতে গণ–অভ্যূত্থানে একজন স্বৈরশাসকের পতন ঘটেছে। এতে কোনো তৃতীয় রাষ্ট্র বা পক্ষের দৃশ্যমান ভূমিকা নেই। বরং, প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসাবে সশস্ত্রবাহিনীকে এ বিষয়ে মূল্যায়ন ও কৌশল  নির্ধারণের  নির্দেশনা দেওয়ায় তাঁদের যে আকাঙ্খার প্রতিফলন ঘটেছে, তাকে বহি:শক্তির হস্তক্ষেপের খোলামেলা চেষ্টা ছাড়া ভিন্ন কিছু বলা চলে না। 


প্রশ্নটি আরও গুরুতর হয়ে ওঠে দুটি কারণে – প্রথমত: গত ১৫ বছর ধরে পতিত স্বৈরশাসক শেখ হাসিনাকে তাঁর অগণতান্ত্রিক ও নিপীড়ণমূলক শাসনকে ভারত প্রকাশ্যে সমর্থন দিয়ে এসেছে; দ্বিতীয়ত: গণআন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনা দেশত্যাগ করলে ভারত তাঁকে আশ্রয় দিয়েছে। উপরন্তু ভারত এখনও খোলাসা করেনি যে এ আশ্রয় সাময়িক, নাকি স্থায়ী রাজনৈতিক আশ্রয়। 


দক্ষিণ এশিয়ায় ভারত বৃহৎ শক্তি হিসাবে নিজেকে অপ্রতিদ্বন্দ্বী গণ্য করার কারণে দক্ষিণ এশিয়ায় যে পরমাণু অস্ত্রের বিপদের মধ্যে ফেলেছে। পাশাপাশি বৈম্বিক পরিসরে বৃহৎ শক্তি চীনের সমকক্ষ হওয়ার চেষ্টা এই অঞ্চলের ভূরাজনীতিতে জটিলতা বাড়িয়েছে। ভারতের আঞ্চলিক প্রভাব বলয় তৈরি ও সংহত করার নিরন্তর চেষ্টা তাই ছোট প্রতিবেশিদের স্বাধীন–স্বতন্ত্র পররাষ্ট্র নীতি অনুসরণকে ক্রমশই কঠিন করে তুলেছে। ক্ষুদ্র প্রতিবেশীদের প্রতি বৃহৎ দেশের সঙ্কীর্ণ দৃষ্টিভঙ্গী শুধু রাজনৈতিক মিত্র বাছাইয়ের মধ্যেই যে সীমাবদ্ধ থেকেছে তা নয়, দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের প্রায় সব ক্ষেত্রেই এর প্রতিফলন ঘটেছে। অভিন্ন নদীর পানি বন্টন, অভিন্ন প্রাকৃতিক সম্পদের উন্নয়ন, সুরক্ষা ও সুফল ভোগ, বাণিজ্য, উন্নয়ন সহায়তা, শরণার্থীদের আশ্রয়ের মতো মানবিক সংকট মোকাবিলা এবং বৈশ্বিক পরিসরে সহযোগিতার মতো বিষয়গুলোতে ন্যয্যতা ও সমমর্যাদার প্রশ্ন এ ক্ষেত্রে উল্লেখ করা যায়। 


প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কথিত ’সবার আগে প্রতিবেশী’ (নেইবারহুড ফার্স্ট) যে শুধু রাজনৈতিক বুলি ছিল, তার প্রমাণ দক্ষিণ এশিয়ার অন্য প্রতিবেশীদের সঙ্গে ভারতের সম্পর্কের হতাশাজনক চিত্রে পাওয়া যায়। মাত্র মাস তিনেক আগে ভারতীয় সাংবাদিক জয়ন্ত রায় চৌধুরী ফ্রি প্রেস জার্নালে যা লিখেছেন, তা এখানে উদ্ধৃত করা খুবই প্রাসঙ্গিক হবে : ”পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক সময়ের স্রোতে বরফের রুপ নিয়েছে; নেপাল শুধু চীনের দিকেই ঝুঁকেছে, তা নয়, মানচিত্রও নতুন করে প্রকাশ করেছে, যাতে কুমাওনের একটি অংশ (বিরোধীয়) তাদের হিসাবে দেখানো হয়েছে; এবং ভুটান চীনের সঙ্গে বৈরিতা এড়াতে এতই উদগ্রীব যে বেইজিংয়ের সঙ্গে সীমান্ত বিরোধ নিষ্পত্তির আলোচনায় তারা ব্যস্ত” (নেইবারহুড ডিপ্লোম্যাসি: ঢাকা ইন্ডিয়াস অনলি বেস্ট ফ্রেন্ড, ২৩ জুন, ২০২৪)। 


২০১৫ সালে নেপালের প্রতি রাজনৈতিক চাপ সৃষ্টির জন্য ভারত যে অর্থনৈতিক অবরোধ দিয়ে ছয় মাস দেশটির প্রতি অবিচার করেছিল, তা নেপালের সাধারণ মানুষ কয়েক প্রজন্মেও ভুলবে না বলে মন্তব্য করেছেন দেশটির সংস্কার নিয়ে কাজ করা লন্ডন বিশবিদ্যালয়ের সোয়াসের (স্কুল অব ওরিয়েন্টাল অ্যান্ড আফ্রিকান স্টাডিজ) অধ্যাপক মুশতাক খান। 


আমরা  জানি মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মুইজ্জু মোদির শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হলেও ভারতকে তার কয়েক ডজন সৈন্য ফিরিয়ে নিতে বাধ্য করেছেন। শ্রীলংকাকে ভারত তার অর্থনীতি ভেঙ্গে পড়ার মুখে ঋণ দিয়ে সহায়তা করলেও চীনের বিপুল ঋণ পুন:তফসিলীকরণের প্রয়োজনে দেশটি যে ভারতকে একতরফা সুবিধা দেবে না, তা মোটামুটি নিশ্চিত করেই বলা যায়। সোজা কথায় দক্ষিণ এশিয়ায় কথিত লৌহমানবী শেথ হাসিনার সুবাদেই বাংলাদেশে ভারত তার প্রভাব ক্রমশই বাড়িয়েছে ও সংহত করার চেষ্টা করেছে। স্বৈরশাসক  যার বন্ধু হয়, নিপীড়িত জনগণ যে তার বন্ধু হয় না, এই স্বত:সিদ্ধ বাস্তবতা দিল্লির নীতিনির্ধারকেরা ভুলে গিয়েছিলেন। 


’ভারতকে যা দিয়েছি তারা তা সারা জীবন মনে রাখবে’ বলে ২০১৮ সালের মে মাসে শেখ হাসিনা যে মন্তব্য করেছিলেন, তাতে যথাযথ প্রতিদান না পাওয়ার হতাশার প্রতিফলন ছিল। কিন্তু, ভারত হয় সে হতাশার গভীরতা ও ব্যপকতা বুঝতে পারে নি, নয়তো তারা অনুমান করেছিল যে ব্যক্তি শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দেওয়ার মতো পরিস্থিতি ভবিষ্যতে তৈরি হলে তখন আশ্রয় দেওয়াই হবে তাদের প্রতিদান।  


ভারতকে দেওয়ার তালিকা অনেক দীর্ঘ, বিপরীতে পাওয়ার তালিকা শুধু সংক্ষিপ্তই নয়, বরং তাতে অনেক ক্ষেত্রেই ন্যয্যতা অনুপস্থিত। তিন তিনটি কারসাজি ও প্রতারণামূলক নির্বাচন আয়োজনের মাধ্যমে ক্ষমতাকে দীর্ঘায়িত করা ভারতের সমর্থন ও ক্ষেত্রবিশেষে সরাসরি হস্তক্ষেপ ছাড়া যে কখনোই সম্ভব ছিল না, তা এখন প্রায় সর্বজনস্বীকৃত। অর্থাৎ প্রতিদান দেশের জন্য নয়, ব্যক্তির জন্য ছিল। 


দক্ষিণ এশিয়ায় আন্ত:সংযোগ বা কানেকটিভিটি খুবই আলোচিত এবং কিছুটা সমাদৃত শব্দ। সড়ক, রেল ও নৌপথে সংযোগ বাড়ানো, অন্য কথায় ঐতিহাসিক সংযোগ পুনরুজ্জীবনে আগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে, যাতে কার্যত একতরফাভাবে  লাভবান হয়েছে ভারত। পাশাপাশি জ্বালানি খাতকেও কথিত সংযোগের জালে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে। ফলে প্রতিযোগিতামূলক পদ্ধতির বদলে ভারতের ক্ষমতাসীনদের ঘনিষ্ঠ শিল্পগোষ্ঠী আদানির সঙ্গে অবিশ্বাস্য শর্তে বিদ্যূৎ উৎপাদন ও ক্রয়ের চুক্তি হয়েছে। আর্ন্তজাতিক বিশেষজ্ঞরাও বিস্ময় প্রকাশ করে প্রশ্ন রেখেছেন, কীভাবে বাংলাদেশ নিজেদের স্বার্থবিরোধী চুক্তি করতে পারে? 


বড় প্রতিবেশীর সঙ্গে ক্রমবর্ধমান অসম বাণিজ্যের সঙ্গে এখন যোগ হয়েছে জ্বালানি খাতের লেনদেনেও বড় বোঝা। জ্বালানি তেল আমদানির পাইপলাইন বসিয়ে এবং ভাসমান এলএনজি প্রকল্পের মাধ্যমে ভারতের ওপর জ্বালানি নির্ভরতা বাড়ানো হয়েছে। ফাইনান্সিয়াল টাইমসের হিসাবে শুধু বিদ্যূতেই এখন ভারতের ওপর বাংলাদেশের নির্ভরতা চাহিদার পাঁচভাগের একভাগ। নেপালের জ্বালানি অবরোধের অভিজ্ঞতা বলে এমন নির্ভরতা জাতীয় নিরাপত্তার জন্যও বিপজ্জনক।  অথচ,  বিদ্যূৎ উৎপাদনে বাংলাদেশের নিজস্ব সামর্থ্য ইতিমধ্যেই যতটা অর্জিত হয়েছে, তার প্রায় ৪০ শতাংশ অব্যবহৃত অবস্থায় থাকছে।


পররাষ্ট্র উপদেষ্টা ভারতের সঙ্গে কোনো সংঘাতের আশঙ্কা দেখছেন না। কিন্তু তথ্যযুদ্ধ ও সীমান্তে নিরীহ নাগরিকদের প্রাণহানির সুরাহা হবে কীভাবে, তা জানা প্রয়োজন। বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলনে স্বৈরশাসকের পতনকে ইসলামী মৌলবাদী এবং যুক্তরাষ্ট্রের ষড়যন্ত্র হিসাবে উপুর্যপুরি চিত্রায়ণ ১৭ কোটি বাংলাদেশির গণতান্ত্রিক আকাঙ্খার অবমাননা। ভারতের মূলধারার গণমাধ্যমে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের অধিকার সম্পর্কে অব্যাহত তথ্যবিকৃতি ও অপপ্রচার ধর্মীয় বিদ্বেষ ছড়াচ্ছে ও অনাকাঙ্খিত উত্তেজনা তৈরি করছে। বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিবর্তনে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তার প্রশ্নে ভারতে  রাজনৈতিক উত্তেজনা তৈরি করা হলেও ভারতীয় সীমান্তরক্ষীদের গুলিতে গত কদিনে যে দু’জন বাংলাদেশি শিশু – স্বর্ণা দাস ও জয়ন্ত কুমার সিংহ নিহত হলো, তারা কিন্তু হিন্দুধর্মেই বিশ্বাসী ছিল। 


(১২ সেপ্টেম্বর, ২০২৪–এর প্রথম আলো পত্রিকায় প্রকাশিত।)


মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

অরাজনৈতিক আন্দোলনের করুণ রাজনৈতিক মূল্য

কোটা সংস্কারের দাবিতে সাধারণ ছাত্র–ছাত্রীদের আন্দোলনে  কদিন ধরে যা ঘটে চলেছে, তা যেমন বেদনাদায়ক, তেমনই নিন্দনীয় ও ক্ষোভের কারণ। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের শিক্ষা দিতে ক্ষমতাসীন সরকারের সমর্থক এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীর হাতে একইদিনে দেশের তিন জায়গায় ছয়জনের প্রাণহানির ঘটনা স্বাধীন বাংলাদেশে বিরল।  এবার আরও যেসব ঘটনা আমাদের স্তম্ভিত করেছে, অভিভাবকদের চোখ অশ্রুসিক্ত করেছে, এসব মৃত্যুর পরও সরকারের রাজনৈতিক দম্ভ বজায় রাখার চেষ্টা, যা আরও প্রাণহানির কারণ হয়েছে। ছয়জন তরুণের প্রাণ বিসর্জনের পরও কোটা সংস্কারের দাবিতে সরকার ”নীতিগতভাবে একমত” – একথাটি বলে  আলোচনায় না ডেকে সময়ক্ষেপণ করেছে। আইনমন্ত্রী কথাটি যখন বললেন, তার আগেই আরও জীবন গেল, শত শত মানুষ আহত হলো, দেশের সম্পদ নষ্ট হলো। রাজনৈতিক গরিমা ছাড়া এর আর কোনো কারণ আছে কি? ছাত্রলীগ পরিচয়ে অন্ত্রধারীদের তান্ডব, পুলিশের চরম নিষ্ঠুরতা এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ছাত্রীদের গড়পরতা মারধর ও লাঞ্চিত করার যে দৃশ্যগুলো গণমাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে, তা কোনো অভিভাবকের পক্ষেই ভোলা সম্ভব নয়। এসব ঘটনার বিবরণ উদ্ধৃত না করে শুধু নিষ্ঠুর শক্তি প্রয়োগে

Bangladesh is vexed by and wary of Modi’s unstinting support to Sheikh Hasina

In the run-up to Bangladesh’s general election in January 2014, New Delhi took the unusual step of sending a top diplomat from its external affairs ministry to Dhaka to persuade General Hussain Muhammaed Ershad, the country’s former military ruler, to participate in the polls. Big questions had been raised over the fairness of the election. The incumbent government was led by Sheikh Hasina’s Awami League, and the leader of the opposition Bangladesh Nationalist Party (BNP) had been placed under virtual house arrest, with police and roadblocks around her house in Dhaka. The BNP and other opposition parties were threatening to boycott the election. Ershad, the head of the Jatiya Party, was perceived as a potential kingmaker, able to bring to power whichever of Bangladesh’s two main parties he supported, but he was also threatening to withdraw from the election.  After a decade of Modi’s reign in India, people in Bangladesh are angry at their government cosying up to a Hindutva regime in N

ভিসা নিষেধাজ্ঞা গুরুতর, সাংবাদিক নির্যাতন কী

একই দিনের দুটি সংবাদ শিরোনাম, ’৯ মাসে ২১৭ সাংবাদিক নির্যাতন ও হয়রানির শিকার: আইন ও সালিশ কেন্দ্র’ এবং ’পিটার হাসের বক্তব্য স্বাধীন সাংবাদিকতার ওপর চাপ, সমাবেশে সাংবাদিকনেতারা’। দুটো খবরই সাংবাদিকতা এবং সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার বিষয়ে। তবে একটি খবর, যাতে আছে সেই সব সাংবাদিকদের কথা, যাঁরা পেশাগত দায়িত্ব পালনের জন্য আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে শারীরিক ক্ষতি অথবা গ্রেপ্তার ও মামলার কারণে হয়রানির শিকার হয়েছেন; আর অন্যটিতে ভবিষ্যতে কোনো গণমাধ্যমকর্মী যুক্তরাষ্ট্র যেতে চাইলে ভিসা না পাওয়ার কারণে তিনি বা তাঁর যে সম্ভাব্য ক্ষতি হতে পারে, তা নিয়ে আশঙ্কা। সাংবাদিকদের নিপীড়ন–নির্যাতন ও হয়রানির বিষয়ে গবেষণার কাজ ও তা প্রকাশের দায়িত্ব পালন করেছে একটি মানবাধিকার সংগঠন। অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের ভিসার দুশ্চিন্তায় প্রতিবাদী হয়েছেন সাংবাদিকদের অপেক্ষাকৃত নতুন একটি প্লাটফর্ম জাস্টিস ফর জার্নালিস্ট।  বেসরকারি মানবাধিকার সংগঠনগুলোর নিয়মিত কাজের একটি হচ্ছে বিভিন্ন নিপীড়ন–নির্যাতন ও হয়রানির মত অধিকার লংঘনের তথ্য সংগ্রহ করা এবং তারই অংশ হিসাবে অন্যতম ঝুঁকিপূর্ণ পেশা সাংবাদিকতার ওপর তাদের আলাদা মনোযোগ। তাদের প্রকাশিত হিসাব