সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

ফেসবুকে নিয়ন্ত্রণ ও সংসদে বিএনপি


তারুণ্যের ভাবনায় আওয়ামী লীগ শিরোনামের এক আলোচনা সভায় দেশের আবাল-বৃদ্ধ-বণিতা সবার উদ্দেশ্যে একটি গুরুত্বর্পূণ তথ্য দিয়েছেন বয়োজৈষ্ঠ্য টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তফা জব্বার। তিনি বিষয়টিকে সুখবর অভিহিত করে বলেছেন যে কোনো তথ্য নিয়ন্ত্রণের সক্ষমতা সরকার আগামী সেপ্টেম্বরেই অর্জন করতে যাচ্ছে । সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কারণে এবারের নির্বাচনে কেউ গুজব ছড়াতে সক্ষম হয়নি জানিয়ে তিনি বলেছেন এতোদিন তাঁরা ফেসবুক, ইউটিউবের মত সোশ্যাল মিডিয়ায় তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিতে পারছিলেন না। কিন্তু, আগামী সেপ্টেম্বরের পরে তাঁরা এই ক্ষেত্রে সরাসরি হস্তক্ষেপ করার ক্ষমতা অর্জন করবেন।
নিয়ন্ত্রণ কথাটি খোলামেলাভাবে জানিয়ে দেওয়ার জন্য মন্ত্রীর কাছে আমাদের কৃতজ্ঞতার শেষ নেই। রাষ্ট্রের কতোকিছুতে নিয়তই কতধরণের নিয়ন্ত্রণই তো ঘটে, কিন্তু কেউ তা স্বীকার করে না। এই যেমন ধরুন, সরকারের নিয়ন্ত্রণের কারণেই বিরোধীদল সভা-সমাবেশের আয়োজন করার অনুমতি চেয়েও তা পায় না। পুলিশ-প্রশাসন-আদালত সবজায়গাতেই সরকারের নিয়ন্ত্রণের কথা শোনা যায়। স্বাধীন বলে কথিত কয়েকটি কমিশনের কথাও এখানে উল্লেখ করা যায়। যেমন : এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন সরকারের ইচ্ছেমাফিক গ্যাস-বিদ্যূতের দাম বাড়ানোয় তাঁদের কোনো জুড়ি নেই। এই নিয়ন্ত্রণের কারণেই একের পর এক সিটি করপোরেশনে আমরা নিয়ন্ত্রিত নির্বাচন দেখেছি। এরপর দেখেছি আগের রাতেই ভোটের বাক্স ভরার জাতীয় নির্বাচন। অন্যরা নিয়ন্ত্রণের কথা অস্বীকার করলেও উনি স্বীকার করার মহত্ত্ব দেখিয়েছেন। শুধু তা-ই নয়, নির্বাচনের আগে তথ্যপ্রবাহ নিয়ন্ত্রণে সাফল্যের কথাও খোলাসা করে বলেছেন। অবশ্য, বলে রাখা ভালো , ওনারা এক্ষেত্রে নিজেদের মত করে ভালো গুজব আর মন্দ গুজব বাছাই করেছেন। যা কিছু সরকারের বিরুদ্ধে তা অপপ্রচার, আর ভিত্তিহীন হলেও বিরোধীদের ক্ষতি হয় এমন গুজব - গুজব নয়। এখানে স্মরণ করা যেতে পারে যে, নির্বাচনের আগে ফেসবুক এবং টুইটার গুজব প্রচারের জন্য যতগুলো অ্যাকাউন্ট বন্ধ করেছিলো সেগুলোর সবই ছিল সরকারসমর্থক 

নিয়ন্ত্রিত নির্বাচনের ফলাফলে দেশে-বিদেশে সবাই হতবাক হলেও সরকারের অবশ্য কোনো বিকার নেই। একই কথা বারবার বলে তাকে সত্য হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করার সাফল্যে তাঁদের উৎসাহ আরও বেড়েছে। সংবাদমাধ্যমের ওপর অঘোষিত নিয়ন্ত্রণের কারণে মানুষ যখন সোশ্যাল মিডিয়ার দিকে ঝুঁকতে শুরু করেছে, তখন সেই মাধ্যমটির ওপরও নিয়ন্ত্রণের জাল গুটানোর ঘোষণা দেওয়া হলো। যদিও এই ঘোষণার অনেক আগে থেকেই ফেসবুকে রাজনৈতিক মন্তব্য ও সমালোচনার জন্য অনেককেই জেলের ভাত খেতে হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় অঘোষিত নিয়ন্ত্রণ হয়তো ততটা দৃশ্যমান নয়, যতোটা তা অনুভূত হয় মূলধারার গণমাধ্যমে। শীর্ষস্থানীয় রাজনীতিকদের নিয়ে রঙ্গ-ব্যঙ্গ করা কিম্বা কার্টুন-ক্যারিকেচার অনেকদিন ধরেই সবচেয়ে বিপজ্জনক রাষ্ট্রদ্রোহ হিসাবে ধার্য্য হয়ে আছে। সেখানে সরকারের নতুন সক্ষমতা অর্জনের ঘোষণাকে নিছক আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতির চেয়ে বেশি কিছু বলে বিবেচনার খুব একটা অবকাশ আছে কী? সরকারের এই ঘোষণার কারণে বরং এখন বর্হিবিশ্বের সবার জন্য এটা উপলব্ধি করা সহজ করা হবে যে দেশটিতে গণতন্ত্রের লেশমাত্র আর অবশিষ্ট থাকবে না।

বিদেশিরা অবশ্য বিষয়টি অনুধাবন করছেন না, তা নয়। তাঁদের কূটনৈতিক ভাষাতেও এর প্রতিফলন দেখা যায়। গত দুই সপ্তাহের মধ্যে এরকম বক্তব্য অন্তত দুটি আয়োজনে শোনা গেছে একটি ওয়াশিংটনে আর অপরটি লন্ডনে। ওয়াশিংটনে কংগ্রেসের পররাষ্ট্র বিষয়ক কমিটির দক্ষিণ-এশিয়া বিষয়ক উপকমিটিতে যুক্তরাষ্ট্রের উন্নয়ন সহযোগী প্রতিষ্ঠান, ইউএসএইডের বাজেট বরাদ্দ বিষয়ক শুনানিতে কূটনীতিকরা কূটনৈতিক ভাষায় এমন কথাই বলেছেন। অবশ্য, কংগ্রেসসদস্যের ভাষায় সেরকম কোনো কূটনৈতিক আবরণ ছিল না। ইউএসএইডের এশিয়া বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সহকারী প্রশাসক গ্লোরিয়া স্টিল বাংলাদেশের সুশাসন কর্মসূচির জন্য পঞ্চাশ লাখ ডলার তহবিলের পক্ষে যুক্তি দিতে গিয়ে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াগুলো পুনরুজ্জীবনের কথা বলেছেন। দেশে গণতন্ত্র থেকে থাকলে কূটনৈতিক ভাষায় নিশ্চয়ই তা পনুরুজ্জীবনের প্রশ্ন  উঠতো না? ১৩ জুনের ওই শুনানিতে পররাষ্ট্র দপ্তরের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া ব্যুরোর অ্যালিস ওয়েলস ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচন এবং বিরোধীদল, গণমাধ্যম এবং নাগরিক সমাজের মতপ্রকাশের অধিকার সংকুচিত হওয়ার বিষয়ে প্রকাশ্যে তাঁদের উদ্বেগ জানানোর কথা বলেছেন। তিনি বলেছেন বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সবসময়েই এসব উদ্বেগের কথা তুলে ধরা হচ্ছে।

শুনানিতে কংগ্রেসম্যান অ্যান্ডি লেভিন বলেছেন যে বাংলাদেশের ক্ষেত্রে গণতন্ত্রের সংজ্ঞা নিয়ে তিনি গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। যুক্তরাষ্ট্রের পর্যবেক্ষকদের ভিসা না দেওয়া, ভোটের আগের রাতে ব্যালট বাক্স ভর্তি, মধ্যাহ্নভোজের কারণে ভোটকেন্দ্র বন্ধ রাখা, ভোটদানে বাধাদানসহ বিভিন্ন অনিয়মের কথা তুলে ধরে তিনি প্রশ্ন করেন যে এতোকিছুর পরও যুক্তরাষ্ট্র কী করেছে? পররাষ্ট্র দপ্তরের কর্মকর্তাদের কাছে তিনি জানতে চান এতো কিছুর পরও কি সবকিছু স্বাভাবিকভাবে চলবে ? গত ১৪ ফেব্রুয়ারি ডেমোক্র্যাট এবং রিপাবলিকান উভয়দলের যে ছয়জন কংগ্রেস সদস্য যৌথভাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেওর কাছে বাংলাদেশের নির্বাচনের অনিয়মগুলোর প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করে গণতন্ত্রের প্রতি সৃষ্ট হুমকি মোকাবেলায় ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন, অ্যান্ডি লেভিন তাঁদের অন্যতম। মি লেভিন ও তাঁর সহযোগীরা যে বাংলাদেশের গণতন্ত্রের সংকটের কথা ভুলে যান নি, এই বক্তব্য সেই স্বাক্ষ্যই দেয়।

লন্ডনের আলোচিত বক্তব্যটি ছিল ঢাকায় নিযুক্ত বৃটিশ হাইকমিশনার রবার্ট চ্যাটারটন ডিকসনের। গত ২৬ জুন লন্ডনের বাংলাদেশি সাংবাদিকদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় তিনি বলেছেন বাংলাদেশে সাংবাদিকরা নানা চাপে আছেন। ব্যক্তিগত আলাপে প্রায়ই সাংবাদিকরা স্বাধীনভাবে কাজ করতে না পারার উদ্বেগের কথা জানান। তাঁর মতে গণমাধ্যমের ওপর এমন চাপের একটি কারণ হচ্ছে কার্যকর গণতন্ত্রের অনুপস্থিতি। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন সংসদের ৯৬ শতাংশ আসন যখন এক দলের দখলে থাকে, তখন একদলীয় শাসনের অভিযোগ উঠতেই পারে। নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাজ্যের অবস্থান বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে বিভিন্ন পর্যায়ের আলোচনায় স্পষ্ট করা হয়েছে বলেও তিনি জানান।গণমাধ্যমের স্বাধীনতার ক্ষেত্রে রিপোটার্স উইদাউট বর্ডারসের সূচকে বাংলাদেশের ১৫০ তম অবস্থানকে হতাশাজনক বলেও তিনি অভিহিত করেন।

বিদেশিরা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিজয়কে স্বীকৃতি দিয়েছে বলে সরকারের দাবি যে যথাযথ নয় এসব বক্তব্যে তা স্পষ্ট। বিদেশিরা যে নির্বাচন নিয়ে কথা বলা বন্ধ করে নি এসব বক্তব্য তাও নিশ্চিত করছে। তবে, সরকারের জন্য ভালো খবর যেটি, তা হচ্ছে বিএনপির অর্ধডজন এমপিকে সংসদে আনতে পারার সাফল্য। যুক্তরাষ্ট্র কংগ্রেসের শুনানিতে কংগ্রেসম্যান অ্যান্ডি লেভিনের প্রশ্নের জবাবে মিস ওয়েলস এবং লন্ডনে বৃটিশ হাইকমিশনার ডিকসন দুজনেই বিএনপির সংসদে যোগ দেয়াকে ইতিবাচক বলে উল্লেখ করেছেন। তাঁদের কথায় বোঝা যায় যে সংখ্যায় কম হলেও বিরোধীরা সরকারের জবাবহিদি আদায়ের সুযোগ পাচ্ছে কি না তা দেখার অপেক্ষায় আছেন। তবে, বিরোধীদের কথা বলার সুযোগ না থাকলে বাংলাদেশ যে একদলীয় রাষ্ট্র বলে প্রতীয়মান হতে পারে - এমনটিই বলেছেন হাইকমিশনার ডিকসন।
ওয়াশিংটন আর লন্ডনের সাম্প্রতিক এসব আলোচনায় স্পষ্টতই বোঝা যায় - তারেক রহমানের সিদ্ধান্তেই হোক অথবা ছজন অখ্যাত রাজনীতিকের ব্যাক্তিস্বার্থের কারণেই হোক - বিএনপির সাংসদদের সংসদে যোগদান বাংলাদেশে গণতন্ত্র নামক সলতেটাকে এখনও নিভু নিভু অবস্থায় জ্বালিয়ে রেখেছে। একদলীয় রাষ্ট্রের তকমা জোটানোর কৃতিত্ব লাভের হাত থেকে আওয়ামী লীগকে রক্ষার জন্য তাঁরা কী প্রতিদান পেয়েছেন, সেটা অবশ্য তাঁরাই ভালো বলতে পারবেন।

সংসদে এতো নগণ্য বিরোধীতা বা ভিন্নমতের প্রতিফলনের মধ্যেও যে বিদেশিরা ক্ষীণ আশাবাদ ধরে রেখেছেন, সোশ্যাল মিডিয়ায় নিয়ন্ত্রণের ঘোষণায় তাঁরা নিশ্চয়ই কিছুটা নড়ে চড়ে বসবেন। সাইবার জগতে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা যে অনেকদিন ধরেই খর্ব হচ্ছে সেকথা কারোই অজানা নয়। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে তাই শুরু থেকেই আপত্তি ও সমালোচনায় তাঁরা সরব। এবার হয়তো তাঁরা খোলামেলাই গণতন্ত্রহীনতার কথা বলবেন।  
(৪ জুলাই, ২০১৯‘র প্রথম আলোয় প্রকাশিত লেখকের কলাম। ) 

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

Bangladesh is vexed by and wary of Modi’s unstinting support to Sheikh Hasina

In the run-up to Bangladesh’s general election in January 2014, New Delhi took the unusual step of sending a top diplomat from its external affairs ministry to Dhaka to persuade General Hussain Muhammaed Ershad, the country’s former military ruler, to participate in the polls. Big questions had been raised over the fairness of the election. The incumbent government was led by Sheikh Hasina’s Awami League, and the leader of the opposition Bangladesh Nationalist Party (BNP) had been placed under virtual house arrest, with police and roadblocks around her house in Dhaka. The BNP and other opposition parties were threatening to boycott the election. Ershad, the head of the Jatiya Party, was perceived as a potential kingmaker, able to bring to power whichever of Bangladesh’s two main parties he supported, but he was also threatening to withdraw from the election.  After a decade of Modi’s reign in India, people in Bangladesh are angry at their government cosying up to a Hindutva regime ...

অরাজনৈতিক আন্দোলনের করুণ রাজনৈতিক মূল্য

কোটা সংস্কারের দাবিতে সাধারণ ছাত্র–ছাত্রীদের আন্দোলনে  কদিন ধরে যা ঘটে চলেছে, তা যেমন বেদনাদায়ক, তেমনই নিন্দনীয় ও ক্ষোভের কারণ। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের শিক্ষা দিতে ক্ষমতাসীন সরকারের সমর্থক এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীর হাতে একইদিনে দেশের তিন জায়গায় ছয়জনের প্রাণহানির ঘটনা স্বাধীন বাংলাদেশে বিরল।  এবার আরও যেসব ঘটনা আমাদের স্তম্ভিত করেছে, অভিভাবকদের চোখ অশ্রুসিক্ত করেছে, এসব মৃত্যুর পরও সরকারের রাজনৈতিক দম্ভ বজায় রাখার চেষ্টা, যা আরও প্রাণহানির কারণ হয়েছে। ছয়জন তরুণের প্রাণ বিসর্জনের পরও কোটা সংস্কারের দাবিতে সরকার ”নীতিগতভাবে একমত” – একথাটি বলে  আলোচনায় না ডেকে সময়ক্ষেপণ করেছে। আইনমন্ত্রী কথাটি যখন বললেন, তার আগেই আরও জীবন গেল, শত শত মানুষ আহত হলো, দেশের সম্পদ নষ্ট হলো। রাজনৈতিক গরিমা ছাড়া এর আর কোনো কারণ আছে কি? ছাত্রলীগ পরিচয়ে অন্ত্রধারীদের তান্ডব, পুলিশের চরম নিষ্ঠুরতা এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ছাত্রীদের গড়পরতা মারধর ও লাঞ্চিত করার যে দৃশ্যগুলো গণমাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে, তা কোনো অভিভাবকের পক্ষেই ভোলা সম্ভব নয়। এসব ঘটনার বিবরণ উদ্ধৃত না করে শুধু নিষ্ঠুর ...

আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বে স্বৈরশাসকের ফেরা সহজ

  গণতন্ত্রে উত্তরণে ব্যর্থতা ও স্বৈরতন্ত্রের নিকৃষ্টতম রুপ প্রত্যক্ষ করার পর অর্ন্তবর্তী সরকারের মেয়াদকালে যে সব বিষয়ে সংস্কারের আলোপ চলছে, তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে নির্বাচনব্যবস্থা। এরশাদের সামরিক স্বৈরাচারের পতনের পর নির্বাচনকে গণতন্ত্র চর্চার মাধ্যম হিসাবে যেভাবে প্রতিষ্ঠার কথা ছিল, তা থেকে প্রধান দুই দলই বিচ্যূত হয়েছিল। পরিণতিতে নির্বাচন শুধু ক্ষমতা দখলের হিংসাত্মক খেলায় পরিণত হয় এবং শেষ পর্যন্ত শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ সাধারণ মানুষের ভোটের অধিকার হরণ করে নির্বাচনকে নানা রকম প্রহসনে পরিণত করে।  এই সমস্যার এক অতি সরলীকৃত সমাধান হিসাবে বলা হচ্ছে, দ্বিদলীয় রাজনীতির বৃত্ত থেকে বেরিয়ে দেশে সত্যিকার বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে। আর বহুদলীয় গণতন্ত্রের জন্য নির্বাচনব্যবস্থায় আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বের ধারণাকে একমাত্র বা চূড়ান্ত সমাধান হিসাবে তুলে ধরা হচ্ছে।  সংখ্যানুপাতিক বা আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতির নির্বাচনে একটি দল যত শতাংশ ভোট পাবে, সে অনুপাতে তারা সংসদের আসন পাবে। এ আনুপাতিক পদ্ধতিতে প্রার্থীদের নাম দল আগাম ঘোষণা করতেও পারে, আবার না–ও পারে। নাম প্রকাশ করা হলে সেটা হব...