সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

ভারত-বাংলাদেশ মোড় ঘোরানো সম্পর্কের লাভ-ক্ষতি

ভারতীয় হাইকমিশনার রীভা গাঙ্গুলী দাসকে ধন্যবাদ যে তিনি বাংলাদেশের সঙ্গে সংযুক্তির উন্নয়নে ভারত কতটা লাভবান হয়েছে, তা অকপটে স্বীকার করেছেন। সম্প্রতি ঢাকা গ্লোবাল ডায়ালগ নামের এক বৈশ্বিক সংলাপে তিনি বলেছেন, বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সংযোগ সম্পর্কের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছে। ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোতে যে চাঞ্চল্য বা উদ্দীপনা তৈরি হয়েছে, তা থেকে এই সংযোগের গুরুত্ব বোঝা যায়। চট্টগ্রাম ও মোংলা সমুদ্রবন্দর ভারতকে ব্যবহার করার সুযোগ দেওয়ার সাম্প্রতিক চুক্তিগুলো, দুই দেশের মধ্যে রেল ও সড়কপথের সংযোগগুলোর কথা উল্লেখ করে তিনি বলেছেন, এগুলো হচ্ছে ভারতের জন্য গেম-চেঞ্জারস। তিনি একই সঙ্গে বলেছেন, এ কথা বাংলাদেশের জন্যও প্রযোজ্য। অনেকের পক্ষেই অবশ্য তাঁর বক্তব্যের শেষ অংশটুকুর সঙ্গে একমত হওয়া সম্ভব নয়।
‘ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল: অবকাঠামো এবং প্রভাব’ শীর্ষক আলোচনায় হাইকমিশনার রীভা গাঙ্গুলী আরও জানিয়েছেন, বাংলাদেশকে ভারত যে আট শ কোটি ডলার ঋণ দিয়েছে, তার ৮০ শতাংশই ব্যয় হয়েছে সংযোগ প্রকল্পগুলোতে। আমাদের ঘনিষ্ঠতম প্রতিবেশীর সঙ্গে বর্তমান সম্পর্ককে স্মরণকালের মধ্যে সেরা বলে অনেকেই অভিহিত করে থাকেন। তবে এই সুসম্পর্কে ন্যায্যতার ঘাটতি নিয়ে তেমন কোনো আলোচনা নেই। তিস্তার পানি নিয়ে দুই দেশের সরকার চুক্তির খসড়া তৈরির পরও আট বছরে তা সই হয়নি রাজ্যের আপত্তির অজুহাতে। পেঁয়াজের মতো সামান্য একটি পণ্য রপ্তানির রাজনৈতিক গুরুত্ব বিচারে বাংলাদেশের চেয়েও মালদ্বীপের বেশি অগ্রাধিকার পাওয়া কম তাৎপর্য বহন করে না।
মালদ্বীপের এই গুরুত্বের কেন্দ্রে আছে তার ভৌগোলিক অবস্থান, যা ভারত সাগর ও প্রশান্ত মহাসাগরে যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, জাপান এবং অস্ট্রেলিয়ার কথিত মুক্ত সাগর নীতিকৌশলের সঙ্গে সম্পর্কিত। ভারতের সঙ্গে কয়েক বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্রের যে সম্পর্ক গড়ে উঠেছে, তার পটভূমি এ ক্ষেত্রে বিশেষভাবে স্মরণীয়। বৈশ্বিক পরিসরে চীনের ক্রমশ প্রভাব বিস্তার এবং শক্তিশালী হয়ে ওঠার বিষয়টি যুক্তরাষ্ট্র এবং ভারত, উভয়ের জন্যই গুরুতর মাথাব্যথার কারণ। গত বছরের ১৯ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী জেমস ম্যাটিস ওয়াশিংটনে যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা কৌশল বিষয়ে খুব খোলাসা করে বলেছিলেন, তাঁর দেশের জাতীয় নিরাপত্তার প্রাথমিক নজর এখন সন্ত্রাসবাদে নয়, বৃহৎ শক্তির প্রতিদ্বন্দ্বিতায়। ফলে এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ মিত্র এখন ভারত।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের সর্বসাম্প্রতিক প্রকাশনাতেও বিষয়টির স্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে। অবাধ ও মুক্ত ভারত মহাসাগরের সুরক্ষার কৌশলে গত দুই বছরের অগ্রগতির মূল্যায়নবিষয়ক প্রকাশনা ‘এ ফ্রি অ্যান্ড ওপেন ইন্দো-প্যাসিফিক: অ্যাডভান্সিং এ শেয়ারড ভিশন’ ভারতকে আলাদাভাবে কৌশলগত অংশীদার উল্লেখ করে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র ও ভারত আঞ্চলিক এবং বৈশ্বিক উন্নয়নের চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলায় একসঙ্গে কাজ করছে। বাণিজ্য, প্রতিরক্ষা, নিরাপত্তা, জ্বালানি, সাইবার প্রযুক্তিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে তাদের সহযোগিতা কতটা বেড়েছে, তার বিবরণও এই প্রকাশনায় রয়েছে। সহজ কথায় এতে যে স্বীকারোক্তি আছে, তা হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় দর্শনে যুক্তরাষ্ট্র-ভারত অংশীদারত্ব অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ঢাকা ডায়ালগে চীনের ফুডান বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্কের অধ্যাপক মিনওয়াং লিনের প্রশ্নেও এই কথাটি উঠে এসেছে। তিনি প্রশ্ন তুলেছেন ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় নিরাপত্তা সংলাপে চীন ও রাশিয়াকে আমন্ত্রণ না জানানোর উদ্দেশ্য কী, যা অনুষ্ঠিত হয় যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, জাপান ও অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে?
গত বছর যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা দপ্তর দেশটির সামরিক বাহিনীর প্রশান্ত মহাসাগরীয় কমান্ডের নাম বদলে তাকে ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় (ইন্দো-প্যাসিফিক) কমান্ড হিসেবে অভিহিত করা শুরু করেছে। ফিন্যান্সিয়াল টাইমস-এর বিশ্লেষক গিডিওন র‌্যাচম্যান বলছেন যে দৃশ্যপটে ভারতকে আনার লক্ষ্য হচ্ছে, ওই অঞ্চলের মানচিত্রে চীনের ক্ষমতার বিপরীতে ভারসাম্য তৈরি করা। তাঁর উদ্বেগটা অবশ্য আলাদা এবং গুরুতর।
গিডিওন লিখেছেন, বিশ্বের গণতন্ত্রগুলো ভারতের প্রতি আস্থা রাখতে মরিয়া। ওয়াশিংটন থেকে টোকিও, ক্যানবেরা থেকে লন্ডন—সব জায়গাতেই চীনের বিপরীতে ভারসাম্যের জন্য ভারতকে অনিবার্য হিসেবে দেখা হচ্ছে। ভারতে সংখ্যালঘুর অধিকার এবং গণতান্ত্রিক রীতিনীতি তথা উদারবাদ ক্রমেই দুর্বল হচ্ছে। তাঁর মতে, ভারতের অনুদার পথে অবনমন বিশ্বে কর্তৃত্ববাদের ধারাকেই শক্তিশালী করছে। বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে, বিশেষ করে কর্তৃত্ববাদী প্রবণতার প্রতি দেশটির রাজনৈতিক সমর্থনের সাম্প্রতিক অভিজ্ঞতায় গিডিওনের পর্যবেক্ষণে মিল পাওয়ার ক্ষেত্রে কোনো অস্পষ্টতা নেই। গণতন্ত্রের ক্ষয়সাধন এবং মানবাধিকার পরিস্থিতির অবনতির মতো বিষয়গুলোতে তাই অতীতের মতো যুক্তরাষ্ট্র এবং পশ্চিমা গণতান্ত্রিক দেশগুলোর উৎসাহ ও সক্রিয়তায় যে ঘাটতি এখন দেখা যাচ্ছে, তাকে গণতন্ত্রকামীদের জন্য দুঃসংবাদই বলতে হবে।
যুক্তরাষ্ট্র এবং পাশ্চাত্য জোটের চীনের কর্তৃত্ববাদী শাসনব্যবস্থার সমালোচনা ক্রমেই অর্থহীন হয়ে উঠছে তাদের ভারতমুখী নীতিতে এই অঞ্চলে গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের প্রশ্ন উপেক্ষার কারণে। এ রকম বাস্তবতায় চীন কিংবা ভারত, কারোরই আঞ্চলিক আধিপত্য এবং বৈশ্বিক উচ্চাকাঙ্ক্ষার প্রতিযোগিতায় আমাদের পক্ষভুক্ত হওয়া যে নিজেদের স্বার্থের পরিপন্থী, সে কথা বলার অপেক্ষা রাখে না। প্রশ্নটি শুধু পক্ষভুক্ত হওয়াতেই সীমাবদ্ধ নয়, অন্যদের চোখে পক্ষ সমর্থনের ধারণা তৈরি হওয়াও ঝুঁকিপূর্ণ। আন্তর্জাতিক কূটনীতি এবং প্রতিরক্ষা সহযোগিতার মতো স্পর্শকাতর বিষয়গুলো এ ক্ষেত্রে বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। উপকূলে রাডার স্থাপন এবং সামরিক সরঞ্জাম ক্রয়ের মতো বিষয়গুলো যে তাই বাড়তি নজর কাড়বে, সেটাই স্বাভাবিক।
ভারতীয় হাইকমিশনারের ভারত-বাংলাদেশ সংযুক্তিবিষয়ক মন্তব্য উদ্ধৃত করে লেখাটি শুরু করেছিলাম। ওই বক্তব্যে হাইকমিশনার বাংলাদেশকে ভারতের প্রতিশ্রুত আট শ কোটি ডলার ঋণের কথা উল্লেখ করে বলেছেন, সেসব ঋণের ৮০ শতাংশই ব্যয় হয়েছে সংযোগ প্রকল্পগুলোতে। দুদিন পরই প্রথম আলোর এক প্রতিবেদনে জানা গেল, সব মিলিয়ে ভারত এ পর্যন্ত ৭৮৬ কোটি ডলারের ঋণচুক্তি সই করলেও গত ৯ বছরে দিয়েছে মাত্র ৫৯ কোটি ডলার, শতকরা হিসাবে যা সাড়ে ৭ শতাংশের মতো। (৯ বছরে ভারতের অর্থায়ন সাড়ে ৭ শতাংশ, ১৯ নভেম্বর ২০১৯)। তাহলে বাস্তবতা হচ্ছে, ভারত শুধু ঋণের অঙ্গীকারের মাত্র ৭ শতাংশ অর্থায়ন করে তার প্রত্যাশিত সংযুক্তি প্রকল্পগুলোর ৮০ শতাংশ সুফল ভোগ করছে। বিষয়টিকে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে ন্যায্যতা কিংবা ভারসাম্যের এক বিরল সংযোজন বললে কি ভুল হবে?
ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কে নদীর পানির হিস্যা প্রশ্নে এই ধারণা প্রবল হয়েছে যে আমরা অন্যায়ের শিকার এবং লাভ-ক্ষতির নিক্তিতে আমাদের প্রতিবেশী একতরফা সুবিধাভোগী। সীমান্তে বেসামরিক নাগরিকদের সন্দেহের বশে হত্যা বন্ধ না হওয়ার ক্ষোভ, রোহিঙ্গা সংকটে মিয়ানমারের প্রতি পক্ষপাত এবং কথিত অবৈধ বাংলাদেশি বিতাড়নের অভিযানের মতো বিষয়গুলোও এই ধারণাকে জোরদার করেছে। কংগ্রেস নেতা ও সাবেক কনিষ্ঠ মন্ত্রী শশী থারুর সম্প্রতি ঢাকায় প্রথম আলোকে বলেছেন, তিনি মনে করেন, ‘উপমহাদেশের বৃহত্তম রাষ্ট্র হিসেবে আমরা যা নেব, তার থেকে প্রতিবেশীদের আমাদের অবশ্যই বেশি দেওয়া উচিত।’ দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য হচ্ছে, ক্ষমতায় থাকার সময়ে তাঁরা এ রকম সদিচ্ছার কোনো প্রমাণ দিতে পারেননি। আর বর্তমান বিজেপি সরকারের কাছে প্রতিবেশীদের সঙ্গে সম্পর্কের চেয়েও বড় বিষয় যে তার অভ্যন্তরীণ রাজনীতি। এই রাজনীতিতে আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা দুর্বল করার ঝুঁকির চেয়েও তাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে হিন্দু জাতীয়তাবাদের শ্রেষ্ঠত্ব প্রতিষ্ঠা। প্রশ্ন হচ্ছে, এ রকম ভারসাম্যহীন সম্পর্ক কত দিন বজায় থাকবে?
(২৬ নভেম্বর ২০১৯‘র প্রথম আলোয় প্রকাশিত।)

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

Bangladesh is vexed by and wary of Modi’s unstinting support to Sheikh Hasina

In the run-up to Bangladesh’s general election in January 2014, New Delhi took the unusual step of sending a top diplomat from its external affairs ministry to Dhaka to persuade General Hussain Muhammaed Ershad, the country’s former military ruler, to participate in the polls. Big questions had been raised over the fairness of the election. The incumbent government was led by Sheikh Hasina’s Awami League, and the leader of the opposition Bangladesh Nationalist Party (BNP) had been placed under virtual house arrest, with police and roadblocks around her house in Dhaka. The BNP and other opposition parties were threatening to boycott the election. Ershad, the head of the Jatiya Party, was perceived as a potential kingmaker, able to bring to power whichever of Bangladesh’s two main parties he supported, but he was also threatening to withdraw from the election.  After a decade of Modi’s reign in India, people in Bangladesh are angry at their government cosying up to a Hindutva regime ...

অরাজনৈতিক আন্দোলনের করুণ রাজনৈতিক মূল্য

কোটা সংস্কারের দাবিতে সাধারণ ছাত্র–ছাত্রীদের আন্দোলনে  কদিন ধরে যা ঘটে চলেছে, তা যেমন বেদনাদায়ক, তেমনই নিন্দনীয় ও ক্ষোভের কারণ। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের শিক্ষা দিতে ক্ষমতাসীন সরকারের সমর্থক এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীর হাতে একইদিনে দেশের তিন জায়গায় ছয়জনের প্রাণহানির ঘটনা স্বাধীন বাংলাদেশে বিরল।  এবার আরও যেসব ঘটনা আমাদের স্তম্ভিত করেছে, অভিভাবকদের চোখ অশ্রুসিক্ত করেছে, এসব মৃত্যুর পরও সরকারের রাজনৈতিক দম্ভ বজায় রাখার চেষ্টা, যা আরও প্রাণহানির কারণ হয়েছে। ছয়জন তরুণের প্রাণ বিসর্জনের পরও কোটা সংস্কারের দাবিতে সরকার ”নীতিগতভাবে একমত” – একথাটি বলে  আলোচনায় না ডেকে সময়ক্ষেপণ করেছে। আইনমন্ত্রী কথাটি যখন বললেন, তার আগেই আরও জীবন গেল, শত শত মানুষ আহত হলো, দেশের সম্পদ নষ্ট হলো। রাজনৈতিক গরিমা ছাড়া এর আর কোনো কারণ আছে কি? ছাত্রলীগ পরিচয়ে অন্ত্রধারীদের তান্ডব, পুলিশের চরম নিষ্ঠুরতা এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ছাত্রীদের গড়পরতা মারধর ও লাঞ্চিত করার যে দৃশ্যগুলো গণমাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে, তা কোনো অভিভাবকের পক্ষেই ভোলা সম্ভব নয়। এসব ঘটনার বিবরণ উদ্ধৃত না করে শুধু নিষ্ঠুর ...

আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বে স্বৈরশাসকের ফেরা সহজ

  গণতন্ত্রে উত্তরণে ব্যর্থতা ও স্বৈরতন্ত্রের নিকৃষ্টতম রুপ প্রত্যক্ষ করার পর অর্ন্তবর্তী সরকারের মেয়াদকালে যে সব বিষয়ে সংস্কারের আলোপ চলছে, তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে নির্বাচনব্যবস্থা। এরশাদের সামরিক স্বৈরাচারের পতনের পর নির্বাচনকে গণতন্ত্র চর্চার মাধ্যম হিসাবে যেভাবে প্রতিষ্ঠার কথা ছিল, তা থেকে প্রধান দুই দলই বিচ্যূত হয়েছিল। পরিণতিতে নির্বাচন শুধু ক্ষমতা দখলের হিংসাত্মক খেলায় পরিণত হয় এবং শেষ পর্যন্ত শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ সাধারণ মানুষের ভোটের অধিকার হরণ করে নির্বাচনকে নানা রকম প্রহসনে পরিণত করে।  এই সমস্যার এক অতি সরলীকৃত সমাধান হিসাবে বলা হচ্ছে, দ্বিদলীয় রাজনীতির বৃত্ত থেকে বেরিয়ে দেশে সত্যিকার বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে। আর বহুদলীয় গণতন্ত্রের জন্য নির্বাচনব্যবস্থায় আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বের ধারণাকে একমাত্র বা চূড়ান্ত সমাধান হিসাবে তুলে ধরা হচ্ছে।  সংখ্যানুপাতিক বা আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতির নির্বাচনে একটি দল যত শতাংশ ভোট পাবে, সে অনুপাতে তারা সংসদের আসন পাবে। এ আনুপাতিক পদ্ধতিতে প্রার্থীদের নাম দল আগাম ঘোষণা করতেও পারে, আবার না–ও পারে। নাম প্রকাশ করা হলে সেটা হব...