সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

সংক্রমণ মোকাবেলার প্রস্তুতি কি যথেষ্ট


ইতালিফেরতরাই ভয়ের কারণ কিম্বা হাসপাতাল ছেড়ে পালালেন করোনার রোগী শিরোনামগুলোতে পাঠকের মধ্যে কী ধারণা তৈরি হতে পারে? প্রথমটিতে মনে হবে ইতালিফেরতরা না আসলে বাংলাদেশ করোনামুক্ত থাকতো। আর, দ্বিতীয়টিতে মনে হয় করোনা ভাইরাস এমন একটি রোগ যাতে মৃত্যু অবধারিত অথবা রোগটির কথা প্রকাশ হয়ে পড়লে আক্রান্ত ব্যাক্তিকে সমাজে পরিত্যাক্ত হবেন। অথচ, দুটো ধারণাই ভুল।চীনে করোনা সংক্রমণের সময় সবার আগে ইতালি চীনের সঙ্গে বিমান যোগাযোগ বন্ধ করে দিলেও সংক্রমণ সীমান্ত মানেনি। বিশ্বের দেড়শোরও বেশি দেশি এই রোগের সংক্রমণ ঘটেছে এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ভাষ্য হচ্ছে, কোনো দেশ আমাদের এমনটি হবে না মনে করলে তারা একটি মারাত্মক ভুল করছে। আর, করোনায় আক্রান্ত হলেই মৃত্যু অবধারিত এই ধারণাও ভুল। করোনায় মৃত্যুর হার অন্যান্য ফ্লুর থেকে বেশি হলেও আক্রান্তদের ৯৫ শতাংশেরও বেশি বেঁচে আছেন।
শতাংশের হিসাবে মৃত্যুর হার কম হলেও সংখ্যায় তা কম নয়। আর, অসুস্থদের মধ্যে যাঁদের অবস্থা গুরুতর হয়ে পড়ে তাঁদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেওয়ার চাপ সামলানোর ক্ষমতা যেহেতু সব দেশের নেই, সেহেতু মৃত্যুর ঝুঁকি কমাতে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ এতো বেশি গুরুত্বর্পূণ হয়ে উঠেছে। এই রোগের সংক্রমণের বিপদ সম্পর্কে উদ্বেগ-উৎকন্ঠা তাই খুবই স্বাভাবিক এবং প্রত্যাশিত। কিন্তু, সেই উদ্বেগ-উৎকন্ঠা আতংকে রুপান্তিরিত হতে খুব বেশি কিছুর প্রয়োজন হয় না। বিভ্রান্তিকর প্রচার ও গুজব সেই কাজটি ভালোভাবেই করে। আর, এই বিভ্রান্তি ও গুজব তখনই ছড়ায় এবং বিশ্বাসযোগ্যতা পায় যখন আসল সত্য ও সঠিক তথ্য প্রকাশ করা হয় না, কিম্বা খন্ডিতভাবে প্রকাশ করা হয়, অথবা গোপন করা হয়।এটি বিশেষ কোনো দেশের বা জাতিগোষ্ঠীর বৈশিষ্ট্য নয়, বরং সর্বজনীন।সব দেশে, সব জনগোষ্ঠীর মধ্যেই এই প্রবণতা দেখা যায়।  
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, ওর্য়াল্ড হেলথ অর্গানাইজেশন , ডাব্লুএইচও তাই প্রত্যেকটি দেশকে অনুরোধ জানিয়েছে যে তারা যেন নাগরিকদের সময়মত সঠিক তথ্য দেয়। সংস্থার মুখপাত্র তারিক ইয়াসারাভিচ বিষয়টি ব্যাখ্যা করে ইউএননিউজকে বলেন, আমরা জানি নাগরিকদের অংশগ্রহণ ও  নির্দেশনা পুরোপুরিভাবে অনুসরণ ছাড়া উপযুক্ত ব্যবস্থা কার্যকর করা সম্ভব নয়। স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের বিভিন্ন পরামর্শ দেওয়ার ধারণাটি কেবল তখনই কাজ করে যখন কী করা উচিত আর কী উচিত নয় এবং তা কেন প্রয়োজন এগুলো ব্যাখ্যা করা হয়। এটি আসলে খুবই গুরুত্বর্পূণ বিষয়
সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার গুরুত্ব ব্যাখ্যা করায় সরকার সফল হলেও সংক্রমণ মোকাবেলায় সরকারের কৌশল পুরোপুরি তুলে ধরা এবং তার যৌক্তিকতা ব্যাখ্যা করার বিষয়টি তেমন একটা গুরুত্ব পেয়েছে বলে মনে হয় না।এতো ঘন জনবসতির দেশে সেলফ কোয়ারেনটাইন ব্যবস্থা কতটা কার্যকর করা সম্ভব সেটা আমাদের কারোরই না বোঝার কথা নয়। সম্ভাব্য ঝুঁকির্পূণ ব্যাক্তিদের কোয়ারেন্টাইনের জন্য ন্যূনতম যে প্রস্তুতি প্রয়োজন ছিল সরকার তা নিয়েছে কি? শুধুমাত্র ইতালিফেরতদের কোয়ারেন্টাইন করা আবশ্যক, কিন্তু করোনা আক্রান্ত অন্যান্য দেশের যাত্রীদের জন্য কেন তা অনাবশ্যক, তার কোনো ব্যাখ্যা আছে কি? আক্রান্ত ব্যাক্তি আগের সপ্তাহে যতজনের সংস্পর্শে এসেছেন তাঁদের সবাইকে চিহ্নিত করে পর্যবেক্ষণে রাখার যে নির্দেশনা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা দিয়েছিল, সেটা কেন অনুসরণ করা হলো না, তার কোনো ব্যাখ্যা আছে কি? সামাজিক মেলামেশা কমানোর জন্য সোশ্যাল ডিস্ট্যান্সিং উৎসাহিত করার নীতি অনুসরণের বদলে সরকারি ব্যবস্থাপনায় যেসব সভা-সমাবেশ হয়েছে তাতে সবার মধ্যে সংশয় তৈরি হওয়াই কি স্বাভাবিক নয়?
সংবাদপত্রের ভাষ্য থেকে বোঝা যায় হাসপাতাল থেকে রোগী পালানোর কারণ হচ্ছে সেখানকার চিকিৎসক - সেবিকা কারোরই ব্যাক্তিগত সুরক্ষা এবং হাসপাতালের অন্যান্য রোগীদের সংক্রমণের ঝুঁকি থেকে রক্ষার প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি ছিল না। ফলে, তাঁরা রোগীকে ফেলে রেখে কৌশল ঠিক করতে গিয়েছিলেন। এরকম অবস্থায় রোগী নিজেকে পরিত্যক্ত ভেবে যদি হাসপাতাল ত্যাগ করাই শ্রেয় মনে করে থাকে তাহলে তার দায় কার? সরকারের ব্যবস্থাপনায় দূর্বলতার দায় চিকিৎসক-সেবিকা-রোগীর ঘাড়ে পড়লে তাদের প্রতি অবিচার করা হয়। সরকারের প্রস্তুতিতে যে চরম দৈন্যতা তাকে হতাশাজনক ছাড়া আর অন্য কীভাবে বর্ণনা করা যাবে? শ্বাসকষ্টের রোগীকে অক্সিজেন দেওয়ার প্রয়োজনীয় ভেন্টিলেশনসহ বিশেষ সেবা বা ক্রিটিকাল কেয়ারের সুবিধা হাসপাতালগুলোতে কতটা বাড়ানো হয়েছে? ঢাকায় বেশিরভাগ ডাক্তার এখনও পার্সোনাল প্রোটেক্টিভ ইকুইপমেন্ট পাননি।অথচ, নার্স, টেকনিশিয়ান এবং পরিচ্ছন্নতাকর্মী সবারই এগুলো প্রয়োজন এবং এগুলো একবারের বেশি ব্যবহার করা যায় না।চিকিৎসক এবং নার্সদের পেশাগত সংগঠনগুলো রাজনীতিতে যতটা আগ্রহী, এধরণের সংকটে সতীর্থদের স্বার্থ সুরক্ষায় তার ভগ্নাংশ পরিমাণে উৎসাহ দিখেয়েছেন বলে কোনো আলামত মেলে না।
সরকারের কৌশল যে যথাযথ এবং নাগরিকরা যাতে তাতে আস্থা রাখতে পারেন সেজন্যে রাজনৈতিক নেতৃত্বের ভূমিকার গুরুত্ব সর্বাধিক। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইতালি, ফ্রান্সের ত দেশগুলোতে প্রেসিডেন্ট বা প্রধানমন্ত্রী সরকারের নীতি-কৌশল ব্যাখ্যা করতে নিয়মিত সংবাদ সম্মেলন হাজির হচ্ছেন বা বক্তৃতা করছেন। তাঁদের সঙ্গে থাকছেন চিকিৎসাবিজ্ঞান এবং সংক্রমণ বিশেষজ্ঞরা। আমাদের দেশে এটি করছেন স্বাস্থ্য বিভাগের অধীনস্থ একটি দপ্তরের প্রধান। স্বাস্থ্যমন্ত্রী এবং অন্যান্য মন্ত্রীরা অবশ্য বিচ্ছিন্নভাবে যেসব মন্তব্য করছেন সেগুলোতে জনমনে আস্থা তৈরির কোনো কারণ নেই। বিস্ময়করভাবে কারও কারও মুখে এমন কথাও শোনা গেছে যে এটা সাধারণ সর্দি-জ্বর, আর কেউ বলেছেন উন্নত দেশের চেয়েও আমাদের প্রস্তুতি ভালো।
আমাদের প্রস্তুতি এতো ভালো যে রোগ নির্ণয়ের জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম সংগ্রহের বিষয়টি তেমন একটা অগ্রাধিকার পায়নি। সংক্রমিত রোগী চিহ্নিত হওয়ার সংখ্যাটি এতো কম কেন তা বোঝার জন্য একটি তথ্যই যথেষ্ট যে, দেশে এখন এই পরীক্ষার কিট দুই হাজারও নেই। অথচ, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক সোমবার ১৬ মার্চ যে সংবাদ সম্মেলন করেছেন সেখানে তিনি বলেছেন এই সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে সবদেশের প্রতি আমাদের বার্তা হচ্ছে - টেস্ট, টেস্ট এবং টেস্টসন্দেহ হলেই পরীক্ষা করা এবং সংক্রমণ নিশ্চিত হলেই দুদিন আগে তাঁর সংস্পর্শে অন্য যাঁরা এসেছিলেন তাঁদের খুঁজে বের করে তাঁদেরও পরীক্ষা করা। এই রোগী শনাক্তকরণ পরীক্ষা ব্যপকভাবে বাড়ানো না গেলে শুধুমাত্র তাপমাত্রা মেপে বা জ্বর-কাশির লক্ষণ দেখে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ অসম্ভব।দেশীয় সংক্রমণ বিশেষজ্ঞরাও রোগী শনাক্তকরণেই প্রাধান্য দেওয়ার কথা বলেছেন। কেননা, লক্ষণ দৃশ্যমান না হলেও অনেকেই এই সংক্রমণের বাহক এবং বিশেষভাবে ঝুঁকিতে থাকা আত্মীয়-স্বজন তাঁদের সংস্পর্শেই সংক্রমণের শিকার হবেন।
সামর্থ্যের সীমাবদ্ধতা থাকতেই পারে। কিন্তু, সেই সীমাবদ্ধতার মধ্যে সর্ব্বোচ্চ সতর্কতার সবচেয়ে কার্যকর পদ্ধতি নির্ধারণ ও তা সবার কাছে ব্যাখ্যা করার প্রয়োজনীয়তা অস্বীকার করা হলে মানুষের মধ্যে সংশয় ও  আতংক ছড়িয়ে পড়া মোটেও অস্বাভাবিক নয়। অথচ, জনস্বাস্থ্যজনিত জরুরি অবস্থায় আতঙ্ক কখনো সহায়ক হয় না। তখন মানুষের ওপর ভর করে বিভ্রান্তিকর তথ্য এবং গুজব।
গুজব ও ভূয়া তথ্য প্রচারের এই সমস্যার একটি নতুন নামকরণ করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। আর তা হচ্ছে ইনফোডেমিক। অভিধানে এই শব্দটি এখনও যুক্ত হয় নি। বৈশ্বিক মহামারি বা প্যান্ডেমিকের সময়ে অপপ্রচার মহামারির মতই ক্ষতিকর বলেই সম্ভবত তার সঙ্গে মিল রেখে এই পরিভাষাটি তৈরি হয়েছে। গরমে করোনা ভাইরাস বাঁচে না, কিম্বা রসুন খেলে সংক্রমণ থেকে মুক্ত থাকা যায় ধরণের বিভিন্ন অপপ্রচারে সোশ্যাল মিডিয়া সয়লাব হওয়ার কথা আমরা সবাই জানি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এধরণের অপপ্রচার বন্ধের লক্ষ্যে বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কাজও করছে। কিন্তু, সোশাল মিডিয়া কিম্বা মূলধারার গণমাধ্যম এগুলোর কোনোটিতেই বিভ্রান্তি সৃষ্টির সুযোগ তখনই বন্ধ হবে যখন সরকারের নীতিকৌশল ও তার যৌক্তিকতায় স্বচ্ছ্বতা তৈরি হবে। সবকিছু খোলাখুলিভাবে জানা যাবে।  
(১৮ মার্চ, ২০২০‘র প্রথম আলোয় প্রকাশিত।)

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বে স্বৈরশাসকের ফেরা সহজ

  গণতন্ত্রে উত্তরণে ব্যর্থতা ও স্বৈরতন্ত্রের নিকৃষ্টতম রুপ প্রত্যক্ষ করার পর অর্ন্তবর্তী সরকারের মেয়াদকালে যে সব বিষয়ে সংস্কারের আলোপ চলছে, তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে নির্বাচনব্যবস্থা। এরশাদের সামরিক স্বৈরাচারের পতনের পর নির্বাচনকে গণতন্ত্র চর্চার মাধ্যম হিসাবে যেভাবে প্রতিষ্ঠার কথা ছিল, তা থেকে প্রধান দুই দলই বিচ্যূত হয়েছিল। পরিণতিতে নির্বাচন শুধু ক্ষমতা দখলের হিংসাত্মক খেলায় পরিণত হয় এবং শেষ পর্যন্ত শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ সাধারণ মানুষের ভোটের অধিকার হরণ করে নির্বাচনকে নানা রকম প্রহসনে পরিণত করে।  এই সমস্যার এক অতি সরলীকৃত সমাধান হিসাবে বলা হচ্ছে, দ্বিদলীয় রাজনীতির বৃত্ত থেকে বেরিয়ে দেশে সত্যিকার বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে। আর বহুদলীয় গণতন্ত্রের জন্য নির্বাচনব্যবস্থায় আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বের ধারণাকে একমাত্র বা চূড়ান্ত সমাধান হিসাবে তুলে ধরা হচ্ছে।  সংখ্যানুপাতিক বা আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতির নির্বাচনে একটি দল যত শতাংশ ভোট পাবে, সে অনুপাতে তারা সংসদের আসন পাবে। এ আনুপাতিক পদ্ধতিতে প্রার্থীদের নাম দল আগাম ঘোষণা করতেও পারে, আবার না–ও পারে। নাম প্রকাশ করা হলে সেটা হব...

How to Describe the Awami League Accurately?

In an article titled ‘How Not to Describe the Awami League’ , published in this paper, British journalist David Bergman rightly underscores the importance of accuracy in labeling a political party—particularly when such labels carry potential legal consequences. Those familiar with Bergman’s work over the years know that he has consistently taken on politically sensitive and controversial subjects, often at significant personal and professional cost. His courage and commitment to journalistic integrity deserve recognition. Bergman is correct in asserting that “while serious criticisms of the Awami League are both valid and necessary, they must be proportionate and grounded in fact.” His analysis focuses primarily on the legal validity and appropriateness of labeling the Awami League as “fascist” or “Nazi.” He argues that comparing the party to the Nazi regime trivialises the scale of Nazi atrocities and misrepresents the complexities of Bangladeshi politics. Indeed, any historical comp...

সংবিধান সংস্কারে জাতীয় সমঝোতা কি অসম্ভব কিছু

সংবিধান সংস্কার কমিশন সংবিধান নিয়ে যে জনমত সংগ্রহ ও জাতীয়ভিত্তিক সংলাপগুলো করছে, তাতে বেশ ভালোই সাড়া মিলছে বলে আভাস পাওয়া যাচ্ছে। প্রায় প্রতিদিনই বিভিন্ন নাগরিক গোষ্ঠী, রাজনৈতিক দল, বিদ্বজ্জনেরা কেমন সংবিধান দেখতে চান, তা নিয়ে বিতর্ক ও মতবিনিময় করছেন। দেশের রাজনৈতিক ভবিষ্যত নির্ধারণের মৌলিক ভিত্তি তথা রাষ্ট্রকাঠামো ও ক্ষমতার বিন্যাস সম্পর্কে নাগরিকদের এতটা উৎসাহ সম্ভবত: এর আগে আর দেখা যায়নি। সংস্কার কমিশনের সূত্র থেকে জেনেছি, অনলাইনে তাঁরা অভূতপূর্ব সাড়া পেয়েছেন এবং মতামত দেওয়ার জন্য সপ্তাহখানেক সময় বাকি থাকতেই ৩০ হাজারেরও বেশি পরামর্শ তাঁদের কাছে জমা পড়েছে। নাগরিকদের এ আগ্রহ থেকে যে বার্তাটি স্পষ্ট হয়, তা হচ্ছে তাঁরা চান তাঁদের মতামত যেন গুরুত্ব পায়। দীর্ঘ ১৫ বছরের স্বৈরশাসনে ক্ষমতাধরদের কিছু বলার বা তাঁদের প্রশ্ন করার কোনো অধিকার সাধারণ মানুষের ছিল না। প্রতি পাঁচ বছরে একবার ভোটের মাধ্যমে প্রতিনিধি নির্বাচনের যে অধিকার, সেটুকুও তাঁরা হারিয়েছিলেন। এই পটভূমিতে নাগরিকদের প্রথম চাওয়া হচ্ছে, তাঁদের হারানো অধিকার ফিরে পাওয়া। ভোট দেওয়ার অধিকার, কথা বলার অধিকার, প্রশ্ন করার অধিকার, সংগঠন করার...