সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

করোনাকালীন বাজেটের রাজনৈতিক পর্যালোচনা


মহামারির সময়ে শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখাই যখন রোগের সংক্রমণ বন্ধের একমাত্র উপায়, তখন পারিবারিক এবং সামাজিক যোগাযোগে মোবাইল ফোন এবং ইন্টারনেট কতটা অপরিহার্য্য তা বোঝাতে ব্যাখ্যার অপেক্ষা রাখেনা। সেই মোবাইল ফোন ব্যবহারের ওপর কর বাড়ছে। আরও বস্তুনিষ্ঠভাবে বললে বলতে হয়, ফিবছর মোবাইল ব্যবহারের ওপর করের বোঝা চাপানোর কৌশল থেকে সরকার বিচ্যূত হয়নি। এই সিদ্ধান্তের সাফাই দিতে গিয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান বলেছেন অপ্রয়োজনীয় কথা বলার প্রবণতা খুব বেড়ে গেছে। কথা বলতে বলতে রেলের নীচে চাপা পড়ে মারা যায়।

রাজস্ব আদায়ের দায়িত্বে থাকা শীর্ষ আমলার এই বক্তব্যে দুটো বিষয় পরিষ্কার। প্রথমত: সরকার চায় মানুষ কম কথা বলুক। ভিন্নমতের প্রতি অসহিষ্ণু সরকার স্বাধীন মতপ্রকাশের পথকে যে ক্রমাগত সংকুচিত করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে, রাজস্বপ্রধানের বক্তব্যে তারই প্রতিধ্বনি ঘটেছে বলে ধরে নেওয়া যায়। তাঁর দ্বিতীয় যুক্তিতে ধারণা মেলে, রেলের নীচে অসর্তকতার কারণে টেলিফোনে কথা বলতে বলতে যাঁরা চাপা পড়ে মারা গেছেন, মোবাইলে কথা বলা সস্তা না হলে তাঁদের হয়তো এমন করুণ পরিণতি হতো না। ট্রেনে কাটা পড়া মানুষটি কোনো মানসিক চাপের মধ্যে ছিল কিনা কিম্বা তাঁর টেলিফোনটি কতটা জরুরি ছিল সেসব বিষয় বিবেচনায় নেওয়ার কথা নাহয় নাই বললাম। কিন্তু, রেললাইন কেন মানুষের চলাচলের জন্য খোলা থাকে, বেশি কথা হলেও সেই প্রশ্ন তো তুলতেই হয়।

মহামারির কালে বাজেট নিয়ে প্রচলিতধারার সভা-সমাবেশ, বিক্ষোভ-প্রতিবাদ হবে না সেটা মোটামুটি নিশ্চিত। অবশ্য, দেশে বিরাজনীতিকরণের কারণে মহামারি না হলেও সেরকম সম্ভাবনা খুব একটা ছিল না। ২০১৪র বিনাভোটের সংসদের পর থেকে গত কয়েকবছরের অভিজ্ঞতা অন্তত তাই বলে। সম্প্রতি ইন্টারনেট এবং মোবাইল ফোনের কল্যাণে বিকল্পমাধ্যমে প্রতিক্রিয়া-প্রতিবাদ কিছুটা হলেও চোখে পড়ছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের যথেচ্ছ ব্যবহারের পরও সোশাল মিডিয়ায় সমালোচনা যেহেতু বন্ধ হয়নি, তখন খরচ বাড়িয়ে কমানোর চেষ্টাই তো ভালো!

একটি কার্যকর বিরোধীদলহীন সংসদে এই বাজেট নিয়ে যে খুব বেশি একটা বিতর্ক হবে এবং বাজেটে বড়ধরণের কোনো হেরফের ঘটবে, এমনটি মনে করার কোনো যৌক্তিক কারণ নেই। তবুও, বাজেটের কয়েকটি লক্ষ্যণীয় বৈশিষ্ট্যের রাজনৈতিক উপাদানগুলো আলোচনা করা জরুরি। কথা বলার সুযোগ ও অধিকার সংকোচনের সঙ্গে গণতন্ত্র, নির্বাচন এবং মানুষের মৌলিক অধিকারের প্রশ্নগুলো জড়িত। অর্থনীতিবিদদের বিশ্লেষণে এসব রাজনৈতিক উপাদান উপেক্ষিত হওয়ার সম্ভাবনা থেকেই যায়। আমি তাই শুধু রাজনৈতিক প্রশ্নগুলোতেই আলোচনা কেন্দ্রীভূত রাখতে চাই।

মানুষের অধিকারের প্রশ্নে মহামারির সময়ে সবচেয়ে আগে আসে চিকিৎসা পাওয়ার নাগরিক অধিকারের প্রশ্ন। চট্টগ্রামে এক সন্তানসম্ভবা নারী তিনটি হাসপাতাল ঘুরেও চিকিৎসা না পাওয়ায় পেটের সন্তানসহ মারা গেছেন শুনে আরেক মা মন্তব্য করেছেন এমন দেশে ওই অনাগত সন্তানের জন্ম না হওয়ায় সে বেঁচে গেছে। অসুস্থ বাবাকে নিয়ে একটি ছেলে ছয়টি হাসপাতাল ঘোরার পর মৃতবাবাকে নিয়ে ঘরে ফিরেছে। সারাজীবন অন্যের চিকিৎসায় নিবেদিত ছিলেন এমন একাধিক ডাক্তার বিনাচিকিৎসায় মারা গেছেন। মন্ত্রীদের ভাষায় সিঙ্গাপুরের চেয়েও উন্নত দেশের চিকিৎসার এই হাল দূর করতে যে অঙ্গীকার এবং জরুরি পদক্ষেপগুলোর কথা দেশবাসীকে শোনানো প্রয়োজন ছিল এই বাজেটে তা নেই। সবার রোগ শনাক্তকরণ পরীক্ষা, চিকিৎসা এবং সম্ভাব্য টিকা পাওয়া গেলে তা সবার কাছে পৌঁছে দেওয়ার অঙ্গীকার মন্ত্রীর বক্তব্যে অনুপস্থিত। এতে ভোটারদের প্রতি রাজনৈতিক অঙ্গীকারের অনুপস্থিতি সুস্পষ্ট। আগামী অর্থবছরে যে ১০ হাজার কোটি টাকা থোক বরাদ্দের কথা বলা হয়েছে, তার লক্ষ্য হিসাবেও সবার চিকিৎসা নিশ্চিত করার কথা নেই।

বাজেট বক্তৃতায় (প্যারা ৩৪, ৩৫) কোভিড ১৯ মোকাবিলায় জরুরি ভিত্তিতে ৫২৯ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছেন বলে জানিয়েছেন। রাজধানীতে ১৪টি হাসপাতাল নির্দিষ্ট করে দেওয়া এবং রোগ শনাক্তকরণে ৫৫টি ল্যাবরেটরি সচল করার কথা বলেছেন। হাসপাতাল ঘুরে আসা রোগী ও তাঁদের স্বজনদের ভাষ্য এবং গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরাখবর থেকে স্পষ্ট বোঝা যায় হাসপাতালে ভর্তি এবং চিকিৎসা পাওয়া এখন পুরোটাই ভাগ্যের ব্যাপার। ক্ষমতার সিঁড়িতে কার কতটা ওপরে যোগাযোগ আছে, এই সেবা পাওয়ার সম্ভাবনা তার ওপরই নির্ভর করছে।

অর্থমন্ত্রী মহামারির মতই একটি সংক্রামক রোগ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হওয়ার কারণে তাঁর প্রথম বাজেটটি সংসদে পড়ে শেষ করতে পারেন নি। এরপর খবর হয়েছিল, মশার ভয়ে নিজ কার্যালয়ে যেতে ভয় অর্থমন্ত্রীর ( প্রথম আলো, ১৮ জুলাই, ২০১৯)। সংক্রামক রোগের ভীতি, দূর্ভোগ এবং চিকিৎসার সংকট তাই তাঁর অজানা নয়। তাহলে কোটি কোটি মানুষ যখন করোনার সংক্রমণের ভয়ে উদ্বিগ্ন, শঙ্কিত তখন তাঁদের চিকিৎসাকে সর্ব্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়াই তো প্রত্যাশিত ছিল। কিন্তু, তাঁর বক্তৃতায় এর পরই যে সংখ্যাটি শোনা গেল তা হচ্ছে করোনা সংকট মোকাবেলার কাজ করতে গিয়ে আক্রান্ত হয়েছেন বিভিন্ন বিভাগের এমন কর্মকর্তা কর্মচারিদের ক্ষতিপূরণের জন্য ৮৫০ কোটি টাকার বরাদ্দ। চিকিৎসায় জরুরি বরাদ্দের চেয়ে সরকারি কর্মীদের ক্ষতিপূরণে বেশি অর্থের সংস্থান কী ইঙ্গিত দেয়? ডাক্তার-নার্স-পুলিশ-চৌকিদার ছাড়া অন্য সরকারি কর্মচারিদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া কতটা যৌক্তিক? বেসরকারি খাতের চিকিৎসাসেবিদের জন্য তো কোনো ক্ষতিপূরণ রাখা হয়নি। সরকারি কর্মীদের প্রতি এই সুদৃষ্টির পিছনে রাজনীতিই কি প্রধান বিবেচ্য?

সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারিদের প্রতি এই পক্ষপাত অবশ্য সাম্প্রতিকবছরগুলোর সরকারি নীতির ধারাবাহিকতারই অংশ। গত নির্বাচনের আগে হঠাৎ করে সরকারি কর্মীদের বেতন-ভাতায় এক বিরাট উলম্ন ঘটে। এবং চলতি বছরেও তার ব্যাত্ক্রিম ঘটেনি। করদাতার প্রতি একশো টাকার ১৮ টাকা ৭০ পয়সা খরচ হবে জনপ্রশাসনে। আর পেনশনে খরচ হবে আরও ৭ টাকা ৮০ পয়সা। অথচ, বেসরকারি খাতে ইতোমধ্যে দশ লাখের বেশি পোশাকশ্রমিক চাকরি হারিয়েছেন। অন্যান্য প্রতিষ্ঠানগুলোর কোটির ওপরে মানুষ চাকরি হারাবেন। ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধ রাখার কারণে দেশের ৯৫ শতাংশ মানুষের আয় কমেছে বলে জরিপে তথ্য বেরিয়েছে। আসন্ন বৈশ্বিক মন্দার ধাক্কায় সব কষ্ট-যন্ত্রণা শুধু বেসরকারি খাতের ওপর চাপবে, আর সরকারি খাতের সবাই বাড়তি সুবিধা পাবেন এই বৈষম্য অগ্রহণযোগ্য। নির্বাচনে বিতর্কিত ভূমিকার জন্য  জনপ্রশাসনের সদস্যদের তুষ্টিসাধন অব্যাহত রাখার এই রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত উপেক্ষণীয় নয়।

এই বাজেটের আরেকটি লক্ষ্যণীয় দিক হচ্ছে অবৈধ আয়কে বৈধ করার উদার সুযোগ প্রদান। ব্যবসায়ীদের একটি বড় অংশই এই সুযোগকে শুধু অন্যায় হিসাবে দেখছেন তা-ই নয় সৎ করদাতার প্রতি শাস্তি বলেও অভিহিত করছেন। অতীতে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দেওয়ায় দেশে বড়ধরণের বিনিয়োগ হয়েছে এমন কোনো নজির তৈনি না হলেও এমন সিদ্ধান্তের ব্যাখ্যা কী? টাকা পাচারের অপরাধ জরিমানা দিলেই ক্ষমার নীতির সম্ভাব্য সুবিধাভোগী কারা? যেসব খাতের কতিপয় ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে বিদেশে টাকা পাচারের অভিযোগ আছে, সেই খাতগুলো, যেমন ক্যাপটিভ বিদ্যূত উৎপাদন এবং পোশাকশিল্পে সুযোগ-সুবিধা বহাল আছে অথবা বেড়েছে।

বাজেট সম্পর্কে একটি প্রচলিত ধারণা হচ্ছে সমাজে বৈষম্য কমানোর লক্ষে সম্পদ পুর্নবন্টনে এটি বেশ কার্যকর একটি হাতিয়ার। সুতরাং, অধিকাংশ সময়েই বাজেট ঘিরে প্রত্যাশা তৈরি হয় যে সরকারের আর্থিক নীতি সংখ্যাগরিষ্ঠের কল্যাণ করবে। আগে খরচ, পরে আয়ের চিন্তাই যদি বাজেটের মূল ভিত্তি হয়ে থাকে তাহলে তা হওয়ার কথা মানুষের জীবন রক্ষায় এবং জীবিকা নিশ্চিতকরণে। নাগরিকদের ন্যূনতম আয়ের নিশ্চয়তা বিধানের মত কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হলে এমন কথা মানাতো। অথচ, সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনি সম্প্রসারণের ঘোষণাও দেশের হতদরিদ্র এবং নতুন করে গরিব হয়ে পড়া মানুষের জীবন-জীবিকা রক্ষার অংশবিশেষও পূরণ করবে না।

বাংলা একটা চটুল গানের কলি আছে বায়োস্কোপের নেশা আমার ছাড়ে না। আমাদের অবস্থা এখন তার প্যারেডির মত - প্রবৃদ্ধির নেশা আমার ছাড়ে না। প্রবৃদ্ধির হার যখন উন্নয়নের একমাত্র সূচকে পরিণত হয়, তখন এরকমই হয়। মহামারি কিম্বা মন্দা, যা-ই হোক, মানুষের জীবন-জীবিকার বদলে উচ্চ প্রবৃদ্ধির কথাই আমরা বলতেই থাকবো।
(১৫ জুন, ২০২০‘র প্রথম আলো পত্রিকায় প্রকাশিত।)

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

Bangladesh is vexed by and wary of Modi’s unstinting support to Sheikh Hasina

In the run-up to Bangladesh’s general election in January 2014, New Delhi took the unusual step of sending a top diplomat from its external affairs ministry to Dhaka to persuade General Hussain Muhammaed Ershad, the country’s former military ruler, to participate in the polls. Big questions had been raised over the fairness of the election. The incumbent government was led by Sheikh Hasina’s Awami League, and the leader of the opposition Bangladesh Nationalist Party (BNP) had been placed under virtual house arrest, with police and roadblocks around her house in Dhaka. The BNP and other opposition parties were threatening to boycott the election. Ershad, the head of the Jatiya Party, was perceived as a potential kingmaker, able to bring to power whichever of Bangladesh’s two main parties he supported, but he was also threatening to withdraw from the election.  After a decade of Modi’s reign in India, people in Bangladesh are angry at their government cosying up to a Hindutva regime ...

অরাজনৈতিক আন্দোলনের করুণ রাজনৈতিক মূল্য

কোটা সংস্কারের দাবিতে সাধারণ ছাত্র–ছাত্রীদের আন্দোলনে  কদিন ধরে যা ঘটে চলেছে, তা যেমন বেদনাদায়ক, তেমনই নিন্দনীয় ও ক্ষোভের কারণ। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের শিক্ষা দিতে ক্ষমতাসীন সরকারের সমর্থক এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীর হাতে একইদিনে দেশের তিন জায়গায় ছয়জনের প্রাণহানির ঘটনা স্বাধীন বাংলাদেশে বিরল।  এবার আরও যেসব ঘটনা আমাদের স্তম্ভিত করেছে, অভিভাবকদের চোখ অশ্রুসিক্ত করেছে, এসব মৃত্যুর পরও সরকারের রাজনৈতিক দম্ভ বজায় রাখার চেষ্টা, যা আরও প্রাণহানির কারণ হয়েছে। ছয়জন তরুণের প্রাণ বিসর্জনের পরও কোটা সংস্কারের দাবিতে সরকার ”নীতিগতভাবে একমত” – একথাটি বলে  আলোচনায় না ডেকে সময়ক্ষেপণ করেছে। আইনমন্ত্রী কথাটি যখন বললেন, তার আগেই আরও জীবন গেল, শত শত মানুষ আহত হলো, দেশের সম্পদ নষ্ট হলো। রাজনৈতিক গরিমা ছাড়া এর আর কোনো কারণ আছে কি? ছাত্রলীগ পরিচয়ে অন্ত্রধারীদের তান্ডব, পুলিশের চরম নিষ্ঠুরতা এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ছাত্রীদের গড়পরতা মারধর ও লাঞ্চিত করার যে দৃশ্যগুলো গণমাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে, তা কোনো অভিভাবকের পক্ষেই ভোলা সম্ভব নয়। এসব ঘটনার বিবরণ উদ্ধৃত না করে শুধু নিষ্ঠুর ...

আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বে স্বৈরশাসকের ফেরা সহজ

  গণতন্ত্রে উত্তরণে ব্যর্থতা ও স্বৈরতন্ত্রের নিকৃষ্টতম রুপ প্রত্যক্ষ করার পর অর্ন্তবর্তী সরকারের মেয়াদকালে যে সব বিষয়ে সংস্কারের আলোপ চলছে, তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে নির্বাচনব্যবস্থা। এরশাদের সামরিক স্বৈরাচারের পতনের পর নির্বাচনকে গণতন্ত্র চর্চার মাধ্যম হিসাবে যেভাবে প্রতিষ্ঠার কথা ছিল, তা থেকে প্রধান দুই দলই বিচ্যূত হয়েছিল। পরিণতিতে নির্বাচন শুধু ক্ষমতা দখলের হিংসাত্মক খেলায় পরিণত হয় এবং শেষ পর্যন্ত শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ সাধারণ মানুষের ভোটের অধিকার হরণ করে নির্বাচনকে নানা রকম প্রহসনে পরিণত করে।  এই সমস্যার এক অতি সরলীকৃত সমাধান হিসাবে বলা হচ্ছে, দ্বিদলীয় রাজনীতির বৃত্ত থেকে বেরিয়ে দেশে সত্যিকার বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে। আর বহুদলীয় গণতন্ত্রের জন্য নির্বাচনব্যবস্থায় আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বের ধারণাকে একমাত্র বা চূড়ান্ত সমাধান হিসাবে তুলে ধরা হচ্ছে।  সংখ্যানুপাতিক বা আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতির নির্বাচনে একটি দল যত শতাংশ ভোট পাবে, সে অনুপাতে তারা সংসদের আসন পাবে। এ আনুপাতিক পদ্ধতিতে প্রার্থীদের নাম দল আগাম ঘোষণা করতেও পারে, আবার না–ও পারে। নাম প্রকাশ করা হলে সেটা হব...