সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

রুশ রাষ্ট্রদূতের ক্ষোভ অনাকাঙ্ক্ষিত

ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসন, যাকে রাশিয়া বিশেষ সামরিক অভিযান অভিহিত করে একটি বিকল্প চিত্র তুলে ধরতে বিশেষভাবে তৎপর, তার অংশ হিসাবে দেশটির দূতাবাস বাংলাদেশেও সংবাদমাধ্যমের ভূমিকা নিয়ে একটি অনাকাঙ্খিত বিতর্কের সূচনা করেছে। রোববার ঢাকায় নিযুক্ত রুশ রাষ্ট্রদূত আলেক্সান্ডার মান্টিটস্কি এক খোলা চিঠিতে বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যমগুলোর উদ্দেশে রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে বাংলাদেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। ওই খোলা চিঠিতে বলা হয়েছে, পশ্চিমা গণমাধ্যমগুলো এ বিষয়ে যে পক্ষপাতদুষ্ট ও বিদ্বেষমূলক খবর প্রকাশ করছে, তার ছায়া পড়েছে বাংলাদেশের কয়েকটি গণমাধ্যমে। তারাও একই ধরনের খবর প্রচার করছে। তাঁর এই চিঠি শুধু অনাকাঙ্ক্ষিতই নয়, সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতায় দুঃখজনক হস্তক্ষেপের শামিল এবং নিন্দনীয়।


বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যমের সম্পাদকীয় নীতি রুশ রাষ্ট্রদূতের পছন্দ না হতেই পারে, কিন্তু সেই স্বাধীনতাকে তিনি বিদ্বেষমূলক অভিহিত করতে পারেন না। রুশ সরকারের ভাষ্য যথাযথভাবে প্রতিফলিত না হয়ে থাকলে তাঁর দূতাবাস প্রতিদিন নিয়ম করে তাঁদের রণক্ষেত্রের বুলেটিন প্রকাশ করে তা সংবাদমাধ্যমের কাছে পৌঁছানোর ব্যবস্থা করতে পারেন। কিন্তু ইউক্রেনে সামরিক আগ্রাসনকে `আগ্রাসন` বা `যুদ্ধ` বলা নিষিদ্ধ করায় সামরিক অভিযান শুরুর পর যে সব রুশ সংবাদমাধ্যম বন্ধ হয়ে গেছে,  রাষ্ট্রদূতকে তাদের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে অনুরোধ করতে চাই যে আগে সেগুলো বন্ধের কারণ জেনে নিন। 


চলতি বছরে শান্তিতে নোবেল পুরষ্কার পাওয়া দুজন সম্পাদেকের অন্যতম দিমিত্রি মুরাতভের পত্রিকা নভোয়া গেজেটার কথাই ধরা যাক। ৪ মার্চ নভোয়া গেজেটা ঘোষণা দেয় যে তারা তাদের ওয়েবসাইট থেকে ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক তৎপরতাবিষয়ক সব প্রকাশনা সেন্সরশিপের কারণে সরিয়ে নিচ্ছে। তারা জানিয়েছে, ইউক্রেনের সামরিক অভিযানের প্রকৃত খবর যেহেতু তারা দিতে পারবে না, তাই তারা দেশের ভিতরে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার প্রভাব, ওষুধের সংকট ও সামাজিক ইস্যুগুলোতে নজর দেবে। এর একদিন আগে স্বাধীন টিভি চ্যানেল দোঝদ তার সম্প্রচার সাময়িকভাবে স্থগিত করে। বন্ধ হয় উদারপন্থী হিসাবে পরিচালিত রেডিও এখো মস্কোভি। 


রাশিয়ার এসব স্বাধীনচেতা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হওয়ার পাশাপাশি পাশ্চাত্যের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমও তাদের কার্যক্রম সাময়িকভাবে স্থগিত করতে বাধ্য হয়। সংবাদমাধ্যমের ওপর রাশিয়ায় এখন যে মাত্রায় নিয়ন্ত্রণ আরোপিত হয়েছে, তাকে অনেকেই পেরেস্ত্রোইকা যুগের আগের অবস্থার সঙ্গে তুলনা করেছেন, যেখানে সরকারি তথ্যবিবরণীর বাইরে ভিন্ন কিছু প্রকাশ করা সম্ভব ছিল না। ইউক্রেনে আগ্রাসন শুরুর পর দেশটিতে যে নতুন আইন করা হয়েছে, তাতে রুশ সামরিকবাহিনীর বিরুদ্ধে কথিত ভুয়া সংবাদ প্রকাশের জন্য ১৫ বছরের কারাদন্ডের বিধান রাখা হয়েছে। নিবর্তনমূলক এ নতুন আইনের পর বন্ধ হয়ে যাওয়া আরেকটি সংবাদমাধ্যম মিডিয়াজোনার প্রধান সম্পাদক সের্গেই স্মিরিনভ পরিস্থিতি বর্ণনা করতে গিয়ে বলেছেন, সাংবাদিকতাকে পুরোপুরি নির্মূল করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে এবং ভিন্নমতাবলম্বীদের জায়গা নির্ধারিত হয়েছে জেলখানায়।


রুশ রাষ্ট্রদূত আলেক্সান্ডার মান্টিটস্কি তাঁর খোলা চিঠিতে মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশের প্রতি রাশিয়ার সমর্থনের বিষয়টি উল্লেখ করে  আরও বলেছেন, ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ যে পরিস্থিতিতে ছিল, সেই একই ধরনের সমস্যায় ভুগছেন দোনেৎস্ক ও লুহানস্ক অঞ্চলের বাসিন্দারা। পূর্ব ইউক্রেনের ওই দুই অঞ্চলকে স্বাধীন রাষ্ট্র ঘোষণা করে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে সামরিক অভিযানের নির্দেশ দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। দোনস্ক ও লুহানস্কের বিচ্ছিন্নতার লড়াইয়ের সঙ্গে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের তুলনা নিয়ে বিস্তর বিতর্ক করা যায়, যা এখানে খুব একটা প্রাসঙ্গিক নয়। রাশিয়ার লক্ষ্য যে শুধু ওই বিচ্ছিন্নতাবাদী অঞ্চল দুটি নয়, তার সবচেয়ে বড় নজির হচ্ছে রুশ সামরিক অভিযান ওই দুই অঞ্চলে সীমিত নয়, বরং তা ইউক্রেনের মূল ভূখণ্ডের ব্যপক এলাকা জুড়েই বিস্তৃত। তিনি যতই দাবি করুন না যে ‘আমরা ইউক্রেনের বাসিন্দাদের সঙ্গে যুদ্ধ করছি না`, যুদ্ধের যত ভিডিওচিত্র দেখা যাচ্ছে, তাতে হত্যা, জখম, গণবাস্তুচ্যুতি, সরকারি-বেসরকারি স্থাপনা ও সম্পদের ধ্বংসসাধন ঘটছে ইউক্রেনীয়দের।    


যে কথাটা এখানে বলা দরকার, তা হচ্ছে, ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে সমর্থনদাতা দেশটি ছিল অবিভক্ত ইউনিয়ন অব সোভিয়েত সোশ্যালিস্ট রিপাবলিকস, ইউএসএসআর, রাশিয়া যার একটি অংশমাত্র। ইউক্রেনও সেই ইউএসএসআরের দ্বিতীয় বৃহত্তম রাজ্য বা প্রজাতন্ত্র ছিল। ইউক্রেনও আমাদের মুক্তিযুদ্ধের প্রতি সমর্থন দেওয়ার কৃতিত্বের অংশীদার। তখন যিনি এক্ষেত্রে ব্যাক্তিগতভাবে বিশেষ ভূমিকা রেখেছিলেন, সেই সোভিয়েত কমিউনিস্ট পার্টির সেক্রেটারি জেনারেল লিওনিদ ইলিচ ব্রেজনেভ ছিলেন একজন ইউক্রেনীয়।  


রাষ্ট্রদূত আরও লিখেছেন, ‘আমি আশা করি, আমার এ খোলাচিঠির মাধ্যমে আপনাদের পাঠকেরা ইউক্রেনসংক্রান্ত ঘটনাবলি পশ্চিমাদের দৃষ্টির বাইরে গিয়ে দেখতে পাবেন।’ বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম শুধু পশ্চিমাদের চোখ নয়, কোনো বিদেশির চোখের ওপর নির্ভরশীল নয়। মতপ্রকাশ ও সম্পাদকীয় স্বাধীনতার জন্য বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যমের নিজস্ব লড়াই দীর্ঘদিনের, যা এখনো চলছে। নানাধরণের ভয়ভীতি, প্রত্যক্ষ-পরোক্ষ চাপ, বিধিনিষেধের বিরুদ্ধে আমাদের যে সংগ্রাম চলমান, তার ওপর বিদেশি কোনো রাষ্ট্রের অন্যায় আবদার মোটেও প্রত্যাশিত নয়। 


রাষ্ট্রদূত মান্টিটস্কির বক্তব্যের যে অংশটি বিশেষভাবে উদ্বেগপূর্ণ তা হচ্ছে,, `ইউক্রেন পরিস্থিতি ও সেখানে রাশিয়ার অভিযান নিয়ে বাংলাদেশি নির্দিষ্ট কিছু গণমাধ্যমের পক্ষপাতমূলক পদক্ষেপকে সেসব শক্তির উদ্দেশ্যমূলক প্রচেষ্টা হিসেবে বিবেচনা করব, যারা সব সময় রাশিয়া ও বাংলাদেশের পারস্পরিক সহযোগিতার সম্পর্ককে ধ্বংসের চেষ্টা করেছে।` তাঁর এই বক্তব্যে যে প্রচ্ছন্ন সুর রয়েছে, তা কূটনৈতিক আচারবিধির সঙ্গে কতটা সংগতিপূর্ণ? একে সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার প্রতি হুমকি হিসাবে বিবেচনা করা হলে তা কি অযৌক্তিক হবে? যুদ্ধে লিপ্ত পক্ষগুলো তাদের স্বপক্ষে সমর্থন, সহানুভূতি ও সহযোগিতা প্রত্যাশা করবে, সেটাই স্বাভাবিক। অন্যরা তা সমর্থন করতেও পারে, না-ও পারে। এমনকি দেশের সরকার বা কোনো দল তা সমর্থন করলেই, সেই দেশের অন্য সবাই তা সমর্থন করবে, এমনটি কোনো গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় কাম্য নয়। খোদ রাশিয়াতেও এই সামরিক অভিযানের বিরোধিতা রয়েছে এবং এই আগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্রায় প্রতিদিনিই প্রতিবাদ হচ্ছে। হাজার হাজার ভিন্নমতাবলম্বীকে গ্রেপ্তারের পরও সেই প্রতিবাদ চলছে। 


বাংলাদেশ এখনও পর্যন্ত ইউক্রেন বা রাশিয়া কোনো দেশের পক্ষেই সমর্থন দেয়নি, বরং শান্তিপূর্ণ উপায়ে বিরোধ নিষ্পত্তির আহ্বান জানিয়েছে। কিন্তু, রুশ রাষ্ট্রদূতের চিঠিতে মনে হয় বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক চলমান যুদ্ধে রাশিয়ার প্রতি সমর্থন প্রকাশের ওপর নির্ভরশীল। রাষ্ট্রদূত তাই বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যমের  কাছে চান ইতিবাচক প্রচার, যা বস্তুনিষ্ঠ ও স্বাধীন সাংবাদিকতার নীতির পরিপন্থী। দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে বিদেশি কূটনীতিকদের মন্তব্য মনঃপুত না হলে আমাদের সরকার বিভিন্ন সময়ে যে ধরণের প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করে থাকে, আশা করি সংবাদমাধ্যমের প্রতি এধরণের প্রচ্ছন্ন হুমকির বিষয়কেও একইধরণের গুরুত্ব দিয়ে বিচার করা হবে। 


(১৫ মার্চ, ২০২২-এর প্রথম আলো পত্রিকায় প্রকাশিত।) 


মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

Bangladesh is vexed by and wary of Modi’s unstinting support to Sheikh Hasina

In the run-up to Bangladesh’s general election in January 2014, New Delhi took the unusual step of sending a top diplomat from its external affairs ministry to Dhaka to persuade General Hussain Muhammaed Ershad, the country’s former military ruler, to participate in the polls. Big questions had been raised over the fairness of the election. The incumbent government was led by Sheikh Hasina’s Awami League, and the leader of the opposition Bangladesh Nationalist Party (BNP) had been placed under virtual house arrest, with police and roadblocks around her house in Dhaka. The BNP and other opposition parties were threatening to boycott the election. Ershad, the head of the Jatiya Party, was perceived as a potential kingmaker, able to bring to power whichever of Bangladesh’s two main parties he supported, but he was also threatening to withdraw from the election.  After a decade of Modi’s reign in India, people in Bangladesh are angry at their government cosying up to a Hindutva regime ...

অরাজনৈতিক আন্দোলনের করুণ রাজনৈতিক মূল্য

কোটা সংস্কারের দাবিতে সাধারণ ছাত্র–ছাত্রীদের আন্দোলনে  কদিন ধরে যা ঘটে চলেছে, তা যেমন বেদনাদায়ক, তেমনই নিন্দনীয় ও ক্ষোভের কারণ। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের শিক্ষা দিতে ক্ষমতাসীন সরকারের সমর্থক এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীর হাতে একইদিনে দেশের তিন জায়গায় ছয়জনের প্রাণহানির ঘটনা স্বাধীন বাংলাদেশে বিরল।  এবার আরও যেসব ঘটনা আমাদের স্তম্ভিত করেছে, অভিভাবকদের চোখ অশ্রুসিক্ত করেছে, এসব মৃত্যুর পরও সরকারের রাজনৈতিক দম্ভ বজায় রাখার চেষ্টা, যা আরও প্রাণহানির কারণ হয়েছে। ছয়জন তরুণের প্রাণ বিসর্জনের পরও কোটা সংস্কারের দাবিতে সরকার ”নীতিগতভাবে একমত” – একথাটি বলে  আলোচনায় না ডেকে সময়ক্ষেপণ করেছে। আইনমন্ত্রী কথাটি যখন বললেন, তার আগেই আরও জীবন গেল, শত শত মানুষ আহত হলো, দেশের সম্পদ নষ্ট হলো। রাজনৈতিক গরিমা ছাড়া এর আর কোনো কারণ আছে কি? ছাত্রলীগ পরিচয়ে অন্ত্রধারীদের তান্ডব, পুলিশের চরম নিষ্ঠুরতা এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ছাত্রীদের গড়পরতা মারধর ও লাঞ্চিত করার যে দৃশ্যগুলো গণমাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে, তা কোনো অভিভাবকের পক্ষেই ভোলা সম্ভব নয়। এসব ঘটনার বিবরণ উদ্ধৃত না করে শুধু নিষ্ঠুর ...

আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বে স্বৈরশাসকের ফেরা সহজ

  গণতন্ত্রে উত্তরণে ব্যর্থতা ও স্বৈরতন্ত্রের নিকৃষ্টতম রুপ প্রত্যক্ষ করার পর অর্ন্তবর্তী সরকারের মেয়াদকালে যে সব বিষয়ে সংস্কারের আলোপ চলছে, তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে নির্বাচনব্যবস্থা। এরশাদের সামরিক স্বৈরাচারের পতনের পর নির্বাচনকে গণতন্ত্র চর্চার মাধ্যম হিসাবে যেভাবে প্রতিষ্ঠার কথা ছিল, তা থেকে প্রধান দুই দলই বিচ্যূত হয়েছিল। পরিণতিতে নির্বাচন শুধু ক্ষমতা দখলের হিংসাত্মক খেলায় পরিণত হয় এবং শেষ পর্যন্ত শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ সাধারণ মানুষের ভোটের অধিকার হরণ করে নির্বাচনকে নানা রকম প্রহসনে পরিণত করে।  এই সমস্যার এক অতি সরলীকৃত সমাধান হিসাবে বলা হচ্ছে, দ্বিদলীয় রাজনীতির বৃত্ত থেকে বেরিয়ে দেশে সত্যিকার বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে। আর বহুদলীয় গণতন্ত্রের জন্য নির্বাচনব্যবস্থায় আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বের ধারণাকে একমাত্র বা চূড়ান্ত সমাধান হিসাবে তুলে ধরা হচ্ছে।  সংখ্যানুপাতিক বা আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতির নির্বাচনে একটি দল যত শতাংশ ভোট পাবে, সে অনুপাতে তারা সংসদের আসন পাবে। এ আনুপাতিক পদ্ধতিতে প্রার্থীদের নাম দল আগাম ঘোষণা করতেও পারে, আবার না–ও পারে। নাম প্রকাশ করা হলে সেটা হব...