সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

স্মার্ট বাংলাদেশের জন্য কেন গণতন্ত্র প্রয়োজন

আওয়ামী লীগের ’স্মার্ট বাংলাদেশ’ কী এবং কেমন হবে, তা যে খুব একটা স্পষ্ট হয়েছে, সেটা মনে হচ্ছে  না। এক অর্থে মনে হয় সত্যিই আমাদের স্মার্ট হওয়া প্রয়োজন। কেননা, আমরা স্মার্ট নই, আনস্মার্ট। না হলে কি ক্ষমতাধর কিছু লোক  প্রয়োজনীয় জামানত ছাড়াই ব্যাংকগুলো থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়ে ব্যাংকগুলোকে জিম্মি করে ফেলতে পারে! তাদের ঋণখেলাপি বলা হলে গায়েবি নির্দেশনায় আইন বদল হয় যায় এবং ঋণগুলোও নিয়মিত হয়ে যায়? বেকায়দায় পড়া ব্যাংকগুলোকে দেউলিয়া হওয়া থেকে রক্ষা করতে হয় করদাতাদের টাকা দিয়ে তাদের বাঁচানো হয়, নয়তো সাধারণ গ্রাহকদের ওপর নানা অজুহাতে খরচের বোঝা বাড়ে? আনস্মার্ট বলেই বোধ হয় সুদে টাকা ধার নিলেও ব্যাংকিংয়ে ধর্মীয় পরিচয় ব্যবহারে কোনো সমস্যা হয় না? 


আমরা অধিকাংশই আনস্মার্ট বলে কিছু লোক বিদেশে ইচ্ছেমত টাকা পাচার করতে পারে। ভর্তুকি কমানোর জন্য বিদ্যূতের দাম বাড়িয়ে ও হাতে গোণা কিছু সুবিধাভোগীকে হাজার হাজার কোটি টাকা ক্যাপাসিটি চার্জ কিম্বা কর অব্যাহতি দেওয়া তখনই সম্ভব, যখন বিদ্যূতের ভোক্তা ও তাদের প্রতিনিধিরা আনস্মার্ট হয়। জ্বালানি তেলের আমদানি খরচ বাড়লে দাম বাড়ে অথচ খরচ কমলে তার সুবিধা ভোক্তাদের না দেওয়াও তো জনগোষ্ঠী আনস্মার্ট বলেই সম্ভব। মাথাপ্রতি আয় গড়ে বাড়লেও একাধিক বেসরকারি জরিপে দেখা যাচ্ছে দেশের প্রায় দুই–তৃতীয়াংশ মানুষ এক বেলা খাওয়া ছেড়ে দিতে বাধ্য হচ্ছে। বেশির ভাগ মানুষ সাদাসিধে ও গোবেচারা ধরনের না হলে বৈষম্য নিশ্চয়ই এভাবে প্রকট হতে পারে না। তালিকা আরো বাড়ানো যায়, কিন্তু তাহলে স্মার্ট রাষ্ট্র নিয়ে অন্য প্রশ্নগুলো উত্থাপনের জায়গা হবে না। 


স্মার্ট বাংলাদেশ সর্ম্পকে প্রাথমিক ধারণাটা পাওয়া গেছে আওয়ামী লীগের ২২তম জাতীয় সম্মেলনে দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্যে। তিনি স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে চারটি ভিত্তি – স্মার্ট সিটিজেন, স্মার্ট ইকোনমি, স্মার্ট গভর্নমেন্ট ও স্মার্ট সোসাইটির কথা বলেছেন। সতাঁর কথায় প্রতিটি জনশক্তি স্মার্ট হবে। সবাই প্রতিটি কাজ অনলাইনে করতে শিখবে, ইকোনমি হবে ই-ইকোনমি, যাতে সম্পূর্ণ অর্থ ব্যবস্থাপনা ডিজিটাল ডিভাইসে করতে হবে। তিনি উল্লেখ করেন, ‘আমাদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কর্মযোগ্যতা’ সবকিছুই ই-গভর্ন্যান্সের মাধ্যমে হবে। ই-এডুকেশন, ই-হেলথসহ সবকিছুতেই ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার করা হবে। ২০৪১ সাল নাগাদ আমরা তা করতে সক্ষম হব এবং সেটা মাথায় রেখেই কাজ চলছে। একই কথা তিনি বছরের প্রথম দিনে ছাত্র–ছাত্রীদের মধ্যে বই বিতরণর উৎসবেও বলেছেন। তারপর মঙ্গলবার তিনি পুলিশ সপ্তাহ উদ্বোধন করতে গিয়ে বলেছেন ,বিশ্বমানের স্মার্ট পুলিশ গড়ে তোলা হবে। 


স্মার্ট নগর, স্মার্ট সমাজের আওয়াজটা উঠেছে প্রযুক্তির অগ্রযাত্রার কারণেই। বিশেষ করে জনজীবন, রাষ্ট্র ও সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে (আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স – এআই) কাজে লাগানোর প্রশ্নেই এসব বিশেষণের প্রচলন। প্রযুক্তির অগ্রযাত্রার বিরোধিতা যে আত্মঘাতী, তা নিয়ে খুব একটা বিতর্ক নেই। কিন্তু এআই’র ব্যবহার প্রশ্নে এখন বিশ্বজুড়েই চলছে নানা বিতর্ক। মানুষের কল্যাণে প্রযুক্তিটির ব্যবহার নিশ্চিত করা এবং ক্ষতি বা অকল্যাণে যাতে তার অপপ্রয়োগ না ঘটে, সে জন্য গণতান্ত্রিক বিশ্বে আইনগত কাঠামো বা বিধিবিধান নিশ্চত করার ওপর জোর দেওয়া হচ্ছে। উন্নত, উন্নয়নশীল ও অনুন্নত  বিভিন্ন দেশেই এ প্রযুক্তি ইতিমধ্যে নানাভাবে ভিন্ন ভিন্ন মাত্রায় কাজে লাগানো হচ্ছে। আর ভালো–মন্দের সে কারণে ফারাক এবং আইনি কাঠামো ও জবাবদিহিতার বিষয়গুলোও জরুরি ভিত্তিতে নিরসনের প্রশ্ন উঠছে। 


যুক্তরাষ্ট্রর কার্নেগি এনডাওমেন্ট ফর ইন্টারন্যাশনাল পিস, যুক্তরাজ্যের প্রাইভেসি ইন্টারন্যাশনালসহ বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান ও নাগরিক সংগঠন এবিষয়ে গবেষণা করে বিস্তারিত প্রবিবেদন প্রকাশ করেছে। কার্নেগির ২০১৯ সালে প্রকাশিত প্রতিবেদন বলছে বিশ্বে অন্তত ৭৫টি দেশ এআইয়ের নজরদারি প্রযুক্ত ব্যবহার করছে, যার মধ্যে ৫৬টি দেশে এটি করা হচ্ছে স্মার্ট সিটি নামের প্লাটফর্মে, ৬৪টি দেশে মুখ দেখে শনাক্ত করার ব্যবস্থায় এবং ৫২টি দেশে স্মার্ট পুলিসিংয়ের মাধ্যমে। বিশ্বজুড়ে এআই প্রযুক্তিতে এগিয়ে আছে চীন, বিশেষ করে হুয়াওয়ের মত কোম্পানি। চীনা কোম্পানিগুলো চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভে অংশগ্রহণকারী ৩৬টি দেশের সঙ্গে এআই প্রযুক্তি সরবরাহের চুক্তি করেছে। তবে শুধু চীন নয়, এ প্রযুক্তি সরবরাহে যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, ফ্রান্স, জার্মানি, ইজরায়েলও যথেষ্ট তৎপর। কার্নেগির প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে  উদার গণতন্ত্র থেকে শুরু করে কর্তৃত্ববাদী দেশ সব জায়গাতেই এ প্রযুক্তি নজরদারিতে ব্যবহৃত হচ্ছে, কিন্তু এর অপপ্রয়োগ ঘটছে অগণতান্ত্রিক কর্তৃত্ববাদী দেশগুলোতে।

প্রাইভেসি ইন্টারন্যাশনাল এ বিষয়ে জিম্বাবুয়ের সরকারের হুয়াওয়ের প্রযুক্তিনির্ভর নজরদারি ব্যবস্থার বিস্তারিত বিশ্লেষণ প্রকাশ করেছে। রবার্ট মুগাবের ৩৭ বছরেরর শাসনকালে শুরু হওয়া নজরদারি ব্যবস্থায় এআই প্রযুক্তির ব্যবহার সম্পর্কে আলোকপাত করতে গিয়ে দেশটিতে আইন করে মোবাইল ফোনের সিম রেজিষ্ট্রেশন বার্ধতামূলক করার কথা বলা হয়েছে। এর মাধ্যমে ইলেক্ট্রনিক যোগাযোগে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। দেশটির মোবাইল নেটওয়ার্কে টু–জি থেকে শুরু করে  ফোর–জি পর্যন্ত সবটাই সরবরাহ করেছে হুয়াওয়ে। ২০২০ সালে হুয়াওয়ে যুক্ত হয়েছে স্মার্ট টেকসই শহর প্রকল্পে। নজরদারির ক্যামেরা নেটওয়ার্ক বসানোর কাজটিও তারা করছে এবং মুখ দেখে শনাক্তকরণের প্রযুক্তি দিচ্ছে আরেকটি চীনা কোম্পানি হিকভিশন। 

ব্যাক্তিগত তথ্যের প্রয়োজনীয় সুরক্ষা নিশ্চিত করা ছাড়াই এধরনের প্রযুক্তির ব্যবহার নাগরিক স্বাধীনতার জন্য কতটা বিপদ বয়ে আনতে পারে, তার আরেকটি নজির হচ্ছে হংকং। হংকংয়ে গণতন্ত্রের আন্দোলনের সময়ে আন্দোলনকারীরা তাই নিজেদের পরিচয় আড়াল করতে ছাতা অথবা রুমাল বেঁধে মুখ ঢাকার কৌশল নিয়েছিল। সরকারি ভাষ্যমতে, সেখানকার স্মার্ট ল্যাম্পপোস্টগুলো ছিল শহরের যানচলাচল নিয়ন্ত্রণের সিগন্যালিং ও বাতাসের মান পর্যবেক্ষণের জন্য। কিন্তু বিক্ষোভকারীরা টের পায় যে তাতে আছে নজরদারির ক্যামেরা। বিক্ষোভকারীরা তাই অনেক জায়গায় ওই সব ল্যাম্পপোস্ট ভেঙ্গে দেয়।  

চীনের বহু শহরে এ প্রযুক্তি ব্যবহৃত হচ্ছে। চেহারা শনাক্তকরণের প্রযুক্তির সাহায্যে সরকারী অনেক প্রতিষ্ঠানে প্রবেশাধিকার এবং সেবা লাভের সুযোগ নিয়ন্ত্রিত হয়। অভিযোগ আছে উইঘুরদের দমনে সেখানকার কর্তৃপক্ষ সজরদারি প্রযুক্তিকে হাতিয়ার হিসাবে কাজে লাগিয়েছে। হিউম্যান রাইটস ওয়াচ জানিয়েছে চীন ইন্টিগ্রেটেড জয়েন্ট অপারেশন্স প্লাটফর্ম (আইজেওপি) তৈনি করেছে, যাতে সিসিটিভির ফুটেজ, চেহারা শনাক্তকরন ডিভাইস এবং ওয়াইফাইতে আড়িপাতার ব্যবস্থার সমন্বয় ঘটিয়েছে। তৈরি হচ্ছে স্মার্ট পুলিসিংয়ের মডেল। 

জাতিসংঘ মানবাধিকার সংস্থাতেও বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক হয়েছে এবং বিশেষজ্ঞরা তাঁদের সুপারিশমালা হাজির করেছেন। এ বিতর্কের কেন্দ্রে আছে নাগরিকদের ওপর কড়াকড়ি নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠায় নজরদারির কাজে কর্তৃত্ববাদি সরকারগুলোর এআই প্রযুক্তির অপপ্রয়োগ। জাতিসংঘ মানবাধিকার সংস্থা বলছে, যদিও রাষ্ট্রীয় নজরদারি সহজাতভাবে বেআইনি নয়, কিন্তু রাজনৈতিক নিপীড়ণের উদ্দেশ্য ব্যাক্তিস্বাধীনতা খর্ব করার মানসে সরকারগুলো মতপ্রকাশ ও সংগঠনের স্বাধীনতা হরণে ডিজিটাল হাতিয়ার প্রয়োগ করতে পারে। 

মতপ্রকাশের স্বাধীনতা বিষয়ে জাতিসংঘের বিশেষ র‍্যাপোর্টিয়ার ২০১৯ সালে তাঁর এক রিপোর্টে বলেন যে সরকারগুলো সাধারণত জাতীয় নিরাপত্তা ও জনশৃঙ্খলার অজুহাতে এর ব্যবহারকে যৌক্তকতা দিয়ে থাকে। কিন্তু এর অযৌক্তক ও যথেচ্ছ প্রয়োগ নাগরিকদের  মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে ক্ষুণ্ন করবে। তাই জাতীয় নিরাপত্তা ও জনশৃঙ্খলার প্রশ্নে যৌক্তিকতা নির্ধারণে স্বাধীন ও শক্তিশালী বিচারবিভাগীয় অনুমোদনের আইনগত ব্যবস্থা প্রয়োজন। এটা হতে হবে কেবল মাত্র জাতীয় প্রয়োজনে, কোনো সরকার কিম্বা কোনো শাসক গোষ্ঠীর স্বার্থে নয়।  

শুরুতেই বলেছিলাম প্রযুক্তির প্রয়োজনীয়তা নাকচ করা যায় না। কিন্তু লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য স্পষ্ট হওয়া দরকার। নাগরিকদের সম্মতিভিত্তিক শাসনব্যবস্থা, গণতন্ত্রের রীতিনীতি ও আইনের শাসন ছাড়া স্মার্ট পুলিশ ও স্মার্ট নগরের যেসব নজিরের কথা জানা যায়, তাতে স্মার্ট দেশের চেহারাটা বোঝা খুবই জরুরি। কার্নেগির যে ২০১৯ সালের প্রতিবেদনের কথা বললাম, তাতে কিন্তু বলা হচ্ছে বাংলাদেশ স্মার্ট সিটি প্লাটফর্ম, স্মার্ট পুলিসিং, চেহারা শনাক্তকরণ প্রযুক্তি ব্যবহার করছে এবং সরবরাহকারিদের মধ্যে আছে হুয়াওয়ে। আর, বাংলাদেশ বিআরআই প্রকল্পেরও শরিক। 


মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

Bangladesh is vexed by and wary of Modi’s unstinting support to Sheikh Hasina

In the run-up to Bangladesh’s general election in January 2014, New Delhi took the unusual step of sending a top diplomat from its external affairs ministry to Dhaka to persuade General Hussain Muhammaed Ershad, the country’s former military ruler, to participate in the polls. Big questions had been raised over the fairness of the election. The incumbent government was led by Sheikh Hasina’s Awami League, and the leader of the opposition Bangladesh Nationalist Party (BNP) had been placed under virtual house arrest, with police and roadblocks around her house in Dhaka. The BNP and other opposition parties were threatening to boycott the election. Ershad, the head of the Jatiya Party, was perceived as a potential kingmaker, able to bring to power whichever of Bangladesh’s two main parties he supported, but he was also threatening to withdraw from the election.  After a decade of Modi’s reign in India, people in Bangladesh are angry at their government cosying up to a Hindutva regime in N

একটি জরিপ, নৈরাশ্য ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রশ্ন

উন্নত গণতন্ত্রে সরকার , সরকারপ্রধান, ক্ষমতাসীন ও বিরোধী দল এবং বিভিন্ন বিতর্কিত ইস্যুতে প্রায়ই জনমত জরিপ করে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। কখনো বিশ্ববিদ্যালয়, কখনো সংবাদমাধ্যম, আবার কখনো বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এসব জরিপ করায়। বেশ কিছু পেশাদার জরিপকারী প্রতিষ্ঠানও আছে, যারা শুধু জরিপের কাজ করে। এসব জরিপ আমাদের গণমাধ্যমগুলোর অনলাইন ভোটের মতো নয়, যা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই শুধু সেই ওয়েবসাইটের নিয়মিত ব্যবহারকারীদের মতামত ছাড়া আর কিছুই নয়। আমাদের দেশে গণতন্ত্রে প্রত্যাবর্তনের প্রায় দুই দশক বার্ষিক জরিপে রাজনীতির গতিপ্রকৃতির চমৎকার প্রতিফলন দেখা যেত। কিন্তু গণতন্ত্রের ক্ষয়সাধনের সঙ্গে সঙ্গে সেই চর্চা প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। ব্যবসায়িক প্রয়োজন ছাড়া অন্য কোনো বিষয়ে জরিপ করতে গেলে সরকারের সায় আছে কিনা সেটা দেখা হয়, নইলে পেশাদার বিশেষজ্ঞরা বা তাঁদের প্রতিষ্ঠানগুলো ওই দায়িত্ব নিতে চান না। কথা বলার ভয়ের মতো মতামত জানতে চাওয়াতেও এক ধরনের ভয়ের আসর পড়েছে। গণতন্ত্র প্রসারে কাজ করা যুক্তরাষ্ট্রের বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনস্টিটিউট, আইআরআই এ ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম। তারা এখনো মাঝে মধ্যে স্পর্শকাতর রাজন

ভিসা নিষেধাজ্ঞা গুরুতর, সাংবাদিক নির্যাতন কী

একই দিনের দুটি সংবাদ শিরোনাম, ’৯ মাসে ২১৭ সাংবাদিক নির্যাতন ও হয়রানির শিকার: আইন ও সালিশ কেন্দ্র’ এবং ’পিটার হাসের বক্তব্য স্বাধীন সাংবাদিকতার ওপর চাপ, সমাবেশে সাংবাদিকনেতারা’। দুটো খবরই সাংবাদিকতা এবং সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার বিষয়ে। তবে একটি খবর, যাতে আছে সেই সব সাংবাদিকদের কথা, যাঁরা পেশাগত দায়িত্ব পালনের জন্য আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে শারীরিক ক্ষতি অথবা গ্রেপ্তার ও মামলার কারণে হয়রানির শিকার হয়েছেন; আর অন্যটিতে ভবিষ্যতে কোনো গণমাধ্যমকর্মী যুক্তরাষ্ট্র যেতে চাইলে ভিসা না পাওয়ার কারণে তিনি বা তাঁর যে সম্ভাব্য ক্ষতি হতে পারে, তা নিয়ে আশঙ্কা। সাংবাদিকদের নিপীড়ন–নির্যাতন ও হয়রানির বিষয়ে গবেষণার কাজ ও তা প্রকাশের দায়িত্ব পালন করেছে একটি মানবাধিকার সংগঠন। অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের ভিসার দুশ্চিন্তায় প্রতিবাদী হয়েছেন সাংবাদিকদের অপেক্ষাকৃত নতুন একটি প্লাটফর্ম জাস্টিস ফর জার্নালিস্ট।  বেসরকারি মানবাধিকার সংগঠনগুলোর নিয়মিত কাজের একটি হচ্ছে বিভিন্ন নিপীড়ন–নির্যাতন ও হয়রানির মত অধিকার লংঘনের তথ্য সংগ্রহ করা এবং তারই অংশ হিসাবে অন্যতম ঝুঁকিপূর্ণ পেশা সাংবাদিকতার ওপর তাদের আলাদা মনোযোগ। তাদের প্রকাশিত হিসাব