সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

নাগরিক সংগঠনের ভূমিকায় যুক্তরাষ্ট্রের গুরুত্ব কেন

 


গত ৭ জানুয়ারির নির্বাচন ’অবাধ ও সুষ্ঠূ হয়নি’ বলে মতপ্রকাশের পর মাসখানেকের মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চপর্যায়ের একটি প্রতিনিধিদল গত সপ্তাহে ঢাকা ঘুরে গেছে। সাধারণভাবে সফরটিকে দুই দেশের সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণের অংশ হিসেবেই বর্ণনা করা হয়েছে। সফরকারীদের মধ্যে ছিলেন দেশটির জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক  জ্যেষ্ঠ পরিচালক রিয়ার এডমিরাল আইলিন লাউবাকের এবং দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক যুক্তরাষ্ট্রের উপসহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী আফরিন আক্তার। ব্যবসা–বাণিজ্য বাড়ানো, জলবায়ুর প্রভাব মোকাবিলা এবং ভারত–প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতায় সহায়তার বিষয়গুলো সরকারি আলোচনায় প্রাধান্য পেলেও শ্রম মান ও অধিকার এবং মানবাধিকারের বিষয়গুলো যে বাদ গেছে, তা নয়। 


তবে সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণের প্রক্রিয়া শুরু হওয়ায় মন্ত্রীরা যে স্বস্তি পেয়েছেন, তা বোঝা যায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের মন্তব্যে। তিনি বলেছেন, ‘তারা (বিএনপি) যুক্তরাষ্ট্রের কাছে যা চায়, ওয়াশিংটনের কাছে যা চায়, সেই চাওয়াটা তারা পায়নি। তারা শুনতে চেয়েছিল, সরকারের ওপরে নিষেধাজ্ঞা আসবে।’ বিপরীতে আফরিন আক্তারের সঙ্গে বিএনপির সদ্য কারামুক্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ও আমীর খসরু মাহমুদের বৈঠক হলেও তাঁরা এ বিষয়ে কিছুই বলেন নি। বলার মতো কিছু না থাকলে বলার কথাও না। তবে দূতাবাসের ফেসবুকের বক্তব্যে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং কারাগারে বন্দী হাজার হাজার বিরোধীদলীয় সদস্যের বিষয়ে এক ফলপ্রসু আলোচনায় তাঁরা স্বাগত জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিবকে। এরপর লেখা হয়েছে, অব্যাহত সম্পর্কের অপেক্ষায়। 


কারাবন্দী বিরোধীদলীয় নেতাকর্মীদের বিষয়ে আলোচনা ’ফলপ্রসু’ হওয়ার অর্থ কী, তা দূতাবাস, সরকার অথবা বিএনপি – এই তিনটি পক্ষ ছাড়া আমাদের পক্ষে জানা সম্ভব নয়। বিএনপির সঙ্গে ’অব্যাহত সম্পর্কের অপেক্ষা’ও কত দীর্ঘ হবে সেটা নিয়ে হয়তো জল্পনার ফানুস ওড়ানো যায়। কিন্তু তাতে গণতন্ত্র বা আইনের শাসন প্রশ্নে অবস্থার উনিশ–বিশ হওয়ার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। ’   


আফরিন আক্তার নাগরিক সমাজের কয়েকজন প্রতিনিধির সঙ্গেও বৈঠক করেছেন এবং সে সম্পর্কেও ফেসবুকে দূতাবাসের ভাষ্য হচ্ছে, ”সুস্থ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় সুশীল সমাজ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এবং ই‌তিবাচক ভূ‌মিকা রাখে। – – –আমরা গণতন্ত্র এবং মানবাধিকার ইস্যুতে যুক্ত (সুশীল সমাজের সঙ্গে) থাকব এবং আমরা বাংলাদেশ সরকারকেও এ‌টি করার আহ্বান জানাই।” নাগরিক সমাজের যে পাঁচজন প্রতিনিধির এ বৈঠক হয়েছে, তাঁদের মধ্যে অন্তত তিনজন ইতিমধ্যেই সরকার ও ক্ষমতাসীন দলের চক্ষুশূলে পরিণত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে মানবাধিকার সংগঠন অধিকারের আদিলুর রহমান খানকে ইতিমধ্যে নিম্ন আদালতে বিতর্কিত বিচারে কারাদন্ড ও জরিমানা করা হয়েছে এবং তিনি আপিল করার আগ পর্যন্ত কিছুদিন জেল খেটেছেন। বেসরকারি সংগঠন হিসাবে অধিকারের রেজিষ্ট্রেশন নবায়নের আবেদন প্রত্যাখ্যান করা হয় তারও কয়েক মাস আগে এবং কার্যত গত এক দশক ধরে তার সব ধরণের বিদেশি অনুদান আটকে দেওয়া হয়েছে বা অনুমতি দেওয়া হয়নি। 


দুটি গবেষণা প্রতিষ্ঠান – সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ ( সিপিডি) এবং সেন্টার ফর গর্ভনেন্স স্টাডিজের (সিজেএস) দুজন সুপরিচিত ব্যক্তিত্ব অর্থনীতিবিদ দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য এবং সাংবাদিক জিল্লুর রহমান বেশ কিছুদিন ধরেই সরকার এবং ক্ষমতাসীন দলের বাক্যবাণে জর্জরিত হয়ে চলেছেন। তাঁদের মধ্যে দেবপ্রিয় অপেক্ষাকৃত বেশি সময় ধরে। কার্যত ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর থেকেই তাঁর বিভিন্ন পর্যবেক্ষণ ও মতামতে মন্ত্রীরা বিরক্তি ও ক্ষোভ প্রকাশ করে আসছেন। 


আর জিল্লুরের প্রতি ক্ষোভ হঠাৎ বেড়েছে বলে মনে হয়। গত বছরের অক্টোবরে সিজিএসের আয়োজিত বে অব বেঙ্গল কনভারসেশন শীর্ষক সংলাপ থেকে মন্ত্রীরা হঠাৎ করেই নিজেদের প্রত্যাহার করে নেন। এরপর জিল্লুরের ব্যাংক হিসাব সম্পর্কে সব ব্যাংকের কাছে তথ্য চায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ফাইনান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট। পুলেশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ প্রতিষ্ঠানটির কয়েকজন কর্মীকে তাদের দপ্তরে ডেকে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে। এগুলোকে ভীতিকর হয়রানি হিসাবে বর্ণনা করে দেশের ভেতরের ও বাইরের কয়েকটি সংগঠন উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। 


গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় নাগরিক সমাজের ভূমিকার প্রতি জোর দিয়ে আফরিন আক্তার যা বলেছেন, সেটা নতুন কোনো বক্তব্য নয়। ৭ জানুয়ারির নির্বাচন সম্পর্কে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথু মিলার ৩১ জানুয়ারিতে তাঁর নিয়মিত ব্রিফিংয়েও এ বিষয়টির কথা আলাদা করে উল্লেখ করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, ’বিরোধী দলের সদস্য, গণমাধ্যমকর্মী এবং সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় এবং একইসঙ্গে নাগরিক জীবনে অর্থপূর্ণভাবে অংশগ্রহণের সুযোগ তৈরি করে দেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।’ 


বিরুদ্ধ মত, নাগরিক সমাজ এবং মুক্ত গণমাধ্যমের কথা গত এক দশকে বহুবারই আলোচিত হয়েছে। গত নভেম্বরে জাতিসংঘে বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতির যে সর্বজনীন পর্যালোচনা বা ইউপিআর অনুষ্ঠিত হয়েছে, সেখানেও স্পষ্ট করে নাগরিক সমাজ বা এনজিও সদস্যদের হয়রানি ও ভীতি প্রদর্শন বন্ধ করার সুপারিশ করা হয়েছে। তার আগে গত সেপ্টেম্বরে ইউরোপীয় পার্লামেন্টে গৃহীত প্রস্তাবেও  বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা, মানবাধিকারকর্মী ও ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের কাজের নিরাপদ ও অনুকূল পরিবেশ নিশ্চিত করার বিষয়টিও গুরুত্বের সঙ্গে তুলে ধরা হয়েছে।


নাগরিক সমাজের স্বাধীনভাবে মত প্রকাশ ও উন্নয়ননীতি প্রণয়নে অংশগ্রহণের সুযোগ সংকোচনের ধারা এরপরও বন্ধ হয় নি। আর্ন্তজাতিক পরিসরে সবচেয়ে বেশি পরিচিত বাংলাদেশি নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ইউনুসের বিচারিক হয়রানি এবং তাঁর পড়ে তোলা সামাজিক ব্যবসার কয়েকটি প্রতিষ্ঠান দখলের ঘটনা নির্দলীয় বুদ্ধিজীবি ও সমাজসংগঠকদের মধ্যে যে ভীতির সঞ্চার করেছে, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। অধ্যাপক রেহমান সোবহানকে উদ্ধৃত করাই বোধহয় এই ভয়ের সবচেয়ে ভালো ব্যাখ্যা, যেখানে তিনি লিখেছেন, ”নাগরিকদের মধ্যে এই ভয় কাজ করে যে তাঁরা তাঁদের সাংবিধানিক অধিকার রক্ষায় আর আমাদের আদালতের ওপর নির্ভর করতে পারছেন না” ( কার জন্য ঘন্টা বাজছে–––, প্রথম আলো, ২১ জানুয়ারি, ২০২৪)।  


রাজনৈতিক দল ও প্রতিষ্ঠানগুলো অকার্যকর হয়ে পড়লে নাগরিক সংগঠনগুলো কি বিকল্প হিসাবে দাঁড়াতে পারে, এবং তা গণতন্ত্রের জন্য কতটা সহায়ক?  এ প্রশ্ন মোটেও নতুন কিছু নয়। গণতন্ত্রে নাগরিক সংগঠনগুলোর জোরালো ভূমিকার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে সন্দেহের কোনো অবকাশ নেই। কিন্তু ক্ষয়িষ্ণু গণতন্ত্র এবং কর্তৃত্ববাদের উত্থানের মুখে নাগরিক সংগঠনগুলোও যে অকার্যকর হয়ে যেতে বাধ্য, তারও বিস্তর প্রমাণ মেলে। বিষয়টি নিয়ে বেশ কিছু গবেষণামূলক প্রকাশনা আছে। তবে বিশ্বব্যাপী গণতন্ত্র নিয়ে কাজ করা যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠান  ন্যাশনাল ডেমোক্র্যাটিক ইনিস্টিটিউটের (এনডিআই) রাজনৈতিক দল বিষয়ক কার্যক্রমের পরিচালক ইয়ান ডহার্টির উত্তর হচ্ছে, নাগরিক সংগঠন রাজনৈতিক দলের স্থান পূরণ করতে পারে না। 


ইয়ান ডহার্টির লেখার মর্মার্থ হচ্ছে, আর্ন্তজাতিক সম্প্রদায় প্রায়শই আস্থা হারানো রাজনৈতিক দলগুলোর ধ্বংসস্তুপের ওপর ভিত্তি করে নাগরিক সংগঠনগুলোর সম্প্রসারণ ও উন্নয়নে সহায়তা দিয়ে সেগুলোর প্রসার ঘটানোয় সক্রিয় ভূমিকা নিয়ে থাকে। এই নূতি অনেক সময়ে মন্ত্র হয়ে দাঁড়ায়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত দেখা যায়, তা রাজনৈতিক ভারসাম্য নষ্ট করছে। রাজনৈতিক দল এবং পার্লামেন্টের গুরুত্ব উপেক্ষার পরিণতিতে জনতুষ্ঠিবাদী নেতৃত্বের উত্থান ঘটার পথ খুলে যায়, যে নেতারা সরকারি প্রতিষ্ঠান ও আইনের শাসনকে এড়িয়ে চলতে চায়।  


আমাদের অভিজ্ঞতা তো এর থেকে আলাদা বলে মনে হয় না। সুতরাং গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও আইনের শাসন  চাইলে রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানগুলোর দিকেই সবার নজর দেওয়া প্রয়োজন। এটি আমাদের নিজেদের জন্য্ যেমন প্রযোজ্য, তেমনি প্রযোজ্য  বিদেশি বন্ধু বা  উন্নয়ন সহযোগীদের বেলায়ও।  


(২৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪–এর প্রথম আলো পত্রিকায় প্রকাশিত।)


মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বে স্বৈরশাসকের ফেরা সহজ

  গণতন্ত্রে উত্তরণে ব্যর্থতা ও স্বৈরতন্ত্রের নিকৃষ্টতম রুপ প্রত্যক্ষ করার পর অর্ন্তবর্তী সরকারের মেয়াদকালে যে সব বিষয়ে সংস্কারের আলোপ চলছে, তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে নির্বাচনব্যবস্থা। এরশাদের সামরিক স্বৈরাচারের পতনের পর নির্বাচনকে গণতন্ত্র চর্চার মাধ্যম হিসাবে যেভাবে প্রতিষ্ঠার কথা ছিল, তা থেকে প্রধান দুই দলই বিচ্যূত হয়েছিল। পরিণতিতে নির্বাচন শুধু ক্ষমতা দখলের হিংসাত্মক খেলায় পরিণত হয় এবং শেষ পর্যন্ত শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ সাধারণ মানুষের ভোটের অধিকার হরণ করে নির্বাচনকে নানা রকম প্রহসনে পরিণত করে।  এই সমস্যার এক অতি সরলীকৃত সমাধান হিসাবে বলা হচ্ছে, দ্বিদলীয় রাজনীতির বৃত্ত থেকে বেরিয়ে দেশে সত্যিকার বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে। আর বহুদলীয় গণতন্ত্রের জন্য নির্বাচনব্যবস্থায় আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বের ধারণাকে একমাত্র বা চূড়ান্ত সমাধান হিসাবে তুলে ধরা হচ্ছে।  সংখ্যানুপাতিক বা আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতির নির্বাচনে একটি দল যত শতাংশ ভোট পাবে, সে অনুপাতে তারা সংসদের আসন পাবে। এ আনুপাতিক পদ্ধতিতে প্রার্থীদের নাম দল আগাম ঘোষণা করতেও পারে, আবার না–ও পারে। নাম প্রকাশ করা হলে সেটা হব...

How to Describe the Awami League Accurately?

In an article titled ‘How Not to Describe the Awami League’ , published in this paper, British journalist David Bergman rightly underscores the importance of accuracy in labeling a political party—particularly when such labels carry potential legal consequences. Those familiar with Bergman’s work over the years know that he has consistently taken on politically sensitive and controversial subjects, often at significant personal and professional cost. His courage and commitment to journalistic integrity deserve recognition. Bergman is correct in asserting that “while serious criticisms of the Awami League are both valid and necessary, they must be proportionate and grounded in fact.” His analysis focuses primarily on the legal validity and appropriateness of labeling the Awami League as “fascist” or “Nazi.” He argues that comparing the party to the Nazi regime trivialises the scale of Nazi atrocities and misrepresents the complexities of Bangladeshi politics. Indeed, any historical comp...

সংবিধান সংস্কারে জাতীয় সমঝোতা কি অসম্ভব কিছু

সংবিধান সংস্কার কমিশন সংবিধান নিয়ে যে জনমত সংগ্রহ ও জাতীয়ভিত্তিক সংলাপগুলো করছে, তাতে বেশ ভালোই সাড়া মিলছে বলে আভাস পাওয়া যাচ্ছে। প্রায় প্রতিদিনই বিভিন্ন নাগরিক গোষ্ঠী, রাজনৈতিক দল, বিদ্বজ্জনেরা কেমন সংবিধান দেখতে চান, তা নিয়ে বিতর্ক ও মতবিনিময় করছেন। দেশের রাজনৈতিক ভবিষ্যত নির্ধারণের মৌলিক ভিত্তি তথা রাষ্ট্রকাঠামো ও ক্ষমতার বিন্যাস সম্পর্কে নাগরিকদের এতটা উৎসাহ সম্ভবত: এর আগে আর দেখা যায়নি। সংস্কার কমিশনের সূত্র থেকে জেনেছি, অনলাইনে তাঁরা অভূতপূর্ব সাড়া পেয়েছেন এবং মতামত দেওয়ার জন্য সপ্তাহখানেক সময় বাকি থাকতেই ৩০ হাজারেরও বেশি পরামর্শ তাঁদের কাছে জমা পড়েছে। নাগরিকদের এ আগ্রহ থেকে যে বার্তাটি স্পষ্ট হয়, তা হচ্ছে তাঁরা চান তাঁদের মতামত যেন গুরুত্ব পায়। দীর্ঘ ১৫ বছরের স্বৈরশাসনে ক্ষমতাধরদের কিছু বলার বা তাঁদের প্রশ্ন করার কোনো অধিকার সাধারণ মানুষের ছিল না। প্রতি পাঁচ বছরে একবার ভোটের মাধ্যমে প্রতিনিধি নির্বাচনের যে অধিকার, সেটুকুও তাঁরা হারিয়েছিলেন। এই পটভূমিতে নাগরিকদের প্রথম চাওয়া হচ্ছে, তাঁদের হারানো অধিকার ফিরে পাওয়া। ভোট দেওয়ার অধিকার, কথা বলার অধিকার, প্রশ্ন করার অধিকার, সংগঠন করার...