সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

আত্মপীড়ন, তামাশা নাকি অন্য কিছু

‘ব্যাটলিং বেগমস’ শব্দযুগল ব্যবহার করে বাংলাদেশের রাজনীতির সংকট বর্ণনায় অভ্যস্ত আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে আজ পর্যন্ত তাঁর কোনো জায়গা হয়নি। বিদেশি সরকার বা রাষ্ট্রপ্রধানদের সফরের সময়ও রাষ্ট্রাচারের আনুষ্ঠানিকতায় তিনি সব সময়ই উপেক্ষিত। রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানাদি ও সুযোগ-সুবিধা যতটা পান, তার পুরোটাই সরকারের কৃপানির্ভর। দলের ভেতরেও যে বড় ধরনের প্রভাববলয় তৈরি করতে পেরেছেন, তা-ও নয়। সুতরাং, হতাশা থেকে মুক্তির উপায় কী? নিশ্চয়ই সরকারপ্রধান বা প্রধানমন্ত্রীর কৃপা!
যাঁর সম্পর্কে এত কথা খরচ করছি, তিনি সরকারি ভাষ্যে বাংলাদেশের সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা, জাতীয় পার্টির সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান
রওশন এরশাদ।
২৭ ফেব্রুয়ারি তিনি সংসদে তাঁর এই হতাশা প্রকাশ করে যেভাবে প্রধানমন্ত্রীর আরও কৃপা প্রার্থনা করেছেন, তা নজিরবিহীন। বিশ্বের আর কোনো দেশে কোনোকালে বিরোধী দলের মর্যাদা ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীর করুণা কামনার আর কোনো দৃষ্টান্তের কথা আমাদের জানা নেই। তিনি প্রধানমন্ত্রীকে প্রশ্ন করেছেন, ‘আমরা সরকারি, না বিরোধী দল? বিদেশে গেলে বলতে পারি না আমরা কী।’
প্রশ্নটি করার আগে অবশ্য বিরোধীদলীয় নেতা হিসেবে নেওয়া বেতন-ভাতা তিনি ফেরত দিয়েছেন কি না, সে কথাটি বলেননি। ওগুলো ফেরত দিলে তাঁর আত্মপীড়ন কতটা আন্তরিক, সেটা বোঝা যেত।
বিনা ভোটের সংসদে তাঁর দলের সাংসদ আছেন তাঁর হিসাবে ৪০ জন। তাঁদের মধ্যে মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রী আছেন এবং আছেন প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত। এসব ব্যক্তিকে মন্ত্রিত্ব ও মন্ত্রিত্বের মর্যাদা ত্যাগ করতে বললেও যে তাঁরা তা শুনবেন, তাঁর স্বামী ও দলীয় সহকর্মীদের প্রতি তাঁর সে আস্থা নেই।
নিরুপায় রওশন তাই বলেছেন, ‘আপনি (প্রধানমন্ত্রী) যদি বলতে পারতেন, মন্ত্রিত্ব ছাড়েন। আমরা বলতে পারি না। এটা আপনি করলে জাতীয় পার্টি বেঁচে যেত। সম্মানের সঙ্গে থাকতে পারত। আমরা সম্মানের সঙ্গে নাই। এক বছর আছে আরও, সেটা দেখেন।’
সরকারি দলের সাংসদেরা মাইক ছাড়াই যখন বলতে থাকেন যে প্রধানমন্ত্রী জাতীয় পার্টির নেতাদের মন্ত্রিত্ব ছাড়তে বলেছেন, তখন রওশন বলেন, ‘আপনি নির্দেশ দিলে মানবে না কে? না, দেন নাই।’ এরপর অনেকটা দাবি জানানোর সুরে তিনি বলেন, তাহলে সবাইকে মন্ত্রী বানিয়ে দেন। হয় বিরোধী দল হতে হবে, না হয় সরকারি দল হতে হবে। বিরোধী দলের দরকার নেই।
প্রশ্ন হচ্ছে, প্রধানমন্ত্রীর কৃপানির্ভর বিরোধীদলীয় নেতার পদে আসীন রওশন এরশাদের এই আত্মোপলব্ধিতে চার বছর সময় লাগল কেন? তা ছাড়া উপলব্ধিটি কি শুধুই তাঁর ব্যক্তিগত, নাকি দলেরও? তাঁর কথায় জাতীয় পার্টির অন্যদের সায় আছে বলে তো আলামত মেলে না। কেউ কেউ এটিকে নিতান্তই তামাশা বলে তির্যক মন্তব্য করে বিষয়টিকে গুরুত্বহীন হিসেবে নাকচ করে দিয়েছেন। কিন্তু বিষয়টি ততটা উপেক্ষণীয় না-ও হতে পারে। রওশনের কথায় ধারণা হয়, জাতীয় পার্টিও চলে প্রধানমন্ত্রীর কথায়।
যার মানে দাঁড়ায়, তাঁরা চাইলেই আওয়ামী লীগে বিলীন হয়ে যেতে পারেন। কিন্তু বিশেষ কোনো কারণে তাঁদের আলাদা পরিচয়ে টিকিয়ে রাখা হয়েছে। পুতুলনাচের অদৃশ্য সুতার নিয়ন্ত্রণ নেপথ্যের অদৃশ্য কারও কাছে থাকে, সে কথা সবারই জানা। রওশনের কথায় স্পষ্ট ধারণা পাওয়া যায়, তাঁর দলের নিয়ন্ত্রক অদৃশ্য কেউ নয়, খুবই দৃশ্যমান। সুতরাং তাঁদের কারও পুতুল বলাটা যথার্থ নয়। কেননা, তাঁরা তো নির্দিষ্ট সুযোগ-সুবিধার বিনিময়ে সরকারের জন্য কাজ করছেন, যার জন্য প্রযোজ্য অভিধা নতুন করে উল্লেখের প্রয়োজন পড়ে না।
প্রধানমন্ত্রী হয়তো রওশনের দাবি পূরণ করবেন। আগামী নির্বাচনে বিএনপি না এলে অথবা বিএনপিকে না চাইলে আবারও তো একটি বিরোধী দলের প্রয়োজন হবে। সুতরাং ভবিষ্যৎ সম্ভাবনাকে উজ্জ্বলতর করার লক্ষ্যে বিরোধী দলের ভূমিকায় জাতীয় পার্টির যেটুকু অনুশীলন প্রয়োজন, তাকে সেটুকু সুযোগ দেওয়া এখন জরুরি হয়ে পড়েছে। বিএনপির অনেকেই জাতীয় পার্টিতে আসবেন বলে এরশাদের সাম্প্রতিক দাবির ভিত্তিও সম্ভবত এই আশাবাদ যে সরকার ভবিষ্যতেও তাদের বিএনপির বিকল্প হিসেবে পেতে চায়।
তা ছাড়া সরকার থেকে জাতীয় পার্টিকে বিদায় দেওয়ার মাধ্যমে আওয়ামী লীগ যে এখন অনেক বেশি আত্মবিশ্বাসী, সেটাও প্রমাণ করা সম্ভব হবে। জাতীয় রাজনীতিতে আসল প্রতিপক্ষ বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিচার এবং সাজার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর আওয়ামী লীগের জন্য এই আত্মবিশ্বাসের প্রতিফলন ঘটানোর সুযোগ কাজে লাগানোই স্বাভাবিক। খালেদা জিয়ার কারামুক্তি এবং সক্রিয় রাজনীতিতে ফিরে আসার পথ সরকার এখন যতটা দুরূহ করে তুলতে পেরেছে, সে রকমটি আর কারও ক্ষেত্রে অতীতে দেখা যায়নি।
আমাদের ক্ষমতাসীন রাজনীতিকেরা যেভাবেই ব্যাখ্যা দেওয়ার চেষ্টা করুন না কেন, সংসদীয় পরিভাষায় বিরোধী দলের সংজ্ঞা নিয়ে কোনো বিভ্রান্তি বা অস্পষ্টতা নেই। ব্রিটিশ পার্লামেন্টের সংসদীয় পরিভাষার তালিকায় অপজিশনের সংজ্ঞায় বলা হচ্ছে: বিরোধী দল বলতে হাউস অব কমন্সে সরকারে নেই যে বৃহত্তম রাজনৈতিক দল তাকে বোঝাবে। আরও সাধারণভাবে, যে দল সরকারের অংশ নয়, তাকেই একটি বিরোধী দল হিসেবে বর্ণনা করা হয়। সরকারের একটি অংশকে বিরোধী দল বলার কোনো অবকাশ নেই। অবশ্য স্বীকার করে নেওয়া ভালো যে গণমাধ্যমে আমরাও স্পষ্ট করে বলতে পারিনি যে তিনি সরকারি বিবরণে বিরোধীদলীয় নেতা হলেও বাস্তবে সরকারের প্রতিনিধি। গণমাধ্যম কথাগুলো পরিষ্কার করে বললে হয়তো তাঁকে এই আত্মপরিচয়ের বিভ্রান্তিতে ভুগতে হতো না।
রওশন এরশাদের এই আকুতির অবশ্য আরও কয়েকটি দিক রয়েছে, যেগুলো গণতন্ত্রের জন্য অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। তাঁর কথায় যেসব স্বীকারোক্তি পাওয়া গেল মোটাদাগে সেগুলো হচ্ছে-প্রথমত, এটি এখন আর অস্বীকারের কোনো উপায় নেই যে বাংলাদেশের দশম জাতীয় সংসদটি হচ্ছে বিরোধী দলবিহীন সংসদ। দ্বিতীয়ত, বিরোধী দলের নামে এই সংসদে যা হয়েছে, তা মূলত হয়েছে সংসদ নেত্রী বা প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছায়। তৃতীয়ত, বিরোধী দল বা বিরোধীদলীয় নেতার পরিচয় ব্যবহারের মাধ্যমে সবাইকে বিভ্রান্ত করা হয়েছে।
বিএনপির বিকল্প হিসেবে জাতীয় পার্টিকে দাঁড় করানোর চেষ্টা কয়েক বছর ধরেই চলছে। গত নির্বাচনে তাদের অংশগ্রহণ স্বতঃর্স্ফূত এবং সর্বাত্মক ছিল না; বরং দলীয় প্রধান জেনারেল এরশাদ নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিরুদ্ধে ছিলেন এবং তাঁর নির্বাচিত হওয়ার বিষয়টি রহস্যে ঘেরা। তাঁর বিরুদ্ধে হত্যা ও দুর্নীতির একাধিক মামলা ঝুলে আছে। সুতরাং সরকারের আনুকূল্য ছাড়া তাঁর স্বাভাবিক জীবনযাপন প্রায় অসম্ভব।
সুতরাং কার্যকর বিরোধী দলের ভূমিকা গ্রহণে তাঁর সামর্থ্য নিয়ে সন্দেহ-সংশয় সহসা দূর হওয়ার নয়। বার্ধক্য আড়াল করায় অভ্যস্ত হলেও রাজনীতিতে তাঁর সক্রিয়তা কত দিন থাকবে, তা-ও একটি বড় প্রশ্ন। সে ক্ষেত্রে জাতীয় পার্টির ভবিষ্যৎও যে অনিশ্চিত, সে কথা বললে খুব একটা ভুল হবে না।
সাংগঠনিক দুর্বলতা, জামায়াতের সঙ্গে রাজনৈতিক জোটের খেসারত এবং আন্তর্জাতিক রাজনীতির নতুন বাস্তবতায় বিএনপির অসহায়ত্ব দীর্ঘায়িত হওয়া সত্ত্বেও সরকার যে তাদেরই প্রধান প্রতিপক্ষ গণ্য করে, তা তাদের বক্তব্য-বিবৃতিতে প্রমাণিত। তাদের কথায় দেশের সব সমস্যার উৎস বিএনপির ১২ বছর আগের অপশাসন এবং সভা-সমাবেশ না করতে পারলেও উন্নয়নের পথে বাধাও তারাই। এমনকি আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ রেষারেষি, দলাদলি ও খুনোখুনিতেও দোষী দলে অনুপ্রবেশকারী বিএনপির সমর্থকেরা। এ রকম প্রতিপক্ষ রাতারাতি অস্তিত্বহীন হয়ে পড়বে-সেই ধারণাকে ভিত্তি করে জাতীয় পার্টিকে শক্তিশালী করার পরিকল্পনা সফল হওয়ার ভাবনা আদৌ কি বাস্তবসম্মত?
(২ মার্চ, ২০১৮ শুক্রবার দৈনিক প্রথম আলোয় প্রকাশিত নিবন্ধ।)

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বে স্বৈরশাসকের ফেরা সহজ

  গণতন্ত্রে উত্তরণে ব্যর্থতা ও স্বৈরতন্ত্রের নিকৃষ্টতম রুপ প্রত্যক্ষ করার পর অর্ন্তবর্তী সরকারের মেয়াদকালে যে সব বিষয়ে সংস্কারের আলোপ চলছে, তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে নির্বাচনব্যবস্থা। এরশাদের সামরিক স্বৈরাচারের পতনের পর নির্বাচনকে গণতন্ত্র চর্চার মাধ্যম হিসাবে যেভাবে প্রতিষ্ঠার কথা ছিল, তা থেকে প্রধান দুই দলই বিচ্যূত হয়েছিল। পরিণতিতে নির্বাচন শুধু ক্ষমতা দখলের হিংসাত্মক খেলায় পরিণত হয় এবং শেষ পর্যন্ত শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ সাধারণ মানুষের ভোটের অধিকার হরণ করে নির্বাচনকে নানা রকম প্রহসনে পরিণত করে।  এই সমস্যার এক অতি সরলীকৃত সমাধান হিসাবে বলা হচ্ছে, দ্বিদলীয় রাজনীতির বৃত্ত থেকে বেরিয়ে দেশে সত্যিকার বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে। আর বহুদলীয় গণতন্ত্রের জন্য নির্বাচনব্যবস্থায় আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বের ধারণাকে একমাত্র বা চূড়ান্ত সমাধান হিসাবে তুলে ধরা হচ্ছে।  সংখ্যানুপাতিক বা আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতির নির্বাচনে একটি দল যত শতাংশ ভোট পাবে, সে অনুপাতে তারা সংসদের আসন পাবে। এ আনুপাতিক পদ্ধতিতে প্রার্থীদের নাম দল আগাম ঘোষণা করতেও পারে, আবার না–ও পারে। নাম প্রকাশ করা হলে সেটা হব...

অরাজনৈতিক আন্দোলনের করুণ রাজনৈতিক মূল্য

কোটা সংস্কারের দাবিতে সাধারণ ছাত্র–ছাত্রীদের আন্দোলনে  কদিন ধরে যা ঘটে চলেছে, তা যেমন বেদনাদায়ক, তেমনই নিন্দনীয় ও ক্ষোভের কারণ। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের শিক্ষা দিতে ক্ষমতাসীন সরকারের সমর্থক এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীর হাতে একইদিনে দেশের তিন জায়গায় ছয়জনের প্রাণহানির ঘটনা স্বাধীন বাংলাদেশে বিরল।  এবার আরও যেসব ঘটনা আমাদের স্তম্ভিত করেছে, অভিভাবকদের চোখ অশ্রুসিক্ত করেছে, এসব মৃত্যুর পরও সরকারের রাজনৈতিক দম্ভ বজায় রাখার চেষ্টা, যা আরও প্রাণহানির কারণ হয়েছে। ছয়জন তরুণের প্রাণ বিসর্জনের পরও কোটা সংস্কারের দাবিতে সরকার ”নীতিগতভাবে একমত” – একথাটি বলে  আলোচনায় না ডেকে সময়ক্ষেপণ করেছে। আইনমন্ত্রী কথাটি যখন বললেন, তার আগেই আরও জীবন গেল, শত শত মানুষ আহত হলো, দেশের সম্পদ নষ্ট হলো। রাজনৈতিক গরিমা ছাড়া এর আর কোনো কারণ আছে কি? ছাত্রলীগ পরিচয়ে অন্ত্রধারীদের তান্ডব, পুলিশের চরম নিষ্ঠুরতা এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ছাত্রীদের গড়পরতা মারধর ও লাঞ্চিত করার যে দৃশ্যগুলো গণমাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে, তা কোনো অভিভাবকের পক্ষেই ভোলা সম্ভব নয়। এসব ঘটনার বিবরণ উদ্ধৃত না করে শুধু নিষ্ঠুর ...

সংবিধান সংস্কারে জাতীয় সমঝোতা কি অসম্ভব কিছু

সংবিধান সংস্কার কমিশন সংবিধান নিয়ে যে জনমত সংগ্রহ ও জাতীয়ভিত্তিক সংলাপগুলো করছে, তাতে বেশ ভালোই সাড়া মিলছে বলে আভাস পাওয়া যাচ্ছে। প্রায় প্রতিদিনই বিভিন্ন নাগরিক গোষ্ঠী, রাজনৈতিক দল, বিদ্বজ্জনেরা কেমন সংবিধান দেখতে চান, তা নিয়ে বিতর্ক ও মতবিনিময় করছেন। দেশের রাজনৈতিক ভবিষ্যত নির্ধারণের মৌলিক ভিত্তি তথা রাষ্ট্রকাঠামো ও ক্ষমতার বিন্যাস সম্পর্কে নাগরিকদের এতটা উৎসাহ সম্ভবত: এর আগে আর দেখা যায়নি। সংস্কার কমিশনের সূত্র থেকে জেনেছি, অনলাইনে তাঁরা অভূতপূর্ব সাড়া পেয়েছেন এবং মতামত দেওয়ার জন্য সপ্তাহখানেক সময় বাকি থাকতেই ৩০ হাজারেরও বেশি পরামর্শ তাঁদের কাছে জমা পড়েছে। নাগরিকদের এ আগ্রহ থেকে যে বার্তাটি স্পষ্ট হয়, তা হচ্ছে তাঁরা চান তাঁদের মতামত যেন গুরুত্ব পায়। দীর্ঘ ১৫ বছরের স্বৈরশাসনে ক্ষমতাধরদের কিছু বলার বা তাঁদের প্রশ্ন করার কোনো অধিকার সাধারণ মানুষের ছিল না। প্রতি পাঁচ বছরে একবার ভোটের মাধ্যমে প্রতিনিধি নির্বাচনের যে অধিকার, সেটুকুও তাঁরা হারিয়েছিলেন। এই পটভূমিতে নাগরিকদের প্রথম চাওয়া হচ্ছে, তাঁদের হারানো অধিকার ফিরে পাওয়া। ভোট দেওয়ার অধিকার, কথা বলার অধিকার, প্রশ্ন করার অধিকার, সংগঠন করার...