সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

রোহিঙ্গা ও বঙ্গোপসাগরের নিরাপত্তা


গেল সপ্তাহে ঢাকায় একটি আঞ্চলিক ফোরামের শীর্ষস্থানীয় নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের বৈঠক হয়ে গেল। বঙ্গোপসাগরের উপকূলীয় দেশগুলোর এই ফোরাম, বিমসটেক (বে অব বেঙ্গল ইনিশিয়েটিভ ফর সেক্টরাল টেকনিক্যাল অ্যান্ড ইকোনমিক কোঅপারেশন) এর নিরাপত্তাপ্রধানদের এই বৈঠকের বিষয়ে গণমাধ্যমে এক অদ্ভূতরকমের নিস্পৃহতা লক্ষ্যণীয়। বৈঠকের আলোচনা এবং সিদ্ধান্তের কোনো বিবরণ সংবাদপত্রের পাতায় স্থান পায়নি, বিশ্লেষণ তো দূরের কথা।

বিমসটেক সচিবালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে ২০১৭ সালের নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিত নিরাপত্তাপ্রধানদের সভায় গৃহীত সিদ্ধান্তগুলোর অগ্রগতি পর্যালোচনা করা হয়েছে। এই অঞ্চলের প্রথাগত এবং অপ্রথাগত অভিন্ন নিরাপত্তা হুমকিগুলো মোকাবেলায় একসঙ্গে কাজ করা এবং তথ্য-উপাত্ত বিনিময়ের ওপর বৈঠকে জোর দেওয়া হয়।

বাংলাদেশ, ভারত, মিয়ানমার, শ্রীলংকা এবং থাইল্যান্ডকে নিয়ে এই আঞ্চলিক জোটটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল  ১৯৯৭ সালে। তখন সদস্য দেশগুলোর নামের আদ্যক্ষর দিয়ে এই জোটের পরিচিতি ঠিক করা হলেও পরে তাতে যুক্ত হয় নেপাল এবং ভুটান। এরপর, আদ্যক্ষরগুলো ঠিক রেখে নাম বদলানো হয়। দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দুই আঞ্চলিক জোট সার্ক এবং আসিয়ানের মধ্যে সেতুবন্ধ গড়ার লক্ষ্য নিয়ে এই ফোরাম যাত্রা শুরু করলেও কুড়ি বছরে তার তেমন কোনো অগ্রগতি হয়নি। বাণিজ্য, প্রযুক্তি, পরিবহন, পর্যটন, মৎস্যসম্পদ,কৃষিসহ প্রায় পনেরোটি খাতে পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে প্রবৃদ্ধি বাড়ানোর চেষ্টায় খুব একটা সাফল্য নেই। তবে, ভারত আগ্রহী ও উদ্যোগী হওয়ার পর ২০১৬ সাল থেকে এই জোটের কার্য্যক্রম কিছুটা বেড়েছে এবং স্পষ্টতই আঞ্চলিক নিরাপত্তার বিষয়টি সহযোগিতার একটি প্রধান অগ্রাধিকারে পরিণত হয়েছে।

আঞ্চলিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে এধরণের বৃহত্তর পরিসরে সহযোগিতার বিষয়টি গুরুত্বর্পূণ, সন্দেহ নেই। বিমসটেক এর নিরাপত্তা প্রধানদের প্রথম বৈঠকটিতে যেসব সিদ্ধান্ত হয়েছিল বলে তখন ( ২১ মার্চ ২০১৭) ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে জানানো হয়েছিল তাতে দেখা যায় বঙ্গোপসাগরকে অভিন্ন নিরাপত্তার ক্ষেত্র (কমন সিকিউরিটি স্পেস) বিবেচনা করে অভিন্ন ব্যবস্থাগ্রহণের জন্য অভিন্ন কৌশল প্রণয়নের বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছিল। বিবৃতিতে বলা হয়েছিল, বঙ্গোপসাগরীয় এলাকায় শান্তি ও স্থিতিশীলতার প্রতি সন্ত্রাসবাদ সবচেয়ে বড় হুমকি হয়ে রয়েছে। সন্ত্রাসবাদ, সহিংস উগ্রপন্থা এবং র‌্যাডিকালাইজেশন মোকাবেলায় সদস্য দেশগুলোর নিরাপত্তা , গোয়েন্দা সংস্থা এবং আইনপ্রয়োগকারীদের মধ্যে সহযোগিতা ও সমন্বয় বাড়ানোর ব্যবস্থা জোরদার করার প্রয়োজনীয়তার কথাও তাতে বলা হয়েছিল। 

যদি প্রশ্ন করা হয় এই অঞ্চলের সাম্প্রতিককালের সবচেয়ে বড় অস্থিরতা সৃষ্টিকারী ঘটনা কোনটি ?  নিঃসন্দেহে উত্তর হবে মিয়ানমারের রোহিঙ্গাদের জাতিগত নির্মূল অভিযান এবং উদ্বাস্তুপ্রবাহ। মিয়ানমার থেকে নিষ্ঠূর ও সহিংস উপায়ে বিতাড়ণের বিষয়টিকে কিভাবে মূল্যায়ন করেছেন? তাহলে ঢাকায় এসব দেশের নিরাপত্তাপ্রধানরা আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতার বিষয়ে যেসব আলোচনা করলেন সেখানে রোহিঙ্গা ইস্যু কতটা গুরুত্ব পেলো ? শুধুমাত্র ধর্মীয় পরিচয়ের কারণে নাগরিকত্বের স্বীকৃতিবঞ্চিত প্রায় দশ লাখ নিরপরাধ ও নিরীহ বেসামরিক লোকজনকে ঘরবাড়ি থেকে উচ্ছেদের উদ্দেশ্যে মিয়ানমারের পোড়ামাটি নীতি অনুসরণের কি ব্যাখ্যা এই বৈঠকে মিললো তার কোনো উল্লেখ বিমসটেকের বিজ্ঞপ্তিতে নেই। ওই বিজ্ঞপ্তির তালিকা অনুযায়ী বৈঠকে মিয়ানমারের পক্ষে অংশ নিয়েছিলেন দেশটির নিরাপত্তা বিষয়ক মন্ত্রী থং তুন। মিয়ানমারের নিরাপত্তামন্ত্রীর অংশগ্রহণের কারণে এই বৈঠক বিশেষভাবে গুরুত্বর্ণপূণ হয়ে উঠবে সেটাই স্বাভাবিক।

মি থং তুন একেবারে অপরিচিত কেউ নন। মিয়ানমারে রোহিঙ্গা বিরোধী সর্বসাম্প্রতিক অভিযানকে জাতিসংঘ জাতিগত নির্মূল অভিযানের একটি দৃষ্টান্তহিসাবে অভিহিত করার পর গতবছরের ২৮ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের বিশেষ অধিবেশনে তিনি তাঁর দেশের পক্ষে সাফাই দিয়েছেন। তাঁর দাবি ছিল তাঁর দেশ সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়ছে। তাঁর কথায় - সব সম্প্রদায় - রাখাইন , মুসলমান, দিয়াগনেট, ম্রো, থেট, মারামাগি এবং হিন্দু জনগোষ্ঠীর র্দুভোগ এবং কষ্ট তাঁরা গভীরভাবে উপলব্ধি করেন। এঁরা সবাই সহিংসতা এবং সন্ত্রাসবাদের শিকার। মন্ত্রাসবাদ আন্তর্জাতিক শান্তি ও স্থিতিশীলতার প্রতি অত্যন্ত গুরুতর একটি হুমকি। আমি নিশ্চিত যে আপনারা আমার সঙ্গে একমত হবেন যে কোনোধরণের সন্ত্রাসবাদই ক্ষমার যোগ্য নয়।

আমরা জানি গতবছরের অগাস্টে নতুন করে রোহিঙ্গাবিরোধী দমন-পীড়ণ শুরু হওয়ার পর দ্রুততম গতিতে উদ্বাস্তুস্রোত বাংলোদেশে প্রবেশ করে এবং মানবিক বিবেচনায় কক্সবাজারে গড়ে ওঠে বিশ্বের বৃহত্তম আশ্রয় শিবির। সেই প্রবাহ এখনও পুরোপুরি বন্ধ হয় নি। পরিস্থিতি মোকাবেলায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহায়তা চেয়ে জাতিসংঘের তরফে একাধিক আবেদনে কক্সবাজারে একটি মানবিক বিপর্য্যয়ের আশংকার কথা বলা হয়েছে। ওই অঞ্চলে স্থানীয় জনগোষ্ঠী এখন সংখ্যালঘু হওয়ায় সামাজিক বাস্তবতাই বদলে গেছে। বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় পরিবেশবাদী প্রতিষ্ঠানগুলো বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে বাস্তুতান্ত্রিক ভারসাম্য নষ্ট হওয়ার কথা বলেছেন। নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা রাষ্ট্রহীন এসব বিপণ্ন মানুষের মধ্যে র‌্যাডিকালাইজেশনে ঝুঁকে পড়ার ঝুঁকির কথাও বলেছেন। মাদকের কারবার এবং মানবপাচারের মত আন্তদেশীয় অপরাধে জড়িয়ে পড়ার আশংকাতেও প্রশাসন উদ্বিগ্ন।

রোহিঙ্গা সংকট যে মারাত্মক আঞ্চলিক সংকটের জন্ম দিয়েছে তা নিরসনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতবছরের ২১ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে পাঁচদফা প্রস্তাব ‍তুলে ধরেছিলেন। এগুলোর মধ্যে ছিল রোহিঙ্গাদের নিরাপদে ফিরিয়ে নেওয়াসহ তাদের ভবিষ্যত নিরাপত্তার জন্য মিয়ানমারের ভিতরে জাতিসংঘের তত্বাবধানে একটি সুরক্ষিত অঞ্চল গড়ে তোলার প্রস্তাব। রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্বের প্রশ্নে কোফি আনান কমিশনের সুপারিশমালা বাস্তবায়নের কথাও ছিল তাঁর পাঁচ দফায়। সেগুলোর বাস্তবায়ন যখন সুদূরপরাহত, দ্বিপক্ষীয় সমঝোতার আওতায় ফেব্রুয়ারিতে প্রত্যাশিত প্রত্যাবাসন শুরুর বিষয়টি যেখানে এখনও অনিশ্চিত সেখানে বঙ্গোপসাগরীয় অঞ্চলে নিরাপত্তা ও শান্তি প্রতিষ্ঠার বহুপাক্ষিক আলোচনায় বিশ্বের বৃহত্তম মানবিক সংকটের বিষয় কি উপেক্ষিত থাকল? নাকি, মিয়ানমারের ইসলামপন্থী সন্ত্রাসবাদের দাবি স্বীকৃতি পেল? জাতিসংঘ এবং বিভিন্ন দেশ মিয়ানমার সরকারের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ এবং বিচার দাবি করলেও আমরা এখনো পর্যন্ত সেই পথে পা মাড়াইনি। এখন আঞ্চলিক ফোরামের নিরাপত্তাবিষয়ক বৈঠকেও এটি আলোচ্যসূচিতে না থাকলে তা কী যৌক্তিক হবে?  সহিংস বৌদ্ধ উগ্রপন্থীদের জাতিবিদ্বেষ ছড়ানোর বিষয়টিও যে আর উপেক্ষনীয় নয় সেকথা বাকি বিশ্ব বুঝলেও আমরা সেই বিপদের কথা কি বলতে পেরেছি?

নিরাপত্তার ধারণা নিয়ে নানাধরণের বিতর্ক থাকলেও জাতীয় নিরাপত্তার অবিচ্ছেদ্য অংশ হচ্ছে রাষ্ট্রীয় অখন্ডতা, নাগরিকদের নিরাপত্তা, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক স্বাধীনতা অক্ষূণ্ন রাখা, প্রাকৃতিক এবং অন্যান্য সম্পদের সুরক্ষা এবং সামাজিক কাঠামো বজায় রাখার ক্ষেত্রে বাইরের কোনো হস্তক্ষেপ থেকে নিজেদেরকে রক্ষার সামর্থ্য অটুট রাখা। এসব  সামাজিক, সাংস্কৃতিক এবং অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার যুক্তি দিয়েই ভারত কথিত অনুপ্রবেশের যুক্তি দিয়েই বাংলাদেশের সঙ্গে সীমান্তের বেশিরভাগ অংশে কাঁটাতারের বেড়া স্থাপন করেছে। আর যেসব জায়গা এখনও খোলা আছে সেসব জায়গায় বিএসএফ এর গুলিতে প্রায়শই বাংলাদেশিদের প্রাণ যায়। এই ইস্যুর রাজনৈতিক গুরুত্ব এতোটাই যে ভারতের ক্ষমতাসীন বিজেপির সভাপতি অমিত শাহ আসামের নির্বাচনের আগে ঘোষণা দিয়েছিলেন তাঁর দল জিতলে সেখানে একটি পাখিও সীমান্ত পার হতে পারবে না। আর, নির্বাচন জয়ের পর এখন তাঁরা প্রায় পঞ্চাশ লাখ বাংলাভাষী মুসলমানের নাগরিকত্বের স্বীকৃতি কেড়ে নিয়ে তাঁদেরকে অবৈধ বাংলাদেশি তকমা পরানোর চেষ্টায় নেমে পড়েছেন। আসামের এই বিপুল সংখ্যক বাংলাভাষীর নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হলে সেটি বঙ্গোপসাগরীয় অঞ্চলের শান্তি ও স্থিতিশীলতায় কি ভূমিকা রাখবে, ধারণা করি, সেই প্রশ্ন বিমসটেকের মত বহুপাক্ষিক ফোরামে উত্থাপিত হয়নি। কেননা, ভারত দ্বিপক্ষীয় কোনো বিরোধ আঞ্চলিক কোনো ফোরামে উত্থাপনের বিরুদ্ধে এবং সেই যুক্তির পরিণতিতেই সার্ক জোট এখন প্রায় অর্ধন্মৃত।

গতবছরের জুলাই মাসে ভারতের নিরাপত্তা বিষয়ক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইনিস্টিটিউট ফর ডিফেন্স স্টাডিজ অ্যানালিসিস, আইডিএসএর গবেষক ড. শম্পা কুন্ডু বিমসটেক প্রতিষ্ঠার পর দুই দশকে এটি তেমন কার্যকর ফোরামে রুপান্তরিত না হওয়ার জন্য ভারতের উদ্যোগহীনতাকে চিহ্নিত করেন। এরপর, তিনি লিখেছেন, উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় ভারত এবং মিয়ানমারের মধ্যে সরাসরি সংযোগ প্রতিষ্ঠার ফলে সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলা এবং বিদ্রোহমূলক তৎপরতা প্রতিরোধে মিয়ানমারের সঙ্গে সহযোগিতা এবং মিয়ানমারের জ্বালানি সম্পদের সম্ভাবনা বিমসটেকের বিষয়ে নয়াদিল্লিতে যথেষ্ট আগ্রহ তৈরি করে।

গোয়ায় বিমসটেকের শীর্ষবৈঠকের পর জোটটির কার্যক্রম কিছুটা চাঙ্গা হওয়ার পটভূমিতে ভারতের একজন রাষ্ট্রবিজ্ঞানী স্মিতা শ্রীবাস্তবা দ্য ইন্ডিয়ান জার্নাল অব পলিটিকাল সায়েন্সে লিখেছিলেন ভারতের জন্য বিমসটেকের সদস্যপদের মানে হচ্ছে পূর্বাঞ্চলীয় প্রতিবেশিদের সঙ্গে সম্পর্ক ঘনিষ্ঠতর করা যাতে করে অঞ্চলটিতে চীনের প্রভাব খর্ব করে ও পাকিস্তানকে পাশ কাটিয়ে আসিয়ান দেশগুলোর সঙ্গে নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক অভিগম্যতা বাড়ানো যায়। বিশ্ব পরিসরে একটি উদীয়মান আঞ্চলিক শক্তি হিসাবে নিজেদের অবস্থান সংহত করার মানসে ভারতের এধরণের রাজনৈতিক আকাঙ্খা মোটেও অপ্রত্যাশিত নয়। আর, এশিয়ায় চীনের বিপরীতে দাঁড়ানোর জন্য ভারতকে উৎসাহ এবং সমর্থন দিতে মুখিয়ে আছে যুক্তরাষ্ট্র।

এই জোটে বাংলাদেশের লক্ষ্য এবং অর্জনের হিসাবটা কি মিলছে? সেই আলোচনা কি উপেক্ষণীয়?

(৩ এপ্রিল, ২০১৮র প্রথম আলোয় প্রকাশিত লেখকের কলাম ।)


মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

Bangladesh is vexed by and wary of Modi’s unstinting support to Sheikh Hasina

In the run-up to Bangladesh’s general election in January 2014, New Delhi took the unusual step of sending a top diplomat from its external affairs ministry to Dhaka to persuade General Hussain Muhammaed Ershad, the country’s former military ruler, to participate in the polls. Big questions had been raised over the fairness of the election. The incumbent government was led by Sheikh Hasina’s Awami League, and the leader of the opposition Bangladesh Nationalist Party (BNP) had been placed under virtual house arrest, with police and roadblocks around her house in Dhaka. The BNP and other opposition parties were threatening to boycott the election. Ershad, the head of the Jatiya Party, was perceived as a potential kingmaker, able to bring to power whichever of Bangladesh’s two main parties he supported, but he was also threatening to withdraw from the election.  After a decade of Modi’s reign in India, people in Bangladesh are angry at their government cosying up to a Hindutva regime ...

অরাজনৈতিক আন্দোলনের করুণ রাজনৈতিক মূল্য

কোটা সংস্কারের দাবিতে সাধারণ ছাত্র–ছাত্রীদের আন্দোলনে  কদিন ধরে যা ঘটে চলেছে, তা যেমন বেদনাদায়ক, তেমনই নিন্দনীয় ও ক্ষোভের কারণ। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের শিক্ষা দিতে ক্ষমতাসীন সরকারের সমর্থক এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীর হাতে একইদিনে দেশের তিন জায়গায় ছয়জনের প্রাণহানির ঘটনা স্বাধীন বাংলাদেশে বিরল।  এবার আরও যেসব ঘটনা আমাদের স্তম্ভিত করেছে, অভিভাবকদের চোখ অশ্রুসিক্ত করেছে, এসব মৃত্যুর পরও সরকারের রাজনৈতিক দম্ভ বজায় রাখার চেষ্টা, যা আরও প্রাণহানির কারণ হয়েছে। ছয়জন তরুণের প্রাণ বিসর্জনের পরও কোটা সংস্কারের দাবিতে সরকার ”নীতিগতভাবে একমত” – একথাটি বলে  আলোচনায় না ডেকে সময়ক্ষেপণ করেছে। আইনমন্ত্রী কথাটি যখন বললেন, তার আগেই আরও জীবন গেল, শত শত মানুষ আহত হলো, দেশের সম্পদ নষ্ট হলো। রাজনৈতিক গরিমা ছাড়া এর আর কোনো কারণ আছে কি? ছাত্রলীগ পরিচয়ে অন্ত্রধারীদের তান্ডব, পুলিশের চরম নিষ্ঠুরতা এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ছাত্রীদের গড়পরতা মারধর ও লাঞ্চিত করার যে দৃশ্যগুলো গণমাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে, তা কোনো অভিভাবকের পক্ষেই ভোলা সম্ভব নয়। এসব ঘটনার বিবরণ উদ্ধৃত না করে শুধু নিষ্ঠুর ...

আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বে স্বৈরশাসকের ফেরা সহজ

  গণতন্ত্রে উত্তরণে ব্যর্থতা ও স্বৈরতন্ত্রের নিকৃষ্টতম রুপ প্রত্যক্ষ করার পর অর্ন্তবর্তী সরকারের মেয়াদকালে যে সব বিষয়ে সংস্কারের আলোপ চলছে, তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে নির্বাচনব্যবস্থা। এরশাদের সামরিক স্বৈরাচারের পতনের পর নির্বাচনকে গণতন্ত্র চর্চার মাধ্যম হিসাবে যেভাবে প্রতিষ্ঠার কথা ছিল, তা থেকে প্রধান দুই দলই বিচ্যূত হয়েছিল। পরিণতিতে নির্বাচন শুধু ক্ষমতা দখলের হিংসাত্মক খেলায় পরিণত হয় এবং শেষ পর্যন্ত শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ সাধারণ মানুষের ভোটের অধিকার হরণ করে নির্বাচনকে নানা রকম প্রহসনে পরিণত করে।  এই সমস্যার এক অতি সরলীকৃত সমাধান হিসাবে বলা হচ্ছে, দ্বিদলীয় রাজনীতির বৃত্ত থেকে বেরিয়ে দেশে সত্যিকার বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে। আর বহুদলীয় গণতন্ত্রের জন্য নির্বাচনব্যবস্থায় আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বের ধারণাকে একমাত্র বা চূড়ান্ত সমাধান হিসাবে তুলে ধরা হচ্ছে।  সংখ্যানুপাতিক বা আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতির নির্বাচনে একটি দল যত শতাংশ ভোট পাবে, সে অনুপাতে তারা সংসদের আসন পাবে। এ আনুপাতিক পদ্ধতিতে প্রার্থীদের নাম দল আগাম ঘোষণা করতেও পারে, আবার না–ও পারে। নাম প্রকাশ করা হলে সেটা হব...