সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

সত্য বলায় সংযত হবেন কেন ?


বহু বছর পর আমরা একটি সাংবিধানিক পদের অধিকারী অত্যন্ত দায়িত্বশীল একজন ব্যাক্তির সরল স্বীকারোক্তি পেলাম। তবে, সত্য যেহেতু সবার জন্য সবসময় সুখকর নয় সে কারণে তাঁর প্রতি অনেকেই কিছুটা নিষ্ঠুর প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (প্রনিক) খান মোহাম্মদ নূরুল হুদা বলেছেন, জাতীয় নির্বাচনে কোথাও কোনো অনিয়ম হবে না - এমন নিশ্চয়তা দেওয়ার সুযোগ তাঁর নেই। সংবিধানে নির্দিষ্ট শপথবাক্য পাঠের বছর দেড়েক পর দায়িত্বপালনে নিজেদের সীমাবদ্ধতা উপলব্ধি করতে পারাই এই স্বীকারোক্তির কারণ কিনা তা আমরা জানিনা। তবে, এই অকপটে স্বীকারোক্তির জন্য আমাদের উচিত তাঁকে ধন্যবাদ জানানো। সাধারণ নির্বাচনের মাস চারেক আগেই দেশবাসীকে এই ঘাটতির দিকটি স্মরণ করিয়ে দিয়ে তিনি বরং একটা সুযোগ করে দিয়েছেন যাতে সমস্যাটা সমাধানের চেষ্টা করা যায়।  
ক্ষমতাসীন দলের একজন গুরুত্বর্পূণ নেতা এবং মন্ত্রী অবশ্য তাঁর প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন যে দায়িত্বশীল ব্যাক্তিদের আরও সংযতভাবে কথা বলা উচিত। ক্ষমতাসীন দলের নেতা না হলে প্রনিককে এভাবে সবক দেওয়া যেতো কীনা সন্দেহ। নির্বাচনে অনিয়ম হলে কমিশন কেন তা প্রতিকার করতে পারে না ক্ষমতাসীন দলের এই প্রতিক্রিয়াও কিন্তু তারই একটি আলামত। কমিশনকে স্বাধীনভাবে মতপ্রকাশ করতে দিতেও তাঁরা নারাজ।এখানে স্মরণ করা যায় গাজীপুরের নির্বাচনে জেলার পুলিশ প্রধানের আচরণে ক্ষুব্ধ বিএনপি তার অপসারণ দাবি করলে ক্ষমতাসীন দলের প্রধান নির্বাচন সমন্বয়কারী কি মন্তব্য করেছিলেন। সেখানকার ভোটের দিনে যত অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে তাতে কিন্তু পুলিশের ভূমিকাই সবচেয়ে বিতর্কিত। খুলনা, বরিশাল, রাজশাহী এবং সিলেটের নির্বাচনগুলোতে যেসব অনিয়মের চিত্র গণমাধ্যমে উঠে এসেছে এবং প্রতিদ্বন্দীরা অভিযোগ করেছেন সেগুলোর ক্ষেত্রে কমিশনের অক্ষমতা প্রমাণ হয় নি এমন কথা বলার অবকাশ আদৌ আছে কি? সিলেটে বিরোধীদলীয় প্রার্থী জয়ী হলেও অনিয়মের অভিযোগগুলো মোটেও তুচ্ছ ও উপেক্ষণীয় ছিল না।
নির্বাচন কমিশনের অপর চার সদস্য প্রনিকের বক্তব্যের সঙ্গে একমত নন বলে গণমাধ্যমে থবর এসেছে। যেহেতু কমিশন সভা করে সর্বসম্মতভাবে অনিয়মের আশংকা চিহ্নিত করে নি সেহেতু তাঁরা এ এম নুরুল হুদার বক্তব্যকে তাঁর ব্যাক্তিগত মত হিসাবে অভিহিত করতেই পারেন। তবে, আশংকাটি অমূলক এমনটি কিন্তু তাঁরাও দাবি করেন নি। সবচেয়ে বড় কথা তাঁদের কেউই বলতে পারেননি যে তাঁদের মেয়াদকালে অনুষ্ঠিত নির্বাচনগুলোর অনিয়ম মোকাবেলায় তাঁরা আদৌ কিছু করতে পেরেছেন কিনা। ভবিষ্যতের ব্যাপারে প্রনিক নিজেও অবশ্য আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেছেন যে অনিয়ম হলে নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে সমস্যা হচ্ছে ক্ষমতাসীনদের বিরুদ্ধে অনিয়মের ব্যবস্থা নেওয়ায় তাঁরা যে অক্ষম তা ইতোমধ্যেই প্রমাণ হয়ে যাওয়ায় তাঁদের সাহস বা আশাবাদে আস্থা রাখা কঠিন। তাছাড়া, ২০১৪র ৫ জানুয়ারির নির্বাচন এবং পূর্বসুরি রকিব কমিশনের আত্মসমপর্ণের দৃষ্টান্তগুলো তাঁরা বিস্মৃত হবেন কিভাবে?  

সিটি মেয়রদের নির্বাচনগুলো কেমন হয়েছে তার মূল্যায়নে নির্বাচন পর্যবেক্ষকদের জোট, ইলেকশন ওয়ার্কিং গ্রুপ এর প্রাথমিক মূল্যায়ন এখানে স্মরণ করা যেতে পারে। খুলনার মেয়র নির্বাচনে তাঁরা ৫০ শতাংশ ভোটকেন্দ্র পর্যবেক্ষণ করে ৩০ শতাংশ কেন্দ্রে অনিয়ম দেখতে পেয়েছেন (যুগান্তর, ১৭ মে ২০১৮)। গাজীপুরে এই অনিয়মের হার তাঁদের মতে ৪৬ শতাংশেরও বেশি ( প্রথম আলো, ২৮ জুন, ২০১৮)। রাজশাহী, বরিশাল এবং সিলেটের নির্বাচন সম্পর্কে ইডাব্লুজি এখনও তাদের প্রতিবেদন প্রকাশ করেনি। তবে, যে দুই ডজনেরও বেশি নাগরিক গোষ্ঠী বা এনজিওর সমন্বয়ে এই জোট গঠিত সেসব সংস্থার শীর্ষ নির্বাহীরা আলাদা আলাদাভাবে প্রায় একই কথার পুনরাবৃত্তি করেছেন। তাঁরা বলেছেন খুলনা এবং গাজীপুরের চেয়েও খারাপ হয়েছে এই তিনটি নির্বাচন। তাঁদের বক্তব্য সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মানদণ্ডে কমিশন ক্রমশই নিম্নমুখী হচ্ছে। তাঁরা বলেছেন, নির্বাচন কমিশন আগেরটির ব্যর্থতাকে অভিজ্ঞতা হিসেবে কাজে লাগানোর কথা বলেছিল, কিন্তু কথা ও কাজে মিল পাওয়া যায়নি (প্রত্যাশা পূরণ করেনি ৩ সিটির ভোট, বাংলা ট্রিবিউন, ৩০ জুলাই, ২০১৮)। আগের দুটি মেয়র নির্বাচনে কমপক্ষে ৩০ শতাংশ অনিয়মের প্রমাণ মিললেও সর্বসাম্প্রতিক তিনটিতে ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীরা ছাড়া অন্য প্রতিদ্বন্দীদের ভোটের দিনে বর্জনের ঘোষণায় বোঝা যায় সেসব নির্বাচন কতটা খারাপ হয়েছে। অথচ, সেসব অনিয়মের নিষ্পত্তি ছাড়াই ফলাফল চূড়ান্ত করা হয়েছে। খুলনা এবং সিলেটে দুটি করে কেন্দ্রে ভোট স্থগিত ও পুনরায় ভোটগ্রহণ এই বিপুল অনিয়ম প্রতিকারে ন্যূনতম ভূমিকাও রাখতে পেরেছে কিনা সন্দেহ।

এসব নির্বাচনের প্রথমটি যখন সম্পন্ন হলো, তখন সেই নির্বাচনের নাম হলো খুলনা মডেল যার বৈশিষ্ট্য ছিল মামলা দিয়ে বিরোধীদের হয়রানি এবং ভোটের দিনে পেশিশক্তির মাধ্যমে কেন্দ্র দখল। তারপর গাজীপুরে সেই মডেলে সংযোজন ঘটলো বিরোধী দলের কর্মীদের ভোটের দিনে পুলিশ দিয়ে উঠিয়ে নিয়ে আটকে রাখা। পরের গুলোতেও এই নিয়ন্ত্রিত নির্বাচনেরই নানা রুপ দেখা গেছে, যাতে সবচেয়ে গুরুত্বর্পূণ ভূমিকা ছিল প্রশাসন এবং পুলিশের। সুতরাং, নির্বাচন কমিশন তার সামর্থ্যের সীমাবদ্ধতা বা অক্ষমতার যে স্বাদ পেয়েছে প্রনিক নুরুল হুদা তো সেকথাই আমাদের জানিয়েছেন। অন্য কমিশনাররা এই সত্যটুকু স্বীকার করার মত সততা ও সাহসের পরিচয় দেবেন কিনা সেটা তাঁদের যার যার বিবেচনা।  

প্রশাসন এবং পুলিশের ভূমিকার গুরুত্বের কারণেই ভারতে নির্বাচনী ব্যবস্থায় প্রায় বৈপ্লবিক সংস্কার এনেছিলেন যিনি, সেই টি এন সেশান সেদেশে এক রাজ্যের নির্বাচনে আরেক রাজ্যের কর্মকর্তা নিয়োগ এবং রাজ্যের পুলিশবাহিনীর বদলে কেন্দ্রীয় রির্জাভ র্ফোস মোতায়েনের রীতি চালু করে গেছেন। তাঁর সংস্কারগুলোর লক্ষ্যই ছিল নির্বাচনকে সুষ্ঠূ ও অবাধ প্রতিদ্বন্দিতামূলক করা। চর দখলের মত কেন্দ্র দখল বন্ধ করা। দক্ষিণ এশিয়ার অভিজ্ঞতা বিনিময়ের উদ্দেশ্যে আমাদের নির্বাচন কমিশন আগামী মাসে ঢাকায় এই অঞ্চলের নির্বাচন ব্যবস্থাপকদের এক সম্মেলন আয়োজনের কথা জানিয়েছেন। প্রতিবেশীদের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নেওয়ার ইচ্ছা থাকাটা ভালো। কিন্তু, নিজেদের মন্দ রেকর্ডগুলোর কি হবে সেটাও কিন্তু ভাবনার বিষয়।

বিশ্বের বহু দেশেই নির্বাচনী ব্যবস্থায় সংস্কার একটি অব্যাহত প্রক্রিয়া। এমনকি, ব্রিটেনেও এখন ভোটে জালিয়াতি বন্ধের জন্য ভোটারদের পরিচয়পত্র বাধ্যতামুলক করার পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে। খোদ লন্ডনেই ভোট-জালিয়াতির কারণে একজন মেয়রের নির্বাচন বাতিল হয়েছে এবং তিনি অন্তত দশ বছরের জন্য নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষিত হয়েছেন (র্দূভাগ্যজনকভাবে ওই মেয়র ছিলেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত এবং সেই পৌর এলাকা (কাউন্সিল)টিতেও বাংলাদেশি বংশোদ্ভূতরাই সংখ্যাগরিষ্ঠ)।   

ব্রিটিশদের সাবেক উপনিবেশগুলোর জোট কমনওয়েলথ এর সচিবালয় বছর দুয়েক আগে একটি রেফারেন্স বই ইলেকশন ম্যানেজমেন্ট: এ কম্পেনডিয়াম অব কমনওয়েলথ গুড প্র্যাকটিস প্রকাশ করে। এই গুড প্র্যাকটিস বা সুচর্চার সারকথা হচ্ছে, নির্বাচন ব্যবস্থাপনার প্রতিষ্ঠানটিকে অবশ্যই স্বাধীন ও নিরপেক্ষ হতে হবে, যার মানে হচ্ছে বাইরের বিশেষত সরকারের কোনো নির্দেশনা, নিয়ন্ত্রণ অথবা অন্যায় প্রভাব, আর্থিক কিংবা অন্য কোনো স্বার্থ থেকে মুক্ত থাকতে হবে। এতে কমিশন গঠন, কমিশনারদের যোগ্যতা, কমিশনের স্বাধীনতা ও নিরপেক্ষতা, রাজনৈতিক দলগুলো এবং নাগরিক সমাজের আস্থা অর্জনের মতো বিষয়গুলোরও খুঁটিনাটি বিশদভাবে তুলে ধরা হয়েছে।

৫৩টি সদস্যদেশের অভিজ্ঞতার আলোকে তৈরি এই নির্দেশনায় নির্বাচন কমিশনের ম্যান্ডেট সম্পর্কে বলা হয়েছে, এটি হতে হবে অবাধ, বিশ্বাসযোগ্য এবং অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের জন্য, যা সংবিধানের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ এবং আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক মান পূরণে সক্ষম হবে। নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হওয়ার মধ্যেও যে একটা বড় পার্থক্য আছে তা উল্লেখ করে বইটিতে বলা হয়েছে, নির্বাচন অবাধ হলেও সব দলের জন্য সমান সুযোগ সৃষ্টি করতে না পারলে সেই নির্বাচনকে সুষ্ঠু বলা যায় না। এতে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলা হয়েছে একটি দেশে গ্রহণযোগ্য সাংবিধানিক ও আইনি কাঠামোর মধ্যে, গণতন্ত্রসম্মত স্বাধীন একটি নির্বাচন কমিশন প্রতিষ্ঠার পরও ক্ষমতাসীন দল তাদের পক্ষে নির্বাচনী ব্যবস্থাকে অন্যায়ভাবে কাজে লাগানোর সুযোগ নিতে পারে। সেখানে কমিশনের তা রুখে দেওয়ার সামর্থ্য থাকতে হবে।
আমাদের কমিশন আইনসম্মতভাবে গঠিত হলেও তা নিয়ে বিতর্কের কোনো কমতি ছিল না। বিরোধীদলগুলোর আস্থা অর্জনে তারা সফল হয়েছেন এমনটাও কেউ দাবি করতে পারেন না। ক্ষমতাসীন দলের চাপ রুখে দেওয়ার সামর্থ্যও যে তাঁদের নেই সেটা আমাদের জানাই ছিল। প্রনিকের কথায় এখন তার স্বীকারোক্তি মিলেছে। সত্য অস্বীকার করে গ্রহণযোগ্য, অবাধ ও সুষ্ঠূ নির্বাচন আয়োজন কখনোই সম্ভব না। সুতরাং, সবার এখন উচিত হবে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে এই সমস্যার একটা গ্রহণযোগ্য রাজনৈতিক সমাধান খোঁজা।
(১৯ অগাস্ট, ২০১৮‘র প্রথম আলোয় প্রকাশিত লেখকের কলাম।)

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বে স্বৈরশাসকের ফেরা সহজ

  গণতন্ত্রে উত্তরণে ব্যর্থতা ও স্বৈরতন্ত্রের নিকৃষ্টতম রুপ প্রত্যক্ষ করার পর অর্ন্তবর্তী সরকারের মেয়াদকালে যে সব বিষয়ে সংস্কারের আলোপ চলছে, তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে নির্বাচনব্যবস্থা। এরশাদের সামরিক স্বৈরাচারের পতনের পর নির্বাচনকে গণতন্ত্র চর্চার মাধ্যম হিসাবে যেভাবে প্রতিষ্ঠার কথা ছিল, তা থেকে প্রধান দুই দলই বিচ্যূত হয়েছিল। পরিণতিতে নির্বাচন শুধু ক্ষমতা দখলের হিংসাত্মক খেলায় পরিণত হয় এবং শেষ পর্যন্ত শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ সাধারণ মানুষের ভোটের অধিকার হরণ করে নির্বাচনকে নানা রকম প্রহসনে পরিণত করে।  এই সমস্যার এক অতি সরলীকৃত সমাধান হিসাবে বলা হচ্ছে, দ্বিদলীয় রাজনীতির বৃত্ত থেকে বেরিয়ে দেশে সত্যিকার বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে। আর বহুদলীয় গণতন্ত্রের জন্য নির্বাচনব্যবস্থায় আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বের ধারণাকে একমাত্র বা চূড়ান্ত সমাধান হিসাবে তুলে ধরা হচ্ছে।  সংখ্যানুপাতিক বা আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতির নির্বাচনে একটি দল যত শতাংশ ভোট পাবে, সে অনুপাতে তারা সংসদের আসন পাবে। এ আনুপাতিক পদ্ধতিতে প্রার্থীদের নাম দল আগাম ঘোষণা করতেও পারে, আবার না–ও পারে। নাম প্রকাশ করা হলে সেটা হব...

How to Describe the Awami League Accurately?

In an article titled ‘How Not to Describe the Awami League’ , published in this paper, British journalist David Bergman rightly underscores the importance of accuracy in labeling a political party—particularly when such labels carry potential legal consequences. Those familiar with Bergman’s work over the years know that he has consistently taken on politically sensitive and controversial subjects, often at significant personal and professional cost. His courage and commitment to journalistic integrity deserve recognition. Bergman is correct in asserting that “while serious criticisms of the Awami League are both valid and necessary, they must be proportionate and grounded in fact.” His analysis focuses primarily on the legal validity and appropriateness of labeling the Awami League as “fascist” or “Nazi.” He argues that comparing the party to the Nazi regime trivialises the scale of Nazi atrocities and misrepresents the complexities of Bangladeshi politics. Indeed, any historical comp...

স্বৈরতন্ত্রের কেন্দ্রীভূত ক্ষমতার নিকৃষ্ট পরিণতি

ছাত্র–জনতার অভ্যূত্থানের মুখে পালিয়ে যাওয়া স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার পদত্যাগ নিয়ে রাষ্ট্রপতির কথিত মন্তব্যে যে তীব্র প্রতিক্রিয়া হয়েছে, তা প্রত্যাশিতই ছিল। গত ৫ আগস্ট রাতে জাতির উদ্দেশ্য দেওয়া ভাষণ এবং সম্প্রতি মানবজমিন সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরীর সঙ্গে আলাপচারিতায় পরস্পরবিরোধী মন্তব্য – এই দুইয়ের একটি যে অসত্য, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। বিতর্ক শুরু হওয়ার পর তাঁর দপ্তর যে ব্যাখ্যা দিয়েছে, তা–ও অস্পষ্ট ও ধোঁয়াশাপূর্ণ। তিনি সর্বশেষ বিবৃতিতেও মতিউর রহমান চৌধুরীকে অসত্য কথা বলার বিষয়টি স্বীকার যেমন করেন নি, তেমনি এমন দাবিও করেননি যে তাঁকে ভূলভাবে উদ্ধৃত করা হয়েছে।  ৫ আগস্ট যদি তিনি পদত্যাগপত্র গ্রহণের প্রশ্নে অসত্য বলে থাকেন, তাহলে তা খুবই গুরুতর হিসাবে বিবেচিত হতে বাধ্য। কেননা তা ছিল জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া ভাষণের তথ্য। আবার যদি তিনি মানবজমিন সম্পাদকের কাছে আলাপচারিতায় অসত্য বলে থাকেন, তাহলে তাঁর কাছে যে দেশবাসী প্রশ্নের জবাব চাইতে পারে, তা হলো অর্ন্তবর্তী সরকার যখন সবকিছু গুছিয়ে আনার চেষ্টা করছে, দেশে স্থিতিশীলতা ফেরানোর চেষ্টা চলছে, তখন তিনি কেন এমন বিভ্রান্তি সৃষ্টি করতে চাইছেন? তাঁর উদ্দ...