সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

মনোনয়নই যখন নির্বাচনী সাফল্যের চাবি


গতবছরের ২৯ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের  একটি আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনে তাঁর দলের মেয়রপ্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেছিলেন। তখন তিনি বলেছিলেন, মনোনয়নপ্রত্যাশী হিসেবে যেসব প্রার্থী ছিলেন, তাদের সবার ব্যাকগ্রাউন্ড, গ্রহণযোগ্যতা, জনপ্রিয়তা এবং কার কতটা জয় পাওয়ার সম্ভাবনা আছে, সেসব বিবেচনা করেই নেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে মনোনয়ন বোর্ড সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত নিয়েছে (দক্ষিণে তাপস উত্তরে আতিক, খোকন বাদ, সমকাল ৩০ ডিসেম্বর)। প্রায় সঙ্গে সঙ্গে ফেসবুকে দেখা গেল অনেকেই নতুন মেয়রদের অভিনন্দন জানাতে শুরু করেছেন। লক্ষ্যণীয় হলো তাঁরা কেউ শুভ কামনা জানানোর প্রয়োজন বোধ করেন নি। এটি ছিল আগাম অভিনন্দন। ফল তো জানাই, বাকি শুধু আনুষ্ঠানিকতা। সুতরাং, আর অপেক্ষা কেন?
আওয়ামী লীগের মনোনয়নের জন্য দলীয় আবেদনপত্র কিনতে গিয়ে ঢাকা দক্ষিণের বিদায়ী মেয়র বুঝে গিয়েছিলেন তাঁর কপাল পুড়ছে এবং সেজন্যে কেঁদে ফেলে সংবাদ শিরোনাম হয়েছিলেন। তারপর মনোনয়ন ঘোষণার একদিন পর দু:খ সামলে নিয়ে তিনি বলেছিলেন আমার নেত্রী আমার জন্য যা ভালো মনে করেছেন, আলহামদুলিল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ। নিজের কোনো ভুল আছে কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবেও সেরকম কিছু লক্ষ করছেন না জানিয়ে বলেছিলেন, আমার জন্য যেটা ভালো মনে করেছেন, উনি সেটা করেছেন। আমি খুশি, আলহামদুলিল্লাহ(নেত্রীর সিদ্ধান্তে সাঈদ খোকনের আলহামদুলিল্লাহ)
নির্বাচনটা স্থানীয় সরকারের এবং এতে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ হেরে গেলেও তাতে সরকারের কোনো ক্ষতি হবে না এটা বোঝানোর জন্য ওবায়দুল কাদের মনোনয়ন ঘোষণার আগে বলেছিলেন এই নির্বাচনে হারলে আকাশ ভেঙ্গে পড়বে না। সম্ভবত: নির্বাচন যাতে অংশগ্রহণমূলক হয় সেটা নিশ্চিত করাই ছিল তাঁর উদ্দেশ্য।  বিএনপিসহ বিরোধীদলগুলো যদি প্রতিদ্বন্দিতায় অংশ না নেয় তাহলে নির্বাচন সবদিক থেকেই প্রশ্নবিদ্ধ হওয়ার আশংকাই ছিল তখনকার প্রধান বিবেচ্য। কিন্তু, বিএনপির অংশগ্রহণ নিশ্চিত হওয়ার পর থেকেই তিনিসহ তাঁর দলের নেতাদের সুর বদলানো শুরু হয়। প্রতিটি কেন্দ্র নিয়ন্ত্রণে (দখলে) রাখার নির্দেশনা দিতে এরপর আর কোনো রাখঢাক করা হয় নি। এমনকি বিদেশি রাষ্ট্রদূতদের ধমক দিতেও সরকার পিছপা হয়নি। ভোটের দিনে ভোটারদের অভিজ্ঞতা বলছে ভোটকেন্দ্র নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে আওয়ামী লীগ নেতাদের নির্দেশের কোনো হেরফের হয়নি। খুলনা-রাজশাহী-বরিশালের সিটি নির্বাচন ছিল যেধরণের নিয়ন্ত্রিত, এবারে ঢাকায় নিয়ন্ত্রিত নির্বাচনের ধরণটা ছিল তার চেয়ে আলাদা এবং কিছুটা চৌকষ। ইভিএমেও ভোট ছিনতাই শিরোনামে ( বিডিনিউজ ২৪.কম) তার কিছুটা ধারণা মেলে। 
জাতীয় নির্বাচনের পর এককভাবে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক ভোটারের ভোটাধিকার প্রয়োগের আয়োজন এই দুই সিটি করপোরেশন নির্বাচনের পুরোটাই ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) করার পরিকল্পনা ঘোষণা করে সবধরণের আপত্তি ও বিরোধীতা নির্বাচন কমিশন যথারীতি উপেক্ষা করেছে। নিয়ন্ত্রিত নির্বাচন এবং রাতের ভোটের জন্য স্থায়ীখ্যাতি অর্জনকারী কমিশন বলেছে এই ব্যবস্থায় রাতেরবেলায় ভোট হবে না। কেন্দ্রদখলের মত ঘটনা ও জালিয়াতি ঘটবে না। কিন্তু, দুটোই হয়েছে। ইভিএমে নিয়ন্ত্রিত ভোট কীভাবে হবে সেই অভিজ্ঞতা কারো ছিল না বলে শুধু দেখার অপেক্ষা। সেই অপেক্ষারও অবসান হয়েছে। গোপন ভোটকক্ষে হঠাৎ করে আওয়ামী লীগের কর্মী হাজির হয়ে ভোটারকে ইভিএম এর বোতামে চাপ দেওয়ার কষ্ট থেকে মুক্তি দিয়ে কাজটা তাঁরাই করে দিয়েছেন।আরও যেসব বিচিত্র অভিজ্ঞতার কথা ভোটাররা ফেসবুকে শুনিয়েছেন বা জানিয়েছেন সেগুলোও কম সৃজনশীল নয়। নিজের আঙ্গুলের ছাপ না মেলায় প্রধান নির্বাচন কমিশনারের যেহেতু ভোট দিতে কোনো সমস্যা হয়নি, সেহেতু অন্য কারো সমস্যা হয়েছে এমন দাবি তিনি কেন মানবেন?
প্রধান নির্বাচন কমিশনার কেএম নুরুল হুদা ও বর্তমান কমিশনের অন্যান্যদের ভাগ্য যে কতটা ঈর্ষণীয়, তা সাবেক যেকোনো নির্বাচন কমিশনারকে জিজ্ঞেস করলেই জানা যাবে। অন্তত সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকার সৎকার করে তিনি ইভিএম প্রযুক্তির জানা ত্রুটিগুলোর প্রমাণ দিলেন, কিন্তু, এর জন্য তাঁকে নিকটভবিষ্যতে কোনো জবাবদিহি করতে হবে না। রাজনৈতিক দলগুলো একবার তাঁদের পদত্যাগের দাবি জানিয়ে তো কয়েকসপ্তাহের মধ্যে তা ভুলে গিয়ে তাঁদের অধীনেই উপনির্বাচনে অংশ নেয়।দূর্নীতিবিরোধী নাগরিক সংগঠন, ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ বিবৃতি দিয়ে রাষ্ট্রপতির কাছে তাঁদের অপসারণ দাবি করলেও তার কোনো প্রভাব দৃশ্যমান হয় না। টিআইবির ভাষায় এই  কমিশন দেশকে এক অভূতপূর্ব নির্বাচনের দায় চাপিয়ে দিয়েছেন, যার পরতে পরতে অনিয়মের অভিযোগ সত্ত্বেও কোনো তদন্ত হয়নি। প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ অন্যান্য কমিশনাররা এবং সচিবালয়ের কর্মকর্তারা প্রশিক্ষণের নামে জনগণের করের টাকা হরিলুট করেছেন এমন অভিযোগ উঠেছে। তাঁরা তাঁদের শপথের অবমাননা করছেন, সংবিধান অবমাননা করছেন    
ব্যাকগ্রাউন্ড, গ্রহণযোগ্যতা, জনপ্রিয়তা এবং কার কতটা জয় পাওয়ার সম্ভাবনা এসবের ভিত্তিতে ওবায়দুল কাদের মনোনয়ন দেওয়ার কথা বললেও সেগুলো ঢাকার নাগরিকদের কতটা উৎসাহিত করেছে তার সাক্ষ্য দিচ্ছে ভোটারদের অংশগ্রহণের হার। ঢাকা দক্ষিণের সাড়ে ২৪ লাখ ভোটারের মধ্যে বিজয়ী মেয়র ফজলে নুর তাপসের ভোট হচ্ছে সোয়া চার লাখের কাছাকাছি। আর, তাঁর প্রতিদ্বন্দীর ২ লাখ ৩৬ হাজার। যার মানে দাঁড়াচ্ছে ঢাকা দক্ষিণে প্রায় ৭১ শতাংশ এবং উত্তরে ৭৫ শতাংশ ভোটার ভোট দেন নি বা দিতে পারেন নি। আর, মেয়র হিসাবে তাপসের পাওয়া ভোট দাঁড়াচ্ছে মাত্র ১৭ শতাংশ, যা ঢাকা দক্ষিণের বাসিন্দাসংখ্যার বিপরীতে দাঁড়ায় মাত্র ৬ শতাংশ। ঢাকা উত্তরের অবস্থাও তথৈবচ। ৩০ লাখেরও বেশি ভোটারের এই নির্বাচনে বিজয়ী আতিকুল ইসলাম পেয়েছেন সাড়ে ৪ লাখেরও কম। তাঁর প্রতিদ্বন্দী পেয়েছেন ২ লাখ ৬৪ হাজারের মত। ঢাকা উত্তরের মোট নাগরিক হলেণ ৫৯ লাখ ৪৩ হাজার। যার মানে দাঁড়ায় বিজয়ী আতিকুল পেয়েছেন মোট ভোটের ১৫ শতাংশ যা মোট নাগরিকসংখ্যার মাত্র ৭ শতাংশের মত। নাগরিক এবং ভোটারের তুলনায় এতো কম শতাংশ ভোট পেয়ে এর আগে আর কেউ কখনও যে ঢাকার মেয়র হননি তা মোটামুটি নিশ্চিতভাবেই বলা যায়।
জনপ্রিয়তা বা গ্রহণযোগ্যতার এই নমুনা গণতন্ত্রের যে চিত্র প্রকাশ করে তাকে যত মধু মিশিয়েই ব্যাখ্যা করা হোক না কেন, তা গণতন্ত্র বা প্রতিনিধিত্বশীলতার প্রতিফলন ঘটায় না। ভোটাররা ঘরে বসে ছুটির দিনে আয়েশ করে পোলাও-কোর্মা খাচ্ছেন বলে ভোটকেন্দ্রে আসেননি কিম্বা অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে ভোট দেওয়ার হার কমতে থাকে এগুলো কুতর্কের জন্য ভালো হলেও গণতন্ত্রের জন্য ভয়ানক দু:সংবাদ। উন্নত অর্থনীতিতে ভোটের হার অতীতে নিম্নগামী হলেও কখনোই এতোটা অধ:পতিত হয়নি এবং সম্প্রতি তা আবারও উর্ধমুখী হয়েছে। তাছাড়া, কার্যকর গণতন্ত্রে ৫০ শতাংশের নীচে ভোটপ্রাপ্তিকে অগ্রহণযোগ্য বিবেচনা করে শীর্ষ প্রতিদ্বন্দীদের মধ্যে দ্বিতীয়দফা ভোটের আয়োজন করা হচ্ছে। নাহলে, প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয় পছন্দ বাছাই করার সুযোগ দিয়ে পর্যায়ক্রমে দ্বিতীয় পছন্দের ভোট যোগ করে ফল নির্ধারণের পদ্ধতিও অনুসৃত হচ্ছে। স্থানীয় সরকার নির্বাচনে কাউন্সিলর বা কমিশনারদের কারণে ভোটের হার সবসময়েই বেশি হয়ে থাকে। অথচ, এক্ষেত্রে তার উল্টোটাই ঘটেছে।
সিটি করপোরেশন নির্বাচনের এই করুণ হাল দেশের সামগ্রিক নির্বাচনব্যবস্থা ও রাজনীতি থেকে বিচ্ছিন্ন কোনো রোগ কিম্বা রোগের উপর্সগ নয়। সবধরণের প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থাকে ধারাবাহিকভাবে অকার্যকর করে দেওয়ার কারণে মানুষ কোনোধরণের পরিবর্তনের আশা প্রায় ছেড়েই দিয়েছে। তা সে উন্নয়নে অংশীদার হওয়ার প্রশ্ন হোক, কিম্বা ন্যয়বিচার প্রাপ্তি অথবা আইনের শাসন ও জবাবদিহিতার প্রশ্নই হোক। এটা এক ভয়াবহ বিরাজনীতিকরণ। কেন্দ্রীকরণ এবং একমুখীন শাসন ব্যবস্থায় এমনটিই ঘটার কথা। এতে অবশ্য বিরোধীদলগুলো এবং নাগরিক সমাজেরও দায় কম নয়।  
৩০ ডিসেম্বরের ভয়াবহ নির্বাচন-বিকৃতির পটভূমিতে উপজেলা নির্বাচন আয়োজনের সময়ে ২ মার্চ বামজোট এক বিবৃতিতে জনগণের ট্যাক্সের টাকা অপচয় করে নির্বাচনের নামে তামাশা বন্ধ করার আহ্বান জানিয়ে বলেছিল ভোটের নামে জনগণের সঙ্গে প্রতারণা বন্ধ করতে হবে। কিন্তু, বিএনপি, তার জোট সহযোগীরা এবং সেই বামজোটও মানুষের ভোটের অধিকার পুনরুদ্ধার ও নির্বাচনব্যবস্থায় জনআস্থা পুনরুদ্ধারের কোনো অর্থবহ কার্যক্রম ছাড়াই আরও একটি গুরুত্বর্পূণ নির্বাচনে অংশ নিয়েছে। ক্ষমতাসীন দল তাই এখন বেশ আত্মতৃপ্তির সঙ্গে ভোটের মাঠে শেষপর্যন্ত থাকার জন্য বিরোধীদলকে ধন্যবাদ জানাতেও কার্পণ্য করেনি। বিরোধীদল বিএনপির মহাসচিব মাঠে নামার সুযোগ পাওয়াকেই রাজনৈতিক অর্জন হিসাবে বর্ণনা করেছেন।  যে ব্যবস্থায় নাগরিকদের সামনে কোনো বিকল্প থাকে না, সেখানে নিয়মিত বিরতিতে ভোটের আয়োজন এবং তাকে অংশগ্রহণমূলক করাকে আর যা-ই বলা হোক গণতন্ত্র বলা যায় কিনা সেটিই এখন একটি বড় প্রশ্ন। 
(৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২০‘র প্রথম আলোয় প্রকাশিত)

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

Bangladesh is vexed by and wary of Modi’s unstinting support to Sheikh Hasina

In the run-up to Bangladesh’s general election in January 2014, New Delhi took the unusual step of sending a top diplomat from its external affairs ministry to Dhaka to persuade General Hussain Muhammaed Ershad, the country’s former military ruler, to participate in the polls. Big questions had been raised over the fairness of the election. The incumbent government was led by Sheikh Hasina’s Awami League, and the leader of the opposition Bangladesh Nationalist Party (BNP) had been placed under virtual house arrest, with police and roadblocks around her house in Dhaka. The BNP and other opposition parties were threatening to boycott the election. Ershad, the head of the Jatiya Party, was perceived as a potential kingmaker, able to bring to power whichever of Bangladesh’s two main parties he supported, but he was also threatening to withdraw from the election.  After a decade of Modi’s reign in India, people in Bangladesh are angry at their government cosying up to a Hindutva regime ...

অরাজনৈতিক আন্দোলনের করুণ রাজনৈতিক মূল্য

কোটা সংস্কারের দাবিতে সাধারণ ছাত্র–ছাত্রীদের আন্দোলনে  কদিন ধরে যা ঘটে চলেছে, তা যেমন বেদনাদায়ক, তেমনই নিন্দনীয় ও ক্ষোভের কারণ। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের শিক্ষা দিতে ক্ষমতাসীন সরকারের সমর্থক এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীর হাতে একইদিনে দেশের তিন জায়গায় ছয়জনের প্রাণহানির ঘটনা স্বাধীন বাংলাদেশে বিরল।  এবার আরও যেসব ঘটনা আমাদের স্তম্ভিত করেছে, অভিভাবকদের চোখ অশ্রুসিক্ত করেছে, এসব মৃত্যুর পরও সরকারের রাজনৈতিক দম্ভ বজায় রাখার চেষ্টা, যা আরও প্রাণহানির কারণ হয়েছে। ছয়জন তরুণের প্রাণ বিসর্জনের পরও কোটা সংস্কারের দাবিতে সরকার ”নীতিগতভাবে একমত” – একথাটি বলে  আলোচনায় না ডেকে সময়ক্ষেপণ করেছে। আইনমন্ত্রী কথাটি যখন বললেন, তার আগেই আরও জীবন গেল, শত শত মানুষ আহত হলো, দেশের সম্পদ নষ্ট হলো। রাজনৈতিক গরিমা ছাড়া এর আর কোনো কারণ আছে কি? ছাত্রলীগ পরিচয়ে অন্ত্রধারীদের তান্ডব, পুলিশের চরম নিষ্ঠুরতা এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ছাত্রীদের গড়পরতা মারধর ও লাঞ্চিত করার যে দৃশ্যগুলো গণমাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে, তা কোনো অভিভাবকের পক্ষেই ভোলা সম্ভব নয়। এসব ঘটনার বিবরণ উদ্ধৃত না করে শুধু নিষ্ঠুর ...

আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বে স্বৈরশাসকের ফেরা সহজ

  গণতন্ত্রে উত্তরণে ব্যর্থতা ও স্বৈরতন্ত্রের নিকৃষ্টতম রুপ প্রত্যক্ষ করার পর অর্ন্তবর্তী সরকারের মেয়াদকালে যে সব বিষয়ে সংস্কারের আলোপ চলছে, তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে নির্বাচনব্যবস্থা। এরশাদের সামরিক স্বৈরাচারের পতনের পর নির্বাচনকে গণতন্ত্র চর্চার মাধ্যম হিসাবে যেভাবে প্রতিষ্ঠার কথা ছিল, তা থেকে প্রধান দুই দলই বিচ্যূত হয়েছিল। পরিণতিতে নির্বাচন শুধু ক্ষমতা দখলের হিংসাত্মক খেলায় পরিণত হয় এবং শেষ পর্যন্ত শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ সাধারণ মানুষের ভোটের অধিকার হরণ করে নির্বাচনকে নানা রকম প্রহসনে পরিণত করে।  এই সমস্যার এক অতি সরলীকৃত সমাধান হিসাবে বলা হচ্ছে, দ্বিদলীয় রাজনীতির বৃত্ত থেকে বেরিয়ে দেশে সত্যিকার বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে। আর বহুদলীয় গণতন্ত্রের জন্য নির্বাচনব্যবস্থায় আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বের ধারণাকে একমাত্র বা চূড়ান্ত সমাধান হিসাবে তুলে ধরা হচ্ছে।  সংখ্যানুপাতিক বা আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতির নির্বাচনে একটি দল যত শতাংশ ভোট পাবে, সে অনুপাতে তারা সংসদের আসন পাবে। এ আনুপাতিক পদ্ধতিতে প্রার্থীদের নাম দল আগাম ঘোষণা করতেও পারে, আবার না–ও পারে। নাম প্রকাশ করা হলে সেটা হব...