সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

কোভিড-১৯ মোকাবিলা: ‘খন্ডিত পদ্ধতি‘র চড়া মূল্য দিতে হচ্ছে


ইতালি থেকে দুই দিনে দুটি ফ্লাইটে বাংলাদেশী যাত্রীদের ফেরত পাঠানোর ঘটনায় দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ইতালির জাতীয় দৈনিক ইলা ম্যাসেজারোর প্রথম পাতার ছয় কলাম জোড়া প্রধান শিরোনামে বাংলাদেশিদের ভুয়া টেস্টের উল্লেখ অনেকেই ক্ষুব্ধ হয়েছেন (তার ওপর দেশটির প্রধানমন্ত্রীর যে কথিত বিদ্বেষমূলক বক্তব্যের খবর বের হয়েছে, তা সত্য হলে দীর্ভাগ্যজনক ও নিন্দনীয়)। ইতালির পত্রিকার শিরোনাম যাঁদের ক্ষুব্ধ করেছে, তাঁরা সম্ভবত আরও ক্ষুব্ধ হবেন একথা জেনে যে ব্রিটেনের দ্য টাইমস এবং যুক্তরাষ্ট্রের দ্য নিউইয়র্ক টাইমসেও খবরটি একইধরণের শিরোনাম হয়েছে। ভুয়া টেস্টের কেলেংকারিতে এখনও পর্যন্ত দুটো প্রতিষ্ঠানের কথা জানা গেছে জেকেজি আর রিজেন্ট হাসপাতাল। কিন্তু, আর কোথাও যে ভুয়া টেস্ট হচ্ছে না, সেকথা বিশ্বাস করা কঠিন। নামি-দামি হাসপাতালের বিরুদ্ধেও এধরণের অভিযোগ উঠেছে। কিন্তু তদন্ত হয়নি, র‌্যাব বা পুলিশও কোনো অভিযান চালায়নি।

ইতালির সিদ্ধান্তের কারণে ক্ষোভ কতটা, আর সেখানকার কাগজে তা খবর হওয়ার জন্য কতটা, তা বলা মুশকিল। কেননা, এর আগে জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া এবং চীনও বাংলাদেশীদের জন্য আপাতত তাদের দরজা বন্ধ রাখার কথা জানিয়েছিল। সেখানেও বাংলাদেশ থেকে যাওয়া যাত্রীদের মধ্যে কয়েকজনের দেহে কোভিড -১৯ পজিটিভ ধরা পড়াই ওই সিদ্ধান্তের কারণ। তবে, তাতে মূলধারার গণমাধ্যম এবং সামাজিক মাধ্যমের কোনোটিতেই এতোটা প্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি। আর্ন্তজাতিক পরিসরে বাণিজ্যিক বিমানে যাত্রীসেবা সচল হওয়ার আগেই বেশ কিছু দেশ এরকম নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে।

বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিধর এবং ধনী দেশ, যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের ওপর ইউরোপ সাময়িকভাবে  ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করছে। অথচ, ইউরোপের ব্যবসা-বাণিজ্যের সবচেয়ে বড় শরীক যুক্তরাষ্ট্র। ইউরোপের পর্যটন খাতেও যুক্তরাষ্ট্রের ভ্রমণকারীরা বেশ বড় অবদান রাখেন।  নিরাপত্তার প্রশ্নেও ইউরোপ যুক্তরাষ্ট্রের ওপর বিশেষভাবে নির্ভরশীল। এত কিছুর পরও ইউরোপীয় নাগরিকদের স্বাস্থ্যঝুঁকির বিবেচনায় যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের অবাধে ইউরোপে প্রবেশ বন্ধ হচ্ছে। কেননা, ইউরোপে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আসলেও যুক্তরাষ্ট্রে ঘটছে সম্পূর্ণ উল্টো।

ইউরোপের এই ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার তালিকা যে আরও দীর্ঘ হবে, তা মোটামুটি নিশ্চিত। যেসব দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হয়নি, সেই সব দেশের জন্য এই নিষেধাজ্ঞা অবধারিত বলেই ধরে নেওয়া যায়। দ্বৈত নাগরিকত্বের অধিকারীরা বিশেষ ব্যবস্থায় অনেকেই ফিরেছেন এবং হয়তো আরও অনেকে ফিরতে পারবেন। কিন্তু, বিশেষ ব্যবস্থা হচ্ছে অনিশ্চয়তায় ভরা এবং ব্যয়বহুল। তবে ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য এখনো কোনো বিশেষ ব্যবস্থার কথা শোনা যায় নি; সে সম্ভাবনাও ক্ষীণ। অতএব রপ্তানি ও প্রবাসী আয়নির্ভর অর্থনীতির জন্য করোনাভাইরাসকে পরাস্ত করা ছাড়া অন্য বিশ্ব অর্থনীতির সম্ভাব্য রুপান্তরের সুবিধা নেওয়ার সুযোগ দূর্লভ হতে বাধ্য।

অতি-আত্মবিশ্বাসী আশাবাদীরা অবশ্য বলতে পারেন যে বাংলাদেশের করোনায় মৃত্যুর হার বৈশ্বিক গড়ের চেয়ে যেহেতু অনেক কম এবং সুস্থ হওয়ার হার বেশি, সেহেতু সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে সাফল্য দাবি করা সহজ হবে এবং সেই দাবি গ্রহণযোগ্য হবে। প্রশ্ন হচ্ছে মৃত্যুহার কম হলেই কি করোনাকে পরাস্ত করা গেছে বলে দাবি করা যাবে? বাস্তবতা হচ্ছে, সংক্রমণের ঝুঁকি যতক্ষণ থাকবে, ততক্ষণ পর্যন্ত সেই দাবি কেউ গ্রহণ করবে না। যেসব দেশ করোনাকে সর্ম্পূণ পরাস্ত করতে পেরেছে, তারাও দ্বিতীয় দফা সংক্রমণের আশংকায় তাদের সীমান্ত খুলে দেওয়ার ব্যাপরে সাবধানতা অবলম্বন করছে। নিউজিল্যান্ড তার নজির।

সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে আমাদের পরিসংখ্যানের যৌক্তিকতা এবং বিশ্বাসযোগ্যতা। পরীক্ষা, সংক্রমণ এবং মৃত্যুর হার অন্যদের থেকে এতটাই আলাদা যে তা বিশ্লেষণ অনেকটাই অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়ছে। ইতালির বিমানবন্দরে ১১২ জন যাত্রীর ওপর পরীক্ষা চালিয়ে ৩৭ জনকে পাওযা গেলো পজিটিভ, যার মানে হচ্ছে সংক্রমণ হার প্রায় ৩৫ শতাংশ। ঢাকায় ওয়ারিতে লকডাউন দেওয়ার পর যে সীমিতসংখ্যায় পরীক্ষা চালানো হয়েছে তাতে সংক্রমণের হার প্রায় ৫০ শতাংশ। অথচ, জাতীয়ভিত্তিক পরিসংখ্যানে সংক্রমণের হার ৪.৪ শতাংশের মত ( সূত্র: ওর্য়াল্ডোমিটার, ৯ জুলাই, ২০২০এর হিসাব) এবং বাংলাদেশে টেস্টের হার প্রতি হাজারে ৫ দশমিক ৫১ জন। এত অল্প অনুপাতে শনাক্তকরণ পরীক্ষার কারণে সংক্রমণের হার কম থাকলেও তাতে অন্যদের মধ্যে সন্দেহ তৈরি হওয়াই স্বাভাবিক। বরং এসব পরিসংখান বাড়তি নিরীক্ষার মুখে পড়বে।

সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ ও সর্বাধিক মৃত্যুর পরও যে দেশটিতে এখন পরিস্থিতির দ্রুত অবনতি ঘটছে সেই যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান সংক্রমণ বিশেষজ্ঞ বলেছেন, তাঁদের তথ্য-উপাত্তে তাঁরা দেখেছেন উপসর্গহীনদের মধ্যেই তাঁরা সংক্রমিত পেয়েছেন সবচেয়ে বেশি। ইউরোপে সবচেয়ে বেশি মৃত্যুর রেকর্ড করেছে যে যুক্তরাজ্য সেখানকার জাতীয় পরিসংখ্যান দপ্তর বলেছে, ৬০ শতাংশেরও বেশি রোগীর মধ্যে কোনো উপসর্গ ছিলো না। সুতরাং, যৌক্তিক হারে শনাক্তকরণ পরীক্ষা ছাড়া বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জনের পথ আছে বলে মনে হয় না। প্রয়োজনীয়সংখ্যক টেস্টিং কিট না থাকার কারণে সরকার পরীক্ষা কার্যক্রম সংকোচনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে যে ধারণা তৈরি হয়েছিল, তা যে পুরোপুরি ঠিক নয় সেটিও এখন স্পষ্ট হয়েছে। দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ৫ লাখের বেশি কিট আনলেও সরকার সেগুলো গ্রহণে সময়ক্ষেপণ করছে বলে খবর দিয়েছে ডেইলি স্টার (৮ জুলাই, ২০২০) ।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, ওর্য়াল্ড হেলথ অর্গানাইজেশন, ডাব্লুএইচওর প্রধান তেদরোস আধানোম গেব্রেয়াসুস ৯ জুলাই   বৈশ্বিক সংক্রমণ পরিস্থিতির অবনতি ঘটছে জানিয়ে আবারও ব্যপকভিত্তিক ব্যবস্থাগ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন। এর সপ্তাহখানেক আগে ১ লা জুলাই  তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছিলেন যেসব দেশ কোভিড নাইন্টিনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে খন্ডিত পদ্ধতি অনুসরণ করছে, তাদেরকে এই ভাইরাস দমনে দীর্ঘ ও কঠিন পথ পাড়ি দিতে হবে। বিভিন্ন দেশ নিয়ন্ত্রণমূলক বিধিনিষেধ তুলে নিতে শুরু করায় সংক্রমণের স্ফুরণ ঘটার আশংকার কথা জানিয়ে তিনি বলেছিলেন, যেসব দেশ ব্যপকভিত্তিক ও সুসংহত পদ্ধতি অনুসরণ করছে, তারা স্থানীয়ভিত্তিতে সংক্রমণের স্ফুরণ ঘটলেও তা নিয়ন্ত্রণে সক্ষম হবে এবং ব্যপকভিত্তিক পুন:সংক্রমণ এড়াতে পারবে। তবে, যেসব দেশ তাদের হাতে থাকা সব হাতিয়ার প্রয়োগ করছে না এবং টুকরো টুকরো ব্যবস্থার পদ্ধতি অনুসরণ করছে তাদেরকে দীর্ঘ কঠিন পথ অতিক্রম করতে হবে।

কথাটা আরও স্পষ্ট করে তিনি বলেন, শুধু পরীক্ষা করলেই হবে না। শুধু সামাজিক দূরত্বেও হবে না। শুধু সংস্পর্শে আসা লোকজনকে খুঁজলে হবে না। শুধু মাস্ক পরলেও হবে না। এগুলোর সবই একসঙ্গে করতে হবে। তিনি বলেন, এই বৈশ্বিক মহামারির অন্যতম শিক্ষা হচ্ছে একটি দেশের অবস্থা যাই হোক না কেন, তাকে নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব। এবং ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আর সময় নেই, এমন কথা বলা যাবে না। রোগী খুঁজে বের করা, তাকে আলাদা করা, শনাক্তকরণ পরীক্ষা করা, প্রত্যেক রোগীর পরিচর্যা , তাঁর সংস্পর্শে আসা সবাইকে খুঁজে বের করা এবং সঙ্গনিরোধের ব্যবস্থা করা, স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম এবং প্রশিক্ষণ দেওয়া, জনগোষ্ঠীকে শিক্ষিত করা এগুলোর সবকিছুই করতে হবে।

অজানা রোগের গতিপ্রকৃতি বিশেষ করে তা বাতাসের মাধ্যমে ছড়ায় কিনা, কোন কোন ওষুধ কাজে লাগতে পারে এবং মাস্ক ব্যবহারের প্রয়োজনীয়তার মত বিষয়গুলো নিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বিশ্বাসযোগ্যতা প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে বটে। কিন্তু, সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞদের মধ্যে এবিষয়ে কোনো দ্বিমত নেই যে মহামারি নিয়ন্ত্রণের একমাত্র পথ ছোঁয়াচে ভাইরাসের সংক্রমণ যেকোনো উপায়ে বন্ধ করা। জীবিকার প্রয়োজনে অর্থনীতি সচল করতে আগাম সবকিছু খুলে দেওয়ার পরিণতি যে ভয়াবহ তা একাধিক দেশেই প্রমাণিত হয়েছে। এর একমাত্র ফল হচ্ছে জীবন ও জীবিকা উভয় ক্ষেত্রেই চড়া মূল্য দেওয়া, যা এড়ানো সম্ভব ছিলো।
(১২ জুলাই, ২০২০‘র প্রথম আলো পত্রিকায় প্রকাশিত।)

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

Bangladesh is vexed by and wary of Modi’s unstinting support to Sheikh Hasina

In the run-up to Bangladesh’s general election in January 2014, New Delhi took the unusual step of sending a top diplomat from its external affairs ministry to Dhaka to persuade General Hussain Muhammaed Ershad, the country’s former military ruler, to participate in the polls. Big questions had been raised over the fairness of the election. The incumbent government was led by Sheikh Hasina’s Awami League, and the leader of the opposition Bangladesh Nationalist Party (BNP) had been placed under virtual house arrest, with police and roadblocks around her house in Dhaka. The BNP and other opposition parties were threatening to boycott the election. Ershad, the head of the Jatiya Party, was perceived as a potential kingmaker, able to bring to power whichever of Bangladesh’s two main parties he supported, but he was also threatening to withdraw from the election.  After a decade of Modi’s reign in India, people in Bangladesh are angry at their government cosying up to a Hindutva regime ...

অরাজনৈতিক আন্দোলনের করুণ রাজনৈতিক মূল্য

কোটা সংস্কারের দাবিতে সাধারণ ছাত্র–ছাত্রীদের আন্দোলনে  কদিন ধরে যা ঘটে চলেছে, তা যেমন বেদনাদায়ক, তেমনই নিন্দনীয় ও ক্ষোভের কারণ। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের শিক্ষা দিতে ক্ষমতাসীন সরকারের সমর্থক এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীর হাতে একইদিনে দেশের তিন জায়গায় ছয়জনের প্রাণহানির ঘটনা স্বাধীন বাংলাদেশে বিরল।  এবার আরও যেসব ঘটনা আমাদের স্তম্ভিত করেছে, অভিভাবকদের চোখ অশ্রুসিক্ত করেছে, এসব মৃত্যুর পরও সরকারের রাজনৈতিক দম্ভ বজায় রাখার চেষ্টা, যা আরও প্রাণহানির কারণ হয়েছে। ছয়জন তরুণের প্রাণ বিসর্জনের পরও কোটা সংস্কারের দাবিতে সরকার ”নীতিগতভাবে একমত” – একথাটি বলে  আলোচনায় না ডেকে সময়ক্ষেপণ করেছে। আইনমন্ত্রী কথাটি যখন বললেন, তার আগেই আরও জীবন গেল, শত শত মানুষ আহত হলো, দেশের সম্পদ নষ্ট হলো। রাজনৈতিক গরিমা ছাড়া এর আর কোনো কারণ আছে কি? ছাত্রলীগ পরিচয়ে অন্ত্রধারীদের তান্ডব, পুলিশের চরম নিষ্ঠুরতা এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ছাত্রীদের গড়পরতা মারধর ও লাঞ্চিত করার যে দৃশ্যগুলো গণমাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে, তা কোনো অভিভাবকের পক্ষেই ভোলা সম্ভব নয়। এসব ঘটনার বিবরণ উদ্ধৃত না করে শুধু নিষ্ঠুর ...

আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বে স্বৈরশাসকের ফেরা সহজ

  গণতন্ত্রে উত্তরণে ব্যর্থতা ও স্বৈরতন্ত্রের নিকৃষ্টতম রুপ প্রত্যক্ষ করার পর অর্ন্তবর্তী সরকারের মেয়াদকালে যে সব বিষয়ে সংস্কারের আলোপ চলছে, তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে নির্বাচনব্যবস্থা। এরশাদের সামরিক স্বৈরাচারের পতনের পর নির্বাচনকে গণতন্ত্র চর্চার মাধ্যম হিসাবে যেভাবে প্রতিষ্ঠার কথা ছিল, তা থেকে প্রধান দুই দলই বিচ্যূত হয়েছিল। পরিণতিতে নির্বাচন শুধু ক্ষমতা দখলের হিংসাত্মক খেলায় পরিণত হয় এবং শেষ পর্যন্ত শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ সাধারণ মানুষের ভোটের অধিকার হরণ করে নির্বাচনকে নানা রকম প্রহসনে পরিণত করে।  এই সমস্যার এক অতি সরলীকৃত সমাধান হিসাবে বলা হচ্ছে, দ্বিদলীয় রাজনীতির বৃত্ত থেকে বেরিয়ে দেশে সত্যিকার বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে। আর বহুদলীয় গণতন্ত্রের জন্য নির্বাচনব্যবস্থায় আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বের ধারণাকে একমাত্র বা চূড়ান্ত সমাধান হিসাবে তুলে ধরা হচ্ছে।  সংখ্যানুপাতিক বা আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতির নির্বাচনে একটি দল যত শতাংশ ভোট পাবে, সে অনুপাতে তারা সংসদের আসন পাবে। এ আনুপাতিক পদ্ধতিতে প্রার্থীদের নাম দল আগাম ঘোষণা করতেও পারে, আবার না–ও পারে। নাম প্রকাশ করা হলে সেটা হব...