সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

স্বৈরতন্ত্রের কেন্দ্রীভূত ক্ষমতার নিকৃষ্ট পরিণতি

ছাত্র–জনতার অভ্যূত্থানের মুখে পালিয়ে যাওয়া স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার পদত্যাগ নিয়ে রাষ্ট্রপতির কথিত মন্তব্যে যে তীব্র প্রতিক্রিয়া হয়েছে, তা প্রত্যাশিতই ছিল। গত ৫ আগস্ট রাতে জাতির উদ্দেশ্য দেওয়া ভাষণ এবং সম্প্রতি মানবজমিন সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরীর সঙ্গে আলাপচারিতায় পরস্পরবিরোধী মন্তব্য – এই দুইয়ের একটি যে অসত্য, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। বিতর্ক শুরু হওয়ার পর তাঁর দপ্তর যে ব্যাখ্যা দিয়েছে, তা–ও অস্পষ্ট ও ধোঁয়াশাপূর্ণ। তিনি সর্বশেষ বিবৃতিতেও মতিউর রহমান চৌধুরীকে অসত্য কথা বলার বিষয়টি স্বীকার যেমন করেন নি, তেমনি এমন দাবিও করেননি যে তাঁকে ভূলভাবে উদ্ধৃত করা হয়েছে। 


৫ আগস্ট যদি তিনি পদত্যাগপত্র গ্রহণের প্রশ্নে অসত্য বলে থাকেন, তাহলে তা খুবই গুরুতর হিসাবে বিবেচিত হতে বাধ্য। কেননা তা ছিল জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া ভাষণের তথ্য। আবার যদি তিনি মানবজমিন সম্পাদকের কাছে আলাপচারিতায় অসত্য বলে থাকেন, তাহলে তাঁর কাছে যে দেশবাসী প্রশ্নের জবাব চাইতে পারে, তা হলো অর্ন্তবর্তী সরকার যখন সবকিছু গুছিয়ে আনার চেষ্টা করছে, দেশে স্থিতিশীলতা ফেরানোর চেষ্টা চলছে, তখন তিনি কেন এমন বিভ্রান্তি সৃষ্টি করতে চাইছেন? তাঁর উদ্দেশ্য নিয়ে সন্দেহ করার সবচেয়ে বড় কারণ হচ্ছে, তিনি শেখ হাসিনার মনোনীত রাষ্ট্রপতি। এমনকি তিনি নিজেও জানিয়েছিলেন যে তাঁকে গণভবনে ডেকে নিয়ে মনোনয়নপত্র সই করতে বলার আগপর্যন্ত কেউ জানত না যে তিনি আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেতে যাচ্ছেন। 


তাঁর নির্বাচন কতটা প্রশ্নবিদ্ধ ছিল, তা আমরা সবাই জানি। শেখ হাসিনা যদি তখন সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী না হতেন, তাহলে রাষ্ট্রপতি হিসাবে তাঁর নির্বাচন অবৈধ ঘোষিত হতো বলে বিশ্বাস করার যথেষ্ট কারণ রয়েছে।  গত বছরের ২২ ফেব্রুয়ারি তাঁকে বিনা প্রতিদ্বন্দিতায় রাষ্ট্রপতি হিসাবে নির্বাচিত ঘোষণার যে প্রজ্ঞাপন জারি হয়েছিল, তার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে আদালতে রিট হওয়ার কথা হয়তো অনেকেরই স্মরণে নেই। আমাদের সুপ্রিম কোর্ট যদি স্বাধীন প্রতিষ্ঠান হিসাবে দলীয় প্রভাবমুক্ত থেকে কাজ করতে পারতেন, তাহলে যে দুটো বিষয় তখন প্রশ্ন উঠেছিল, তার প্রত্যেকটি তাঁকে অযোগ্য ঘোষণার জন্য যথেষ্ট ছিল। দুর্নীতি দমন কমিশনের সদস্য হিসাবে দায়িত্ব পালনের কারণে রাষ্ট্রপতি পদের জন্য তাঁর অযোগ্য হওয়ার কথা ছিল। আবার নির্বাচনী তফসিলে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের সময় শেষ হওয়ার আগেই নির্বাচন কমিশন তাঁকে নির্বাচিত ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি করে, যা নির্বাচনী বিধিমালার লঙ্ঘন। 


বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এখন রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ নতুবা অপসারণ দাবি করছেন। ছাত্রনেতারা এ জন্য একটি সময়সীমাও বেঁধে দিয়েছেন। তবে প্রশ্ন উঠেছে, রাষ্ট্রপতি এখন পদত্যাগ করতে চাইলে কার কাছে, কীভাবে পদত্যাগ করবেন? পদত্যাগ না করলে তাঁকে অপসারণই বা কীভাবে করা যাবে? কারণ সংবিধানের বিধান অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি পদত্যাগ করেন স্পিকারের কাছে, কিন্তু এখন সংসদ নেই এবং স্পিকারও পদত্যাগ করেছেন। আবার রাষ্ট্রপতিকে অপসারণের উপায় যে অভিসংশন, তার ক্ষমতা সংবিধানে সংসদের ওপরেই ন্যস্ত আছে, যে সংসদ এখন অস্তিত্বহীন।


বর্তমানের এই সংকট হচ্ছে স্বৈরতান্ত্রিক ব্যবস্থার করুণ ও নিকৃষ্টতম পরিণতি। গণতান্ত্রিক নির্বাচনে নির্বাচিত হয়ে ক্ষমতাকে কেন্দ্রীভূত করে একক কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার যে চর্চা গত দেড় দশকে দেখা গেছে, তার পরিণতিতে সব ধরনের স্বাভাবিক পরিবর্তনের পথ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। একক কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার পরই দেশে সাংবিধানিকতার আওয়াজ সবচেয়ে বেশি তুলেছে আওয়ামী লীগ। কারণ, সংবিধানকে এমনভাবে পরিবর্তন করা হয়েছে, যাতে স্বৈরশাসকের কর্তৃত্ব কেউ কোনোভাবেই থর্ব করতে না পারে, ক্ষমতার ভাগীদার না হতে পারে। উপ–প্রধানমন্ত্রীর পদ তুলে দেওয়া হয়েছে। আর উপ–রাষ্ট্রপতির পদ উঠিয়ে দেওয়া হয়েছে সামরিক স্বৈরশাসক এরশাদের পতনের পরই। যদিও এরশাদের কাছ থেকে সাংবিধানিক পন্থায় ক্ষমতা হস্তান্তরে উপ–রাষ্ট্রপতির পদটি খুবই মূল্যবান বলে বিবেচিত হয়েছিল।


সামরিক স্বৈরশাসক জেনারেল এরশাদের পতনের পর আওয়ামী লীগ ও বিএনপি উভয় দলেই এক ব্যক্তির নেতৃত্ব ছিল মূল বিষয়। ফলে উভয় দলই ছিল সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ বাতিলের বিপক্ষে। ক্ষমতা হারানোর দু:স্বপ্ন সবসময় তাঁদের তাড়িয়ে বেড়িয়েছে। সংসদ সদস্যরা যদি দলত্যাগ করেন, কিম্বা বিদ্রোহ করেন, তাহলে ক্ষমতা টেকানো যাবে না বলেই তাঁরা এর বিরুদ্ধে ছিলেন। অথচ স্বাধীন দেশে সংবিধান রচনার পর থেকেই এই ৭০ অনুচ্ছেদ সংসদ সদস্যদের বিবেক বিসর্জন দিতে বাধ্য করে এসেছে। 


২০০৭ সালে সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলেও সংবিধানের এই বিধানটি নিয়ে বেশ জোরালো বিতর্ক হয়েছিল। সেই বছরে ঢাকার শেরে বাংলা নগরের বাংলাদেশ–চীন মৈত্রী আর্ন্তজাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের মিলনায়তনে বিবিসির আয়োজনে বাংলাদেশ সংলাপ নামে একটি সাপ্তাহিক অনুষ্ঠান হতো। অনুষ্ঠান শুরুর আগে সাধারণত ছোট একটি কক্ষে আমন্ত্রিত প্যানেল সদস্যদের নিয়ে চা পানের ব্যবস্থা থাকতো। এ রকম এক উপলক্ষে দুজন অতিথি, যাঁরা এখন আর বেঁচে নেই, তাঁদের মধ্যে ৭০ অনুচ্ছেদকে  কেন্দ্র করে বিতর্ক এমন পর্যায়ে পৌঁছেছিল যে আমরা যারপরনাই বিব্রত বোধ করছিলাম। ওই দুজনের একজন ছিলেন তখনকার তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ব্যারিষ্টার মইনুল হোসেন এবং অপরজন গেল সপ্তাহে মারা যাওয়া আওয়ামী লীগ নেত্রী মতিয়া চৌধুরী। মতিয়া চৌধুরীর যুক্তি ছিল, পাকিস্তান আমলের এমপি কেনাবেচা এবং যখন–তখন সরকার পড়ে যাওয়ার অভিজ্ঞতার আলোকেই ৭–এর সংবিধানে এই বিধানটি আনা হয়েছে।


ছাত্রজীবনে গণতন্ত্রের জন্য আন্দোলন করে ’অগ্নিকন্যা’ উপাধি পাওয়া মতিয়া চৌধুরী আওয়ামী লীগের সংসদীয় উপনেতা হয়েছিলেন। কিন্তু তিনি তাঁর দলীয় প্রধানের কর্তৃত্ববাদী হয়ে ওঠার বিরোধিতার কোনো চেষ্টাই করেন নি। বরং, তিনি তাঁকে অতিক্ষমতায়িত করায় উৎসাহিত করেছেন, সহযোগিতা করেছেন। তাঁর ব্যক্তিজীবনের সততা ও ত্যাগ কিম্বা ছাত্র জীবনের নিষ্ঠা সবকিছুই তার মূল্য হারিয়েছে, তিনি স্বৈরশাসনের সহযোগী ও অংশীদার হওয়ার কারণে। 


আমাদের রাজনীতিকরা কেউ বিশ্বের অন্য কোনো দেশের রাজনীতি থেকে কোনো ইতিবাচক শিক্ষা নেন না বা নিতে অক্ষম। প্রতিবেশি দেশ শ্রীলংকার কথাই যদি ধরা হয়, সেখানে ২০১৪ সালে মহিন্দ্রা রাজাপক্ষের দলের মধ্য থেকেই ভিন্নমত পোষণ করে বেরিয়ে এসে নতুন দল গড়ে তোলেন মৈথ্রিপালা সিরিসেনা। তিনি তাঁর সাবেক নেতার বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়ে নতুন দল গড়েন এবং প্রেসিডেন্ট পদে রাজাপক্ষেকে হারিয়ে নির্বাচিত হন। 


এক নেতার এক দল ও এক দেশ – এমন নীতি আওয়ামী লীগের যে করুণ পরিণতি ডেকে এনেছে, তা থেকে দলটিকে উদ্ধার করতে সহসা কারও আর্বিভাব ঘটবে এমন সম্ভাবনা আদৌ আছে কিনা, তা নিয়ে অনেকেই সন্দিহান। স্মরণ করা যেতে পারে, বিদেশি কূটনীতিক ও বিশ্লেষকরা গত প্রায় এক দশক ধরেই প্রশ্ন করে এসেছেন, আওয়ামী লীগে শেখ হাসিনার পর নেতা হবেন কে, কিংবা দলটির কী হবে? তাঁরা হয়তো তাঁর উৎখাত কল্পনা করেননি, কিন্তু দৈব–দুর্বিপাকে অক্ষম হয়ে পড়া বা মরণোত্তর পরিস্থিতি কতটা বিশৃঙ্খল হতে পারে, সেই দু:শ্চিন্তায় ওই সব প্রশ্ন করতেন। 


দুর্ভাগ্যের বিষয় হচ্ছে, স্বৈরশাসনের সহযোগী বা সহায়ক শুধু যে আওয়ামী লীগের মধ্যেই সীমিত ছিল , তা নয়। তার ১৪ দলীয় ছোট শরীকেরা তো বটেই, মোটামুটি মধ্যম সারির দল জাতীয় পার্টি ছিল সবচেয়ে অগ্রগামী। শুধু সুবিধার বিনিময়ে তারা এই পুরোটা দশক আওয়ামী লীগের প্রতি অনুগত থেকেছে। দলটির বর্তমান প্রধানের হতাশা আর আক্ষেপে তাই কারো মন গলার কোনো যৌক্তিক কারণ নেই। 


আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোটে ছিল না, সরাসরি তাদের সমর্থনও করেনি এমন কিছু কথিত প্রগতিবাদী দলও আছে, যারা বর্তমান পরিস্থিতির দায় এড়াতে পারে না। ফুটন্ত কড়াই থেকে জ্বলন্ত উনুনে ঝাঁপ দেওয়া তত্ত্ব দিয়ে তাঁরা স্বৈরশাসনের উত্থান প্রতিরোধে জাতীয় ঐক্য তৈরি কার্যত বাথাগ্রস্ত করেছে। স্বৈরশাসন দীর্ঘায়িত করায় এই পরোক্ষ সমর্থনের ভূমিকা কিছুতেই নাকচ করা যায় না। এখন অবশ্য তারা দল টিকিয়ে রাখতেই হিমশিম খাচ্ছে। গণঅভ্যূত্থানের মাধ্যমে যে পরিবর্তন সাধিত হয়েছে, তাকে সংহত করায় তাঁরা কতটা সক্রিয় সমর্থন দেন, সেটাই এখন দেখার অপেক্ষা।


(২৪ অক্টোবর, ২০২৪–এর প্রথম আলো পত্রিকায় প্রকাশিত।)



মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বে স্বৈরশাসকের ফেরা সহজ

  গণতন্ত্রে উত্তরণে ব্যর্থতা ও স্বৈরতন্ত্রের নিকৃষ্টতম রুপ প্রত্যক্ষ করার পর অর্ন্তবর্তী সরকারের মেয়াদকালে যে সব বিষয়ে সংস্কারের আলোপ চলছে, তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে নির্বাচনব্যবস্থা। এরশাদের সামরিক স্বৈরাচারের পতনের পর নির্বাচনকে গণতন্ত্র চর্চার মাধ্যম হিসাবে যেভাবে প্রতিষ্ঠার কথা ছিল, তা থেকে প্রধান দুই দলই বিচ্যূত হয়েছিল। পরিণতিতে নির্বাচন শুধু ক্ষমতা দখলের হিংসাত্মক খেলায় পরিণত হয় এবং শেষ পর্যন্ত শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ সাধারণ মানুষের ভোটের অধিকার হরণ করে নির্বাচনকে নানা রকম প্রহসনে পরিণত করে।  এই সমস্যার এক অতি সরলীকৃত সমাধান হিসাবে বলা হচ্ছে, দ্বিদলীয় রাজনীতির বৃত্ত থেকে বেরিয়ে দেশে সত্যিকার বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে। আর বহুদলীয় গণতন্ত্রের জন্য নির্বাচনব্যবস্থায় আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বের ধারণাকে একমাত্র বা চূড়ান্ত সমাধান হিসাবে তুলে ধরা হচ্ছে।  সংখ্যানুপাতিক বা আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতির নির্বাচনে একটি দল যত শতাংশ ভোট পাবে, সে অনুপাতে তারা সংসদের আসন পাবে। এ আনুপাতিক পদ্ধতিতে প্রার্থীদের নাম দল আগাম ঘোষণা করতেও পারে, আবার না–ও পারে। নাম প্রকাশ করা হলে সেটা হব...

How to Describe the Awami League Accurately?

In an article titled ‘How Not to Describe the Awami League’ , published in this paper, British journalist David Bergman rightly underscores the importance of accuracy in labeling a political party—particularly when such labels carry potential legal consequences. Those familiar with Bergman’s work over the years know that he has consistently taken on politically sensitive and controversial subjects, often at significant personal and professional cost. His courage and commitment to journalistic integrity deserve recognition. Bergman is correct in asserting that “while serious criticisms of the Awami League are both valid and necessary, they must be proportionate and grounded in fact.” His analysis focuses primarily on the legal validity and appropriateness of labeling the Awami League as “fascist” or “Nazi.” He argues that comparing the party to the Nazi regime trivialises the scale of Nazi atrocities and misrepresents the complexities of Bangladeshi politics. Indeed, any historical comp...

সংবিধান সংস্কারে জাতীয় সমঝোতা কি অসম্ভব কিছু

সংবিধান সংস্কার কমিশন সংবিধান নিয়ে যে জনমত সংগ্রহ ও জাতীয়ভিত্তিক সংলাপগুলো করছে, তাতে বেশ ভালোই সাড়া মিলছে বলে আভাস পাওয়া যাচ্ছে। প্রায় প্রতিদিনই বিভিন্ন নাগরিক গোষ্ঠী, রাজনৈতিক দল, বিদ্বজ্জনেরা কেমন সংবিধান দেখতে চান, তা নিয়ে বিতর্ক ও মতবিনিময় করছেন। দেশের রাজনৈতিক ভবিষ্যত নির্ধারণের মৌলিক ভিত্তি তথা রাষ্ট্রকাঠামো ও ক্ষমতার বিন্যাস সম্পর্কে নাগরিকদের এতটা উৎসাহ সম্ভবত: এর আগে আর দেখা যায়নি। সংস্কার কমিশনের সূত্র থেকে জেনেছি, অনলাইনে তাঁরা অভূতপূর্ব সাড়া পেয়েছেন এবং মতামত দেওয়ার জন্য সপ্তাহখানেক সময় বাকি থাকতেই ৩০ হাজারেরও বেশি পরামর্শ তাঁদের কাছে জমা পড়েছে। নাগরিকদের এ আগ্রহ থেকে যে বার্তাটি স্পষ্ট হয়, তা হচ্ছে তাঁরা চান তাঁদের মতামত যেন গুরুত্ব পায়। দীর্ঘ ১৫ বছরের স্বৈরশাসনে ক্ষমতাধরদের কিছু বলার বা তাঁদের প্রশ্ন করার কোনো অধিকার সাধারণ মানুষের ছিল না। প্রতি পাঁচ বছরে একবার ভোটের মাধ্যমে প্রতিনিধি নির্বাচনের যে অধিকার, সেটুকুও তাঁরা হারিয়েছিলেন। এই পটভূমিতে নাগরিকদের প্রথম চাওয়া হচ্ছে, তাঁদের হারানো অধিকার ফিরে পাওয়া। ভোট দেওয়ার অধিকার, কথা বলার অধিকার, প্রশ্ন করার অধিকার, সংগঠন করার...