সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

টিকার প্রতিযোগিতায় আমরা কোথায়


ওষুধ তৈরির আগেই তা বিক্রির হয়ে যায় এমন কথা আগে কখনো কেউ শুনছেন বলে মনে হয় না। কোভিড ১৯ এর ক্ষেত্রে তেমনটি ঘটেছে। কোভিড ১৯এর চিকিৎসায় কোনো ওষুধের কার্যকারিতা এখনও শতভাগ প্রমাণিত হয়নি সেকথা আমরা সবাই জানি। কিন্তু, তারপরও নানাধরণের ওষুধ সাধারণ মানুষ যেমন কিনেছেন, তেমনই কোনো কোনো দেশের সরকার পাইকারি হারে সরবরাহের জন্য ওষুধ প্রস্তুতকারক কোম্পানিগুলোকে আগাম টাকাও দিয়েছে। মহামারির আকস্মিক ও উচ্চ সংক্রমণের কারণে চিকিৎসাসেবীদের জন্য সুরক্ষাসামগ্রী কেনার ক্ষেত্রেও দেখা গেছে এক অসম প্রতিযোগীতা। এখন একই ঘটনা ঘটছে প্রতিষেধক টিকার ক্ষেত্রে। কার্যকর প্রতিষেধক টিকার সন্ধানে বিশ্বের বিভিন্নপ্রান্তে বিজ্ঞানীরা যখন নিরলসভাবে পরীক্ষানিরীক্ষা চালিয়ে যাচ্ছেন, তখন সবচেয়ে সম্ভাবনাময় টিকাগুলো সবার আগে পাওয়ার জন্যও শুরু হয়েছে প্রতিযোগিতা। এই প্রতিযোগিতা মোটেও অপ্রত্যাশিত নয়।

টিকা পাওয়ার দৌড়ে স্বভাবতই সেই সব দেশ সুবিধাজনক অবস্থানে থাকবে, যাদের উদ্ভাবন সবচেয়ে কার্যকর বলে বৈশ্বিক স্বীকৃতি লাভ করবে। উদ্ভাবনের পাশাপাশি টিকার দ্রুত এবং বিপুল পরিমাণে উৎপাদন সক্ষমতাও এক্ষেত্রে গুরুত্বর্পূণ ভূমিকা রাখবে। অন্য সবার টিকা পাওয়া নির্ভর করবে দেশগুলোর আর্থিক ক্ষমতা এবং কূটনীতির ওপর। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এধরণের গুরুত্বর্পূণ গবেষণায় অন্য কোনো দেশের গবেষণামূলক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আজ পর্যন্ত অংশীদারিত্বের সুযোগ পেয়েছে বলে শোনা যায়নি। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো গবেষণার চেয়ে দলীয় লেজুড়বৃত্তির রাজনীতিমুখী হয়ে পড়াই এর প্রধান কারণ বললে তাতে বোধহয় খুব একটা ভুল হবে না। বিদেশিদের কাছ থেকে এধরণের প্রস্তাব যে প্রতিষ্ঠানটি পেয়েছে তা গবেষণার জন্য সুখ্যাত হলেও কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের অংশ নয়। টিকা উৎপাদনের জন্য ওষুধশিল্পের যে সুযোগ তৈরি হয়েছে তা কাজে লাগানোর জন্য কোনো দেশীয় প্রতিষ্ঠান বৃহৎ বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর সঙ্গে বাণিজ্যিক বোঝাপড়ায় সক্ষম হয়েছে বলেও শুনিনি। সেরকম খবর কিছুটা স্বস্তিকর হতো।

তাহলে, টিকা পাওয়ার জন্য সম্ভাব্য পথ রইলো দুটো যত দামই হোক না কেন, তা কেনা। নয়তো, কূটনৈতিক দেনদরবারের মাধ্যমে উন্নত দেশ ও গাভির( দ্য ভ্যাক্সিন্ অ্যালায়েন্স) মত আর্ন্তজাতিক প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছ থেকে সংগ্রহ করা। টিকা উদ্ভাবনের পরীক্ষানিরীক্ষায় যেসব দেশ এগিয়ে আছে, সেই সব দেশও টিকা সংগ্রহের জন্য সম্ভাব্য উৎপাদকদের সঙ্গে ইতোমধ্যেই আগাম ক্রয়চুক্তি করে ফেলেছে। এদের মধ্যে সবচেয়ে এগিয়ে আছে ব্রিটেন এবং যুক্তরাষ্ট্র।  সাত কোটি জনসংখ্যার দেশ ব্রিটেন ইতোমধ্যে ২৫ কোটি টিকার জন্য চুক্তি করেছে। অক্সফোর্ডের উদ্ভাবনের চুক্তিবদ্ধ প্রস্ততকারক হচ্ছে অ্যাস্ট্রাজেনকা, যার কাছ থেকে ব্রিটেন কিনবে ১০ কোটি ভাইল। ইম্পেরিয়াল কলেজ এর সম্ভাব্য টিকার উৎপাদক বায়োএনটেক /ফাইজারের কাছ থেকে তারা কিনছে তিন কোটি ভাইল। ফরাসী কোম্পানি ভ্যালেন্ভার কাছ থেকে ছয় কোটি, যার কারখানা আছে স্কটল্যান্ডে। গ্লাক্সো এবং স্যানোফির কাছ থেকেও ব্রিটেন কিনছে ছয় কোটি। যার মানে হচ্ছে, এই চারটির যেটিই বেশি কার্যকর বলে প্রমাণ মিলবে সেটিই তাদের হাতে থাকবে এবং ব্রিটিশ জনগোষ্ঠীর অন্তত অর্ধেকের টিকার ব্যবস্থা ইতোমধ্যেই নিশ্চিত করা হয়ে গেছে।

যুক্তরাষ্ট্র যাতে সবার আগে টিকা পায় সেজন্যে ট্রাম্প প্রশাসন অ্যাস্ট্রাজেনকার এই প্রকল্পে বিনিয়োগ করেছে ১২০ কোটি ডলার। ফ্রান্সের সানোফির কাছ থেকে ১০ কোটি ডোজ টিকা পেতে ট্রাম্প প্রশাসন ২১০ কোটি ডলারের আরেকটি চুক্তি করেছে। পাশাপাশি তারা বিনিয়োগ করেছে মর্ডানা এবং জনসন অ্যান্ড জনসনের টিকাতেও। আমেরিকা ফার্ষ্ট নীতির কারণে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো কারখানায় তৈরি টিকা তাদের নিজস্ব চাহিদা মেটার আগে ট্রাম্প প্রশাসনের মেয়াদকালে অন্য কোনো দেশের পাওয়ার সুযোগ যে শূণ্য তা মোটামুটি নিশ্চিত করে বলা যায়। ইউরোপীয় ইউনিয়ন তার সদস্য ২৭টি দেশের জন্য  সানোফির সঙ্গে চুক্তি করেছে ৩০ কোটি ডোজের।  মানবদেহে পরীক্ষা এবং উৎপাদনের বিষয়ে অক্সফোর্ডের উদ্ভাবিত টিকায় সহযোগী হয়েছে ভারত, দক্ষিণ আফ্রিকা এবং ব্রাজিল। ব্রাজিল অবশ্য এক্ষেত্রে ভারতের চেয়েও এগিয়ে আছে। কেননা, তারা চীনের সিনোভেক কোম্পানির টিকা উদ্ভাবনেও পরীক্ষার কাজে অংশগ্রহণ করছে। এছাড়া, চীনের আরেকটি প্রতিষ্ঠান সিনোফার্মের টিকা ১৫ হাজার নাগরিকের ওপর পরীক্ষায় অংশীদার হয়েছে সংযুক্ত আরব আমীরাত। ফলে, টিকা  পাওয়ার ক্ষেত্রে এসব অংশীদার দেশের অগ্রাধিকার মোটামুটি নিশ্চিত। ভারত, চীন, ব্রাজিল এবং দক্ষিণ আফ্রিকায় জনসংখ্যার কারণে তাদের অভ্যন্তরীণ চাহিদার যে চাপ তৈরি হবে তা সামাল দেওয়াও তাদের জন্য বড়ধরণের চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে। সেকারণে উদ্ভাবনের পর্যায়ে পরীক্ষা এবং উৎপাদনের প্রক্রিয়ায় অংশীদারিত্বের গুরুত্বই আলাদা।

চীনের সিনোভ্যাক বাংলাদেশের জন্য একটা সুযোগ দিলেও সেটি গ্রহণের ব্যাপারে  কিছুটা দ্বিধাগ্রস্থ মনোভাব লক্ষণীয়। । বাংলাদেশ মেডিকেল রির্সাচ কাউন্সিল মানবদেহে এই টিকার পরীক্ষা পরিচালনার বিষয়ে সম্মতি দিলেও সরকার আইসিডিবিআরবির আবেদন আরও যাচাই-বাছাইয়ের কথা বলেছে। এর আগেও দেখা গেছে আইসিডিডিআরবিতে সব সুবিধা থাকা সত্ত্বেও করোনা শনাক্তকরণ পরীক্ষা পরিচালনায় তাদেরকে অনুমতি দিতে সরকার অযথাই সময়ক্ষেপণ করেছে। গণমাধ্যম এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে নানাধরণের জল্পনা এবং বিতর্ক চলছে। 

নতুন দায়িত্ব নেওয়া স্বাস্থ্যসচিব কিছুদিন আগে বেশ জোরের সঙ্গেই বলেছিলেন যে বাংলাদেশ সবার আগে এবং বিনামূল্যে কোভিড ১৯ এর টিকা পাবে। বাংলাদেশের মত দেশগুলো যাতে বিনামূল্যে টিকা পায় সেজন্যে গাভি এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নেতৃত্বে একটা উদ্যোগ বেশ জোরেশোরেই চলছে। তার জন্য তহবিল সংগ্রহও চলছে। তবে, টাকার বস্তা নিয়ে যেসব দেশ টিকা কেনার দৌড়ে আছে, তাদেরকে পাশ কাটিয়ে সবার আগে বিনামূল্যের টিকা পাওয়ার আশ্বাস বিশ্বাস করা কঠিন।

প্রতিবেশি ভারত অক্সফোর্ডের টিকা উৎপাদনে যুক্ত থাকায়, তা সংগ্রহ করা আমাদের জন্য সহজ হবে এমন একটি ভাবনা অনেকের মধ্যে কাজ করতে পারে। বিশ্বের বৃহত্তম টিকা উৎপাদনকারী ভারতের সেরাম ইনিস্টিটিউট অক্সফোর্ডের এই উদ্যোগের অংশীদার। সেরাম শিশুদের জীবনরক্ষাকারী অন্যান্য টিকা উৎপাদনে বেশ বড়ধরণের ভূমিকা রাখে। সুতরাং, কোভিড ১৯ এর টিকা উৎপাদনে তাদের সামর্থ্য কতটা কাজে লাগাতে পারবে তা স্পষ্ট নয়। 

সেরাম ইনিস্টিটিউটের মালিক আদর পুনাওয়ালা তাঁর উৎপাদিত টিকার অর্ধেক ভারতের  এবং বাকিটা বিশ্বের অন্যান্য দেশের জন্য দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেও নিউইয়র্ক টাইমস স্মরণ করিয়ে দিয়েছে যে প্রধানমন্ত্রী মোদি মহামারির শুরুতে হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইনের রপ্তানি নিষিদ্ধ করেছিলেন। তখন হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইনকে কোভিড চিকিৎসায় কার্যকর বলে বিবেচনা করা হচ্ছিলো, যা পরে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা নাকচ করে দিয়েছে। সেরাম ইনিস্টিউটের কোভিডের টিকা তৈরির জন্য প্রায় ৪৫ কোটি ডলার বিনিয়োগ প্রয়োজন, যার কিছুটা গাভি যোগান দেবে বলেও পত্রিকাটি জানিয়েছে। ফলে, ধারণা করা যায় যে ভারতের বাইরে অন্যান্য দেশে টিকা বিতরণের প্রশ্নে গাভির কিছুটা ভূমিকা থাকবে। সেই সূত্রে বাংলাদেশ বিনা মূল্যে কিছু টিকা যে পাবে তা যৌক্তিকভাবেই অনুমান করা যায়। তবে, বলাই বাহুল্য যে এটি প্রথমে পাওয়ার নিশ্চয়তা দেয় না। টিকা উদ্ভাবন ও উৎপাদনের একাধিক প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণের সুযোগ খোঁজা ও কাজে লাগানোকেই তাই বিশেষজ্ঞরা আলাদা গুরুত্ব দিচ্ছেন।

টিকা উদ্ভাবন ও উৎপাদনের প্রতিযোগিতায় অবশ্য এখন পাশ্চাত্যের চেয়েও বেশি এগিয়ে যাওয়ার দাবি করেছে রাশিয়া। তাদের দাবি নিয়ে পাশ্চাত্যের বিজ্ঞানীরা নানাধরণের সন্দেহ-সংশয় প্রকাশ করলেও সেপ্টেম্বর মাসে তারা টিকার উৎপাদন এবং অক্টোবর থেকে তা প্রয়োগ করা শুরু করার কথা জানিয়েছে। তবে, আরও বিস্ময়কর হচ্ছে চীনের ক্যানসিনো ফার্মার উদ্ভাবন, যা চীন তার সামরিকবাহিনীতে সীমিত আকারে প্রয়োগের অনুমতি দিয়েছে গত ২৫ জুন। আগামী একবছরের জন্য কোম্পানিটিকে এই অনুমতি দেওয়া হয়েছে। চিকিৎসা সাময়িকী ল্যানসেট এই টিকাটির দ্বিতীয় পর্যায়ের পরীক্ষার ফলাফল নিরীক্ষা করে বলেছিল যে এই টিকা উল্লেখযোগ্য মাত্রায় প্রতিরোধক্ষমতা তৈরি করে এবং তার কোনো বিরুপ প্রতিক্রিয়া নেই। সামরিকবাহিনীর সদস্যদের ওপর এটি প্রয়োগের অনুমতিতে ইঙ্গিত মেলে চীন এই টিকার কার্যক্ষমতার বিষয়ে যথেষ্ট আস্থাশীল।   

( ৬ অগাস্ট, ২০২০র প্রথম আলো পত্রিকায় প্রকাশিত। )

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বে স্বৈরশাসকের ফেরা সহজ

  গণতন্ত্রে উত্তরণে ব্যর্থতা ও স্বৈরতন্ত্রের নিকৃষ্টতম রুপ প্রত্যক্ষ করার পর অর্ন্তবর্তী সরকারের মেয়াদকালে যে সব বিষয়ে সংস্কারের আলোপ চলছে, তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে নির্বাচনব্যবস্থা। এরশাদের সামরিক স্বৈরাচারের পতনের পর নির্বাচনকে গণতন্ত্র চর্চার মাধ্যম হিসাবে যেভাবে প্রতিষ্ঠার কথা ছিল, তা থেকে প্রধান দুই দলই বিচ্যূত হয়েছিল। পরিণতিতে নির্বাচন শুধু ক্ষমতা দখলের হিংসাত্মক খেলায় পরিণত হয় এবং শেষ পর্যন্ত শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ সাধারণ মানুষের ভোটের অধিকার হরণ করে নির্বাচনকে নানা রকম প্রহসনে পরিণত করে।  এই সমস্যার এক অতি সরলীকৃত সমাধান হিসাবে বলা হচ্ছে, দ্বিদলীয় রাজনীতির বৃত্ত থেকে বেরিয়ে দেশে সত্যিকার বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে। আর বহুদলীয় গণতন্ত্রের জন্য নির্বাচনব্যবস্থায় আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বের ধারণাকে একমাত্র বা চূড়ান্ত সমাধান হিসাবে তুলে ধরা হচ্ছে।  সংখ্যানুপাতিক বা আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতির নির্বাচনে একটি দল যত শতাংশ ভোট পাবে, সে অনুপাতে তারা সংসদের আসন পাবে। এ আনুপাতিক পদ্ধতিতে প্রার্থীদের নাম দল আগাম ঘোষণা করতেও পারে, আবার না–ও পারে। নাম প্রকাশ করা হলে সেটা হব...

How to Describe the Awami League Accurately?

In an article titled ‘How Not to Describe the Awami League’ , published in this paper, British journalist David Bergman rightly underscores the importance of accuracy in labeling a political party—particularly when such labels carry potential legal consequences. Those familiar with Bergman’s work over the years know that he has consistently taken on politically sensitive and controversial subjects, often at significant personal and professional cost. His courage and commitment to journalistic integrity deserve recognition. Bergman is correct in asserting that “while serious criticisms of the Awami League are both valid and necessary, they must be proportionate and grounded in fact.” His analysis focuses primarily on the legal validity and appropriateness of labeling the Awami League as “fascist” or “Nazi.” He argues that comparing the party to the Nazi regime trivialises the scale of Nazi atrocities and misrepresents the complexities of Bangladeshi politics. Indeed, any historical comp...

স্বৈরতন্ত্রের কেন্দ্রীভূত ক্ষমতার নিকৃষ্ট পরিণতি

ছাত্র–জনতার অভ্যূত্থানের মুখে পালিয়ে যাওয়া স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার পদত্যাগ নিয়ে রাষ্ট্রপতির কথিত মন্তব্যে যে তীব্র প্রতিক্রিয়া হয়েছে, তা প্রত্যাশিতই ছিল। গত ৫ আগস্ট রাতে জাতির উদ্দেশ্য দেওয়া ভাষণ এবং সম্প্রতি মানবজমিন সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরীর সঙ্গে আলাপচারিতায় পরস্পরবিরোধী মন্তব্য – এই দুইয়ের একটি যে অসত্য, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। বিতর্ক শুরু হওয়ার পর তাঁর দপ্তর যে ব্যাখ্যা দিয়েছে, তা–ও অস্পষ্ট ও ধোঁয়াশাপূর্ণ। তিনি সর্বশেষ বিবৃতিতেও মতিউর রহমান চৌধুরীকে অসত্য কথা বলার বিষয়টি স্বীকার যেমন করেন নি, তেমনি এমন দাবিও করেননি যে তাঁকে ভূলভাবে উদ্ধৃত করা হয়েছে।  ৫ আগস্ট যদি তিনি পদত্যাগপত্র গ্রহণের প্রশ্নে অসত্য বলে থাকেন, তাহলে তা খুবই গুরুতর হিসাবে বিবেচিত হতে বাধ্য। কেননা তা ছিল জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া ভাষণের তথ্য। আবার যদি তিনি মানবজমিন সম্পাদকের কাছে আলাপচারিতায় অসত্য বলে থাকেন, তাহলে তাঁর কাছে যে দেশবাসী প্রশ্নের জবাব চাইতে পারে, তা হলো অর্ন্তবর্তী সরকার যখন সবকিছু গুছিয়ে আনার চেষ্টা করছে, দেশে স্থিতিশীলতা ফেরানোর চেষ্টা চলছে, তখন তিনি কেন এমন বিভ্রান্তি সৃষ্টি করতে চাইছেন? তাঁর উদ্দ...