সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

জি সেভেনের বৈঠক করোনা মহামারির ‘দুই-ধারার’ ব্যবধান কি ঘুচাতে পারবে

 টিকার জন্য যখন উন্নয়নশীল দেশগুলো বিশ্ব রাজনীতিতে বিপরীত মেরুতে থাকা পরাশক্তিগুলোর কাছে ধর্ণা দিচ্ছে, তখন শিল্পোন্নত দেশগুলোর জোট জি সেভেনের নেতারা কোভিড ১৯ মহামারির মধ্যে প্রথমবারের মতো সশরীরে এক শীর্ষবৈঠকে মিলিত হচ্ছেন ইংল্যান্ডের পর্যটন শহর কর্ণওয়ালের সেন্ট আইভসে আজ শুক্রবার যখন এই বৈঠক শুরু হবে তখন বিশ্বে মহামারীতে মৃত্যুর সংখ্যা সাড়ে সাইত্রিশ লাখ ছাড়িয়ে যেতে পারে

জনমত জরিপ সংস্থা গ্যালাপের ১১৭টি দেশে পরিচালিত সমীক্ষা বলছে যে উন্নয়নশীল দেশগুলিতে এই মহামারির অস্বাভাবিক অর্থনৈতিক প্রভাবে শ্রমশক্তির অর্ধেকই তাদের চাকরি হারিয়েছেন কিন্তু ভাইরাসটি যে কবে নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে বিশ্ব তার কোনো আভাস পাওয়া যাচ্ছে না
২০২০ সালের শুরু থেকে এই মহামারি বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম এবং গভীর সংকটের রূপ নেওয়ার পরও বিশ্বব্যাপী সমন্বিতভাবে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ তেমন একটা নেওয়া হয়নি ২০০৮ সালে বিনিয়োগ ব্যাংক লেম্যান ব্রাদার্সের পতনের পর যে বৈশ্বিক আর্থিক সংকট তৈরি হয়েছিল, এই মহামারি তার চেয়েও বিস্তৃত কঠিন এক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী গর্ডন ব্রাউন ওই সময় তিনি বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ  ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বেও ছিলেন গত রোববার বিবিসি এবং সিএনএনে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি এই সংকট মোকাবেলায় জরুরি হস্তক্ষেপের জন্য বিশ্ব নেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তাঁর ভাষায় একটি বৈশ্বিক সঙ্কটের জন্য প্রয়োজন একটি বৈশ্বিক সমাধান এর এক সপ্তাহ আগে মে, গর্ডন ব্রাউন দরিদ্র দেশগুলিতে কোভিড ১৯ এর বাড়তি টিকা দ্রুত দেওয়ার জন্য ধনী দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছিলেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এক সংবাদ সম্মেলনে অংশ নিয়ে তিনি বলেন, ‘প্রত্যেকটি দেশে আরও দ্রুত টিকা না দিতে পারার কারণে আমরাই আসলে বেছে নিচ্ছি কে বেঁচে থাকবে এবং কে মারা যাবে
ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপির গণনা অনুযায়ী জুন পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে কমপক্ষে ২১৫টি অঞ্চলে করোনার ২১৫ কোটি ডোজ টিকা দেওয়া হয়েছে তবে বিস্ময়ের বিষয় হলো  যুক্তরাষ্ট্রের কয়েকটি রাজ্য সরকার যখন সে দেশে টিকা নিতে অনিচ্ছুক বা টিকার বিষয়ে সংশয়বাদী নাগরিকদের উত্সাহ দেওয়ার জন্য টিকাগ্রহণকারীদের মধ্যে লটারির মাধ্যমে আড়াই লাখ ডলার পুরস্কার দিচ্ছে, তখন উন্নয়নশীল দেশগুলির নেতারা আক্ষরিক অর্থে ধনী দেশগুলোর বাড়তি মজুদ ভাগ করে নেওয়ার জন্য দেনদরবার করে চলেছেন করোনা প্রাদুর্ভাবে প্রায় দিশেহারা নেপালের প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা অলি জরুরী সাহায্যের জন্য গত সপ্তাহে জি সেভেনের চেয়ারম্যান হিসাবে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখেছেন অলি লিখেছেন, "আমাদের শেরপারা পাহাড়ের ওপরে অভিযাত্রীদের সঙ্গে তাদের অক্সিজেন ভাগ করে নেওয়ার জন্য পরিচিত কিন্তু আজ কোভিড-১৯ এর কারণে অক্সিজেনের অভাবে আমাদের দম বন্ধ হয়ে আসছে তাই আমরা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের "শেরপা" খুঁজছি
বিবিসি জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রী অলি প্রধানমন্ত্রী জনসনের কাছে অনুরোধ জানিয়ে বলেন যে, যুক্তরাজ্যে সেনাবাহিনীতে চাকরিরত নেপালি গুর্খা সৈন্যদের ত্যাগের কারণে ওইসব সৈন্যদের পরিবার-পরিজনের জন্য যুক্তরাজ্যের উচিত কোভিড মোকাবিলায় সাহায্যের ক্ষেত্রে নেপালকে অগ্রাধিকার দেওয়া নেপাল যে দিন গুর্খা সৈন্যদের পরিবারের জন্য টিকা চেয়েছিল, সে দিনই ব্রিটিশ স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ ১২ থেকে ১৫ বছর বয়সী শিশুদের জন্য ফাইজারের টিকার অনুমোদন দেয় নেপালের অনুরোধের জবাবে ব্রিটিশ পররাষ্ট্র দপ্তর বলেছিল, "ন্যায্যতার ভিত্তিতে প্রয়োজনমতো টিকা সংগ্রহ বিতরণ করার আন্তর্জাতিক উদ্যোগ কোভ্যাক্সের শীর্ষস্থানীয় দাতা হচ্ছে যুক্তরাজ্য " বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীও একইরকম অনুরোধ জানিয়েছিলেন, যা পূরণ হয়নি উন্নয়নশীল বিশ্বের বয়স্ক জনগোষ্ঠীর তুলনায় শিশুদের ঝুঁকি কম হলেও শিল্পোন্নত দেশগুলিতে সেই শিশুকিশোরদের অগ্রাধিকার দেওয়া নৈতিকভাবে কতটা সঙ্গত সেই বিতর্ক অবশ্য ওইসব দেশের রাজনীতিকদের ওপর তেমন একটা প্রভাব ফেলেনি
ইউরোপ এবং উত্তর আমেরিকার নেতারা এখন আসন্ন গ্রীষ্মকালীন অবকাশের মওসুমকে কীভাবে বাঁচাবেন সেই চিন্তায় মগ্ন এবং তাঁরা পরীক্ষামূলকভাবে সামাজিকতার অনুমতি দিতে শুরু করেছেন কিছু দেশে ভ্রমণ এবং বিনোদন পরিষেবার জন্য চালু হয়েছে তথাকথিত ভ্যাকসিন পাসপোর্ট বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক তেদরোস আধানোম গেব্রেয়াসুস তাই এই পরিস্থিতিকে বলছেন, ‘দুটি ধারার (ট্র্যাকের) মহামারি: অনেক দেশ এখনও অত্যন্ত বিপজ্জনক এক পরিস্থিতির মুখোমুখি, আর যারা বেশিরভাগ নাগরিককে টিকা দিতে পেরেছে তারা কথা বলছেন নিষেধাজ্ঞার অবসান নিয়ে তবে তিনি সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন যে টিকার অসম বন্টন করোনাভাইরাসকে আরও সংক্রামক করে তুলছে, নতুন নতুন ধরণে এর রুপান্তর সব চিকিত্সাকে অকার্যকর করে ফেলতে পারে
 
ধনী দেশগুলোর টিকার বাড়তি মজুত ভাগ করে নেওয়ার জন্য জি সেভেনের ওপর চাপ আরও বাড়িয়েছে ইউনিসেফের সাম্প্রতিকতম বিবৃতি ইউনিসেফ বলছে যে যুক্তরাজ্যের উচিত দরিদ্র দেশগুলির জন্য জুন মাসের মধ্যেই তাদের ২০ শতাংশ টিকা সরবরাহ করার প্রতিশ্রুতি দেওয়া  যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন তাঁর দেশের বাড়তি মজুত থেকে আড়াই কোটি ডোজ উন্নয়নশীল দেশগুলোতে পাঠানোর ঘোষণা দিয়েছেন এই ঘোষণাকে কিছু কিছু পর্যবেক্ষক জি সেভেনের শীর্ষ সম্মেলনে একটি সমন্বিত পদক্ষেপের ইঙ্গিত হিসাবে দেখছেন আর্ন্তজাতিক কোনো উদ্যোগ থেকে যুক্তরাষ্ট্র এতোদিন কার্যত অনুপস্থিত ছিল তাঁর পূর্বসুরি ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমেরিকা ফার্ষ্ট নীতির কারণে ট্রাম্প বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থাসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে পর্যায়ক্রমে প্রত্যাহার করে নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছিলেন ফরাসী রাষ্ট্রপতি এমমানুয়েল ম্যাখোঁও ঘোষণা করেছেন যে ফ্রান্স তার মজুতের শতাংশ কোভেক্সকে দান করবে
জি সেভেনের চেয়ার হিসাবে প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেছেন যে তিনি আশা করছেন ২০২২ সালের মধ্যে পুরো বিশ্বকে করোনারভাইরাসের টিকা দেওয়ার বিষয়ে জোটের নেতারা দৃঢ় অঙ্গীকার ঘোষণায় একমত হবেন তাঁর পরিকল্পনার রূপরেখায় আছে টিকা উৎপাদনের সক্ষমতা বাড়ানো, আন্তর্জাতিক পরিসরে টিকা বিতরণের প্রতিবন্ধকতা হ্রাস করা এবং অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার উৎপাদনে যুক্তরাজ্য যেভাবে অন্যান্য দেশের সঙ্গে সহযোগিতা করেছে অন্যান্য টিকার ক্ষেত্রেও দ্বিপাক্ষিকভাবে একইধরণের সমঝোতা করা এছাড়া, কোভেক্সের মাধ্যমে উন্নয়নশীল দেশগুলির সাথে উদ্বৃত্ত ডোজ ভাগ করে নেওয়া
 
তবে তাঁর পরিকল্পনায় কোভিড ১৯ টিকার মেধাস্বত্ত্ব বা পেটেন্টে সাময়িকভাবে ছাড় দেওয়ার কোনো কথা নেই, যেমনটি বিভিন্ন নাগরিক অধিকার গোষ্ঠী দাবি করে আসছে গর্ডন ব্রাউনসহ দুশোরও বেশি সাবেক সরকারপ্রধান এবং নাগরিকসমাজের প্রতিনিধি এই দাবি জানিয়ে আসছেন দুটি যুক্তিতে প্রথমত: এর ফলে উন্নয়নশীল দেশগুলিতে যাদের টিকা উত্পাদনের ক্ষমতা আছে সেটা কাজে লাগানো যাবে দ্বিতীয়ত: প্রথম পর্যায়ে উদ্ভাবিত টিকাগুলোর গবেষণায় শিল্পোন্নত দেশগুলোর রাষ্ট্রীয় তহবিল থেকে টাকা যোগান দেওয়া হয়েছে, যা বাণিজ্যিক মুনাফার জন্য ব্যবহৃত হওয়া অযৌক্তিক সর্বোপরি টিকা উৎপাদনের ব্যবস্থা সম্প্রসারণের মাধ্যমেই পুরো বিশ্বকে টিকাদানের লক্ষ্য দ্রুততম সময়ে অর্জন সম্ভব হবে
 
এছাড়া করোনা মহামরির কারণে সৃষ্ট বৈশ্বিক মন্দা থেকে অর্থনীতির পুনরুজ্জীবন এবং জলবায়ু জরুরি অবস্থা মোকাবেলায় জি সেভেন কীভাবে নেতৃত্ব দিতে পারে সে সব বিষয়েও শীর্ষ সম্মেলনে বিশেষভাবে আলোচিত হবে চলতি বছরে আরও পরের দিকে যুক্তরাজ্যে জলবায়ু শীর্ষ সম্মেলন কপ ২৬ হওয়ার কথা আছে ওই সম্মেলনকে সামনে রেখে বরিস জনসন বলেছেন কোভিড সঙ্কটের মতো জলবায়ুজনিত জরুরি অবস্থাও উন্নত বিশ্বের জন্য বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে প্রথমদিকে যদিও ভাবা হয়েছিল যে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির মুখে পড়বে উন্নয়নশীল দেশগুলো, কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে বিগত দশকে বিশ্ব জুড়েই পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মারাত্মকভাবে বেড়েছে জলবায়ুজনিত জরুরি অবস্থার ক্ষেত্রেও আমরা সম্ভবত ওই পরিচিত বাণীই শুনব যে "আমরা সবাই নিরাপদ না হলে কেউই নিরাপদ নই " তবে, জি সেভেনের জন্য আশু পরীক্ষা হলো তারা কী চলমান মহামারিরদুই-ধারারমধ্যে ব্যবধানটা ঘুচাতে পারবে? এই টিকা সংকট সমাধানের সঙ্গে যে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন রাজনৈতিক জোটের প্রতিদ্বন্দী পরাশক্তি হিসাবে চীনের উত্থান মোকাবিলার প্রশ্নও জড়িত, সে কথাও অনস্বীকার্য 
(১১ জুন, ২০২১-‘র প্রথম আলো পত্রিকায় প্রকাশিত।) 

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বে স্বৈরশাসকের ফেরা সহজ

  গণতন্ত্রে উত্তরণে ব্যর্থতা ও স্বৈরতন্ত্রের নিকৃষ্টতম রুপ প্রত্যক্ষ করার পর অর্ন্তবর্তী সরকারের মেয়াদকালে যে সব বিষয়ে সংস্কারের আলোপ চলছে, তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে নির্বাচনব্যবস্থা। এরশাদের সামরিক স্বৈরাচারের পতনের পর নির্বাচনকে গণতন্ত্র চর্চার মাধ্যম হিসাবে যেভাবে প্রতিষ্ঠার কথা ছিল, তা থেকে প্রধান দুই দলই বিচ্যূত হয়েছিল। পরিণতিতে নির্বাচন শুধু ক্ষমতা দখলের হিংসাত্মক খেলায় পরিণত হয় এবং শেষ পর্যন্ত শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ সাধারণ মানুষের ভোটের অধিকার হরণ করে নির্বাচনকে নানা রকম প্রহসনে পরিণত করে।  এই সমস্যার এক অতি সরলীকৃত সমাধান হিসাবে বলা হচ্ছে, দ্বিদলীয় রাজনীতির বৃত্ত থেকে বেরিয়ে দেশে সত্যিকার বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে। আর বহুদলীয় গণতন্ত্রের জন্য নির্বাচনব্যবস্থায় আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বের ধারণাকে একমাত্র বা চূড়ান্ত সমাধান হিসাবে তুলে ধরা হচ্ছে।  সংখ্যানুপাতিক বা আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতির নির্বাচনে একটি দল যত শতাংশ ভোট পাবে, সে অনুপাতে তারা সংসদের আসন পাবে। এ আনুপাতিক পদ্ধতিতে প্রার্থীদের নাম দল আগাম ঘোষণা করতেও পারে, আবার না–ও পারে। নাম প্রকাশ করা হলে সেটা হব...

How to Describe the Awami League Accurately?

In an article titled ‘How Not to Describe the Awami League’ , published in this paper, British journalist David Bergman rightly underscores the importance of accuracy in labeling a political party—particularly when such labels carry potential legal consequences. Those familiar with Bergman’s work over the years know that he has consistently taken on politically sensitive and controversial subjects, often at significant personal and professional cost. His courage and commitment to journalistic integrity deserve recognition. Bergman is correct in asserting that “while serious criticisms of the Awami League are both valid and necessary, they must be proportionate and grounded in fact.” His analysis focuses primarily on the legal validity and appropriateness of labeling the Awami League as “fascist” or “Nazi.” He argues that comparing the party to the Nazi regime trivialises the scale of Nazi atrocities and misrepresents the complexities of Bangladeshi politics. Indeed, any historical comp...

স্বৈরতন্ত্রের কেন্দ্রীভূত ক্ষমতার নিকৃষ্ট পরিণতি

ছাত্র–জনতার অভ্যূত্থানের মুখে পালিয়ে যাওয়া স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার পদত্যাগ নিয়ে রাষ্ট্রপতির কথিত মন্তব্যে যে তীব্র প্রতিক্রিয়া হয়েছে, তা প্রত্যাশিতই ছিল। গত ৫ আগস্ট রাতে জাতির উদ্দেশ্য দেওয়া ভাষণ এবং সম্প্রতি মানবজমিন সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরীর সঙ্গে আলাপচারিতায় পরস্পরবিরোধী মন্তব্য – এই দুইয়ের একটি যে অসত্য, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। বিতর্ক শুরু হওয়ার পর তাঁর দপ্তর যে ব্যাখ্যা দিয়েছে, তা–ও অস্পষ্ট ও ধোঁয়াশাপূর্ণ। তিনি সর্বশেষ বিবৃতিতেও মতিউর রহমান চৌধুরীকে অসত্য কথা বলার বিষয়টি স্বীকার যেমন করেন নি, তেমনি এমন দাবিও করেননি যে তাঁকে ভূলভাবে উদ্ধৃত করা হয়েছে।  ৫ আগস্ট যদি তিনি পদত্যাগপত্র গ্রহণের প্রশ্নে অসত্য বলে থাকেন, তাহলে তা খুবই গুরুতর হিসাবে বিবেচিত হতে বাধ্য। কেননা তা ছিল জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া ভাষণের তথ্য। আবার যদি তিনি মানবজমিন সম্পাদকের কাছে আলাপচারিতায় অসত্য বলে থাকেন, তাহলে তাঁর কাছে যে দেশবাসী প্রশ্নের জবাব চাইতে পারে, তা হলো অর্ন্তবর্তী সরকার যখন সবকিছু গুছিয়ে আনার চেষ্টা করছে, দেশে স্থিতিশীলতা ফেরানোর চেষ্টা চলছে, তখন তিনি কেন এমন বিভ্রান্তি সৃষ্টি করতে চাইছেন? তাঁর উদ্দ...