সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

বর্ষসেরা ইংরেজি শব্দ ও বাংলাদেশের ব্যাংকিং

 বিশ্বের নানাপ্রান্তের নানা ঘটনায় এমন অদ্ভুত মিল পাওয়া যায় যে বিস্মিত না হয়ে উপায় থাকে না। মাত্র গেল সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের ইংরেজি অভিধান ’মেরিয়াম ওয়েবস্টার’ জানিয়েছে যে চলতি বছরের সবচেয়ে বেশি যে শব্দটির অর্থ তাদের অনলাইনে খোঁজা হয়েছে, সেটা হচ্ছে গ্যাসলাইটিং। তাদের বিচারে তাই গ্যাসলাইটিং হচ্ছে ২০২২ সালের ওয়ার্ড অব দ্য ইয়ার বা বর্ষসেরা শব্দ। বছরজুড়ে অনলাইনে শব্দটির অর্থ খোঁজা বেড়েছে ১৭৪০ শতাংশ। তো শব্দটির মানে কী? ইংরেজি থেকে বাংলা করলে যেটা দাঁড়ায় তা হচ্ছে, নিজের সুবিধার জন্য কাউকে চরমভাবে বিভ্রান্ত করার চর্চা বা অনুশীলন। অন্যকে নিয়ন্ত্রণ বা তার কাছ থেকে  নিজের জন্য সুবিধা আদায়ে কারসাজি করা, চরম বিভ্রান্তিকর তথ্য দেওয়া বা সরাসরি প্রতারণা বোঝাতে শব্দটি ব্যবহৃত হয়ে থাকে। মেরিয়াম ওয়েবস্টার এর সংজ্ঞায়ন করতে গিয়ে বলেছে, এটা হচ্ছে একজনকে দীর্ঘসময় ধরে মানসিকভাবে বিভ্রান্ত করা। ভুক্তভোগী ব্যাক্তিকে তার নিজস্ব চিন্তাভাবনা, বাস্তবতার উপলব্ধি কিম্বা স্মৃতির যথার্থতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বিভ্রান্ত করা অথবা  তার আত্মবিশ্বাসে চিড় ধরানো এবং আত্মমর্যাদার ক্ষতিসাধন করে একজনের মানসিক স্থিতিশীলতা নষ্ট করে অপরাধীর উপর নির্ভরশীল করে ফেলা।


বৃটিশ দৈনিক দ্য গার্ডিয়ান লিখেছে, এটি একটি জঘন্য হাতিয়ার, যা প্রায়ই দাম্পত্য ও বন্ধুত্বের সম্পর্কের ক্ষেত্রে অপব্যবহারকারীদের দ্বারা ব্যবহৃত হয়। রাজনীতিবিদ এবং সাংবাদিকেরাও এটি ব্যবহার করে থাকেন। এটি ব্যবসা–বাণিজ্যে কর্পোরেট কৌশল, বা সাধারণ ভোক্তাকে বিভ্রান্ত করার একটি উপায় হিসাবেও প্রয়োগ হয়ে থাকে। এমনকি চিকিৎসাসেবার ক্ষেত্রেও এর প্রয়োগ হয়ে থাকে। যেমন রোগীর লক্ষণ বা অসুস্থতাকে কোনো ডাক্তার যখন ’ওটা আপনার মাথায়’ বলে নাকচ করে দেন। অপ্রয়োজনীয় পরীক্ষা–নিরীক্ষা কিম্বা ওষূধের ফিরিস্তি ধরিয়ে দেওয়ার অভিযোগ তো আমরা হরহামেশাই শুনে থাকি। 


এই চর্চাটা আমাদের দেশেও যে ভয়াবহভাবে বেড়েছে, সে কথা নিশ্চয়ই সবাই হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছেন। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আমাদের ফারাকটা শুধু এখানে আমাদের কোনো অভিধান খুঁজতে হচ্ছে না। 


আরও একটা ফারাকের কথা বলা যায়। যুক্তরাষ্ট্রে প্রতারিত হলে প্রতিকার পাওয়ার আইনি ব্যবস্থা কার্যকর আছে, ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি বিচার পাওয়ার আশা করেন, ভরসা রাখেন। রাজনীতিকরা বিভ্রান্ত করলে নির্বাচনে তাদের ক্ষমতাচ্যূত করতে পারেন। ২০১৪ সালের পর থেকে বাংলাদেশে ভোট দেওয়ার অধিকারটা খোয়ানোর সঙ্গে সঙ্গে আরও অনেক আশাই ত্যাগ করতে হয়েছে বা হচ্ছে। অন্য কোনো বিষয়ে নজর না দিয়ে এখানে শুধু কয়েকটি ব্যাংক সাবাড়কারীর বিচারের কথাই বলা যায়। এখন সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিরাও প্রশ্ন করছেন, তাঁরা কি শুধু দর্শক হয়ে লুট করা দেখবেন। বিচারপতিদের ক্ষোভ ও দূর্নীতি দমন কমিশনকে তিরষ্কারের ঘটনাটি ঘটলো কমিশনের চেয়ারম্যান ’বিশ্ব রেকর্ড করার মতো রাঘববোয়াল ধরার’ দাবি করার পর সপ্তাহ না পেরোতেই। এই কমিশনেরই একজন সাবেক কমিশনার বর্তমানে ইসলামী ব্যাংকের পরিচালক এবং ব্যাংকটির ঋণ কেলেংকারির বিষয়ে সাফাই দিতে গিয়ে তিনি বলেছেন ’সব কিছু নিয়ম মেনেই হয়েছে’। 


সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বেসিক ব্যাংক লোপাটের ঘটনা নিয়ে তদন্ত কেন শেষ হচ্ছে না, সে বিষয়ে। কিন্তু বেসিক ব্যাংকের আগে এবং পরে আরো যেসব ব্যাংকে কেলেঙ্কারি হয়েছে, সেগুলোতে কি কিছু হয়েছে? সাবেক ফারমার্স ব্যাংকের উদ্যোক্তা পরিচালকেরা তো সবাই বহাল তবিয়তে আছেন, রাজনীতি করছেন। বলাবাহুল্য যে উদ্যোক্তারা ছিলেন ক্ষমতাসীন দলের প্রথম সারির নেতা ও গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী, তাঁর পরিবার, স্বজন ও সহযোগী। শুধু ব্যাংকটিকে নতুন নামে বাঁচানোর চেষ্টা হচ্ছে, যা এখনো সফল হয়েছে বলে কেউ দাবি করতে পারছে না। 


দেশে কোনো ব্যাংক দেউলিয়া হয়নি, বা বন্ধ হয়নি বলে মন্ত্রী বা আমলারা দাবি করেন, তাঁরা যে তথ্যটি আড়াল করেন, তা হলো, রাষ্ট্রীয় সহায়তা ও বিশেষ ব্যবস্থায় এগুলোকে কৃত্রিমভাবে বাঁচিয়ে রাখা হয়েছে। এমনকি রাষ্ট্রমালিকানাধীন ব্যাংকগুলোর অনাদায়ি ঋণ অবলোপন ও খেলাপি ঋণের বোঝা সামলাতে দফায় দফায় করদাতাদের টাকা দিয়ে মুলধনের ঘাটতি পূরণ না করলে সেগুলো টিকিয়ে রাখা সম্ভব ছিল না। ওই টিকিয়ে রাখার মূল্য কিন্তু দেশের সাধারণ মানুষই দিচ্ছে। বর্তমান অর্থমন্ত্রী ব্যাংকের অবস্থা কোথায় খারাপ তা জানতে চেয়েছেন। তাঁর পূর্বসুরিও হলমার্ক কেলেংকারির সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকাকে কোনো টাকাই মনে করেন নি। লক্ষ কোটি টাকার বাজেট তৈরির আত্মতৃপ্তিতে তখন তাঁর কাছে হাজার কোটির সংখ্যা গণনাযোগ্য ছিল না।  


ব্যাংকিং খাত নিয়ে প্রায় প্রতিদিনই যেসব নতুন নতুন তথ্য প্রকাশ পাচ্ছে, তাতে আর কতদিন সংকট নেই কথাটা মানুষকে বিশ্বাস করানো যাবে? অর্ধডজনেরও বেশি ব্যাংক একটি ব্যবসায়ী গোষ্ঠীর নিয়ন্ত্রণে থাকার আর কোনো নজির বিশ্বের কোথাও আছে বলে আমাদের জানা নেই। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিরীক্ষা প্রতিবেদন অনুযায়ী ওই ব্যবসায়ী গোষ্ঠীটি নানা নামে দেশের বৃহত্তম বেসরকারি ব্যাংক ইসলামী ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়েছে ৩০ হাজার কোটি টাকা ( এস আলম গ্রুপ লিফ্টস  টাকা ৩০০০০ ক্রোর লোন্স ফ্রম আইবিবিএল অ্যালোন, দ্য নিউ এজ, ৩০ নভেম্বর, ২০২২)। নিউ এজের প্রতিবেদন বলছে আইন ও নিয়মকানুন মানলে গ্রুপটি ইসলামী ব্যাংক থেকে ঋণ পেতে পারে ২১৫ কোটি টাকা। এর মানে হচ্ছে যতটা পাওয়ার যোগ্য, তার চেয়ে অন্তত ১৩৯ গুণ বেশি ঋণ তাঁরা আদায় করতে পেরেছেন অদৃশ্য ক্ষমতা ও প্রভাব খাটিয়ে। ২০১৭ সালে নানা নাটকীয়তার মধ্য দিয়ে ব্যাংকটি নিয়ন্ত্রণে নেয় এস আলম গ্রুপ। বুঝতে অসুবিধা হয় না যে ওই অদৃশ্য ক্ষমতার প্রভাবে ২০১৯ সালে বাংলাদেশ ব্যাংকের তদন্তে ব্যাংকটির খাতুনগঞ্জ শাখায় গ্রুপটির ছয় হাজার কোটি টাকার মন্দ ঋণ ব্যাংকটির বার্ষিক প্রতিবেদনে নিয়মিত হয়ে গেছে। 


রাজনীতিতে বিভ্রান্তি ছড়িয়ে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করা অবশ্য আমাদের দেশে নতুন কিছু নয়। তবে সেটা বাড়াবাড়ি পর্যায়ে গেলে পরিণতি যে সুখকর হয় না, তার নজিরের অভাব নেই। সমস্যা হলো রাজনীতিতে বিভ্রান্তি তৈরি করে সাময়িক লাভ হলেও অর্থনীতির ক্ষেত্রে তেমনটা হয় না। খাদ্য উৎপাদনে স্বয়ংসর্ম্পূণতা অর্জনের দাবি কতটা যে অসার ছিল তার প্রমাণ ইতোমধ্যেই দেখা যাচ্ছে। দরিদ্রদের জন্য কম দামে চাল, ডাল, তেল বিক্রির ট্রাকগুলোর সামনে দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হচ্ছে অসহায় মানুষের ভিড়। মধ্যবিত্তও ওই সারিতে দাঁড়াতে বাধ্য হচ্ছেন। ভ্রান্তি ভেঙ্গে যাওয়ার দৃষ্টান্ত শুনতে পেলাম একজনের গানের কথায়। এক মেয়ে র‍্যাপারের গানের শুধু দুটি লাইন এখানে উদ্ধৃত করে শেষ করি: 

’রাস্তার দু’পাশে টাইলস করা ফুটপাত

উন্নত বিছানায় পথশিশুর কাটে রাত।’


মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বে স্বৈরশাসকের ফেরা সহজ

  গণতন্ত্রে উত্তরণে ব্যর্থতা ও স্বৈরতন্ত্রের নিকৃষ্টতম রুপ প্রত্যক্ষ করার পর অর্ন্তবর্তী সরকারের মেয়াদকালে যে সব বিষয়ে সংস্কারের আলোপ চলছে, তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে নির্বাচনব্যবস্থা। এরশাদের সামরিক স্বৈরাচারের পতনের পর নির্বাচনকে গণতন্ত্র চর্চার মাধ্যম হিসাবে যেভাবে প্রতিষ্ঠার কথা ছিল, তা থেকে প্রধান দুই দলই বিচ্যূত হয়েছিল। পরিণতিতে নির্বাচন শুধু ক্ষমতা দখলের হিংসাত্মক খেলায় পরিণত হয় এবং শেষ পর্যন্ত শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ সাধারণ মানুষের ভোটের অধিকার হরণ করে নির্বাচনকে নানা রকম প্রহসনে পরিণত করে।  এই সমস্যার এক অতি সরলীকৃত সমাধান হিসাবে বলা হচ্ছে, দ্বিদলীয় রাজনীতির বৃত্ত থেকে বেরিয়ে দেশে সত্যিকার বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে। আর বহুদলীয় গণতন্ত্রের জন্য নির্বাচনব্যবস্থায় আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বের ধারণাকে একমাত্র বা চূড়ান্ত সমাধান হিসাবে তুলে ধরা হচ্ছে।  সংখ্যানুপাতিক বা আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতির নির্বাচনে একটি দল যত শতাংশ ভোট পাবে, সে অনুপাতে তারা সংসদের আসন পাবে। এ আনুপাতিক পদ্ধতিতে প্রার্থীদের নাম দল আগাম ঘোষণা করতেও পারে, আবার না–ও পারে। নাম প্রকাশ করা হলে সেটা হব...

অরাজনৈতিক আন্দোলনের করুণ রাজনৈতিক মূল্য

কোটা সংস্কারের দাবিতে সাধারণ ছাত্র–ছাত্রীদের আন্দোলনে  কদিন ধরে যা ঘটে চলেছে, তা যেমন বেদনাদায়ক, তেমনই নিন্দনীয় ও ক্ষোভের কারণ। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের শিক্ষা দিতে ক্ষমতাসীন সরকারের সমর্থক এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীর হাতে একইদিনে দেশের তিন জায়গায় ছয়জনের প্রাণহানির ঘটনা স্বাধীন বাংলাদেশে বিরল।  এবার আরও যেসব ঘটনা আমাদের স্তম্ভিত করেছে, অভিভাবকদের চোখ অশ্রুসিক্ত করেছে, এসব মৃত্যুর পরও সরকারের রাজনৈতিক দম্ভ বজায় রাখার চেষ্টা, যা আরও প্রাণহানির কারণ হয়েছে। ছয়জন তরুণের প্রাণ বিসর্জনের পরও কোটা সংস্কারের দাবিতে সরকার ”নীতিগতভাবে একমত” – একথাটি বলে  আলোচনায় না ডেকে সময়ক্ষেপণ করেছে। আইনমন্ত্রী কথাটি যখন বললেন, তার আগেই আরও জীবন গেল, শত শত মানুষ আহত হলো, দেশের সম্পদ নষ্ট হলো। রাজনৈতিক গরিমা ছাড়া এর আর কোনো কারণ আছে কি? ছাত্রলীগ পরিচয়ে অন্ত্রধারীদের তান্ডব, পুলিশের চরম নিষ্ঠুরতা এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ছাত্রীদের গড়পরতা মারধর ও লাঞ্চিত করার যে দৃশ্যগুলো গণমাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে, তা কোনো অভিভাবকের পক্ষেই ভোলা সম্ভব নয়। এসব ঘটনার বিবরণ উদ্ধৃত না করে শুধু নিষ্ঠুর ...

সংবিধান সংস্কারে জাতীয় সমঝোতা কি অসম্ভব কিছু

সংবিধান সংস্কার কমিশন সংবিধান নিয়ে যে জনমত সংগ্রহ ও জাতীয়ভিত্তিক সংলাপগুলো করছে, তাতে বেশ ভালোই সাড়া মিলছে বলে আভাস পাওয়া যাচ্ছে। প্রায় প্রতিদিনই বিভিন্ন নাগরিক গোষ্ঠী, রাজনৈতিক দল, বিদ্বজ্জনেরা কেমন সংবিধান দেখতে চান, তা নিয়ে বিতর্ক ও মতবিনিময় করছেন। দেশের রাজনৈতিক ভবিষ্যত নির্ধারণের মৌলিক ভিত্তি তথা রাষ্ট্রকাঠামো ও ক্ষমতার বিন্যাস সম্পর্কে নাগরিকদের এতটা উৎসাহ সম্ভবত: এর আগে আর দেখা যায়নি। সংস্কার কমিশনের সূত্র থেকে জেনেছি, অনলাইনে তাঁরা অভূতপূর্ব সাড়া পেয়েছেন এবং মতামত দেওয়ার জন্য সপ্তাহখানেক সময় বাকি থাকতেই ৩০ হাজারেরও বেশি পরামর্শ তাঁদের কাছে জমা পড়েছে। নাগরিকদের এ আগ্রহ থেকে যে বার্তাটি স্পষ্ট হয়, তা হচ্ছে তাঁরা চান তাঁদের মতামত যেন গুরুত্ব পায়। দীর্ঘ ১৫ বছরের স্বৈরশাসনে ক্ষমতাধরদের কিছু বলার বা তাঁদের প্রশ্ন করার কোনো অধিকার সাধারণ মানুষের ছিল না। প্রতি পাঁচ বছরে একবার ভোটের মাধ্যমে প্রতিনিধি নির্বাচনের যে অধিকার, সেটুকুও তাঁরা হারিয়েছিলেন। এই পটভূমিতে নাগরিকদের প্রথম চাওয়া হচ্ছে, তাঁদের হারানো অধিকার ফিরে পাওয়া। ভোট দেওয়ার অধিকার, কথা বলার অধিকার, প্রশ্ন করার অধিকার, সংগঠন করার...