সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

ফুলপরী, ছাত্রলীগ ও উপহাসের অর্থ খোঁজা

 সংবাদপত্রে মন খারাপ করা খবরের আধিক্য নিয়ে মাঝেমধ্যেই অনেকে অনুযোগ করেন। এসব খবর পড়লে অনেকে মানসিক চাপ সহ্য করতে পারেন না এবং অসুস্থবোধ করেন। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী ফুলপরী যে ধরণের নির্যাতনের শিকার হয়েছেন, সেই খবর পড়লে কেউ কি আর সুস্থ থাকতে পারেন? তাহলে কি খবরটি প্রকাশ না করাই ঠিক হতো? এমনিতেই এরকম জঘন্য অপরাধ যাঁরা করেছেন বলে অভিযোগ, তাঁরা রাজনৈতিক পরিচয়ের কারণে দিনের পর দিন পার পেয়ে এসেছেন এবং সম্ভবত সে কারণেই আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন চোখ বন্ধ রেখেছে। এখন খবর প্রকাশের পর অন্তত অভিযুক্তরা, তাদের সংগঠন ও রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকদের পরিচয় প্রকাশ পেয়েছে এবং তাঁরা নিন্দিত হচ্ছেন। ইংরেজিতে একে নেমিং এন্ড শেমিং বলা হয়। আইনের শাসন ব্যর্থ হলে সমাজে নিপীড়কদের থেকে মানুষ যাতে আত্মরক্ষা করতে পারে, সে কারণে নেমিং এন্ড শেমিং তখন অনেক গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। যদিও তা বির্তকের উর্ধ্বে নয়। 


ফুলপরীর নিপীড়নের ঘটনা কোনো বিচ্ছিন্ন বা ব্যতিক্রম নয়। প্রতিদিন সংবাদপত্র খুললে একাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কোনো না কোনো অঘটনের খবর চোখে পড়বেই। গত কয়েক সপ্তাহের মাত্র কয়েকটি শিরোনাম স্মরণ করুন: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র অধিকার পরিষদের অনুষ্ঠানে হামলা, ইডেন কলেজে ছাত্রীকে ক্রিকেটের স্ট্যাম্প দিয়ে পেটানো, রাজশাহী কলেজে দলীয় কর্মসূচিতে না যাওয়ায় ছাত্র নির্যাতন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে দুজন ছাত্রীর যৌন নিপীড়ণের অভিযোগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ত্রিমূখী সংঘর্ষ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে দলীয় কর্মসূচিতে না যাওয়ায় মারধরের অভিযোগ, একই বিশ্ববিদ্যালয়ে তার কয়েকদিন আগে  সংঘর্ষ ও গোলাগুলিতে প্রক্টরসহ আহত ১০ জন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ফুটবল খেলায় হার না মেনে প্রতিপক্ষের ওপর হামলা। তালিকাটা আরও লম্বা করা যায়।  কিন্তু সেটার প্রয়োজন আছে বলে মনে হয় না। র‍্যাগিং নামক আরেক ধরণের নির্যাতনের খবরগুলোর কথা তো এখানে উল্লেখই করা হয়নি। এ সব ঘটনায় অভিযুক্তরা ছাত্রলীগের নেতা–কর্মী। খবরগুলো সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ না পেলে অভিভাবকরা জানবেন কীভাবে তাঁদের সন্তানরা উচ্চশিক্ষার জন্য কী দু:সহ যন্ত্রণা ও কষ্ট স্বীকার করছে? 


স্টুডেন্টস অ্যাগেইনস্ট টর্চার (স্যাট) নামের একটি সংগঠন মঙ্গলবার একটি পরিসংখ্যান প্রকাশ করে জানিয়েছে যে শুধু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েই গত বছর ২০টি ঘটনায় ২৭জন শিক্ষার্থী শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। পত্রপত্রিকা ও ভুক্তভোগীদের বর্ণনার ভিত্তিতে তৈরি পরিসংখ্যানে ২০২২ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন হলে কবে অঘটন ঘটেছে, তার কোনো প্রতিকার মিলেছে কিনা, তার নির্দিষ্ট বিবরণ তুলে ধরা হয়েছে।  দেখা যাচ্ছে,  বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন প্রশাসনিক ব্যবস্থা নিয়েছে মাত্র  চারটি ঘটনায় । একই বছর ২৬ শিক্ষার্থীকে হল থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। এসব নির্যাতনের অভিযোগ ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে। তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এ কে এম গোলাম রব্বানী স্যাটের এ প্রতিবেদনের উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বলে প্রথম আলোতেই খবর প্রকাশিত হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টরের বিরুদ্ধে ক্ষমতাসীন ছাত্রলীগের অপরাধীদের প্রশ্রয় দেওয়ার অভিযোগ এর আগেও একাধিকবার উঠেছে। কিন্তু তাতে তাঁর কাজকর্মে কোনো পরিবর্তন ঘটে নি।


কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী হলে শিক্ষার্থী  ফুলপরীর নির্যাতনের ঘটনা তদন্তের জন্য হাইকোর্টের নির্দেশে গঠিত তদন্ত কমিটি ছাত্রলীগ নেত্রী তাবাসসুমের অপরাধের প্রমাণ পাওয়ার কথা জানিয়ে আদালতে প্রতিবেদন দিয়েছে এবং গত মঙ্গলবার আদালতের নির্দেশেই তা প্রকাশিত হয়েছে। তিন সদস্যের সেই তদন্ত কমিটির হলের প্রভোস্ট শামসুল আলম, হাউস টিউটর মৌমিতা আক্তার, ইশরাত জাহানসহ কয়েকজনের দায়িত্বে চরম অবহেলা পেয়েছে। ভুক্তভোগী ফুলপরীকে প্রভোস্ট শামসুল আলম বরাবর মুচলেখা দিতে বাধ্য করা হয় বলেও তদন্তে উঠে এসেছে। তাঁরা আরো বলেছেন প্রক্টর শাহাদাত হোসেনের কর্মকাণ্ড উদাসীন ও দায়সারা গোছের। শারীরিক নির্যাতন, বিশেষ করে যৌন হেনস্থা (বিবস্ত্র করে নির্যাতন) গুরুতর ফৌজদারি অপরাধ হলেও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অপরাধীদের বিরুদ্ধে কোনো মামলাও করে নি।


এর আগে রাজশাহী কলেজের বেলায় খবর হয়োছিল, ছাত্রলীগের মারধরের ঘটনার মীমাংসা করে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ এবং ছাত্রলীগ আর তাদের সংগঠনের কর্মসূচিতে অংশ নিতে জবরদস্তি না করার আশ্বাস দিয়েছে। তবে অপরাধের কোনো শাস্তির কথা জানা গেল না। ইডেন কলেজেও নির্যাতিত ছাত্রীর আবাসিক হলে আসনের ব্যবস্থা করার কথা জানানো হলেও নির্যাতনকারী ছাত্রলীগ নেত্রীর অপরাধের কী সাজা হলো, তা কেউ জানে না। মূল দল আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে ওই অভিযুক্ত নেত্রীর ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘুরতে দেখে বোঝা যায় যে তাঁর সাজা পাওয়ার সম্ভাবনা শূণ্য। 


অভিধান বলছে, প্রক্টর হলেন শিক্ষার্থীদের দেখাশোনা বা তদারকির দায়িত্ব পালনকারী। মেরিয়াম ওয়েবস্টারের অভিধানে বলা হচ্ছে, ব্রিটেনে প্রক্টরের কাজ হচ্ছে রাতের বেলায় রাস্তায় টহল দেওয়া এবং কোনো ছাত্র কোনো অনৈতিক কাজে জড়িয়ে পড়ছে কিনা, তা দেখা। সাধারণ ছাত্র–ছাত্রীদের মারধর করা, গেস্টরুম করানো, চাঁদাবাজি, যৌন হেনস্থা ও নির্যাতনের মতো বিষয়গুলোকে বর্তমান প্রক্টররা সম্ভবত নৈতিক বলেই গণ্য করেন। না হলে তাঁরা অপরাধীদের রক্ষক বা প্রটেক্টরের ভূমিকা কেন নেবেন?  ক্ষমতাসীন দলের একচ্ছত্র আধিপত্যের নতুন বাস্তবতায় প্রক্টর পদটির নাম বদলে ছাত্রলীগ’স প্রটেক্টর করাই বোধহয় শ্রেয়। 


প্রশ্ন উঠতে পারে প্রক্টরদের ওপরে তো বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক প্রধান উপাচার্য রয়েছেন, সেই উপাচার্যরা কি কিছু করতে পারেন না? তাঁদের নিয়োগটাও যে রাজনৈতিক আনুগত্যের পুরষ্কার, শুধু সে কথাটা বিস্মৃত হলেই এমন প্রশ্ন করা সম্ভব। আমরা তো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েই দেখেছি ছাত্রলীগ ছাড়া অন্যান্য ছাত্র সংগঠনের ছেলেমেয়েরা উপাচার্যের কাছে দাবিদাওয়া নিয়ে ঘেরাও করতে গেলে তিনি নিরাপত্তাহীন বোধ করছিলেন এবং নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য ছাত্রলীগকে ডেকেছেন। অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের চিত্র ভিন্ন কিছু নয়। উচ্চশিক্ষার প্রতিষ্ঠানগুলোয় এখন যে নৈরাজ্যজনক অবস্থা দেখা যাচ্ছে, তা এসবেরই ধারাবাহিকতার পরিণতি। দূর্ভাগ্যজনক সত্য হচ্ছে, এতটা নৈরাজ্য অতীতে কখনোই দেখা যায়নি, তা সে সামরিক শাসনের সময় হোক, কিংবা কথিত গণতন্ত্রে প্রত্যাবর্তনের পরই হোক।


বিরোধী দলকে দমনপীড়নের মাধ্যমে কোণঠাসা করে জাতীয় রাজনীতিতে যেভাবে ভারসাম্যহীনতা তৈরি করা হয়েছে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর বেলায়ও সেটাই ঘটেছে। সব জায়গায় ক্ষমতাসীনদের একাধিপত্য। গণতন্ত্রে এরকম পরিস্থিতি হলে শিক্ষামন্ত্রী পদত্যাগ না করলে বরখাস্ত হতেন। জাতীয় পরিসরে যেমন ভোটারবিহীন নির্বাচন বা বিনা প্রতিদ্বন্দিতার সংস্কৃতির প্রসার ঘটেছে, ঠিক তেমনি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্র সংসদ ছাড়াই ছাত্রলীগের একক নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা পেয়েছে। এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেতে ছাত্র অন্যান্য সংগঠনগুলোর যেমন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে জোরেশোরে আত্মপ্রকাশ করতে হবে, তেমনি  জাতীয় রাজনীতিতেও  অবস্থার পরিবর্তন প্রয়োজন হবে। 


আরও হতাশার কথা হচ্ছে নাগরিক সমাজের নির্লিপ্ত মনোভাব। সব আশা ছেড়ে দিয়ে বর্তমান পরিস্থিতিকে ভাগ্য হিসাবে মেনে নেওয়ার প্রবণতা। অতীতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ক্ষমতাসীনদের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছাত্রসংগঠনের অপরাধের বিরুদ্ধে অন্তত জোরালো নাগরিক প্রতিবাদ দেখা যেত, সংস্কৃতিকর্মী, পেশাজীবি সংগঠনগুলো রাস্তায় নামতো। অথচ এখন সময়টা কি এতই বন্ধ্যা যে নির্যাতনের দায়ে অভিযুক্তরাই নির্যাতনবিরোধী পদযাত্রা আয়োজনের মাধ্যমে সবাইকে উপহাস করে? ১৯৭৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের যারা প্রতিদ্বন্দ্বী গোষ্ঠীর সাতজনকে আগের রাতে খুন করেছিল, তারাই সূর্যোদয়ের পর সাতখুনের বিচার দাবি করে মিছিল করেছিল। ফুলপরীকে ছাত্রলীগের তদন্ত কমিটিতে ডাকার খবরটি পড়ার পর থেকে আমি উপহাস কথাটার অর্থ খুঁজছি। অভিধানে এর যুতসই অর্থ খুঁজে পাচ্ছি না।  


(২ মার্চ, ২০২৩–এর প্রথম আলো পত্রিকায় প্রকাশিত।)


মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

Bangladesh is vexed by and wary of Modi’s unstinting support to Sheikh Hasina

In the run-up to Bangladesh’s general election in January 2014, New Delhi took the unusual step of sending a top diplomat from its external affairs ministry to Dhaka to persuade General Hussain Muhammaed Ershad, the country’s former military ruler, to participate in the polls. Big questions had been raised over the fairness of the election. The incumbent government was led by Sheikh Hasina’s Awami League, and the leader of the opposition Bangladesh Nationalist Party (BNP) had been placed under virtual house arrest, with police and roadblocks around her house in Dhaka. The BNP and other opposition parties were threatening to boycott the election. Ershad, the head of the Jatiya Party, was perceived as a potential kingmaker, able to bring to power whichever of Bangladesh’s two main parties he supported, but he was also threatening to withdraw from the election.  After a decade of Modi’s reign in India, people in Bangladesh are angry at their government cosying up to a Hindutva regime ...

অরাজনৈতিক আন্দোলনের করুণ রাজনৈতিক মূল্য

কোটা সংস্কারের দাবিতে সাধারণ ছাত্র–ছাত্রীদের আন্দোলনে  কদিন ধরে যা ঘটে চলেছে, তা যেমন বেদনাদায়ক, তেমনই নিন্দনীয় ও ক্ষোভের কারণ। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের শিক্ষা দিতে ক্ষমতাসীন সরকারের সমর্থক এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীর হাতে একইদিনে দেশের তিন জায়গায় ছয়জনের প্রাণহানির ঘটনা স্বাধীন বাংলাদেশে বিরল।  এবার আরও যেসব ঘটনা আমাদের স্তম্ভিত করেছে, অভিভাবকদের চোখ অশ্রুসিক্ত করেছে, এসব মৃত্যুর পরও সরকারের রাজনৈতিক দম্ভ বজায় রাখার চেষ্টা, যা আরও প্রাণহানির কারণ হয়েছে। ছয়জন তরুণের প্রাণ বিসর্জনের পরও কোটা সংস্কারের দাবিতে সরকার ”নীতিগতভাবে একমত” – একথাটি বলে  আলোচনায় না ডেকে সময়ক্ষেপণ করেছে। আইনমন্ত্রী কথাটি যখন বললেন, তার আগেই আরও জীবন গেল, শত শত মানুষ আহত হলো, দেশের সম্পদ নষ্ট হলো। রাজনৈতিক গরিমা ছাড়া এর আর কোনো কারণ আছে কি? ছাত্রলীগ পরিচয়ে অন্ত্রধারীদের তান্ডব, পুলিশের চরম নিষ্ঠুরতা এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ছাত্রীদের গড়পরতা মারধর ও লাঞ্চিত করার যে দৃশ্যগুলো গণমাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে, তা কোনো অভিভাবকের পক্ষেই ভোলা সম্ভব নয়। এসব ঘটনার বিবরণ উদ্ধৃত না করে শুধু নিষ্ঠুর ...

আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বে স্বৈরশাসকের ফেরা সহজ

  গণতন্ত্রে উত্তরণে ব্যর্থতা ও স্বৈরতন্ত্রের নিকৃষ্টতম রুপ প্রত্যক্ষ করার পর অর্ন্তবর্তী সরকারের মেয়াদকালে যে সব বিষয়ে সংস্কারের আলোপ চলছে, তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে নির্বাচনব্যবস্থা। এরশাদের সামরিক স্বৈরাচারের পতনের পর নির্বাচনকে গণতন্ত্র চর্চার মাধ্যম হিসাবে যেভাবে প্রতিষ্ঠার কথা ছিল, তা থেকে প্রধান দুই দলই বিচ্যূত হয়েছিল। পরিণতিতে নির্বাচন শুধু ক্ষমতা দখলের হিংসাত্মক খেলায় পরিণত হয় এবং শেষ পর্যন্ত শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ সাধারণ মানুষের ভোটের অধিকার হরণ করে নির্বাচনকে নানা রকম প্রহসনে পরিণত করে।  এই সমস্যার এক অতি সরলীকৃত সমাধান হিসাবে বলা হচ্ছে, দ্বিদলীয় রাজনীতির বৃত্ত থেকে বেরিয়ে দেশে সত্যিকার বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে। আর বহুদলীয় গণতন্ত্রের জন্য নির্বাচনব্যবস্থায় আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বের ধারণাকে একমাত্র বা চূড়ান্ত সমাধান হিসাবে তুলে ধরা হচ্ছে।  সংখ্যানুপাতিক বা আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতির নির্বাচনে একটি দল যত শতাংশ ভোট পাবে, সে অনুপাতে তারা সংসদের আসন পাবে। এ আনুপাতিক পদ্ধতিতে প্রার্থীদের নাম দল আগাম ঘোষণা করতেও পারে, আবার না–ও পারে। নাম প্রকাশ করা হলে সেটা হব...