সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

২০১৪ ও ২০১৮ মডেল, ভোটাধিকার এবং সংলাপ

আগামী নির্বাচনকে ঘিরে রাজনীতিতে এখন ধীরে ধীরে উত্তাপ– উত্তেজনা বাড়ছে। দেশ–বিদেশে সবার কৌতুহলও বাড়ছে। বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে বিশ্বের শক্তিধর রাষ্ট্রগুলোর মধ্যেও যেন একধরণের মেরুকরণ দেখা যাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা গণতান্ত্রিক দেশগুলোর পক্ষ থেকে সুষ্ঠু,অবাধ ও  গণতান্ত্রিক নির্বাচনের তাগিদকে রাশিয়া, চীন এবং ইরান অন্য দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ হিসাবে অভিহিত করেছে। এমনকি, ইউক্রেন দখলে সামরিক অভিযান পরিচালনাকারী রাশিয়া একে ’নয়া–উপনিবেশবাদী’ হস্তক্ষেপ বলতেও সঙ্কোচ বোধ করে নি। 


ভারত যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকার বিষয়ে প্রকাশ্যে কিছু না বললেও বাংলাদেশে স্থিতিশীলতা তাদের জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ, তা স্পষ্ট করেই জানিয়েছে। রাজনীতিতে যে স্থায়ী কোনো শত্রু–মিত্র নেই, তার একটি নজির বাংলাদেশ সম্পর্কে এসব দেশের অবস্থান। ভারত এবং চীন ভূ–রাজনৈতিক লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য সাধনে বিপরীত অবস্থানে থাকলেও বাংলাদেশে কথিত স্থিতিশীলতার প্রশ্নে তাদের অবস্থান অভিন্ন। ২০১৪ সালে বিনা প্রতিদ্বন্দিতার নির্বাচনে জেনারেল এরশাদকে অংশ নেওয়ানোয় সরাসরি ভূমিকা গ্রহণ ছাড়াও সবার আগে তারাই প্রধানমন্ত্রীকে তাঁর সাফল্যের জন্য অভিনন্দন জানানোয় এগিয়ে ছিল। ২০১৮ সালে রাতের ভোটের বিতর্কে যখন অন্যরা প্রশ্ন তুলছিল, তখন চীন সবার আগে প্রধানমন্ত্রীকে তৃতীয় মেয়াদের জন্য অভিনন্দিত করে। 


অনেকের ধারণা, ভূ–রাজনীতির সমীকরণে ভারত ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে  চীনের প্রভাব নিয়ন্ত্রণে  যুক্তরাষ্ট্র তার গুরুত্বপূর্ণ মিত্র ভারতের স্বার্থ উপেক্ষা করতে পারবে না। তাঁদের মতে, আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার প্রশ্নে যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের অবস্থান অভিন্ন। ’আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা’র অর্থ বাংলাদেশের সরকারের ধারাবাহিকতা রক্ষা যাঁরা মনে করেন, তাঁদের সমীকরণ ঠিক হলে ক্ষমতাসীন সরকার ও আওয়ামী লীগের উদ্বেগের কিছু নেই। কিন্তু সরকার ও ক্ষমতাসীন দল উভয়ের প্রতিক্রিয়ায় যে রকম অস্থিরতা দেখা যাচ্ছে, তাতে ইঙ্গিত মেলে যে তাঁরা বেশ উদ্বিগ্ন। যুক্তরাষ্ট্রের কূটনৈতিক সূত্র স্পষ্ট করেই বলেছে, তারা সাময়িক স্থিতিশীলতার বদলে দীর্ঘমেয়াদী স্থিতিশীলতা চায়, যেটা কেবলমাত্র কার্যকর গণতন্ত্রই নিশ্চিত করতে পারে। বাংলাদেশে গণতন্ত্র ফেরানো তাই তাদের অগ্রাধিকার। সুতরাং, বাংলাদেশে ভারতের স্বার্থ ও যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থ এক নয়। বিপরীতে চীন, রাশিয়া ও ইরানের স্বার্থ আর ভারতের স্বার্থ একই রকম। 


২. 

সরকার ও আওয়ামী লীগে উদ্বেগ–অস্থিরতা না থাকলে তাঁদের বক্তব্য–বিবৃতি মোটামুটি একই রকম হতো। কিন্তু, সাম্প্রতিক সময়ে শীর্ষস্থানীয় মন্ত্রী ও নেতাদের বক্তব্যগুলো একেকজনের একেক রকম। নির্বাচনকে গ্রহণযোগ্য করতে যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমাদের চাপ সম্পর্কে একবার বলা হচ্ছে, চাপ সরকারের ওপর নয়, বিএনপির ওপর; যাতে তারা নির্বাচনে অংশ নেয়। কিন্তু পাশ্চাত্যের ওই চাপকে ইঙ্গিত করেই আবার বলা হয়েছে, নির্বাচন বানচাল করতে বিদেশিরা ষড়যন্ত্র করছে। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আওয়ামী লীগের আমলে সব নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে। সাম্প্রতিক সিটি করপোরেশন নির্বাচনগুলোর দৃষ্টান্তও তিনি টেনেছেন। কিন্তু দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য তিনিই আবার বলেছেন, এবারের নির্বাচন সহজ হবে না। মন্ত্রীদেরও অনেকে খোলাখুলি বলেছেন, আগের মতো নির্বাচন এবার হবে না।  


পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেছেন, “২০১৪ ও ২০১৮ মডেল হতে পারে না।” নির্দলীয় সরকার না হলে বিএনপি নির্বাচনে যাবে না বলায় আগামী নির্বাচন কেমন হবে, ২০১৪ সালের মতো, নাকি ২০১৮ সালের মতো - এ প্রশ্নের জবাবেই তিনি ওই মন্তব্য করেছেন। ১৪–দলীয় জোটের অন্যতম শরীক সাম্যবাদী দলের নেতা দিলীপ বড়ুয়া ডয়চে ভেলেকে বলেছেন, গণতান্ত্রিক নির্বাচন যেমন হওয়ার কথা, ২০১৮তে তা হয় নি; কিন্তু তাঁরা জোটে আছেন শুধু সাম্প্রদায়িক শক্তির উত্থান ঠেকাতে। জোটের আরেক নেতা ওয়ার্কাস পার্টির রাশেদ খান মেনন কয়েক বছর আগেইসংসদেই বলেছেন, ভোটাররা ভোাট দেওয়ার সুযোগ পায়নি, কিন্তু তাঁরা নির্বাচিত হয়েছেন। জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হকও ২০১৪ সালে কীভাবে তাঁদের নির্বাচিত ঘোষণা করা হয়েছে এবং ২০১৮ সালে রাতেই ভোটের বাক্স ভরার কথা সংসদে বলেছেন। 


প্রশ্ন হচ্ছে, ২০১৪ ও ২০১৮ সালের মডেল চলতে পারে না, যদি সত্যিই সরকার ও ক্ষমতাসীন দলের উপলব্ধি হয়, তাহলে তো  বিএনপি ও তার নেতৃত্বাধীন জোটের ভোটাধিকার ফিরে পাওয়ার এক দফায় আপত্তির কিছু থাকে না। বিএনপি নির্বাচনের বিরুদ্ধে হলে ভোটাধিকারের কথা কেন বলবে? বিনা বাধায় ও নির্ভয়ে স্বাধীনভাবে জনপ্রতিনিধি নির্বাচনে ভোট দানের অধিকার ফিরে পেতে মানুষ যে উন্মুখ হয়ে আছে, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। প্রকৃত ভোটের মাধ্যমে যদি আওয়ামী লীগ পুননির্বাচিত হয়, তাহলে নিশ্চয়ই তারা দাবি করতে পারবে যে দেশের মানুষ গত দুটি নির্বাচনের ভোটাধিকার হরণকে ক্ষমা করে দিয়ে তাদের উন্নয়নের মডেলকেই গ্রহণ করেছে। আর সরকার বদল হলে বর্তমান বিরোধীদের পরীক্ষা দিতে হবে যে তাঁরা বদলেছেন এবং রাজনীতিতে তাঁরা গুণগত পরিবর্তন আনতে সক্ষম। না হলে ভোটাররাই আবার তাদের শিক্ষা দেবে।  


দেশে যে সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন অনুষ্ঠানের কোনো ব্যবস্থা নেই, সেটা মোটামুটি দেশে–বিদেশে সবার কাছেই পরিষ্কার। না হলে যুক্তরাষ্ট্র যেমন নির্বাচনকে সুষ্ঠূ, অবাধ ও গণতান্ত্রিক মানদন্ড অনুযায়ী করার ওপর এতটা জোর দিত না, ইউরোপীয়রাও বলত না যে তারা পর্যবেক্ষক পাঠাবে তখনই যখন নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক ও প্রতিদ্বন্দিতাপূর্ণ হবে। প্রশ্ন হলো, সবার ভোটাধিকার ফেরানোর পথ কী ও তা কীভাবে তৈরি হবে? 


২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচন হয়েছে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী অনুসরণ করে দলীয় সরকারের অর্ধীনে। আইন বিষয়ে বিশেষজ্ঞরা এখন বিশ্বে যেসব দেশে ’অসাংবিধানিক সংবিধান সংশোধনে’র নজির তুলে ধরেন, তার মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম এবং তা ওই পঞ্চদশ সংশোধনী। এ ব্যবস্থার অকার্যকারিতা প্রমাণে দেশের মানুষ ও সরকারবিরোধীদের যে চড়া মূল্য দিতে হয়েছে, তার প্রাপ্তি হচ্ছে কর্তৃত্ববাদের উত্থান। একমাত্র নির্বাচন কমিশন গঠনের একটি একতরফা আইন ছাড়া আগের অবস্থার সঙ্গে বর্তমানের কোনো ফারাক নেই। 


দলীয় সরকারের সুবিধাভোগীদের নিয়ে গঠিত নির্বাচন কমিশন, রাজনৈতিকভাবে অনুগত প্রশাসন, আইন–শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং নির্বাহী বিভাগের সঙ্গে সমন্বয় করে চলা বিচারবিভাগ, সবই বহাল আছে। এগুলো অপরিবর্তিত থাকলে ভোটাধিকার ফেরানোর কথা বলা হলেও নির্ভয়ে ও স্বাধীনভাবে ভোট দেওয়ার আশা পূরণের কোনো কারণ নেই। ভোট দিতে পারলেও তা যে গোনায় ধরা হবে, বিরোধ হলে যে নির্বাচন কমিশন কিম্বা কমিশন ব্যর্থ হলে আদালত পক্ষপাতহীন ও বস্তুনিষ্ঠভাবে তার ন্যয্য সমাধান করবে, তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। 


৪. 

নাগরিক সমাজের অনেকে ও বিদেশিরা আলোচনার মাধ্যমে একটা গ্রহণযোগ্য সমাধান খুঁজে পাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে। আওয়ামী লীগ বলেছে, নির্বাচনে অংশগ্রহণে রাজি থাকলে বিএনপির সঙ্গে সংলাপ হতে পারে। আর বিএনপি বলেছে, সরকার পদত্যাগে রাজি হলেই সংলাপ হতে পারে। উভয় দলের বর্তমান যে অবস্থান, তাতে দ্বিদলীয় সংলাপের আপাতত কোনো সম্ভাবনা নেই। তা ছাড়া, দুই দলের সংলাপের অতীত অভিজ্ঞতা মোটেও সুখকর নয়। যদিও উভয় দলেরই বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠান রিপাবলিকান ইনিস্টিটিউটের ব্যবস্থাপনায় গণতন্ত্রবিষয়ক প্রশিক্ষণ ও আলোচনায় যে কতবার একত্রিত হয়েছেন, তার হিসাব রাখা মুশকিল।  


অবশ্য বিপরীত অভিজ্ঞতাও আমাদের রয়েছে । এ পর্যন্ত যতবার যত রাজনৈতিক সংকটের সমাধান হয়েছে, তার সবই হয়েছে আলোচনা ও সমঝোতার মাধ্যমে। ওইসব আলোচনা ছিল বহুপক্ষীয় অথবা সর্বদলীয়। স্বাধীনতালাভের আগে এধরনের সর্বদলীয় সম্মেলনে রাজনীতিকেরা যথেষ্ট আন্তরিকতার সঙ্গেই সমাধান খুঁজতেন। আর স্বাধীন বাংলাদেশেও আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিক বৈঠকেই তৈরি হয়েছে যৌথ ঘোষণা। আওয়ামী লীগ ও বিএনপির বৈরী সম্পর্কের মধ্যেই প্রয়াত সাংবাদিক ফয়েজ আহমেদ শেখ হাসিনা ও খালেদা জিয়ার মধ্যে বৈঠক আয়োজনে সক্ষম হয়েছিলেন। ১৯৯০ সালের ডিসেম্বরে কথিত লিয়াজোঁ কমিটিতেই জেনারেল এরশাদকে অপসারণের পথ ঠিক হয়েছিল। সংসদীয় পদ্ধতির সরকার এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি নিয়ে সংসদের ভেতরে জামায়াতে ইসলামীর নেতাদের নিয়ে বিরোধীদের সম্মিলিত কর্মসূচি তৈরি হয়েছিল। সমাধানগুলোও যে আইনের মধ্যে হয়েছিল, তা–ও নয়। 


সমঝোতার ভিত্তিতে অর্জিত সমাধানকে সবাই মিলে ঘটনা–উত্তর ( পোস্টফ্যাক্টো) বৈধতা দিয়েছে। সংবিধানে ১৭টি সংশোধনীর অন্তত তিনটি সংশোধনী এভাবে হতে পারলে ভোাটের অধিকার ফেরাতে তা হতে পারবে না কেন?  


(১৩ জুলাই, ২০২৩–এর প্রথম আলো পত্রিকায় প্রকাশিত।)

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

Bangladesh is vexed by and wary of Modi’s unstinting support to Sheikh Hasina

In the run-up to Bangladesh’s general election in January 2014, New Delhi took the unusual step of sending a top diplomat from its external affairs ministry to Dhaka to persuade General Hussain Muhammaed Ershad, the country’s former military ruler, to participate in the polls. Big questions had been raised over the fairness of the election. The incumbent government was led by Sheikh Hasina’s Awami League, and the leader of the opposition Bangladesh Nationalist Party (BNP) had been placed under virtual house arrest, with police and roadblocks around her house in Dhaka. The BNP and other opposition parties were threatening to boycott the election. Ershad, the head of the Jatiya Party, was perceived as a potential kingmaker, able to bring to power whichever of Bangladesh’s two main parties he supported, but he was also threatening to withdraw from the election.  After a decade of Modi’s reign in India, people in Bangladesh are angry at their government cosying up to a Hindutva regime in N

একটি জরিপ, নৈরাশ্য ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রশ্ন

উন্নত গণতন্ত্রে সরকার , সরকারপ্রধান, ক্ষমতাসীন ও বিরোধী দল এবং বিভিন্ন বিতর্কিত ইস্যুতে প্রায়ই জনমত জরিপ করে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। কখনো বিশ্ববিদ্যালয়, কখনো সংবাদমাধ্যম, আবার কখনো বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এসব জরিপ করায়। বেশ কিছু পেশাদার জরিপকারী প্রতিষ্ঠানও আছে, যারা শুধু জরিপের কাজ করে। এসব জরিপ আমাদের গণমাধ্যমগুলোর অনলাইন ভোটের মতো নয়, যা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই শুধু সেই ওয়েবসাইটের নিয়মিত ব্যবহারকারীদের মতামত ছাড়া আর কিছুই নয়। আমাদের দেশে গণতন্ত্রে প্রত্যাবর্তনের প্রায় দুই দশক বার্ষিক জরিপে রাজনীতির গতিপ্রকৃতির চমৎকার প্রতিফলন দেখা যেত। কিন্তু গণতন্ত্রের ক্ষয়সাধনের সঙ্গে সঙ্গে সেই চর্চা প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। ব্যবসায়িক প্রয়োজন ছাড়া অন্য কোনো বিষয়ে জরিপ করতে গেলে সরকারের সায় আছে কিনা সেটা দেখা হয়, নইলে পেশাদার বিশেষজ্ঞরা বা তাঁদের প্রতিষ্ঠানগুলো ওই দায়িত্ব নিতে চান না। কথা বলার ভয়ের মতো মতামত জানতে চাওয়াতেও এক ধরনের ভয়ের আসর পড়েছে। গণতন্ত্র প্রসারে কাজ করা যুক্তরাষ্ট্রের বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনস্টিটিউট, আইআরআই এ ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম। তারা এখনো মাঝে মধ্যে স্পর্শকাতর রাজন

ভিসা নিষেধাজ্ঞা গুরুতর, সাংবাদিক নির্যাতন কী

একই দিনের দুটি সংবাদ শিরোনাম, ’৯ মাসে ২১৭ সাংবাদিক নির্যাতন ও হয়রানির শিকার: আইন ও সালিশ কেন্দ্র’ এবং ’পিটার হাসের বক্তব্য স্বাধীন সাংবাদিকতার ওপর চাপ, সমাবেশে সাংবাদিকনেতারা’। দুটো খবরই সাংবাদিকতা এবং সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার বিষয়ে। তবে একটি খবর, যাতে আছে সেই সব সাংবাদিকদের কথা, যাঁরা পেশাগত দায়িত্ব পালনের জন্য আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে শারীরিক ক্ষতি অথবা গ্রেপ্তার ও মামলার কারণে হয়রানির শিকার হয়েছেন; আর অন্যটিতে ভবিষ্যতে কোনো গণমাধ্যমকর্মী যুক্তরাষ্ট্র যেতে চাইলে ভিসা না পাওয়ার কারণে তিনি বা তাঁর যে সম্ভাব্য ক্ষতি হতে পারে, তা নিয়ে আশঙ্কা। সাংবাদিকদের নিপীড়ন–নির্যাতন ও হয়রানির বিষয়ে গবেষণার কাজ ও তা প্রকাশের দায়িত্ব পালন করেছে একটি মানবাধিকার সংগঠন। অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের ভিসার দুশ্চিন্তায় প্রতিবাদী হয়েছেন সাংবাদিকদের অপেক্ষাকৃত নতুন একটি প্লাটফর্ম জাস্টিস ফর জার্নালিস্ট।  বেসরকারি মানবাধিকার সংগঠনগুলোর নিয়মিত কাজের একটি হচ্ছে বিভিন্ন নিপীড়ন–নির্যাতন ও হয়রানির মত অধিকার লংঘনের তথ্য সংগ্রহ করা এবং তারই অংশ হিসাবে অন্যতম ঝুঁকিপূর্ণ পেশা সাংবাদিকতার ওপর তাদের আলাদা মনোযোগ। তাদের প্রকাশিত হিসাব