সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

বাজেটের রাজনৈতিক পাঠ ও হতাশাময় এক জরিপ

৭ জুনের দৈনিক পত্রিকাগুলো দেখলে কারও বিশ্বাসই হবে না যে রাজনৈতিক অসহিষ্ণূতা ও বৈরি পরিবেশের কারণে আমাদের খবরের কাগজগুলো কার্টুনকে নির্বাসনে পাঠাতে বাধ্য হয়েছে। সেদিন যেন সবাই হঠাৎ করেই একটা উপলক্ষ পেয়েছিল, যাকে ঘিরে নিশ্চিন্তে কার্টুন ছাপা যায়। প্রথম সারির প্রায় সব দৈনিকে প্রথম পাতায় সেদিন বাজেট ও অর্থমন্ত্রীকে নিয়ে বিচিত্র রকমের সব কার্টুন ছাপা হয়েছে। অবশ্য অর্থমন্ত্রী মাহমুদ আলীকে ছাড়াও জনগোষ্ঠীর বিভিন্ন অংশের ওপর বাজেটের প্রভাব কেমন হবে, তা তুলে ধরার চেষ্টাও এতে ছিল। 


কার্টুনের মতোই আর যে বিষয়ের প্রাচূর্য্য চোখে পড়ে, তা হলো বাজেটের পক্ষে–বিপক্ষের প্রতিক্রিয়া ও বিশ্লেষণ। এসব আলোচনার একটা ভালো দিক হলো সরকারের অর্থনৈতিক অগ্রাধিকার এবং তার সুবিধাভোগীদের সম্পর্কে অনেক কিছুই সাধারণ মানুষ জানতে পারছে। এসব কথা যে একেবারে অজানা ছিল, তা–ও নয়। তবে বাজেটের ভালো–মন্দ এবং নিত্যদিনের জীবনযাত্রায় তার প্রভাবের সঙ্গে যখন এর সম্পর্ক টানা হয়, তখন তা আলাদা গুরুত্ব বহন করে। কিন্তু অর্থনীতির এ আলোচনায় অধিকাংশ সময়েই রাজনৈতিক বিবেচনার বিষয়গুলো অনুচ্চারিত থাকে, যার ফলে রাজনীতির সংকট আড়ালেই থেকে যায় এবং সংকটের স্থায়িত্ব বাড়ে। 


আগামী অর্থবছরের জন্য যে বাজেট প্রস্তাব সংসদে পেশ করা হয়েছে, তার মূল্যায়নে অর্থনীতিবিদদের অধিকাংশের বক্তব্য হচ্ছে এতে অন্যায্যতা প্রকট। ঋণখেলাপি, বিদেশে অর্থ পাচারকারী, রাষ্ট্রের কাছ থেকে বিশেষ সুবিধাভোগীরা (যেমন বেসরকারি বিদ্যূৎ উৎপাদনে ক্যাপাসিটি চার্জের নামে ভর্তুকিভোগী) লাভবান হবেন, কিন্তু সাধারণ মানুষের কষ্ট বাড়বে। সাধারণ মানুষের কষ্ট প্রত্যক্ষ করের জন্য যতটা বাড়বে, তার চেয়ে বেশি বাড়বে পরোক্ষ করের জন্য। বৈপরীত্যটা সহজে বোঝার নজির হলো কালোটাকা (অপ্রদর্শিত আয়) ঘোষণা দিয়ে সাদা (বৈধ ) করা যাবে মাত্র ১৫ শতাংশ হারে কর দিয়ে, কিন্তু যাঁরা তাঁদের বাঁধা আয়ের ওপর নিয়মিত কর দেন, সেসব সৎ করদাতাকেও মোবাইল ফোনের মতো যেকোনো কিছু উপহার পেলে তার জন্য কর দিতে হবে। 


দেশে আইন প্রয়োগের কাজে শীর্ষপদে ছিরেন যে পুলিশ কর্তা, সেই বেনজীর আহমেদ তাঁর কন্যাদ্বয়ের জন্য উপহার হিসাবে ফ্লাট কিনলে তাঁকে কোনো ’উপহার কর’ দিতে হয়নি এবং তাঁর অবৈধ উপাজর্ন তিনি এখন ১৫ শতাংশ কর দিয়ে বৈধ করার সুযোগও হয়তো নিতে পারেন। অন্তত: আইনে কোনো বাধা থাকার কথা রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যানও বলতে পারেননি। কিন্তু, সদ্য চাকরিতে ঢোকা কোনো গ্রাজুয়েট তরুণ বা তরুণী বিয়ে করার সময়ে অলংকার বা মোবাইল ফোনের মতো কিছু উপহার পেলে তাদের সেই প্রাপ্তির ওপর কর দিতে হবে। চলচ্চিত্রজগতের মহিরুহ সত্যজিৎ রায়ের দৃশ্যকল্প ‘ভরপেট নাও খাই/ রাজকর দেওয়া চাই  এর বাস্তব রুপায়নে এর চেয়ে আলাদা আর কী হতে পারে? 


রাজনৈতিক লক্ষ্য ও আদর্শের দিক থেকে আওয়ামী লীগের এ অবস্থানের ব্যাখ্যা কী? একটু পরিসংখ্যানের দিকে তাকানো যাক। আওয়ামী লীগ ও তার জোটসঙ্গীরা ছাড়া অন্য সব দলের বর্জনের মধ্যে ৭ জানুয়ারির যে কথিত নির্বাচন, তার প্রার্থীদের হলফনামা বিশ্লেষণ দেখা গেছে, সংসদে ব্যবসায়ীর সংখ্যা অন্তত ১৯৯ জন, যা মোট সংসদ সদস্যের দুই-তৃতীয়াংশ। আবার তাঁদের মধ্যে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রাধান্য মোটামুটি একচেটিয়া। ব্যবসায়ীদের এই প্রাধান্য যে শুধু এবারেই ঘটেছে, তা নয়; এটি ধারাবাহিকভাবে হয়ে আসছে এবং গত সংসদ ও বর্তমান সংসদে তা নতুন রেকর্ড তৈরি করেছে। 


ব্যবসায়ী ছাড়াও সম্পদশালীর হিসাব আ্ররও চমকপ্রদ। কেননা সংসদ সদস্যদের প্রায় ৯০ শতাংশই কোটিপতি। এরপর যদি কেউ আরও নিবিড়ভাবে সংসদ সদস্যদের আর্থিক স্বার্থের বিশ্লেষণ করেন, তাহলে আরও অনেক চমকপ্রদ তথ্য মিলবে। মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানোর ব্যবসা নিয়ন্ত্রণের সিন্ডিকেটে চার সংসদ সদস্যের কথা উল্লেখ করা যায়, যারা শত কোটি কামিয়েছেন বলে অনুমান করা অযৌক্তিক হবে না। সংসদে তৈরি পোশাক রপ্তানিকারকদের প্রাধান্য গত কয়েক সংসদেও ছিল এবং এবারও তার ব্যত্যয় হয়নি। রপ্তানি সহায়তায় নগদ প্রণোদনার নীতিতে তাঁদের সমৃদ্ধি যে বেড়েছে, সে বিষয়েও প্রশ্ন তোলার অবকাশ নেই। আবাসন ব্যবসা, বেসরকারি ব্যাংকের উদ্যোক্তা পরিচালক কিম্বা শেয়ার বাজারের ব্রোকারেজ হাউসের মালিকেরাও সংসদে আছেন, কেউ কেউ মন্ত্রীও হয়েছেন। 

 

ব্যবসা করলে যে সংসদ সদস্য বা মন্ত্রী হওয়া যাবে না, এমন কথা আমরা বলি না। কিন্তু তাঁদের সংখ্যাধিক্য, সরকারি নীতি তৈরিতে দৃশ্যমান ও অনুভূত প্রভাব এবং তার বিপরীতে কৃষক, শ্রমিক বা ক্ষুদ্র পেশাজীবিদের অনুপস্থিতি ও তাদের স্বার্থ ক্ষুণ্ণকারী সিদ্ধান্তের বাহুল্যের কথা নিশ্চয়ই কাউকে স্মরণ করিয়ে দেওয়ার প্রয়োজন নেই। সারা দেশে নাগরিক সমাজ যখন কর প্রস্তাবে অন্যায্যতার প্রশ্নে সরব হয়েছে, তখন কিন্তু সংসদে বাজেট আলোচনায় কালো টাকা সাদা করার সুবিধা সম্প্রসারণের দাবি উঠেছে। এমনকি বারবার ফাটকাবাজি ও কারসাজির জন্য তলানিতে পৌঁছানো শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের জন্যও কালোটাকায় বিশেষ ছাড় চাওয়া হয়েছে।


ব্যবসায়ীরা নীতি প্রণয়নে কীভাবে প্রভাব খাটাচ্ছেন তার একটা ভালো ব্যাখ্যা পাওয়া যায় রাষ্ট্রবিজ্ঞানী রওনক জাহানের কথায়। রওনক জাহান বলেন, ‘রাজনীতি ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে যে যোগসূত্র গড়ে উঠেছে, সেটার সুবিধা নিচ্ছেন কিছু ব্যবসায়ী। রাজনীতি বা সংসদে ব্যবসায়ীরা প্রভাবশালী হওয়ার কারণে তাঁরা নিজেদের সুবিধার জন্য নীতি তৈরি করছেন। ফলে এখন যাঁরা ব্যবসা-বাণিজ্যে সিন্ডিকেট করছেন, কিংবা ব্যাংকে অনিয়ম করছেন বা ব্যাংক দখল করছেন, তাঁদের ধরা যাচ্ছে না। তাঁরা রাজনীতিতে প্রভাবশালী হওয়ার কারণে তাঁদের স্বার্থের বিরুদ্ধে কোনো সংস্কার করা যাচ্ছে না’ (রাষ্ট্রের নীতিনির্ধারণ ব্যবসায়ীদের ’দখলে’, প্রথম আলো, ১০ জানুয়ারি, ২০২৪)। 


আওয়ামী লীগের রাজনীতির এই রুপান্তর অর্থাৎ ব্যবসায়ীদের স্বার্থকে অগ্রাধিকার ও প্রাধান্য দেওয়ার বিষয়টি এক দিনে ঘটেনি। একটানা ১৫ বছর ক্ষমতায় থাকার সময়ে রুপান্তর ত্বরান্বিত হয়েছে। রুপান্তর ক্রমশই প্রকট ও দৃশ্যমান হতে শুরু করে যখন থেকে সাধারণ মানুষের ভোট মূল্যহীন হয়ে পড়েছে। বিনা ভোটের নির্বাচন এবং কথিত রাতের ভোটের পরণতিতে ভোটারদের কাছে রাজনীতিকদের আর কোনো জবাবদিহির প্রয়োজন হচ্ছে না। শুধু ক্ষমতাসীন দলের নেতৃত্বকে তুষ্ট রাখাই এখন সংসদ সদস্যদের কাজ, যারা সরকারের জবাবদিহি চান না, বরং শুধু হ্যা বলার জন্য সংসদে হাজির থাকেন। স্পষ্টতই কার্যকর গণতন্ত্র ফেরানো না গেলে বাজেটের কোনো সমালোচনাই পরিস্থিতির পরিবর্তন ঘটাবে না। অতএব রাজনীতি ঠিক করাকেই অগ্রাধিকার দেওয়া জরুরি। 


এশিয়া ফাউন্ডেশন ও ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্ন্যান্স অ্যান্ড ডেভলপমেন্টের (বিআইজিডি) চলতি বছরের সমীক্ষায় যে ৫৮ শতাংশ মানুষ ‘বাংলাদেশ ভুল পথে এগোচ্ছে’ বলে হতাশা প্রকাশ করেছেন, তাতে বিস্ময়ের কিছু নেই। ২০১৯ সালে নিম্ন আয়ের মানুষের ৮৪ শতাংশ উত্তরদাতা যেখানে বলেছিলেন অর্থনীতি সঠিক পথে রয়েছে, ২০২৪ সালে তা অর্ধেক হয়ে ৪২ শতাংশে নেমেছে। জরিপে দেখা যাচ্ছে,  শুধু নিম্ন আয়ের মানুষের নয়, দেশের সব আয়ভিত্তিক শ্রেণির উত্তরদাতার মধ্যেই অর্থনীতি-রাজনীতি নিয়ে প্রত্যাশা কমছে। ধারাবাহিকভাবে অর্থনৈতিক বৈষম্য বাড়ানোর রাজনীতির গতি পরিবর্তনের সব পথ রুদ্ধ হলে এমনই তো হওয়ার কথা। 


(১৩ জুন, ২০২৪–এর প্রথম আলোয় প্রকাশিত।)


মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বে স্বৈরশাসকের ফেরা সহজ

  গণতন্ত্রে উত্তরণে ব্যর্থতা ও স্বৈরতন্ত্রের নিকৃষ্টতম রুপ প্রত্যক্ষ করার পর অর্ন্তবর্তী সরকারের মেয়াদকালে যে সব বিষয়ে সংস্কারের আলোপ চলছে, তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে নির্বাচনব্যবস্থা। এরশাদের সামরিক স্বৈরাচারের পতনের পর নির্বাচনকে গণতন্ত্র চর্চার মাধ্যম হিসাবে যেভাবে প্রতিষ্ঠার কথা ছিল, তা থেকে প্রধান দুই দলই বিচ্যূত হয়েছিল। পরিণতিতে নির্বাচন শুধু ক্ষমতা দখলের হিংসাত্মক খেলায় পরিণত হয় এবং শেষ পর্যন্ত শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ সাধারণ মানুষের ভোটের অধিকার হরণ করে নির্বাচনকে নানা রকম প্রহসনে পরিণত করে।  এই সমস্যার এক অতি সরলীকৃত সমাধান হিসাবে বলা হচ্ছে, দ্বিদলীয় রাজনীতির বৃত্ত থেকে বেরিয়ে দেশে সত্যিকার বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে। আর বহুদলীয় গণতন্ত্রের জন্য নির্বাচনব্যবস্থায় আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বের ধারণাকে একমাত্র বা চূড়ান্ত সমাধান হিসাবে তুলে ধরা হচ্ছে।  সংখ্যানুপাতিক বা আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতির নির্বাচনে একটি দল যত শতাংশ ভোট পাবে, সে অনুপাতে তারা সংসদের আসন পাবে। এ আনুপাতিক পদ্ধতিতে প্রার্থীদের নাম দল আগাম ঘোষণা করতেও পারে, আবার না–ও পারে। নাম প্রকাশ করা হলে সেটা হব...

অরাজনৈতিক আন্দোলনের করুণ রাজনৈতিক মূল্য

কোটা সংস্কারের দাবিতে সাধারণ ছাত্র–ছাত্রীদের আন্দোলনে  কদিন ধরে যা ঘটে চলেছে, তা যেমন বেদনাদায়ক, তেমনই নিন্দনীয় ও ক্ষোভের কারণ। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের শিক্ষা দিতে ক্ষমতাসীন সরকারের সমর্থক এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীর হাতে একইদিনে দেশের তিন জায়গায় ছয়জনের প্রাণহানির ঘটনা স্বাধীন বাংলাদেশে বিরল।  এবার আরও যেসব ঘটনা আমাদের স্তম্ভিত করেছে, অভিভাবকদের চোখ অশ্রুসিক্ত করেছে, এসব মৃত্যুর পরও সরকারের রাজনৈতিক দম্ভ বজায় রাখার চেষ্টা, যা আরও প্রাণহানির কারণ হয়েছে। ছয়জন তরুণের প্রাণ বিসর্জনের পরও কোটা সংস্কারের দাবিতে সরকার ”নীতিগতভাবে একমত” – একথাটি বলে  আলোচনায় না ডেকে সময়ক্ষেপণ করেছে। আইনমন্ত্রী কথাটি যখন বললেন, তার আগেই আরও জীবন গেল, শত শত মানুষ আহত হলো, দেশের সম্পদ নষ্ট হলো। রাজনৈতিক গরিমা ছাড়া এর আর কোনো কারণ আছে কি? ছাত্রলীগ পরিচয়ে অন্ত্রধারীদের তান্ডব, পুলিশের চরম নিষ্ঠুরতা এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ছাত্রীদের গড়পরতা মারধর ও লাঞ্চিত করার যে দৃশ্যগুলো গণমাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে, তা কোনো অভিভাবকের পক্ষেই ভোলা সম্ভব নয়। এসব ঘটনার বিবরণ উদ্ধৃত না করে শুধু নিষ্ঠুর ...

সংবিধান সংস্কারে জাতীয় সমঝোতা কি অসম্ভব কিছু

সংবিধান সংস্কার কমিশন সংবিধান নিয়ে যে জনমত সংগ্রহ ও জাতীয়ভিত্তিক সংলাপগুলো করছে, তাতে বেশ ভালোই সাড়া মিলছে বলে আভাস পাওয়া যাচ্ছে। প্রায় প্রতিদিনই বিভিন্ন নাগরিক গোষ্ঠী, রাজনৈতিক দল, বিদ্বজ্জনেরা কেমন সংবিধান দেখতে চান, তা নিয়ে বিতর্ক ও মতবিনিময় করছেন। দেশের রাজনৈতিক ভবিষ্যত নির্ধারণের মৌলিক ভিত্তি তথা রাষ্ট্রকাঠামো ও ক্ষমতার বিন্যাস সম্পর্কে নাগরিকদের এতটা উৎসাহ সম্ভবত: এর আগে আর দেখা যায়নি। সংস্কার কমিশনের সূত্র থেকে জেনেছি, অনলাইনে তাঁরা অভূতপূর্ব সাড়া পেয়েছেন এবং মতামত দেওয়ার জন্য সপ্তাহখানেক সময় বাকি থাকতেই ৩০ হাজারেরও বেশি পরামর্শ তাঁদের কাছে জমা পড়েছে। নাগরিকদের এ আগ্রহ থেকে যে বার্তাটি স্পষ্ট হয়, তা হচ্ছে তাঁরা চান তাঁদের মতামত যেন গুরুত্ব পায়। দীর্ঘ ১৫ বছরের স্বৈরশাসনে ক্ষমতাধরদের কিছু বলার বা তাঁদের প্রশ্ন করার কোনো অধিকার সাধারণ মানুষের ছিল না। প্রতি পাঁচ বছরে একবার ভোটের মাধ্যমে প্রতিনিধি নির্বাচনের যে অধিকার, সেটুকুও তাঁরা হারিয়েছিলেন। এই পটভূমিতে নাগরিকদের প্রথম চাওয়া হচ্ছে, তাঁদের হারানো অধিকার ফিরে পাওয়া। ভোট দেওয়ার অধিকার, কথা বলার অধিকার, প্রশ্ন করার অধিকার, সংগঠন করার...