সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

ক্ষমতা হারানোর ভোটে ব্যবধান কমানোই লক্ষ্য

 আপনি এই লেখা যখন পড়ছেন, তখন থেকে ঠিক দুই সপ্তাহ পরের বৃহস্পতিবার যুক্তরাজ্যে এমন একটি নির্বাচন হতে যাচ্ছে, যাকে বলা চলে ক্ষমতাসীন দল আগাম পরাজয় মেনে নিয়েছে। ভোটারদের কাছে তাদের এখন প্রধান আকুতি বিরোধীদলকে যেন তারা অতি সংখ্যাগরিষ্ঠতা (সুপারমেজরিটি) উপহার না দেন। তাহলে গণতন্ত্র ক্ষতিগ্রস্ত হবে। নির্বাচনের আগের জনমত জরিপগুলোর ফল দেখে এমন আশঙ্কা তৈরি হয়েছে ওয়েস্টমিনস্টার গণতন্ত্রের আদর্শ যুক্তরাজ্যে। বিরোধীদের সুপারমেজরিটির কথা প্রথমবারের মতো উচ্চারণ করেছেন কনজারভেটিভ পার্টির প্রতিরক্ষামন্ত্রী গ্র্যান্ট শ্যাপস। 


প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক যদিও মুখের হাসি ধরে রেখে ভোটের আগেই পরাজয় মানতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন, তবু তাঁর নির্বাচনী প্রচার পদে পদে ধাক্কা খাচ্ছে। তিনি যা–ই করছেন, তা–ই তাঁর বিপক্ষে চলে যাচ্ছে। এমনকি মঙ্গলবার তিনি ডেভনে কৃষকদের সঙ্গে কৃষিনীতি নিয়ে কথা বলতে গিয়ে এক খামার পরিদর্শনের সময়ে ভেড়ার দলকে খাবার এগিয়ে দিতে গিলে ভেড়ার পালও উল্টো হাঁটা শুরু করে। 


ক্ষমতাসীন দল কনজারভেটিভ পার্টির জন্য সবচেয়ে বড় বিপদ হয়ে দেখা দিয়েছে কট্টর ডানপন্থী দল রিফর্ম পার্টির উত্থান। ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে ব্রিটেনের বিচ্ছেদ – ব্রেক্সিটের অন্যতম কারিগর নাইজেল ফারাজ অবসরজীবনে ছেদ টেনে রিফর্মের নেতৃত্ব গ্রহণের পর কনজারভেটিভ পার্টির ভেতরেই শুরু হয়েছে অস্থিরতা। দলটির কেউ কেউ তাঁকে কনজারভেটিভ পার্টির নেতৃত্বে দেখতে চান। আবার কেউ কেউ দলত্যাগ করে রিফর্ম পার্টিতেই যোগ দিয়েছেন। দলটির শ খানেক এমপি পুননির্বাচনের ঝুঁকি না নিতে রাজনীতিকে বিদায় জানিয়েছেন।


জনমত জরিপের অন্তত একটিতে দেখা গেছে, নাইজেল ফারাজের পার্টি ঋষি সুনাকের কনজারভেটিভদের থেকেও বেশি ভোট পেতে যাচ্ছে। সব মিলিয়ে কনজারভেটিভ পার্টির অস্তিত্ত্বই এখন হুমকির মুখে। একটানা ১৫ বছরের শাসনামলের অধিকাংশ জুড়েই ছিল কৃচ্ছ্বের নীতি, যাতে সরকারি ব্যয় কমাতে নাগরিকসেবা ও সুবিধা কমেছে, করের বোঝা ও বৈষম্য বেড়েছে। নানা কারণে ভোটাররা দলটিকে কিছুটা শিক্ষাও দিতে চায় বলে মনে হচ্ছে। 


কনজারভেটিভ পার্টি ছাড়াও অন্যান্য রাজনৈতিক দলও এখন ভোটারদের কাছে মোটামুটি একই আহ্বান জানাচ্ছে যে বিরোধী দল লেবার পার্টির হাতে একচেটিয়া কর্তৃত্ব তুলে দেওয়া ঠিক হবে না। বামপন্থীদের যুক্তি লেবার পার্টির বর্তমান নেতা কিয়ার স্টারমার কার্যত কনজারভেটিভ পার্টির চেয়েও বেশি রক্ষণশীল এবং বাজারপন্থী। গ্রীন পার্টি ও স্কটিশ ন্যাশনাল পার্টিসহ বামপন্থী বিভিন্ন ব্যক্তি ও গোষ্ঠীর কাছে কিয়ার স্টারমার আসলে লাল পতাকার খোলসে নীল রংয়ের টোরি (কনজারভেটিভদের অপর নাম)। আবার ডানপন্থীদের কাছে কিয়ার স্টারমার সমাজতন্ত্রী, কেননা অতীতে তিনি বামপন্থী জেরেমি করবিনের নেতৃত্বে ছায়া মন্ত্রীসভার গুরুত্বপূর্ণ পদে ছিলেন। 


কিয়ার স্টারমারের প্রধানমন্ত্রিত্বের পথে অবশ্য কাঁটা হতে পারেন ফিলিস্তিনী গণহত্যার প্রতিবাদে সোচ্চার বামপন্থী লেখক ও বর্ণবাদবিরোধী আন্দোলনকারী অ্যান্ড্রু ফিনস্টেইন। তিনি দক্ষিণ আফ্রিকায় বর্ণবাদবিরোধী আন্দোলনে সিক্রিয় সংগঠক ছিলেন এবং ১৯৯৪ সালে সেখানকার প্রথম গণতান্ত্রিক নির্বাচনে নেলসন ম্যান্ডেলার নেতৃত্বে আফ্রিকান ন্যাশনাল কংগ্রেসের হয়ে পার্লামেন্টে নির্বাচিত হয়েছিলেন। দক্ষিণ আফ্রিকার পার্লামেন্টে তিনি অর্থবিষয়ক একটি উপকিমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন। কিন্তু দক্ষিণ আফ্রিকার অস্ত্র ক্রয় চুক্তিতে কথিত অনিয়মের বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ তদন্তের জন্য তাঁর দাবি পূরণ না হওয়ায় তিনি পদত্যাগ করেন। 


অ্যান্ড্রু ফিনস্টেইন এরপর যুক্তরাজ্যে চলে আসেন এবং বৈশ্বিক অস্ত্র ব্যবসার ওপর অনুসন্ধানমূলক বই দ্য শ্যাডো ওয়ার্ল্ড: ইনসাইড দ্য গ্লোবাল আর্মস ট্রেড বই লেখেন। তিনি শ্যাডো ওয়ার্ল্ড ইন্ভেস্টিগেশন্স নামে একটি অলাভজনক সংস্থা প্রতিষ্ঠা করেন এবং যুক্তরাজ্যের অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা বিষয়ক পোর্টাল ডিক্লাসিফায়েড ইউকের পরিচালনা পর্ষদের সদস্য। তিনি লেবার পার্টির নেতৃত্বের জন্য জেরেমি করবিনের সমর্থক ছিলেন। ইহুদিনিধনযজ্ঞ থেকে বেঁচে আসা পরিবারে তাঁর জন্ম এবং তাঁর মাতৃকূলের পরিবারের অনেকেই তখন নাৎসীবাহিনীর নিপীড়নে নিহত হন। পারিবারিক এই অভিজ্ঞতার কারণে তিনি ফ্যাসিবাদবিরোধিতায় উদ্বুদ্ধ হন এবং ফিলিস্তিনে গণহত্যার বিরুদ্ধে অবস্থান নেন। 


কিয়ের স্টারমারের বিরুদ্ধে তাঁর প্রার্থী হওয়ার অন্যতম প্রধান কারণ ফিলিস্তিনের গণহত্যার বিরুদ্ধে লেবার পার্টির দৃঢ় অবস্থান নিতে অস্বীকৃতি। মূলত ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার জবাবে গাজায় ইজরায়েলের সামরিক অভিযানকে যখন গণহত্যা বলে অভিহিত করা হচ্ছে, তখন স্টারমার এলবিসি রেডিওকে এক সাক্ষাৎকারে বলেন ইজরায়েলের আত্মরক্ষার অধিকার রয়েছে। এরপর গত ডিসেম্বরে 

পার্লামেন্টে গাযায় স্কটিশ ন্যাশনাল পার্টি একটি যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব উত্থাপন করলে তিনি তার প্রতি সমর্থন জানাতে অস্বীকৃতি জানান। 


কিয়ার স্টারমারের এই অবস্থানের কারণে লেবার পার্টির বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনী গণহত্যাকে সমর্থনের অভিযোগ ওঠে। গত মে মাসে অনুষ্ঠিত স্থানীয় সরকার নির্বাচনে অনেকেই লেবার পার্টি ত্যাগ করে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে নির্বাচন করেন ও বেশ কয়েকজন বিজয়ী হন। সেই প্রতিবাদের ধারা এখনও অব্যাহত আছে এবং মুসলিম ও যুদ্ধবিরোধী ভোট কয়েকটি আসনে লেবার পার্টিকে সাফল্য থেকে বঞ্চিত করতে পারে বলে ধারণা করা হয়। এ রকম প্রতিবাদী ভোটকে কাজে লাগাতেই মধ্য লন্ডনের হোবর্ন অ্যান্ড সেন্ট প্যানক্রাস আসনে অ্যান্ড্রু ফিনস্টেইন কিয়ার স্টারমারের প্রতি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন। 


অ্যান্ড্রু ফিনস্টেইনের প্রার্থিতায় লেবার পার্টির সাবেক নেতা জেরেমি করবিনের সমর্থকেরা ছাড়াও বামপন্থী গোষ্ঠীগুলো ও কয়েকটি তৃণমুল সংগঠন সমর্থন দিচ্ছে। অবশ্য লেবারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী ভোটেও বিভাজন ঘটছে এবং তার অন্যতম কারণ বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত একজন সাবেক কাউন্সিলর ওয়াইছ ইসলাম। অ্যান্ড্রু ফিনস্টেইনের সঙ্গেও বাংলাদেশের একটা আত্মিক সম্পর্ক আছে। তাঁর স্ত্রী সিমন সুলতানা বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত বৃটিশ এবং ব্র্যাক ইউকের সাবেক চেয়ারম্যান এবং ব্র্যাকের বৈশ্বিক পরিচালনা পরিষদের সদস্য। 


গাজায় ফিলিস্তিনি গণহত্যার বিষয়টি এ নির্বাচনে যে কিছুটা প্রভাব ফেলতে পারে, কিছু আসনে তার আভাস পাওয়া যায়। বাংলাদেশ বংশোদ্ভূত প্রথম বৃটিশ এমপি রুশনারা আলীর আসন এরকম একটি। তাঁর নির্বাচনী এলাকায় তাঁর কার্যালয়ের বাইরে বেশ কয়েক  দিন টানা বিক্ষোভ সংগঠিত হয়েছে। কারণ তিনি পার্লামেন্টে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে ভোটদানে বিরত থেকেছেন। তাঁর আসনেও একাধিক প্রতিবাদী প্রার্থী আছেন, যাঁদের কারণে তাঁর ভোট কমতে পারে। লন্ডনে আরও দু–একটি এবং মধ্য ও উত্তর ইংল্যান্ডের কয়েকটি আসনেও লেবার প্রার্থীদের বিজয় ফসকে যেতে পারে প্রতিবাদী প্রার্থীদের কারণে। লন্ডনে এ রকম এক প্রার্থী হলেন ফিলিস্তিনি তরুণী লিয়ানে মোহাম্মদ, যাঁর এলাকা ইলফোর্ড নর্থে বিপুলসংখ্যক বাংলাদেশি ও মুসলিম ভোটার আছেন। 


ক্ষুব্ধ মুসলিম ভোটারদের ক্ষোভ প্রশমনে কিয়ার স্টারমার এবং তাঁর লেবার পার্টির প্রথম সারির নেতারা বেশ কিছুদিন ধরে গাযায় যুদ্ধবিরতির কথা বললেও ইজরায়েলের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগের প্রশ্নটি এখনো এড়িয়ে চলেছেন। মঙ্গলবার এলবিসি রেডিওর এক অনুষ্ঠানে শ্রোতাদের টেলিফোনের জবাব দিতে গিয়ে কিয়ার স্টারমার বলেছেন, তিনি বেতারের অনুষ্ঠানে বসে কোনো ঘটনা গণহত্যা কি না, এই সিদ্ধান্ত নিতে পারেন না। 


শিশুহত্যার কারণে ইজরায়েলকে কালোতালিকাভুক্ত করার কারণে সেখানে অস্ত্র বিক্রি নিষিদ্ধ করবেন কি না, এমন প্রশ্নের জবাবেও তিনি আইনগত পরামর্শের কথা বলেছেন। তাঁর সর্বসাম্প্রতিক এসব বক্তব্যে ইঙ্গিত পাওয়া যায় যে নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে সরকার গঠনের বিষয়ে আস্থা বাড়তে থাকায় ইজরায়েলের প্রতি সমর্থনের প্রশ্নে তাঁর অবস্থানে আদৌ তেমন পরিবর্তন ঘটবে না। 


লেবার পার্টির সংখ্যাগরিষ্ঠতার ব্যবধান কমাতে তাই ছোট ও আঞ্চলিক দলগুলোর মধ্যে কৌশলগত সমঝোতার উদ্যোগও আছে। লিবারেল ডেমোক্র্যাট, গ্রিন পার্টি ও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের মধ্যে যার সম্ভাবনা উজ্জ্বল তার প্রতি সমর্থন জানানোর উদ্যোগ আগামী কয়েকদিনে আরও বাড়তে পারে। ক্ষমতার পালাবদল নির্বাচনের আগেই মোটামুটি নিশ্চিত বলে ধারণা প্রবল হচ্ছে। তবে লেবার ক্ষমতায় আসার আগেই তার প্রতিও যে ভোটারদের আস্থায় ঘাটতি দেখা যাচ্ছে, সেটি কাটিয়ে ওঠা তাদের জন্য সহজ হবে না। 


(১৯ জুন, ২০২৩–এর প্রথম আলো পত্রিকায় প্রকাশিত।)


মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

How to Describe the Awami League Accurately?

In an article titled ‘How Not to Describe the Awami League’ , published in this paper, British journalist David Bergman rightly underscores the importance of accuracy in labeling a political party—particularly when such labels carry potential legal consequences. Those familiar with Bergman’s work over the years know that he has consistently taken on politically sensitive and controversial subjects, often at significant personal and professional cost. His courage and commitment to journalistic integrity deserve recognition. Bergman is correct in asserting that “while serious criticisms of the Awami League are both valid and necessary, they must be proportionate and grounded in fact.” His analysis focuses primarily on the legal validity and appropriateness of labeling the Awami League as “fascist” or “Nazi.” He argues that comparing the party to the Nazi regime trivialises the scale of Nazi atrocities and misrepresents the complexities of Bangladeshi politics. Indeed, any historical comp...

ঘৃণা চাষের উর্বর ভূমি ও রাজনৈতিক সংকট

  দেশে একের পর এক অস্থিরতা সৃষ্টির বেশ কয়েকটি ঘটনা আমরা প্রত্যক্ষ করলাম। এগুলোর কোনোটিই প্রত্যাশিত ছিল না। অনেকেই এগুলো নির্বাচন যাতে প্রধান উপদেষ্টার প্রতিশ্রুত সময়ে না হয়, তার জন্য পরিস্থিতি ঘোলাটে করার অপচেষ্টা হিসাবে বর্ণনা করেছেন। পরিকল্পিতভাবে অস্থিরতা সৃষ্টির পিছনে প্রধানত: দুটি শক্তিকে দায়ী করা হচ্ছে – একটি হচ্ছে পতিত স্বৈরাচার আওয়ামী লীগের পলাতক নেতৃত্বের সাংগঠনিক উদ্যোগ; অপরটি হচ্ছে, বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ার (সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম) সুবাদে সমাজে প্রভাব বিস্তারে দক্ষতা অর্জনকারী কিছু প্রভাবক ব্যক্তি বা গোষ্ঠী। এসব প্লাটফর্ম বিদ্বেষ ও ঘৃণা ছড়ানোর সবচেয়ে কার্যকর হাতিয়ারে পরিণত হয়েছে।  আপনি যদি কাউকে অপদস্থ বা হেয় করতে চান, তাহলে তার জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত স্থান সম্ভবত:  সোশ্যাল মিডিয়ার কোনো একটি প্লাটফর্ম – বাংলাদেশে এটি ফেসবুক এবং ইউটিউব। বৈশ্বিক পরিসরে অবশ্য এক্স (সাবেক টুইটার) এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি এগিয়ে আছে। প্রতিবেশী দেশ মিয়ানমারে গণহত্যার শিকার সংখ্যালঘু মুসলিম জনগোষ্ঠী রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে জাতিগত বিদ্বেষ ছড়ানোয় এই সোশ্যাল মিডিয়া কী ভূমিকা রেখেছে, তা জাতিসংঘ তদন্...

ভারতে ’বাংলাদেশি ভাষা’ বিতর্ক, পুশ–ইন ও প্রতিক্রিয়া

  দিল্লি পুলিশ একটি চিঠিতে বাংলা ভাষাকে 'বাংলাদেশি ভাষা' হিসেবে উল্লেখ করায় ক্ষুব্ধ হয়েছেন পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর কথায় 'বাংলা ভাষাকে বাংলাদেশি ভাষা বলা কলঙ্কজনক, অপমানকর, দেশবিরোধী এবং অসাংবিধানিক কাজ। এটি ভারতের সব বাংলাভাষী মানুষকে অপমান করে। তারা আমাদেরকে হেয় করে (চিঠিতে) এমন ভাষা ব্যবহার করতে পারে না।'  দিল্লির পুলিশ যে চিঠিতে বাংলাকে বাংলাদেশি ভাষা বলেছে, সেটি বাংলাভাষী কয়েকজনকে জোর করে বাংলাদেশে পাঠানোর উদ্দেশ্যে একটি এফআইআর তদন্তের নথি অনুবাদ সম্পর্কিত। পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের দিল্লিতে যে পান্থশালা আছে, সেখানকার কর্মকর্তাদের সাহায্য চাইতেই ওই চিঠি। চিঠিটি জুলাইয়ের ২৯ তারিখের। কিন্তু তার মাসখানেকের আগে থেকে মমতা বন্দোপাধ্যায় বাংলাভাষী ভারতীয় নাগরিকদের বাংলাদেশি তকমা দিয়ে জোর করে বাংলাদেশে ঠেলে দেওয়ার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে আসছিলেন।  দিল্লিতে ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকার পশ্চিম বঙ্গ ও আসামের রাজ্য বিধানসভার আসন্ন নির্বাচনকে সামনে রেখে সংখ্যালঘু মুসলমান বাংলাভাষীদের অবৈধ অভিবাসী হিসাবে চিহ্নিত করে যে জোরপূর্বক ঠেলে দেওয়ার কাজ শুরু কর...