সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

দুর্নীতিবিরোধী অভিযানে অন্য কিছু কি আড়াল হচ্ছে

গত কিছুদিনের সংবাদ শিরোনামগুলো দেখে বা শুনে মনে হয় যে বাংলাদেশে এখন আমের মৌসুম না, কেলেঙ্কারি ফাঁস হওয়ার মৌসুম চলছে। এগুলো প্রধানত: দুর্নীতির কেলেঙ্কারি। সাবেক পুলিশ প্রধান থেকে শুরু করে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান পাবলিক সার্ভিস কমিশনের ড্রাইভার পর্যন্ত বিভিন্ন দপ্তরের উচ্চ, মধ্যম ও নিম্নস্তরের নানা রকম পদধারীদের দুর্নীতির ফিরিস্তি পড়তে পড়তে আমাদের অনেকেরই হাঁপিয়ে ওঠার দশা। 


সাম্প্রতিক মামলাগুলোয় পুলিশের সব স্তরের প্রতিনিধিত্ব আছে। এর পাশাপাশি আছে জেলা প্রশাসক, দায়রা জজ, বন সংরক্ষক, রাজস্ব বোর্ডের কর্মকর্তারা, ব্যাংকার, জেলা রেজিষ্ট্রার, পাসপোর্ট অফিসের ড্রাইভার, চিকিৎসক প্রমুখ। টাকার অঙ্কে তাঁদের দুর্নীতির পরিমাণ কখনো কখনো এতটাই অবিশ্বাস্য যে মনে হয় তাঁরা বোধ হয় টাকার স্তুপেই জীবনযাপন করতেন।এখন অনেকের মনেই কৌতুহল উঁকি দেয়, তাঁদের চেয়েও বেশি ক্ষমতাধর যাঁরা, তাঁদের কাছে তাহলে কি এর চেয়েও বেশি নেই? 


কারও কারও কাছে যে আছে, তা কিন্তু নির্বাচনের সময়ে প্রার্থীদের দাখিল করা হলফনামা থেকেই জানা গেছে। একজন এমপির সম্পদ পাঁচ বছরে বেড়েছে ৫৪ গুণ এবং ১৫ বছরে ২ হাজার ৪৩৬ গুণ। পাঁচ বছরে তাঁর স্ত্রীরও সম্পদ বেড়েছে ৩৪ গুণ। ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) পাঁচ বছরে সম্পদ এবং আয় বৃদ্ধিতে এগিয়ে থাকা শীর্ষ ১০ জন করে এমপির আলাদা তালিকাও প্রকাশ করেছে। দেশের আইনে ১০০ বিঘার বেশি জমি রাখার সুযোগ না থাকলেও জমির মালিকানায় শীর্ষে থাকা ১০ জনের দেড় থেকে ২০ গুণ পর্যন্ত জমি আছে। ১০ জানুয়ারি টিআইবি বিবৃতি দিয়ে এসব সম্পদের বিষয়ে তদন্তের আহ্বান জানিয়েছিল এবং বৈধ সীমার অতিরিক্ত জমি জব্দ করার সুপারিশ করেছিল। 


দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) টিআইবির বিবৃতির আগেই বলেছিল, তারা হলফনামা খতিয়ে দেখবে। সমকাল জানিয়েছিল এরই মধ্যে হলফনামায় অস্বাভাবিক সম্পদ উল্লেখ থাকা শতাধিক প্রার্থীর তালিকা তৈরি করেছে সংস্থাটি। এর মধ্যে বিজয়ী ও পরাজিত উভয় ধরনের প্রার্থীই রয়েছেন। তাদের হলফনামার হিসাব অস্বাভাবিক ও সন্দেহজনক মনে হয়েছে কমিশনের কাছে ( এবার হলফনামায় চোখ দুদকের, ৯ জানুয়ারি, ২০২৪)।


এখন যাদের দুর্নীতির তদন্ত হচ্ছে এবং যাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে, তা সমর্থন না করার কোনো কারণ নেই। কিন্তু আরও বেশি ক্ষমতাশালীরা কি আড়ালে পড়ে যাচ্ছেন? তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগগুলো ফাইলবন্দি করে গুদামে চালান করে দিয়ে মানুষকে শুধু মুখরোচক কিছু দুর্নীতির আলোচনাতেই ব্যস্ত রাখার কৌশল নেওয়া হচ্ছে না তো?  


২. 

দুর্নীতির এসব কেলেঙ্কারিতে যখন সবার মনোযোগ, তখনই প্রকাশ পেল পাবলিক সার্ভিস কমিশনের প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনা। পুলিশও দ্রুত তৎপর হয়ে ১৭ জনকে আটক করেছে। কিন্তু প্রশ্নপত্র ফাঁসের বিষয়ে কমিশনের যে ব্যাখ্যা তাতে নতুন নতুন অনেক প্রশ্ন তৈরি হয়। পরীক্ষার দিন পরীক্ষা শুরুর আধ ঘন্টা আগে লটারি করে প্রশ্ন চার (নন–ক্যাডার পদের জন্য) থেকে ছয় সেট ( ক্যাডারভুক্ত পদের জন্য) প্রশ্নপত্রের মধ্যে কোন সেট পরীক্ষায় ব্যবহার করা হবে তা নির্ধারণের ব্যাখ্যা সত্য হলে, যাঁদের বিরুদ্ধে প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ, তাঁরা তাহলে কী ফাঁস করেছেন? যদি ভুয়া প্রশ্নপত্র দিয়ে তাঁরা ব্যবসা করে থাকেন, তাহলে তো অপরাধের গুরুত্ব অনেক কমে যায়। 


কমিশন নিজেদের বাঁচাতে যে ব্যাখ্যা দিয়েছে, তাতে কি কার্যত অপরাধীদের লঘুদন্ডে পার পাওয়ার ব্যবস্থা করে দেওয়া হলো না? কমিশনের চেয়ারম্যানের ড্রাইভার কিম্বা ডেসপ্যাচ রাইডারদের কাছে তো প্রশ্নপত্র হওয়ায় উড়ে আসেনি। যেখান থেকে, যেভাবেই প্রশ্নপত্র ফাঁস হোক না কেন, তার দায় কমিশনের চেয়ারম্যান এবং সদস্যরা কি এড়াতে পারেন? 


কমিশন একটি তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠনের কথা জানিয়েছে। নিজেদের বিরুদ্ধে অভিযোগ নিজেরা তদন্ত করার চর্চার জন্য আমরা বহুদিন ধরে পুলিশের সমালোচনা করে আসছি। সেই একই চর্চা কমিশনের ক্ষেত্রে মোটেও প্রত্যাশিত ও গ্রহণযোগ্য নয়। তদন্ত হতে হবে কমিশনের সঙ্গে সম্পর্কহীন কোনো তৃতীয়পক্ষের মাধ্যমে। যেহেতু পিএসসি একটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান, তাই এ তদন্ত বিচারবিভাগের মাধ্যমেই হওয়া সমীচিন। 


৩.

৪ জুলাই পত্রিকাগুলোয় খবর বেরিয়েছে, রপ্তানি বেশি দেখানোর ভুল মেনে নিয়েছে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) এবং বাংলাদেশ ব্যাংক ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ড মিলে হিসাব সংশোধনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সংশোধিত হিসাবে দেখা গেল, ২০২৩–২৪ অর্থবছরের প্রথম দশ মাসে রপ্তানি আয় যতটা বলা হয়েছিল, তার চেয়ে ১৩.৮ বিলিয়ন ডলার কম হয়েছে। তার আগের অর্থবছরেও রপ্তানি আয়ের হিসাবে একইভাবে বাড়িয়ে দেখিয়েছিল ইপিবি, যার পরিমাণ এখন জানা যাচ্ছে প্রায় ১২ বিলিয়ন ডলার। রপ্তানি আয় কমলে দেশের অন্যান্য অর্থনৈতিক সূচকেও যে তার নেতিবাচক প্রভাব পড়ে, সেটা কারও না বোঝার কথা নয়। 


কিন্তু বিস্ময়ের বিষয় হচ্ছে সেদিনের পত্রিকায় সরকারিভাবে রপ্তানি আয়ের হিসাব সংশোধনের প্রভাব সম্পর্কে কোথাও কোনো আলোচনা দেখা গেল না। এমনকি অর্থনৈতিক পত্রিকাগুলোরও বিষয়টিতে নীরবতা দেখা গেল। সুতরাং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির একজন অধ্যাপক বন্ধুর শরণাপন্ন হয়ে জানতে চাইলাম রপ্তানির প্রকৃত আয় ১ হাজার ৪০০ কোটি ডলার কমার কারণে জিডিপি এবং জাতীয় আয় কমার কথা কি না। খবরে তার উল্লেখ না থাকায় আমি নিশ্চিত হতে চাই যে আমার বোঝায় কোনো ভুল আছে কি না। বন্ধুটি নিশ্চিত করলেন, আমার বোঝায় ভুল নেই। 


পরদিনের ডেইলি স্টার–এ অবশ্য দেখা গেল দেশের অন্তত ছয়জন শীর্ষস্থানীয় অর্থনীতিবিদ বিষয়টিতে তাঁদের পর্যবেক্ষণ তুলে ধরেছেন। মুস্তাফা মুজেরি, দীন ইসলাম এবং এম এ রাজ্জাক বলেছেন, এখন  জিডিপি পুর্নমূল্যায়ন করতে হবে। এম এ রাজ্জাকের হিসাবে জিডিপির আকার কমবে অন্তত ছয় বিলিয়ন ডলার। সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন বলেছেন, সরকারের সব পরিসংখ্যান এখন তামাদি হয়ে গেল। দু’দিন পর বণিক বার্তায়ও শিরোনামে হলো, ’জিডিপির আকার প্রবৃদ্ধি থেকে জাতীয় আয় সবই কমবে’। পত্রিকাটি সাবেক পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নানকে উদ্ধুত করেছে, যাতে তিনি বলেছেন এটা ছোটখাটো কোনো ভুল না, সংখ্যাও অনেক বড়। বিআইডিএসের গবেষণা পরিচালক ড কাজী ইকবাল পত্রিকাটিকে বলেছেন, জাতীয় আয়ের হিসাব পেছনের বছরগুলোতেও করতে হবে। 


গণতন্ত্রের চেয়ে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে অগ্রাধিকারের কথা নিয়ে বছর দশেক আগে থেকেই দেশে বিতর্ক চলছে। কেননা, গণতন্ত্রের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানকে অকার্যকর করে ফেলা এবং গণতান্ত্রিক  চর্চাগুলোকে নির্বাসনে পাঠানোর পেছনে যুক্তি হিসাবে দেশের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করে মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য প্রবৃদ্ধি অর্ঝনকেই সবার উপরে স্থান দেওয়া হয়েছিল। সুতরাং  স্বাভাবিকভাবেই অনেকের মধ্যেই প্রবৃদ্ধিকে বাড়িয়ে দেখানোর প্রবণতা তৈরি হয়েছে। এখন সর্বসাম্প্রতিক খবর হচ্ছে, গত ১০ বছরেই প্রবৃদ্ধির হিসাবে গরমিল ঘটেছে। সমকাল ২০১৪–১৫ থেকে বছরওয়ারি হিসাব তুলে ধরে দেখিয়েছে, ১ দশকে ৬৫ বিলিয়ন ডলার বাড়তি রপ্তানি দেখানো হয়েছে। এখন পুরো ১০ বছরের প্রায় প্রতি বছরেই প্রবৃদ্ধি কমার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এর চেয়ে বড় কেলেঙ্কারি আর কিছু কি হতে পারে? 


৪. 

দুর্নীতির কেলেঙ্কারিগুলো নিয়ে যে তোলপাড় চলছে, তা স্বাভাবিক। কিন্তু প্রবৃদ্ধির কেলেঙ্কারি নিয়ে রাজনীতিকদের নীরবতার কারণ কী? অনিয়ম আর কর্তৃপক্ষীয় ভাষ্যে আমরা কী এতটাই অভ্যস্ত হয়ে পড়েছি যে সাধারণ ও যৌক্তিক প্রশ্নগুলোও আমরা ভুলে গেছি?  


(১২ জুলাই, ২০২৪–এর প্রথম আলো পত্রিকায় প্রকাশিত।)



মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

Bangladesh is vexed by and wary of Modi’s unstinting support to Sheikh Hasina

In the run-up to Bangladesh’s general election in January 2014, New Delhi took the unusual step of sending a top diplomat from its external affairs ministry to Dhaka to persuade General Hussain Muhammaed Ershad, the country’s former military ruler, to participate in the polls. Big questions had been raised over the fairness of the election. The incumbent government was led by Sheikh Hasina’s Awami League, and the leader of the opposition Bangladesh Nationalist Party (BNP) had been placed under virtual house arrest, with police and roadblocks around her house in Dhaka. The BNP and other opposition parties were threatening to boycott the election. Ershad, the head of the Jatiya Party, was perceived as a potential kingmaker, able to bring to power whichever of Bangladesh’s two main parties he supported, but he was also threatening to withdraw from the election.  After a decade of Modi’s reign in India, people in Bangladesh are angry at their government cosying up to a Hindutva regime ...

অরাজনৈতিক আন্দোলনের করুণ রাজনৈতিক মূল্য

কোটা সংস্কারের দাবিতে সাধারণ ছাত্র–ছাত্রীদের আন্দোলনে  কদিন ধরে যা ঘটে চলেছে, তা যেমন বেদনাদায়ক, তেমনই নিন্দনীয় ও ক্ষোভের কারণ। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের শিক্ষা দিতে ক্ষমতাসীন সরকারের সমর্থক এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীর হাতে একইদিনে দেশের তিন জায়গায় ছয়জনের প্রাণহানির ঘটনা স্বাধীন বাংলাদেশে বিরল।  এবার আরও যেসব ঘটনা আমাদের স্তম্ভিত করেছে, অভিভাবকদের চোখ অশ্রুসিক্ত করেছে, এসব মৃত্যুর পরও সরকারের রাজনৈতিক দম্ভ বজায় রাখার চেষ্টা, যা আরও প্রাণহানির কারণ হয়েছে। ছয়জন তরুণের প্রাণ বিসর্জনের পরও কোটা সংস্কারের দাবিতে সরকার ”নীতিগতভাবে একমত” – একথাটি বলে  আলোচনায় না ডেকে সময়ক্ষেপণ করেছে। আইনমন্ত্রী কথাটি যখন বললেন, তার আগেই আরও জীবন গেল, শত শত মানুষ আহত হলো, দেশের সম্পদ নষ্ট হলো। রাজনৈতিক গরিমা ছাড়া এর আর কোনো কারণ আছে কি? ছাত্রলীগ পরিচয়ে অন্ত্রধারীদের তান্ডব, পুলিশের চরম নিষ্ঠুরতা এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ছাত্রীদের গড়পরতা মারধর ও লাঞ্চিত করার যে দৃশ্যগুলো গণমাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে, তা কোনো অভিভাবকের পক্ষেই ভোলা সম্ভব নয়। এসব ঘটনার বিবরণ উদ্ধৃত না করে শুধু নিষ্ঠুর ...

আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বে স্বৈরশাসকের ফেরা সহজ

  গণতন্ত্রে উত্তরণে ব্যর্থতা ও স্বৈরতন্ত্রের নিকৃষ্টতম রুপ প্রত্যক্ষ করার পর অর্ন্তবর্তী সরকারের মেয়াদকালে যে সব বিষয়ে সংস্কারের আলোপ চলছে, তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে নির্বাচনব্যবস্থা। এরশাদের সামরিক স্বৈরাচারের পতনের পর নির্বাচনকে গণতন্ত্র চর্চার মাধ্যম হিসাবে যেভাবে প্রতিষ্ঠার কথা ছিল, তা থেকে প্রধান দুই দলই বিচ্যূত হয়েছিল। পরিণতিতে নির্বাচন শুধু ক্ষমতা দখলের হিংসাত্মক খেলায় পরিণত হয় এবং শেষ পর্যন্ত শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ সাধারণ মানুষের ভোটের অধিকার হরণ করে নির্বাচনকে নানা রকম প্রহসনে পরিণত করে।  এই সমস্যার এক অতি সরলীকৃত সমাধান হিসাবে বলা হচ্ছে, দ্বিদলীয় রাজনীতির বৃত্ত থেকে বেরিয়ে দেশে সত্যিকার বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে। আর বহুদলীয় গণতন্ত্রের জন্য নির্বাচনব্যবস্থায় আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বের ধারণাকে একমাত্র বা চূড়ান্ত সমাধান হিসাবে তুলে ধরা হচ্ছে।  সংখ্যানুপাতিক বা আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতির নির্বাচনে একটি দল যত শতাংশ ভোট পাবে, সে অনুপাতে তারা সংসদের আসন পাবে। এ আনুপাতিক পদ্ধতিতে প্রার্থীদের নাম দল আগাম ঘোষণা করতেও পারে, আবার না–ও পারে। নাম প্রকাশ করা হলে সেটা হব...