সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

চোরতন্ত্রের সুবিধাভোগীরা ছাড় পাবে না তো ?

 এখন প্রতিদিনই খবরের তালিকায় কোনো না কোনো রাজনীতিক এবং সাবেক আমলার গ্রেপ্তারের খবর ছাপা হয়। প্রথম আলোর হিসাবে অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে (১ থেকে ৭ অক্টোবর) সারা দেশে মোট গ্রেপ্তার হয়েছেন ৭ হাজার ১৮ জন। স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার ক্ষমতা ছেড়ে পলায়নের দুই মাসে মোট গ্রেপ্তারের সংখ্যা কত, তা জানা সম্ভব না হলেও একটা ব্যাখ্যা থেকে বোঝা যায় অক্টোবরের আগে ধরপাকড় ছিল খুবই সীমিত। পুলিশি ব্যবস্থা ভোঙ্গে পড়াই মূলত তার কারণ। বিধ্বস্ত থানাগুলোর বিকল্প খোঁজা অথবা সেগুলো মেরামত করে ব্যবহারোপযোগী করার জন্যও কিছুটা সময় কেটে গেছে।  আটককৃতদের মধ্যে কতজন রাজনীতিক, কতজন আমলা, কিম্বা কতজন অর্থনৈতিক অপরাধী – তার কোনো বিশদ হিসাবও জানা যায়নি। অন্তত: কোনো সংবাদমাধ্যমে সেরকম বিশ্লেষণ চোখে পড়েনি। 


আইন–শৃঙ্খলাবাহিনীর যেসব সদস্যের বিরুদ্ধে গুরুতর অপরাধের অভিযোগ আছে, তাদের চিহ্নিত করার কাজটি শেষ হয়েছে কিনা, তা–ও স্পষ্ট নয়। শুরুর দিকে পুলিশের শীর্ষপর্য়ায়ের কয়েকজন এবং সশস্ত্রবাহিনীর জনা তিনেক পদস্থ কর্মকর্তাও  গ্রেপ্তার হয়েছেন। কিন্তু তাতে যে এসব বাহিনীর ভেতরের অন্য অপরাধীরা পার পাবে না, তা কেউই জোর দিয়ে বলতে পারে না। বিশেষত: কাজে যোগ না দেওয়া এবং পলাতক কর্মকর্তাদের সংখ্যা এখন সরকারি হিসাবেই শ দুয়েকের কাছাকাছি। 


স্বৈরশাসনের আমলে অপরাধের অনেক রকমফের আছে, আছে মাত্রাভেদ। ১৫ জুলাই থেকে ৫ আগস্টের অপরাধগুলো মূলত সবই চরম সহিংসতা ও নিষ্ঠূরতার। আন্দোলন দমনে নির্বিচার মানুষ হত্যা এবং গণহারে গ্রেফতার ও নির্যাতনের ঘটনাগুলো অতীতের ১৫ বছরের দু:শাসন থেকে অনেকটাই আলাদা। এ সময়ে যা ঘটেছে তাকে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসাবে অনেকেই অভিহিত করেছেন এবং সে অভিযোগেই তার বিচার হওয়া প্রয়োজন। 


 অতীতের ১৫ বছরের নির্যাতন–নিপীড়ণের ধরন ও প্রকৃতি কিছুটা আলাদা হলেও গুম ও বিচারবহির্ভূত হত্যার অনেকগুলোই মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসাবে গণ্য হতে পারে। মানবাধিকার লঙ্ঘন ও দমনপীড়নের অন্যন্য অপরাধের বিচারও গুরুত্বপূর্ণ। কেননা, সব ভুক্তভোগীরই ন্যয়বিচার পাওয়ার অধিকার রয়েছে। 


রাজনীতিকদের রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের দায় বহন করতে হবে, সেটাই স্বাভাবিক। বেআইনি শক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে রাজনৈতিক ক্ষমতা ধরে রাখার চেষ্টায় তাঁরা যেসব খুন–জখম ও নির্যাতনের মতো অপরাধ করেছেন, সেগুলোর জবাবদিহির জন্য তাঁদের বিচারের মুখোমুখি করা যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনই জরুরি হচ্ছে, তাঁদের অবৈধ কাজে যাঁরা সহযোগিতা করেছে, তাঁদের বেআইনি হুকুম প্রতিপালনে নিষ্ঠুর ও অমানবিক অপরাধ করেছেন, তাঁদের জবাবদিহি নিশ্চিত করা। এই অপরাধে অপরাধী মূলত আমলা ও আইন–শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অতিউৎসাহী ও দলবাজ সদস্যরা। 


তাঁদের অপরাধের তদন্ত ও বিচারের প্রক্রিয়া দু:খজনকভাবে খুবই শ্লথ এবং অনেকটাই হতাশাজনক। ক্ষমতার দাপট দেখানো এবং নিষ্ঠূরতার জন্য কুখ্যাতি অর্জন করা কর্মকর্তাদের অধিকাংশই রাতারাতি হাওয়া হয়ে গেছেন। কেউ কেউ দেশান্তরি হয়েছেন বলেও শোনা যায়। গত ১৫ বছরে নৃশংসতার জন্য দেশ ও দেশের বাইরে বহুল সমালোচিত এবং যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকা র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব) এখন দাবি করেছে,  ”ছাত্র-জনতার যে আন্দোলন ছিল, সেটার সঙ্গে আমরা ছিলাম, সেটার সঙ্গে আমরা আছি এবং এই যে অভ্যুত্থান, এটাকে সফল করার জন্য এখন আমাদের যা যা করণীয়, সবই করে যাচ্ছি।” ছাত্র–জনতার ওপর কোনো প্রাণঘাতি অস্ত্র ব্যবহার করা হয়নি দাবি করে র‍্যাবের মুখপাত্র জানিয়েছেন, তাদের বাহিনীর কেউ পালিয়েও যায়নি। 


জাতিসংঘের তথ্য অনুসন্ধানী দলের প্রতিবেদন পেলে র‍্যাবের দাবির যথার্থতা কতটুকু, তা নিশ্চিতভাবে বোঝা যাবে। তবে বিক্ষোভ দমনে র‍্যাবের নাম লেখা হেলিকপ্টার ব্যবহারের যেসব ভিডিওচিত্র সামাজিক মাধ্যমে দেখা গেছে, তা কিন্তু নতুন নজির তৈরি করেছে। সেনাবাহিনীর যেসব সদস্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছিল, সেগুলোর তদন্ত ও জবাবদিহি নিশ্চিতের বিষয়ে সেনাপ্রধান যে আশ্বাস দিয়েছিলেন, আশা করি তার ফলাফলও জানানো হবে। 


স্বৈরশাসনের সবচেয়ে বেশি সুবিধাভোগী ও সহযোগী আরেকটি গোষ্ঠীর অপরাধের ধরন অবশ্য একেবারেই আলাদা। তাঁরা হলেন অর্থনৈতিক অপরাধী। রাজনৈতিক পরিচয়ের কারণে অর্থনৈতিক অপরাধীদের কয়েকজন গ্রেপ্তার হলেও দেশের সম্পদ লুট কিম্বা তা বিদেশে পাচারের মতো অপরাধের জন্য গ্রেপ্তারের সংখ্যা খুবই কম। অর্থনৈতিক অপরাধের যেসব বিবরণ সরকারিভাবে ইতিমধ্যে প্রকাশ পেয়েছে, তার পরিধি ও ব্যাপকতা আমাদের অনেকেরই কল্পনার বাইরে। ক্ষমতাসীন দলের আশ্রয়–প্রশ্রয়ে অল্প কিছু ব্যবসায়ী যেভাবে দেশের অর্থনীতিতর ওপর একচেটিয়া নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠায় সক্ষম হয়েছিলেন, তাতে বাংলাদেশ চোরতন্ত্রের (ক্লিপ্টোক্র্যাসি) একটি প্রামাণ্য নজির  (টেক্সটবুক কেস) হিসাবে গণ্য হতে পারে। 


সবধরনের নিয়মনীতি লংঘন করে একটি ব্যবসায়ী পরিবার সামরিক গোয়েন্দা সংস্থাকে কাজে লাগানোর মতো রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার সর্ব্বোচ্চ অপব্যবহারের মাধ্যমে যেভাবে একের পর এক ব্যাংক দখল করেছে এবং দখলকৃত অর্ধডজনের বেশি ব্যাংকের গ্রাহকদের আমানত থেকে ৯০ হাজার কোটি টাকার বেশি ঋণ জালিয়াতির মাধ্যমে বের করে নিয়েছে, তার নজির বিশ্বে দ্বিতীয়টি মিলবে না। ব্যাংক লুটের এই কৃতিত্বের অধিকারী এস আলম গ্রুপের অন্যান্য অর্থনৈতিক অপরাধের তালিকাও দীর্ঘ, যার মধ্যে আছে কর ফাঁকি এবং অর্থ পাচার। এসব অপরাধে গ্রুপটির কর্ণধার একা নন, তাঁর পরিবারের সদস্যরা তো বটেই, জ্ঞাতিগুষ্টির বাইরে বেতনভোগী কর্মচারীরাও যুক্ত আছেন। কিন্তু তাঁরা দেশে আছেন, নাকি বিদেশি নাগরিকত্বের সুবাদে বিদেশে চলে গেছেন, তার কোনো হদিস সংবাদমাধ্যমেও মেলে না।  


এদিকে কর ফাঁকিসহ গুরুতর অনিয়মের বিষয়ে তদন্তের প্রয়োজনে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এস আলম গ্রুপ ছাড়াও বসুন্ধরা গ্রুপ, ওরিয়ন গ্রুপ, সামিট গ্রুপ, বেক্সিমকো গ্রুপ, নাসা গ্রুপ ও থার্ড ওয়েভ টেকনোলজিস লিমিটেডের (নগদ লিমিটেড) শেয়ার স্থানান্তর (কেনা-বেচা ও দান) বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে। এসব গ্রুপের পরিচালকদের অনেকের এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের ব্যাংক হিসাব স্থগিত করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে ব্যাংক হিসাব স্থগিতের আগে যে কয়েক সপ্তাহ পেরিয়ে গেছে, তার মধ্যে তাঁদের হিসাব খালি হয়ে যাওয়া অসম্ভব নয়। 


আর্থিক অপরাধের সুবিধাভোগীদের অনেকের বিরুদ্ধে দেশত্যাগেরও নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হচ্ছে। তবে  বিদেশে শত শত বাড়ি কেনা একজন ব্যাবসায়ী–রাজনীতিক ক্ষমতার পালাবদলের পর নিরাপদে দেশ থেকে বেরিয়ে যেতে পারায় আল–জাজিরা টেলিভিশনে যে বুড়ো আঙ্গুল দেখানো হাসি দিয়েছেন, সেটি প্রচারের তিন সপ্তাহ পর তাঁর দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞার আদেশ কী অর্থ বহন করে, তা আমরা বুঝতে অক্ষম। 


এসব অর্থনৈতিক অপরাধে যাঁরা আইন উপেক্ষা করে সহায়তা দিয়েছেন, সেসব আমলা ব্যাংকারও ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়ে গেছেন। ব্যাংকিংয়ের মতোই শেয়ারবাজারেও প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল লাগামছাড়া লুন্ঠনের ধারা। সেখানেও অপরাধের সহায়ক ছিলেন নিয়ন্ত্রকের ভূমিকায় থাকায় কর্তাব্যক্তিরা। তাঁরাও মনে হচ্ছে নাগালের বাইরে। 


ছাত্র–জনতা যেমন রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের দুর্বৃত্তপনার বজাবদিহি চায়, তেমনি চায় চোরতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সুবিধাভোগী গোষ্ঠীগুলোর বিচার। কিন্তু তদন্ত ও বিচারপ্রক্রিয়ায় লুটপাটকারীদের প্রতি যথেষ্ট মনোযোগ আছে কি না, তা নিয়ে সংশয় তৈরি হওয়া বোধহয় অযৌক্তিক হবে না। 


(১০ অক্টোবর, ২০২৪–এর প্রথম আলো পত্রিকায় প্রকাশিত।)



মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বে স্বৈরশাসকের ফেরা সহজ

  গণতন্ত্রে উত্তরণে ব্যর্থতা ও স্বৈরতন্ত্রের নিকৃষ্টতম রুপ প্রত্যক্ষ করার পর অর্ন্তবর্তী সরকারের মেয়াদকালে যে সব বিষয়ে সংস্কারের আলোপ চলছে, তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে নির্বাচনব্যবস্থা। এরশাদের সামরিক স্বৈরাচারের পতনের পর নির্বাচনকে গণতন্ত্র চর্চার মাধ্যম হিসাবে যেভাবে প্রতিষ্ঠার কথা ছিল, তা থেকে প্রধান দুই দলই বিচ্যূত হয়েছিল। পরিণতিতে নির্বাচন শুধু ক্ষমতা দখলের হিংসাত্মক খেলায় পরিণত হয় এবং শেষ পর্যন্ত শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ সাধারণ মানুষের ভোটের অধিকার হরণ করে নির্বাচনকে নানা রকম প্রহসনে পরিণত করে।  এই সমস্যার এক অতি সরলীকৃত সমাধান হিসাবে বলা হচ্ছে, দ্বিদলীয় রাজনীতির বৃত্ত থেকে বেরিয়ে দেশে সত্যিকার বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে। আর বহুদলীয় গণতন্ত্রের জন্য নির্বাচনব্যবস্থায় আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বের ধারণাকে একমাত্র বা চূড়ান্ত সমাধান হিসাবে তুলে ধরা হচ্ছে।  সংখ্যানুপাতিক বা আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতির নির্বাচনে একটি দল যত শতাংশ ভোট পাবে, সে অনুপাতে তারা সংসদের আসন পাবে। এ আনুপাতিক পদ্ধতিতে প্রার্থীদের নাম দল আগাম ঘোষণা করতেও পারে, আবার না–ও পারে। নাম প্রকাশ করা হলে সেটা হব...

অরাজনৈতিক আন্দোলনের করুণ রাজনৈতিক মূল্য

কোটা সংস্কারের দাবিতে সাধারণ ছাত্র–ছাত্রীদের আন্দোলনে  কদিন ধরে যা ঘটে চলেছে, তা যেমন বেদনাদায়ক, তেমনই নিন্দনীয় ও ক্ষোভের কারণ। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের শিক্ষা দিতে ক্ষমতাসীন সরকারের সমর্থক এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীর হাতে একইদিনে দেশের তিন জায়গায় ছয়জনের প্রাণহানির ঘটনা স্বাধীন বাংলাদেশে বিরল।  এবার আরও যেসব ঘটনা আমাদের স্তম্ভিত করেছে, অভিভাবকদের চোখ অশ্রুসিক্ত করেছে, এসব মৃত্যুর পরও সরকারের রাজনৈতিক দম্ভ বজায় রাখার চেষ্টা, যা আরও প্রাণহানির কারণ হয়েছে। ছয়জন তরুণের প্রাণ বিসর্জনের পরও কোটা সংস্কারের দাবিতে সরকার ”নীতিগতভাবে একমত” – একথাটি বলে  আলোচনায় না ডেকে সময়ক্ষেপণ করেছে। আইনমন্ত্রী কথাটি যখন বললেন, তার আগেই আরও জীবন গেল, শত শত মানুষ আহত হলো, দেশের সম্পদ নষ্ট হলো। রাজনৈতিক গরিমা ছাড়া এর আর কোনো কারণ আছে কি? ছাত্রলীগ পরিচয়ে অন্ত্রধারীদের তান্ডব, পুলিশের চরম নিষ্ঠুরতা এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ছাত্রীদের গড়পরতা মারধর ও লাঞ্চিত করার যে দৃশ্যগুলো গণমাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে, তা কোনো অভিভাবকের পক্ষেই ভোলা সম্ভব নয়। এসব ঘটনার বিবরণ উদ্ধৃত না করে শুধু নিষ্ঠুর ...

সংবিধান সংস্কারে জাতীয় সমঝোতা কি অসম্ভব কিছু

সংবিধান সংস্কার কমিশন সংবিধান নিয়ে যে জনমত সংগ্রহ ও জাতীয়ভিত্তিক সংলাপগুলো করছে, তাতে বেশ ভালোই সাড়া মিলছে বলে আভাস পাওয়া যাচ্ছে। প্রায় প্রতিদিনই বিভিন্ন নাগরিক গোষ্ঠী, রাজনৈতিক দল, বিদ্বজ্জনেরা কেমন সংবিধান দেখতে চান, তা নিয়ে বিতর্ক ও মতবিনিময় করছেন। দেশের রাজনৈতিক ভবিষ্যত নির্ধারণের মৌলিক ভিত্তি তথা রাষ্ট্রকাঠামো ও ক্ষমতার বিন্যাস সম্পর্কে নাগরিকদের এতটা উৎসাহ সম্ভবত: এর আগে আর দেখা যায়নি। সংস্কার কমিশনের সূত্র থেকে জেনেছি, অনলাইনে তাঁরা অভূতপূর্ব সাড়া পেয়েছেন এবং মতামত দেওয়ার জন্য সপ্তাহখানেক সময় বাকি থাকতেই ৩০ হাজারেরও বেশি পরামর্শ তাঁদের কাছে জমা পড়েছে। নাগরিকদের এ আগ্রহ থেকে যে বার্তাটি স্পষ্ট হয়, তা হচ্ছে তাঁরা চান তাঁদের মতামত যেন গুরুত্ব পায়। দীর্ঘ ১৫ বছরের স্বৈরশাসনে ক্ষমতাধরদের কিছু বলার বা তাঁদের প্রশ্ন করার কোনো অধিকার সাধারণ মানুষের ছিল না। প্রতি পাঁচ বছরে একবার ভোটের মাধ্যমে প্রতিনিধি নির্বাচনের যে অধিকার, সেটুকুও তাঁরা হারিয়েছিলেন। এই পটভূমিতে নাগরিকদের প্রথম চাওয়া হচ্ছে, তাঁদের হারানো অধিকার ফিরে পাওয়া। ভোট দেওয়ার অধিকার, কথা বলার অধিকার, প্রশ্ন করার অধিকার, সংগঠন করার...