সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

মালদ্বীপের সংকটে কার ছায়া

ভারত মহাসাগরের স্বর্গ হিসেবে খ্যাত দ্বীপরাষ্ট্র, মালদ্বীপের প্রথম গণতান্ত্রিক নির্বাচনে নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ নাশিদ ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পেছনে ভারতের প্রচ্ছন্ন সমর্থন ছিল। বছর দুয়েক আগে লন্ডনে নির্বাসিত জীবনযাপনের সময়ে ব্যক্তিগত আলাপচারিতায় ভারতের প্রতি তাঁর ক্ষোভের কথা প্রকাশ করতে তাই তিনি খুব একটা দ্বিধা করেননি। সেই নাশিদই যখন মালদ্বীপে ভারতের সামরিক হস্তক্ষেপের আহ্বান জানালেন, তখন কিছুটা বিস্মিতই হয়েছি।
নাশিদের সময়েই চীন মালদ্বীপে অবকাঠামো খাতে বিপুল বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নেয়। তখনই প্রথম শোনা যায় যে চীন তার নৌবাহিনীর কিছু সম্পদ মালদ্বীপে স্থায়ীভাবে স্থানান্তরের পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছে। প্রেসিডেন্ট নাশিদের ক্ষমতাচ্যুতির পর দায়িত্ব নেওয়া ইয়ামিন সরকার বৈধ না অবৈধ, এই বিতর্কের মধ্যেই ভারতের তৎকালীন কংগ্রেস সরকারের প্রতিরক্ষামন্ত্রী এ কে অ্যান্টনি তড়িঘড়ি করে মালদ্বীপ সফর করেন এবং সাগরে মালদ্বীপের অর্থনৈতিক অঞ্চলের নিরাপত্তা (উপকূল থেকে ২০০ নটিক্যাল মাইল পর্যন্ত) নজরদারিতে সহায়তার প্রস্তাব দেন। এ রকম পটভূমিতে নাশিদের ভারতের শরণাপন্ন হওয়া বিস্ময়ের ব্যাপার বৈকি।
২০১৬ সালের ১২ এপ্রিল লন্ডনে কমনওয়েলথ সাংবাদিক সমিতি ও রোটারি ইন্টারন্যাশনালের সভায় মোহাম্মদ নাশিদ যে বক্তৃতা দিয়েছিলেন তার নোটগুলো তাই একটু ঝালিয়ে নিয়ে দেখলাম। তিনি সেদিন বলেছিলেন, ‘ভারত যদি গণতন্ত্র ও আইনের শাসনের পক্ষে না দাঁড়ায়, তাহলে মালদ্বীপে কর্তৃত্ববাদী শাসন অবসানের কোনো আশা নেই।’ বিষয়টি ব্যাখ্যা করে নাশিদ বলেন, প্রেসিডেন্ট ইয়ামিন দিল্লি সফর করে (১১ এপ্রিল ২০১৬) বলেছেন, তিনি আশ্বাস পেয়েছেন মালদ্বীপে জরুরি অবস্থা জারির বিষয়ে ভারত কমনওয়েলথে আলোচিত হতে দেবে না। ভারতের দ্য হিন্দু ১২ এপ্রিল সংখ্যায় (মালদিভস থ্যাঙ্কস ইন্ডিয়া ফর সাপোর্ট) প্রেসিডেন্ট ইয়ামিনকে উদ্ধৃত করে জানায়, সিম্যাগে (কমনওয়েলথ মিনিস্ট্রিয়াল অ্যাকশন গ্রুপ) ভারত যে দৃঢ়তার সঙ্গে মালদ্বীপকে সুরক্ষা দিয়েছে, তার জন্য ধন্যবাদ দিতেই তিনি ভারতে গিয়েছিলেন।
প্রেসিডেন্ট ইয়ামিন আশু বিপদ কাটাতে তখন ভারতকে আশ্বস্ত করলেও চীনের কাছে তাঁর পূর্বসূরির দেওয়া অঙ্গীকার থেকে পিছু হটেননি; বরং চীনের সঙ্গে তাঁর সরকারের ঘনিষ্ঠতা এখন এমন পর্যায়ে উন্নীত হয়েছে যে ওই দ্বীপরাষ্ট্রটিকে সুরক্ষা দিতে চীনা নৌবাহিনী ইতিমধ্যে ওই অঞ্চলে তার অবস্থানের কথা জানিয়ে দিয়েছে। একই সঙ্গে চীনা পররাষ্ট্র দপ্তর ভারতের সম্ভাব্য সামরিক হস্তক্ষেপের বিষয়ে হুঁশিয়ার করে দিয়েছে। মালদ্বীপের রাজনৈতিক টানাপোড়েনকে কেন্দ্র করে চীন এবং ভারতের সম্ভাব্য শক্তির মহড়ায় স্বভাবতই ওই অঞ্চলে উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা দেখা দিয়েছে।

২.
বিশ্ব অর্থনীতিতে চীন এখন এমন এক ঈর্ষণীয় অবস্থানে পৌঁছেছে, যেখানে তাকে উপেক্ষা করা অন্যদের পক্ষে প্রায় অসম্ভব। বিশ্ব বাণিজ্যে নিজেদের শীর্ষ অবস্থানকে সংহত করার লক্ষ্যে তারা বাণিজ্য সহজতর করার লক্ষ্যে স্থলপথে প্রাচীন সিল্ক রোডের পুনরুজ্জীবন এবং সমুদ্রপথে দ্বিতীয় আরেকটি সিল্ক রুটের ধারণায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশকে শামিল করার চেষ্টায় মনোযোগী হয়েছে। কিন্তু সেই বাণিজ্যের পথকে সুরক্ষা দেওয়ার প্রয়োজনে তার নিরাপত্তা ও সামরিক শক্তির প্রাধান্য প্রতিষ্ঠাও একটি অগ্রাধিকারের বিষয় হয়ে রয়েছে।
ভারত মহাসাগর ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় (ইন্দো-প্যাসিফিক) অঞ্চলে চীনের এই সাম্প্রতিক তৎপরতায় স্পষ্টতই ভারত উদ্বিগ্ন। উদ্বিগ্ন যুক্তরাষ্ট্রও। সুতরাং চীনের রাজনৈতিক-সামরিক আকাঙ্ক্ষার বিপরীতে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে ভারতের গুরুত্ব এখন অপরিসীম। দিল্লিতে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন রাষ্ট্রদূত কেনেথ জাস্টারের ভাষায়, যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা-কৌশলে ভারতকে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চল এবং এর বাইরেও ভারতকে একটি ‘নেতৃস্থানীয় শক্তি’র স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। রাষ্ট্রদূত জাস্টারের কথায় যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের সম্পর্কের একটি মৌলিক ভিত্তি হচ্ছে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে দীর্ঘমেয়াদি নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা জোরদার করায় প্রতিরক্ষা এবং সন্ত্রাস-প্রতিরোধে সহযোগিতা।
মালদ্বীপের রাজনৈতিক টানাপোড়েনকে ঘিরে ভারতের অবস্থান যে চীনের সঙ্গে মেলে না, সে কথা বলাই বাহুল্য। ২০১২ সালে প্রেসিডেন্ট নাশিদকে উৎখাত এবং ২০১৬ সালে তাঁকে সাজানো মামলায় বিচার করে সাজা দেওয়ার ঘটনাগুলোকে ভারত গণতন্ত্র ও আইনের শাসনের পরিপন্থী বলে মানতে রাজি হয়নি। এমনকি কমনওয়েলথসহ আন্তর্জাতিক ফোরামগুলোতে মালদ্বীপকে সমর্থন জুগিয়ে এসেছে। কিন্তু এখন মালদ্বীপের সরকার ভারতকে পাশ কাটিয়ে চীনকেই ভরসা মানায় ভারত গণতন্ত্র এবং আইনের শাসন পুনরুজ্জীবনের ওপর জোর দিচ্ছে। এ ক্ষেত্রে ভারত অবশ্য যুক্তরাষ্ট্রকে যেমন পাশে পাচ্ছে, ঠিক তেমনি পাবে ইউরোপীয়দের, যারা ধারাবাহিকভাবে গণতন্ত্র ও আইনের শাসনের পক্ষে সোচ্চার। ইউরোপীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা আগামী সোমবার যে বৈঠকে বসবেন তার জন্য প্রস্তুত খসড়ায় জরুরি অবস্থা প্রত্যাহার এবং বিরোধী রাজনীতিকদের সঙ্গে আলোচনার আহ্বানের কথাই রয়েছে।

৩.
বাংলাদেশের রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা এবং ভূরাজনৈতিক অবস্থানের সঙ্গে মালদ্বীপের মিল-অমিল না খুঁজলেও সেখানকার সাম্প্রতিক ঘটনাবলিতে আমাদের শেখার আছে অনেক কিছুই। মালদ্বীপের সাম্প্রতিক সংকটের শুরু দেশটির সুপ্রিম কোর্টের সঙ্গে প্রেসিডেন্ট ইয়ামিনের ক্ষমতার দ্বন্দ্বকে কেন্দ্র করে। ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট নাশিদ তাঁর সাবেক রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ সাবেক স্বৈরশাসক মামুন আবদুল গাইয়ুমের সঙ্গে একধরনের বোঝাপড়ায় উপনীত হলে পার্লামেন্টে ক্ষমতার ভারসাম্য প্রেসিডেন্ট ইয়ামিনের বিপক্ষে চলে যায়। ডজনখানেক এমপি সরকারের পক্ষ ত্যাগ করায় পার্লামেন্টে তাঁদের সদস্যপদ বাতিল করা হয়। কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট তাঁদের সদস্যপদ বহালের রায় দিলে প্রেসিডেন্ট ইয়ামিন জরুরি অবস্থা জারি করে প্রধান বিচারপতি আবদুল্লাহ সাঈদ ও সুপ্রিম কোর্টের অন্য বিচারপতিদের গ্রেপ্তার করান। প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে এখন বিরোধীদের কাছ থেকে ঘুষ গ্রহণ এবং সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্রের অভিযোগও আনা হয়েছে। আর অন্য বিচারপতিদের যাঁরা আগের রায় বাতিল করে ওই এমপিদের সদস্যপদ খারিজের সিদ্ধান্ত বহাল রাখতে সম্মত হয়েছেন, তাঁরা স্বপদে বহাল হয়েছেন। পার্লামেন্টে প্রেসিডেন্ট ইয়ামিনের সমর্থকদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা ফিরে এসেছে এবং জরুরি অবস্থার বৈধতা আরও এক মাসের জন্য বেড়েছে।
মালদ্বীপের রাজনীতিতে সংকটের সূত্রপাত কিন্তু ওই আদালতেই। প্রেসিডেন্ট নাশিদকে উৎখাতের কারণ ছিল সাবেক স্বৈরশাসক গাইয়ুমের অনুসারী এক বিচারককে অপসারণের সিদ্ধান্ত। নতুন গণতন্ত্রে সেনাবাহিনী, পুলিশ এবং প্রশাসন কেউই তখন প্রেসিডেন্ট নাশিদকে বিচারক অপসারণে সমর্থন দেয়নি। কিন্তু বিচারকদের নিয়োগ এবং শৃঙ্খলার বিষয়গুলো পরিচালনা ও তদারকের জন্য তাঁর গণতান্ত্রিক শাসনামলে জুডিকেচার অ্যাক্ট নামে একটি আইন তৈরি হয়। প্রেসিডেন্ট ইয়ামিনের উদ্যোগে ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে পার্লামেন্ট (পিপলস মজলিশ) জুডিকেচার অ্যাক্টের একটি সংশোধনী পাস করে। যার উদ্দেশ্য ছিল তখনকার প্রধান বিচারপতি আহমেদ ফয়েজ এবং আরেকজন বিচারপতি মুতাসিম আদনানকে অপসারণ। আইনটি পাসের তিন দিন পর তাঁদের অপসারণ করা হয় এবং সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতির সংখ্যা সাতজন থেকে কমিয়ে পাঁচজনে নামানো হয়। বিচার বিভাগের ওপর এই অভাবিত এবং বিরল হস্তক্ষেপের ঘটনায় বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে প্রতিবাদ উচ্চারিত হয়।
মালদ্বীপে বিচার বিভাগকে ঘিরে নাটকীয়তার করুণতম অধ্যায়গুলো অপসারিত প্রধান বিচারপতিদের ঘিরেই রচিত হয়েছে। অপসারিত প্রধান বিচারপতি আহমেদ ফয়েজই প্রেসিডেন্ট নাশিদকে উৎখাতের বিষয়টিকে বৈধ বলে রায় দিয়েছিলেন। আবার নির্বাচনের যে দফায় নাশিদ এগিয়ে ছিলেন, সেই নির্বাচনকে বাতিলের কাজটিও তিনিই করেছিলেন। নির্বাচন কমিশনের অন্তত চারজনকে তিনি কথিত আদালতের কর্তৃত্ব উপেক্ষার দায়ে জেলে পাঠিয়েছেন। স্পষ্টতই তিনি ক্ষমতাসীনদের বেআইনি এবং অনৈতিক কাজের হাতিয়ার হয়েছিলেন। কিন্তু তাঁর উত্তরসূরি, বিচারপতি সাঈদ যখন অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছেন, তখন তাঁকেও চরম পরিণতির মুখোমুখি হতে হয়েছে। তাঁর সতীর্থরা বন্দুকের নলের মুখে রণে ভঙ্গ দিয়েছেন।
মালদ্বীপের সংকটের পেছনেও আছে প্রতিহিংসার নিষ্ঠুর রাজনীতি। প্রতিপক্ষকে কোণঠাসা করে প্রায় নিশ্চিহ্ন করে ফেলার চেষ্টা। আবার আছে বিচারপ্রার্থীর শেষ ভরসাস্থল আদালতকেও ক্ষমতাসীনদের কবজায় রাখা। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এসব ক্ষেত্রে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা জানালেও বাস্তবে তারা নিরুপায় দর্শকমাত্র। কেননা, বৈশ্বিক ভূরাজনীতির টানাপোড়েন থেকে একধরনের অপ্রত্যাশিত সুবিধাও পেয়ে যাচ্ছেন কর্তৃত্ববাদী রাজনীতিকেরা।
(সোমবার, ২৬ ফেব্রুয়ারি প্রথম আলোয় প্রকাশিত নিবন্ধ।)

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

Bangladesh is vexed by and wary of Modi’s unstinting support to Sheikh Hasina

In the run-up to Bangladesh’s general election in January 2014, New Delhi took the unusual step of sending a top diplomat from its external affairs ministry to Dhaka to persuade General Hussain Muhammaed Ershad, the country’s former military ruler, to participate in the polls. Big questions had been raised over the fairness of the election. The incumbent government was led by Sheikh Hasina’s Awami League, and the leader of the opposition Bangladesh Nationalist Party (BNP) had been placed under virtual house arrest, with police and roadblocks around her house in Dhaka. The BNP and other opposition parties were threatening to boycott the election. Ershad, the head of the Jatiya Party, was perceived as a potential kingmaker, able to bring to power whichever of Bangladesh’s two main parties he supported, but he was also threatening to withdraw from the election.  After a decade of Modi’s reign in India, people in Bangladesh are angry at their government cosying up to a Hindutva regime ...

অরাজনৈতিক আন্দোলনের করুণ রাজনৈতিক মূল্য

কোটা সংস্কারের দাবিতে সাধারণ ছাত্র–ছাত্রীদের আন্দোলনে  কদিন ধরে যা ঘটে চলেছে, তা যেমন বেদনাদায়ক, তেমনই নিন্দনীয় ও ক্ষোভের কারণ। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের শিক্ষা দিতে ক্ষমতাসীন সরকারের সমর্থক এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীর হাতে একইদিনে দেশের তিন জায়গায় ছয়জনের প্রাণহানির ঘটনা স্বাধীন বাংলাদেশে বিরল।  এবার আরও যেসব ঘটনা আমাদের স্তম্ভিত করেছে, অভিভাবকদের চোখ অশ্রুসিক্ত করেছে, এসব মৃত্যুর পরও সরকারের রাজনৈতিক দম্ভ বজায় রাখার চেষ্টা, যা আরও প্রাণহানির কারণ হয়েছে। ছয়জন তরুণের প্রাণ বিসর্জনের পরও কোটা সংস্কারের দাবিতে সরকার ”নীতিগতভাবে একমত” – একথাটি বলে  আলোচনায় না ডেকে সময়ক্ষেপণ করেছে। আইনমন্ত্রী কথাটি যখন বললেন, তার আগেই আরও জীবন গেল, শত শত মানুষ আহত হলো, দেশের সম্পদ নষ্ট হলো। রাজনৈতিক গরিমা ছাড়া এর আর কোনো কারণ আছে কি? ছাত্রলীগ পরিচয়ে অন্ত্রধারীদের তান্ডব, পুলিশের চরম নিষ্ঠুরতা এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ছাত্রীদের গড়পরতা মারধর ও লাঞ্চিত করার যে দৃশ্যগুলো গণমাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে, তা কোনো অভিভাবকের পক্ষেই ভোলা সম্ভব নয়। এসব ঘটনার বিবরণ উদ্ধৃত না করে শুধু নিষ্ঠুর ...

আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বে স্বৈরশাসকের ফেরা সহজ

  গণতন্ত্রে উত্তরণে ব্যর্থতা ও স্বৈরতন্ত্রের নিকৃষ্টতম রুপ প্রত্যক্ষ করার পর অর্ন্তবর্তী সরকারের মেয়াদকালে যে সব বিষয়ে সংস্কারের আলোপ চলছে, তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে নির্বাচনব্যবস্থা। এরশাদের সামরিক স্বৈরাচারের পতনের পর নির্বাচনকে গণতন্ত্র চর্চার মাধ্যম হিসাবে যেভাবে প্রতিষ্ঠার কথা ছিল, তা থেকে প্রধান দুই দলই বিচ্যূত হয়েছিল। পরিণতিতে নির্বাচন শুধু ক্ষমতা দখলের হিংসাত্মক খেলায় পরিণত হয় এবং শেষ পর্যন্ত শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ সাধারণ মানুষের ভোটের অধিকার হরণ করে নির্বাচনকে নানা রকম প্রহসনে পরিণত করে।  এই সমস্যার এক অতি সরলীকৃত সমাধান হিসাবে বলা হচ্ছে, দ্বিদলীয় রাজনীতির বৃত্ত থেকে বেরিয়ে দেশে সত্যিকার বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে। আর বহুদলীয় গণতন্ত্রের জন্য নির্বাচনব্যবস্থায় আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বের ধারণাকে একমাত্র বা চূড়ান্ত সমাধান হিসাবে তুলে ধরা হচ্ছে।  সংখ্যানুপাতিক বা আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতির নির্বাচনে একটি দল যত শতাংশ ভোট পাবে, সে অনুপাতে তারা সংসদের আসন পাবে। এ আনুপাতিক পদ্ধতিতে প্রার্থীদের নাম দল আগাম ঘোষণা করতেও পারে, আবার না–ও পারে। নাম প্রকাশ করা হলে সেটা হব...