সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

ন্যায়বিচার, অবিচার ও রাজনীতি

স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশে সম্ভবত এই প্রথম এমন একটি মামলার রায় হতে যাচ্ছে রাজনীতিতে যার প্রভাব বহুদিন ধরেই অনুভূত হবে। রাজনীতিকদের জবাবদিহিতা এবং বিচারের ভার জনতার আদালতে বলে একটি কথা বহুলপ্রচলিত। কিন্তু, আইনের আদালতেও যে অপরাধের জবাবদিহিতার বিষয় আছে সেকথা অস্বীকারের কোনো উপায় নেই। স্বাধীনতা পরবর্তী বাংলাদেশের অর্ধেকেরও বেশি সময়ের রাজনীতি যে দুজন নেত্রীকে ঘিরে আবর্তিত হয়েছে তাঁদেরই একজন, দশ বছর প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালনকারী, অন্যতম প্রধান একটি রাজনৈতিক দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া হলেন ওই মামলার প্রধান অভিযুক্ত।এই মামলা নিয়েও রাজনীতির অঙ্গণ উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে এবং বিরোধীদল যতটা না উত্তাপ তৈরি করতে পেরেছেন, তার চেয়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগীরা করেছেন অনেক বেশি। 

দেশে যখন রাষ্ট্রপতি-শাসিত সরকারব্যবস্থা চালু ছিল তখন বেআইনীভাবে ক্ষমতাদখল করে সরকার পরিচালনায় দূর্নীতির জন্যে এর আগে আরেকটি রাজনৈতিক দলের প্রধানকেও আদালতে বিচারের মুখোমুখি হতে হয়েছে এবং তিনি দন্ডিতও হয়েছেন। কিন্তু, সাবেক সামরিকশাসক এবং দূর্নীতিবাজ রাজনীতিক এরশাদের বিচার এবং রায় নিয়ে তেমন কোনো রাজনৈতিক উত্তাপ ছিল না। অস্ত্রের জোরে ক্ষমতা দখলকারী সাবেক ওই সেনাশাসক ক্ষমতা ও অর্থের যতটা অপব্যবহার করেছেন সে তুলনায় তাঁর প্রাপ্য বিচার এখনও হয়নি এবং তাঁর জীবদ্দশায় যে সেগুলো সম্পন্ন হবে তেমন সম্ভাবনাও দেখা যাচ্ছে না। বরঞ্চ প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের গণতন্ত্রের প্রতি আস্থায় ঘাটতির সুযোগ নিয়ে তিনি গাছেরও খাচ্ছেন, তলারও কুড়াচ্ছেন। হত্যার মত গুরুতর অপরাধের মামলায় তাঁর বিচার শেষ হয়েও হয় না। তবে, ৮ ফেব্রুয়ারি রায়ের জন্য অপেক্ষমান খালেদা জিয়ার যে মামলাকে নিয়ে রাজনৈতিক উত্তেজনা তৈরি হচ্ছে সেটি তৈরিতে তাঁর এবং তাঁর দলের উৎসাহে কোন ঘাটতি নেই। তাঁর সহযোগীদের একজন প্রতিমন্ত্রী, মশিউর রহমান রায় ঘোষণার তারিখ ঠিক হওয়ার আগেই জনবক্তৃতায় বলেছেন কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই খালেদা জিয়াকে জেলের ভাত খেতে হবে। তিনি নিজেও খালেদা জিয়াকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন আমাকে আপনারা জেলে পাঠিয়েছিলেন, এখন জেল আপনার খুবই সন্নিকটে।  

সরকারের শরীক, জাতীয় পার্টির এই উৎসাহের সঙ্গে অবশ্য সরকারের অন্যান্য মন্ত্রী এবং সরকারী দল আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীদের প্রকাশিত উচ্ছাসের কোনো তুলনা চলে না। গৃহায়ন মন্ত্রী মোশাররফ হোসেন মামলার রায়ের একদিন আগে অর্থাৎ ৭ ফেব্রুয়ারি থেকেই দলীয় নেতাকর্মীদের রাস্তায় দখল নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। এতিমের টাকা মেরে খাওয়ার জন্য খালেদা জিয়ার সর্ব্বোচ্চ সাজা চেয়ে ঢাকা শহরের দেয়ালে দেয়ালে পোস্টার পড়েছে।  পোস্টারের ভাষা এবং মন্ত্রীদের কথায় খালেদা জিয়াকে ইতোমধ্যেই দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। এখন তাই তাঁদের দাবিটা সর্ব্বোচ্চ সাজার।

মামলাটি নিয়ে বিএনপিও রাজনৈতিক পদক্ষেপ নেওয়া থেকে পিছিয়ে নেই। দলের নেতারা ৮তারিখে দলের নেতাকর্মীদের রাজপথে নামার নির্দেশনা দিয়েছেন। খালেদা জিয়ার আদালতে যাওয়া-আসার সময়ে শত শত নেতাকর্মী দলবেঁধে যেভাবে তাঁকে অনুসরণ করেন তাতে রাজনৈতিক শক্তি প্রদর্শনের উদ্দেশ্য থাকে। গ্রেপ্তার-মামলা-হয়রানির পরও যে দল বিলুপ্ত হয়ে যায়নি এবং তাঁদের নেত্রী যে একা নন সেটি বোঝানোর চেষ্টাতেই তাঁদের এই দলীয় রুটিন। সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলেও শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মামলার শুনানির সময় আওয়ামী লীগের দলীয় কাজের রুটিনের অংশ ছিল সংসদভবন এলাকায় জড়ো হওয়া। এই কর্মসূচির সময়েই গতসপ্তাহে পুলিশের সঙ্গে বিএনপি কর্মীদের যে হাঙ্গামা হয় সেটিও এই উত্তেজনা কয়েকগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল পুলিশের ওপর হামলাকারীরা দলের কেউ নয় বললেও তাঁর সহযোগী রিজভি বলেছেন উল্টো কথা। তবে, পুলিশের ওপর হামলাকারীরা বিএনপির হোক অথবা অন্য কোন অর্ন্তঘাতক হোক পরিণতিটা দলটির জন্য যে ভালো হয়নি সেকথাটি তাঁরাও স্বীকার করছেন। দলটি তার জাতীয় কমিটির সভা আয়োজনেও বাধার মুখে পড়েছে। দলটির সভা আয়োজনে এধরণের বাধা সৃষ্টিতেও রাজনৈতিক উত্তাপ বেড়েছে।

বাংলাদেশে রাজনৈতিক দলের নেতৃস্থানীয়দের বিচারের অভিজ্ঞতা খুবই তিক্ত এবং কষ্টকর। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময়ে মানবতাবিরোধী অপরাধ করার দায়ে যাদের বিচার হয়েছে তাদের কথা এখানে স্মরণ করা যেতে পারে। শুধু সাঈদীর রায়কে কেন্দ্র করে যত প্রাণহানি এবং সম্পদনাশের ঘটনা ঘটেছে তা রীতিমত একটি দু:স্বপ্নের বিষয়। এরকম অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে আইনশৃংখলাবাহিনীর প্রস্তুতি স্বাভাবিক এবং প্রত্যাশিত বিষয়। কিন্তু, ক্ষমতাসীন দলের রাজপথ দখলে রাখার প্রস্তুতি মোটেও স্বাভাবিক নয়। বরং, তাতে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যই প্রতিফলিত হয়।

খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মোট মামলার সংখ্যা তিন ডজনেরও বেশি। এগুলোর মধ্যে দূর্নীতির মামলা দশটির মত। আর বাকিগুলো হত্যা এবং নাশকতার হুকুমদাতা হিসাবে অভিয়োগ। দূর্নীতির মামলাগুলোর মধ্যে বিস্ময়করভাবে সবচেয়ে কম আর্থিকমূল্য যে অভিযোগের সেটিই হচ্ছে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট-এর মামলা। শতকোটি টাকার দূর্নীতির মামলা রেখে এই মামলাটি অগ্রাধিকার পাওয়ার বিষয়টি উপেক্ষণীয় কিনা সেই প্রশ্নটি মোটেও গুরুত্বহীন নয়। এতিমের টাকা মেরে খাওয়ার জন্য শাস্তি দাবির পোস্টারে তার আলামত সুস্পষ্ট। রাজনৈতিক প্রচারে বিশেষ করে ভোটের রাজনীতিতে এটি চলবে ভালো।

মামলায় দোষী অথবা নির্দোষের সিদ্ধান্তগ্রহণের ভার ও এখতিয়ার একান্তভাবেই আদালতের। গণমাধ্যমে এসব অভিযোগের সত্যাসত্য, স্বাক্ষ্যপ্রমাণের গুণাগুণ বা বিশ্বাসযোগ্যতার বিচার একেবারেই অনুচিত। সুতরাং, সেসব দিক আমি সচেতনভাবে পরিহার করে এই মামলার রাজনৈতিক বিতর্কের দিকটিতেই আলোচনা সীমিত রাখবো। আদালতে খালেদা জিয়ার পক্ষে দলের অনুসারী এবং আইনপেশায় শীর্ষস্থানীয় সাত-আটজন মামলাটিতে অভিযুক্তের পক্ষ সমর্থন করে বক্তব্য তুলে ধরেছেন। তারপর খালেদা জিয়া নিজেও কয়েকদিন ধরে দীর্ঘ বক্তব্য দিয়েছেন যার অনেকটাই রাজনৈতিক। আদালতে তিনি বলেছেন সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার (২০০৭-২০০৮)  সাবেক দুই প্রধানমন্ত্রীকে নাজেহাল করে তাদের উৎখাত করতে মাইনাস টু ফর্মুলা বাস্তবায়নের জন্য অনেকগুলো মামলা দায়ের করে। শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মামলাগুলো তাঁর ভাষায় জাদুর বলে বাতিল হয়ে উল্লেখ করে তিনি দাবি করেন একইধরণের অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে বিচারাধীনে এই মামলাটি নিষ্পত্তিতে তাড়াহুড়ো রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। আদালতে তিনি যেভাবে বৈপরীত্য বোঝানোর চেষ্টা করেছেন কূটনীতিকদের কাছেও সেই একই বার্তা দেওয়া হয়েছে।

মামলায় আত্মপক্ষ সমর্থনে খালেদা জিয়া তাঁর বিরুদ্ধে এই মামলাটিকে রাজনৈতিক মামলা হিসাবে তুলে ধরার চেষ্টায় কতটা সফল হয়েছেন বলা মুশকিল। কিন্তু, গত কয়েকদিনে ক্ষমতাসীন দল ও তার সহযোগীদের বক্তৃতা-বিবৃতি ও কার্য্যক্রমে মামলাটির ওপর যে অনেক বেশি রাজনৈতিক রং পড়েছে তাতে সন্দেহ নেই।  এধরণের রাজনৈতিক বিতর্কে কে বেশি লাভবান হবেন সেবিষয়েও ইতোমধ্যে বিস্তর আলোচনা হয়েছে।  রাজনীতিকদের জন্য ক্ষমতার আসন এবং কারাগারের মধ্যেকার দূরত্ব খুব সামান্যই। আবার, ছোটখাটো দূর্নীতির অভিযোগে জেল খেটে রাজনীতিকদের ভাবমূর্তি বা ইমেজ বাড়ার নজিরও কম নেই। দন্ডিত হওয়ার পর আপিল প্রক্রিয়ার সুযোগ নিয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ ও জোরেশোরে রাজনীতি করার দৃষ্টান্ত বর্তমান ক্ষমতাসীন দলেও অনেক আছে। অনেকেই তাই বলছেন যে খালেদা জিয়া এই মামলায় খালাস পেলে যেমন রাজনৈতিক হয়রানির দাবির বিশ্বাসযোগ্যতা বাড়বে, তেমনি দন্ডিত হলে ন্যায়বিচার না পাওয়ার দাবিতে তাঁর অনুসারীরা আরও সংগঠিত হবেন।

প্রায় বারো বছর ক্ষমতার বাইরে থাকার সময়ে বিএনপিকে ভাঙ্গার একাধিক চেষ্টা ব্যর্থ হলেও ক্ষমতাসীন জোটের একাংশের ধারণা এবারে দলভাঙ্গা ত্বরান্বিত হবে। বিশেষ করে জোটের সহযোগী সাবেক সেনাশাসক জেনারেল এরশাদের আশা বিএনপি দূর্বল হলে তাঁর দল লাভবান হবে এবং আওয়ামী লীগের বিকল্প হতে পারবে। আওয়ামী লীগের সঙ্গে সখ্যতা এবং অংশীদারত্বের সমসাময়িক ইতিহাসের পটভূমিতে তাঁর এই আশা দূরাশাই রয়ে যাবে বলে মনে হয়। আওয়ামী লীগের প্রতিপক্ষ যে এখনও বিএনপি সেটি অনুধাবেন করার কারণেই সম্ভবত খালেদা জিয়ার মামলা ঘিরে এতো রাজনৈতিক উত্তেজনা। দূর্ভাগ্যের বিষয় হলো এধরণের উত্তেজনায় ন্যায়বিচার বা অবিচার বড় না হয়ে রাজনীতিটাই বড় হয়ে দেখা দেয়।
(৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮‘র প্রথম আলোয় প্রকাশিত কলাম।)




মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

Bangladesh is vexed by and wary of Modi’s unstinting support to Sheikh Hasina

In the run-up to Bangladesh’s general election in January 2014, New Delhi took the unusual step of sending a top diplomat from its external affairs ministry to Dhaka to persuade General Hussain Muhammaed Ershad, the country’s former military ruler, to participate in the polls. Big questions had been raised over the fairness of the election. The incumbent government was led by Sheikh Hasina’s Awami League, and the leader of the opposition Bangladesh Nationalist Party (BNP) had been placed under virtual house arrest, with police and roadblocks around her house in Dhaka. The BNP and other opposition parties were threatening to boycott the election. Ershad, the head of the Jatiya Party, was perceived as a potential kingmaker, able to bring to power whichever of Bangladesh’s two main parties he supported, but he was also threatening to withdraw from the election.  After a decade of Modi’s reign in India, people in Bangladesh are angry at their government cosying up to a Hindutva regime ...

অরাজনৈতিক আন্দোলনের করুণ রাজনৈতিক মূল্য

কোটা সংস্কারের দাবিতে সাধারণ ছাত্র–ছাত্রীদের আন্দোলনে  কদিন ধরে যা ঘটে চলেছে, তা যেমন বেদনাদায়ক, তেমনই নিন্দনীয় ও ক্ষোভের কারণ। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের শিক্ষা দিতে ক্ষমতাসীন সরকারের সমর্থক এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীর হাতে একইদিনে দেশের তিন জায়গায় ছয়জনের প্রাণহানির ঘটনা স্বাধীন বাংলাদেশে বিরল।  এবার আরও যেসব ঘটনা আমাদের স্তম্ভিত করেছে, অভিভাবকদের চোখ অশ্রুসিক্ত করেছে, এসব মৃত্যুর পরও সরকারের রাজনৈতিক দম্ভ বজায় রাখার চেষ্টা, যা আরও প্রাণহানির কারণ হয়েছে। ছয়জন তরুণের প্রাণ বিসর্জনের পরও কোটা সংস্কারের দাবিতে সরকার ”নীতিগতভাবে একমত” – একথাটি বলে  আলোচনায় না ডেকে সময়ক্ষেপণ করেছে। আইনমন্ত্রী কথাটি যখন বললেন, তার আগেই আরও জীবন গেল, শত শত মানুষ আহত হলো, দেশের সম্পদ নষ্ট হলো। রাজনৈতিক গরিমা ছাড়া এর আর কোনো কারণ আছে কি? ছাত্রলীগ পরিচয়ে অন্ত্রধারীদের তান্ডব, পুলিশের চরম নিষ্ঠুরতা এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ছাত্রীদের গড়পরতা মারধর ও লাঞ্চিত করার যে দৃশ্যগুলো গণমাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে, তা কোনো অভিভাবকের পক্ষেই ভোলা সম্ভব নয়। এসব ঘটনার বিবরণ উদ্ধৃত না করে শুধু নিষ্ঠুর ...

আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বে স্বৈরশাসকের ফেরা সহজ

  গণতন্ত্রে উত্তরণে ব্যর্থতা ও স্বৈরতন্ত্রের নিকৃষ্টতম রুপ প্রত্যক্ষ করার পর অর্ন্তবর্তী সরকারের মেয়াদকালে যে সব বিষয়ে সংস্কারের আলোপ চলছে, তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে নির্বাচনব্যবস্থা। এরশাদের সামরিক স্বৈরাচারের পতনের পর নির্বাচনকে গণতন্ত্র চর্চার মাধ্যম হিসাবে যেভাবে প্রতিষ্ঠার কথা ছিল, তা থেকে প্রধান দুই দলই বিচ্যূত হয়েছিল। পরিণতিতে নির্বাচন শুধু ক্ষমতা দখলের হিংসাত্মক খেলায় পরিণত হয় এবং শেষ পর্যন্ত শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ সাধারণ মানুষের ভোটের অধিকার হরণ করে নির্বাচনকে নানা রকম প্রহসনে পরিণত করে।  এই সমস্যার এক অতি সরলীকৃত সমাধান হিসাবে বলা হচ্ছে, দ্বিদলীয় রাজনীতির বৃত্ত থেকে বেরিয়ে দেশে সত্যিকার বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে। আর বহুদলীয় গণতন্ত্রের জন্য নির্বাচনব্যবস্থায় আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বের ধারণাকে একমাত্র বা চূড়ান্ত সমাধান হিসাবে তুলে ধরা হচ্ছে।  সংখ্যানুপাতিক বা আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতির নির্বাচনে একটি দল যত শতাংশ ভোট পাবে, সে অনুপাতে তারা সংসদের আসন পাবে। এ আনুপাতিক পদ্ধতিতে প্রার্থীদের নাম দল আগাম ঘোষণা করতেও পারে, আবার না–ও পারে। নাম প্রকাশ করা হলে সেটা হব...