সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

সাংবাদিকতা গুপ্তচরবৃত্তি নয়, অপরাধও নয়

মতপ্রকাশের স্বাধীনতা যে সংকুচিত হতে হতে একটি বৃত্তের মধ্যে আটকা পড়তে যাচ্ছে এই আশংকার কথা বেশ কয়েকবছর ধরেই উচ্চারিত হয়ে আসছে। এখন মন্ত্রীসভায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের খসড়া অনুমোদিত হওয়ার পর আবার নতুন করে এই আলোচনা শুরু হয়েছে। সাংবাদিকতা এবং লেখালেখির পেশায় যাঁরা আছেন তাঁদের প্রতিক্রিয়ায় প্রধানত দুটো ধারা স্পষ্ট হয়েছে।একটি হচ্ছে স্বাধীনভাবে মতপ্রকাশের সুযোগ পুরোপুরি বিলীন হয়ে যাবে এবং ক্ষমতাসীনদের ভাষ্যের বাইরে অন্য কিছু আর প্রকাশ করা সম্ভব হবে না। যাঁরা এমনটি ভাবছেন তাঁদের মধ্যে আতঙ্ক এবং হতাশার ছাপটা স্পষ্ট।  দ্বিতীয় ধারাটি হচ্ছে রাজনৈতিক আনুগত্যের এবং তাঁরা এখনও বিশ্বাস করেন সরকার তাঁদের পরামর্শে কান দেবেন এবং খসড়াটি শেষপর্যন্ত বদলে আইনটি গণমাধ্যমবান্ধব হবে।

মতপ্রকাশের স্বাধীনতা সংকুচিত হওয়ার প্রভাব যে শুধুমাত্র গণমাধ্যমের গন্ডিতে সীমাবদ্ধ থাকে না তা আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক থেকে শুরু করে রাজনৈতিক কর্মী এবং সাধারণ নাগরিকদের অনেকের দন্ডিত হওয়ার ঘটনায় দেখেছি। কিন্তু, সরকারবিরোধী রাজনীতির দৈন্যদশা এবং নাগরিক সমাজের অগ্রসর অংশের মধ্যে দোদুল্যমানতা অথবা সু্বিধাবাদিতার পিছুটানের কারণে কোনো কার্যকর প্রতিবাদ-আন্দোলন গড়ে ওঠেনি।   উদ্বেগ যতটুকু দেখা যাচ্ছে তা মূলত গণমাধ্যমকর্মীদের মধ্যেই। যাঁরা শংকিত তাদের আশংকা সাংবাদিকতা শেষপর্যন্ত সরকারী সংবাদ বিজ্ঞপ্তি পুর্নলিখন এবং সম্পাদনাতেই সীমাবদ্ধ হয়ে পড়বে। রাষ্ট্র, সমাজ, শিল্প-সাহিত্য, ধর্মীয়ভাবনা, ব্যবসা-বাণিজ্য , জীবনযাত্রা ইত্যাদি সবকিছুর ক্ষেত্রেই কর্তৃপক্ষীয় ভাষ্য কিম্বা প্রচলিত ধারণাকে চ্যালেঞ্জ করা দূ:সাধ্য হয়ে পড়বে। সমসাময়িক ঘটনাপ্রবাহের বিবরণও ক্ষমতাসীনদের বিবেচনায় ক্ষতিকর গণ্য হলে তাও প্রকাশ করা সম্ভব হবে না।

সোজা কথায় বাংলাদেশ টেলিভিশন, বেতার, বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা বা তথ্য অধিদপ্তরের ভাষ্য প্রকাশের বৃত্তের মধ্যেই গণমাধ্যম আবদ্ধ হয়ে পড়বে। উন্নয়নের গনতন্ত্রে অবশ্য এটি নতুন কিছু নয়। একারণেই তো আমরা সংসদীয় গণতন্ত্রের সংজ্ঞায় যাকে বিরোধীদল বলা যায় না সরকারী ভাষ্য মেনে তাকেই আমরা বিরোধীদল বলে চলেছি। নির্বাচনে সরকারের বাইরের বৃহত্তম দলটির বিরোধীদলের আসনে বসার কথা থাকলেও মন্ত্রীসভায় থাকা দলকে আমরা সরকারী দল বলছি না। রংপুরের সিটি কর্পোরেশনে সরকারী দল জাতীয় পার্টির প্রার্থী বিজয়ী হলেও সংবাদমাধ্যমে বিজয়ীর ভিন্ন পরিচয় লেখা হচ্ছে। 

নতুন খসড়ার যেসব বিধান শংকার কারণ হচ্ছে সেগুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে তথ্য প্রযুক্তি আইন বা আইসিটি অ্যাক্টের বহুল নিন্দিত ৫৭ ধারার নবরুপে আর্বিভাব। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের আগের খসড়াটিতে ১৯ নম্বর ধারায় ৫৭ ধারার সব উপাদানই ধারণ করা হয়েছিল এবং গতবছরের মাঝামাঝি সময়ে তা নিয়ে বিপুল সমালোচনাও ওঠে। কিন্তু, সেসব সমালোচনায় সরকারের যে কিছুই যায় আসে না তা এই পরিবর্তিত খসড়াতে তার সুস্পষ্ট প্রতিফলন দেখা যায়। মন্ত্রীসভায় পেশ করা সারসংক্ষেপে কোনধরণের রাখঢাক ছাড়াই বলা হয়েছে যে বিষয়টি একইসাথে দন্ডবিধির ধারা ৪৯৯ এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইন ২০০৬ এর ধারা ৫৭ এর সাথে সম্পর্কযুক্ত। বিদ্যমান বাস্তবতার নিরিখে উক্ত ধারা ৫৭ এর উপাদানসমূহ বিবেচনাক্রমে পৃথক ৪টি ধারায় (ধারা ২৫, ২৮, ২৯ এবং ৩১) বিন্যস্ত করা হয়েছে। অথচ, আইনমন্ত্রী এবং তথ্যমন্ত্রীর গতবছরের বক্তব্য-বিবৃতিতে ধারণা তৈরি হয় যে সরকার ৫৭ ধারার কালোদিকগুলো স্বীকার করে নিয়ে তা বাতিলে সম্মত হয়েছে। নাকি, শেষপর্যন্ত আমলাদেরই জয় হয়েছে।

আর দ্বিতীয় বিধানটি হচ্ছে ধারা ৩২, যাতে বলা হয়েছে যদি কোনো ব্যাক্তি বেআইনী প্রবেশের মাধ্যমে কোনো সরকারী, আধা-সরকারী, স্বায়ত্ত্বশাসিত বা সংবিধিবিদ্ধ কোনো সংস্থার কোনো ধরনের অতি গোপনীয় বা গোপনীয় তথ্য-উপাত্ত কম্পিউটার , ডিজিটাল ডিভাইস, কম্পিউটার নেটওর্য়াক বা অন্য কোনো ইল্ক্ট্রেনিক মাধ্যমে ধারণ, প্রেরণ বা সংরক্ষণ করেন বা করিতে সহায়তা করেন, তাহা হইলে উক্ত ব্যাক্তির অনুরুপ কার্য হইবে কিম্পিউটার গুপ্তচরবৃত্তির অপরাধ।স্পষ্টতই এই আইন হলে আমলা এবং ক্ষমতাসীন দলের লোকজন ছাড়া অন্য যে কারোপক্ষেই সরকারী বা আধা-সরকারী কোন দপ্তরে ক্যামেরা, মোবাইল ফোন  বা পেন ড্রাইভের মত ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার এখন বিপজ্জনক হয়ে পড়বে। এমনকি, ওই দপ্তরের ইমেইল বা কম্পিউটার নেটওর্য়াক ব্যবহার করে কাউকে কোনো তথ্য বা নথির কপি পাঠানোও গুপ্তচরবৃত্তির অপরাধ হিসাবে গণ্য হতে পারে।

৩২ ধারা বহাল হলে ভেবে দেখুন তো সেই গুণে গুণে ঘুষ খাওয়া সরকারী কর্মকর্তার অপকর্মের ছবি তুলতেও তাঁর অনুমতি চাইতে হতো এবং পরে ডিজিটাল গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে সংশ্লিষ্ট সাংবাদিককে জেলের ভাত খেতে হতো। অতীব ক্ষমতাধর সাংসদের ফারমার্স ব্যাংকের অর্থলোপাটের তথ্য, খুনের মামলার ভিআইপি আসামীদের হাসপাতালে বিলাসী জবিনযাপন কিম্বা হলমার্কের কেলেংকারি, ক্রেস্টের স্বর্ণেরর ১২ আনাই মিছে, ভুয়া সনদে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় সচিব হওয়ার কেলেংকারির কোন খবরই তাহলে আলোর মুখ দেখতো কিনা সন্দেহ। যেকোনো অপকীর্তি, অনিয়ম বা বিব্রতকর বিষয় গোপন রাখার তাগিদ অবশ্য আমলাদের চেয়ে রাজনীতিকদের কোনো অংশেই কম নয়। সম্ভবত সেকারণেই সরকারের একজন জেষ্ঠ মন্ত্রীও  বলতে পেরেছেন যে আপনারা গণমাধ্যমে যেভাবে বিভিন্ন সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে রিপোর্ট করেন, তাতে তাদের মান-ইজ্জত থাকে না। তাদের সম্মান ক্ষুণ্ণ হয়। তারা তো জনপ্রতিনিধি। এ আইনের বলে এখন হয়তো এমন পরিস্থিতি থেকে রেহাই পাওয়া যেতে পারে ( ডিজিটাল গুপ্তচর শব্দ নিয়ে বিব্রত সরকার, বাংলা ট্রিবিউন , ৩০ জানুয়ারি, ২০১৮) ।’ 

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের খড়গ যে শুধু সাংবাদিকতার ওপর নামছে তা নয়, এটি পুরোসমাজেরই মুক্তচিন্তা এবং স্বাধীনচিন্তা ও মতপ্রকাশের পথ বাধা তৈরি করবে। তবে, সমাজের অন্যান্য অংশের চেয়ে সংবাদমাধ্যমের জন্য চ্যালেঞ্জটা একটু বেশিই। দূর্যোগ ব্যবস্থাপনায় যাঁরা বিশেষজ্ঞ তাঁরা অবশ্য সবসময়েই সংকটকে সুযোগ হিসাবে বিবেচনা করে থাকেন। কথাটি অনেকের কাছে ধূর্ত শিকারীর মত সুযোগসন্ধানীর দৃষ্টিভঙ্গী বলেও মনে হতে পারে। কিন্তু, বাস্তবতা হচ্ছে আপনি যত বেশি বাধা-বিপত্তি মোকাবেলায় সক্ষম হবেন ততই আপনার যোগ্যতা প্রমাণিত হবে এবং আপনার প্রতি অন্যদের আস্থা বাড়বে। সুতরাং, প্রকৃত  সাংবাদিকতার জন্য এটি এমন একটি সুযোগ যার সদ্ব্যবহার করতে পারলে যোগ্যরা আরও আস্থা অর্জন করবে

সাংবাদিকদের স্বার্থরক্ষায় কাজ করা বৈশ্বিক সংস্থা, কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্টস, সিপিজে যাঁকে মুক্ত সাংবাদিকতার শত্রু হিসাবে অভিহিত করেছিল সেই ডোনাল্ড ট্রাম্প এখন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট। ট্রাম্পের নির্বাচন দেশটির মূলধারার গণমাধ্যমের জন্য কঠিন চ্যালেঞ্জ বয়ে এনেছে। কেননা, ট্রাম্প প্রশাসন যেকোন বিব্রতকর তথ্য প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গেই তথ্য ফাঁসের উৎস খুঁজে বের করাকেই অগ্রাধিকার হিসাবে গ্রহণ করেছে। তথ্য ফাঁসের তদন্ত এবং বিচার তাঁর কাছে যতটা গুরুত্বপূর্ণ বিব্রতকর তথ্যগুলো ততটা নয়। সেগুলোকে ভুয়া খবর বলে উড়িয়ে দেওয়ার অভ্যাসটা এখন তাঁর ভালোই রপ্ত হয়েছে। কিন্তু, গণমাধ্যম এখন সেটিকেই চ্যালেঞ্জ হিসাবে নিয়েছে। তারা প্রায় প্রতিদিনই নতুন নতুন তথ্য ফাঁস করে চলেছে। এক্ষেত্রে এগিয়ে আছে নিউইয়র্ক টাইমস এবং ওয়াশিংটন পোস্ট। শুধুমাত্র প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এবং তাঁর প্রশাসনের কাজ-কারবারের বিষয়ে অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার জন্য পত্রিকাটি আট কোটি ডলার বরাদ্দের কথা জানিয়েছিল। আর, সেই অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার সুফলও পত্রিকাটি পেতে শুরু করেছে, তার কমতে থাকা প্রচারসংখ্যা এখন আবারও বাড়ছে , আয়বৃদ্ধিও ঘটছে।

যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানে অবশ্য মতপ্রকাশের যে অসীম স্বাধীনতার গ্যারান্টি দেওয়া আছে সেরকম কিছু আমরা কল্পনাও করতে পারি না। কিন্তু, বস্তুনিষ্ঠতা এবং জনস্বার্থের নিরিখে সাংবাদিকতা সাধারণত নির্বিঘ্ন এবং ঝুঁকিমুক্ত নয়। পেশাগত ঝুঁকি বা প্রফেশনাল হ্যাজার্ডের শিকার হয়ে বালাদেশে গতবছরেও প্রাণ দিতে হয়েছে সাংবাদিক আব্দুল হাকিমকে, শারীরিক লাঞ্ছনা এবং মানহানির মামলায় হয়রানির শিকার হয়েছেন কতজন তার তালিকা দিতে গেলে এই নিবন্ধের আকার দ্বিগুণও হয়ে যেতে পারে। প্রযুক্তির অভূতর্পূব উন্নতিতে এখন সাধারণ নাগরিকরাও সাংবাদিকতায় অবদান রাখতে সক্ষম।মোবাইল ফোনের ছবি, ভিডিও, ধারণকৃত কথোপকথন এখন হরহামেশাই সংবাদের বিষয় হয়ে উঠছে।

মূলধারার সংবাদমাধ্যমে অনুসন্ধানী সাংবাদিকতায় এখন নতুন করে নজর দেওয়া প্রয়োজন। এজন্যে প্রয়োজন আইনগত লড়াই, নিরাপত্তা এবং ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার জন্য অর্থের সংস্থান ও প্রস্তুতি। কালাকানুনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের এই পথটিতে ঝুঁকিটা একটু বেশিই, কিন্তু এর কোনো বিকল্প নেই। বস্তুনিষ্ঠতাই প্রমাণ করবে সাংবাদিকতা গুপ্তচরবৃত্তি নয়, অপরাধ তো নয়ই।

(১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ প্রথম আলো পত্রিকায় বিশ্বায়নের কাল কলামে প্রকাশিত।)


মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বে স্বৈরশাসকের ফেরা সহজ

  গণতন্ত্রে উত্তরণে ব্যর্থতা ও স্বৈরতন্ত্রের নিকৃষ্টতম রুপ প্রত্যক্ষ করার পর অর্ন্তবর্তী সরকারের মেয়াদকালে যে সব বিষয়ে সংস্কারের আলোপ চলছে, তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে নির্বাচনব্যবস্থা। এরশাদের সামরিক স্বৈরাচারের পতনের পর নির্বাচনকে গণতন্ত্র চর্চার মাধ্যম হিসাবে যেভাবে প্রতিষ্ঠার কথা ছিল, তা থেকে প্রধান দুই দলই বিচ্যূত হয়েছিল। পরিণতিতে নির্বাচন শুধু ক্ষমতা দখলের হিংসাত্মক খেলায় পরিণত হয় এবং শেষ পর্যন্ত শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ সাধারণ মানুষের ভোটের অধিকার হরণ করে নির্বাচনকে নানা রকম প্রহসনে পরিণত করে।  এই সমস্যার এক অতি সরলীকৃত সমাধান হিসাবে বলা হচ্ছে, দ্বিদলীয় রাজনীতির বৃত্ত থেকে বেরিয়ে দেশে সত্যিকার বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে। আর বহুদলীয় গণতন্ত্রের জন্য নির্বাচনব্যবস্থায় আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বের ধারণাকে একমাত্র বা চূড়ান্ত সমাধান হিসাবে তুলে ধরা হচ্ছে।  সংখ্যানুপাতিক বা আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতির নির্বাচনে একটি দল যত শতাংশ ভোট পাবে, সে অনুপাতে তারা সংসদের আসন পাবে। এ আনুপাতিক পদ্ধতিতে প্রার্থীদের নাম দল আগাম ঘোষণা করতেও পারে, আবার না–ও পারে। নাম প্রকাশ করা হলে সেটা হব...

How to Describe the Awami League Accurately?

In an article titled ‘How Not to Describe the Awami League’ , published in this paper, British journalist David Bergman rightly underscores the importance of accuracy in labeling a political party—particularly when such labels carry potential legal consequences. Those familiar with Bergman’s work over the years know that he has consistently taken on politically sensitive and controversial subjects, often at significant personal and professional cost. His courage and commitment to journalistic integrity deserve recognition. Bergman is correct in asserting that “while serious criticisms of the Awami League are both valid and necessary, they must be proportionate and grounded in fact.” His analysis focuses primarily on the legal validity and appropriateness of labeling the Awami League as “fascist” or “Nazi.” He argues that comparing the party to the Nazi regime trivialises the scale of Nazi atrocities and misrepresents the complexities of Bangladeshi politics. Indeed, any historical comp...

ঘৃণা চাষের উর্বর ভূমি ও রাজনৈতিক সংকট

  দেশে একের পর এক অস্থিরতা সৃষ্টির বেশ কয়েকটি ঘটনা আমরা প্রত্যক্ষ করলাম। এগুলোর কোনোটিই প্রত্যাশিত ছিল না। অনেকেই এগুলো নির্বাচন যাতে প্রধান উপদেষ্টার প্রতিশ্রুত সময়ে না হয়, তার জন্য পরিস্থিতি ঘোলাটে করার অপচেষ্টা হিসাবে বর্ণনা করেছেন। পরিকল্পিতভাবে অস্থিরতা সৃষ্টির পিছনে প্রধানত: দুটি শক্তিকে দায়ী করা হচ্ছে – একটি হচ্ছে পতিত স্বৈরাচার আওয়ামী লীগের পলাতক নেতৃত্বের সাংগঠনিক উদ্যোগ; অপরটি হচ্ছে, বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ার (সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম) সুবাদে সমাজে প্রভাব বিস্তারে দক্ষতা অর্জনকারী কিছু প্রভাবক ব্যক্তি বা গোষ্ঠী। এসব প্লাটফর্ম বিদ্বেষ ও ঘৃণা ছড়ানোর সবচেয়ে কার্যকর হাতিয়ারে পরিণত হয়েছে।  আপনি যদি কাউকে অপদস্থ বা হেয় করতে চান, তাহলে তার জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত স্থান সম্ভবত:  সোশ্যাল মিডিয়ার কোনো একটি প্লাটফর্ম – বাংলাদেশে এটি ফেসবুক এবং ইউটিউব। বৈশ্বিক পরিসরে অবশ্য এক্স (সাবেক টুইটার) এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি এগিয়ে আছে। প্রতিবেশী দেশ মিয়ানমারে গণহত্যার শিকার সংখ্যালঘু মুসলিম জনগোষ্ঠী রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে জাতিগত বিদ্বেষ ছড়ানোয় এই সোশ্যাল মিডিয়া কী ভূমিকা রেখেছে, তা জাতিসংঘ তদন্...