এশিয়ার দুই প্রতিদ্বন্দী চীন ও ভারতের আঞ্চলিক
আধিপত্য বিস্তারের রাজনীতি যখন বাংলাদেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের
(ডিএসই) কৌশলগত মালিকানার বিদেশি অংশীদার বাছাইপ্রক্রিয়ায় কালো ছায়া ফেলেছে এটি আর
নতুন কোন খবর নয়। সরকার এবং রাজনৈতিক দলগুলো যে বিস্ময়কর নীরবতা পালন করছে তার রহস্যজনক
হলেও কী একেবারে অপ্রত্যাশিত? নির্বাচনের বছরে নিকট প্রতিবেশিকে ক্ষুব্ধ করতে পারে
এমন প্রতিক্রিয়া রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য এড়িয়ে যাওয়া নিরাপদ বিবেচিত হওয়াই তো স্বাভাবিক! ২০১৪‘র শিক্ষা এতো তাড়াতাড়ি তো ভুলে যাওয়ার কথা নয়। এই
পটভূমিতে নাগরিক সমাজের একটি সংগঠন যে এর প্রতিবাদ জানিয়েছে সেই খবরটি তাৎপর্য্যর্পূণ।
শুক্রবার ট্রান্সপারেন্সি
ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) এক বিবৃতিতে ডিএসইর কৌশলগত বিদেশি অংশীদার বাছাই
প্রক্রিয়ায় ভারতীয় দরদাতা প্রতিষ্ঠানের ‘অবৈধ
হস্তক্ষেপের’ নিন্দা ও
প্রতিবাদ জানিয়েছে । একইসঙ্গে, তারা ভারতীয় দরদাতা প্রতিষ্ঠানের ‘অবৈধ হস্তক্ষেপের’ পটভূমিতে
বাংলাদেশের শেয়ারবাজারের নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠান সিকিউরিটি এক্সচেঞ্জ কমিশনের
(বিএসইসি) ‘অনৈতিক চাপ
সৃষ্টির’ও প্রতিবাদ
জানিয়েছে। সংস্থা বিএসইসির এই অবৈধ হস্তক্ষেপ
বন্ধ করে বাছাইপ্রক্রিয়ায় শীর্ষস্থান পাওয়া প্রতিষ্ঠানকে বাছাই করা ও অবৈধ চাপ
সৃষ্টিকারী দরদাতাকে কালো তালিকাভুক্ত করার আহ্বান জানিয়েছে। এ ছাড়া বিএসইসিতে এই
প্রচেষ্টার সঙ্গে জড়িতদের জবাবদিহি নিশ্চিত করার কথাও বলেছে টিআইবি।
বেসরকারী সংস্থা বা এনজিওগুলো অনেকদিন
ধরেই প্রচন্ড চাপের মধ্যে আছে এবং নানাধরণের হয়রানির শিকার হচ্ছে সেকথা আমরা সবাই
জানি। এই প্রতিকূল পরিবেশের মধ্যেও টিআইবি যে আইনবিরুদ্ধ চাপ প্রয়োগের জবাবদিহিতা
দাবি করতে এগিয়ে এসেছে সেজন্যে তাদেরকে সাধুবাদ দিতেই হয়। কিন্তু, প্রশ্ন হচ্ছে
রাজনৈতিক মহলের নীরবতা কী উপেক্ষণীয়?
সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে সাংহাই
এবং শেনজেন স্টক এক্সচেঞ্জ যৌথভাবে যে দর প্রস্তাব করেছে তার প্রায় চল্লিশ শতাংশ
কম দাম প্রস্তাব করেছে ভারতের ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জ, এনএসই। কিন্তু, এনএসই‘র আব্দার চীনা প্রতিষ্ঠান দুটির দরপ্রস্তাব
নাকচ করে কৌশলগত অংশীদারত্ব তাদেরকে দেওয়া হোক। ভারতের পুরোনো এবং শীর্ষ শেয়ারবাজার
হচ্ছে দালাল স্ট্রিটের বোম্বে স্টক এক্সচেঞ্জ (বিএসই)। ভারতের পুঁজিবাজারে এনএসইর অবস্থান
দ্বিতীয় এবং এটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে মাত্র ১৯৯৪ সালে।
এনএসই‘র প্রস্তাবে আবার বাংলাদেশের একটি
প্রতিষ্ঠানও অংশীদার। ফ্রন্টিয়ার বাংলাদেশ নামের প্রতিষ্ঠানটির বাহামাসেও
রেজিষ্ট্রেশন আছে। করফাঁকির জন্য যেসব দ্বীপরাষ্ট্রের সুখ্যাতি আছে সেসব দেশের
পুঁজিপাচারের তথ্য ফাঁস করা প্যারাডাইস পেপার্সে বাংলাদেশের এই প্রতিষ্ঠানটিরও নাম
আছে। অন্যদিকে, বিশ্বের প্রধান দশটি শেয়ারবাজারের মধ্যে সাংহাই স্টক এক্সচেঞ্জ এবং
শেনজেন স্টক এক্সচেঞ্জ দুটিরই মালিকানায় আছে চীনা সরকার।
চীন এবং ভারতের শেয়ার বাজারগুলোর সঙ্গে
ঢাকার শেয়ার বাজারের কোনো তুলনা চলে না। ঢাকার বাজারের বিনিয়োগের পরিমাণ এবং তার
বাজারমূল্য বলা চলে সামান্যই। কলম্বো এবং করাচির শেয়ার বাজার ঢাকার চেয়ে অনেক
এগিয়ে। সুতরাং, ঢাকার শেয়ার বাজারের কৌশলগত অংশীদারত্ব গ্রহণে চীন এবং ভারতের
আগ্রহ শুধুই ব্যবসায়িক এমনটি মনে করা কঠিন। ব্যবসায়িক সম্পর্কের মাধ্যমে রাজনৈতিক
ঘনিষ্ঠতা অর্জনের লক্ষ্য থাকাও স্বাভাবিক।
সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট (China battles India for stake in Bangladesh’s
biggest stock exchange)
এবং যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য বিষয়ক প্রকাশনা ফোর্বসেও (Why Are China And India Vying For A Stake In Bangladesh's Stock Market?) এই দুই এশীয় প্রতিদ্বন্দীর পারস্পরিক রাজনৈতিক আকাঙ্খার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে। বাস্তবতা হচ্ছে বাংলাদেশের উন্নয়ন চাহিদা পূরণে আর্থিক সহায়তা দেওয়ার ক্ষেত্রে চীনের সার্মথ্য এবং আগ্রহ ভারতের তুলনায় অনেক বেশি। অন্যদিকে, ভারতের বাণিজ্য ও তাদের রাষ্ট্রীয় অখন্ডতা ও নিরাপত্তার প্রয়োজনে বাংলাদেশের গুরুত্ব ব্যাপক।
এবং যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য বিষয়ক প্রকাশনা ফোর্বসেও (Why Are China And India Vying For A Stake In Bangladesh's Stock Market?) এই দুই এশীয় প্রতিদ্বন্দীর পারস্পরিক রাজনৈতিক আকাঙ্খার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে। বাস্তবতা হচ্ছে বাংলাদেশের উন্নয়ন চাহিদা পূরণে আর্থিক সহায়তা দেওয়ার ক্ষেত্রে চীনের সার্মথ্য এবং আগ্রহ ভারতের তুলনায় অনেক বেশি। অন্যদিকে, ভারতের বাণিজ্য ও তাদের রাষ্ট্রীয় অখন্ডতা ও নিরাপত্তার প্রয়োজনে বাংলাদেশের গুরুত্ব ব্যাপক।
কিন্তু, এই দুই উদীয়মান বিশ্বশক্তির
পারস্পরিক প্রতিদ্বন্দিতার মুখে বাংলাদেশের অবস্থান নিয়ে কোনো আলোচনাই নেই। দেশের
সার্বভৌমত্ব সুরক্ষার প্রশ্ন নিয়ে রাজনীতিকরা দিনের পর দিন পারস্পরিক দোষারেপোর
রাজনীতি করলেও দেশের আর্থিক খাতের একটি গুরুত্বর্পূণ প্রতিষ্ঠানে অনাকাঙ্খিত বিদেশি
হস্তক্ষেপের বিষয়ে তাঁরা একেবারেই নিশ্চুপ। রাজনৈতিক দলগুলোর এই সুবিধাবাদিতার
বিপরীতে নাগরিক সমাজের গুরুত্ব কোথায় টিআইবি অন্তত সেটা প্রমাণ করেছে।
BSEC published its reaction to TIB's report which seems ridiculously emotive. Its claim that it is unaware of the happenings or contents of the matter is difficult to imagine.This is a serious issue not only for the DSE alone.
উত্তরমুছুনSad state of affairs. BSEC has never been an effective regulator and it continues to be so. Thank you for your comment.
মুছুন