সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

ইভিএম নিয়ে কমিশনের অহেতুক একগুঁয়েমি

সুষ্ঠু, অবাধ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশন তার সিদ্ধান্ত প্রতিপালনে দৃঢ় বা অবিচল থাকবে, সেটাই সবার প্রত্যাশা। কোনো ধরনের রাজনৈতিক চাপের মুখে নমনীয়তা দেখিয়ে বিতর্কিত হওয়ার ঝুঁকি না নেওয়াই তাদের জন্য প্রত্যাশিত। সুতরাং, ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহারের বিষয়ে তাদের সিদ্ধান্তে অনড় থেকে তারা হয়তো আশা করছে, জাতি তাদের ধন্যবাদ জানাবে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে তাদের প্রাপ্য দাঁড়াচ্ছে উল্টো। কেননা, নির্বাচনের প্রতিদ্বন্দ্বী সব পক্ষের মধ্যে একমাত্র ক্ষমতাসীন দল ছাড়া অন্য সবাই এই হঠাৎ চাপিয়ে দেওয়া উদ্যোগে আপত্তি জানিয়েছে। অথচ, কমিশন অভ্যন্তরীণ ভিন্নমত এবং সংখ্যাগরিষ্ঠের আপত্তি উপেক্ষা করে ছয়টি আসনের ৯০০-এর মতো কেন্দ্রে ইভিএম ব্যবহারের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করেছে।

বিতর্কিত ইভিএম ব্যবহারের প্রশ্নে কমিশন আপাতদৃষ্টে যে অনমনীয় অবস্থান নিয়েছে, তা তাদের প্রতি আস্থার বদলে সন্দেহ ও সংশয় বাড়াচ্ছে। এই সন্দেহ ও সংশয়ের কারণ কিন্তু কমিশন নিজেই। ২২ নভেম্বর পুলিশ কর্মকর্তাদের সভায় নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদারের বক্তব্য থেকে আমরা জেনেছি যে জুলাই মাসে অনুষ্ঠিত বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে পুরো কমিশন তাদের ওপর অর্পিত সাংবিধানিক দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছে। প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ অন্য কমিশনারদের উপস্থিতিতেই মাহবুব তালুকদার বলেছেন যে দুপুরের আগেই কমিশন বরিশাল সিটি করপোরেশনের পুরো নির্বাচন বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েও তা কার্যকর করতে পারেনি। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে—এমন আশঙ্কার কারণে তারা সেদিন তা করেনি। অর্থাৎ, স্পষ্টতই বরিশালের নির্বাচনে যা ঘটেছে, তা কলঙ্কজনক। এ রকম কলঙ্কের দায়ভার যে কমিশনের, তারা জাতীয় নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের একতরফা সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিচ্ছে। সাংবিধানিকভাবে ক্ষমতায়িত কমিশন একটি ছোট শহরে যেখানে অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির কাছে আত্মসমর্পণ করে, সেখানে জাতীয় পরিসরে কোনো ধরনের অপ্রত্যাশিত চাপের কাছে যে তারা হার মানবে না, সেটা বিশ্বাস করা কঠিন।
যেকোনো গণতন্ত্রে নির্বাচন হচ্ছে সার্বভৌমত্বের প্রকাশ। কেননা, সার্বভৌমত্বের মালিক হচ্ছে দেশের জনগণ। বরিশাল ছাড়াও গাজীপুর ও খুলনা সিটি করপোরেশনের নির্বাচনগুলোর বিষয়ে মাহবুব তালুকদারের বক্তব্য আমাদের নির্বাচনব্যবস্থার সততা ও পবিত্রতাকে গুরুতরভাবে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।
নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের উদ্যোগটি নিয়ে সন্দেহ সৃষ্টির অন্যতম কারণ, এ বিষয়ে অবিশ্বাস্য তাড়াহুড়া। অক্টোবর মাসে সংসদের অধিবেশন বসলেও ইভিএম ব্যবহারবিষয়ক আরপিওর সংশোধনী সংসদে পেশ না করে রাষ্ট্রপতির অধ্যাদেশ জারির মাধ্যমে কার্যকর করার চেষ্টায় তাড়াহুড়ার বিষয়টি স্পষ্ট। কার্যত ৩০ অক্টোবর জারি করা এ অধ্যাদেশই হচ্ছে ২০১৮ সালের একমাত্র অধ্যাদেশ। বাজেটে বরাদ্দ নেই, বিশেষ বরাদ্দের অনুরোধে সাড়া না পাওয়ার পরও যেকোনোভাবে ইভিএম কেনারও কোনো সন্তোষজনক ব্যাখ্যা নেই।
ইভিএম-বিষয়ক সংশোধনীর অধ্যাদেশের ২৬এ (২)-এ দেখা যাচ্ছে যেখানে ইভিএম ব্যবহার করা হবে, সেখানে ভোটার তালিকার নিরিখে ভোটারের পরিচয় যাচাই, ভোট প্রদান, তার রেকর্ড এবং ইভিএমের ভোট গণনা যেভাবে নির্দেশিত হবে, সেভাবেই পরিচালিত হবে। এ ধারণা করা অযৌক্তিক হবে না যে অধ্যাদেশে এ অস্পষ্টতা রাখার কারণ হচ্ছে, কমিশন যেন প্রয়োজনে তার বিবেচনা অনুযায়ী ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারে। পরিকল্পিত ইভিএম ব্যবহারের যথেষ্ট অভিজ্ঞতা না থাকায় এই পদ্ধতিতে ভোট গ্রহণ ও গণনার প্রক্রিয়ায় কী কী সমস্যা হতে পারে এবং সেগুলো নিরসনের সম্ভাব্য উপায় কমিশনের জানা নেই বলেই সম্ভবত আইনে এই ফাঁক রাখা হয়েছে।
অধ্যাদেশের এই ফাঁকফোকর কাজে লাগিয়েই কি কমিশন বলছে যে জাতীয় পরিচয়পত্র বা স্মার্ট কার্ড ছাড়াও সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তা তাঁর আঙুলের ছাপে ২৫ শতাংশ পর্যন্ত ব্যালট ইস্যু করতে পারবেন? প্রিসাইডিং ও সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তা নিয়োগের প্রক্রিয়ায় পুলিশ যেভাবে রাজনৈতিক আনুগত্যের খোঁজখবর নিয়েছে, তাতে এই ব্যবস্থা যে শতকরা শতভাগ নির্ভেজাল থাকবে, তার নিশ্চয়তা কী?
অধ্যাদেশে বলা হয়েছে, ইভিএম কোনো নেটওয়ার্কে যুক্ত থাকবে না, ইন্টারনেটের সংযোগ থাকবে না, একক মেশিন হিসেবে কাজ করবে, টেম্পারিং বা ম্যানিপুলেশনের কোনো সুযোগ থাকবে না এবং অনুমোদিত সফটওয়্যার ব্যবহার করা হলে তাতে কোনো ধরনের পরিবর্তন করা সম্ভব হবে না। এই মেশিন শুধু এনক্রিপ্টেড এবং ডায়নামিক্যালি কোডেড ডেটা ছাড়া অন্য কিছু তা গ্রহণ করবে না। কমিশনের নিয়োগ করা একদল প্রকৌশলী এই প্রোগ্রাম উদ্ভাবন করেছেন। এর প্রোগ্রামের সোর্স কোডের গোপনীয়তা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে। অধ্যাদেশে আরও বলা হয়েছে যে প্রোগ্রামটির সঠিক ব্যবহারে ভোট গণনায় ইভিএম ছাড়া গৃহীত ভোটের মতো একই ফল মিলবে।
এই অধ্যাদেশের সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে, প্রোগ্রামের সোর্স কোডের গোপনীয়তা। আমরা জানি, ভোটকেন্দ্রে ভোট গ্রহণ শুরুর আগে কাগজের ব্যালট ব্যবহারের ক্ষেত্রে যেভাবে ভোটের বাক্স খালি কি না, ব্যালটগুলো ঠিক আছে কি না, তা প্রার্থীদের প্রতিনিধিদের দেখিয়ে নেওয়ার বাধ্যবাধকতা আছে। ওই নীতি অনুযায়ী, ইভিএমের ক্ষেত্রে প্রার্থীর প্রতিনিধিকে সোর্স কোড দেখিয়ে তার যথার্থতার প্রমাণ দিয়ে তবেই সেটি ব্যবহার করার কথা। কিন্তু অধ্যাদেশে তা গোপন রাখার কথা বলা হয়েছে। ওই সোর্স কোড ব্যবহারে যে ভোটারের ভোট ঠিক জায়গাতেই যাবে, ভোট গ্রহণের পুরো সময়টাতে যন্ত্রটি একইভাবে কাজ করবে, কোনো পর্যায়ে কোনো ধরনের অন্তর্নিহিত প্রোগ্রামিংয়ের কারণে কোনো ভোটকে বিকৃত করবে না—এসব বিষয়ে প্রার্থী অথবা তাঁর প্রতিনিধিকে আশ্বস্ত হতে হবে। তা না হলে ইভিএমের ভোট নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাবে।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নির্বাচন পর্যবেক্ষণে অভিজ্ঞ যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক ইনস্টিটিউট (এনডিআই) বাংলাদেশের প্রাক্-নির্বাচন পরিস্থিতির যে মূল্যায়ন প্রকাশ করেছে, তাতে তারা প্রার্থী, তাঁর এজেন্ট এবং পর্যবেক্ষকদের সোর্স কোড দেখানো, মেশিনের পরীক্ষা ও নিরাপত্তা যাচাই এবং এসব বিষয়ে সব সার্টিফিকেশন পর্যালোচনার সুযোগ দেওয়ার কথা বলেছে। এটাই আন্তর্জাতিক রীতি। পর্যবেক্ষকদের ক্ষেত্রেও জাতিসংঘের নীতিমালা বলছে, নির্বাচনী প্রক্রিয়ার মধ্যে ভোটকেন্দ্র, গণনাকেন্দ্র ও অন্যান্য নির্বাচনবিষয়ক কেন্দ্রের ভেতরে ইলেকট্রনিক এবং অন্যান্য নির্বাচনসংশ্লিষ্ট প্রযুক্তির কার্যক্রম, ব্যালট এবং অন্যান্য স্পর্শকাতর সামগ্রীর পরিবহন পর্যবেক্ষণও এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত। অথচ অধ্যাদেশে কারও জন্যই সে ধরনের কোনো সুযোগ নেই।
ইভিএম ব্যবহারের আরেকটি বড় অত্যাবশ্যকীয় বিষয় হচ্ছে, এসব মেশিন পরিচালনায় প্রশিক্ষণ ও দক্ষতা এবং এই প্রশিক্ষণ ও দক্ষতা শুধু কমিশন নিয়োজিত কর্মকর্তাদের নয়, প্রার্থীদের এজেন্টদেরও প্রয়োজন। কমিশন তার কর্মীদের দক্ষতার সমস্যা সমাধানে শরণাপন্ন হচ্ছে সেনাবাহিনীর। কিন্তু রাজনৈতিক দলগুলো বা স্বতন্ত্র প্রার্থীরা তো তাঁদের এজেন্টদের ক্ষেত্রে সেই সুবিধা পাবেন না। ভোটাররাও ইভিএম ব্যবহারের বিষয়ে খুব বেশি একটা জানার সুযোগ পাননি। তড়িঘড়ি করে আয়োজিত ইভিএম মেলাগুলোতে ভোটার উপস্থিতির হার ও মন্তব্য মোটেও উৎসাহজনক ছিল না।
আমরা জানি, নির্বাচনের সময়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সহায়তার জন্য অতীতের মতো সেনাবাহিনী মোতায়েনের ধারাবাহিকতা রক্ষার দাবি ক্ষমতাসীন দলের আপত্তির কারণে কমিশন নাকচ করে দিয়েছে। তাদের মোতায়েন করা হবে শুধু ‘স্ট্রাইকিং ফোর্স’ হিসেবে। এর ব্যতিক্রম ঘটছে কেবল ইভিএমের ক্ষেত্রে। যেসব কেন্দ্রে ইভিএম ব্যবহার করা হবে, সেসব জায়গায় প্রযুক্তিগত সহায়তা ছাড়াও নিরাপত্তার জন্য সার্বক্ষণিক সেনা মোতায়েন করা হবে। এ ধরনের সিদ্ধান্তকে কমিশনের দ্বিমুখী আচরণ হিসেবে কেউ অভিহিত করলে তা নিশ্চয়ই অযৌক্তিক হবে না।
ভোট গণনার প্রশ্নে অধ্যাদেশের ত্রুটিপূর্ণ ভাষায় আরও যে প্রশ্ন থেকে যায় তা হচ্ছে, মেশিনের প্রোগ্রাম যথাযথভাবে প্রয়োগের বিষয়টি নিশ্চিত না হলে বা ত্রুটিপূর্ণ প্রয়োগ হলে তার পরিণতি কী হবে? কেননা এ ক্ষেত্রে অন্যান্য দেশের মতো ইভিএমের পাশাপাশি কাগজে রেকর্ড না রাখার কারণে (পেপার ট্রেল) ভোট পুনর্গণনার দাবির কোনো কার্যকারিতাই থাকবে না।
ইভিএম কোনো নেটওয়ার্কে যুক্ত এবং তাতে ইন্টারনেটের সংযোগ থাকবে না বলে সেটি নিরাপদ—এ যুক্তিও গ্রহণযোগ্য নয়। কেননা, ইলেকট্রনিক যেকোনো সরঞ্জাম বা যন্ত্র কোনো ধরনের নেটওয়ার্কে যুক্ত না থাকলেও দূরনিয়ন্ত্রণব্যবস্থায় সেটিকে প্রভাবিত করা সম্ভব। প্রযুক্তিগত উন্নতিতে আমাদের চেয়ে অনেক এগিয়ে থাকা ইউরোপীয় দেশগুলোর অধিকাংশই নিরাপত্তা ঝুঁকির কারণে ইভিএম বাদ দিয়ে কাগজের ব্যালটে ফিরে যাচ্ছে।
ইভিএম ব্যবহারের এই সিদ্ধান্তে অস্বচ্ছতা এতটাই যে কোন ছয়টি আসনে তা ব্যবহৃত হবে, সেটিও এখনো চূড়ান্ত হয়নি। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের সম্মতি ছাড়া কোনো আসনে জবরদস্তি করে ইভিএম চাপিয়ে দেওয়া শুধু অযৌক্তিক নয়, অগণতান্ত্রিকও বটে। এ ধরনের অগণতান্ত্রিক সিদ্ধান্তে কমিশনের অনমনীয় অবস্থান মোটেও কাঙ্ক্ষিত নয়। 
(২৬ নভেম্বর, ২০১৮‘র প্রথম আলোয় প্রকাশিত।)

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বে স্বৈরশাসকের ফেরা সহজ

  গণতন্ত্রে উত্তরণে ব্যর্থতা ও স্বৈরতন্ত্রের নিকৃষ্টতম রুপ প্রত্যক্ষ করার পর অর্ন্তবর্তী সরকারের মেয়াদকালে যে সব বিষয়ে সংস্কারের আলোপ চলছে, তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে নির্বাচনব্যবস্থা। এরশাদের সামরিক স্বৈরাচারের পতনের পর নির্বাচনকে গণতন্ত্র চর্চার মাধ্যম হিসাবে যেভাবে প্রতিষ্ঠার কথা ছিল, তা থেকে প্রধান দুই দলই বিচ্যূত হয়েছিল। পরিণতিতে নির্বাচন শুধু ক্ষমতা দখলের হিংসাত্মক খেলায় পরিণত হয় এবং শেষ পর্যন্ত শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ সাধারণ মানুষের ভোটের অধিকার হরণ করে নির্বাচনকে নানা রকম প্রহসনে পরিণত করে।  এই সমস্যার এক অতি সরলীকৃত সমাধান হিসাবে বলা হচ্ছে, দ্বিদলীয় রাজনীতির বৃত্ত থেকে বেরিয়ে দেশে সত্যিকার বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে। আর বহুদলীয় গণতন্ত্রের জন্য নির্বাচনব্যবস্থায় আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বের ধারণাকে একমাত্র বা চূড়ান্ত সমাধান হিসাবে তুলে ধরা হচ্ছে।  সংখ্যানুপাতিক বা আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতির নির্বাচনে একটি দল যত শতাংশ ভোট পাবে, সে অনুপাতে তারা সংসদের আসন পাবে। এ আনুপাতিক পদ্ধতিতে প্রার্থীদের নাম দল আগাম ঘোষণা করতেও পারে, আবার না–ও পারে। নাম প্রকাশ করা হলে সেটা হব...

How to Describe the Awami League Accurately?

In an article titled ‘How Not to Describe the Awami League’ , published in this paper, British journalist David Bergman rightly underscores the importance of accuracy in labeling a political party—particularly when such labels carry potential legal consequences. Those familiar with Bergman’s work over the years know that he has consistently taken on politically sensitive and controversial subjects, often at significant personal and professional cost. His courage and commitment to journalistic integrity deserve recognition. Bergman is correct in asserting that “while serious criticisms of the Awami League are both valid and necessary, they must be proportionate and grounded in fact.” His analysis focuses primarily on the legal validity and appropriateness of labeling the Awami League as “fascist” or “Nazi.” He argues that comparing the party to the Nazi regime trivialises the scale of Nazi atrocities and misrepresents the complexities of Bangladeshi politics. Indeed, any historical comp...

স্বৈরতন্ত্রের কেন্দ্রীভূত ক্ষমতার নিকৃষ্ট পরিণতি

ছাত্র–জনতার অভ্যূত্থানের মুখে পালিয়ে যাওয়া স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার পদত্যাগ নিয়ে রাষ্ট্রপতির কথিত মন্তব্যে যে তীব্র প্রতিক্রিয়া হয়েছে, তা প্রত্যাশিতই ছিল। গত ৫ আগস্ট রাতে জাতির উদ্দেশ্য দেওয়া ভাষণ এবং সম্প্রতি মানবজমিন সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরীর সঙ্গে আলাপচারিতায় পরস্পরবিরোধী মন্তব্য – এই দুইয়ের একটি যে অসত্য, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। বিতর্ক শুরু হওয়ার পর তাঁর দপ্তর যে ব্যাখ্যা দিয়েছে, তা–ও অস্পষ্ট ও ধোঁয়াশাপূর্ণ। তিনি সর্বশেষ বিবৃতিতেও মতিউর রহমান চৌধুরীকে অসত্য কথা বলার বিষয়টি স্বীকার যেমন করেন নি, তেমনি এমন দাবিও করেননি যে তাঁকে ভূলভাবে উদ্ধৃত করা হয়েছে।  ৫ আগস্ট যদি তিনি পদত্যাগপত্র গ্রহণের প্রশ্নে অসত্য বলে থাকেন, তাহলে তা খুবই গুরুতর হিসাবে বিবেচিত হতে বাধ্য। কেননা তা ছিল জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া ভাষণের তথ্য। আবার যদি তিনি মানবজমিন সম্পাদকের কাছে আলাপচারিতায় অসত্য বলে থাকেন, তাহলে তাঁর কাছে যে দেশবাসী প্রশ্নের জবাব চাইতে পারে, তা হলো অর্ন্তবর্তী সরকার যখন সবকিছু গুছিয়ে আনার চেষ্টা করছে, দেশে স্থিতিশীলতা ফেরানোর চেষ্টা চলছে, তখন তিনি কেন এমন বিভ্রান্তি সৃষ্টি করতে চাইছেন? তাঁর উদ্দ...