সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

অদৃশ্য ভয় ও একটি অস্বস্তিকর আলোচনা

বাংলাদেশের সরকার যাকে মর্যাদা ক্ষুণ্ন করার ষড়যন্ত্রবলছে, সংবাদপত্রগুলো তার কোনো বিবরণ প্রকাশ না করতে পারলেও সরকারের ব্যাখ্যা প্রকাশ করেছে। গত ২ ফেব্রুয়ারি পত্রিকাগুলোর পাতায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জারি করা এই ব্যাখ্যা ছাপা হয়। এর আগের ২৪ ঘন্টায় ইলেক্ট্রনিক মাধ্যমগুলোতে একই বিষয়ে দিনভর চলেছে তুমুল আলোচনা-বিতর্ক। এসব আলোচনার কেন্দ্রে আছে কাতারের রাজপরিবারের মালিকানাধীন আল-জাজিরা টেলিভিশনে গত ১ ফেব্রুয়ারি প্রচারিত অল দ্য প্রাইমমিনিস্টারস মেনতথ্যচিত্র।একইদিনে সেনা সদরের পক্ষ থেকে আলাদা করে দেওয়া একটা প্রতিবাদও ছাপা হয়। তবে, সেখানেও একটি ব্যাতিক্রম ছাড়া অন্যান্য অভিযোগেরর বিবরণ ছিল না। অবস্থাটা যে কী রকম অস্বস্তিকর তা তুলে ধরে ইংরেজি দৈনিক দ্য ডেইলি স্টার একটি সম্পাদকীয় প্রকাশ করে, যাতে পত্রিকাটি লিখেছে: কোন বিষয়ে সরকার প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছে তা প্রকাশ না করে কেবলমাত্র সরকারের প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করতে গিয়ে আমরা অদ্ভুত এক পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছি।

যে তথ্যচিত্র নিয়ে এত কথা, সেটির সম্প্রচারের ঘোষণা কয়েকদিন ধরেই দেওয়া হচ্ছিলো। এমনকি, এর বিজ্ঞাপনে যে ৩০ সেকেন্ডের ভিডিও প্রচার করা হয়, তা থেকেই অনুমান করা হচ্ছিলো যে অত্যন্ত স্পর্শকাতর কিছু একটা প্রকাশ হতে যাচ্ছে। সরকার সম্প্রচারে বাধা সৃষ্টি করতে পারে, এমন আশংকাও অনেকে করেছেন। অতীতের বিভিন্নসময়ের মত সম্প্রচার বন্ধ না হওয়ায় তাই অনেকেই কিছুটা বিস্মিতও হন। তবে, অধিকাংশই একমত যে সরকার এক্ষেত্রে সুবিবেচনার পরিচয় দিয়েছে। 

আমার অবশ্য ধারণা এই সিদ্ধান্তের কারণ দুটি। প্রথমত: অতীত অভিজ্ঞতা সম্প্রচার বন্ধ করলেও তথ্য চাপা দেওয়ার চেষ্টা যে সফল হয় না, সেই অভিজ্ঞতা সরকারের হয়েছে। দ্বিতীয়ত: এধরণের স্পর্শকাতর তথ্য প্রকাশ পেলে অন্যান্য গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে যেধরণের প্রতিক্রিয়া হয়, এখানে সেরকম কিছু হবে না। দেশে শক্তিশালী বিরোধী দলও নেই, আর নাগরিক সমাজের অগ্রসর অংশেও তেমন কোনো প্রতিরোধক্ষমতা নেই। এঁদের বেশিরভাগই সরকারের রাজনৈতিক অনুসারী, নয়তো সুবিধাভোগী। একের পর এক নির্বাচনী প্রহসনেও যাঁরা কোনো প্রতিরোধ গড়তে পারেননি, তাঁদের নিয়ে চিন্তার কিছু নেই। গণতান্ত্রিক পন্থায় ক্ষমতার পালাবদলের প্রক্রিয়াই যেখানে অকার্যকর হয়ে গেছে, সেখানে ছোটখাটো কাতুকুতু দিয়ে লাভ হবে না এমন কথা সরকার যৌক্তিকভাবে বলতেই পারে।      

তথ্যচিত্রটিতে যেসব অভিযোগ করা হয়েছে, সেগুলো কোনো দেশীয় সংবাদমাধ্যম পুনরুল্লেখ করেনি। তবে, বিদেশি সংবাদমাধ্যমগুলো বসে থাকেনি। বিবিসি বাংলা প্রথমে শুধু নজরদারির ইজরায়েলী প্রযুক্তি কেনার খবরটি প্রচার করলেও ২৪ ঘন্টা পর আরেকটি প্রতিবেদনে বিষয়গুলো বিস্তারিত তুলে ধরেছে। জার্মান রেডিওর ভিডিও সম্প্রচারেও এর পক্ষে-বিপক্ষে বিশদ আলোচনা হয়েছে। কিন্তু দেশের কাগজগুলো তথ্যচিত্রের সমালোচনা ছাড়া অন্য কোনো আলোচনা করতে পারছে না। এ কেমন ব্যবস্থা?

একারণে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে  সাংবাদিকদের ঢের সমালোচনা চলছে। অনেকের প্রশ্ন দেশের সাংবাদিকরা কী করেন? এরকম অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা দেশে হয়না কেন? আল-জাজিরার সমালোচক এবং সরকারসমর্থকরা আরও একধাপ এগিয়ে বললেন যে তথ্যচিত্রের নামে অতিনাটকীয়তা ছাড়া নতুন কিছু দেখানো হয়নি।কেউ কেউ এমনও দাবি করলেন, এসব কিছু তো সবাই জানে। দলীয় আনুগত্যতাড়িত এধরণের বক্তব্য যে সংবাদমাধ্যমের নিজেদের পায়ে কুড়াল মারা ছাড়া আর কিছু নয়, সেটা তাঁরা ভুলে গেলেন।সংবাদমাধ্যম স্পর্শকাতর তথ্য জেনেও প্রকাশ করেনা - এমন কথা বলে  সরকারের সুবিধাভোগী বলে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আছে, এঁরা তাতে বিশ্বাসযোগ্যতা দিলেন।

বাস্তবে সংবাদমাধ্যমে যে ভীতির পরিবেশ বিরাজ করছে, তার দুটো উদাহরণ এখানে উল্লেখ না করলেই নয়। প্রথমটি হচ্ছে সেনাপ্রধানের নিয়োগলাভের খবরসংক্রান্ত। বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর নামের পোর্টালটি খবরটিতে হত্যামামলায় দন্ডিত এবং রাষ্ট্রপতির অনুকম্পায় মুক্তিপ্রাপ্ত জোসেফ তাঁর ভাই এই তথ্যটুকু উল্লেখ করায় সেদিন অঘোষিত শাস্তি হিসাবে ওয়েবসাইটটি প্রায় ঘন্টা দশেক অচল করে দেওয়া হয়। দ্বিতীয় ঘটনায় টেকনাফে সাবেক মেজর সিনহা মুহম্মদ রাশেদ খান হত্যার তদন্ত রিপোর্ট আগাম প্রকাশের কারণে প্রথম আলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিও উঠেছিল। মাঠপর্যায়ের নানা অপরাধের বিষয়ে অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা কতটা বিপজ্জনক, তার উদাহরণ তো অগণিত। বাস্তবতা হচ্ছে এসব প্রতিকূলতার মুখে টিকে থাকা এবং অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা করতে না পারার যে মর্মপীড়া, তা থেকে কোনো প্রতিষ্ঠানই মুক্ত নয়। গত এক দশকে শীর্ষস্থানীয় পত্রিকার সাংবাদিকদের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে নিষিদ্ধ করা ও বেসরকারি বিজ্ঞাপনে অব্যাহত নিয়ন্ত্রণ আরোপের মত পদক্ষেপগুলোর পর যুক্ত হয়েছে নতুন হাতিয়ার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন। 

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ভাষ্য এবং সেনাসদর দপ্তরের প্রতিবাদপত্রের ভাষ্যের মধ্যেও বড়ধরণের ফারাক লক্ষ্যণীয়।পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আল জাজিরার তথ্যচিত্রকে ষড়যন্ত্রমূলক অভিহিত করে তার পিছনে জামায়াতে ইসলামীর ভূমিকাকে দায়ী করেছে। সেনাসদরের বিবৃতিতে অবশ্য কোনো দলের কথা নেই। দুজন সাংবাদিক ও একজন সাবেক সেনা ক্যাডেটের কথা আছে। এঁদের অতীতের কেথা উল্লেখ করে আল জাজিরার মত একটি আর্ন্তজাতিক সংবাদমাধ্যম কীভাবে তাঁদের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়েছে, সেই প্রশ্ন তোলা হয়েছে। তথ্যচিত্রে উঠে আসা অভিযোগগুলোর মধ্যে শুধূমাত্র নজরদারি প্রযুক্তি কেনার বিষয়টির জবাব দিয়ে বলা হযেছে এটি ইজরায়েল থেকে কেনা নয়, হাঙ্গেরি থেকে কেনা। আলজাজিরার দাবি হাঙ্গেরি থেকে কেনা প্রযুক্তিটি ইজরায়েলের এবং ইজরায়েলীরা তার প্রশিক্ষণও দিয়েছে। অন্যান্য অভিযোগের বিষয়ে বলা হয়েছে যে বিভিন্ন জায়গা থেকে ভিডিওক্লিপ জুড়ে নেপথ্যকন্ঠ ব্যবহার করে এটি তৈরি করা হয়েছে। অন্য কোনো অভিযোগের জবাব এতে নেই।  

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে অপপ্রচারের ষড়যন্ত্রের অভিযোগই প্রধান। তথ্যচিত্রের কোনো অভিযোগের জবাব দেওয়া হয়নি। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের বিরোধিতাকারী দল জামায়াতে ইসলামীর  গ্রহণযোগ্যতা যে দেশে-বিদেশে যথেষ্ট পরিমাণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। সেই দলকে কথিত ষড়যন্ত্রের কৃতিত্ব দেওয়ার কারণটি মোটেও স্পষ্ট নয়। সরকারবিরোধী ষড়যন্ত্রের জন্য এত দিন বিএনপিকে দায়ী করা হলেও এবার তেমনটি ঘটেনি। ইসলামী উগ্রপন্থার বিরুদ্ধে পাশ্চাত্যে যে উদ্বেগ রয়েছে, তার সুবিধা নেওয়াই এর প্রধান কারণ কি না, এমন প্রশ্ন তাই নাকচ করে দেওয়া যায় না। পররাষ্ট্র দপ্তরের বিবৃতিতে বলা হয়েছে যে প্রতিবেদনের ঐতিহাসিক বিবরণে একাত্তরের ভয়াবহ গণহত্যার কথা উল্লেখ করা হয়নি। এটা কেমন যুক্তি? একাত্তরের গণহত্যার ভয়াবহতার ইতিহাস এখানে কীভাবে প্রাসঙ্গিক? আর, তা উল্লেখ করলেই প্রতিবেদনটির শুদ্ধতা প্রশ্নাতীত হতো?

বাংলাদেশের শত্রু, এমন কোনো রাষ্ট্র ষড়যন্ত্র করতেই পারে। কিন্তু সেরকম ষড়যন্ত্রের ক্ষেত্রে জবাব হতে হবে বস্তুনিষ্ঠ, তথ্যভিত্তিক। পাল্টা তথ্য না দিয়ে এখন বলা হচ্ছে সরকার আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা ভাবছে। প্রশ্ন হচ্ছে, আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ কাজে লাগানো হয়নি কেন? তথ্যচিত্রের শেষে দাবি করা হয়েছে এতে যাঁদেরই নাম এসেছে প্রত্যেকের কাছে আত্মপক্ষ সমর্থনের বক্তব্য চাওয়া হয়েছে, কিন্তু বাংলাদেশের কেউ সাড়া দেয়নি। আইনগত প্রতিকারের কোনো সুযোগ তাহলে আর বাকি রইল কই? 

আরেক দল সমালোচক আল-জাজিরা কেন বিশ্বাসযোগ্য নয়, তা প্রমাণ করতে কোন কোন দেশে তারা নিষিদ্ধ হয়েছে, তার তালিকা প্রচার করছে। তালিকাতে যেসব দেশ আছে, তারা বোধহয় চায়, বাংলাদেশও তেমনই হোক। যেমন মিশর, যেখানে ইসলামপন্থীদের দমনের অজুহাতে গণতন্ত্র নির্বাসনে গেছে এবং দেশি-বিদেশী সাংবাদিকরা এখনো জেলে আছেন। কেউ কেউ দাবি করছেন, আল-জাজিরার সম্প্রচারসময় কেনা যায়। তাহলে বাংলাদেশ সরকার কিম্বা আওয়ামী লীগ কি তা কিনতে পারেনা? স্মরণ করা যেতে পারে, মালয়েশিয়ায় যে কেলেংকারিতে নাজিব রাজ্জাকের জেল হয়েছে, সেই কেলেংকারির মূল হোতাকে চিহ্নিত করেছে আল-জাজিরা। মালদ্বীপেও আল-জাজিরার তদন্তের কারণে সাবেক প্রেসিডেন্ট আব্দুল্লাহ ইয়ামিন এখন জেলে।

এসব আনুষঙ্গিক বিতর্কে মূল প্রশ্নের যে মীমাংসা হবে না, সেই সত্য যত তাড়াতাড়ি আমরা মেনে নিতে পারব, ততই দ্রুত এটির নিষ্পত্তি করা যাবে। মূল প্রশ্নের মীমাংসায় প্রয়োজন প্রত্যেকটি অভিযোগ গুরুত্বের সঙ্গে গ্রহণ করে সেগুলো তদন্ত করা। অভিযোগ কিন্তু শুধু একটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ওঠেনি, পাসপোর্ট জালিয়াতি থেকে শুরু করে, ব্যাংকের ভুয়া হিসাব, পুলিশ-র‌্যাবের একাধিক অভিযানের উদ্দেশ্য এবং দুই মহাদেশের তিনটি দেশে আমাদের কূটনীতিকদের ভূমিকা এগুলোর সবই প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। একজন পলাতক অপরাধীকে ভুয়া পরিচয়ে বসবাস ও বিনিয়োগের সুযোগ দেওয়ার অভিযোগটির তদন্ত হাঙ্গেরি ইতোমধ্যেই শুরু করেছে বলে দেশটির গণমাধ্যমে খবর বেরিয়েছে। সুতরাং, নিজেরা এগুলো তদন্ত না করা মোটেও সুবিবেচনার কাজ হবে না।

(৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২১-র প্রথম আলো পত্রিকায় প্রকাশিত।)

 

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

Bangladesh is vexed by and wary of Modi’s unstinting support to Sheikh Hasina

In the run-up to Bangladesh’s general election in January 2014, New Delhi took the unusual step of sending a top diplomat from its external affairs ministry to Dhaka to persuade General Hussain Muhammaed Ershad, the country’s former military ruler, to participate in the polls. Big questions had been raised over the fairness of the election. The incumbent government was led by Sheikh Hasina’s Awami League, and the leader of the opposition Bangladesh Nationalist Party (BNP) had been placed under virtual house arrest, with police and roadblocks around her house in Dhaka. The BNP and other opposition parties were threatening to boycott the election. Ershad, the head of the Jatiya Party, was perceived as a potential kingmaker, able to bring to power whichever of Bangladesh’s two main parties he supported, but he was also threatening to withdraw from the election.  After a decade of Modi’s reign in India, people in Bangladesh are angry at their government cosying up to a Hindutva regime ...

অরাজনৈতিক আন্দোলনের করুণ রাজনৈতিক মূল্য

কোটা সংস্কারের দাবিতে সাধারণ ছাত্র–ছাত্রীদের আন্দোলনে  কদিন ধরে যা ঘটে চলেছে, তা যেমন বেদনাদায়ক, তেমনই নিন্দনীয় ও ক্ষোভের কারণ। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের শিক্ষা দিতে ক্ষমতাসীন সরকারের সমর্থক এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীর হাতে একইদিনে দেশের তিন জায়গায় ছয়জনের প্রাণহানির ঘটনা স্বাধীন বাংলাদেশে বিরল।  এবার আরও যেসব ঘটনা আমাদের স্তম্ভিত করেছে, অভিভাবকদের চোখ অশ্রুসিক্ত করেছে, এসব মৃত্যুর পরও সরকারের রাজনৈতিক দম্ভ বজায় রাখার চেষ্টা, যা আরও প্রাণহানির কারণ হয়েছে। ছয়জন তরুণের প্রাণ বিসর্জনের পরও কোটা সংস্কারের দাবিতে সরকার ”নীতিগতভাবে একমত” – একথাটি বলে  আলোচনায় না ডেকে সময়ক্ষেপণ করেছে। আইনমন্ত্রী কথাটি যখন বললেন, তার আগেই আরও জীবন গেল, শত শত মানুষ আহত হলো, দেশের সম্পদ নষ্ট হলো। রাজনৈতিক গরিমা ছাড়া এর আর কোনো কারণ আছে কি? ছাত্রলীগ পরিচয়ে অন্ত্রধারীদের তান্ডব, পুলিশের চরম নিষ্ঠুরতা এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ছাত্রীদের গড়পরতা মারধর ও লাঞ্চিত করার যে দৃশ্যগুলো গণমাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে, তা কোনো অভিভাবকের পক্ষেই ভোলা সম্ভব নয়। এসব ঘটনার বিবরণ উদ্ধৃত না করে শুধু নিষ্ঠুর ...

আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বে স্বৈরশাসকের ফেরা সহজ

  গণতন্ত্রে উত্তরণে ব্যর্থতা ও স্বৈরতন্ত্রের নিকৃষ্টতম রুপ প্রত্যক্ষ করার পর অর্ন্তবর্তী সরকারের মেয়াদকালে যে সব বিষয়ে সংস্কারের আলোপ চলছে, তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে নির্বাচনব্যবস্থা। এরশাদের সামরিক স্বৈরাচারের পতনের পর নির্বাচনকে গণতন্ত্র চর্চার মাধ্যম হিসাবে যেভাবে প্রতিষ্ঠার কথা ছিল, তা থেকে প্রধান দুই দলই বিচ্যূত হয়েছিল। পরিণতিতে নির্বাচন শুধু ক্ষমতা দখলের হিংসাত্মক খেলায় পরিণত হয় এবং শেষ পর্যন্ত শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ সাধারণ মানুষের ভোটের অধিকার হরণ করে নির্বাচনকে নানা রকম প্রহসনে পরিণত করে।  এই সমস্যার এক অতি সরলীকৃত সমাধান হিসাবে বলা হচ্ছে, দ্বিদলীয় রাজনীতির বৃত্ত থেকে বেরিয়ে দেশে সত্যিকার বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে। আর বহুদলীয় গণতন্ত্রের জন্য নির্বাচনব্যবস্থায় আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বের ধারণাকে একমাত্র বা চূড়ান্ত সমাধান হিসাবে তুলে ধরা হচ্ছে।  সংখ্যানুপাতিক বা আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতির নির্বাচনে একটি দল যত শতাংশ ভোট পাবে, সে অনুপাতে তারা সংসদের আসন পাবে। এ আনুপাতিক পদ্ধতিতে প্রার্থীদের নাম দল আগাম ঘোষণা করতেও পারে, আবার না–ও পারে। নাম প্রকাশ করা হলে সেটা হব...