বহুল
বিতর্কিত
আল-জাজিরার
অনুসন্ধানী
তথ্যচিত্র
‘অল
দ্য
প্রাইম
মিনিস্টারস
মেন’
প্রচারিত
হওয়ার
ঠিক
দুই
সপ্তাহ
পর
আন্তঃবাহিনী
গণসংযোগ
পরিদপ্তরের
(আইএসপিআর)
দ্বিতীয়
একটি
ব্যাখ্যা
প্রকাশ
করা
হয়েছে। প্রতিবেদনটি
প্রচারিত
হওয়ার
পর
সেনাসদরের
পক্ষ
থেকে
প্রথম
যে
প্রতিবাদ
জানানো
হয়েছিল,
তাতে
প্রতিবেদনে
তুলে
ধরা
অভিযোগগুলোর
একটি
ছাড়া
অন্যগুলোর
বিষয়ে
নীরবতা
অনেক
প্রশ্ন
ও
বিতর্কের
জন্ম
দিয়েছিল। দ্বিতীয় বিবৃতিতে
অনেক
প্রশ্নের
জবাব
মিলেছে
ঠিকই,
তবে
তা আরও নতুন প্রশ্নের জন্ম
দিয়েছে।
প্রথম
প্রতিবাদলিপিটি
প্রকাশ
করা
হয়েছিল
এক
দিন
পরই,
যাতে
আল-জাজিরার
প্রতিবেদনটিকে
মিথ্যা
ও
বানোয়াট
অভিহিত
করে
শুধু
ইসরায়েল
থেকে
ইন্টারনেট
ও
মোবাইল
মনিটরিং
সরঞ্জামাদি
ক্রয়ের
বিষয়ে
একটি
ব্যাখ্যা
দেওয়া
হয়েছিল। প্রথম বিবৃতির
ব্যাখ্যাটি
নিয়ে
আল-জাজিরা
জাতিসংঘের
কাছে
বক্তব্য
জানতে
চাইলে
তারা
জানিয়ে
দেয়
যে
শান্তিরক্ষা
কার্যক্রমে
এ
ধরনের
আড়িপাতা
সরঞ্জাম
ব্যবহার
করা
হয়
না। ফলে, তা
নতুন
প্রশ্নের
জন্ম
দেয়। দ্বিতীয় বিবৃতিতে
এখন
আরও
সুনির্দিষ্ট
তথ্য
দিয়ে
ওই
সব
সরঞ্জাম
কেনার
ব্যাখ্যা
দেওয়া
হয়েছে
এবং
তাতে
কোনো
ধরনের
দুর্নীতির
সম্ভাবনা
নাকচ
করে
দেওয়া
হয়েছে। এই সরঞ্জাম
কেনার
সূত্র
ধরেই
সেনাপ্রধান
জেনারেল
আজিজ
আহমেদের
হাঙ্গেরিপ্রবাসী
ভাই
হারিছ
আহমেদের
প্রসঙ্গ
এবং
অন্য
ভাইদের
কথাও
আইএসপিআরের
বিবৃতিতে
বিস্তারিতভাবে
তুলে
ধরা
হয়েছে।
আইএসপিআরের
দ্বিতীয়
বিবৃতি
জারির
কয়েক
ঘণ্টার
মধ্যেই
সেনাপ্রধান
নিজেও
ঢাকায়
এক
অনুষ্ঠানে
সাংবাদিকদের
মুখোমুখি
হয়ে
কিছু
প্রশ্নের
জবাব
দিয়েছেন। আইএসপিআর এবং
সেনাপ্রধানকে
ধন্যবাদ
যে
তাঁদের
বক্তব্যে
প্রথম
আলোর
১৬
ফেব্রুয়ারির
শীর্ষ
সংবাদ
‘হারিছ,
আনিসের
সাজাও
মাফ
করেছে
সরকার’
খবরের
সত্যতা
শতভাগ
নিশ্চিত
হলো। তবে সাজা
মওকুফের
খবরটিতে
প্রমাণিত
হলো
দু-দুটো
খুনের
বিচারে
দণ্ডিত
হলেও
খুনিরা
স্বাভাবিক
জীবনে
ফিরে
যেতে
পারেন। কোন জাদুর
বলে
তা
ঘটতে
পারে,
সেই
প্রশ্ন
আর
করা
চলে
কি
না,
তা
নিয়ে
আমরা
ধন্দে
আছি। কেননা, আইনমন্ত্রী
ও
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
দুজনেই
বলেছেন,
তাঁরা
এ
রকম
কোনো
সাজা
মওকুফের
কথা
জানেন
না। তাহলে ভোজবাজিটা
কীভাবে
ঘটতে
পারে?
আল-জাজিরার
অভিযোগের
জবাবে
আইএসপিআরের
বিবৃতিতে
বলা
হয়েছে,
সেনাবাহিনী
প্রধানের
ছেলের
বিয়ের
সংবর্ধনা
অনুষ্ঠান
হয়েছে
২৯
মার্চ
২০১৯
এবং
‘তার
পূর্বেই
সেনাবাহিনী
প্রধানের
ভাইগণ
(আনিস
এবং
হাসান)
তাঁদের
বিরুদ্ধে
রাজনৈতিক
প্রতিহিংসার
শিকার
হয়ে
ষড়যন্ত্রমূলক,
পরিকল্পিতভাবে
দায়েরকৃত
সাজানো
ও
বানোয়াট
মামলা
হতে
যথাযথ
আইনানুগ
প্রক্রিয়ার
মাধ্যমেই
অব্যাহতি
পান। ফলে ২৯
মার্চ
২০১৯
তারিখে
সেনাবাহিনী
প্রধানের
ছেলের
বিবাহোত্তর
অনুষ্ঠানে
তাঁর
কোনো
ভাই
কোনো
দণ্ডপ্রাপ্ত
বা
পলাতক
আসামি
অবস্থায়
ছিলেন
না,
বরং
সম্পূর্ণ
অব্যাহতিপ্রাপ্ত
হিসেবেই
তাঁরা
ওই
অনুষ্ঠানে
উপস্থিত
হন’। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
বলছেন,
আইনে
দণ্ডিত
ব্যক্তির
আদালতে
আত্মসমর্পণ
ছাড়া
সাজা
মাফ
পাওয়ার
কোনো
সুযোগ
নেই। কিন্তু আইএসপিআর
বিষয়টিকে
‘আইনানুগভাবে
অব্যাহতি’
বলছে। দণ্ডিত ব্যক্তির
দণ্ড
মওকুফ
আর
অব্যাহতির
মধ্যেকার
ফারাকটি
আইএসপিআর
কি
সেনাবাহিনীর
আইন
কর্মকর্তাদের
কাছ
থেকে
জেনে
নিয়েছিল?
বিস্ময়ের
এখানেই
শেষ
নয়। প্রধানমন্ত্রীর
পররাষ্ট্রবিষয়ক
উপদেষ্টা
গওহর
রিজভী
গেল
সপ্তাহে
জার্মান
সম্প্রচার
প্রতিষ্ঠান
ডয়চে
ভেলের
কনফ্লিক্ট
জোন
অনুষ্ঠানে
সেনাপ্রধানের
ভাইদের
বিষয়ে
যে
ভাষ্য
দিয়ে
এসেছেন,
তা
যে
মোটেও
তথ্যভিত্তিক
ছিল
না,
এসব
নতুন
বক্তব্য-বিবৃতিতে
তা
এখন
স্পষ্ট। তথ্যচিত্রটি
প্রচারের
পর
এ
পর্যন্ত
সরকারের
পক্ষ
থেকে
যতগুলো
ব্যাখ্যা
দেওয়া
হয়েছে,
সেগুলো
কতটা
তথ্যভিত্তিক
ছিল,
কতটা
রাজনৈতিক
ব্যাখ্যা
ছিল,
সেই
প্রশ্ন
এখন
খুবই
গুরুত্বপূর্ণ। কেননা, কোনো
ভাষ্যকে
শুধু
প্রত্যাখ্যান
বা
নাকচ
করা
আর
ভাবমূর্তি
নষ্টের
ষড়যন্ত্রের
রাজনৈতিক
অভিযোগ
তোলা
সহজ
হলেও
তাতে
সত্য
প্রতিষ্ঠা
পায়
না। সাক্ষ্যপ্রমাণ
এ
ক্ষেত্রে
আরও
বেশি
জরুরি।
প্রথম
আলোর
‘হারিছ,
আনিসের
সাজাও
মাফ
করেছে
সরকার’
প্রতিবেদন
বলছে,
অপরাধী
দুই
ভাইয়ের
দণ্ড
মওকুফের
প্রজ্ঞাপন
হয়েছে
২৮
মার্চ
২০১৯
তারিখে,
যার
মানে,
সেনাপ্রধানের
ছেলের
বিবাহোত্তর
সংবর্ধনা
অনুষ্ঠানের
আগের
দিন। বিয়ের আরেকটি
অনুষ্ঠানে
তাঁদের
নাচে
অংশ
নেওয়ার
যে
ছবি
দেখা
গেছে,
সেটি
কবে
হয়েছে,
কোথায়
হয়েছে?
তাহলে
তাঁরা
ঢাকায়
কবে
এসেছিলেন?
যখন
এসেছিলেন,
তখন
কি
তাঁরা
পলাতক
আসামি
ছিলেন
না?
আইএসপিআরের
বিবৃতিতেই
বলা
হয়েছে,
‘শুধুমাত্র
সেনাবাহিনী
প্রধানের
ভাইয়ের
দীর্ঘ
সময়
ধরে
হাঙ্গেরিতে
বসবাসের
বিষয়টিকে
পুঁজি
করে
এই
তথ্যচিত্র
নির্মাণ
করা
হয়েছে
বলে
প্রতীয়মান
হয়।...সেনাবাহিনী
প্রধানের
কোনো
ভাই
বা
আত্মীয়
বাংলাদেশ
সেনাবাহিনীতে
কোনো
ধরনের
অস্ত্র,
গোলাবারুদ
বা
সরঞ্জামাদি
সরবরাহ
অথবা
ক্রয়
প্রক্রিয়ার
সাথে
কখনোই
সম্পৃক্ত
ছিলেন
না। এটি সহজেই
অনুমেয়
যে
এই
তথ্যচিত্রটি
বাংলাদেশ
সেনাবাহিনীর
মতো
একটি
স্বনামধন্য
এবং
সুশৃঙ্খল
প্রতিষ্ঠানের
প্রধান
এবং
তাঁর
পরিবারের
ওপর
কালিমা
লেপনের
মাধ্যমে
সামরিক
বাহিনীর
মতো
একটি
স্পর্শকাতর
প্রতিষ্ঠানকে
আক্রমণ
করে
দেশের
অভ্যন্তরে
বিশৃঙ্খলা
ও
নৈরাজ্য
সৃষ্টির
অপচেষ্টা
করার
অপপ্রয়াস
মাত্র।’ সেনাবাহিনী
প্রধানের
ভাইয়ের
হাঙ্গেরিতে
যে
‘দীর্ঘ
সময়
বসবাসের’
কথা
আইএসপিআর
উল্লেখ
করেছে,
তা
তাঁর
পলাতক
অপরাধী
জীবনকালের
কথা। শুধু একটি
খুন
নয়,
হারিছ
আহমেদ
তখন
দুটি
হত্যা
মামলায়
নিহত
ব্যক্তিদের
মৃত্যুকালীন
বিবৃতির
ভিত্তিতে
দণ্ডিত
হিসেবে
পলাতক
ছিলেন। আইএসপিআরের
বিবৃতিতে
সেনাবাহিনী
প্রধানের
‘পরিবারের
ওপর
কালিমা
লেপনের’
কথা
বলা
হয়েছে। পরিবার বলতে
কি
ভাইদেরও
বিবেচনায়
নিয়ে
নেওয়া
হয়েছে?
হলে
সেটা
কতটা
যৌক্তিক?
আইএসপিআরের
সাম্প্রতিকতম
বিবৃতি
আরও
যেসব
প্রশ্নের
জন্ম
দিচ্ছে,
তার
মধ্যে
সবচেয়ে
গুরুতর
হচ্ছে,
দেশের
আদালতে
গুরুতর
অপরাধের
দায়ে
দণ্ডিত
এবং
প্রচলিত
আইনের
চোখে
পলাতক
আসামির
সঙ্গে
দেশের
বাইরে
যোগাযোগ
রক্ষা
করার
বিষয়ে। হাঙ্গেরিতে
সেনাপ্রধানের
ভাইয়ের
দীর্ঘদিন
অবস্থানের
কথা
উল্লেখ
করায়
স্বভাবতই
প্রশ্ন
ওঠে
যে
তিনি
বর্তমান
দায়িত্বে
আসার
আগে
তাঁর
হাঙ্গেরি
সফর
কতটা
সুবিবেচনাপ্রসূত
ছিল। আল-জাজিরার
প্রতিবেদনে
সামি
নামের
যে
ব্যক্তির
বক্তব্য
তুলে
ধরা
হয়েছে,
তাঁর
আসল
পরিচয়
তুলে
ধরে
বিবৃতিতে
আমাদের
জানানো
হয়েছে
যে
ওই
ব্যক্তি
চুরি,
সেনাবাহিনীর
অফিসারের
পোশাক
এবং
ভুয়া
পরিচয়পত্র
ব্যবহার
করে
প্রতারণার
অপরাধে
বিভিন্ন
সময়ে
গ্রেপ্তার
হয়েছিলেন
এবং
২০০৬
সালে
তাঁকে
সেনানিবাসে
অবাঞ্ছিত
ঘোষণা
করা
হয়। তাহলে কি
জেনারেল
আজিজ
তাঁর
ভাই
ছাড়াও
অন্য
একজন
অপরাধীর
সঙ্গে
বিদেশে
দেখা
করতে
পারেন?
তাঁদের
ওই
সাক্ষাতের
উদ্দেশ্য
কী
ছিল?
আল-জাজিরা
যে
তথ্যচিত্র
প্রচার
করেছে,
তার
কোনো
অংশবিশেষ
কিংবা
পুরোটাই
ঠিক
বা
ভুল
কি
না,
সেটা
বিচার
করা
এই
লেখার
উদ্দেশ্য
নয়। আমাদের বক্তব্য
হচ্ছে,
তাদের
প্রতিবেদনে
উঠে
আসা
অভিযোগগুলো
গুরুতর
এবং
সেগুলোর
সত্যাসত্য
জানার
অধিকার
নাগরিকদের
রয়েছে। সঠিক তথ্য
ও
বিশ্বাসযোগ্য
সাক্ষ্যপ্রমাণ
যেখানে
সবচেয়ে
গুরুত্বপূর্ণ,
সেখানে
কোনো
ধরনের
ধূম্রজাল
তৈরি
হলে
তা
হবে
দুর্ভাগ্যজনক
ও
ক্ষতিকর। এখন যেসব
ব্যাখ্যা
দেওয়া
হচ্ছে,
এগুলো
প্রতিবেদনটি
প্রচারের
আগে
আল-জাজিরার
কাছে
তুলে
ধরা
হয়নি
কেন?
বর্ডার
গার্ডের
প্রধান
থাকার
সময়ে
যে
সেনা
কর্মকর্তা
তাঁর
স্টাফ
অফিসার
ছিলেন,
তিনি
তো
আল-জাজিরার
কাছে
তাঁর
অবস্থান
তুলে
ধরেছেন
এবং
তাঁর
কোনো
ধরনের
ভূমিকার
কথা
নাকচ
করে
দিয়েছেন। সেনাপ্রধান
ও
আইএসপিআর
একই
সুযোগ
তখন
কেন
গ্রহণ
করেনি?
এসব
বক্তব্যে
ব্যক্তি
ও
প্রতিষ্ঠানের
মধ্যেকার
সম্পর্ক
নিয়েও
নতুন
প্রশ্নের
জন্ম
হয়েছে। সেনাপ্রধানের
ভাইদের
অতীত
অপরাধের
বিবরণ,
আদালতে
দণ্ডিত
হওয়া,
রাষ্ট্রপতি
বা
স্বরাষ্ট্র
মন্ত্রণালয়ের
অনুকম্পায়
দণ্ড
মওকুফ
হওয়া
এবং
সেই
তথ্য
গোপন
রাখার
বিষয়গুলো
কোনোভাবেই
সেনাবাহিনীর
সঙ্গে
সম্পর্কিত
নয়। সেনাবাহিনীর
প্রাতিষ্ঠানিক
ভাবমূর্তি
ক্ষুণ্ন
করার
চেষ্টার
অভিযোগ
তুলে
কি
দণ্ডিত
অপরাধীদের
অন্যায়
ও
আইনবহির্ভূত
সুবিধা
নেওয়ার
বিষয়টিকে
আড়াল
করা
চলে?
সেনাপ্রধান
সাংবাদিকদের
বলেছেন
যে
বিষয়টি
নিয়ে
তাঁর
পরিবারের
পক্ষ
থেকে
শিগগিরই
বক্তব্য
তুলে
ধরা
হবে। ইতিমধ্যে অনেক
দেরি
হয়ে
গেলেও
সেটিই
হবে
যথাযথ
পদক্ষেপ। তাঁর ভাইদের
সাফাই
দেওয়ার
দায়িত্ব
কোনো
রাষ্ট্রীয়
প্রতিষ্ঠানের নয়।
তাঁদের
সঙ্গে
সেনাবাহিনীর
প্রাতিষ্ঠানিক
ভাবমূর্তিকে
গুলিয়ে
ফেলা
কোনোভাবেই
গ্রহণযোগ্য
হতে
পারে
না।
(১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২১‘র প্রথম আলো পত্রিকায় প্রকাশিত।)
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন