সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

পুলিশ ও লাঠিয়ালে ফারাক করার উপায় কী

 সোমবারের দৈনিক পত্রিকাগুলোর প্রথম পাতায় ছাপা হওয়া একটি ছবিতে দেখা যাচ্ছে পুলিশ ও কয়েকজন লাঠিয়াল কয়েকজন তরুণ–তরুণীকে বেধড়ক পেটাচ্ছে। অনেকে এধরনের মারকে গরু পেটানোও বলে থাকেন। বর্তমান বিশ্বে অবশ্য প্রাণী অধিকারবাদীদের কারণে অধিকাংশ সভ্য দেশেই কোনো জীবের প্রতি এধরনের নিষ্ঠুরতা ফৌজদারি অপরাধ হিসাবে গণ্য হবে, অপরাধীর কপালে জেল-জরিমানা নিশ্চিত। 

বিক্ষোভকারীদের বেধড়ক পিটুনির ঘটনা এটিই প্রথম নয়। এর আগেও বহুবার হয়েছে এবং অনেকের কাছে তাই অস্বাভাবিক কিছু চোখে পড়বে না। কিন্তু মনোযোগ দিয়ে দেখলে বোঝা যায়, ছবিটি শুধু পুলিশী নিষ্ঠুরতার অকাট্য দলিলই নয়, এতে অনেক গুরুতর আইনি প্রশ্নও নিহিত আছে। ভোলায় পুলিশের গুলিতে বিরোধীদল বিএনপির দুজন স্থানীয় নেতা আব্দুর রহিম ও নূরে আলম নিহত হওয়ায় বিক্ষোভ-প্রতিবাদ মোকাবিলায় পুলিশী কৌশলে নিষ্ঠুরতার অভিযোগ ওঠার পরও এমন নির্মম পিটুনির ঘটনাটি ঘটেছে । পুলিশের গুলিতে মৃত্যুর ঘটনা নিঃসন্দেহে অনেক বেশি গুরুতর। কেননা, যেভাবে মাথা ও বুকে গুলিবিদ্ধ হয়ে ওই দুজনের মৃত্যু হয়েছে, তাতে আলামত মেলে হত্যার উদ্দেশ্যেই গুলি চালানো হয়েছিল । নয়তো মিছিল ছত্রভঙ্গ করার জন্য শূন্যে গুলি ছুঁড়ে ভয় দেখানোর কথা। খুব বেশি হলে শরীরের নীচের দিকে, অর্থাৎ পায়ে গুলি করার কথা, মাথায় বা বুকে নয়। 


গুলি করা ও হত্যার ঘটনার কিছুটা প্রতিবাদ  হলেও মিছিল ভাঙতে পিটুনির বিষয়ে কেউ খুব একটা মাথা ঘামাচ্ছে বলে মনে হয় না। পুলিশ যেমন আত্মরক্ষা বা অন্য কারো জীবনরক্ষার প্রয়োজনে বাধ্য না হলে গুলি করার কথা নয়, ঠিক তেমনি মিছিল-সমাবেশ ভেঙে দিতে লাঠির ব্যবহারেও তারা নির্দিষ্ট আইনি বিধানের বাইরে যেতে পারে না। 

 

ছবিতে পুলিশের পাশাপাশি বেসামরিক বা সাধারণ পোশাকের কিছু লোকজনকেও বিক্ষোভকারীদের ওপর চড়াও হতে দেখা যাচ্ছে, যাদের মধ্যে একজন পুলিশ লেখা জ্যাকেট বা বক্ষবেষ্টনী পরে আছেন, কিন্তু অন্যদের পরিচয় বোঝার কোনো উপায় নেই। ইউনিফর্ম ছাড়া যারা পিটুনি দিচ্ছেন, তারা যে পুলিশ না হয়ে অন্য কেউও হতে পারে, সে রকম দৃষ্টান্তের অভাব নেই। পুরান ঢাকায় বাসদের বিক্ষোভে পুলিশ-ছাত্রলীগের হামলা, (ইত্তেফাক, ২৩ নভেম্বর ২০১৯) কিংবা আন্দোলন দমাতে পুলিশ-ছাত্রলীগ, ঢাবি ক্যাম্পাসে ভীতি-উত্তেজনা`র (সারাবাংলা ডট নেট, ৮ এপ্রিল ২০১৮) মতো শিরোনামগুলো এখানে স্মরণ করা যায়। চলতি বছরেই সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়েও আন্দোলনকারীদের ওপরে প্রথমে ছাত্রলীগ এবং পরের রাতে পুলিশের হামলার ঘটনা ঘটেছিল। গত ১৭ জানুয়ারির সমকালে ছাপা হওয়া পুলিশী অভিযানের ছবিতেও দেখা যাচ্ছে কেউ কেউ জিন্সের ট্রাউজার আর টি-শার্ট পরে লাঠি চালাচ্ছেন। 


এসব দৃষ্টান্তের আলোকে প্রশ্ন হচ্ছে, পুলিশ কি ছাত্রলীগ বা অন্য কোনো সংগঠনের সদস্যদের সঙ্গে একজোট হয়ে বা সমন্বয় করে সরকারবোধী আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে পিটুনি অভিযান পরিচালনা করছে? আর সাধারণ পোশাকের লাঠিয়ালেরা যদি কোনো রাজনৈতিক দলের সদস্য না হন, তাহলে কি তাঁরা পিটুনিকাজের জন্য বিশেষভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত পান্ডা? আর যদি তা-ও না হন, তাহলে কি তারা পুলিশ বাহিনীর সদস্য? পুলিশ বাহিনীর সদস্য হলে সভা-সমাবেশের শৃঙ্খলা রক্ষায় তারা কেন ইউনিফর্ম পরবে না? পায়ে স্পঞ্জের চপ্পল আর টি-শার্ট পরা পুলিশ আর একজন দুর্বৃত্তের মধ্যে ফারাক করা যাবে কীভাবে? এরকম লাঠিয়ালের হামলার বিরুদ্ধে প্রতিটি নাগরিকের তো আত্মরক্ষার অধিকার রয়েছে।  


পুলিশের যেসব আইন রয়েছে, পুলিশ রেগুলেশনস, বেঙল কিম্বা পুলিশ অ্যাক্ট ১৮৬১, অথবা ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ অর্ডিন্যান্স -এগুলোর কোনোটিতেই বিনা ইউনিফর্মে বিক্ষোভ-সমাবেশের শৃঙ্খলা রক্ষার অবকাশ দেখি না। বরং ইউনিফর্মের অননুমোদিত ব্যবহারের বিরুদ্ধে আইন আছে (যেমন ডিএমপি অর্ডিন্যান্সের ৫৫ ধারা)। স্পষ্টতই এর উদ্দেশ্য হচ্ছে পুলিশকে যেন চেনা যায়। অবশ্য ইউনিফর্ম না পরে পুলিশী দায়িত্ব পালন করার আইনগত অনুমোদন আছে পুলিশের গোয়েন্দা শাখাগুলো - অর্থাৎ ডিটেকটিভ ব্রাঞ্চ (ডিবি) ও ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট  (সিআইডি)র সদস্যদের। সেই ডিবিও এখন পরিচয়বিভ্রাট এড়াতে গত সপ্তাহে ঘটা করে তাদের নতুন জ্যাকেট চালু করেছে। ওই জ্যাকেটে কিউআর কোড থাকবে, যাতে চাইলে যে কেউ মোবাইল অ্যাপসের সাহায্যে জ্যাকেটধারীর পরিচয় যাচাই করে নিতে পারে। গোয়েন্দাবৃত্তিতে নিয়োজিত পুলিশের যদি পরিচয় যাচাইয়ের ব্যবস্থা থাকে, তাহলে সাধারণ পুলিশ কেন পরিচিতিমূলক ইউনিফর্ম ছাড়া সাধারণ পোশাকে জনসমাবেশের শৃঙ্খলারক্ষার কাজ করবে? বছরখানেক বা তারও আগে ক্ষমতার অপব্যবহার ও বাড়াবাড়ির অভিযোগের কারণে ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল পুলিশ ইউনিফর্মের সঙ্গে ক্যামেরাও বহন করবে। কিন্তু এখন মনে হয় সেটা কথার কথা ছিল।     

পুলিশের ক্ষমতার অপব্যবহার বা শক্তিপ্রয়োগে বাড়াবাড়ির বিষয়টি শুধু বাংলাদেশের সমস্যা নয়, বিশ্বের বহু দেশেই ঘটে। এমনকি, উন্নত গ্ণতন্ত্রেও ঘটে। কিন্তু সে সব জায়গায় প্রতিকারমূলক বিভিন্ন ব্যবস্থা অনেক আগেই কার্যকর হয়েছে। তারপরও যদি কোনো ব্যত্যয় হয়, তাহলে তার স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্ত ও বিচারের আইনি ব্যবস্থা রয়েছে। মানবাধিকাকর্মীরাও বিশেষ ব্যবস্থায় প্রতিবাদ-বিক্ষোভে পুলিশের ভূমিকায় নজরদারি করে থাকেন। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পুলিশের পরিচয় স্পষ্টভাবে দৃশ্যমান করার বিষয়টিকে কীভাবে দেখা হয়, তার একটা বিস্তারিত পর্যালোচনা পাওয়া যায় ব্রিটেনের কীল ইঊনিভার্সিটির গবেষণায়, যেটি তারা করেছে হংকংয়ের ইন্ডিপেনডেন্ট পুলিশ কমপ্লেইন্টস কমিশনের (আইপিসিসি) হয়ে। কীলের বিশেষজ্ঞ দলটি দুটি বিষয়ে পাশাপাশি গবেষণা চালায়। একটি হচ্ছে পুলিশের পরিচয় স্পষ্ট করা, আর অন্যটি হচ্ছে প্রতিবাদকারীদের মুখোশ ব্যবহারের প্রশ্ন। 

`ইন্টারন্যাশনাল নর্মসঃ গভার্নিং পুলিস আইডেন্টিফিকেশন অ্যান্ড দ্য ওয়্যারিং অব মাস্কস ডিউরিং প্রোটেস্টস` শীর্ষক পর্যালোচনা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, `যেসব দেশের সামগ্রিক অবস্থা আমরা নমুনা হিসাবে পর্যালোচনা করেছি, তার সবগুলিতে প্রতিবাদ-বিক্ষোভে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার সময়ে পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের পরিচয় নির্ধারণের কোনো না কোনো ব্যবস্থা আছে। সবজায়গায় তা আইনে না থাকলেও পুলিশ বাহিনীগুলো নিজেরাই এবিষয়ে বাধ্যবাধকতা তৈরি করে নিয়েছে।` দেশভেদে আইন ও নীতিতে নানা রকম পার্থক্য থাকলেও প্রতিবেদনে বলা হয়, `প্রতিবাদ-বিক্ষোভে পুলিশের দায়িত্বপালনের সময়ে পুলিশের শনাক্তকরণ যাতে দৃশ্যমান হয়, তা নিশ্চিত করার আদর্শিক অনুশীলনের উদ্দেশ্য হল জনসাধারণের কাছে জবাবদিহিতা। বিশেষ করে পুলিশের বল প্রয়োগের ক্ষেত্রে, পুলিশি কার্যক্রমের প্রতি জনগণের আস্থা নিশ্চিত করা, ব্যক্তিগত কর্মকর্তাদের পেশাদারত্ব বজায় রাখা এবং পুলিশ বাহিনীর কাজে কার্যকর সুবিধালাভের জন্য এটি প্রয়োজন।`


যেসব দেশের নমুনা পর্যালোচনা করা হয়েছে সেগুলো হলো - যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, জার্মানি, সুইজারল্যান্ড, ডেনমার্ক, সুইডেন, নরওয়ে ও অস্ট্রেলিয়া। এর সঙ্গে ইউরোপীয় মানবাধিকার সনদও গবেষণায় ব্যবহার করা হয়। পুলিশ সদস্যদের সহজে শনাক্ত করা বা চিহ্নিত করার জন্য এসব দেশে পুলিশের নামসম্বলিত ব্যাজ, বড় হরফে পিঠে, বুকে ও হেলমেটে ইউনিটের পরিচিতি ও সংখ্যা প্রদর্শনের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। প্রতিবেদনে অবশ্য উল্লেখ করা হয়েছে, অনেক ক্ষেত্রেই পুলিশবাহিনীর সদস্যরা এসব বাধ্যবাধ্যকতা মানতে অনীহা প্রকাশ করে থাকে। তবে ব্যক্তিগতভাবে শনাক্ত করা যায় এমন ব্যাজ বা সংখ্যা পরিধান নিয়ে ভিন্নতা থাকলেও এসব দেশের কোথাও বিক্ষোভ মোকাবিলায় বিনা ইউনিফর্মে  পুলিশ মোতায়েনের নজির নেই। বিপরীতে বরং ইউরোপে এবং যুক্তরাষ্ট্রের অনেক রাজ্যে বিক্ষোভকারীদের মুখোশ পরার অধিকারকে মানবাধিকার হিসাবে গণ্য করা হয়। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ইউরোপের যেসব দেশে পুলিশকে প্রয়োজনে বিক্ষোভকারীর মুখোশ অপসারণের অধিকার দেওয়া হয়েছে, সেসব দেশেও পুলিশ ওই ক্ষমতা প্রয়োগে আগ্রহী হয় না। কেননা, তাদের আশংকা মুখোশ অপসারণের চেষ্টা বিক্ষোভকারীদের আরও উত্তেজিত করে তুলতে পারে। 


পুলিশের দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে কোনো ধরনের অস্পষ্টতা তাদের কাজকে মোটেও সহজ করে না, বরং পরিচয় শনাক্তযোগ্য না হলে তা নানা রকম জটিলতা তৈরি করে। প্রতিবাদ-বিক্ষোভ সব নাগরিকের স্বীকৃত অধিকার। সেই বিক্ষোভে শৃঙ্খলা রক্ষার মানে এই নয় যে অপ্রয়োজনীয় ও অতিরিক্ত শক্তি প্রয়োগ করে তা ভেঙে দিতে হবে এবং ভীতি প্রদর্শনের জন্য প্রাণঘাতী অস্ত্রের বেপরোয়া ব্যবহার গ্রহণযোগ্য হবে। আমরা এত কিছুতে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত হওয়ার দাবি করি, তাহলে পুলিশকে কেন সেই মানে উন্নীত করা হবে না?  


(১১ অগাস্ট, ২০২২-এর প্রথম আলো পত্রিকায় প্রকাশিত।)


মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বে স্বৈরশাসকের ফেরা সহজ

  গণতন্ত্রে উত্তরণে ব্যর্থতা ও স্বৈরতন্ত্রের নিকৃষ্টতম রুপ প্রত্যক্ষ করার পর অর্ন্তবর্তী সরকারের মেয়াদকালে যে সব বিষয়ে সংস্কারের আলোপ চলছে, তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে নির্বাচনব্যবস্থা। এরশাদের সামরিক স্বৈরাচারের পতনের পর নির্বাচনকে গণতন্ত্র চর্চার মাধ্যম হিসাবে যেভাবে প্রতিষ্ঠার কথা ছিল, তা থেকে প্রধান দুই দলই বিচ্যূত হয়েছিল। পরিণতিতে নির্বাচন শুধু ক্ষমতা দখলের হিংসাত্মক খেলায় পরিণত হয় এবং শেষ পর্যন্ত শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ সাধারণ মানুষের ভোটের অধিকার হরণ করে নির্বাচনকে নানা রকম প্রহসনে পরিণত করে।  এই সমস্যার এক অতি সরলীকৃত সমাধান হিসাবে বলা হচ্ছে, দ্বিদলীয় রাজনীতির বৃত্ত থেকে বেরিয়ে দেশে সত্যিকার বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে। আর বহুদলীয় গণতন্ত্রের জন্য নির্বাচনব্যবস্থায় আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বের ধারণাকে একমাত্র বা চূড়ান্ত সমাধান হিসাবে তুলে ধরা হচ্ছে।  সংখ্যানুপাতিক বা আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতির নির্বাচনে একটি দল যত শতাংশ ভোট পাবে, সে অনুপাতে তারা সংসদের আসন পাবে। এ আনুপাতিক পদ্ধতিতে প্রার্থীদের নাম দল আগাম ঘোষণা করতেও পারে, আবার না–ও পারে। নাম প্রকাশ করা হলে সেটা হব...

How to Describe the Awami League Accurately?

In an article titled ‘How Not to Describe the Awami League’ , published in this paper, British journalist David Bergman rightly underscores the importance of accuracy in labeling a political party—particularly when such labels carry potential legal consequences. Those familiar with Bergman’s work over the years know that he has consistently taken on politically sensitive and controversial subjects, often at significant personal and professional cost. His courage and commitment to journalistic integrity deserve recognition. Bergman is correct in asserting that “while serious criticisms of the Awami League are both valid and necessary, they must be proportionate and grounded in fact.” His analysis focuses primarily on the legal validity and appropriateness of labeling the Awami League as “fascist” or “Nazi.” He argues that comparing the party to the Nazi regime trivialises the scale of Nazi atrocities and misrepresents the complexities of Bangladeshi politics. Indeed, any historical comp...

ঘৃণা চাষের উর্বর ভূমি ও রাজনৈতিক সংকট

  দেশে একের পর এক অস্থিরতা সৃষ্টির বেশ কয়েকটি ঘটনা আমরা প্রত্যক্ষ করলাম। এগুলোর কোনোটিই প্রত্যাশিত ছিল না। অনেকেই এগুলো নির্বাচন যাতে প্রধান উপদেষ্টার প্রতিশ্রুত সময়ে না হয়, তার জন্য পরিস্থিতি ঘোলাটে করার অপচেষ্টা হিসাবে বর্ণনা করেছেন। পরিকল্পিতভাবে অস্থিরতা সৃষ্টির পিছনে প্রধানত: দুটি শক্তিকে দায়ী করা হচ্ছে – একটি হচ্ছে পতিত স্বৈরাচার আওয়ামী লীগের পলাতক নেতৃত্বের সাংগঠনিক উদ্যোগ; অপরটি হচ্ছে, বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ার (সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম) সুবাদে সমাজে প্রভাব বিস্তারে দক্ষতা অর্জনকারী কিছু প্রভাবক ব্যক্তি বা গোষ্ঠী। এসব প্লাটফর্ম বিদ্বেষ ও ঘৃণা ছড়ানোর সবচেয়ে কার্যকর হাতিয়ারে পরিণত হয়েছে।  আপনি যদি কাউকে অপদস্থ বা হেয় করতে চান, তাহলে তার জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত স্থান সম্ভবত:  সোশ্যাল মিডিয়ার কোনো একটি প্লাটফর্ম – বাংলাদেশে এটি ফেসবুক এবং ইউটিউব। বৈশ্বিক পরিসরে অবশ্য এক্স (সাবেক টুইটার) এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি এগিয়ে আছে। প্রতিবেশী দেশ মিয়ানমারে গণহত্যার শিকার সংখ্যালঘু মুসলিম জনগোষ্ঠী রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে জাতিগত বিদ্বেষ ছড়ানোয় এই সোশ্যাল মিডিয়া কী ভূমিকা রেখেছে, তা জাতিসংঘ তদন্...