সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

গুমের শিকার পরিবারগুলোর দুঃখের কথা শুনুন

আজ থেকে ১২ বছর আগে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে জোর করে তুলে নেওয়া বা গুমের ঘটনা বাড়তে থাকায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে একটি প্রস্তাব পাশ করেছিল। সাধারণ পরিষদের ৬৫/২০৯ নম্বর প্রস্তাবটিতে গুমের অংশ হিসাবে গ্রেফতার, আটক, এবং অপহরণের কথা স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছিল এবং গুমের শিকার ব্যাক্তির পরিবারগুলোর প্রতি হয়রানি, দূর্ব্যবহার এবং ভীতি প্রদর্শনের কথাও বলা হয়েছিল। ওই প্রস্তাবেই গুমের শিকার হয়েছেন যাঁরা, তাঁদের পরিবারগুলোর উদ্দেশে প্রতিবছর ৩০ আগষ্ট আন্তর্জাতিক দিবস পালনের সিদ্ধান্ত হয়। প্রস্তাবটি যখন জাতিসংঘে গৃহীত হয়েছে, তখন বাংলাদেশে গুম কথাটি তেমন একটা শোনা যায়নি। কিন্তু গত প্রায় এক দশকে গুম বারবার সংবাদ শিরোনামে ফিরে আসছে। আর সাম্প্রতিক বছরগুলেতে গুমের শিকার পরিবারগুলোর কান্না ও ভয়ার্ত চেহারাও আমরা বারবার দেখছি। 

১৯৭২ সালে জহির রায়হানকে তুলে নিয়ে যাওয়ার ঘটনাটিকে এখন অনেকেই গুম বলে সংজ্ঞায়িত করে বলেন যে সেটাই ছিল স্বাধীন বাংলাদেশে প্রথম গুমের ঘটনা। তবে গুম বলতে এখন যা বোঝানো হয়, তা মূলত সরকারের কোনো বাহিনী কর্তৃক তুলে নিয়ে যাওয়াকেই বোঝানো হয়। আর বেসরকারি কোনো গোষ্ঠী বা অপরাধী চক্রের তুলে নেওয়াকে সাধারণত অপহরণ হিসাবেই বর্ণনা করা হয়। কারো স্বেচ্ছ্বায় আত্মগোপন হচ্ছে আত্মগোপন বা ফেরার হওয়া। গুমের সংজ্ঞাও নির্ধারণ করেছে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ ১৯৯২ সালে ৪৭/১৩৩ নম্বর প্রস্তাব গ্রহণের মাধ্যমে। ওই সংজ্ঞাতেই বলা হচ্ছেঃ সরকারের কোনো পর্যায় বা কোনো শাখার কর্মকর্তা অথবা সরকারের পক্ষে কিম্বা তার প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ সমর্থন অথবা সম্মতি নিয়ে কোনো বেসরকারি সংগঠিত গোষ্ঠী কাউকে তার ইচ্ছের বিরুদ্ধে গ্রেফতার, আটক বা অপহরণ  করে তার ব্যক্তিস্বাধীনতা থেকে বঞ্চিত করলে এবং তাকে আইনের পরিধির বাইরে রেখে দিয়ে তার অবস্থান জানাতে অস্বীকার করাই হচ্ছে গুম।

দেশি ও বিদেশি মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলো গত এক দশকে বাংলাদেশে গুম হওয়া ব্যাক্তিদের যে তালিকা করেছে এর সংখ্যা প্রায় ছয় শতাধিক। তাঁদের তুলে নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে পরিবার, সঙ্গী ও প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণ্নায় সরকারের বিভিন্ন সংস্থার পরিচয় দেওয়ার কথা জানানোর পরই তারা গুমের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে। পাওনাদার এড়াতে কিম্বা মামলায় গ্রেফতারের ভয়ে পালিয়ে থাকাদের পরিবারের ভিত্তিহীন অভিযোগ বলে সরকারের মন্ত্রীরা ও ক্ষমতাসীন দলের নেতারা যেসব কথা বলেন, তা বলার আগে জাতিসংঘের এই সংজ্ঞাটি দেখে নিলে এ ধরনের নিষ্ঠুর যুক্তি দাঁড় করানোর আগে হয়তো তাঁরা দ্বিতীয়বার ভেবে দেখতেন। 

গুমের শিকার পরিবারগুলোর দুঃখ-যন্ত্রণাকে অবজ্ঞার সর্বসাম্প্রতিক নজির অবশ্য আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের গত রোববারের মন্তব্য। বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অফ ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্রাটেজিক স্টাডিজে  (বিআইআইএসএস) এক অনুষ্ঠানে তিনি সাংবাদিকদের বলেছেন,  ``জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার মিশেল ব্যাশেলেতের সর্বশেষ প্রতিবেদনে মানবাধিকার বা অন্যান্য বিষয়ে বাংলাদেশ সম্পর্কে কোনো উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়নি। হাইকমিশনার যখন দেশে এসেছিলেন, তখন বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা তার সঙ্গে দেখা করেছেন,  কথা বলেছেন  এবং  তিনি সবকিছু দেখে  মন্তব্য করেছেন। এ থেকে বোঝা যায় তার মন্তব্য (নেতিবাচক কোনো কিছু না আসা) অত্যন্ত ডিপ রুটেড এবং ওয়েল আন্ডারস্ট্যুড। এ ছাড়া, শেখ হাসিনা সরকার যে গণতন্ত্র এবং ইক্যুইটির (ন্যায়পরায়ণতার)  ওপর বিশ্বাস করে দেশ চালাচ্ছেন সেটাও বোঝা যায়।``


জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার কবে নতুন প্রতিবেদন দিয়েছেন, তা অবশ্য তিনি বলেননি। সংস্থাটির ওয়েবসাইটে এবং জাতিসংঘের ওয়েবটিভিতে মিশেল ব্যাশেলেটের একটি বক্তব্য পাওয়া যাচ্ছে, যা ছিল গত ২৫ আগষ্ট তাঁর বিদায়ী সংবাদ সম্মেলনের বক্তব্য। ৩১ আগষ্ট তাঁর মেয়াদ শেষ হচ্ছে বলে তাঁর গত চার বছরের কাজকর্মের ওপর তিনি তাঁর বক্তব্য তুলে ধরেছেন এবং কয়েকজন সাংবাদিকের কিছু প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন। ধারণা করি, ওই সংবাদ সম্মেলনের বক্তব্যকে বাংলাদেশের কয়েকটি পত্রিকা তাঁর রিপোর্ট ভেবে সেভাবে খবর ছাপিয়েছে। সে বক্তব্যে বাংলাদেশের মানবাধিকার প্রশ্নে মিশেল ব্যাশেলেত কিছুই বলেননি, সফরের কথা উল্লেখ করে মূলত রোহিঙ্গাদের দূর্ভোগের কথা বলেছেন। কিন্তু মাত্র ১০ দিন আগে বাংলাদেশে তিনি যে বিবৃতি দিয়ে গেছেন, সেটা প্রত্যাহার করার কথাও নেই, সবকিছু ঠিক আছে - এমন কথাও তাঁর বক্তব্যে নেই। বাংলাদেশে দেওয়া বিবৃতিটি এখনও তাঁদের ওয়েবসাইটে রয়েছে এবং সেই বিবৃতিতে গুম-বিচারবহির্ভূত হত্যার অভিযোগগুলো স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্ত সংস্থা গঠনের মাধ্যমে স্বচ্ছ তদন্তের আহ্বান রয়েছে। তাঁর নয় পৃষ্ঠার বিবৃতিতে বাংলাদেশকে একটিবারের জন্যও গণতান্ত্রিক বলে সম্বোধন বা বর্ণনা করা হয়নি। 


জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের প্রতিটি বক্তৃতা-বিবৃতিতে বাংলাদেশের কথা থাকতে হবে, না হলে আমাদের মানবাধিকার প্রশ্নে তিনি উদ্বিগ্ন নন, এমন ধারনা কি স্বাভাবিক? ৫৬ মিনিটের সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তৃতায় তিনি চীন সম্পর্কে কিছুই বলেন নি, কিন্তু প্রশ্নোত্তরের ৩৬ মিনিটের বেশিরভাগ জুড়ে ছিল তাঁর চীন সফরের রিপোর্ট প্রকাশ হবে কি না, এখনো কেন হয় নি, চীন সরকারের চাপ ইত্যাদি নিয়ে। সেখানে প্রাধান্য ছিল উইঘুরদের মানবাধিকার লংঘন নিয়ে তাঁর দপ্তরের রিপোর্ট ধামাচাপা দিতে ৪০টি দেশের চাপের কথা এবং তা প্রকাশে প্রতিজ্ঞার বিষয়গুলো। যে দেশে এক লাখেরও বেশি নাগরিক গুমের শিকার হয়েছে, সেই মেক্সিকোর কথাও তাঁর বক্তব্যও প্রশ্নোত্তরে ছিল। আমরা নিশ্চয়ই চীন বা মেক্সিকোর কাতারে বাংলাদেশকে দেখতে চাইব না? 


আমরা স্মরণ করতে পারি হাইকমিশনার ব্যাশেলেতের সফরের সময়ে আইনমন্ত্রী তাঁর সঙ্গে বৈঠক থেকে বেরিয়ে সাংবাদিকদের বলেছিলেন, তিনি কোনো উদ্বেগ প্রকাশ করেন নি। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তাঁর বৈঠকের পর বলেছিলেন, গুমের কথা আলোচনা হয় নি। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছিলেন, তাঁর কাছে তুলে ধরা হয়েছে যে দেশে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা আছে। কিন্তু সবার সঙ্গে আলোচনার পর বিদায় নেওয়ার আগে সংবাদ সম্মেলনে মিস ব্যাশেলেত যে বিবৃতি দিলেন, তাতে তিনি স্পষ্ট করে জানালেন এগুলোর প্রতিটি তিনি আলোচনা করেছেন। বাংলাদেশ সম্পর্কে বিদায়ী হাইকমিশনার ব্যাশেলেত যদি কোনো উদ্বেগ নাই জানিয়ে থাকেন, তাহলে তাঁর সঙ্গে সরকারি পর্যায়ে যতগুলো আলোচনা ও বৈঠক হয়েছে, সেগুলোর বিবরণ কি সরকার প্রকাশ করবে?  তাঁর বিবৃতিতে মন্ত্রীদের ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়াও আমরা দেখেছি। তাঁর বরং ফিলিস্তিনে ইসরায়েলিদের মানবাধিকার লংঘনের তদন্তে নজর দেওয়া উচিত বলে বক্তৃতা দেওয়া হয়েছে। অথচ ফিলিস্তিনীদের মানবাধিকার লংঘনের বিষয়ে যে জাতিসংঘ তদন্ত করেছে এবং সেই তদন্তকারী তিনজনের মধ্যে যে বাংলাদেশের মানবাধিকার বিশেষজ্ঞ সারা হোসেনও ছিলেন, সেটা তাঁদের জানা নেই।   


মিস ব্যাশেলেত আগামী মাসে শুরু হতে যাওয়া মানবাধিকার পরিষদের জন্য কোনো প্রতিবেদন রেখে যাচ্ছেন কি না, তা তাদের অধিবেশন শুরুর দিনেই বোঝা যাবে। তবে বাংলাদেশের মানবাধিকারের বিষয়ে বাস্তবে কোন পরিবর্তন না ঘটলে নতুন যিনিই দায়িত্বে আসুন, তিনি তা এড়িয়ে যাবেন, এমনটি ভাবার কোনো কারণ নেই। জাতিসংঘের ডজনখানেক স্বাধীন বিশেষজ্ঞের পরিস্থিতি দেখতে আসার অনুমতির অনুরোধ তাঁরা আপনাআপনি প্রত্যাহার করে নেবেন না। গুম বিষয়ক কমিটির প্রতিনিধিদের বেলায়ও একই কথা প্রযোজ্য। 


সরকারের উচিত হবে, কমিশনের বক্তব্য-বিবৃতির ব্যখ্যা নিজেদের সুবিধামতো দাঁড় করানোর পন্ডশ্রম না করে গুমের শিকার পরিবারগুলোর কথা শোনা। কমিশনের পরামর্শ অনুযায়ী স্বাধীন, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য তদন্ত কমিশন করে প্রতিটি অভিযোগ নিষ্পত্তির ব্যবস্থা করা। সুইডেনভিত্তিক সংবাদ পোর্টাল নেত্র নিউজ এর অনুসন্ধানী প্রতিবেদন `আটনাঘরের বন্দী`র তথ্যগুলো তদনেত বিরোধী দলগুলোর দাবিও গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা উচিত। আভাস মিলছে, সরকার মিস ব্যাশেলেতেরর সুপারিশ শুনতে আগ্রহী নয়। না হলে নির্বাচন সামনে রেখে তিনি মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, রাজনৈতিক কর্মী, মানবাধিকারকর্মী ও বিরোধী দলের শান্তিপূর্ণ সমাবেশের অধিকার নিশ্চিত করা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মাত্রাতিরিক্ত বলপ্রয়োগ বন্ধের যে আহ্বান জানিয়েছেন, এতো তাড়াতাড়ি তার বিপরীত অবস্থা তৈরি হতো না। বিরোধী দলকে কোথাও কর্মসূচি না করতে দেওয়ার যে তান্ডব শুরু হয়েছে এবং পুলিশ যেভাবে ক্ষমতাসীন দলের কর্মীদের প্রশ্রয় দিয়ে বিরোধীদের পিটুনি ও গণমামলা দেওয়া শুরু করেছে, তাতে সেই আলামত স্পষ্ট।  


(৩০ আগষ্ট, ২০২২-এর প্রথম আলো পত্রিকায় প্রকাশিত।)



মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

Bangladesh is vexed by and wary of Modi’s unstinting support to Sheikh Hasina

In the run-up to Bangladesh’s general election in January 2014, New Delhi took the unusual step of sending a top diplomat from its external affairs ministry to Dhaka to persuade General Hussain Muhammaed Ershad, the country’s former military ruler, to participate in the polls. Big questions had been raised over the fairness of the election. The incumbent government was led by Sheikh Hasina’s Awami League, and the leader of the opposition Bangladesh Nationalist Party (BNP) had been placed under virtual house arrest, with police and roadblocks around her house in Dhaka. The BNP and other opposition parties were threatening to boycott the election. Ershad, the head of the Jatiya Party, was perceived as a potential kingmaker, able to bring to power whichever of Bangladesh’s two main parties he supported, but he was also threatening to withdraw from the election.  After a decade of Modi’s reign in India, people in Bangladesh are angry at their government cosying up to a Hindutva regime in N

একটি জরিপ, নৈরাশ্য ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রশ্ন

উন্নত গণতন্ত্রে সরকার , সরকারপ্রধান, ক্ষমতাসীন ও বিরোধী দল এবং বিভিন্ন বিতর্কিত ইস্যুতে প্রায়ই জনমত জরিপ করে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। কখনো বিশ্ববিদ্যালয়, কখনো সংবাদমাধ্যম, আবার কখনো বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এসব জরিপ করায়। বেশ কিছু পেশাদার জরিপকারী প্রতিষ্ঠানও আছে, যারা শুধু জরিপের কাজ করে। এসব জরিপ আমাদের গণমাধ্যমগুলোর অনলাইন ভোটের মতো নয়, যা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই শুধু সেই ওয়েবসাইটের নিয়মিত ব্যবহারকারীদের মতামত ছাড়া আর কিছুই নয়। আমাদের দেশে গণতন্ত্রে প্রত্যাবর্তনের প্রায় দুই দশক বার্ষিক জরিপে রাজনীতির গতিপ্রকৃতির চমৎকার প্রতিফলন দেখা যেত। কিন্তু গণতন্ত্রের ক্ষয়সাধনের সঙ্গে সঙ্গে সেই চর্চা প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। ব্যবসায়িক প্রয়োজন ছাড়া অন্য কোনো বিষয়ে জরিপ করতে গেলে সরকারের সায় আছে কিনা সেটা দেখা হয়, নইলে পেশাদার বিশেষজ্ঞরা বা তাঁদের প্রতিষ্ঠানগুলো ওই দায়িত্ব নিতে চান না। কথা বলার ভয়ের মতো মতামত জানতে চাওয়াতেও এক ধরনের ভয়ের আসর পড়েছে। গণতন্ত্র প্রসারে কাজ করা যুক্তরাষ্ট্রের বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনস্টিটিউট, আইআরআই এ ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম। তারা এখনো মাঝে মধ্যে স্পর্শকাতর রাজন

ভিসা নিষেধাজ্ঞা গুরুতর, সাংবাদিক নির্যাতন কী

একই দিনের দুটি সংবাদ শিরোনাম, ’৯ মাসে ২১৭ সাংবাদিক নির্যাতন ও হয়রানির শিকার: আইন ও সালিশ কেন্দ্র’ এবং ’পিটার হাসের বক্তব্য স্বাধীন সাংবাদিকতার ওপর চাপ, সমাবেশে সাংবাদিকনেতারা’। দুটো খবরই সাংবাদিকতা এবং সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার বিষয়ে। তবে একটি খবর, যাতে আছে সেই সব সাংবাদিকদের কথা, যাঁরা পেশাগত দায়িত্ব পালনের জন্য আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে শারীরিক ক্ষতি অথবা গ্রেপ্তার ও মামলার কারণে হয়রানির শিকার হয়েছেন; আর অন্যটিতে ভবিষ্যতে কোনো গণমাধ্যমকর্মী যুক্তরাষ্ট্র যেতে চাইলে ভিসা না পাওয়ার কারণে তিনি বা তাঁর যে সম্ভাব্য ক্ষতি হতে পারে, তা নিয়ে আশঙ্কা। সাংবাদিকদের নিপীড়ন–নির্যাতন ও হয়রানির বিষয়ে গবেষণার কাজ ও তা প্রকাশের দায়িত্ব পালন করেছে একটি মানবাধিকার সংগঠন। অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের ভিসার দুশ্চিন্তায় প্রতিবাদী হয়েছেন সাংবাদিকদের অপেক্ষাকৃত নতুন একটি প্লাটফর্ম জাস্টিস ফর জার্নালিস্ট।  বেসরকারি মানবাধিকার সংগঠনগুলোর নিয়মিত কাজের একটি হচ্ছে বিভিন্ন নিপীড়ন–নির্যাতন ও হয়রানির মত অধিকার লংঘনের তথ্য সংগ্রহ করা এবং তারই অংশ হিসাবে অন্যতম ঝুঁকিপূর্ণ পেশা সাংবাদিকতার ওপর তাদের আলাদা মনোযোগ। তাদের প্রকাশিত হিসাব