সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

ভিসা নিষেধাজ্ঞা গুরুতর, সাংবাদিক নির্যাতন কী

একই দিনের দুটি সংবাদ শিরোনাম, ’৯ মাসে ২১৭ সাংবাদিক নির্যাতন ও হয়রানির শিকার: আইন ও সালিশ কেন্দ্র’ এবং ’পিটার হাসের বক্তব্য স্বাধীন সাংবাদিকতার ওপর চাপ, সমাবেশে সাংবাদিকনেতারা’। দুটো খবরই সাংবাদিকতা এবং সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার বিষয়ে। তবে একটি খবর, যাতে আছে সেই সব সাংবাদিকদের কথা, যাঁরা পেশাগত দায়িত্ব পালনের জন্য আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে শারীরিক ক্ষতি অথবা গ্রেপ্তার ও মামলার কারণে হয়রানির শিকার হয়েছেন; আর অন্যটিতে ভবিষ্যতে কোনো গণমাধ্যমকর্মী যুক্তরাষ্ট্র যেতে চাইলে ভিসা না পাওয়ার কারণে তিনি বা তাঁর যে সম্ভাব্য ক্ষতি হতে পারে, তা নিয়ে আশঙ্কা। সাংবাদিকদের নিপীড়ন–নির্যাতন ও হয়রানির বিষয়ে গবেষণার কাজ ও তা প্রকাশের দায়িত্ব পালন করেছে একটি মানবাধিকার সংগঠন। অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের ভিসার দুশ্চিন্তায় প্রতিবাদী হয়েছেন সাংবাদিকদের অপেক্ষাকৃত নতুন একটি প্লাটফর্ম জাস্টিস ফর জার্নালিস্ট। 

বেসরকারি মানবাধিকার সংগঠনগুলোর নিয়মিত কাজের একটি হচ্ছে বিভিন্ন নিপীড়ন–নির্যাতন ও হয়রানির মত অধিকার লংঘনের তথ্য সংগ্রহ করা এবং তারই অংশ হিসাবে অন্যতম ঝুঁকিপূর্ণ পেশা সাংবাদিকতার ওপর তাদের আলাদা মনোযোগ। তাদের প্রকাশিত হিসাব বলছে গত জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নয় মাসে দেশে নিহত হয়েছেন ১ জন সাংবাদিক এবং নির্যাতন ও হয়রানির শিকার হয়েছেন ২১৬ জন। জামালপুরের সাংবাদিক গোলাম রব্বানি নাদিম মাত্র কিছুদিন আগেই ক্ষমতাসীন দলের লোকজনের হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন। সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনা এখন অনেকটাই স্বাভাবিক ও সহনীয় হয়ে গেছে। সাংবাদিকনেতারাও একই বিষয় নিয়ে আর কত প্রতিবাদ সমাবেশ করবেন? সেদিক দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নীতি নিয়ে কথা বলায় বরং তাঁরা কিছুটা নতুনত্ব খুঁজে নিয়েছেন।  


বাংলাদেশে আসন্ন নির্বাচনকে সুষ্ঠু ও অবাধ করার প্রক্রিয়াকে যারা  বাধাগ্রস্ত করবে, তাদের ও তাদের সহযোগীদের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপের যে পদক্ষেপ নিয়েছে, তার ব্যাখ্যায় ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস সম্প্রতি বলেছেন,  ভিসা নীতিতে গণমাধ্যমও অর্ন্তভুক্ত হতে পারে।  তাঁর এ মন্তব্যকে স্বাধীন সাংবাদিকতার ওপর চাপ অভিহিত করে রাজনৈতিক বিভাজনের শিকার সাংবাদিক ইউনিয়নের এক অংশের নেতারা বলেছেন, পিটার হাসের এই বক্তব্য গণমাধ্যমের ওপর অযাচিত হস্তক্ষেপের শামিল। ‘ভিসা নীতির নামে সংবাদমাধ্যমে মার্কিন চাপের প্রতিবাদে’  ‘জাস্টিস ফর জার্নালিস্ট’ নামের একটি সংগঠনের আয়োজনে মূলত সরকারসমর্থক সাংবাদিক নেতারাই অংশ নেন।  তাঁরা দাবি করেছেন, রাষ্ট্রদূত হাসের বক্তব্য যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের প্রথম সংশোধনীর বরখেলাপ। য়ুক্তরাষ্ট্রের নিজস্ব আইনের প্রাসঙ্গিকতা এখানে কতটুকু, সে প্রশ্নেও না গিয়েও যেটা জানা দরকার, তা হলো একইরকম বাকস্বাধীনতা আমরা কবে চেয়েছি? 


সাংবাদিকদের অধিকার হরণের বিরুদ্ধে যেকোনো প্রতিবাদ ন্যায্য এবং তাতে গণতন্ত্রে বিশ্বাসী সবারই সমর্থন থাকার কথা। প্রশ্ন হচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্রের ঘোষিত ভিসা নীতিতে কি সত্যিই সংবাদমাধ্যমের অধিকার ক্ষুণ্ণ হবে? তাদের ঘোষিত নীতি বলছে, ”বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক নির্বাচনপ্রক্রিয়াকে ক্ষুণ্ণ করার জন্য দায়ী বা জড়িত যে কোনো বাংলাদেশির ক্ষেত্রে এটি প্রযোজ্য হবে।” সংবাদমাধ্যম বা সাংবাদিকেরা পেশাদারিত্বের সঙ্গে বস্তুনিষ্ঠভাবে খবর ও মতামত প্রকাশের কাজ করলে তো নির্বাচনী প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত বা ক্ষুণ্ণ হওয়ার কথা নয়? তাহলে গণমাধ্যম পেশাগত সততার বজায় রাখার চাপ ছাড়া তো অন্য কোনো চাপের মুখে পড়ার আশঙ্কা থাকে না? ২০১৪ ও ২০১৮ সালের মতো গণহারে ভোটাধিকার হরণের ঘটনা ঘটছে কি না সেদিকে নজর রাখার দায়িত্ব পালন করলে কোনোরকম নিষেধাজ্ঞার ঝুঁকি তৈরি হওয়ার তো কোনো কারণ দেখি না। 


দু:খজনক সত্য হচ্ছে, এখন যাঁরা যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নীতিকে গণমাধ্যমের ওপর অনাকাঙ্খিত ও অন্যায় চাপ অভিহিত করছেন, তাঁদের অনেককেই আমরা নিকট অতীতেও তাঁদের পছন্দ নয় এমন মত প্রকাশের জন্য স্বাধীন সংবাদপত্রের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাতে দেখেছি। সরকারের সমালোচনামূলক বক্তব্য প্রকাশের জন্য প্রথম সারির জনপ্রিয় পত্রিকার সম্পাদক ও সাংবাদিকের বিচার দাবি করতেও তাঁরা কুন্ঠিত হন নি। ভিন্ন ঘটনায় একজন সম্পাদকের পদত্যাগ দাবি করেছেন। সরকার বিভিন্নভাবে যখন ওইসব পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেওয়ার ওপর অঘোষিত নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে, কোনো কোনো সরকারী অনুষ্ঠানে নির্দিষ্ট সংবাদমাধ্যমের সাংবাদিকদের প্রবেশাধিকার নিষিদ্ধ করেছে, তখন যদি তাঁরা গণমাধ্যমের স্বাধীনতায় অন্যায় হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতেন, তাহলে সম্ভবত দেশের গণতন্ত্রের এতটা ক্ষয়সাধন ঘটত না। 


যুক্তরাষ্ট্রের ঘোষিত ভিসানীতি নিয়ে যে এত বিতর্ক ও আলোচনা তার পেছনে অন্যতম বড় দুটি কারণ হচ্ছে এটি শুধু ভবিষ্যতের ভূমিকার জন্য প্রয়োগ হবে তা নয়, অতীতও এ ক্ষেত্রে বিবেচনায় থাকবে বলে তারা জানিয়েছে। তাদের ঘোষণা অনুসারে, বর্তমান বা সাবেক কর্মকর্তা বা কর্মচারী, সরকারের সমর্থক এবং বিরোধী দলীয় সদস্যরা এর অন্তর্ভুক্ত থাকছে, তেমনি এ ধরনের ব্যক্তিদের নিকটতম পরিবারের সদস্যরাও এর অন্তর্ভুক্ত হবেন। স্বভাবত:ই প্রশ্ন উঠতে পারে, যুক্তরাষ্ট্রের ভিসানীতিকে গণমাধ্যমের স্বাধীনতার পরিপন্থী বলে যাঁরা অভিহিত করছেন, তাঁরা কি আসলে নিজেদের ভিসা নীতির আওতামুক্ত রাখার চেষ্টায় এর ভুল ব্যাখ্যা দিচ্ছেন? এতে করে যদি ছেলেমেয়েদের ভবিষ্যৎকে ঝুঁকিমুক্ত করা সম্ভব হয়। 


অন্য অনেক দেশের মতো যুক্তরাষ্ট্রের ভিসার ক্ষেত্রে এমনিতেই সাংবাদিকদের অনুমতি অন্যদের থেকে আলাদা, যা ’জে–ভিসা’ নামে পরিচিত। সাংবাদিকতার কাজে দেশটিতে যেতে হলে কাজের বিষয় ও ধরন জানাতে হয়। জে–ভিসার বদলে অন্য কোনো ভিসায় সে দেশে সাংবাদিকতার কাজ করার কোনো সুযোগ নেই। বরং অতীতে এ রকম ঘটনায় দেশটি থেকে ফেরত পাঠানোর নজিরও রয়েছে। ( বাংলাদেশেও সাংবাদিক হিসাবে ভিসা নেওয়ার শর্ত অন্যান্য ভিসা থেকে আলাদা।) তাহলে কি সাংবাদিকদের জন্য বিশেষ ভিসার এই ব্যবস্থাকেও গণমাধ্যমের স্বাধীনতার পরিপন্থী বলা হবে? 


সন্দেহ নেই, যুক্তরাষ্ট্র যে ভিসা নিষেধাজ্ঞার নীতি ঘোষণা করেছে, তা দু:খজনক ও দেশের জন্য অর্মযাদাকর। অবশ্য ক্ষমতাসীন দল ও বিরোধী দল উভয়েই শুরুতে এই ভিসা নিষেধাজ্ঞাকে স্বাগত জানিয়েছে। এর প্রভাব কোথায়, কেমন হবে, সে বিষয়ে ধারণা ধীরে ধীরে স্পষ্ট হতে থাকায় মনে হচ্ছে  ক্ষমতাসীন দলের এখন চৈতন্যোদয় হয়েছে। পরপর দুটি নির্বাচনী প্রহসনে মানুষের অবাধ ভোটাধিকার হরণের ঘটনা না ঘটলে এবং বিরোধীদল ও ভিন্নমতকে অব্যাহতভাবে নানা কৌশলে – কখনো শক্তি প্রয়োগ এবং কখনো সভা–সমাবেশের ওপর নিয়ন্ত্রণমূলক পদক্ষপ – নির্মূলের চেষ্টার কারণে মানুষের ভোটাধিকার আদায় ও গণতন্ত্র পুনরুজ্জীবনের বিষয়টি এখন এতটা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।  


এই মর্যাদাহানির দায় সম্পূর্ণভাবে বর্তমান সরকারের। যাঁরা সত্যি সত্যিই গণমাধ্যমের স্বাধীনতাকে সমর্থন করেন, তাঁদের উচিত হবে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন আয়োজনের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় পরিবেশ তৈরির মাধ্যমে রাজনৈতিক সংকটে সমাধানের জন্য সরকারের প্রতি দাবি জানানো। গণতন্ত্রহীনতায় অন্যরা চুপ থাকবে – এমন প্রত্যাশা একেবারেই অযৌক্তিক। 


(৫ অক্টোবর, ২০২৩–এর প্রথম আলো পত্রিকায় প্রকাশিত।)



মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বে স্বৈরশাসকের ফেরা সহজ

  গণতন্ত্রে উত্তরণে ব্যর্থতা ও স্বৈরতন্ত্রের নিকৃষ্টতম রুপ প্রত্যক্ষ করার পর অর্ন্তবর্তী সরকারের মেয়াদকালে যে সব বিষয়ে সংস্কারের আলোপ চলছে, তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে নির্বাচনব্যবস্থা। এরশাদের সামরিক স্বৈরাচারের পতনের পর নির্বাচনকে গণতন্ত্র চর্চার মাধ্যম হিসাবে যেভাবে প্রতিষ্ঠার কথা ছিল, তা থেকে প্রধান দুই দলই বিচ্যূত হয়েছিল। পরিণতিতে নির্বাচন শুধু ক্ষমতা দখলের হিংসাত্মক খেলায় পরিণত হয় এবং শেষ পর্যন্ত শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ সাধারণ মানুষের ভোটের অধিকার হরণ করে নির্বাচনকে নানা রকম প্রহসনে পরিণত করে।  এই সমস্যার এক অতি সরলীকৃত সমাধান হিসাবে বলা হচ্ছে, দ্বিদলীয় রাজনীতির বৃত্ত থেকে বেরিয়ে দেশে সত্যিকার বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে। আর বহুদলীয় গণতন্ত্রের জন্য নির্বাচনব্যবস্থায় আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বের ধারণাকে একমাত্র বা চূড়ান্ত সমাধান হিসাবে তুলে ধরা হচ্ছে।  সংখ্যানুপাতিক বা আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতির নির্বাচনে একটি দল যত শতাংশ ভোট পাবে, সে অনুপাতে তারা সংসদের আসন পাবে। এ আনুপাতিক পদ্ধতিতে প্রার্থীদের নাম দল আগাম ঘোষণা করতেও পারে, আবার না–ও পারে। নাম প্রকাশ করা হলে সেটা হব...

অরাজনৈতিক আন্দোলনের করুণ রাজনৈতিক মূল্য

কোটা সংস্কারের দাবিতে সাধারণ ছাত্র–ছাত্রীদের আন্দোলনে  কদিন ধরে যা ঘটে চলেছে, তা যেমন বেদনাদায়ক, তেমনই নিন্দনীয় ও ক্ষোভের কারণ। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের শিক্ষা দিতে ক্ষমতাসীন সরকারের সমর্থক এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীর হাতে একইদিনে দেশের তিন জায়গায় ছয়জনের প্রাণহানির ঘটনা স্বাধীন বাংলাদেশে বিরল।  এবার আরও যেসব ঘটনা আমাদের স্তম্ভিত করেছে, অভিভাবকদের চোখ অশ্রুসিক্ত করেছে, এসব মৃত্যুর পরও সরকারের রাজনৈতিক দম্ভ বজায় রাখার চেষ্টা, যা আরও প্রাণহানির কারণ হয়েছে। ছয়জন তরুণের প্রাণ বিসর্জনের পরও কোটা সংস্কারের দাবিতে সরকার ”নীতিগতভাবে একমত” – একথাটি বলে  আলোচনায় না ডেকে সময়ক্ষেপণ করেছে। আইনমন্ত্রী কথাটি যখন বললেন, তার আগেই আরও জীবন গেল, শত শত মানুষ আহত হলো, দেশের সম্পদ নষ্ট হলো। রাজনৈতিক গরিমা ছাড়া এর আর কোনো কারণ আছে কি? ছাত্রলীগ পরিচয়ে অন্ত্রধারীদের তান্ডব, পুলিশের চরম নিষ্ঠুরতা এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ছাত্রীদের গড়পরতা মারধর ও লাঞ্চিত করার যে দৃশ্যগুলো গণমাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে, তা কোনো অভিভাবকের পক্ষেই ভোলা সম্ভব নয়। এসব ঘটনার বিবরণ উদ্ধৃত না করে শুধু নিষ্ঠুর ...

সংবিধান সংস্কারে জাতীয় সমঝোতা কি অসম্ভব কিছু

সংবিধান সংস্কার কমিশন সংবিধান নিয়ে যে জনমত সংগ্রহ ও জাতীয়ভিত্তিক সংলাপগুলো করছে, তাতে বেশ ভালোই সাড়া মিলছে বলে আভাস পাওয়া যাচ্ছে। প্রায় প্রতিদিনই বিভিন্ন নাগরিক গোষ্ঠী, রাজনৈতিক দল, বিদ্বজ্জনেরা কেমন সংবিধান দেখতে চান, তা নিয়ে বিতর্ক ও মতবিনিময় করছেন। দেশের রাজনৈতিক ভবিষ্যত নির্ধারণের মৌলিক ভিত্তি তথা রাষ্ট্রকাঠামো ও ক্ষমতার বিন্যাস সম্পর্কে নাগরিকদের এতটা উৎসাহ সম্ভবত: এর আগে আর দেখা যায়নি। সংস্কার কমিশনের সূত্র থেকে জেনেছি, অনলাইনে তাঁরা অভূতপূর্ব সাড়া পেয়েছেন এবং মতামত দেওয়ার জন্য সপ্তাহখানেক সময় বাকি থাকতেই ৩০ হাজারেরও বেশি পরামর্শ তাঁদের কাছে জমা পড়েছে। নাগরিকদের এ আগ্রহ থেকে যে বার্তাটি স্পষ্ট হয়, তা হচ্ছে তাঁরা চান তাঁদের মতামত যেন গুরুত্ব পায়। দীর্ঘ ১৫ বছরের স্বৈরশাসনে ক্ষমতাধরদের কিছু বলার বা তাঁদের প্রশ্ন করার কোনো অধিকার সাধারণ মানুষের ছিল না। প্রতি পাঁচ বছরে একবার ভোটের মাধ্যমে প্রতিনিধি নির্বাচনের যে অধিকার, সেটুকুও তাঁরা হারিয়েছিলেন। এই পটভূমিতে নাগরিকদের প্রথম চাওয়া হচ্ছে, তাঁদের হারানো অধিকার ফিরে পাওয়া। ভোট দেওয়ার অধিকার, কথা বলার অধিকার, প্রশ্ন করার অধিকার, সংগঠন করার...