সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

বাংলাদেশ ব্যাংকের নিষেধাজ্ঞায় কি মন্দ খবর আড়াল হচ্ছে

 গত কিছুদিন ধরে দৈনিক পত্রিকাগুলোয় অর্থনীতির দুঃসংবাদ যেভাবে প্রাধান্য পাচ্ছে, তাতে ব্যবসায়ী বা অর্থনীতিতে আগ্রহী ব্যক্তিদের আর আলাদা করে অর্থনৈতিক পত্রিকা খুঁজতে হচ্ছে না। কারণটা ব্যাখ্যার অপেক্ষা রাখে না। অর্থনীতির সঙ্কট সবাই হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছেন। যদিও খারাপ খবরগুলো আড়াল করার চেষ্টার কোনো কমতি নেই।


ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের নতুন সংস্করণ সাইবার নিরাপত্তা আইনসহ দেশে বর্তমানে নয়টি আইন, যা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে গণমাধ্যমের স্বাধীনতাকে প্রভাবিত করে বলে সংবাদপত্র মালিকদের সংগঠন নোয়াবের সভাপতি এ কে আজাদের বক্তব্য পত্রিকায় ছাপা হয়েছে, এর সূত্রে আমরা আরও জেনেছি যে খসড়ার পর্যায়ে থাকা আরও তিনটি আইনের পাশাপাশি প্রেস কাউন্সিল আইন সংশোধনের প্রস্তাবটি হিসাবে ধরলে এমন আইনের সংখ্যা হবে ১৩। 


এত সব বাধা সত্ত্বেও খারাপ খবরই বেশি আসছে। বাংলাদেশ ব্যাংক তাই চেষ্টা করেছে, তাদের কাছ থেকে যেন ব্যাংকিং খাতের আর কোনো অপকীর্তি বা ব্যর্থতার কথা সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ না পায়। কেন্দ্রীয় ব্যাংকে সাংবাদিকদের প্রবেশাধিকার তাই নিষিদ্ধ করা হয়েছে। সাংবাদিকদের বিভিন্ন সংগঠন, সম্পাদক পরিষদ এবং সংবাদপত্রের মালিক সমিতি এ নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের আহ্বান জানালেও নিষেধাজ্ঞর মাসপূর্তিতে আর বেশি বাকি নেই। 


যে উদ্দেশ্যে এ নিষেধাজ্ঞা, তা কি সফল হয়েছে? সাংবাদিকেরা বাংলাদেশ ব্যাংক ভবনে ঢুকতে না পেরে কি কলম বন্ধ করে ফেলেছেন? সংবাদ সম্মেলন বর্জন করাকে কলম বন্ধ রাখা গণ্য করলে অবশ্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্তৃপক্ষ তৃপ্তি বোধ করতে পারে। কেননা,সাংবাদিকেরা ৮ মে তাঁদের সংবাদ সম্মেলন বয়কট করেছিলেন। কিন্তু পত্রিকার প্রধান শিরোনামগুলো দেখলে বোঝা যায় বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যর্থতা, ব্যাংকিং খাতে অপশাসন বা শাসনহীনতার নানা উদাহরণ সংবাদপ্রবাহে প্রাধান্য বজায় রেখেছে। 

সাধারণভাবে সরকারবিরোধী নয় – এমন পত্রিকাগুলোর শিরোনাম এক্ষেত্রে আমরা বিবেচনায় নিতে পারি। ’ভয়াবহ ডলার সংকট’ ( বাংলাদেশ প্রতিদিন), ’বেঁধে দেওয়া দর কার্যকর হচ্ছে না’ ( ইত্তেফাক), ’ডলার উধাও’ ( কালের কন্ঠ), ’কাগজেই মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ’( যুগান্তর)  ’দেশী ব্যাংকের ব্যর্থতায় ব্যবসা ও মুনাফা বাড়ছে বিদেশী ব্যাংকের’ ( বণিক বার্তা) শিরোনামগুলোর সবই কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এখতিয়ারে থাকা নীতি প্রণয়ন ও তা কার্যকর করা সম্পর্কিত। 


সাংবাদিকদের প্রবেশাধিকার নিয়ন্ত্রণের পর গত কয়েকদিনে ব্যাংকিং খাত ও মূল্যস্ফীতি বিষয়ক যত খারাপ খবর ছাপা হয়েছে, তার শুধু শিরোনামগুলো এখানে তুলে ধরার চেষ্টা করলে এ নিবন্ধে তার জায়গা হবে না। অবশ্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক কর্তৃপক্ষ বলতে পারে যে এগুলো সরকারিভাবে প্রকাশিত পরিসংখ্যানের বিশ্লেষণ ও প্রতিক্রিয়ার খবর। তাঁরা আসলে যা গোপন রাখতে চান, তা প্রকাশ পায় নি, যেমন সাবেক গর্ভণর আতিউর রহমান হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে ৮১ কোটি ডলার চুরি হওয়ার তথ্য বেশ কয়েকদিন গোপন রেখেছিলেন। 


তবে শেষ পর্যন্ত তা ঠেকিয়ে রাখা যায়নি, দেশের বাইরে থেকেই সে খবর ফাঁস হয়েছিল। আবার কথিত ক্রলিং পেগ পদ্ধতিতে টাকার অবমূল্যায়ন বা ডলারের দাম বাড়ানোর খবর কিন্তু কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ঘোষণার আগেই একাধিক পত্রিকায় ছাপা হয়েছে। শুধু তারা নির্দিষ্ট করে যা বলতে পারেনি, তা হলো কত শতাংশ অবমূল্যায়ন হচ্ছে। সুতরাং চাইলেই যে সবকিছু গোপন রাখা যায় না, সেটা তাঁরা ভুলে গেলেও, আবারও তার প্রমাণ মিলেছে। 


এর মধ্যেও খবর বেরিয়েছে চট্টগ্রামের একটি ব্যবসায়ী গোষ্ঠী কীভাবে ভুয়া কাগজে ২৪টি ব্যাংক থেকে ৫ হাজার ৬৬৮ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। দুর্বল ব্যাংকের সঙ্গে সবল ব্যাংকের একীভূতকরণের সিদ্ধান্ত যে চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে এবং সবল কিম্বা দুর্বল কোনো ব্যাংকই যে জোরপূর্বক প্রণয়ে রাজি নয়, সেই খবরও গোপন থাকে নি। বিপন্ন অবস্থায় থাকা বেসিক ব্যাংক থেকে অল্প কয়েক দিনের মধ্যেই যে আড়াই হাজার কোটি টাকা গ্রাহকেরা তুলে নিয়েছেন এবং অন্যরা টাকা চাইলে যে তারা টাকা দিতে পারবে না– এই খবর কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রকাশ না করলেও সংবাদপত্রে তা ছাপা হয়েছে। প্রতিবাদ–বিক্ষোভ দমনের রেকর্ডের কারণে দেশে যে ভয়ের পরিবেশ বিরাজ করছে, তা না থাকলে দুর্দশাগ্রস্ত ব্যাংকগুলোর গ্রাহকেরা এখনো কি শান্ত থাকতেন?


স্পষ্টতই: বাংলাদেশ ব্যাংকের নিষেধাজ্ঞার লক্ষ্য ব্যর্থ হয়েছে। সুতরাং আরও একটি ভুল নীতি গ্রহণের জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গর্ভণরকে ধন্যবাদ। আপনার সিদ্ধান্ত যে সাংবাদিকদের সত্য বের করে আনার জেদকে তীব্রতা দিয়েছে, তা তো অস্বীকার করতে পারি না। প্রতিবেশী দেশের সংবাদ মাধ্যমেও বাংলাদেশ ব্যাংকের ভেতরে এক ধরনের নাশকতার কথা প্রকাশ পেয়েছে, তা যদি ঠিক না হয়, তাহলে ভুয়া তথ্য ও গুজবের শাখা–প্রশাখা বিস্তারে পরোক্ষ ভূমিকার দায়ও আপনার কাঁধে বর্তায়। রিজার্ভ সংক্রান্ত ভারতীয় অনলাইনের সংবাদ অস্বীকারের পর তো মানুষের মনে সন্দেহ আরও বেড়েছে। এ সন্দেহ কাটানো সহজ নয়। তথ্য গোপন রাখার চেষ্টা যত হবে, তত যে গুজব ও অপতথ্যের ডালপালা ছড়াবে, একথা নিশ্চয়ই নতুন করে মনে করিয়ে দেওয়ার প্রয়োজন নেই।


যাঁরা এই নিষেধাজ্ঞার সম্মুখসারিতে আছেন, সেই অর্থনৈতিক সংবাদদাতাদের কাছ থেকে জানা গেল যে সরকারের পক্ষ থেকে এবং সরকারসমর্থক সাংবাদিক নেতাদের কেউ কেউ যুক্তি দেখিয়েছেন, পশ্চিমা গণতন্ত্রেও কেন্দ্রীয় ব্যাংকে সাংবাদিকদের অবাধে প্রবেশাধিকার নেই। তাঁদের ভাবটা বাংলাদেশও যেন একটি পরিপূর্ণ ও কার্যকর গণতন্ত্রের দেশ। তাঁরা তাই ফেডারেল রিজার্ভ বা ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের সঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংককে তুলনা করতে চান। ফেডারেল রিজার্ভ কিম্বা ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের স্বাধীনতা, জবাবদিহি এবং স্বচ্ছ্বতার প্রশ্নগুলো এড়িয়ে তাঁরা যে তুলনা টানছেন, তা শুধু কর্তৃত্ববাদী শাসনব্যবস্থায়ই সম্ভব। ইংল্যান্ডে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দায়িত্ব খুবই স্পষ্ট, সরকারের অর্থনৈতিক নীতি বাস্তবায়নে আর্থিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখা ও বাজারে মুদ্রা সরবরাহ নিয়ন্ত্রণ। কিন্তু এ দায়িত্ব তারা স্বাধীনভাবে পালন করে, ক্ষণে ক্ষণে সরকার বা মন্ত্রীদের হস্তক্ষেপ বা ইচ্ছা বাস্তবায়নের বিশেষ করে নিয়মের ব্যত্যয় বা আইনের বাইরে কোনো পদক্ষেপ নিতে তাদের বাধ্য করা যায় না। 


ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, বীমা কেম্পানির মতো আর্থিক সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর খবরদারি করার জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একটি শাখা প্রুডেন্সিয়াল রেগুলেটরি অথরিটি আছে। কিন্তু আলাদাভাবে আরেকটি প্রতিষ্ঠান, ফিনান্সিয়াল কন্ডাক্ট অথরিটি (এফসিএ) সবধরণের ব্যাংকিং ও আর্থিক সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের তদারকি করে থাকে, যাতে সাধারণ গ্রাহক ক্ষতিগ্রস্ত না হন, এবং বাজার প্রতিযোগিতাপূর্ণ থাকে।

 

ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের গর্ভণর একক সিদ্ধান্তে সুদের হার নির্ধারণ করতে পারেন না। মানিটরি পলিসি কমিটির সংখ্যাগরিষ্ঠের সম্মতির প্রয়োজন হয়। ওই কমিটির সভার কার্যবিবরণী প্রকাশ করতে হয়। প্রায় নিয়মিত বিরতিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গর্ভণর ও এফসিএর প্রধানকে পার্লামেন্টের কমিটির সামনে হাজির হয়ে তাদের বিভিন্ন সিদ্ধান্তের ব্যাখ্যা দিতে হয়। পার্লামেন্টারি কমিটির এসব শুনানি সবার জন্য উন্মুক্ত এবং তা টেলিভিশনেও সরাসরি সম্প্রচার হয়ে থাকে। সেখানে ব্যাংক ও আর্থিক সেবা খাতে গ্রাহকের স্বার্থ সবার আগে নিশ্চিত করার একাধিক ব্যবস্থা কার্যকর আছে। ঋণের কিস্তি পরিশোধে ব্যর্থ হলে তার জন্য বীমা ( পেমেন্ট প্রটেশন প্ল্যান, পিপিপি) করার বাধ্যবাধকতা গ্রাহকের ওপর চাপিয়ে দেওয়ার অপরাধে দুই দশক আগে বৃটিশ ব্যাংকগুলো গ্রাহকদের শত শত কোটি পাউন্ড ক্ষতিপূরণ দিতে বাধ্য হয়েছিল। 

 

আমাদের সংসদের ’হ্যাঁ বলা’ সদস্যরা কি কার্যকর কোনো কমিটি ব্যবস্থা গড়ে তুলতে পেরেছেন? কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কি আদৌ কোনো স্বাধীনতা আছে? প্রভাবশালী রাজনীতিক ও ব্যবসায়ীরা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ওপর যখন প্রভাব খাটিয়ে ব্যাংকের লাইসেন্স নিতে পারেন, ঋণখেলাপির সংজ্ঞা বদলাতে বাধ্য করেন, সুদের হার নিয়ন্ত্রণের মতো নীতি নির্ধারণে ভূমিকা রাখতে সক্ষম হন, তা ঘটতে পারে যে ব্যবস্থায়, তাকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানীরা অলিগার্কি বলে থাকেন, গণতন্ত্র নয়।


মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বে স্বৈরশাসকের ফেরা সহজ

  গণতন্ত্রে উত্তরণে ব্যর্থতা ও স্বৈরতন্ত্রের নিকৃষ্টতম রুপ প্রত্যক্ষ করার পর অর্ন্তবর্তী সরকারের মেয়াদকালে যে সব বিষয়ে সংস্কারের আলোপ চলছে, তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে নির্বাচনব্যবস্থা। এরশাদের সামরিক স্বৈরাচারের পতনের পর নির্বাচনকে গণতন্ত্র চর্চার মাধ্যম হিসাবে যেভাবে প্রতিষ্ঠার কথা ছিল, তা থেকে প্রধান দুই দলই বিচ্যূত হয়েছিল। পরিণতিতে নির্বাচন শুধু ক্ষমতা দখলের হিংসাত্মক খেলায় পরিণত হয় এবং শেষ পর্যন্ত শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ সাধারণ মানুষের ভোটের অধিকার হরণ করে নির্বাচনকে নানা রকম প্রহসনে পরিণত করে।  এই সমস্যার এক অতি সরলীকৃত সমাধান হিসাবে বলা হচ্ছে, দ্বিদলীয় রাজনীতির বৃত্ত থেকে বেরিয়ে দেশে সত্যিকার বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে। আর বহুদলীয় গণতন্ত্রের জন্য নির্বাচনব্যবস্থায় আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বের ধারণাকে একমাত্র বা চূড়ান্ত সমাধান হিসাবে তুলে ধরা হচ্ছে।  সংখ্যানুপাতিক বা আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতির নির্বাচনে একটি দল যত শতাংশ ভোট পাবে, সে অনুপাতে তারা সংসদের আসন পাবে। এ আনুপাতিক পদ্ধতিতে প্রার্থীদের নাম দল আগাম ঘোষণা করতেও পারে, আবার না–ও পারে। নাম প্রকাশ করা হলে সেটা হব...

How to Describe the Awami League Accurately?

In an article titled ‘How Not to Describe the Awami League’ , published in this paper, British journalist David Bergman rightly underscores the importance of accuracy in labeling a political party—particularly when such labels carry potential legal consequences. Those familiar with Bergman’s work over the years know that he has consistently taken on politically sensitive and controversial subjects, often at significant personal and professional cost. His courage and commitment to journalistic integrity deserve recognition. Bergman is correct in asserting that “while serious criticisms of the Awami League are both valid and necessary, they must be proportionate and grounded in fact.” His analysis focuses primarily on the legal validity and appropriateness of labeling the Awami League as “fascist” or “Nazi.” He argues that comparing the party to the Nazi regime trivialises the scale of Nazi atrocities and misrepresents the complexities of Bangladeshi politics. Indeed, any historical comp...

সংবিধান সংস্কারে জাতীয় সমঝোতা কি অসম্ভব কিছু

সংবিধান সংস্কার কমিশন সংবিধান নিয়ে যে জনমত সংগ্রহ ও জাতীয়ভিত্তিক সংলাপগুলো করছে, তাতে বেশ ভালোই সাড়া মিলছে বলে আভাস পাওয়া যাচ্ছে। প্রায় প্রতিদিনই বিভিন্ন নাগরিক গোষ্ঠী, রাজনৈতিক দল, বিদ্বজ্জনেরা কেমন সংবিধান দেখতে চান, তা নিয়ে বিতর্ক ও মতবিনিময় করছেন। দেশের রাজনৈতিক ভবিষ্যত নির্ধারণের মৌলিক ভিত্তি তথা রাষ্ট্রকাঠামো ও ক্ষমতার বিন্যাস সম্পর্কে নাগরিকদের এতটা উৎসাহ সম্ভবত: এর আগে আর দেখা যায়নি। সংস্কার কমিশনের সূত্র থেকে জেনেছি, অনলাইনে তাঁরা অভূতপূর্ব সাড়া পেয়েছেন এবং মতামত দেওয়ার জন্য সপ্তাহখানেক সময় বাকি থাকতেই ৩০ হাজারেরও বেশি পরামর্শ তাঁদের কাছে জমা পড়েছে। নাগরিকদের এ আগ্রহ থেকে যে বার্তাটি স্পষ্ট হয়, তা হচ্ছে তাঁরা চান তাঁদের মতামত যেন গুরুত্ব পায়। দীর্ঘ ১৫ বছরের স্বৈরশাসনে ক্ষমতাধরদের কিছু বলার বা তাঁদের প্রশ্ন করার কোনো অধিকার সাধারণ মানুষের ছিল না। প্রতি পাঁচ বছরে একবার ভোটের মাধ্যমে প্রতিনিধি নির্বাচনের যে অধিকার, সেটুকুও তাঁরা হারিয়েছিলেন। এই পটভূমিতে নাগরিকদের প্রথম চাওয়া হচ্ছে, তাঁদের হারানো অধিকার ফিরে পাওয়া। ভোট দেওয়ার অধিকার, কথা বলার অধিকার, প্রশ্ন করার অধিকার, সংগঠন করার...