সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

লুর ফুচকা সফর, জেনারেলের ভিসা নিষেধাজ্ঞা ও কিছু প্রশ্ন

 পাকিস্তানে ইমরান খানের পতনের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের যে কূটনীতিককে অনেকে দায়ী করে থাকেন, সেই ডোনাল্ড লু বাংলাদেশে ফুচকা খেয়ে তার প্রশংসা করে ফিরে যাওয়ার পর ক্ষমতাসীন দলের মধ্যে একটা ফুরফুরে ভাব লক্ষ করা যাচ্ছিল। ডোনাল্ড লু সরকারের প্রতিনিধিদের সঙ্গে দূর্নীতির বিষয়ে আলোচনা করলেও আলোচনায় আসে দুই দেশের একসঙ্গে কাজ করতে চাওয়ার আগ্রহ। 


আমরা পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদের মুখে এমন কথাও শুনলাম যে ডোনাল্ড লু বাংলাদেশ ঘুরে যাওয়ায় বিএনপির মাথা আরও খারাপ হয়ে গেছে। কারণ, তারা বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক এগিয়ে নিয়ে যেতে চায়। এমন সময়ে হঠাৎ করে সোয়া তিন বছর আগে ওঠা অভিযোগের সূত্র ধরে সাবেক সেনাপ্রধান অবসরপ্রাপ্ত জেনারেল আজিজ আহমেদের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র এক ধরনের নিষেধাজ্ঞা আরোপের কথা ঘোষণা এক নতুন অস্বস্তির জন্ম দিয়েছে। 


বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ( র‍্যাব ও সোয়াত) ও তার সাতজন শীর্ষ কর্তার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র আগেও নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে, কিন্তু এবার এমন একজনের বিরুদ্ধে তারা ব্যবস্থা নিয়েছে, যাঁর অবস্থান ছিল রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের তালিকায় অনেক ওপরের দিকে। যুক্তি উঠতে পারে, তিনি চাকরি থেকে অবসর নেওয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের এ পদক্ষেপের কোনো কার্যকর প্রভাব বা উপযোগিতা নেই। কিন্তু সমস্যা হলো – তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগগুলো তিনি দায়িত্বে থাকাকালীন সময়ের। ব্যাখ্যাটি সম্ভবত জেনারেল আজিজের কথাতেই সবচেয়ে ভালো উঠে এসেছে, যখন তিনি বলেছেন, ’এ নিষেধাজ্ঞা ব্যক্তিগত হলেও আওয়ামী লীগ সরকারের সময় তিনি গুরুত্বপূর্ণ পদে ছিলেন। তাই এ ঘটনা সরকারকেও কিছুটা হেয় করে।’


সংবাদমাধ্যমে জেনারেল আজিজ ও তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে যে ভিসা নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার হয়েছে, তা যুক্তরাষ্ট্র ঘোষিত ভিসা নীতির আওতায় হয়নি। ভিসা নীতির আওতায় কাদের বিরুদ্ধে ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপিত হচ্ছে, তা যুক্তরাষ্ট্র সরকার প্রকাশ করে না। ফলে গত বছরের সেপ্টেম্বরে যখন ওয়াশিংটন ঘোষণা করলো যে সুষ্ঠূ ও অবাধ নির্বাচন বাধাগ্রস্ত করার জন্য তারা ভিসা নীতি প্রয়োগ করেছে এবং তাতে আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা, ক্ষমতাসীন  ও বিরোধী দলের সদস্যরা অর্ন্তভুক্ত আছেন, তখন আমরা কারও নাম জানতে পারিনি। আজও জানি না। কিন্তু এবারে জেনারেল আজিজের নাম জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। 


জেনারেল আজিজের বিরুদ্ধে যে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে সেটি নেওয়া হয়েছে সেকশন ৭০৩১ (সি) এর আওতায়। কী আছে এই বিধিতে? ফরেন রিলেশন্স অ্যা্ন্ড রিলেটেড প্রোগ্রামস অ্যাপ্রোপ্রিয়েশন্স অ্যাক্টাের এই বিধির উপ–শিরোনাম হচ্ছে: অ্যান্টি ক্লিপ্টোক্র্যাসি অ্যান্ড হিউম্যান রাইটস। এতে বলা হয়েছে: বিদেশি সরকারের কর্মকর্তা এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের যাদের বিরুদ্ধে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে প্রাকৃতিক সম্পদ উত্তোলনসম্পর্কিত দূর্নীতিসহ উল্লেখযোগ্য দূর্নীতিতে, কিম্বা মানবাধিকার লঙ্ঘনে জড়িত থাকার বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে  বিশ্বাসযোগ্য তথ্য থাকলে তাঁরা যুক্তরাষ্ট্র প্রবেশের অযোগ্য হবে। 


এতে স্পষ্টই বোঝা যাচ্ছে, সাধারণভাবে দূর্নীতির অভিযোগ থাকলেই যে এ আইনটি প্রয়োগ করা হয়, তা নয়। বরং, দূর্নীতির সঙ্গে ক্ষমতার একটা ঘনিষ্ঠ যোগসূত্রের ওপর জোর দিতেই ’ক্লিপ্টোক্র্যাসি’ বিশেষণটি এখানে ব্যবহৃত হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর যে বিবৃতিতে এই ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছে, তাতে তারা বলেছে, ’জেনারেল আজিজের কর্মকাণ্ড বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান এবং সরকারি প্রতিষ্ঠান ও প্রক্রিয়ার প্রতি জনগণের বিশ্বাসকে ক্ষুণ্ন করতে ভূমিকা রেখেছে।’ 


এরপর আরও নির্দিষ্ট করে তারা বলেছে, তিনি  উল্লেখযোগ্য দুর্নীতির আশ্রয় নিয়ে নিয়মতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপের মাধ্যমে  তাঁর ভাইকে বাংলােদেশে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের জন্য জবাবদিহি এড়াতে সহযোগিতা করেছেন। এরপর অভিযোগ করা হয়েছে, তাঁর ভাইয়ের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করে অন্যায্যভাবে সামরিক ক্রয়াদেশ দিয়েদেন। নিজের লাভের জন্য ঘুষের বিনিময়ে সরকারি চাকুরি দিয়েছেন। স্মরণ করা প্রয়োজন যে একাধিক খুনের মামলায় তাঁর তিন ভাই দন্ডিত ছিলেন, যাঁদের একজন বিদেশে পালিয়ে ছিলেন এবং তাঁদের সাজা মওকুফের পেছনে তাঁর নেপথ্য ভূমিকার অভিযোগ আছে। 


যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার খবর প্রচারিত হওয়ার পর জেনারেল আজিজ সম্ভবত ডজনখানেকেরও বেশি সংবাদমাধ্যমকে সাক্ষাৎকার দিয়ে এই ব্যবস্থায় বিস্ময় প্রকাশ করে নিজেকে নির্দোষ দাবি করেছেন। এ রকম এক সাক্ষাৎকারে তিনি ডেইলি স্টারকে বলেছেন, আল–জাজিরার যে ভিডিওটা ২০২১ সালে প্রচার হলো, নিষেধাজ্ঞা দিলে তো তখনই দিতে পারত। এখন কেন? ওয়াশিংটনে তাঁর সেই সরকারি সফরের কথা স্মরণ করে তিনি বলেছেন, ৯টি এনজিও তাঁর সঙ্গে প্রোগ্রাম না করার আহ্বান জানালেও নির্ধারিত সব কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছে। তখনই মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলো ওই কর্মসূচি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল এবং অনেকেই বিস্মিত হয়েছিলেন। 


নিষেধাজ্ঞা এখন কেন – এ প্রশ্নের উত্তর যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা এবং পররাষ্ট্র দপ্তরের কর্মকর্তারাই দিতে পারেন। এমন কি হতে পারে ডোনাল্ড লুর সফরে ওয়াশিংটনের প্রত্যাশা পূরণ হয়নি বলেই ইঙ্গিতবাহী পদক্ষেপ হিসাবে এ নিষেধাজ্ঞা? তবে ধারণা করা অযৌক্তিক হবে না যে তারা দেখতে চেয়েছিল, বাংলাদেশ সরকার অভিযোগগুলোর তদন্ত করে কি না। এখন তারা বলতে পারবে বাংলাদেশ সরকার যেহেতু অভিযোগগুলো গুরুতর হওয়া সত্ত্বেও তা তদন্ত করেনি, তাই তারা এমন ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হয়েছে। 


এখানে স্মরণ করা দরকার, আল–জাজিরায়া অনুসন্ধানী প্রতিবেদন ’অল দ্য প্রাইম মিনিস্টারস মেন’ প্রচারের পর সরকারের অনেকে ওই টিভি চ্যানেলের বিরুদ্ধে মামলা করার ঘোষণা দিয়েছিলেন। ব্যাপক বিতর্কের মুখে জেনারেল আজিজ বলেছিলেন চাকরি থেকে অবসরের পর পরিবারের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলন করে সব তথ্য তুলে ধরা হবে। এগুলোর কিছুই হয়নি। বরং আল–জাজিরা ওই প্রতিবেদনের জন্য অনুসন্ধানী সাংবাদিকতায় মোট সাতটি আর্ন্তজাতিক পুরস্কার পেয়েছে।   


জেনারেল আজিজ সম্পর্কিত বিবৃতিতে বাংলাদেশ প্রশ্নে তিনটি বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের মূল্যায়নের প্রতিফলন রয়েছে। এগুলো হচ্ছে, তাদের বিবেচনায় গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান কার্যকরিতা ক্ষুণ্ণ হয়েছে, সরকারি প্রতিষ্ঠানে দূর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহার ঘটছে এবং অপরাধের জবাবদিহি নিশ্চিত করার ব্যবস্থা বা আইনের শাসন অকার্যকর হয়ে পড়ছে। আর এসবই ঘটছে এমন ব্যক্তির মাধ্যমে যিনি বা যাঁরা ক্ষমতাধর।    


যুক্তরাষ্ট্র যখন তার ভারত সাগর ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় নীতিতে বাংলাদেশকে পেতে চায় এবং চীনের সম্ভাব্য প্রাধান্য বিস্তার রুখতে সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের প্রশ্নে আগের অবস্থানে অনড় নেই, তখন সাবেক সেনাপ্রধানের বিরুদ্ধে বিশেষ ব্যবস্থা দুই দেশের সম্পর্কে কী ধরণের প্রভাব ফেলতে পারে, তা নিয়ে কৌতুহল তৈরি হওয়াই স্বাভাবিক। 


লক্ষ্যণীয় হচ্ছে, র‍্যাব ও তার সাত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার পর সরকার যতটা কড়া প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছিল, এখন তেমনটি ঘটেনি। হতে পারে, নিকট ভবিষ্যতে কোনো নির্বাচন না থাকায় সরকার এর রাজনৈতিক প্রভাব খুব একটা অনুভব করছে না। ’এটি সেনাবাহিনীর বিষয়’ বলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ যে কথা বলেছেন, সেটিও বিবেচ্য। কেননা, অভিযোগ ওঠার পর সেনাসদর থেকে দুই দফা বিবৃতি দিয়ে তা নাকচ করা হয়েছিল। 


এর আগে  র‍্যাব ও সোয়াতের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার রাজনৈতিক প্রভাব ক্ষমতাসীন দল ও সরকার অনেকটাই সামলে নিতে পেরেছে। ওই দুই বাহিনীর সদস্যরা কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হলেও তা সরকারের জন্য বড় কোনো সমস্যা তৈরি করেনি। কিন্তু সমস্যা হলো, নিষেধাজ্ঞা একবার আরোপ হলে তা থেকে যে সহজে মুক্তি মেলে না, তার প্রমাণ ইতিমধ্যে একাধিকবার মিলেছে। জিএসপি সুবিধা প্রত্যাহারের পর দেড় যুগ ধরে নানা তদবিরেও কাজ হয়নি। 


সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলার প্রয়োজনে র‍্যাবের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা বেশিদিন থাকবে না বলে যাঁরা আশা করেছিলেন, তাঁদের জন্য কোনো সুসংবাদ আসেনি। সোয়াতের বিরুদ্ধে লেহি অ্যাক্টের নিষেধাজ্ঞাও বহাল আছে। এভাবে নিষেধাজ্ঞার তালিকা দীর্ঘ হতে থাকলে অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক দিক দিয়ে ক্ষতি আদৌ কি আর সহনীয় পর্য়ায়ে থাকবে? 


(২৩ মে, ২০২৪–এর প্রথম আলো পত্রিকায় প্রকাশিত।)


মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

অরাজনৈতিক আন্দোলনের করুণ রাজনৈতিক মূল্য

কোটা সংস্কারের দাবিতে সাধারণ ছাত্র–ছাত্রীদের আন্দোলনে  কদিন ধরে যা ঘটে চলেছে, তা যেমন বেদনাদায়ক, তেমনই নিন্দনীয় ও ক্ষোভের কারণ। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের শিক্ষা দিতে ক্ষমতাসীন সরকারের সমর্থক এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীর হাতে একইদিনে দেশের তিন জায়গায় ছয়জনের প্রাণহানির ঘটনা স্বাধীন বাংলাদেশে বিরল।  এবার আরও যেসব ঘটনা আমাদের স্তম্ভিত করেছে, অভিভাবকদের চোখ অশ্রুসিক্ত করেছে, এসব মৃত্যুর পরও সরকারের রাজনৈতিক দম্ভ বজায় রাখার চেষ্টা, যা আরও প্রাণহানির কারণ হয়েছে। ছয়জন তরুণের প্রাণ বিসর্জনের পরও কোটা সংস্কারের দাবিতে সরকার ”নীতিগতভাবে একমত” – একথাটি বলে  আলোচনায় না ডেকে সময়ক্ষেপণ করেছে। আইনমন্ত্রী কথাটি যখন বললেন, তার আগেই আরও জীবন গেল, শত শত মানুষ আহত হলো, দেশের সম্পদ নষ্ট হলো। রাজনৈতিক গরিমা ছাড়া এর আর কোনো কারণ আছে কি? ছাত্রলীগ পরিচয়ে অন্ত্রধারীদের তান্ডব, পুলিশের চরম নিষ্ঠুরতা এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ছাত্রীদের গড়পরতা মারধর ও লাঞ্চিত করার যে দৃশ্যগুলো গণমাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে, তা কোনো অভিভাবকের পক্ষেই ভোলা সম্ভব নয়। এসব ঘটনার বিবরণ উদ্ধৃত না করে শুধু নিষ্ঠুর শক্তি প্রয়োগে

Bangladesh is vexed by and wary of Modi’s unstinting support to Sheikh Hasina

In the run-up to Bangladesh’s general election in January 2014, New Delhi took the unusual step of sending a top diplomat from its external affairs ministry to Dhaka to persuade General Hussain Muhammaed Ershad, the country’s former military ruler, to participate in the polls. Big questions had been raised over the fairness of the election. The incumbent government was led by Sheikh Hasina’s Awami League, and the leader of the opposition Bangladesh Nationalist Party (BNP) had been placed under virtual house arrest, with police and roadblocks around her house in Dhaka. The BNP and other opposition parties were threatening to boycott the election. Ershad, the head of the Jatiya Party, was perceived as a potential kingmaker, able to bring to power whichever of Bangladesh’s two main parties he supported, but he was also threatening to withdraw from the election.  After a decade of Modi’s reign in India, people in Bangladesh are angry at their government cosying up to a Hindutva regime in N

ভিসা নিষেধাজ্ঞা গুরুতর, সাংবাদিক নির্যাতন কী

একই দিনের দুটি সংবাদ শিরোনাম, ’৯ মাসে ২১৭ সাংবাদিক নির্যাতন ও হয়রানির শিকার: আইন ও সালিশ কেন্দ্র’ এবং ’পিটার হাসের বক্তব্য স্বাধীন সাংবাদিকতার ওপর চাপ, সমাবেশে সাংবাদিকনেতারা’। দুটো খবরই সাংবাদিকতা এবং সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার বিষয়ে। তবে একটি খবর, যাতে আছে সেই সব সাংবাদিকদের কথা, যাঁরা পেশাগত দায়িত্ব পালনের জন্য আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে শারীরিক ক্ষতি অথবা গ্রেপ্তার ও মামলার কারণে হয়রানির শিকার হয়েছেন; আর অন্যটিতে ভবিষ্যতে কোনো গণমাধ্যমকর্মী যুক্তরাষ্ট্র যেতে চাইলে ভিসা না পাওয়ার কারণে তিনি বা তাঁর যে সম্ভাব্য ক্ষতি হতে পারে, তা নিয়ে আশঙ্কা। সাংবাদিকদের নিপীড়ন–নির্যাতন ও হয়রানির বিষয়ে গবেষণার কাজ ও তা প্রকাশের দায়িত্ব পালন করেছে একটি মানবাধিকার সংগঠন। অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের ভিসার দুশ্চিন্তায় প্রতিবাদী হয়েছেন সাংবাদিকদের অপেক্ষাকৃত নতুন একটি প্লাটফর্ম জাস্টিস ফর জার্নালিস্ট।  বেসরকারি মানবাধিকার সংগঠনগুলোর নিয়মিত কাজের একটি হচ্ছে বিভিন্ন নিপীড়ন–নির্যাতন ও হয়রানির মত অধিকার লংঘনের তথ্য সংগ্রহ করা এবং তারই অংশ হিসাবে অন্যতম ঝুঁকিপূর্ণ পেশা সাংবাদিকতার ওপর তাদের আলাদা মনোযোগ। তাদের প্রকাশিত হিসাব