সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

রাজনৈতিক চমক ও বিচারকদের শৃংখলাবিধি

বিনা প্রতিদ্বন্দিতার সরকার নতুন নির্বাচনের মাত্র একবছর আগে মন্ত্রীসভায় সামান্য রদবদল ঘটিয়ে গণমাধ্যমের আলোচনাকে ক্ষমতাসীন জোটের রাজনীতির দিকে ঘুরিয়ে দিতে অসামান্য সাফল্য দেখিয়েছে। অথচ, যেবিষয়টি আলোচনায় তেমন একটা প্রাধান্য পায়নি সেটি হচ্ছে দেশের বিচারব্যবস্থার অত্যন্ত গুরুত্বর্পূণ অংশ – অধস্তন আদালতের বিচারকদের ওপর জারি হওয়া সরকারী কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার পদক্ষেপে সুপ্রিম কোর্টের সম্মতি। নতুন নিয়োগ পাওয়া এবং দায়িত্ব বদল হওয়া মন্ত্রীরা বাষ্ট্রব্যবস্থায় কর্তৃত্ব করবেন বড়জোর বছরখানেক। কিন্তু, আদালতের ওপর সরকারের নিয়ন্ত্রণ স্থায়ী হবে ততদিন যতদিন না দেশে সত্যিকার গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় একটা বৈপ্লবিক পরিবর্তন ঘটে।  

বাংলাদেশের বিচার বিভাগের জন্য তেসরা জানুয়ারি ২০১৮ একটি মোড় ঘুরানো দিন হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেল। শেষপর্য্যন্ত দেশের শীর্ষস্থানীয় আইনজ্ঞ বা আইনবিদদের আশংকাই সত্য হলো। যে আইনবিদরা স্বাধীন বিচারব্যবস্থার জন্য সবচেয়ে জরুরি এই বিষয়টিতে আশংকা প্রকাশ করেছিলেন তাঁদের দুজন আমাদের সংবিধান রচয়িতাদের অন্যতম যাঁরা বেঁচে আছেন। সাধারণ নাগরিকরা বিচার পাওয়ার প্রাথমিক ভরসার জায়গা হিসাবে এতোদিন যে অধস্তন আদালতের শরণাপন্ন হতেন, তার ওপর সরকারের নিয়ন্ত্রণের ষোলো আনা র্পূণ হলো। র্দূভাগ্যজনকভাবে এদিন তা হয়েছে দেশের সর্ব্বোচ্চ আদালতের সম্মতিতে। অথচ, আমরা একজন সাবেক প্রধান বিচারপতির লিখিত রায়সূত্রে জানি যে দেশের আশি শতাংশেরও বেশি মামলায় রাষ্ট্র হচ্ছে একটি পক্ষ।

সরকার ইচ্ছার বিরুদ্ধে স্বাধীন অবস্থান নেওয়া অধস্তন আদালতের বিচারকদের পক্ষে আর সম্ভব কিনা সে প্রশ্নে সংশয় তৈরি হওয়ার আলামত ইতোমধ্যেই দৃশ্যমান হতে শুরু করেছে। অধস্তন আদালতের বিচারকদের শৃংখলাবিধির যে প্রজ্ঞাপন সরকার গত ১১ ডিসেম্বর জারি করেছিল সেবিষয়ে বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন তেসরা জানুয়ারি এক বিবৃতি দিয়ে বলেছেন অধস্তন আদালতের বিচারকদের মধ্যে এই বিধিমালার বিষয়ে কোনোরুপ অসন্তোষ নেই। হতে পারে বিষয়টি আপিল বিভাগের বিবেচনাধীন থাকায় অ্যাসেসিয়েশন তিন সপ্তাহ নিশ্চুপ থেকেছেন। কিন্তু, আপিল বিভাগের সিদ্ধান্ত পাওয়ার কয়েক ঘন্টার মধ্যেই অ্যাসেসিয়েশনের কার্য্যনির্বাহী কমিটি এবং ঢাকায় অবস্থানরত বিচারকরা ঢাকায় এক বৈঠকে বসে আলোচনাক্রমে ওই বিবৃতি দেন। এরকম একটি গুরুত্বর্পূণ বিষয়ে অ্যাসেসিয়েশনের সাধারণ সভা না করে শুধুমাত্র ঢাকায় অবস্থানরত বিচারকদের নিয়ে সভা করে বিবৃতি জারিতে তড়িঘড়ির ছাপ মেলে। বিবৃতিতে স্বাক্ষরকারী দুজনের একজন আইন মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব এবং অ্যাসেসিয়েশনের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব। পদত্যাগে বাধ্য হওয়া প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার সঙ্গে আইন মন্ত্রণালয়ের মতের মিল ছিল না সেটা মোটামুটি সবারই জানা। সরকারের সঙ্গে যেসব কারণে উচ্চ আদালতের দূরত্ব সৃষ্টি হয়েছিল এই শৃংখলাবিধি তার অন্যতম এবং খুবই গুরুত্বর্পূণ একটি বিষয় ছিল।

বিচারকদের অ্যাসেসিয়েশনের ওই সভায় তাঁরা আরো একটি গুরুত্বর্পূণ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এই শৃংখলাবিধি প্রনয়ণের জন্য সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনাটি এসেছিল যেকারণে সেই মাসদার হোসেন মামলা নামে পরিচিত ৪৮১ জন বিচারকের রিট আবেদনের দুজন আইনজীবিকেও তাঁরা তাঁদের মামলা থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন। অন্যকথায়, অপসারণ করেছেন। ওই আইনজীবি দুজন (ড. কামাল হোসেন এবং ব্যারিষ্টার আমিরুল ইসলাম) আর কেউ নন – সংবিধানপ্রণেতা এবং বিচারবিভাগের স্বাধীনতার বিষয়ে আশংকা প্রকাশ করে বিবৃতিদানকারী ছজন আইনজ্ঞের অন্যতম। সমিতি তাঁদেরকে অপসারণের কারণ হিসাবে বলেছে যে বুধবার আপিল বিভাগে বুধবার ব্যারিষ্টার আমিরুল ইসলাম অধস্তন আদালতের বিচারকদের স্বার্থবিরোধী বক্তব্য উপস্থাপন করেছেন এবং আপিল বিভাগ তা গ্রহণ করেন নি। বুধবার আপিল বিভাগে ব্যারিস্টার আমিরুল ইসলাম বলেছেন যে রাষ্ট্রপতি সংবিধানের যে সংবিধানের ১৩৩ অনুচ্ছেদ (প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী নিয়োগ ও কর্মের শর্তাবলি) অনুযায়ী বিধিমালা করা হয়েছে। এটি কর্মবিভাগের জন্য। এই বিধিমালা চ্যালেঞ্জ করে রিভিউ আবেদন করা হবে।

জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসেসিয়েশন মামলার বাদি না হয়েও ওই দুজন আইনজীবিকে অব্যাহতির সিদ্ধান্ত নেয়। অথচ, বাস্তবতা হলো ওই ৪৮১ জনের একজনও  যদি ড, কামাল বা আমিরুল ইসলামকে দিয়ে পরবর্তী কোনো পদক্ষেপ নিতে চান তাহলে অ্যাসোসিয়েশন তাঁদেরকে নিবৃত্ত করতে পারবে না। সভাসূত্রে নিশ্চিত হওয়া গেছে যে অ্যাসোসিয়েশন মামলার পক্ষ না হওয়ায় ওই সিদ্ধান্তের বিষয়ে সভায় আপত্তি উঠলেও অতিউৎসাহীদের কারণে তা উপেক্ষিত হয়।

১৯৯৫ সাল থেকে প্রায় বাইশ বছর ধরে যে দুজন আইনজীবি অধস্তন আদালতের বিচারকদের স্বার্থরক্ষায় নিরন্তর নিষ্ঠার সঙ্গে চেষ্টা চালিয়ে এসেছেন তাঁদের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ শুধু বিস্ময়কর নয়, বরং অত্যন্ত উদ্বেগজনক। বিশেষত যখন বিবৃতিতে তাঁদের বিরুদ্ধে অদ্ভুত এবং তাঁদের পেশার জন্য মর্য্যাদাহানিকর অভিযোগ উত্থাপন করা হয়েছে। অ্যাসোসিয়েশনের বিবৃতির আরও বিস্ময়কর বক্তব্য হচ্ছে ‘ছয়জন আইনজীবি মাসদার হোসেন মামলাকে রাজনীতিকরণের অপচেষ্টায় লিপ্ত আছেন। প্রধান দুই দলের শিবিরে বিভাজনের উর্ধ্বে আইনের শাসনের পক্ষে এখনও সরব হাতে গোণা যে কয়েকজন আইনজীবি আছেন বিবৃতিদাতা ছয়জন হলেন সেই বিরল ব্যাক্তিত্ব - ড: কামাল হোসেন, ব্যারিস্টার আমিরুল ইসলাম, ব্যারিস্টার রফিকুল হক, হাসান আরিফ, ফিদা এম কামাল এবং ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন। এঁদের বিরুদ্ধে অধস্তন আদালতের বিচারকদের শৃংখলাবিধি নিয়ে রাজনীতিকরণের অভিযোগেই বরং প্রশ্ন ওঠে এতে সরকারকে তুষ্ট করার কোন চেষ্টা আছে কিনা।

শুনানির সময়ে এবং আদেশে আপিল বিভাগ বলেছেন যে শৃংখলাবিধিতে সুপ্রিম কোর্টের প্রাধান্য বজায় রাখা হয়েছে এবং সেকারণেই তাঁরা তা গ্রহণ করেছেন। ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি আব্দুল ওহ্হাব মিয়া বলেছেন যে জারি করা বিধিতে দেখা যাচ্ছে অধস্তন আদালতের বিচারকদের শৃংখলার প্রশ্নে সুপ্রিম কোর্টের পরামর্শের সঙ্গে নির্বাহী বিভাগের মতান্তর হলে সুপ্রিম কোর্টের পরামর্শকেই প্রাধান্য দেওয়ার বিধান রাখা হয়েছে। সুতরাং, যাঁরা সব গেল সব গেল করছেন তাঁরা বিধি না পড়েই তা করছেন। আপিল বিভাগ ২০১৬ সালের ২৮ আগস্ট তাঁদেরই দেওয়া আদেশে সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদে রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা-সংক্রান্ত পর্যবেক্ষণ প্রত্যাহারেরও আদেশ দেন। আপিল বিভাগের এই সিদ্ধান্তের পর ব্যারিষ্টার আমিরুল ইসলাম যর্থাথই বলেছেন যে আপিল বিভাগের সিদ্ধান্তের পর এটিই এখন দেশের আইন।  আইন হিসাবে এটি কার্য্যকর হলেও তার ত্রুটির কথা তুলে ধরা যাবে না তা নয়। তবে, দূর্ভাগ্যজনকভাবে উদ্বেগের বিষয় হচ্ছে এই বিধিমালায় অধস্তন আদালতের স্বাধীনতার যুক্তি শোনার মত সহনশীলতার অবশেষটুকুও আছে কিনা তা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না।  

প্রধান বিচারপতির পদ থেকে এস কে সিনহা সরে যেতে বাধ্য হওয়ার পর আইনমন্ত্রী বলেছেন শুধুমাত্র একজন ব্যাক্তির জন্য এই বিধিমালা জারি আটকে ছিল। আপিল বিভাগ যে পর্যবেক্ষণ প্রত্যাহার করে নিল সেটি হয়েছিল বিচারপতি সিনহার নেতৃত্বেই এবং পুরেো আপিল বিভাগই তাতে একমত ছিলেন। ৩ জানুয়ারি ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি বলেছেন যে এই বিধিমালার ফলে সুপ্রিম কোর্টের পরামর্শ ছাড়া সরকার কিছুই করতে পারবে না। সুপ্রিম কোর্টের পরামর্শ সরকারের পছন্দ না হলে সরকার যে কিছু করে না তার প্রমাণই তো মাসদার হোসেন মামলার রায়ের নির্দেশনা নিয়ে বাইশ বছর বসে থাকা। ১৬ সালের ২৮ অগাস্ট আপিল আদালত মূলত নিজেদের তৈরি করে দেওয়া খসড়া বিধিমালাকেই গেজেট আকারে প্রকাশের নির্দেশনা দিয়েছিল , তার পরিপ্রেক্ষিতে ব্যবস্থা নিতেও মরকার ষোলো মাস সময় নিয়েছে। এই কালক্ষেপণে যে ন্যায়বিচারের প্রক্রিয়া কিভাবে বাধাগ্রস্ত হয় সেকথা নিশ্চয়ই আর স্মরণ করিয়ে দেওয়ার প্রয়োজন পড়ে না। বিচারবিভাগীয় প্রশাসনের জন্য সুপ্রিম কোর্টের যে আলাদা সচিবালয়ের কথা ছিল এখন সেই কাজ যে আইন মন্ত্রণালয়েই হবে সেটাই তো বাস্তবতা। সেকারণেই এই শৃংখলাবিধি অনুমোদনের মাধ্যমে কার্য্যত বাংলাদেশের বিচারবিভাগের যাত্রাপথের মোড় ঘুরানোর আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হলো।

গণমাধ্যমের আলোচনায় মন্ত্রীসভার রদবদলের বিষয়টি প্রাধান্য পেলেও বস্তুনিষ্ঠ পর্যালোচনায় মানতেই হবে   যে এতে বড়ধরণের কোনো চমক নেই। কেননা, কতিপয় মন্ত্রীর বিরুদ্ধে অযোগ্যতা ও দায়িত্বপালনের সামর্থ্য নিয়ে নানাধরণের সমালোচনা থাকলেও কেউই চাকরি হারান নি। ব্যাংকিংখাতে হাজার হাজার কোটি টাকার অনিয়মের দায় কিম্বা খাদ্যমজুত ও সরবরাহের অব্যবস্থাপনা, অথবা নকলবাজিকে জাতীয় শিক্ষাব্যবস্থার একটি অবশ্যম্ভবী অনুশীলনে পরিণত করার বিতর্ক – কোনোকিছুর জন্যই কাউকে জবাবদিহি করতে হয়েছে বলে মনে হয় না। শুধু দপ্তর অদলবদল করাতেই বিমানমন্ত্রী আকাশ থেকে মাটিতে নেমে এসেছেন, আর টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী মহাকাশে উপগ্রহ পাঠানোর ব্যবস্থা করার পর তার উৎক্ষেপণের সুযোগ না পাওয়ায় কিছুটা হতাশা প্রকাশ করেছেন।

মন্ত্রীসভার দপ্তর অদলবদলে সবচেয়ে লক্ষ্যণীয় যেটি তাহোল পরিবর্তনগুলো কার্য্যত ঘটেছে ক্ষমতাসীন জোটের শরীকদলগুলোর নেতাদের ক্ষেত্রে। দুই বামপন্থী নেতা রাশেদ খান মেনন এবং হাসানুল হক ইনু এতোদিন এককভাবে মন্ত্রণালয় চালালেও এখন তাঁদের একজন করে প্রতিমন্ত্রী নিয়ে চলতে হবে। এর সম্ভাব্য কারণ দুটো হতে পারে। প্রথমত: যেহেতু নির্বাচন ঘনিয়ে আসছে সেহেতু তাঁরা যেন নিজ নিজ দলের দিকে নজর দিয়ে ভালো করে প্রস্তুতি নিতে পারেন সেজন্য মন্ত্রণালয়ের বোঝা কমানো। আবার এর ঠিক উল্টোটাও হতে পারে যাতে তাঁদেরকে সবসময়েই চাপে রাখা যায় সেজন্যে প্রতিমন্ত্রী পদ আওয়ামী লীগের নিজস্ব লোক রাখা। তবে, এই দুজনের জন্যই যেটি হজম করা কঠিন হতো তা হচ্ছে তাঁদের দলের দ্বিতীয় কাউকে মন্ত্রীসভায় স্থান দেওয়া। সেটি না হওয়ায় তাঁরা যে হাঁফ ছেড়েছেন তাতে সন্দেহ নেই। অবশ্য, তৃতীয় আরেকটি সম্ভাবনার কথাও এখানে বলে রাখা ভালো। ইসলামপন্থীদের (বিশেষত হেফাজতে ইসলাম) বিরুদ্ধে বামপন্থীরা একটু বেশি সরব বলেই তাঁদেরকে একটু বুঝিয়ে দেওয়া হলো তাঁদের জবাববদিহি আসলে কার কাছে। নির্বাচনের সময় ইসলামপন্থীদের সঙ্গে লেনদেনের পথে যেন তাঁরা ভবিষ্যতে কোনো বাধা সৃষ্টির চেষ্টা না করেন সেজন্যে তাঁদেরকে মাটিতে নামিয়ে আনা প্রয়োজন ছিল।

(১০ ডিসেম্বর, ২০১৮ প্রথম আলোয় বিশ্বায়নের কলামে প্রকাশিত।)

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

Bangladesh is vexed by and wary of Modi’s unstinting support to Sheikh Hasina

In the run-up to Bangladesh’s general election in January 2014, New Delhi took the unusual step of sending a top diplomat from its external affairs ministry to Dhaka to persuade General Hussain Muhammaed Ershad, the country’s former military ruler, to participate in the polls. Big questions had been raised over the fairness of the election. The incumbent government was led by Sheikh Hasina’s Awami League, and the leader of the opposition Bangladesh Nationalist Party (BNP) had been placed under virtual house arrest, with police and roadblocks around her house in Dhaka. The BNP and other opposition parties were threatening to boycott the election. Ershad, the head of the Jatiya Party, was perceived as a potential kingmaker, able to bring to power whichever of Bangladesh’s two main parties he supported, but he was also threatening to withdraw from the election.  After a decade of Modi’s reign in India, people in Bangladesh are angry at their government cosying up to a Hindutva regime in N

একটি জরিপ, নৈরাশ্য ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রশ্ন

উন্নত গণতন্ত্রে সরকার , সরকারপ্রধান, ক্ষমতাসীন ও বিরোধী দল এবং বিভিন্ন বিতর্কিত ইস্যুতে প্রায়ই জনমত জরিপ করে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। কখনো বিশ্ববিদ্যালয়, কখনো সংবাদমাধ্যম, আবার কখনো বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এসব জরিপ করায়। বেশ কিছু পেশাদার জরিপকারী প্রতিষ্ঠানও আছে, যারা শুধু জরিপের কাজ করে। এসব জরিপ আমাদের গণমাধ্যমগুলোর অনলাইন ভোটের মতো নয়, যা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই শুধু সেই ওয়েবসাইটের নিয়মিত ব্যবহারকারীদের মতামত ছাড়া আর কিছুই নয়। আমাদের দেশে গণতন্ত্রে প্রত্যাবর্তনের প্রায় দুই দশক বার্ষিক জরিপে রাজনীতির গতিপ্রকৃতির চমৎকার প্রতিফলন দেখা যেত। কিন্তু গণতন্ত্রের ক্ষয়সাধনের সঙ্গে সঙ্গে সেই চর্চা প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। ব্যবসায়িক প্রয়োজন ছাড়া অন্য কোনো বিষয়ে জরিপ করতে গেলে সরকারের সায় আছে কিনা সেটা দেখা হয়, নইলে পেশাদার বিশেষজ্ঞরা বা তাঁদের প্রতিষ্ঠানগুলো ওই দায়িত্ব নিতে চান না। কথা বলার ভয়ের মতো মতামত জানতে চাওয়াতেও এক ধরনের ভয়ের আসর পড়েছে। গণতন্ত্র প্রসারে কাজ করা যুক্তরাষ্ট্রের বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনস্টিটিউট, আইআরআই এ ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম। তারা এখনো মাঝে মধ্যে স্পর্শকাতর রাজন

ভিসা নিষেধাজ্ঞা গুরুতর, সাংবাদিক নির্যাতন কী

একই দিনের দুটি সংবাদ শিরোনাম, ’৯ মাসে ২১৭ সাংবাদিক নির্যাতন ও হয়রানির শিকার: আইন ও সালিশ কেন্দ্র’ এবং ’পিটার হাসের বক্তব্য স্বাধীন সাংবাদিকতার ওপর চাপ, সমাবেশে সাংবাদিকনেতারা’। দুটো খবরই সাংবাদিকতা এবং সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার বিষয়ে। তবে একটি খবর, যাতে আছে সেই সব সাংবাদিকদের কথা, যাঁরা পেশাগত দায়িত্ব পালনের জন্য আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে শারীরিক ক্ষতি অথবা গ্রেপ্তার ও মামলার কারণে হয়রানির শিকার হয়েছেন; আর অন্যটিতে ভবিষ্যতে কোনো গণমাধ্যমকর্মী যুক্তরাষ্ট্র যেতে চাইলে ভিসা না পাওয়ার কারণে তিনি বা তাঁর যে সম্ভাব্য ক্ষতি হতে পারে, তা নিয়ে আশঙ্কা। সাংবাদিকদের নিপীড়ন–নির্যাতন ও হয়রানির বিষয়ে গবেষণার কাজ ও তা প্রকাশের দায়িত্ব পালন করেছে একটি মানবাধিকার সংগঠন। অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের ভিসার দুশ্চিন্তায় প্রতিবাদী হয়েছেন সাংবাদিকদের অপেক্ষাকৃত নতুন একটি প্লাটফর্ম জাস্টিস ফর জার্নালিস্ট।  বেসরকারি মানবাধিকার সংগঠনগুলোর নিয়মিত কাজের একটি হচ্ছে বিভিন্ন নিপীড়ন–নির্যাতন ও হয়রানির মত অধিকার লংঘনের তথ্য সংগ্রহ করা এবং তারই অংশ হিসাবে অন্যতম ঝুঁকিপূর্ণ পেশা সাংবাদিকতার ওপর তাদের আলাদা মনোযোগ। তাদের প্রকাশিত হিসাব