সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

উন্নত দেশে কাগজের ভোটে ভরসা কেন?


উন্নত দেশগুলো যখন কাগজের ভোটে ফিরে যাচ্ছে তখন উন্নত হওয়ার স্বপ্ন দেখানো বাংলাদেশের সরকার এবং নির্বাচন কমিশন ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিনে নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য ধনুরভাঙ্গা পণ করেছেন। পর্যাপ্ত পরীক্ষা-নিরীক্ষা, প্রশিক্ষণ এবং প্রস্তুতি ছাড়াই তাড়াহুড়ো করে যেভাবে সংসদ নির্বাচনে এটি ব্যবহারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে তাতে এর উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন ওঠাই স্বাভাবিক। অস্বাভাবিক দ্রুততায়  ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন কেনার জন্য প্রকল্প তৈরি, জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদে সেই প্রকল্প অনুমোদন, শুরুতেই প্রায় দুই হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ, নির্বাচনী আইন, আরপিও সংশোধনের খসড়া রচনা এবং তা পাশ করানোর সব আয়োজন যে গতিতে সম্পন্ন হচ্ছে তা নি:সন্দেহে এক নতুন রেকর্ড তৈরি করছে। একজন কমিশনারের যৌক্তিক আপত্তি কেন নাকচ হয়েছে তারও কোনো ব্যাখ্যা নেই। অথচ, ইভিএম কেনা হচ্ছে ভারতের চেয়েও ১১ গুণ বেশি দামে।

কথায় কথায় আমরা ব্রিটিশ গণতন্ত্র বা ওয়েস্টমিনস্টার পদ্ধতির দৃষ্টান্ত দেই এবং তাকেই আদর্শ মানার কথা বলি। সউদি আরব ঘুরে এসে প্রধানমন্ত্রী যে সংবাদ সম্মেলন করেছেন সেখানেও তিনি ব্রিটেনের নজির তুলে ধরেছেন। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিলোপ ঘটানোর পর নির্বাচনকালীন সরকার বা রুটিন কাজের জন্য ছোট মন্ত্রীসভা গঠনের যে ধারণা তৈরি করা হয়েছিল, সেই আলোকে এবারে কবে মন্ত্রীসভায় রদবদল ঘটবে এমন প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী ব্রিটেনের প্রসঙ্গ টানেন। মন্ত্রীসভা ছোট করলে উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হবে মন্তব্য করে তিনি বলেন যে ব্রিটেনে তো মন্ত্রীসভায় রদবদল ঘটে না।

প্রধানমন্ত্রী ঠিকই বলেছেন। তবে, আংশিক না বলে পুরোটা বললে ভালো হোত। তিনি যেসব কথা বলেননি তার মধ্যে আছে : যুক্তরাজ্যের মন্ত্রীসভা নির্বাচনের সময়ে রুটিন কাজের বাইরে কোনো নীতিগত সিদ্ধান্ত নেয় না; তাঁদের নির্বাচনী প্রচারের হিসাব সর্ম্পূণ আলাদাভাবে রাখতে হয় - সরকারী ব্যয়ে প্রচার চালানোর সুযোগ নেই; সরকারী প্রশাসনের স্থায়ী চাকরিতে থাকা আমলারা নির্বাচনের ছয় মাস আগে থেকে বিরোধীদলের সঙ্গে রাষ্ট্রীয় সমস্ত কার্যক্রমের বিষয়ে নিয়মিত অবহিত করে থাকে, যাতে বিরোধীদল তাদের বিকল্প কর্মসূচি তৈরি করতে পারে এবং আমলারাও বিরোধীদল জয়ী হলে তাদের কর্মসূচি বাস্তবায়নের পরিকল্পনা শুরু করতে পারেন; রাজনৈতিক নিয়োগপ্রাপ্ত (মন্ত্রীদের) উপদেষ্টাদের পদত্যাগ করতে হয়। সবচেয়ে বড় কথা পার্লামেন্টের অবসান ঘটে, এমপিরা তখন আর এমপি থাকেন না। ব্রিটেনের গণতন্ত্রের প্রসঙ্গ এখন থাক। আমি বরং নজর দিতে চাই ইন্টারনেটের উদ্ভাবন যে দেশে সেই ব্রিটেন এবং অন্যান্য উন্নত দেশে ইভিএম ব্যবহার হয় না কেন সেই প্রসঙ্গে।

গত ২৪ অক্টোবর, বুধবার, হাউজ অব কমন্সের ডিজিটাল, তথ্য, সংস্কৃতি এবং ক্রীড়া বিষয়ক কমিটিতে ওই দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী জেরেমি রাইট বলেছেন কাগজের ব্যালট এবং পেন্সিলের কারণেই ব্রিটিশ নির্বাচনে রুশদের নাক গলানো ঠেকানো গেছে। তিনি বলেছেন রুশরা যে নির্বাচনকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করেছে সেবিষয়ে বিন্দুমাত্র সন্দেহ নেই। তবে, তারা সফল হয় নি। জেরেমি রাইটের মতে দুভাবে নির্বাচনে নাক গলানোর চেষ্টা হয় - একটি হচ্ছে ভোটিং মেশিনের মত অবকাঠামোয় গোপন অনুপ্রবেশ বা হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে ফল পাল্টে দিয়ে; আরেকটি হচ্ছে নানাধরণের ভুঁয়া তথ্য ও প্রচারের মাধ্যমে। ইতিহাস অনুসন্ধানে দেখা যায় ২০০৩ সালে একটি এলাকায় স্থানীয় সরকার নির্বাচনে সীমিত আকারে পরীক্ষামূলকভাবে ইভিএম ব্যবহার করা হয়। তখন এক রিপোর্টে বলা হয় যে ইভিএম ব্যবহারে নির্বাচনে তেমন কোনো প্রভাব পড়েনি। তারপর , ২০০৭ সালে আরও পাঁচটি জায়গায় পরীক্ষা চালানো হয়। কিন্তু, তারপর এনিয়ে আর কোনো পরীক্ষা-নিরীক্ষা হয় নি।

এর মূল কারণ, ইলেক্ট্রনিক ভোটব্যবস্থার নিরাপত্তা ঝুঁকি। হারভার্ড ইউনিভার্সিটির সাইবার আইন বিভাগ সুইজারল্যান্ডের ই-ভোটিংয়ের বিষয়ে গবেষণা চালিয়েও ওই একই ঝুঁকির কথা বলেছে। ইলেক্ট্রনিক ভোট এবং ভোট মেশিনের সফটওয়্যারগুলো যে ভোটের আগে, ভোটগ্রহণের সময়ে এবং পরে হ্যাকিংয়ের কবলে পড়বে না তা নিশ্চিত করা যায়নি বলেই উন্নত দেশে এখনও কাগেজের ভোটই ভরসা। ইউরোপের আটটি দেশ ইভিএম পদ্ধতি চেষ্টা করে তা পরিত্যাগ করেছে, ফিরে গেছে কাগজের ভোট এবং হাতে হাতে গণনার ব্যবস্থায়। হ্যাকিংয়ের ঝুঁকির কারণে এমনকি জার্মানির সাংবিধানিক আদালত ইভিএমে ভোটগ্রহণ নিষিদ্ধ করেছে। যুক্তরাষ্ট্রে কয়েকটি রাজ্যে ইভিএম ব্যবহার হলেও তার পাশাপাশি রাখা হচ্ছে কাগজের রেকর্ড। ভারতেও ইভিএম নিয়ে জোর বিতর্ক হয়েছে এবং অনেক দলই এর বিরোধিতা বজায় রেখেছে। সেখানেও সুপ্রিম কোর্ট যাচাইযোগ্য কাগজের রেকর্ড  (ভেরিফায়েবল পেপার ট্রেল) রাখার সুপারিশ করেছে যা কমিশন মেনে নিয়েছে। আমাদের ইভিএম মেশিনে কোনো যাচাইযোগ্য কাগজের রেকর্ড রাখার ব্যবস্থা নেই, যা স্পষ্টত:ই যর্থাথ বিকল্প নয় ।
   
পরীক্ষামূলকভাবে আমাদের দেশে যেসব নির্বাচনে (সিটি কর্পোরেশন) এটি ব্যবহৃত হয়েছে তার ফলাফল কতটা সন্তোষজনক তার কোনো নিরীক্ষা কি হয়েছে? যে কটি নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহৃত হয়েছে সেগুলোর প্রায় সবকটিতেই বিরোধী প্রার্থীরা মাঝপথে ভোট বয়কট করে সরে দাঁড়িয়েছেন সেহেতু ক্ষমতাসীন দল এবং কমিশনের বাইরে অন্য কোনো অংশীজনের এবিষয়ে যথেষ্ট অভিজ্ঞতা লাভের সুযোগ হয়নি। অথচ, একটা গ্রহণযোগ্য ও য়ৌক্তিক মূল্যায়ন ছাড়াই ইভিএম দেশবাসীর ওপর চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকে হ্যাকিংয়ে ৮ কোটি ডলার খোয়ানোর ঘটনাতেও আমাদের শিক্ষা হয় নি। খোয়া যাওয়া টাকা যেমন ফেরে নি, হারানো ভোটও তো তেমন ফিরবে না।  কয়েকটি বিভাগীয় শহরে কথিত ইভিএম মেলা আয়োজনেই অংশীজনদের ঐকমত্য গড়ে উঠবে এমন ধারণা হাস্যকর। বিষয়টিতে নির্বাচন কমিশনারদের মধ্যেকার মতবিরোধের প্রশ্নটিও এক্ষেত্রে উপেক্ষণীয় নয়, বিশেষ করে সরকারের একজন জৈষ্ঠমন্ত্রী যখন ভিন্নমত পোষণকারী কমিশনারের পদত্যাগ দাবি করেন। ঘটনাক্রমে আভাস মেলে যা কিছুই হচ্ছে, তা হচ্ছে সরকারের ইচ্ছাতেই এবং কমিশনের ভূমিকা সেই আজ্ঞার প্রতিপালন মাত্র।

বিরোধী রাজনীতির দৈন্যদশার সুযোগে যেভাবে নিয়ন্ত্রিত নির্বাচন আয়োজনের যে পরিকল্পনা করা হয়েছিল সেটা আর সম্ভব নাও হতে পারে এমন আশংকা থেকে সরকার দূরভিসন্ধিমূলকভাবে এই উদ্যোগ নিচ্ছে বলে   বিরোধীদলের অভিযোগ। অভিযোগটি একেবারেই অমূলক সেটা প্রমাণ করতে হলে এই অপ্রয়োজনীয় ঝুঁকি পরিত্যাগ করা উচিত।  ক্ষমতাসীন জোটের নির্বাচন সমন্বয়কারী হিসাবে অতীতে একাধিকবার দায়িত্বপালন করেছেন যিনি, সেই প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা, এইচ টি ইমাম সাম্প্রতিক বক্তব্য অনুযায়ী দেশে এখনও বিএনপির ৩০ শতাংশ ভোট আছে (স্মরণ করা যেতে পারে ৯১ সালে বিএনপি ৩১ শতাংশের চেয়েও কম ভোট পেয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠ দল হয়েছিল, কিন্তু আওয়ামী লীগ ৩০ শতাংশ ভোট পেলেও আসন পেয়েছিল ৮৮টি)। আমরা জানি, প্রধান দুই দল আওয়ামী লীগ আর বিএনপির মধ্যে সমর্থকদের ভোটের ব্যবধান সামান্যই। দলীয় আনুগত্যের বাইরে যাঁরা সাধারণত তাঁদের একটা বড় অংশই নানা কারণে ক্ষমতাসীনদের বিরুদ্ধে অনাস্থার ভোট দিয়ে থাকে। ফলে, ক্ষমতার পালাবদলটা স্বাভাবিক ধারায় পরিণত হয়েছিল। ২০১৪তে সেই ধারায় অস্বাভিাবিক ছেদ ঘটানো হলেও স্বাভাবিক নির্বাচনে ক্ষমতাসীনদের ক্ষমতা হারানোর আশংকা থেকেই যায়। এমনকি, অতিদূর্বল বিরোধীদলের কাছেও। প্রধান প্রতিদ্বন্দীদের লড়াই যদি সেয়ানে সেয়ান হয়, তাহলে ইলেক্ট্রনিক ভোটব্যবস্থায় বড়ধরণের বিচ্যূতি ঘটানোর প্রয়োজন হবে না, সামান্য বিচ্যূতিই যথেষ্ট হবে।

ইভিএম চালু করায় তাড়াহুড়োর পেছনে যদি রাজনৈতিক উদ্দেশ্য না থেকে থাকে তাহলে দ্বিতীয় যে সম্ভাবনা থাকে তা হচ্ছে কোনো বিশেষ ব্যাক্তি বা গোষ্ঠীকে আর্থিকভাবে দ্রুততম সময়ে লাভবান হওয়ার সুযোগ করে দেওয়া। অবশ্য, রাজনৈতিক উদ্দেশ্য এবং গোষ্ঠীবিশেষের আর্থিক সুবিধা দেওয়া এই দুইয়ের সম্মিলন ঘটার কারণেও এমনটি হতে পারে। ইভিএম এখন কমিশনের কাছে যতটা অগ্রাধিকার পাচ্ছে প্রতিদ্বন্দী দলগুলোকে আস্থায় নিতে প্রতিদ্বন্দিতার সমসুযোগ সৃষ্টির বিষয়টি যদি ততটা অগ্রাধিকার পেতো তাহলে একটা গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের প্রশ্নে অনেকেই কিছুটা আশাবাদী হতে পারতেন। কিন্তু, সেসব দিকে তাঁদের আগ্রহের কোনো লক্ষণ নেই। ২০১৪তে জাতীয় পার্টিকে নির্বাচনে নিতে দৃশ্যমান বিদেশী চাপের স্মৃতি কেউই বিস্মৃত হন নি। তাই,  ই-ভোটের নামে নির্বাচনব্যবস্থায় অদৃশ্য কোনো হস্তক্ষেপের অনাবশ্যক ঝুঁকি গ্রহণের যৌক্তিকতা আমাদের কাছে বোধগম্য নয়।  
(২৯ অক্টোবর, ২০১৮‘র প্রথম আলোয় প্রকাশিত।)

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

Bangladesh is vexed by and wary of Modi’s unstinting support to Sheikh Hasina

In the run-up to Bangladesh’s general election in January 2014, New Delhi took the unusual step of sending a top diplomat from its external affairs ministry to Dhaka to persuade General Hussain Muhammaed Ershad, the country’s former military ruler, to participate in the polls. Big questions had been raised over the fairness of the election. The incumbent government was led by Sheikh Hasina’s Awami League, and the leader of the opposition Bangladesh Nationalist Party (BNP) had been placed under virtual house arrest, with police and roadblocks around her house in Dhaka. The BNP and other opposition parties were threatening to boycott the election. Ershad, the head of the Jatiya Party, was perceived as a potential kingmaker, able to bring to power whichever of Bangladesh’s two main parties he supported, but he was also threatening to withdraw from the election.  After a decade of Modi’s reign in India, people in Bangladesh are angry at their government cosying up to a Hindutva regime in N

একটি জরিপ, নৈরাশ্য ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রশ্ন

উন্নত গণতন্ত্রে সরকার , সরকারপ্রধান, ক্ষমতাসীন ও বিরোধী দল এবং বিভিন্ন বিতর্কিত ইস্যুতে প্রায়ই জনমত জরিপ করে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। কখনো বিশ্ববিদ্যালয়, কখনো সংবাদমাধ্যম, আবার কখনো বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এসব জরিপ করায়। বেশ কিছু পেশাদার জরিপকারী প্রতিষ্ঠানও আছে, যারা শুধু জরিপের কাজ করে। এসব জরিপ আমাদের গণমাধ্যমগুলোর অনলাইন ভোটের মতো নয়, যা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই শুধু সেই ওয়েবসাইটের নিয়মিত ব্যবহারকারীদের মতামত ছাড়া আর কিছুই নয়। আমাদের দেশে গণতন্ত্রে প্রত্যাবর্তনের প্রায় দুই দশক বার্ষিক জরিপে রাজনীতির গতিপ্রকৃতির চমৎকার প্রতিফলন দেখা যেত। কিন্তু গণতন্ত্রের ক্ষয়সাধনের সঙ্গে সঙ্গে সেই চর্চা প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। ব্যবসায়িক প্রয়োজন ছাড়া অন্য কোনো বিষয়ে জরিপ করতে গেলে সরকারের সায় আছে কিনা সেটা দেখা হয়, নইলে পেশাদার বিশেষজ্ঞরা বা তাঁদের প্রতিষ্ঠানগুলো ওই দায়িত্ব নিতে চান না। কথা বলার ভয়ের মতো মতামত জানতে চাওয়াতেও এক ধরনের ভয়ের আসর পড়েছে। গণতন্ত্র প্রসারে কাজ করা যুক্তরাষ্ট্রের বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনস্টিটিউট, আইআরআই এ ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম। তারা এখনো মাঝে মধ্যে স্পর্শকাতর রাজন

ভিসা নিষেধাজ্ঞা গুরুতর, সাংবাদিক নির্যাতন কী

একই দিনের দুটি সংবাদ শিরোনাম, ’৯ মাসে ২১৭ সাংবাদিক নির্যাতন ও হয়রানির শিকার: আইন ও সালিশ কেন্দ্র’ এবং ’পিটার হাসের বক্তব্য স্বাধীন সাংবাদিকতার ওপর চাপ, সমাবেশে সাংবাদিকনেতারা’। দুটো খবরই সাংবাদিকতা এবং সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার বিষয়ে। তবে একটি খবর, যাতে আছে সেই সব সাংবাদিকদের কথা, যাঁরা পেশাগত দায়িত্ব পালনের জন্য আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে শারীরিক ক্ষতি অথবা গ্রেপ্তার ও মামলার কারণে হয়রানির শিকার হয়েছেন; আর অন্যটিতে ভবিষ্যতে কোনো গণমাধ্যমকর্মী যুক্তরাষ্ট্র যেতে চাইলে ভিসা না পাওয়ার কারণে তিনি বা তাঁর যে সম্ভাব্য ক্ষতি হতে পারে, তা নিয়ে আশঙ্কা। সাংবাদিকদের নিপীড়ন–নির্যাতন ও হয়রানির বিষয়ে গবেষণার কাজ ও তা প্রকাশের দায়িত্ব পালন করেছে একটি মানবাধিকার সংগঠন। অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের ভিসার দুশ্চিন্তায় প্রতিবাদী হয়েছেন সাংবাদিকদের অপেক্ষাকৃত নতুন একটি প্লাটফর্ম জাস্টিস ফর জার্নালিস্ট।  বেসরকারি মানবাধিকার সংগঠনগুলোর নিয়মিত কাজের একটি হচ্ছে বিভিন্ন নিপীড়ন–নির্যাতন ও হয়রানির মত অধিকার লংঘনের তথ্য সংগ্রহ করা এবং তারই অংশ হিসাবে অন্যতম ঝুঁকিপূর্ণ পেশা সাংবাদিকতার ওপর তাদের আলাদা মনোযোগ। তাদের প্রকাশিত হিসাব