সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

ইরফান-কাহিনি, র‌্যাব ও এআই নজরদারি প্রযুক্তি

টান টান উত্তেজনা সৃষ্টিকারী নাটকীয়তায় ভরপুর অভিযানে গ্রেফতার ইরফান সেলিম মাত্র সপ্তাহ দুয়েকের ব্যবধানে দুটি মামলা থেকে অব্যাহতি পেয়েছেন। পুলিশী তদন্তে পর্যাপ্ত সাক্ষ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়নি বলে আদালতকে জানানোর পর তিনি আইনী প্রক্রিয়ায় মুক্তি পেয়েছেন। ইরাফান সেলিমের বড় পরিচয় তিনি একজন সাংসদের ছেলে এবং আরেকজন সাংসদের জামাই। ওই দুজন সাংসদ নিজ নিজ এলাকার বাইরেও বেশ দাপুটে হিসাবে সুখ্যাত। ইরফান সেলিম নিজেও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের একজন কাউন্সিলর ছিলেন। এঁদের প্রত্যেকের নির্বাচন নিয়ে যেসব প্রশ্ন আছে, সেগুলোর নতুন করে আলোচনা অর্থহীন। তবে, মামলা দুটির আলোচনা মোটেও গুরুত্বহীন নয়। একটি মামলা অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র রাখার এবং অন্যটি মাদকদ্রব্য উদ্ধারের। এসব বেআইনী সামগ্রী উদ্ধার এবং তাঁকে গ্রেপ্তারের কৃতিত্ব বাংলাদেশের সবচেয়ে চৌকস বাহিনী বলে কথিত র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের। 

বলে নেওয়া ভালো, বেআইনী ওয়াকিটকি ও মাদক উদ্ধারের মামলায় ঘটনাস্থল তাঁর বাসাতেই র‌্যাবের সঙ্গে থাকা একজন ম্যাজিস্ট্রেট তাঁকে একবছরের কারাদন্ডে দন্ডিত করেছিলেন। র‌্যাবের এই অভিযানের পর ইরফান সেলিমকে কাউন্সিলর পদ থেকে বরখাস্ত করা হয়, তাঁর ও তাঁর পিতার দখলে থাকা কিছু জমি দখলমুক্ত করা  এবং বেআইনী স্থাপনা ভাঙ্গার খবরও সংবাদমাধ্যমে ফলাও করে প্রচার করা হয়। জনমনে ধারণা তৈরি হয় ইরফান এবং তাঁর পরিবারের ওপর থেকে সরকারের আর্শীবাদ  ফুরিয়ে এসেছে, যেমনটি এর আগে যুবলীগ নেতা সম্রাট, পাপিয়া বা জিকে শামীমের ক্ষেত্রে হয়েছে। যাঁরা সরকারি রোষানলে পড়েন, তাঁদের অতীতের প্রতি আমাদের টিভি চ্যানেলগুলোর অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার আগ্রহ একটু বেশিই থাকে। ইরফান সেলিমের ক্ষেত্রেও তার ব্যাতিক্রম ঘটেনি এবং সেই সুবাদে তাঁর বাসায় কথিত টর্চার সেলের ছবিও আমরা দেখেছি। 

সংবাদমাধ্যমের ছবিই তো আর শেষ কথা নয়, পুলিশের তদন্তই হলো সব। সুতরাং, যথেষ্ট সাক্ষ্যপ্রমাণ  না মেলার পুলিশী ভাষ্য আদালত গ্রহণ করেছেন। এর ফলে যে প্রশ্নটি অবধারিত হয়ে উঠছে, তা হলো র‌্যাবের অভিযানগুলোর বিশ্বাসযোগ্যতা। বিমানবাহিনীর একজন কর্মকর্তা লাঞ্ছিত হওয়া এবং অভিযানটি ঢাকায় হওয়ায় টিভি চ্যানেলগুলোও এই অভিযানের অনুষঙ্গী ছিল। র‌্যাবের অধিকাংশ অভিযানের ক্ষেত্রেই কিন্তু তেমনটি ঘটে না। অভিযানের পর তাঁরা সংবাদমাধ্যমকে তা জানায়; হয় সংবাদ সম্মেলন করে, নয়তো বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়ে। তাঁদের পাঠানো ভাষ্য নিয়ে অতীতেও প্রশ্ন উঠেছে বহুবার। বিশেষ করে কথিত ক্রসফায়ার বা বিচারবর্হিভূত হত্যাকান্ড ও বিভিন্ন উদ্ধার অভিযান ঘিরে। কিন্তু, সেগুলো কথিত বিভাগীয় তদন্তেই শেষ হয়েছে এবং আদালত পর্যন্ত পৌঁছায়নি। 

অভিযোগ থেকে অব্যাহতি পাওয়ায় ইরফান সেলিম এখন র‌্যাবের কাছে ক্ষতিপূরণ দাবি করলেও আমাদের অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। সরকারের আর্শীবাদ পুরোমাত্রায় ফিরে পেলে অনেক কিছুই হতে পারে। তবে আমাদের উদ্বেগ এখন আরও বহুগুণে বেড়ে গেল তাঁদের জন্য, যাঁরা প্রভাবশালী নন, বরং রাজনৈতিক কারণে সরকারের বিরাগভাজন। তাঁরা যে অন্যায়-অবিচারের শিকার হননি, তা আমরা কীভাবে নিশ্চিত হবো? র‌্যাবের যেসব অভিযান সম্পর্কে ইতোমধ্যে ভুক্তভোগীরা প্রশ্ন তুলেছেন, সেগুলোর সবই কি এখন বিচারিক পর্যালোচনার দাবি রাখে না? র‌্যাবের বিরুদ্ধে ক্ষমতার যেসব অভিযোগ ওঠে, সেগুলো তদন্তের জন্য নতুন একটি স্বাধীন তদন্তকারী প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠার দাবির যৌক্তিকতা কি আবারও প্রমাণ হয়নি?          

র‌্যাবের বিশ্বাসযোগ্যতার এই আলোচনা এখন বিশেষভাবে জরুরি হয়ে উঠেছে অন্য আরেকটি খবরে। গত ২৮ ফেব্রুয়ারি, র‌্যাবের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, র‌্যাবের কমিউনিকেশন এন্ড এমআইএস উইংয়ের দীর্ঘ প্রচেষ্টার ফলে প্রয়োজনীয় হার্ডওয়্যার, সফটওয়্যার ও ডাটাবেস এর সমন্বয়ে তারা অনসাইট আইডেন্টিফিকেশন এন্ড ভেরিফিকেশন সিস্টেম (ওআইভিএস) চালু করেছে। এই সুবিধা গ্রহণের জন্য তাঁরা যে ডিভাইস ব্যবহার করছেন তা মোবাইল ফোনের মত সহজে বহনযোগ্য এবং ওয়াইফাই ও মোবাইল সংযোগের মাধ্যমে কাজ করে। এদিন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তা আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেছেন। র‌্যাবের ভাষ্য অনুযায়ী এ্‌নআইডি, পাসপোর্ট, বিআরটিএসহ বিভিন্ন জাতীয় ডাটাবেইজে আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার তাৎক্ষণিকভাবে প্রবেশাধিকার জরুরি হয়ে পড়ে। কিন্তু, র‌্যাবের কথায় এনটিএমসির ডাটাবেসসমূহের তথ্যাদি সরাসরি পাওয়া সম্ভব হয় না।  

ডেইলি স্টার জানিয়েছে, ওআইভিএসে শুধুমাত্র আঙ্গুলের ছাপ নেওয়ার মাধ্যমে যেকোনো অপরাধী বা সন্দেহভাজন ব্যাক্তির জাতীয় পরিচয়পত্র, পাসপোর্ট ও অভিবাসনের ইতিহাস, অতীত অপরাধের ইতিবৃত্ত, অতীতে গ্রেপ্তার হয়ে থাকলে তার বিস্তারিত এবং জেলে গিয়ে থাকলে তার বিবরণ কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই চলে আসবে। কোনো ব্যাক্তি ট্রাফিক আইন ভঙ্গ করেছিলেন কিনা, তাও জানা যাবে। অজ্ঞাতপরিচয় কোনো মরদেহ পাওয়া গেলে তার পরিচয় নির্ধারণেও এটি কাজে আসবে। আপাতদৃশ্যে অপরাধ দমনের জন্য এটি খুবই কার্যকর হাতিয়ার। কিন্তু হাতিয়ারটি ব্যবহার যে শুধু গুরুতর অপরাধীদের ধরতেই প্রয়োগ করা হবে, সে বিষয়ে আমরা কীভাবে নিশ্চিত হচ্ছি? নাগরিকদের ব্যাক্তিগত তথ্যের যথেচ্ছ ব্যবহার বা অপব্যবহারের ঝুঁকি কীভাবে দূর হবে? কোন আইনে জাতীয় তথ্যভান্ডারে এমন অবারিত প্রবেশাধিকার দেওয়া হচ্ছে? এসব বিষয়ে জাতীয় পরিসরে কোনো বিতর্ক কি কখনো হয়েছে?

র‌্যাব অবশ্য তার বিজ্ঞপ্তিতে বলেছে, সফলভাবে আইন প্রয়োগের স্বার্থে উন্নত বিশ্বের ন্যায় আমাদের দেশেও এনআইডি, পাসপোর্ট, বিআরটিএসহ বিভিন্ন জাতীয় ডেটাবেইসে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার তাৎক্ষণিক প্রবেশাধিকার জরুরি হয়ে পড়ে। র‌্যাবের এই বক্তব্যে অবশ্য বোঝার কোনো উপায় নেই যে, উন্নত বিশ্বেও গণতান্ত্রিক ও অগণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা আছে। গণতন্ত্রে এই প্রযুক্তি ঢালাওভাবে ব্যবহার করা হয় না। কেননা, জনপ্রতিনিধিরা এধরণের প্রযুক্তির ব্যবহার আইন করে সীমিত করে দিয়েছেন এবং অপপ্রয়োগের ক্ষেত্রে জবাবদিহির ব্যবস্থাটাও বেশ কড়া। প্রযুক্তিটি কৃত্রিম বৃদ্ধিমত্তা বা আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) দ্বারা পরিচালিত। অন্য কথায় যন্ত্রচালিত।

যুক্তরাষ্ট্রের কার্নেগি এনডাওমেন্ট ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে এআই প্রযুক্তিতে নজরদারির বৈশ্বিক বিস্তার কীভাবে ঘটছে তার ওপর একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। মোটাদাগে এতে বলা হয়েছে, এই প্রযুক্তি উদ্ভাবন ও উন্নয়নে উন্নত দেশগুলোর মধ্যে এগিয়ে আছে যুক্তরাষ্ট্র এবং চীন । নাগরিকদের গতিবিধির ওপর নজরদারির ক্ষেত্রে এআই প্রযুক্তি ব্যবহার হচ্ছে তিনটি প্লাটফর্ম ও পদ্ধতির মাধ্যম। এগুলো হচ্ছে: স্মার্ট সিটি প্লাটফর্ম ( ৫৬টি দেশ), চেহারা শনাক্তকরণ বা ফেসিয়াল রিকগনিশন (৬৪টি দেশ) এবং স্মার্ট পুলিসিং (৫২টি দেশ)। বিশ্ব জুড়ে এই প্রযুক্তির সরবরাহে এগিয়ে আছে চীন এবং চীনা কোম্পানিগুলোর মধ্যে আছে হুয়াওয়ে, হিকভিশন, ডাহুয়া এবং জেডটিই। চীন বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভে যেসব দেশকে যুক্ত করেছে তাদের অর্ধেকেরও বেশি দেশ চীনা এআই প্রযুক্তি গ্রহণ করেছে।  

প্রতিষ্ঠানটি ১৭৬টি দেশের ২০১৮ সালের তথ্য নিয়ে এআই নজরদারির একটি সূচক তৈরি করেছে। এই এআইজিএস (এআই গ্লোবাল সার্ভেইলেন্স ইনডেক্স) সূচক তৈরিতে যুক্তরাষ্ট্রের ফ্রিডম হাউজের ব্যাক্তিস্বাধীনতার সূচক ও সুইডেনের ভিডেম ইনিস্টিটিউটের নির্বাচনী গণতন্ত্র সূচক এবং ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের গণতন্ত্র সূচকের অবস্থানগুলোও বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে। যেসব দেশে নির্বাচনী গণতন্ত্র আছে, এই সূচকে সে সব দেশের স্কোর হচ্ছে ৫ থেকে ৭.৯, নির্বাচিত স্বৈরতন্ত্রগুলোর স্কোর হচ্ছে ২.৫ থেকে ৪.৯ এবং পুরোপুরি স্বৈরতান্ত্রিক দেশগুলোর স্কোর হচ্ছে ২.৫ এর নীচে। সূচকে বাংলাদেশের স্কোর ৪.৩৬ এবং প্রতিবেশিদের মধ্যে ভারতের স্কোর ৬.৬ ও পাকিস্তানের ৪.৪৪। এই সূচকের তথ্য বলছে বাংলাদেশ চীনের এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করছে এবং যে কোম্পানি এক্ষেত্রে গুরুত্বর্পূণ ভূমিকা পালন করছে, সেটি হচ্ছে হুয়াওয়ে। নজরদারির প্রযুক্তি হিসাবে বাংলাদেশ স্মার্ট সিটি, চেহারা দেখে শনাক্তকরণ এবং স্মার্ট পুলিসিং এই তিনটির সবকটিই ব্যবহার করছে। 

জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশন এআইনির্ভর নজরদারি বিষয়ক এক প্রতিবেদনে জাতীয় পর্যায়ে আইন ও তা প্রয়োগে প্রয়োজনীয় সতর্কতা এবং কার্যকর তদারকির অভাব বেআইনী ডিজিটাল নজরদারির ঝুঁকি বাড়াতে পারে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে। এধরণের নজরদারি ব্যাক্তির মতপ্রকাশ ও সংগঠন করার অধিকারে বেআইনী হস্তক্ষেপের কারণ হতে পারে বলে সতর্ক করেছেন মতপ্রকাশের স্বাধীনতা বিষয়ক জাতিসংঘ র‌্যাপোর্টিয়ার ডেভিড কে।তাঁর মতে নজরদারি অবশ্যই আর্ন্তজাতিক আইনগত মান অনুযায়ী এবং প্রয়োজনের সঙ্গে আনুপাতিক হতে হবে। জাতীয় নিরাপত্তার প্রয়োজনের প্রশ্নে শুধু সরকার বা ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর  স্বার্থরক্ষায় নজরদারিকে অবশ্যই বাদ দিতে হবে। জাতিসংঘ সংস্থা ও মানবাধিকার বিশেষজ্ঞের এসব বক্তব্য কোনোভাবেই উপেক্ষণীয় নয়। 

(৪ মার্চ ২০২১-র প্রথম আলো পত্রিকায় প্রকাশিত।)

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

Bangladesh is vexed by and wary of Modi’s unstinting support to Sheikh Hasina

In the run-up to Bangladesh’s general election in January 2014, New Delhi took the unusual step of sending a top diplomat from its external affairs ministry to Dhaka to persuade General Hussain Muhammaed Ershad, the country’s former military ruler, to participate in the polls. Big questions had been raised over the fairness of the election. The incumbent government was led by Sheikh Hasina’s Awami League, and the leader of the opposition Bangladesh Nationalist Party (BNP) had been placed under virtual house arrest, with police and roadblocks around her house in Dhaka. The BNP and other opposition parties were threatening to boycott the election. Ershad, the head of the Jatiya Party, was perceived as a potential kingmaker, able to bring to power whichever of Bangladesh’s two main parties he supported, but he was also threatening to withdraw from the election.  After a decade of Modi’s reign in India, people in Bangladesh are angry at their government cosying up to a Hindutva regime ...

অরাজনৈতিক আন্দোলনের করুণ রাজনৈতিক মূল্য

কোটা সংস্কারের দাবিতে সাধারণ ছাত্র–ছাত্রীদের আন্দোলনে  কদিন ধরে যা ঘটে চলেছে, তা যেমন বেদনাদায়ক, তেমনই নিন্দনীয় ও ক্ষোভের কারণ। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের শিক্ষা দিতে ক্ষমতাসীন সরকারের সমর্থক এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীর হাতে একইদিনে দেশের তিন জায়গায় ছয়জনের প্রাণহানির ঘটনা স্বাধীন বাংলাদেশে বিরল।  এবার আরও যেসব ঘটনা আমাদের স্তম্ভিত করেছে, অভিভাবকদের চোখ অশ্রুসিক্ত করেছে, এসব মৃত্যুর পরও সরকারের রাজনৈতিক দম্ভ বজায় রাখার চেষ্টা, যা আরও প্রাণহানির কারণ হয়েছে। ছয়জন তরুণের প্রাণ বিসর্জনের পরও কোটা সংস্কারের দাবিতে সরকার ”নীতিগতভাবে একমত” – একথাটি বলে  আলোচনায় না ডেকে সময়ক্ষেপণ করেছে। আইনমন্ত্রী কথাটি যখন বললেন, তার আগেই আরও জীবন গেল, শত শত মানুষ আহত হলো, দেশের সম্পদ নষ্ট হলো। রাজনৈতিক গরিমা ছাড়া এর আর কোনো কারণ আছে কি? ছাত্রলীগ পরিচয়ে অন্ত্রধারীদের তান্ডব, পুলিশের চরম নিষ্ঠুরতা এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ছাত্রীদের গড়পরতা মারধর ও লাঞ্চিত করার যে দৃশ্যগুলো গণমাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে, তা কোনো অভিভাবকের পক্ষেই ভোলা সম্ভব নয়। এসব ঘটনার বিবরণ উদ্ধৃত না করে শুধু নিষ্ঠুর ...

আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বে স্বৈরশাসকের ফেরা সহজ

  গণতন্ত্রে উত্তরণে ব্যর্থতা ও স্বৈরতন্ত্রের নিকৃষ্টতম রুপ প্রত্যক্ষ করার পর অর্ন্তবর্তী সরকারের মেয়াদকালে যে সব বিষয়ে সংস্কারের আলোপ চলছে, তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে নির্বাচনব্যবস্থা। এরশাদের সামরিক স্বৈরাচারের পতনের পর নির্বাচনকে গণতন্ত্র চর্চার মাধ্যম হিসাবে যেভাবে প্রতিষ্ঠার কথা ছিল, তা থেকে প্রধান দুই দলই বিচ্যূত হয়েছিল। পরিণতিতে নির্বাচন শুধু ক্ষমতা দখলের হিংসাত্মক খেলায় পরিণত হয় এবং শেষ পর্যন্ত শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ সাধারণ মানুষের ভোটের অধিকার হরণ করে নির্বাচনকে নানা রকম প্রহসনে পরিণত করে।  এই সমস্যার এক অতি সরলীকৃত সমাধান হিসাবে বলা হচ্ছে, দ্বিদলীয় রাজনীতির বৃত্ত থেকে বেরিয়ে দেশে সত্যিকার বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে। আর বহুদলীয় গণতন্ত্রের জন্য নির্বাচনব্যবস্থায় আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বের ধারণাকে একমাত্র বা চূড়ান্ত সমাধান হিসাবে তুলে ধরা হচ্ছে।  সংখ্যানুপাতিক বা আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতির নির্বাচনে একটি দল যত শতাংশ ভোট পাবে, সে অনুপাতে তারা সংসদের আসন পাবে। এ আনুপাতিক পদ্ধতিতে প্রার্থীদের নাম দল আগাম ঘোষণা করতেও পারে, আবার না–ও পারে। নাম প্রকাশ করা হলে সেটা হব...