সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

রোজিনার পর সংবাদমাধ্যমকেও মুক্ত করা চাই

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের অন্যায় নিগ্রহ ও লাঞ্চনার শিকার রোজিনা ছয়দিনের কারাদূর্ভোগ কাটানোর পর তাঁর  প্রাপ্য অধিকার অনুযায়ী জামিন পেয়েছেন। তাঁর বিরুদ্ধে যে দুটি আইনে মামলা হয়েছে, সেগুলো জামিনযোগ্য এবং সে কারণে শুরুতেই তিনি এই জামিন পেতে পারতেন। তাই তাঁর ছয় দিনের কারাদূর্ভোগের দায় কার, সেই প্রশ্ন নিয়ে আলোচনার অবকাশ রয়েছে এবং ধারণা করি সে আলোচনা হবে। একইসঙ্গে রিমান্ডের বিষয়টিও আলোচনা হওয়া প্রয়োজন। আদালত প্রথম দিনেই রোজিনাকে রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন প্রত্যাখ্যান করেছেন বলে এটি নিয়ে আর আলোচনার প্রয়োজন নেই, বিষয়টি মোটেও তা নয়। মামলা হলেই রিমান্ড চাওয়া ও পাওয়ার একটি চর্চা এখন নৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। অথচ রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদের প্রশ্নে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনাকে যে পুলিশ আমলেই নেয় না, আইনজীবির উপস্থিতি, অসুস্থ হলে চিকিৎসার বাধ্যবাধকতা এগুলো যে দিনের পর দিন উপেক্ষিত হয়ে চলেছে, তা কিন্তু কম উদ্বেগজনক নয়।

রোজিনার প্রতি অন্যায়ের বিরুদ্ধে যাঁরা নিরলসভাবে প্রতিবাদ জানিয়েছেন, সাংবাদিকতার স্বাধীনতার পক্ষে দাঁড়িয়েছেন, তাঁদের এ রকম জোরালো ভূমিকা একটা নতুন নজির তৈরি করেছে। এটা ঘটেছে দেশের ভেতরে এবং বাইরে প্রায় সমান্তরালভাবে। এই অভাবিত প্রতিবাদ ও সংহতির কারণ কী? এক কথায় বললে বলতে হবে বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতা। তাঁর অনুসন্ধানী পেশাদারির প্রতিফলন ঘটেছে রাজনৈতিক পক্ষপাতের উর্ধ্বে উঠে তিনি বিভিন্নসময়ে গুরুতর যে সব দূর্নীতি, অনাচার ও অনিয়মের তথ্য প্রকাশ করেছেন, সেগুলোয়। খুনের মামলায় মৃত্যুদন্ডের আসামী জোসেফের সাজা হ্রাস ও পরে মওকুফ, বহুল আলোচিত লক্ষীপুরের সাবেক পৌর মেয়র তাহেরপুত্রের রাষ্ট্রপতির ক্ষমাপ্রাপ্তি, অন্তত অর্ধডজন সচিবের ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা সার্টিফিকেট দিয়ে চাকরিক্ষেত্রে অন্যায় সুবিধাগ্রহণ, ক্রেস্টের সোনায় ১২ আনাই খাদ, কারাগারের ভেতরের দূর্নীতি, মহামারির সময়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর একটানা মাসখানেক অফিস না করা, একই  মন্ত্রণালয়ের সাম্প্রতিক দূর্নীতির খবর এগুলোর সবই তাঁকে দূর্নীতিবিরোধী পাঠকের কাছে নন্দিত করে তুলেছে।

সব সাংবাদিক যে সবসময়ে একইধরণের সহানুভূতি পাননি বা পান না, তার কিছুটা ব্যাখ্যা মেলে এই পেশাদারিতে। দেশে সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার প্রমাণ হিসাবে সরকার বা ক্ষমতাসীন দলের নেতারা যে কত ডজন টিভি চ্যানেল, কত শত সংবাদপত্র আর কত হাজার অনলাইন পোর্টালের ফিরিস্তি দেন, সেগুলোয় সাংবাদিকতার এসব উপাদান অনেক ক্ষেত্রেই অনুপস্থিত। রাজনৈতিক কারণে কারও গুণকীর্তন, আর কারও কুৎসা প্রচারের সাংবাদিকতায় যে মানুষের আগ্রহ নেই, সেটা এখন অনেকটাই পরিষ্কার। সোশ্যাল মিডিয়ার নাটকীয় বিকাশের কারণে কোনো না কোনোভাবে মানুষের কাছে জনদূর্ভোগের খবর পৌঁছে যায়। সুতরাং, মানুষ আশা করে মূল ধারার গণমাধ্যম ওইসব জনদূর্ভোগের পেছনের খবর, তার নানা খুঁটিনাটি, বিচার-বিশ্লেষণ তুলে ধরবে।

এই প্রত্যাশা পূরণের পথে যে সব বাধা আছে, তার মধ্যে সবচেয়ে ভয়ংকর হচ্ছে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন। সম্পাদক পরিষদ এই আইনের বিরোধিতায় যে ব্যাখ্যা দিয়েছিল, তাতে ওই আইনের অন্তত আটটি ধারার কথা বলেছিল, যেগুলো অজামিনযোগ্য এবং অবাধ তথ্যপ্রবাহ ও স্বাধীন মতপ্রকাশের পথে বাধা। আইনটি প্রণয়নের আড়াই বছরেই এটি ভিন্নমত দমন ও সত্য আড়াল করার জন্য যে কতটা ভয়াবহ হাতিয়ারে পরিণত হয়েছে, তা মামলা, গ্রেপ্তার এবং সাজার বেসরকারি পরিসংখ্যানেই স্পষ্ট বোঝা যায়। গত ডিসেম্বরে প্রথম আলোয় প্রকাশিত হিসাবমতে মাত্র দুই বছরে এই আইনে মামলার সংখ্যা দুই হাজার ছাড়িয়ে গেছে, যার মানে দাঁড়াচ্ছে দেশে গড়ে দিনে তিনটি করে মামলা হয়েছে এই আইনে। আর অধ্যাপক আলী রীয়াজের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮ কীভাবে প্রয়োগ হচ্ছেশীর্ষক গবেষণা বলছে, এ আইনে মামলায় সবচেয়ে বেশি অভিযুক্ত হয়েছেন রাজনীতিক এবং তারপরই সাংবাদিকেরা।

এই আইনের বিতর্কিত বিধানগুলো বাতিলের বিষয়ে একমাত্র সরকার ছাড়া আর সব দল, মত ও পথের লোকেরা সোচ্চার। এই আইনের অজামিনযোগ্য ধারাগুলোই ক্ষমতাসীনদের সবচেয়ে পছন্দ, কেননা বিচার পাওয়ার আগেই মাসের পর মাস জেল খাটানোর এর চেয়ে ভালো উপায় আপাতত আর নেই। প্রশ্ন উঠতে পারে, রোজিনার বিরুদ্ধে কেন ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ব্যবহৃত হলো না। অফিশিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টের মতো প্রায় শতবছরের পুরোনো আইন ব্যবহার করে সম্ভবত জানিয়ে দেওয়া হলো সরকারের ভান্ডারে আরও আই নি আছে। অফিশিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টে মামলা করা ছাড়াও সচিবালয়ে রোজিনাকে লাঞ্ছিত করার যেসব ভিডিও ফুটেজ সোশ্যাল মিডিয়ায় দেখা গেছে, তা-ও নজিরবিহীন। সরকারি কর্মচারিদের এরকম নিন্দনীয় আচরণ শুধু অগ্রহণযোগ্যই নয়, তা হত্যাচেষ্টার অভিযোগসহ ফৌজদারি আইনের একাধিক ধারায় শাস্তিযোগ্য গুরুতর অপরাধ।

একজন সাংবাদিককে নিগ্রহের বিরুদ্ধে দেশের ভিতরে অভূতপূর্ব প্রতিবাদের ঢেউ দেখা গেল। ঢাকা এবং ঢাকার বাইরে দলবেঁধে সাংবাদিকরা স্বেচ্ছা কারাবরণের আবেদন নিয়ে থানায় গিয়ে হাজির হয়েছেন। নাগরিকরা যে শুধু ঢাকায় রাজপথে নেমেছেন, তা-ই নয়, দূর প্রান্তের শহর নওগাঁয় আবদুল মালেক দেওয়ান একাই অনশনে বসেছেন, নারী সাংবাদিকরাও প্রতীক অনশন করেছেন ঢাকায়। প্রতিবাদের এই ব্যপকতার আরও দুটো কারণ রয়েছে। দূর্নীতি অনিয়মের ব্যপকতায় মানুষের ক্ষোভ এবং হতাশা কতটা বেড়েছে, এই প্রতিবাদে যে তার প্রতিফলন ঘটেছে, সেকথা অস্বীকার করা যাবে না। আর, রাজনৈতিক বিভাজনের উর্ধ্বে উঠে সাংবাদিকদের সবার অংশগ্রহণের কারণ হচ্ছে, তাঁরা যা লিখতে পারেন না, সেই দমবন্ধ পরিবেশ থেকে মুক্তিলাভের তাড়না থেকে যিনি লিখেছেন, তাঁর পাশে দাঁড়ানো।    

প্রশ্ন উঠতে পারে, দেশের বাইরে আর্ন্তজাতিক পরিসরে এই গ্রেপ্তার নিয়ে এত আলোড়ন কেন? ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের বক্তব্যে মনে হয়, বিদেশিদের প্রতিবাদের কৃতিত্ব যেন বিরোধীদল বিএনপির। অবশ্য দেশের ভেতরের নাগরিক সমাজের প্রতিক্রিয়াতেও তাঁদের কেউ কেউ একইভাবে ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করেছেন। তবে বাস্তবতা একেবারেই আলাদা। বিশ্বজুড়ে গণতন্ত্র যখন নানাভাবে আক্রান্ত হচ্ছে, তখন গণতন্ত্রের বহুমতের   প্রধান বাহক সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার বিষয়টিও ক্রমশই গণতন্ত্রপন্থীদের অগ্রাধিকারে পরিণত হচ্ছে। পশ্চিমা গণতন্ত্রগুলো সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা রক্ষা এবং সাংবাদিকদের সুরক্ষায় সাম্প্রতিক সময়ে বেশ কিছু পদক্ষেপ নিতে শুরু করেছে। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে সাংবাদিক নিপীড়ণকারীদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ।

কানাডা এবং যুক্তরাজ্যের যৌথ প্রয়াসে ২০১৯ সালে শুরু হয়েছে সাংবাদিক ও গণমাধ্যমের সুরক্ষায় বৈশ্বিক অঙ্গীকারনামায় বিভিন্ন দেশের সরকারগুলোকে অংশ নিতে উদ্বুদ্ধ করার উদ্যোগ। এই অঙ্গীকারনামায় কী থাকবে, তার সুপারিশমালা তৈরি করে দিয়েছন যুক্তরাজ্যের সাবেক প্রধান বিচারপতি লর্ড ডেভিড নিউবার্গারের নেতৃত্বে গঠিত এক স্বাধীন কমিশন। ওই কমিশনে তাঁর ডেপুটি হিসাবে ছিলেন গণমাধ্যমের স্বাধীনতার পক্ষে কাজ করা আইনজীবী আমল ক্লুনি, যিনি মিশরের আদালতে আল-জাজিরার সাংবাদিকদের পক্ষে আইনী লড়াই চালিছিলেন। আমল ক্লুনি ফিলিপাইনে সরকারি রোষানলে পড়া সাংবাদিক র‌্যাপলারের সম্পাদক মারিয়া রেসারও আইনজীবী। এই প্যানেল যেসব সুপারিশ করেছে, তার মধ্যে রয়েছে সাংবাদিক নির্যাতনে জড়িত ব্যাক্তি বা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা ও বিদেশে থাকা সম্পদ জব্দকরণ। অন্যায়ভাবে সাংবাদিককে কারান্তরীণ করার ক্ষেত্রে ওই প্রক্রিয়ায় জড়িত রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি এবং বিচারকের বিরুদ্ধেও এধরণের নিষেধোজ্ঞার সুপারিশ করা হয়েছে এতে। যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য ইতোমধ্যেই এধরণের নিষেধাজ্ঞা আরোপ শুরু করেছে। সউদি সাংবাদিক জামাল খাসোগির হত্যাকান্ডে জড়িতদের বিরুদ্ধে এবং রাশিয়া, চীন ও হংকংয়ের সরকারি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট নিষেধাজ্ঞাও দেওয়া হয়েছে। যেকোনো দেশেই সাংবাদিক নির্যাতনের ঘটনা তাই এখন বোধগম্য কারণেই বিশ্ব সম্প্রদায়ের নজর কাড়ে।

রোজিনাকে বন্দী পরিবহনের যে মোটরযানে করে কাশিমপুর কারাগারে নেওয়া হয়েছিল, সেই যানের শিকগুলোর পিছনে তাঁর যে মুখচ্ছবি সংবাদপত্রের পাতায় ছাপা হয়েছে, তা ঢাকার ইংরেজি দৈনিক নিউ এজের কার্টুনিস্ট মেহেদির তুলিতে হয়ে উঠেছে বন্দী সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার প্রতীক। রোজিনা তাঁর ৯ বছরের মেয়ের কাছে ফিরে এসেছেন, সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা কি পত্রিকার পাতায় বা টেলিভিশনের বাক্সে কিম্বা মোবাইলের ছোট পর্দায় ফিরতে পেরেছে? ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, অফিশিয়িাল সিক্রেটস অ্যাক্ট এবং ফৌজদারি আইনের মানহানির আইনগুলো অবিকল বহাল থাকলে তা কোনোভাবেই বলা যাবে না। রোজিনার মুক্তির মত সংবাদমাধ্যমের মুক্তির সংগ্রামটা তাই ঐক্যবদ্ধভাবেই এগিয়ে নিতে হবে।

(২৫ মে, ২০২১‘র প্রথম আলো পত্রিকায় প্রকাশিত।)

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বে স্বৈরশাসকের ফেরা সহজ

  গণতন্ত্রে উত্তরণে ব্যর্থতা ও স্বৈরতন্ত্রের নিকৃষ্টতম রুপ প্রত্যক্ষ করার পর অর্ন্তবর্তী সরকারের মেয়াদকালে যে সব বিষয়ে সংস্কারের আলোপ চলছে, তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে নির্বাচনব্যবস্থা। এরশাদের সামরিক স্বৈরাচারের পতনের পর নির্বাচনকে গণতন্ত্র চর্চার মাধ্যম হিসাবে যেভাবে প্রতিষ্ঠার কথা ছিল, তা থেকে প্রধান দুই দলই বিচ্যূত হয়েছিল। পরিণতিতে নির্বাচন শুধু ক্ষমতা দখলের হিংসাত্মক খেলায় পরিণত হয় এবং শেষ পর্যন্ত শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ সাধারণ মানুষের ভোটের অধিকার হরণ করে নির্বাচনকে নানা রকম প্রহসনে পরিণত করে।  এই সমস্যার এক অতি সরলীকৃত সমাধান হিসাবে বলা হচ্ছে, দ্বিদলীয় রাজনীতির বৃত্ত থেকে বেরিয়ে দেশে সত্যিকার বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে। আর বহুদলীয় গণতন্ত্রের জন্য নির্বাচনব্যবস্থায় আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বের ধারণাকে একমাত্র বা চূড়ান্ত সমাধান হিসাবে তুলে ধরা হচ্ছে।  সংখ্যানুপাতিক বা আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতির নির্বাচনে একটি দল যত শতাংশ ভোট পাবে, সে অনুপাতে তারা সংসদের আসন পাবে। এ আনুপাতিক পদ্ধতিতে প্রার্থীদের নাম দল আগাম ঘোষণা করতেও পারে, আবার না–ও পারে। নাম প্রকাশ করা হলে সেটা হব...

How to Describe the Awami League Accurately?

In an article titled ‘How Not to Describe the Awami League’ , published in this paper, British journalist David Bergman rightly underscores the importance of accuracy in labeling a political party—particularly when such labels carry potential legal consequences. Those familiar with Bergman’s work over the years know that he has consistently taken on politically sensitive and controversial subjects, often at significant personal and professional cost. His courage and commitment to journalistic integrity deserve recognition. Bergman is correct in asserting that “while serious criticisms of the Awami League are both valid and necessary, they must be proportionate and grounded in fact.” His analysis focuses primarily on the legal validity and appropriateness of labeling the Awami League as “fascist” or “Nazi.” He argues that comparing the party to the Nazi regime trivialises the scale of Nazi atrocities and misrepresents the complexities of Bangladeshi politics. Indeed, any historical comp...

স্বৈরতন্ত্রের কেন্দ্রীভূত ক্ষমতার নিকৃষ্ট পরিণতি

ছাত্র–জনতার অভ্যূত্থানের মুখে পালিয়ে যাওয়া স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার পদত্যাগ নিয়ে রাষ্ট্রপতির কথিত মন্তব্যে যে তীব্র প্রতিক্রিয়া হয়েছে, তা প্রত্যাশিতই ছিল। গত ৫ আগস্ট রাতে জাতির উদ্দেশ্য দেওয়া ভাষণ এবং সম্প্রতি মানবজমিন সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরীর সঙ্গে আলাপচারিতায় পরস্পরবিরোধী মন্তব্য – এই দুইয়ের একটি যে অসত্য, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। বিতর্ক শুরু হওয়ার পর তাঁর দপ্তর যে ব্যাখ্যা দিয়েছে, তা–ও অস্পষ্ট ও ধোঁয়াশাপূর্ণ। তিনি সর্বশেষ বিবৃতিতেও মতিউর রহমান চৌধুরীকে অসত্য কথা বলার বিষয়টি স্বীকার যেমন করেন নি, তেমনি এমন দাবিও করেননি যে তাঁকে ভূলভাবে উদ্ধৃত করা হয়েছে।  ৫ আগস্ট যদি তিনি পদত্যাগপত্র গ্রহণের প্রশ্নে অসত্য বলে থাকেন, তাহলে তা খুবই গুরুতর হিসাবে বিবেচিত হতে বাধ্য। কেননা তা ছিল জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া ভাষণের তথ্য। আবার যদি তিনি মানবজমিন সম্পাদকের কাছে আলাপচারিতায় অসত্য বলে থাকেন, তাহলে তাঁর কাছে যে দেশবাসী প্রশ্নের জবাব চাইতে পারে, তা হলো অর্ন্তবর্তী সরকার যখন সবকিছু গুছিয়ে আনার চেষ্টা করছে, দেশে স্থিতিশীলতা ফেরানোর চেষ্টা চলছে, তখন তিনি কেন এমন বিভ্রান্তি সৃষ্টি করতে চাইছেন? তাঁর উদ্দ...