সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

আমলাদের রাজনীতি ও রাজনীতির পেশাজীবী

বরিশালের মেয়রের সমর্থকদের সঙ্গে সেখানকার বিদায়ী ইউএনওর বিরোধের যে ভাষ্য সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে, সেটাই সত্য, না-কি তার বাইরেও কিছু ছিল, তা হয়তো আমাদের আর কখনোই জানা হবে না। কেননা, প্রশাসনের সঙ্গে স্থানীয় রাজনীতিকদের আপসরফা হয়েছে এবং গ্রেপ্তার ব্যাক্তিদের মুক্তি দেওয়াও শুরু হয়েছে। ঘটনার তদন্ত কিংবা বিচারপ্রক্রিয়ায় সত্য প্রকাশের সম্ভাবনার ইতি ঘটেছে। তবে সেখানকার জেলা প্রশাসকের `ইউএনওকে যে আঘাত করে, সে প্রধানমন্ত্রীকে অপমান করে` মন্তব্যটিতে আভাস মিলছে, প্রশাসন তার দাপট বজায় রাখতে বদ্ধপরিকর। আর সেই লক্ষ্য অর্জনে তাঁরাও `প্রধানমন্ত্রীর লোক` পরিচয় ব্যবহারে দ্বিধা করেন না। প্রশাসন ক্যাডারের সমিতির বিবৃতির ভাষা নিয়ে ব্যপক সমালোচনার পরও সমিতির একজন সদস্য জেলা প্রশাসকের এমন বক্তব্যকে জনমতকে বুড়ো আংগুল দেখানো ছাড়া আর কী বলা যায়? 


প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন বিবৃতি কী ছিল, যা এত বিতর্কের জন্ম দিয়েছে? বরিশাল সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) বাসভবনে হামলার ঘটনায় প্রতিক্রিয়া জানিয়ে সমিতি বলেছিল, `রাজনৈতিক দুর্বৃত্ত`দের আইনের মাধ্যমেই মোকাবিলা করা হবে। তারা ঘটনার জন্য বরিশাল সিটি করপোরেশনের মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহকে গ্রেপ্তারেরও দাবি জানিয়েছিল। দুর্বৃত্তরা রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতা খোঁজে এবং সেজন্যে ক্ষমতাসীন দল যে উত্তম , তা ধ্রুব সত্য। কিন্তু ওই গোলযোগে যেহেতু ক্ষমতাসীন দলের লোকজন জড়িত ছিলেন,, সেহেতু সরকারি কর্মচারিদের তাঁদের `রাজনৈতিক দুর্বৃত্ত` অভিহিত করা মোটেও স্বাভাবিক নয়। মেয়রকে গ্রেফতারের দাবিও একইভাবে বিস্ময় সৃষ্টি করে। 


কেউ আইন লঙ্ঘন করলে বা অপরাধ করলে তাকে গ্রেফতারের ক্ষমতা যে আমলাদের নেই, বিষয়টি মোটেও এমন নয়। ইউএনও পদের আমলারা রাতেরবেলায় বাড়ি থেকে উঠিয়ে এনেছেন, এমন নজিরের অভাব নেই। অথচ বরিশালের জেলা প্রশাসকের ভাষায়, সরকারি কর্মচারিরা প্রধানমন্ত্রীর প্রতিনিধি হয়েও সেখানকার মেয়রকে গ্রেফতারের জন্য সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছেন। দাবিগুলো যে কোনো অনভিজ্ঞ কর্মকর্তার কাজ ছিল, তা-ও নয়। রীতিমতো সংগঠনের কার্যনির্বাহী পরিষদের জরুরি সভায় গৃহীত সিদ্ধান্তের ভিত্তিতেই তাঁরা বিবৃতি দেন এবং সভায় সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি ও পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব কবির বিন আনোয়ার। দীর্ঘ সময় আওয়ামী লীগের সঙ্গে ছিলেন, এখন কৃষক শ্রমিক লীগের প্রধান কাদের সিদ্দিকীর প্ত্রিকান্তরে প্রকাশিত লেখা থেকে জানা যায়, মি. আনোয়ার ছাত্রজীবনে ছাত্রলীগ করতেন এবং তাঁর বাবাও সিরাজগঞ্জে  আওয়ামী লীগের প্রথম সারির একজন নেতা। 


অনুমান করা অযৌক্তিক হবে না, মি আনোয়ার ক্ষমতাচর্চায় রাজনীতিক এবং আমলাদের সীমাবদ্ধতা ভালোই বোঝেন। রাজনীতি যে এখন আর রাজনীতিকদের হাতে নেই এবং সরকার আমলাদের ওপর কতটা নির্ভরশীল, তা তিনি ভালোই জানেন। সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, মন্ত্রীপরিষদ সচিব  জানিয়েছেন, সচিবরা অধিকাংশই অ্যাডমিনিস্ট্রেশন সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের বিবৃতির সঙ্গে একমত নন। সমিতির জৈষ্ঠ্য সদস্যরা ভিন্নমত দিলেও সমিতির কার্যনির্বাহী কমিটি আজ পর্যন্ত তাঁদের বিবৃতি প্রত্যাহার করেছেন, এমন কোনো খবর চোখে পড়েনি। অসদাচরণের জন্য কারও বিরুদ্ধে কোনো প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও শোনা যায় নি। এখানে স্মরণ করা যেতে পারে, ২০০৯ সালে জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন সরকারের কাছে তাঁদের কিছু দাবি জানাতে গেলে সংগঠনটির শীর্ষ দুই নেতাকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়। পরে অবশ্য তাঁদের চাকরি ফেরত দেওয়া হয়, কিন্তু সেই দাবি পূরণ করা হয়নি। প্রশাসনের ক্ষেত্রে ঘটছে তার উল্টোটা।  অ্যাডমিনিস্ট্রেশন সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের অধিকাংশ সদস্য সচিব নন, মাঠপর্যায়ে কাজ করেন। তাঁদের মধ্যে যে ধারণা বদ্ধমূল হয়েছে, নির্বাচন এবং সরকারের কথিত উন্নয়ন কর্মসূচিগুলোর ক্ষেত্রে দলের চেয়ে তাঁদেরই বেশি প্রয়োজন। এই সমিতিতে এখন ট্রেড ইউনিয়নের প্রবণতাই পরিলক্ষিত হচ্ছে।  


২.

পেশাজীবিরা সংগঠন-সমিতি করেন পেশার উন্নয়ন ও পেশাজীবিদের স্বার্থরক্ষার লক্ষ্যে। তবে সময়ের বিবর্তনে বুদ্ধিবৃত্তিক পেশাগুলোর ক্ষেত্রে বড় ধরনের পরিবর্তন ঘটে গেছে। এসব সংগঠনে দলীয় রাজনীতির প্রত্যক্ষ অনুপ্রবেশ ও বিস্তার ঘটেছে এতটাই যে পেশা ও পেশাদারেরা এখন মূল্যহীন। আগে দলীয় পরিচয়, তারপর আনুগত্য অনুযায়ী পুরস্কারের বাঁটোয়ারা। এগুলো যে একটি বা দুটি সংগঠনে ঘটছে, তা নয়। এটিই এখন নিয়ম, তা সে চলচ্চিত্রশিল্পীদের সংগঠন হোক, কিম্বা বিশ্ববিদ্যালয়শিক্ষকদের সমিতিই হোক। সাংবাদিকদের ইউনিয়ন তো এক্ষেত্রে আরও এগিয়ে - দুই প্রধান দলের অনুসারীদের দুটো আলাদা ইউনিয়ন। 


রুপালি পর্দার তারকা পরীমনির বাসা থেকে কথিত মদ উদ্ধার এবং তাঁকে দুধর্ষ অপরাধীর মত গ্রেপ্তার ও হেনস্থার ঘটনায়ও এর ব্যতিক্রম হয়নি। আদালতে বিচারের আগেই তাঁদের সমিতির নেতারা তাঁকে অপরাধীর কাতারে ঠেলে দিয়ে তাঁর সদস্যপদ স্থগিত করে দিলেন। ওই একই শিল্পের আরেকটি সংগঠন বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতি গ্রেপ্তারের ২৫ দিনের মাথায় আনুষ্ঠানিকভাবে পরীমনির মুক্তি দাবি করল। পরীমনি তাঁদের প্রিয় শিল্পী এবং তাঁর গ্রেপ্তারে বাড়াবাড়ি করা হয়েছে, কথাটুকু বলতে ২৫ দিন সময় লাগার একটা ব্যাখ্যাও তারা  দিয়েছে।  তাতে তারা বলেছে, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতি ঘটনার সত্যতা না জেনে তাৎক্ষণিকভাবে মন্তব্য করা থেকে বিরত থেকেছে। তাদের যদি জিজ্ঞাসা করা হয় আদালত তাঁর বিচার করার আগেই তারা এখন কীভাবে নিশ্চিত হলেন যে তিনি নির্দোষ, তার কী উত্তর দেবেন তারা? পরীমনির জামিনে মুক্তি পাওয়ার উচ্ছ্বাসে এসব সংগঠনের রাজনৈতিক সুবিধাবাদিতার প্রশ্ন ভস্লে গেলে এই অপচর্চা চলতেই থাকবে।


শিল্পীদের মধ্যে পরীমনির চেয়েও দূর্ভাগ্যের শিকার শিল্পী আরও আছেন। মডেল পিয়াসা ও মৌয়ের বেলায় শিল্পীদের আরেকটি সংগঠন তাঁরা কীসের শিল্পী, প্রশ্ন করে তাঁদের জন্য অবমাননাকর মন্তব্য করতেও কসুর করেনি। হতে পারে তাঁরা মডেল হিসাবে বড় কোনো আলোড়ন তৈরি করার মত অবস্থায় পৌঁছান নি, কিংবা সমিতিরও সদস্য হননি, তাই বলে এমন মন্তব্য কি তাঁরা করতে পারেন যাতে  আদালতের আগেই তাঁদের কলংকিত করা হয়? 


এখানে স্মরণ করা দরকার, গত বছরের ডিসেম্বরে ‘নবাব এলএলবি‘ নামের একটি ওয়েব সিনেমার পরিচালক অনন্য মামুন ও অভিনেতা শাহীন মৃধাকে ছবিতে পুলিশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্নের অভিযোগে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)গ্রেপ্তার করেছিল। পরিচালকদের স্বার্থ সংরক্ষণে গঠিত সংগঠনটি তখন জানাল, তাঁরা অনন্য মামুনের কর্মকাণ্ডকে সমর্থন করছেন না।  তাঁরা তখন ‘শৈল্পিক স্বাধীনতার’ পক্ষে দাঁড়াননি, বরং পুলিশের কথিত ভাবমূর্তি রক্ষাকেই তাঁদের কর্তব্যজ্ঞান করেছেন। নাটক-সিনেমায় পুলিশের পোশাক বা চরিত্রের ক্ষেত্রে পুলিশকে চিত্রনাট্য দেখিয়ে প্রাক-অনুমতি নেওয়ার যে প্রস্তাব পুলিশ দিয়েছে, ধারণা করি, পরিচালক সমিতির নেতারা তাতে কোনো সমস্যা দেখেন না। অন্তত সে রকম কোনো উদ্বেগ এখনো চোখে পড়েনি।   


৩.

জ্ঞান, মুক্তবুদ্ধি ও যুক্তিতর্কচর্চার তীর্থকেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ওপর অতীতে ভরসা করা যেত। এখন আর সেই ভরসাও নেই। সরকার কিম্বা ক্ষমতাসীন দল বিব্রত হলে পদ-পদবি-পদক এর ক্ষেত্রে বঞ্চিত হওয়ার ঝুঁকি এড়ানোই এখন অগ্রাধিকার। দলীয় ভাষ্য কিম্বা নীতির সঙ্গে মেলে না, এমন কোনো যুক্তিতর্ক ও মতামতকে শুধু এড়িয়ে চলাই নয়, তার বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর প্রতিযোগিতা শুরু হয়। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধাপক মাইদুল ইসলাম কিম্বা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আসিফ নজরুল- কারোরই মতপ্রকাশের অধিকার রক্ষায় শিক্ষক সমিতি সক্রিয় হয় না। তাঁদের মতামত ভুল না ঠিক, তা নিয়ে বিতর্ক হতে পারে। কিন্তু ভিন্নমত প্রকাশের জন্য সরকার-সমর্থক ছাত্র সংগঠনের সদস্যরা তাঁঁর দপ্তরে তালা লাগাবে এবং হুমকি দেবে ,তা কীভাবে গ্রহণযোগ্য হয়? 


আমরা যে এক অদ্ভুত সময়ে বাস করছি , এগুলো সম্ভবত তারই আলামত। দলীয়করণের প্রায় সর্বব্যাপী রুপের সম্ভাব্য পরিণতি যে আদৌ সুখকর হবে না, তা মোটামুটি নিশ্চিত করেই বলা যায়। কারণ বিরোধটাও এখন অনেক জায়গায় একান্তই অর্ন্তদলীয়। 


(২ সেপ্টেম্বর, ২০২১-`র প্রথম আলো পত্রিকায় প্রকাশিত।)


মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বে স্বৈরশাসকের ফেরা সহজ

  গণতন্ত্রে উত্তরণে ব্যর্থতা ও স্বৈরতন্ত্রের নিকৃষ্টতম রুপ প্রত্যক্ষ করার পর অর্ন্তবর্তী সরকারের মেয়াদকালে যে সব বিষয়ে সংস্কারের আলোপ চলছে, তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে নির্বাচনব্যবস্থা। এরশাদের সামরিক স্বৈরাচারের পতনের পর নির্বাচনকে গণতন্ত্র চর্চার মাধ্যম হিসাবে যেভাবে প্রতিষ্ঠার কথা ছিল, তা থেকে প্রধান দুই দলই বিচ্যূত হয়েছিল। পরিণতিতে নির্বাচন শুধু ক্ষমতা দখলের হিংসাত্মক খেলায় পরিণত হয় এবং শেষ পর্যন্ত শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ সাধারণ মানুষের ভোটের অধিকার হরণ করে নির্বাচনকে নানা রকম প্রহসনে পরিণত করে।  এই সমস্যার এক অতি সরলীকৃত সমাধান হিসাবে বলা হচ্ছে, দ্বিদলীয় রাজনীতির বৃত্ত থেকে বেরিয়ে দেশে সত্যিকার বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে। আর বহুদলীয় গণতন্ত্রের জন্য নির্বাচনব্যবস্থায় আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বের ধারণাকে একমাত্র বা চূড়ান্ত সমাধান হিসাবে তুলে ধরা হচ্ছে।  সংখ্যানুপাতিক বা আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতির নির্বাচনে একটি দল যত শতাংশ ভোট পাবে, সে অনুপাতে তারা সংসদের আসন পাবে। এ আনুপাতিক পদ্ধতিতে প্রার্থীদের নাম দল আগাম ঘোষণা করতেও পারে, আবার না–ও পারে। নাম প্রকাশ করা হলে সেটা হব...

How to Describe the Awami League Accurately?

In an article titled ‘How Not to Describe the Awami League’ , published in this paper, British journalist David Bergman rightly underscores the importance of accuracy in labeling a political party—particularly when such labels carry potential legal consequences. Those familiar with Bergman’s work over the years know that he has consistently taken on politically sensitive and controversial subjects, often at significant personal and professional cost. His courage and commitment to journalistic integrity deserve recognition. Bergman is correct in asserting that “while serious criticisms of the Awami League are both valid and necessary, they must be proportionate and grounded in fact.” His analysis focuses primarily on the legal validity and appropriateness of labeling the Awami League as “fascist” or “Nazi.” He argues that comparing the party to the Nazi regime trivialises the scale of Nazi atrocities and misrepresents the complexities of Bangladeshi politics. Indeed, any historical comp...

সংবিধান সংস্কারে জাতীয় সমঝোতা কি অসম্ভব কিছু

সংবিধান সংস্কার কমিশন সংবিধান নিয়ে যে জনমত সংগ্রহ ও জাতীয়ভিত্তিক সংলাপগুলো করছে, তাতে বেশ ভালোই সাড়া মিলছে বলে আভাস পাওয়া যাচ্ছে। প্রায় প্রতিদিনই বিভিন্ন নাগরিক গোষ্ঠী, রাজনৈতিক দল, বিদ্বজ্জনেরা কেমন সংবিধান দেখতে চান, তা নিয়ে বিতর্ক ও মতবিনিময় করছেন। দেশের রাজনৈতিক ভবিষ্যত নির্ধারণের মৌলিক ভিত্তি তথা রাষ্ট্রকাঠামো ও ক্ষমতার বিন্যাস সম্পর্কে নাগরিকদের এতটা উৎসাহ সম্ভবত: এর আগে আর দেখা যায়নি। সংস্কার কমিশনের সূত্র থেকে জেনেছি, অনলাইনে তাঁরা অভূতপূর্ব সাড়া পেয়েছেন এবং মতামত দেওয়ার জন্য সপ্তাহখানেক সময় বাকি থাকতেই ৩০ হাজারেরও বেশি পরামর্শ তাঁদের কাছে জমা পড়েছে। নাগরিকদের এ আগ্রহ থেকে যে বার্তাটি স্পষ্ট হয়, তা হচ্ছে তাঁরা চান তাঁদের মতামত যেন গুরুত্ব পায়। দীর্ঘ ১৫ বছরের স্বৈরশাসনে ক্ষমতাধরদের কিছু বলার বা তাঁদের প্রশ্ন করার কোনো অধিকার সাধারণ মানুষের ছিল না। প্রতি পাঁচ বছরে একবার ভোটের মাধ্যমে প্রতিনিধি নির্বাচনের যে অধিকার, সেটুকুও তাঁরা হারিয়েছিলেন। এই পটভূমিতে নাগরিকদের প্রথম চাওয়া হচ্ছে, তাঁদের হারানো অধিকার ফিরে পাওয়া। ভোট দেওয়ার অধিকার, কথা বলার অধিকার, প্রশ্ন করার অধিকার, সংগঠন করার...