সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

রোহিঙ্গাদের পাশে বৃহৎ শক্তিগুলো কে কোথায়

জাতিসংঘের ভাষায় ‘টেক্সট বুক এথনিক ক্লিনজিং’ মিয়ানমারের যে গণহত্যা, সেই নিষ্ঠুরতার শিকার প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গা উদ্বাস্তুর বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়ার ছয় বছর পূর্ণ হয়েছে চলতি সপ্তাহে। এই বিপুলসংখ্যক শরণার্থীর আশ্রয় ও মানবিক জীবনযাপনের ব্যবস্থা করায় সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে যেসব বন্ধুরাষ্ট্র বাংলাদেশের পাশে দাঁড়িয়েছে, তাদের সাহায্যের পরিমাণ ও সহানুভূতি ক্রমেই শেষ হয়ে আসছে। 


২০১৭ সাল থেকে চলতি বছর পর্যন্ত মোট সাতবার জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা সমন্বয় দপ্তর ওসিএইচএ (ওচা) রোহিঙ্গাদের জন্য মোট ৬০০ কোটি ডলারের মতো জরুরি সহায়তার আহ্বান জানিয়েছে। তবে তাদের সাহায্য পাওয়ার গড় হার ৬৩.৬ শতাংশ। চলতি বছরে এখন পর্যন্ত মাত্র ৩০ শতাংশেরও কম অর্থের প্রতিশ্রুতি মিলেছে।  এ পর্যন্ত আদায় হওয়া সাহায্যের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র এককভাবে দিয়েছে ১৬২ কোটি ডলার, যা প্রায় ২৭ শতাংশের মতো। তবে গতকাল শুক্রবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের বিবৃতিতে রোহিঙ্গাদের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের মোট সহায়তার পরিমাণ ২১০ কোটি ডলার বলে উল্লেখ করা হয়েছে। বিপরীতে চীন মাত্র একবার চার লাখ ডলার দিয়েছে এবং রাশিয়া দিয়েছে মোট ২০ লাখ ডলার। ওচার ফিন্যান্সিয়াল ট্র্যাকিং সার্ভিসে প্রকাশিত হিসাব বিশ্লেষণে এই চিত্র পাওয়া যায়। 

রোহিঙ্গা–সংকট মোকাবিলায় রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সহায়তার সামগ্রিক পর্যালোচনায় দেখা যায়, ভূরাজনীতির যে বৈশ্বিক দ্বন্দ্ব, তার প্রত্যক্ষ প্রতিফলন আর্থিক সহায়তার ক্ষেত্রেও ঘটছে। রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্বের স্বীকৃতি ও নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসন এবং গণহত্যার বিচারের প্রশ্নে যুক্তরাষ্ট্রসহ তার মিত্র দেশগুলোর রাজনৈতিক ভূমিকা যেমন জোরালো, তাদের আর্থিক সহায়তাও প্রায় একই রকম। বিপরীতে মিয়ানমারের প্রতি নমনীয় রাজনৈতিক অবস্থান নেওয়া দুই শক্তিধর রাষ্ট্র চীন ও রাশিয়া এবং প্রতিবেশী ভারত বিপন্ন রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তায় অর্থ জোগান দেওয়ার ক্ষেত্রে একেবারেই নগণ্য বা নামমাত্র ভূমিকা রাখছে।

২০১৭ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত বছরওয়ারি হিসাব জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা সমন্বয় দপ্তর প্রতিবছর চাহিদা ঠিক করে যে পরিমাণ সহায়তার আহ্বান জানিয়েছে এবং কারা কী দিয়েছে, তার বিশদ হিসাব ওয়েবসাইটে প্রকাশ করে। এতে দেখা যাচ্ছে, প্রতিবছর যুক্তরাষ্ট্র এককভাবে সর্বোচ্চ সহায়তাদানকারীর অবস্থান ধরে রেখেছে। ২০২০ সালে ওচার আবেদনের মাত্র ৫৯ দশমিক ৬ শতাংশ অর্থ সংগৃহীত হয়েছিল, যার ৪৯ দশমিক ৭ শতাংশই দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এরপর দাতা হিসেবে দ্বিতীয় অবস্থানে আছে যুক্তরাজ্য, যারা দিয়েছে ৪১ কোটি ৭০ লাখ ডলার, তৃতীয় অবস্থানে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ২৬ কোটি ডলার। ২৩ কোটি ৮০ লাখ ডলার দান করে অস্ট্রেলিয়ার অবস্থান চতুর্থ, আর এশীয় দেশগুলোর মধ্যে জাপান মোট ১৭ কোটি ৪০ লাখ ডলার দিয়ে আছে পঞ্চম স্থানে। 

ওচার হিসাবে দেখা যাচ্ছে, তাদের সাতবার সহায়তার আহ্বানে চীন মাত্র একবার ২০২০ সালে সাড়া দিয়ে চার লাখ ডলার দিয়েছে। রাশিয়া দিয়েছে ২০১৮ ও ২০১৯ সালে ১০ লাখ ডলার করে মোট ২০ লাখ ডলার। ভারতের কোনো আর্থিক সহায়তার রেকর্ড ওচার পরিসংখ্যানে নেই। মুসলিম রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, তুরস্ক ও কাতারের সরকার এবং কয়েকটি ফাউন্ডেশন ওচার তহবিলে অর্থ দিয়েছে। এ তহবিলে প্রথম পাঁচ বছরে বাংলাদেশ দিয়েছে মোট প্রায় সাড়ে পাঁচ কোটি ডলার। গত বছর এবং চলতি বছরে বাংলাদেশ এ তহবিলে কোনো অর্থ দেয়নি। 

লন্ডনের দ্য রয়্যাল ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্স, যা চ্যাথাম হাউস নামে অধিক পরিচিত, তার গত বছরের জুলাইয়ে প্রকাশিত এক গবেষণাপত্র ‘চায়না ওভারসিজ হিউম্যানিটারিয়ান অ্যাকশন টু অ্যাসিস্ট রিফিউজিস’–এ দেখা যাচ্ছে, চীন উদ্বাস্তুদের জন্য মানবিক সহায়তা বাড়ানোর নীতি ক্রমে অনুসরণ করছে। তবে তা প্রধানত জাতিসংঘের সংস্থাগুলো এবং দ্বিপক্ষীয় কূটনৈতিক সম্পর্কের মাধ্যমে। ২০১২ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত এক দশকের উদ্বাস্তু সহায়তার উপাত্ত বিশ্লেষণ করে গবেষণায় এই উপসংহার টানা হয়। এতে দেখা যায়, তারা ফিলিস্তিনিদের সহায়তার জন্য গঠিত জাতিসংঘ সংস্থা, আফগানিস্তান, সিরিয়া, ক্যামেরুন, বুরুন্ডি, সুদান, কঙ্গো, নাইজার, ইরাক প্রভৃতি দেশে বেশ কয়েকবার সহায়তার হাত বাড়িয়েছে। কিন্তু রোহিঙ্গাদের জন্য ২০২০ সালে একবার চার লাখ ডলার ছাড়া আর কোনো সহায়তা তারা দেয়নি। 

রোহিঙ্গাদের নাগরিক পরিচয়ের স্বীকৃতি, মানবিক মর্যাদাপূর্ণ নিরাপদ প্রত্যাবাসন এবং মিয়ানমার সরকার ও সামরিক বাহিনীর নিষ্ঠুর নিপীড়নের জবাবদিহির প্রশ্নে আন্তর্জাতিক পরিসরে রাজনৈতিক ভূমিকা গ্রহণের ক্ষেত্রেও যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলো, জাপান ও অস্ট্রেলিয়া ধারাবাহিকতা বজায় রেখে সোচ্চার রয়েছে। বিপরীতে চীন, রাশিয়া ও ভারত জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে মিয়ানমারের নিন্দা বা তার বিরুদ্ধে কোনো সমন্বিত আন্তর্জাতিক ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্যোগে সমর্থন দেয়নি। ভেটো ক্ষমতার অধিকারী চীন ও রাশিয়া একাধিকবার নিরাপত্তা পরিষদে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে কোনো প্রস্তাব গ্রহণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। 

২০১৭ সালে রোহিঙ্গা গণহত্যা ও নিপীড়নের ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ অধিকাংশ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র মিয়ানমারের সেনাপ্রধান মিন অং হ্লাইংসহ বেশ কয়েকজন শীর্ষ জেনারেলের বিরুদ্ধে এবং সামরিক বাহিনীর পরিচালনাধীন ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে। ২০২১ সালে নির্বাচনের পর সামরিক শাসন জারির পর এসব দেশ নিষেধাজ্ঞার পরিধি আরও বাড়িয়েছে। 

একই সময়ে মিয়ানমারের সেনাপ্রধান জেনারেল হ্লাইং চীন, রাশিয়া ও ভারতে সরকারি সফরে গেছেন এবং ওই তিনটি দেশ থেকেই সমরাস্ত্র ও সরঞ্জাম কিনেছেন। বিশ্বের অস্ত্র ব্যবসার ওপর নিয়মিত গবেষণা পরিচালনা করে সুইডেনের স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউট (সিপরি)। সিপরির ২০২৩ সালের মার্চ মাসে প্রকাশিত ট্রেন্ডস ইন ইন্টারন্যাশনাল আর্মস ট্রান্সফার ২০২২ প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, ২০১৮ থেকে ২০২২ সাল সময়কালে মিয়ানমার যত অস্ত্র কিনেছে, তার ৪২ শতাংশ রাশিয়া, ২৯ শতাংশ চীন এবং ১৪ শতাংশ ভারত থেকে এসেছে। 

গত ১৯ জুন থেকে ১৪ জুলাই সময়ে অনুষ্ঠিত জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদের ৫৩তম অধিবেশনে মিয়ানমারে অস্ত্র সরবরাহ বিষয়ে স্পেশাল র‍্যাপোর্টিয়ারের পেশ করা প্রতিবেদন ‘দ্য বিলিয়ন ডলার ডেথ ট্রেড: দ্য ইন্টারন্যাশনাল আর্মস নেটওয়ার্কস দ্যাট এনাবেল হিউম্যান রাইটস ভায়োলেশন্সে’ ২০২১ সালের সামরিক শাসন জারির পর মিয়ানমারে অস্ত্র সরবরাহের যে চিত্র তুলে ধরা হয়েছে, তাতে রাশিয়া, চীন, ভারত ছাড়াও সিঙ্গাপুর ও থাইল্যান্ড থেকে সব মিলিয়ে প্রায় শতকোটি ডলারের অস্ত্র সরবরাহের হিসাব তুলে ধরা হয়েছে। 

চীন বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা উদ্বাস্তুদের জন্য আর্থিক সহায়তা দেওয়ায় পিছিয়ে থাকলেও তাদের জন্য অবকাঠামো নির্মাণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। ২০১৮ সালের ৩১ ডিসেম্বর বার্তা সংস্থা রয়টার্সের ‘আ রিমোট হোম ফর দ্য রোহিঙ্গা’ শিরোনামের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, চীনা নির্মাতা কোম্পানি সিনোহাইড্রো ভাসানচরে আট মাইল দীর্ঘ উপকূলীয় বাঁধ নির্মাণের কাজ করেছে, যার জন্য ব্যয় হয়েছে ২৮ কোটি ডলার। এই অর্থের পুরোটাই বাংলাদেশের নিজস্ব তহবিল।

ওচার এসব পরিসংখ্যানের বাইরে বিভিন্ন দেশ দ্বিপক্ষীয় ভিত্তিতে রোহিঙ্গাদের জন্য বাংলাদেশ সরকারকে সহায়তা দিয়ে থাকতে পারে। তবে তার কোনো নির্ভরযোগ্য পরিসংখ্যান পাওয়া যায় না। ২০১৭ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর ভারত সরকারের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে রোহিঙ্গাদের জন্য অপারেশন ইনসানিয়াতের কথা ঘোষণা করা হয়। ওই বিবৃতিতে তখন ৫৩ টন ত্রাণসামগ্রী দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল। পরবর্তী সময়ে আরও সাত হাজার টন ত্রাণসামগ্রী দেওয়ার ঘোষণাও বিবৃতিতে ছিল। এর বাইরে তাদের কোনো আর্থিক সহায়তার কথা জানা যায় না। 

রোহিঙ্গাদের জন্য আন্তর্জাতিক সহায়তা কমতে থাকার পটভূমিতে তাদের স্বদেশে প্রত্যাবাসনের বিষয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের আরও জোরালো ভূমিকার জন্য বাংলাদেশ আহ্বান জানিয়ে আসছে। আর সেই পটভূমিতেই চীন রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের বিষয়ে মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা নিয়েছে। ইতিমধ্যে দুবার তারা পরীক্ষামূলক বা পাইলট প্রত্যাবাসনের উদ্যোগ নিলেও তা সম্ভব হয়নি। এখন ডিসেম্বরের আগেই আবারও এই পরীক্ষামূলক প্রত্যাবাসনের শুরুর কথা বলা হচ্ছে। তবে মানবাধিকার সংগঠনগুলো এবং জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, মিয়ানমারে নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসনের পরিবেশ তৈরি হয়নি। রোহিঙ্গাদের বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকেও নাগরিকত্বের স্বীকৃতি ছাড়া প্রত্যাবাসনের বিরোধিতা করা হয়েছে।


মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বে স্বৈরশাসকের ফেরা সহজ

  গণতন্ত্রে উত্তরণে ব্যর্থতা ও স্বৈরতন্ত্রের নিকৃষ্টতম রুপ প্রত্যক্ষ করার পর অর্ন্তবর্তী সরকারের মেয়াদকালে যে সব বিষয়ে সংস্কারের আলোপ চলছে, তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে নির্বাচনব্যবস্থা। এরশাদের সামরিক স্বৈরাচারের পতনের পর নির্বাচনকে গণতন্ত্র চর্চার মাধ্যম হিসাবে যেভাবে প্রতিষ্ঠার কথা ছিল, তা থেকে প্রধান দুই দলই বিচ্যূত হয়েছিল। পরিণতিতে নির্বাচন শুধু ক্ষমতা দখলের হিংসাত্মক খেলায় পরিণত হয় এবং শেষ পর্যন্ত শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ সাধারণ মানুষের ভোটের অধিকার হরণ করে নির্বাচনকে নানা রকম প্রহসনে পরিণত করে।  এই সমস্যার এক অতি সরলীকৃত সমাধান হিসাবে বলা হচ্ছে, দ্বিদলীয় রাজনীতির বৃত্ত থেকে বেরিয়ে দেশে সত্যিকার বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে। আর বহুদলীয় গণতন্ত্রের জন্য নির্বাচনব্যবস্থায় আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বের ধারণাকে একমাত্র বা চূড়ান্ত সমাধান হিসাবে তুলে ধরা হচ্ছে।  সংখ্যানুপাতিক বা আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতির নির্বাচনে একটি দল যত শতাংশ ভোট পাবে, সে অনুপাতে তারা সংসদের আসন পাবে। এ আনুপাতিক পদ্ধতিতে প্রার্থীদের নাম দল আগাম ঘোষণা করতেও পারে, আবার না–ও পারে। নাম প্রকাশ করা হলে সেটা হব...

How to Describe the Awami League Accurately?

In an article titled ‘How Not to Describe the Awami League’ , published in this paper, British journalist David Bergman rightly underscores the importance of accuracy in labeling a political party—particularly when such labels carry potential legal consequences. Those familiar with Bergman’s work over the years know that he has consistently taken on politically sensitive and controversial subjects, often at significant personal and professional cost. His courage and commitment to journalistic integrity deserve recognition. Bergman is correct in asserting that “while serious criticisms of the Awami League are both valid and necessary, they must be proportionate and grounded in fact.” His analysis focuses primarily on the legal validity and appropriateness of labeling the Awami League as “fascist” or “Nazi.” He argues that comparing the party to the Nazi regime trivialises the scale of Nazi atrocities and misrepresents the complexities of Bangladeshi politics. Indeed, any historical comp...

ঘৃণা চাষের উর্বর ভূমি ও রাজনৈতিক সংকট

  দেশে একের পর এক অস্থিরতা সৃষ্টির বেশ কয়েকটি ঘটনা আমরা প্রত্যক্ষ করলাম। এগুলোর কোনোটিই প্রত্যাশিত ছিল না। অনেকেই এগুলো নির্বাচন যাতে প্রধান উপদেষ্টার প্রতিশ্রুত সময়ে না হয়, তার জন্য পরিস্থিতি ঘোলাটে করার অপচেষ্টা হিসাবে বর্ণনা করেছেন। পরিকল্পিতভাবে অস্থিরতা সৃষ্টির পিছনে প্রধানত: দুটি শক্তিকে দায়ী করা হচ্ছে – একটি হচ্ছে পতিত স্বৈরাচার আওয়ামী লীগের পলাতক নেতৃত্বের সাংগঠনিক উদ্যোগ; অপরটি হচ্ছে, বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ার (সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম) সুবাদে সমাজে প্রভাব বিস্তারে দক্ষতা অর্জনকারী কিছু প্রভাবক ব্যক্তি বা গোষ্ঠী। এসব প্লাটফর্ম বিদ্বেষ ও ঘৃণা ছড়ানোর সবচেয়ে কার্যকর হাতিয়ারে পরিণত হয়েছে।  আপনি যদি কাউকে অপদস্থ বা হেয় করতে চান, তাহলে তার জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত স্থান সম্ভবত:  সোশ্যাল মিডিয়ার কোনো একটি প্লাটফর্ম – বাংলাদেশে এটি ফেসবুক এবং ইউটিউব। বৈশ্বিক পরিসরে অবশ্য এক্স (সাবেক টুইটার) এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি এগিয়ে আছে। প্রতিবেশী দেশ মিয়ানমারে গণহত্যার শিকার সংখ্যালঘু মুসলিম জনগোষ্ঠী রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে জাতিগত বিদ্বেষ ছড়ানোয় এই সোশ্যাল মিডিয়া কী ভূমিকা রেখেছে, তা জাতিসংঘ তদন্...