সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

একটি জরিপ, নৈরাশ্য ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রশ্ন

উন্নত গণতন্ত্রে সরকার , সরকারপ্রধান, ক্ষমতাসীন ও বিরোধী দল এবং বিভিন্ন বিতর্কিত ইস্যুতে প্রায়ই জনমত জরিপ করে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। কখনো বিশ্ববিদ্যালয়, কখনো সংবাদমাধ্যম, আবার কখনো বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এসব জরিপ করায়। বেশ কিছু পেশাদার জরিপকারী প্রতিষ্ঠানও আছে, যারা শুধু জরিপের কাজ করে। এসব জরিপ আমাদের গণমাধ্যমগুলোর অনলাইন ভোটের মতো নয়, যা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই শুধু সেই ওয়েবসাইটের নিয়মিত ব্যবহারকারীদের মতামত ছাড়া আর কিছুই নয়। আমাদের দেশে গণতন্ত্রে প্রত্যাবর্তনের প্রায় দুই দশক বার্ষিক জরিপে রাজনীতির গতিপ্রকৃতির চমৎকার প্রতিফলন দেখা যেত। কিন্তু গণতন্ত্রের ক্ষয়সাধনের সঙ্গে সঙ্গে সেই চর্চা প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। ব্যবসায়িক প্রয়োজন ছাড়া অন্য কোনো বিষয়ে জরিপ করতে গেলে সরকারের সায় আছে কিনা সেটা দেখা হয়, নইলে পেশাদার বিশেষজ্ঞরা বা তাঁদের প্রতিষ্ঠানগুলো ওই দায়িত্ব নিতে চান না। কথা বলার ভয়ের মতো মতামত জানতে চাওয়াতেও এক ধরনের ভয়ের আসর পড়েছে।


গণতন্ত্র প্রসারে কাজ করা যুক্তরাষ্ট্রের বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনস্টিটিউট, আইআরআই এ ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম। তারা এখনো মাঝে মধ্যে স্পর্শকাতর রাজনৈতিক বিষয়ে জরিপ পরিচালনা করে। ২০১৪ ও ২০১৮ সালের বিতর্কিত দুটি নির্বাচনের আগে ও পরে তাদের জরিপ নিয়ে তাই নানা রকম প্রশ্নও উঠেছিল। আগামী নির্বাচন নিয়েও তারা ৮ আগস্ট একটি জরিপ প্রকাশ করেছে। তাদের জরিপের একটি তথ্য আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যে উঠে আসা তথ্যের সঙ্গে হুবহু মিলে গেছে। 


গত ৬ আগস্ট গণভবনে অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় ওবায়দুল কাদের বলেন, বাংলাদেশের সর্বশেষ জনমত জরিপে এখনো ৭০ শতাংশ মানুষ বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাকে সমর্থন করে এবং আগামী নির্বাচনে তাকে ভোট দেওয়ার জন্য অপেক্ষা করছে (মানবজমিন অনলাইন)। আইআরআই যে জরিপ প্রকাশ করেছে, তাতে অবশ্য সরাসরি ভোট দেওয়ার কথা নেই, আছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি সমর্থন। ইংরেজিতে তারা অ্যাপ্রুভাল শব্দটি ব্যবহার করেছেন, যার আরেকটি অর্থ হচ্ছে তিনি যা করেছেন তাকে অনুমোদন করা। এপ্রিল মাসের জরিপটির সংখ্যার সঙ্গে মিল থাকার কারণে অনেকের ধারণা আইআরআই তাদের জরিপ প্রতিবেদন প্রকাশের আগে অংশীজন হিসাবে তা সরকারের কাছে দিয়েছে, যা মোটেও অস্বাভাবিক নয়। একই সঙ্গে তারা এটি অন্যান্য দলের কাছেও দিয়েছিল কি না, সে প্রশ্নও উঠতেই পারে। অবশ্য সরকার বা ক্ষমতাসীন দলের নিজস্ব আলাদা জরিপের কথাও তিনি বলে থাকতে পারেন, যা সবার জন্য উন্মুক্ত নয়।


জরিপের দুটি অংশ – একটি দেশের জনসংখ্যার নারী–পুরুষ, বয়স এবং গ্রাম ও শহরের বিন্যাস বিবেচনায় নিয়ে পাঁচ হাজার মানুষের মুখোমুখি সাক্ষাৎকার যেমন আছে, তেমনই ১০ জন করে আটটি ফোকাস গ্রুপে আলোচনা ও প্রশ্নোত্তর র্পবও আছে। জরিপটি নিয়ে অন্য আলোচনায় যাওয়ার আগে দুটো তথ্য শুরুতেই বিবেচনায় নেওয়া জরুরি। প্রথমত, সাক্ষাৎকার দেওয়া লোকজনের ৪৫ শতাংশ বলেছেন, তাঁরা খোলাখুলি মতপ্রকাশে কমবেশি ভয় পান। ভয় পেয়ে কিনা জানি না ৫ শতাংশ সেই প্রশ্নের উত্তরও দিতে রাজি হননি। 


দ্বিতীয়ত: ফোকাস গ্রুপের আলোচনায় খুলনার এক শহুরে নারী বলেছেন, ’রাজনৈতিক ইস্যুতে আমি এখন যদি কিছু বলি তাহলে তার জন্য আমার খুন হওয়ার ভয় আছে।’ একইভাবে ময়মনসিংহের এক গ্রামীণ নারী বলেছেন, এখন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায়। বিএনপি প্রচারে নামার চেষ্টা করলেই তাদের ওপর হামলা হয়। বুঝতে কষ্ট হওয়ার কথা নয় যে জরিপেও নির্ভয়ে খোলামেলা মতামত সবাই জানাননি। জরিপকারীদেরও হয়তো কেউ কেউ বিশ্বাস করতে পারেননি। 


এই জরিপ নিয়ে তাই অনেক কথাই উঠতে পারে এবং উঠেছে – অন্তত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। বিস্ময়ের বিষয় হচ্ছে পুরো জরিপে রাজনীতি, অর্থনীতি, গণতন্ত্র এবং দেশের ভবিষ্যত নিয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের আশাহত হওয়ার কথা উঠে এসেছে। ৬৩ শতাংশ মানুষ বিরোধী দলের কার্যক্রমকে অনুমোদন বা সমর্থন করছে। দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের বিরুদ্ধে ৬৯ শতাংশ মানুষ, যাদের ৪৪ শতাংশ চান তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন হোক, আর ২৫ শতাংশ চান সব দলের সমন্বয়ে গঠিত একটি সরকার নির্বাচন আয়োজন করুক। 


দেশের মানুষ যে একটি গ্রহণযোগ্য যথার্থ নির্বাচনের জন্য মুখিয়ে আছে, তার ইঙ্গিত মেলে ৯২ শতাংশ উত্তরদাতা ভোট দিতে তাঁদের আগ্রহের কথা জানিয়েছেন। আওয়ামী লীগের অধীনে আগের দুটো নির্বাচন যে গ্রহণযোগ্য হয়নি, তার সম্ভাব্য প্রতিফলন ঘটেছে  – যাঁরা আগামী নির্বাচনে ভোট দেবেন না বলেছেন, তাঁদের ৫৫ শতাংশই বলেছেন, তাঁদের ভোট অন্য কেউ দিয়ে দিয়েছেন। 


বিরোধী দলহীন নির্বাচনে মানুষের যে আগ্রহ নেই, সে কথাও উঠে এসেছে ফোকাস গ্রুপের আলোচনায়। 


চট্টগ্রামের এক গ্রামীণ তরুণ বলেছেন, ’বিরোধী দল না থাকলে কাকে ভোট দেব?’ ময়মনসিংহের আরেক গ্রামীণ নারী বলেছেন, সরকারের সঙ্গে লড়াই করার মতো কেউ আছে, বিরোধী দলগুলোকে এমন বার্তা দিতে হবে। ওবায়দুল কাদের এই জরিপকে যদি ইতিবাচক হিসাবে ব্যবহার করার চেষ্টা করে থাকেন, তাহলে বলতে হবে তিনি হয় সাহস দেখিয়েছেন, নয়তো বাকি অংশগুলো পড়েন নি। আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টি তিন দলের মধ্যে সবচেয়ে বেশি নেতিবাচক কথা উঠে এসেছে আওয়ামী লীগ সম্পর্কে। বিপরীতে বিএনপির প্রতি নেতিবাচক  মনোভাব সবচেয়ে কম।   

   

এ তো গেল গণতন্ত্র ও রাজনীতির কথা। অর্থনীতিতে আওয়ামী লীগ কি আশাবাদী হতে পারে। এ জরিপ সেকথা বলে না। উন্নয়নের নীতির প্রতি মানুষের সমর্থন থাকলেও অর্থনৈতিকভাবে মানুষ এখন কষ্টে আছেন বলে জানিয়েছেন। ৫১ শতাংশ মানুষ এখন অর্থনীতি খারাপ অথবা খুব খারাপ অবস্থায় বলে মনে করে। আট বছরের জরিপগুলোর মধ্যে এবারই অর্থনীতি সম্পর্কে মানুষের নেতিবাচক ধারনা এতটা বেশি। আগামী বছরে অর্থনীতি ভালো হবে, এমনটা বিশ্বাস করেন মাত্র ২৬ শতাংশ মানুষ; আর ৩৬ শতাংশ মনে করেন, এখনকার চেয়েও অবস্থা খারাপ হবে। উন্নয়নের অর্থনীতিতে যে ধনীরা অস্বাভাবিকভাবে লাভবান হয়েছেন, তেমনটি বিশ্বাস করেন প্রায় ৮৭ শতাংশ, যাঁরা বলেছেন ধনী–গরিবের বৈষম্য বেড়েছে।


দেশে সবচেয়ে বড় সমস্যা কী, প্রশ্নটির উত্তর আরও তাৎপর্যপূর্ণ। মূল্যস্ফীতির কারণে মানুষ যখন জীবন চালাতে হিমশিম খাচ্ছে, তখনও তাদের মধ্যে সবেচয়ে বেশি সংখ্যক মানুষ, ৩৬ শতাংশ মনে করেন, দূর্নীতি হচ্ছে প্রধান সমস্যা। বিএনপির বিরুদ্ধে যে দূর্নীতির অভিযোগ আওয়ামী লীগের নেতারা দিয়ে থাকেন, গত ১৫ বছরে দূর্নীতি যে তার চেয়ে কতগুণ বেশি বেড়েছে, সম্ভবত তারই ইঙ্গিত হচ্ছে এই জরিপের ফল।  


একক নেতৃত্বে আস্থাশীল দল হিসাবে আওয়ামী লীগ প্রধানমন্ত্রীর এত দিনের কাজে ৭০ শতাংশ মানুষের সমর্থনকে পুঁজি করতে চাইলেও তা যে মোটেও সহজ হবে না, এই জরিপে তার নমুনার অভাব নেই। দলটির জন্য সবচেয়ে বেশি উদ্বেগের বিষয় সম্ভবত বাংলাদেশের মানুষের ভবিষ্যত সম্পর্কে নৈরাশ্য। এই নৈরাশ্য অর্থনীতির লড়াই, গণতন্ত্রের দৈন্য দশা, নির্বাচন ও রাজনৈতিক দলগুলোর ভূমিকা নিয়ে। দেশের অর্ধেকেরও বেশি ভোটার মনে করেন, দেশ ভুল পথে চলেছে। নির্বাচনের জন্য বাকি যে পাঁচ–ছয় মাস সময় আছে, তার মধ্যে দেশের ভবিষ্যত সম্পর্কে সংখ্যাগরিষ্ঠের মধ্যে আশাবাদ তৈরি করা কোনো দলের পক্ষেই সহজ নয়।


তবে জরিপের অর্ন্তনিহিত বার্তা অনুধাবনের পরিণতিতে গ্রহণযোগ্য ও সুষ্ঠু নির্বাচন আরো অনিশ্চিত হয়ে পড়ার আশঙ্কাও উড়িয়ে দেওয়া যায় না। 


(১০ জুলাই, ২০২৩–এর প্রথম আলো পত্রিকায় প্রকাশিত।)





মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বে স্বৈরশাসকের ফেরা সহজ

  গণতন্ত্রে উত্তরণে ব্যর্থতা ও স্বৈরতন্ত্রের নিকৃষ্টতম রুপ প্রত্যক্ষ করার পর অর্ন্তবর্তী সরকারের মেয়াদকালে যে সব বিষয়ে সংস্কারের আলোপ চলছে, তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে নির্বাচনব্যবস্থা। এরশাদের সামরিক স্বৈরাচারের পতনের পর নির্বাচনকে গণতন্ত্র চর্চার মাধ্যম হিসাবে যেভাবে প্রতিষ্ঠার কথা ছিল, তা থেকে প্রধান দুই দলই বিচ্যূত হয়েছিল। পরিণতিতে নির্বাচন শুধু ক্ষমতা দখলের হিংসাত্মক খেলায় পরিণত হয় এবং শেষ পর্যন্ত শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ সাধারণ মানুষের ভোটের অধিকার হরণ করে নির্বাচনকে নানা রকম প্রহসনে পরিণত করে।  এই সমস্যার এক অতি সরলীকৃত সমাধান হিসাবে বলা হচ্ছে, দ্বিদলীয় রাজনীতির বৃত্ত থেকে বেরিয়ে দেশে সত্যিকার বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে। আর বহুদলীয় গণতন্ত্রের জন্য নির্বাচনব্যবস্থায় আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বের ধারণাকে একমাত্র বা চূড়ান্ত সমাধান হিসাবে তুলে ধরা হচ্ছে।  সংখ্যানুপাতিক বা আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতির নির্বাচনে একটি দল যত শতাংশ ভোট পাবে, সে অনুপাতে তারা সংসদের আসন পাবে। এ আনুপাতিক পদ্ধতিতে প্রার্থীদের নাম দল আগাম ঘোষণা করতেও পারে, আবার না–ও পারে। নাম প্রকাশ করা হলে সেটা হব...

অরাজনৈতিক আন্দোলনের করুণ রাজনৈতিক মূল্য

কোটা সংস্কারের দাবিতে সাধারণ ছাত্র–ছাত্রীদের আন্দোলনে  কদিন ধরে যা ঘটে চলেছে, তা যেমন বেদনাদায়ক, তেমনই নিন্দনীয় ও ক্ষোভের কারণ। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের শিক্ষা দিতে ক্ষমতাসীন সরকারের সমর্থক এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীর হাতে একইদিনে দেশের তিন জায়গায় ছয়জনের প্রাণহানির ঘটনা স্বাধীন বাংলাদেশে বিরল।  এবার আরও যেসব ঘটনা আমাদের স্তম্ভিত করেছে, অভিভাবকদের চোখ অশ্রুসিক্ত করেছে, এসব মৃত্যুর পরও সরকারের রাজনৈতিক দম্ভ বজায় রাখার চেষ্টা, যা আরও প্রাণহানির কারণ হয়েছে। ছয়জন তরুণের প্রাণ বিসর্জনের পরও কোটা সংস্কারের দাবিতে সরকার ”নীতিগতভাবে একমত” – একথাটি বলে  আলোচনায় না ডেকে সময়ক্ষেপণ করেছে। আইনমন্ত্রী কথাটি যখন বললেন, তার আগেই আরও জীবন গেল, শত শত মানুষ আহত হলো, দেশের সম্পদ নষ্ট হলো। রাজনৈতিক গরিমা ছাড়া এর আর কোনো কারণ আছে কি? ছাত্রলীগ পরিচয়ে অন্ত্রধারীদের তান্ডব, পুলিশের চরম নিষ্ঠুরতা এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ছাত্রীদের গড়পরতা মারধর ও লাঞ্চিত করার যে দৃশ্যগুলো গণমাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে, তা কোনো অভিভাবকের পক্ষেই ভোলা সম্ভব নয়। এসব ঘটনার বিবরণ উদ্ধৃত না করে শুধু নিষ্ঠুর ...

সংবিধান সংস্কারে জাতীয় সমঝোতা কি অসম্ভব কিছু

সংবিধান সংস্কার কমিশন সংবিধান নিয়ে যে জনমত সংগ্রহ ও জাতীয়ভিত্তিক সংলাপগুলো করছে, তাতে বেশ ভালোই সাড়া মিলছে বলে আভাস পাওয়া যাচ্ছে। প্রায় প্রতিদিনই বিভিন্ন নাগরিক গোষ্ঠী, রাজনৈতিক দল, বিদ্বজ্জনেরা কেমন সংবিধান দেখতে চান, তা নিয়ে বিতর্ক ও মতবিনিময় করছেন। দেশের রাজনৈতিক ভবিষ্যত নির্ধারণের মৌলিক ভিত্তি তথা রাষ্ট্রকাঠামো ও ক্ষমতার বিন্যাস সম্পর্কে নাগরিকদের এতটা উৎসাহ সম্ভবত: এর আগে আর দেখা যায়নি। সংস্কার কমিশনের সূত্র থেকে জেনেছি, অনলাইনে তাঁরা অভূতপূর্ব সাড়া পেয়েছেন এবং মতামত দেওয়ার জন্য সপ্তাহখানেক সময় বাকি থাকতেই ৩০ হাজারেরও বেশি পরামর্শ তাঁদের কাছে জমা পড়েছে। নাগরিকদের এ আগ্রহ থেকে যে বার্তাটি স্পষ্ট হয়, তা হচ্ছে তাঁরা চান তাঁদের মতামত যেন গুরুত্ব পায়। দীর্ঘ ১৫ বছরের স্বৈরশাসনে ক্ষমতাধরদের কিছু বলার বা তাঁদের প্রশ্ন করার কোনো অধিকার সাধারণ মানুষের ছিল না। প্রতি পাঁচ বছরে একবার ভোটের মাধ্যমে প্রতিনিধি নির্বাচনের যে অধিকার, সেটুকুও তাঁরা হারিয়েছিলেন। এই পটভূমিতে নাগরিকদের প্রথম চাওয়া হচ্ছে, তাঁদের হারানো অধিকার ফিরে পাওয়া। ভোট দেওয়ার অধিকার, কথা বলার অধিকার, প্রশ্ন করার অধিকার, সংগঠন করার...